এক ব্যক্তির স্ত্রী ভীষণ অসুখে পড়ে। মৃত্যুশয্যায় শুয়ে সে তার স্বামীকে বলে, 'আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি! তাই তোমাকে একদম ছেড়ে যেতে চাই না। আমি চাই না যে তুমিও আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো। প্রতিজ্ঞা করো, আমি যদি কখনো মারা যাই তবে তুমি অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবে না পর্যন্ত। তা না হলে কিন্তু আমি ভূত হয়ে ফিরে এসে তোমাকে উচিত শিক্ষা দেব।
স্ত্রীর মৃত্যুর বেশ কয়েক মাস পর পর্যন্ত লোকটি অন্য নারীদের প্রতি উপেক্ষা জিইয়ে রাখল। কিন্তু পরে তার একজনের সাথে দেখা হলো এবং সে রীতিমতো তার প্রেমে পড়ে গেল। এক রাতে তাদের মধ্যে বাগদানও সম্পন্ন হয়ে গেল, যা তার পূর্বতন স্ত্রীর প্রেতাত্মার দৃষ্টিগোচর হলো। প্রতিজ্ঞাভঙ্গের দায়ে প্রেতাত্মা তাকে অভিযুক্ত করল এবং এরপর থেকে প্রতিরাতে ভূত হয়ে এসে তাকে বিদ্রূপ করতে লাগল। ওই দিন তার ও তার বাগদত্তার মধ্যে যা যা ঘটেছে প্রেতাত্মা তার সব বলে দিত। এমনকি শব্দ ধরে ধরে সেদিন তারা কী কী কথাবার্তা বলেছে না-বলেছে, তা একের পর এক তুলে ধরত। কী লজ্জার কাণ্ড! এ ঘটনায় লোকটির এমন মানসিক বিপর্যয় ঘটে গেল যে সে এমনকি ঘুমানোর সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলল।
চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে সে নিকটস্থ এক জেনগুরুর কাছে গিয়ে এর প্রতিকার প্রার্থনা করল। লোকটির কাছে আদ্যোপান্ত ঘটনা শুনে জেনগুরু বললেন, 'এটি খুবই ধূর্ত ভূত।' 'ঠিকই বলেছেন', বলল লোকটি। 'আমি যা বলি ও করি ভূতটি তার সবই নিখুঁতভাবে মনে রাখতে পারে। এটা সবজান্তা ভূত।' জেনগুরু মুচকি হেসে বললেন, 'এরকম একটি ভূতের প্রতি তো আপনার উচ্চধারণা পোষণ করাই উচিত। যাহোক, আবার ওটা এলে আপনাকে কী করতে হবে না-হবে তা আমি বলে দিচ্ছি।'
ওই রাতে ভূতটি এলে জেনগুরু তাকে যেরকম উপদেশ দিয়েছেন, লোকটি তার সাথে সেরকম ব্যবহার করল। সে বলল, 'তুমি একটা অসাধারণ জ্ঞানী ভূত। তুমি জান যে তোমার কাছে আমি কোনো কিছুই লুকাতে পারি না। তো, তুমি যদি আমাকে একটা প্রশ্নের জবাব দিতে পার, তাহলে আজই আমি আমার বাগদত্তার কাছ থেকে কথা ফিরিয়ে নেব এবং বাকি জীবন একা থাকব। ভূত সায় দিয়ে বলল, 'শুধাও তোমার প্রশ্ন'। লোকটি মেঝেতে রাখা একটা বড়ো ব্যাগ থেকে মুঠোভর্তি করে মটরশুঁটি উঠিয়ে বলল, 'বল দেখি আমার হাতে ঠিক কয়টি মটরশুঁটি আছে ?'
ঠিক সেই মুহূর্তেই ভূতটি অদৃশ্য হয়ে গেল, যেটি আর কোনোদিনই ফিরে আসে নি।
বাংলায় রূপান্তর : মুজিব মেহদী
মন্তব্য
হা হা!
মারাত্মক হইছে। দারুণ!!
মারাত্নক !
আমি প্রথমে পড়ে বুঝিনি। পরের বার পড়ে বুঝলাম ।
( ভূতটা ওর মনেরই তৈরী, এটাই তো নাকি ? নাহলে এবারও বুঝি নি )
------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ঠিক ধরেছেন। ভূত যা থাকার তা মনেই আছে, অন্য কোথাও নেই।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
জেনগল্পগুলো বেশ শিক্ষণীয়। সিরিজ ভাল্লাগছে।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
হু... এইটা সবজান্তা ভূত
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হ সবজান্তা ভূত, যে প্রতিপ্রভা ছড়ায়
আমার নাটকের পরিচালনা খবর কি নজুদা !
-------------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
হ সবজান্তা ভূত, যে প্রতিপ্রভা ছড়ায়
মজাদার।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
খুবই মজার হইছে।
সৈয়দ আখতারুজ্জামান
মজা লাগল
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
- বহুত খুব।
___________
<চাপা মারা চলিবে কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দারুণ !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
জটিল !
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
অসাধারণ! খুব মজা পেলাম পড়ে।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
দারুন লাগল দারুন, আপনি একটা ই-বুক বের করেন না জেন গল্পগুলোর
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
গল্পাণু বিষয়ে একটা ই-বুক করবার ব্যাপারে যে আলাপ সালাপ চলছিল সেটাই তো এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছালো না ভাই। ব্যাটে-বলে হচ্ছে না আর কি। আগে তো এটা চুকাক, জেনগল্পের কথা না হয় পরে ভাবা যাবে।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
সবাই যখন বলতেছে তখন মনে হয় ভালই হইছে
জটিলস্য জটিল!!
ভুত-জীন তাড়ানোর গুরুরাও জটিল হন আর তদের ব্যবসা আজকের দিনেও বেশ রমরমা। জায়গা বুঝে তাঁরা আবার চীকিৎসাও করেন। এমনই এক গুরুকে দেখে এসেছি এবার। দু'হাজারের নিচে কোন নজরানা নাই আর চীকিৎসা বা জীন তাড়ানোর খচ্চা আলাদা!!
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
নতুন মন্তব্য করুন