চীন দেশের তাঙ রাজবংশের প্রধানমন্ত্রী তার বাগ্মিতা ও সামরিক নেতৃত্বে সাফল্যের কারণে একজন জাতীয় বীর হিসেবে খ্যাতিমান ছিলেন। কিন্তু খ্যাতি, ক্ষমতা ও প্রাচুর্য সত্ত্বেও তিনি নিজেকে খুবই ব্রাত্য জ্ঞান করতেন এবং একজন ধর্মপ্রাণ সাধারণ বৌদ্ধের মতো জীবনযাপন করতেন। প্রায়ই তিনি তার প্রিয় একজন শিক্ষকের কাছে জেন শিখতে যেতেন এবং দু'জন খুব ভালো সময় কাটাতেন। সত্যি বলতে কী, তাদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রিত্বের কোনো প্রভাব প্রতীয়মান হতো না, যেজন্য একজনকে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এবং আরেকজনকে বিনয়ী ছাত্র বলেই মনে হতো।
এরকম এক আড্ডায়, একদিন, প্রধানমন্ত্রী তার শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলেন, 'মহাত্মন, বৌদ্ধ মতানুযায়ী অহংবাদ ব্যাপারটা ঠিক কী ?' শিক্ষকের চোখমুখ মুহূর্তে রক্তবর্ণ হয়ে উঠল এবং তিনি অত্যন্ত হীনকর ও অপমানজনক স্বরে প্রত্যুত্তর করলেন, 'এটা কী ধরনের বেয়াদবের মতো প্রশ্ন ?'
এই অনাকাঙ্ক্ষিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী খুবই নাখোশ ও ক্রুদ্ধ হলেন। জেনশিক্ষক এরপর মুচকি হাসলেন এবং বললেন, 'এই হলো, মান্যবর, অহংবাদ।'
বাংলায় রূপান্তর : মুজিব মেহদী
মন্তব্য
অহংবোধ কম-বেশি আমাদের সবার মধ্যেই আছেই, সুযোগ পেলেই তা বেরিয়ে আসে।
অনেকদিন বাদে লিখলেন, মুজিব ভাই। ভেবেছিলাম সিরিজটা হয়ত বন্ধই করে দিলেন কি না!
__________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
হ্যাঁ, অনেকদিন পরে পোস্ট করা হলো।
তবে শিগগির ফুরাচ্ছে না এ সিরিজ। ৫০ পর্যন্ত যাবে আশা করি।
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
অহংকার হচেছ পুরোনো জুতার শুকতলায় লুকিয়ে থাকা পেরেক
যা দেখা যায় না কিন্তু সময় মতো মাথা বাড়িয়ে খোঁচা দেয়
মুরুব্বিরা কিন্তু অন্য কথা বলে- অহংকার কোনভাবেই লুকানো যায় না, চলাফেরা-কথাবার্তা-বেশভূষায় সেটি সবসময় কোনো-না-কোনোভাবে দাঁত বের করে দেয়।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
আমাকে একবার খোঁচা দিয়েছিল বোধকরি ১৯৯৭-এ। লিখেছিলাম 'এক আঙড়া প্রজ্জ্বলন'। ছাপা হয়েছিল কাছাকাছি সময়ে কৌরব-এ। পরে আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ মমি উপত্যকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। কবিতাটি এরকম ছিল--
এক শ' একটা বস্তুভার উচ্চে উঠিয়ে জেনেছি অহঙই মূল্যবান এ ক্যাকটাস বনে, অনিদ্র কাঁটার আঘাতে যত রক্তক্ষরণ, নিজস্ব নিভৃতে পোষে পাতার ক্লান্তিকে
সাহসের নাম পর্বতশিখর, ভয়েরে সমুদ্র বলি, কল্লোলগুলো স্থিতিনাশী, কেতকি ফলের কাছে করুণা ভিক্ষা চেয়ে তিল তিল বেঁচে থাকার এ প্রার্থনাবাণী শুনিয়ে গেল বুঝি প্রহরপ্রতিমা
পরাহ্ণে আলোই ঈশ্বরী দেবী, ঘুমের ছায়ায় ছায়ায় বনের গরিমা সব পাতার গহনে যে রূপ ধরে রাখে, তারে দিতে পারে মূর্ত ক্ষমতা, তার বাণীগুলি ছড়ে' থাকা অমোঘতা ভেঙে ডিমে কেন্দ্রিত জাগৃতি করে প্রভাবন, ধরে অনুকাল আকৃতি
নিঃস্ব রাত্রিকে করি জয়-জুলুমত, শরীরে থোকা থোকা ঝুলে থাকে লাল-লাল ফোলা-ফোলা নিদ্রাকুসুম
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
এ লেখার পর 'মমি উপত্যকা'র কবি মুজিব মেহদী ভাইয়ের কাছে জেন কবিদের সম্পর্কে কিছু জানার আব্দার রাখছি। সচলায়তনে আপনার কবিতা পড়তে চাই। পাব?
................................................................................
নোবেল-বুকার নিয়ে এত কেন ফুর্তি করে বোকা পাঠকেরা?মিডিয়ার উলুবনে সবই যেনতেনপ্রকারেণ।
প্রাচ্যের পদক হাতে স্নানে যায় বনলতা সেন।
.....আবু হাসান শাহরিয়ার
____________________________
বন্ধুত্ব মানেই তুমি বিচ্ছেদের চুক্তি মেনে নিলে
[আবু হাসান শাহরিয়ার]
জেন কবিতা অনেক গভীর অনুভূতি নিয়ে খেলা করে। ওগুলো ধরে ওঠবার মতো করে জেনকে এখনো জেনে উঠি নি। আরো সময় লাগবে ওতে উপগত হতে।
জেন কবিদের মধ্যে সবচে খ্যাতিমানদের ক্রমতালিকা এরকম : বোধিধর্ম (ভারত, জন্ম আনুমানিক ৪৭০ খ্রিষ্টাব্দ), ডোজেন (জাপান, জন্ম ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ), তাইজু রয়োকান (ডাকনাম : মহাবোকা, জাপান, জন্ম ১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দ), হোয়াং পো (চীন, মৃত্যু ৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দ), নঅট হান (ভিয়েতনাম, সম্ভবত এখনো জীবিত আছেন), হানশান (চীন, ৬৩০ থেকে ৮৩০-এর মধ্যে জীবিত ছিলেন), প্রমুখ।
কোথাওবা এমনকি হাইকুকেও জেনকবিতাই বলা হয় দেখেছি। সেক্ষেত্রে হাইকুখ্যাত বাশোও (১৬৪৪-১৬৯৪) একজন জেনকবি। কথা বলতে হলে এসব ব্যাপারে আরো একাগ্র হতে হবে। আপাতত সেরকম সময়-সুযোগ নেই। সাধ আছে, সাধ্যে কুলোলে কখনো তাকাব ওদিকে।
আপাতত ইংরেজি ভার্সনে বোধিধর্মের একটা জেনকবিতা পড়ে ফেলা যাক।
You may enter
Bodidharma
Externally keep yourself away from all relationships,
and internally have no pantings in your heart;
when your mind is like unto a straight-standing wall,
you may enter into the Path.
সচলায়তনে শুরুর দিকে কিছু কবিতা পোস্ট করেছি বটে। ব্লগেই পাবেন। তবে খুব কম। এখন যেহেতু জেনগল্প চলছে, চলুক না কিছুদিন। এই সিরিজটা শেষ হলে পরে কবিতা দেব। এখন মাঝেমধ্যে ওপাড়ায় কবিতা পোস্টাচ্ছি। উঁকি দেবার অভ্যেস আছে নাকি ওদিকে?
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
অনেকদিন পর পড়লাম জেনগল্প... ধন্যবাদ।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দুর্দান্ত লাগছে। চলতে থাকুক।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
মুই কী হনুরে জাতীয় সুপিরিয়রিটি কমপ্লেক্স বা অহংবোধ যার নাই, সে ভোগে হীনমন্যতাবোধে। আমরা সবাই বোধ করি দুটোর যে কোন একটা তে ভুগি। আবার অবস্থা সাপেক্ষে একই ব্যক্তি কখনো অহংবোধ কখনো হীনমন্যতাবোধে ভোগেন।
কিন্তু মধ্যবর্তী বোধটা কোনটা ? আদৌ এর অস্তিত্ব আছে কি ? অথবা গান্ধীজীর অহিংসবাদ কি এর মধ্যে পড়ে ?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বড় জটিল জায়গায় সুড়সুড়ি দিয়েছেন।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
মধ্যবর্তী কোনো জায়গা নেই বোধকরি, অন্তত চর্চাযোগ্য। তত্ত্বীয়ভাবে আছে তো অবশ্যই।
মনে হয়, অহিংসবাদেও অহং থাকে, ছিল। এটা বোঝানো যে, আমরা তোমাদের মানি না, কিন্তু দেখ আমরা রক্তও ঝরাই না। আমরা শান্তিপ্রিয়, ভালো।
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
বিরতিটা মোটামুটি দীর্ঘ। তবু ভালো বিলম্বে হলেও ফের জেন গল্প চালু হলো। ধন্যবাদ।
অহংবোধটা বোধকরি মানুষের মজ্জাগত। যত চেষ্টাই করা হোক না কেন। স্থূলভাবে না হোক সূক্ষ্মভাবে হলেও সে মূর্ত হয়ে ওঠে।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
আমার তো মনে হয়, এ জিনিসটা থাকাও জরুরি। প্রশ্নটা মাত্রা নিয়ে। সীমালঙ্ঘিত হলেই বিপদ, ওই রেখায় পা দিতে নেই।
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
গত পরশু ময়মনসিংহ শহরের একটা সাইবার ক্যাফেতে কিছু সময়ের জন্য বসেছিলাম, কিন্তু সচলায়তনে ঢুকে বক্স ছাড়া কিছুই দেখতে পাই নি। অনেক সময় নিয়ে সোলায়মান লিপি ডাউনলোড করে ইনস্টল করলাম, পিসি রিস্টার্ট করলাম, কিন্তু তবু দেখতে পাই নি। বোধকরি ঠিকঠাক ইনস্টল হয় নি।
কাল সব ক্যাফে বন্ধ ছিল। আজ অনেক খুঁজে একটা ফাঁকা জায়গা পেলাম, সচলায়তন পড়াও যাচ্ছে, কিন্তু লাইন বেশ স্লো। তাই সব মন্তব্য ধরে কথা বলার সুযোগ নেই। যাঁরা পড়েছেন ও মন্তব্য করেছেন তাঁদের সবাইকে একত্রে ধন্যবাদ জানাই।
আশা করি ঢাকায় ফিরে কাল রাতে আবার কথা বলতে পারব।
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
সচলায়তনের একটি প্রিয় অঞ্চল আপনার ব্লগ। তাই ফিরে ফিরে আসি। ঢাকায় ফিরে সচলদের সঙ্গে কম কথা বলে আরও একটি লেখা পোস্ট করুন, মুজিব মেহদী। পড়ি।
*******************************
'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত'
-সুভাষ মুখোপাধ্যায়
*******************************
'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত'
-সুভাষ মুখোপাধ্যায়
খুবই প্রেরণাদায়ী আপনার মন্তব্য। ধন্যবাদ, আগ্রহ প্রকাশের জন্য। নতুন পোস্ট দিয়েছি, পড়ুন।
বস্তুতপক্ষে আমার কোনো তাড়াহুড়ো নেই, ধীরেসুস্থে যতদূর পারা যায় কাজেই লিপ্ত থাকি। যদিও জানি সময় এগিয়ে যাচ্ছে মাপা ছন্দে, অপেক্ষা করে নেই আমার বা অন্য কারো জন্য।
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
নতুন মন্তব্য করুন