১৯৭১ সালের আগস্ট মাস; এক ভয়াল সময় অতিক্রম করছে বাংলাদেশের অগণিত মানুষ। বিশ্বের বৃহৎ পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলি বাংলাদেশে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর গণহত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞের ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে না। বাংলাদেশের মানুষের যৌক্তিক দাবী দমন করার জন্য পাকিস্তানী সামরিক সরকার বেছে নিলো নির্মম সামরিক আক্রমণের পথ; অজস্র বাঙালী তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে, কেবল প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিলো। শুরু হলো বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম। অথচ ক্ষমতাধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের এই প্রান্তে নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব টিকিয়ে রাখার জন্য নতুন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আবির্ভাবের বিরোধিতায় ব্যস্ত। বাংলাদেশের শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য, বাঙালী মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন করার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তখন নিক্সন প্রশাসনের চক্ষুশূল। বাংলাদেশের মানুষের ওপর বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী একটি সামরিক বাহিনীর আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য ভূমিকা রাখার পরিবর্তে, বহু বাঙালী শরণার্থীর দুর্দশা দেখার পরও ভারত কেন বাঙালী গেরিলাদের সমর্থন করছে তার সমালোচনা তুলে ধরতেই মার্কিনি, বৃটিশ প্রশাসনের যেন আগ্রহ বেশি। বাঙালী মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সীমিত সামর্থ্য আর অসীম মনোবল নিয়ে যুদ্ধ করে চলেছে। সাফল্য আসে, আর সাথে সাথে আসে গভীর বেদনা, কারণ এই সাফল্যের জন্য দিতে হয় অনেক বড় মূল্য। বৃহৎ আন্তর্জাতিক শক্তির বৈরী মনোভাব যুদ্ধ আর দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কেবল অতিরিক্ত উদ্বেগ আর উৎকন্ঠাই সৃষ্টি করছিলো বাংলাদেশের মানুষের জন্য ১৯৭১-এর মাঝামাঝি সেই শান্তিহীন সময়ে।
এমন পরিস্থিতিতেই ১৯৭১ সালের পহেলা আগস্ট বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি বিরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই আয়োজন করা হয় এক অসাধারণ কনসার্ট, যা ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে বিভিন্ন কারণে। এর আগে কখনো একদল অসম্ভব খ্যাতিমান এবং বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী কোন দেশকে সাহায্য করার জন্য একসাথে কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি; ইতিহাসে এমন কনসার্ট এই প্রথম। এই কনসার্ট অগণিত মানুষের সামনে তুলে ধরে সঙ্গীত আর শিল্পের শক্তি, যে শক্তি অতিক্রম করে যায় অনেক রাজনৈতিক শক্তিকেও। নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়্যার গার্ডেনে উপস্থিত হওয়া বহু মার্কিন তরুণ-তরুণী দেখতে পান তাদের প্রিয় সঙ্গীতশিল্পীরা তুলে ধরছেন মানবতা আর বর্বরতার পার্থক্য, আর তাঁরা সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন অসহায়, অত্যাচারিত মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য যখন তাদের দেশের সরকারকে বহু নিপীড়িত মা আর শিশুর ক্রন্দন স্পর্শ করছে না। রবি শঙ্কর কনসার্টে আসা অসংখ্য দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা কোন রাজনীতি করতে আসিনি; আমরা শিল্পী। আমরা শুধু আমাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে সমবেত হয়েছি। আমরা চাই আমাদের সঙ্গীত আপনাদের বাংলাদেশের মানুষের তীব্র বেদনা আর মনোযন্ত্রণা অনুভব করতে সাহায্য করুক”। এই কনসার্ট তাই ছিল এক প্রতিবাদী কনসার্ট, মানবতা আর কল্যাণের পক্ষে আর অশুভত্ব আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক সাহসী কনসার্ট। বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীরা কেউ কেউ কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে নিউ ইয়র্কে আসেন এই কনসার্টে অংশ নিতে, বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক গ্রহণ করেননি তাঁরা। ষাটের দশকের শেষ দিক থেকেই এক ধরনের বিমর্ষতা গ্রাস করেছিল পশ্চিমী রক আর পপ সঙ্গীতের জগৎকে; সঙ্গীতশিল্পীদের অনেকে ‘হার্ড ড্রাগ্স’-এ অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়েন; মারা যান জিমি হেনড্রিক্স আর জ্যানিস জপলিন-এর মতো প্রতিভাবান সঙ্গীতশিল্পী। কিংবদন্তী হয়ে ওঠা ‘বিটলস’ ব্যান্ডও আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙ্গে যায় এই সময়ে। ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর প্রশংসনীয় উদ্যোগ আর শুভত্ব পশ্চিমী রক আর পপ সঙ্গীত জগতে জমে থাকা গ্লানি, বিষণ্ণতা আর মলিনতাকে অনেকখানি মুছে দেয়। সঙ্গীতশিল্পীরা তাঁদের কর্তব্যবোধ, সাহস আর মহানুভবতার প্রমাণ তুলে ধরেন এই কনসার্টটির মধ্য দিয়ে। মানবতার প্রয়োজনে, এক মহান উদ্দেশ্যে সঙ্গীত ব্যবহারের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয় সেই দিন। ১২ আগস্ট ১৯৭১ তারিখে কনসার্টটি থেকে প্রাপ্ত প্রায় আড়াই লক্ষ ডলার বাঙালী শরণার্থী শিশুদের জন্য জাতিসংঘের রিলিফ ফান্ডে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু অর্থ প্রদানের চেয়েও অনেক বেশি সহায়তা করা হয় এই কনসার্টের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আর এই দেশের মানুষের ওপর ঘটতে থাকা অন্যায়-এর বিরুদ্ধে পশ্চিমী বিশ্বে বিশেষ করে তরুণদের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে। জর্জ হ্যারিসন যেমন বলেছিলেন, "অর্থ নয়, বরং গণমানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য, কারণ যতো টাকাই আমরা তুলি না কেন তা দিয়ে তো আর বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যার সমাধান করা যাবে না।" এই কনসার্ট, আর অসাধারণ আবেগ নিয়ে গাওয়া জর্জ হ্যারিসনের ‘বাংলাদেশ’ গানের মধ্য দিয়ে রাতারাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশকে কেন সমর্থন দেয়া জরুরি এই বক্তব্যটিই বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যায় এই অনুষ্ঠানটির মধ্য দিয়ে। যে কিংবদন্তী-প্রতিম সঙ্গীতশিল্পীদের গান মুগ্ধ করে রেখেছিল কোটি কোটি ভক্তদের, বাংলাদেশের জন্য সেই সঙ্গীতশিল্পীদের সমবেত হওয়ার শক্তি ১৯৭১ সালের পহেলা আগস্টের পর থেকে যুক্ত হয় বাংলাদেশর মানুষের মুক্তিসংগ্রামের সাথে। ইতিহাস হয়ে থাকা সেই কনসার্টটির চল্লিশ বছর পূর্তির এই দিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেদিন সেই অনুষ্ঠানটিকে সফল করে তোলার জন্য পরিশ্রম করা প্রতিটি মানুষকে।
১৯৬৫ সালে রবি শঙ্করের সাথে পরিচয় হওয়ার পর ভারতীয় সঙ্গীত আর আধ্যাত্মিকতার গভীর অনুরাগী জর্জ হ্যারিসন সিতার বাজানো শিখতে শুরু করেন রবি শঙ্করের কাছে। নিজ আত্মজীবনীতে জর্জ হ্যারিসন উল্লেখ করেছেন একদিন টেলিফোন ধরার জন্য তিনি যখন সিতার ডিঙ্গিয়ে টেলিফোনের কাছে যাচ্ছিলেন তখন রবি শঙ্কর তাকে থামান এবং বলেন যে বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আরো বেশি সম্মান দেখানোর ব্যাপারটি তাকে অনুধাবন করতে হবে। এক গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল দুই দেশের এই দুই সঙ্গীতশিল্পীর মাঝে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রবি শঙ্করের পরিকল্পনা আর অনুরোধ থেকেই জর্জ হ্যারিসন ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজনে এগিয়ে আসেন। রক সঙ্গীতের স্থবির এক সময়ে এতো বিশাল একটি অনুষ্ঠান অল্প সময়ে সফলভাবে আয়োজন করা কোনভাবেই সহজ ছিল না। জর্জ হ্যারিসন ১৯৭১-এর পুরো জুন মাস আর জুলাই মাসেরও অর্ধেক সময় কেবল বিভিন্ন সঙ্গীতশিল্পীদের সাথে যোগাযোগ করে কাটান। ১৯৭০-এর এপ্রিলে বিটলস ভেঙ্গে যাওয়ার পর সব বিটলরাই তখন কেবল নিজ নিজ গান রেকর্ড করছেন। বিটলস সদস্যদের একসাথে থাকার বিখ্যাত বছরগুলিতে জন লেনন আর পল ম্যাকার্টনির ছায়ায় অনেকটাই আড়ালে থাকতেন জর্জ হ্যারিসন; এজন্য তার নামও হয়েছিল ‘চুপচাপ বিটল’। কিন্তু ব্যান্ড ভেঙ্গে যাওয়ার পর হঠাৎই অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন জর্জ হ্যারিসন। ১৯৭০ সালেই তার ‘অল থিংস মাস্ট পাস’ অ্যালবামটি ব্যাপক সাফল্য পায়; বলা হতে থাকে আগে বিটলস ব্যান্ডের নামে যে উন্মাদনা দেখা যেতো এখন সেই একই উন্মাদনা যেন জর্জ হ্যারিসনকে ঘিরে শুরু হয়েছে। হ্যারিসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কনসার্টে অংশ নিতে এগিয়ে আসেন আরেক বিটল রিঙ্গো স্টার, মার্কিন গায়ক লিওন রাসেল আর বিলি প্রেস্টন, বিশ্বের অন্যতম সেরা গিটারিস্ট এরিক ক্ল্যাপটন, ষাটের দশকের পশ্চিমী সঙ্গীত জগতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অন্যতম বব ডিলান। আরো আসেন বিখ্যাত জার্মান সঙ্গীতশিল্পী ক্লাউস ভুরম্যান, ড্রামার জিম কেল্টনার, গিটারিস্ট ডন প্রেস্টন আর কার্ল রেডল্, বৃটিশ রক ব্যান্ড ‘ব্যাডফিঙ্গার’-এর সব সদস্য; এছাড়াও জিম হর্নের নেতৃত্বে ‘হলিউড হর্নস’ দলের সদস্যরা এবং অন্যান্য আরো অনেক সঙ্গীতশিল্পী যারা অনুষ্ঠানে কন্ঠ দিয়েছেন। আর কনসার্টের প্রথম পর্বের আকর্ষণ হিসেবে থাকেন বিখ্যাত ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পীরা --- রবি শঙ্কর, ওস্তাদ আলী আকবর খান, আল্লাহ্ রাখা। জিম কেল্টনারের বর্ণনা অনুযায়ী সবাই এই অনুষ্ঠানের অংশ হতে আগ্রহী ছিলেন, সবাই আন্তরিক ছিলেন সাহায্য করার জন্য। সব মিলিয়ে এই কনসার্ট হয়ে ওঠে এক বিশাল আয়োজন, লিওন রাসেলের ভাষায়, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত উঁচু মানের এক অভিজ্ঞতা। এই কনসার্টের টিকিট বিক্রী শুরু হবার বহু আগে থেকেই টিকিট কেনার জন্য দর্শকদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়।
এমন বিশাল আয়োজন এই বিখ্যাত মিউজিশিয়ানদেরও মানসিক চাপে ফেলে দিয়েছিলো। অনুষ্ঠানের আগে যখন জর্জ হ্যারিসনকে প্রশ্ন করা হয় এই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ তিনিই হবেন, এই ব্যাপারে তিনি কেমন বোধ করছেন, তখন জর্জ হ্যারিসন বলে ওঠেন ‘নার্ভাস’। বব ডিলান অনুষ্ঠানের আগের দিন ম্যাডিসন স্কোয়্যার গার্ডেনে এসে চারদিকের বিশাল সব ক্যামেরা আর অসংখ্য মাইক্রোফোন দেখে অস্বস্তিতে পড়ে যান। তিনি জর্জ হ্যারিসনকে বলে ওঠেন, সেখানে তার পক্ষে গান গাওয়া সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানের দিন ডিলান দর্শকদের সামনে এসে না দাঁড়ানো পর্যন্ত জর্জ হ্যারিসন সহ অন্যান্যরা সন্দেহে ছিলেন যে ডিলান আদৌ গান করতে আসবেন কী না। জর্জ হ্যারিসন ব্যাডফিঙ্গার ব্যান্ডের পিট হ্যামকে সঙ্গে নিয়ে দর্শকদের প্রচন্ড উল্লাসের মাঝে ‘হিয়ার কামস দ্য সান’ গানটি শেষ করার পর বার বার পেছন ফিরে তাকান দেখার জন্য যে ডিলান স্টেজে উঠে আসছেন কী না। ডিলান দর্শকদের সামনে এসে দাঁড়ান তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে, কিন্তু জর্জ হ্যারিসন তাকে দেখেই বুঝতে পারেন যে তখনও ডিলানের ভীতি পুরোপুরি কাটেনি। লিওন রাসেল অবশ্য দারুণভাবে নিজেকে চাপমুক্ত রাখার পথ বের করে নেন। রাসেল শুরুতে ভেবেছিলেন যে তিনি খুব নার্ভাস থাকবেন, কিন্তু চারদিকে এতো বিখ্যাত সব মিউজিশিয়ানদের দেখে রাসেল খুব হালকা বোধ করতে থাকেন, কারণ এতো বিখ্যাত শিল্পীদের মাঝে তার ওপর আলাদা করে তখন আর কোন চাপ নেই। এরিক ক্ল্যাপটন প্রায় আড়াই বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে এই কনসার্টে অংশ নেন। বিখ্যাত সব শিল্পীদের মাঝে তার নিজেকে মনে হচ্ছিলো, তিনি যেন ‘নাইট’-দের মাঝে তাদের সহকারী গোছের কেউ। বিলি প্রেস্টনও এই কনসার্টে অংশ নিতে আনন্দের সাথে রাজী হয়ে যান, কারণ এখানে এমন সব শিল্পীদের সাথে তিনি অংশ নেবেন যাদের সাথে সচরাচর একসাথে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায় না। বিটলস ব্যান্ডের সদস্য না হয়েও প্রথম শিল্পী হিসেবে বিটলস্-এর গানে অবদান রাখার স্বীকৃতি পাওয়া বিলি প্রেস্টন তার এই আনন্দ প্রকাশ করেন, কনসার্টে তার ‘দ্যাটস্ দ্য ওয়ে গড প্ল্যানড ইট’ গানটি গাওয়ার এক পর্যায়ে স্টেজে উদ্দাম ভাবে নাচার মধ্য দিয়ে। সঙ্গীতশিল্পীদের এমন মনোভাব এটাই প্রমাণ করে যে এই অনুষ্ঠানটি তাঁদের কাছে কতোটা গুরুত্ববহ ছিল; আর নিজেদের সব ব্যক্তিগত অহংবোধকে দূরে সরিয়ে রেখে এই বিখ্যাত শিল্পীরা পরস্পরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এক মানসিকতা নিয়েই অংশ নিয়েছেন এই কনসার্টটিতে। জর্জ হ্যারিসনও পরবর্তীতে উল্লেখ করেছেন এই কথাই যে তাঁদের মাঝে এমন মনোভাবই সেদিন কাজ করেছে যে তাঁদের সবার চেয়েও সেদিন অনেক বড় ছিল পুরো অনুষ্ঠানটি।
কনসার্টে পুরো সময় জুড়েই দর্শকরা ছিলেন গভীরভাবে উচ্ছ্বসিত আর প্রাণবন্ত। দর্শকদের দারুণ উৎসাহের প্রকাশ স্পষ্ট হয় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বেই। ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত রক সঙ্গীতের ভক্তদের জন্য অনেক বেশি গম্ভীর ধাঁচের সঙ্গীত। জর্জ হ্যারিসন আর রবি শঙ্কর এই পার্থক্যের কথা দর্শকদের সামনে তাঁদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন। রবি শঙ্কর এই পর্বে দর্শকদের ধুমপান না করতেও অনুরোধ করেন। তুমুল হাততালির মধ্য দিয়ে দর্শকরা রবি শঙ্করের উদ্বোধনী বক্তব্যকে স্বাগত জানায়। এর পর তিন বিখ্যাত ভারতীয় শিল্পী অল্প কিছুক্ষণ তাঁদের বাদ্যযন্ত্রগুলির সুর ঠিকঠাক করার পরপরই আবার শোনা যায় তুমুল হাততালি; বোঝা যায় পশ্চিমের এই তরুণ দর্শকরা সিতার-সরোদ-তবলা-তানপুরার শব্দ কতোটা পছন্দ করেছে।
রবি শঙ্কর হাসতে হাসতে দর্শকদের উদ্দেশ্যে মাইকে বলে ওঠেন: “ইফ ইউ অ্যাপ্রিশিয়েট দ্য টিউনিং সো মাচ, আই হোপ ইউ উইল এনজয় দ্য প্লেয়িং মোর!" রবি শঙ্কর-আলী আকবর খান-আল্লাহ্ রাখা আর তানপুরায় কমলা চক্রবর্তীর অংশগ্রহণে বেজে ওঠে ‘বাংলা ধুন’ – বাংলাদেশের লোকসঙ্গীতের এক অনন্য সুর। বাংলার গ্রামের সবুজ প্রান্তরের সৌন্দর্য আর সারল্য ভরা জীবনের ছবি যেন স্পষ্ট ভেসে ওঠে সঙ্গীতের মূর্ছনায় বাংলাদেশ থেকে বহু দূরে নিউ ইয়র্কের এক ভিন্ন পরিবেশে। দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে নীরবভাবে শোনেন সেই সুর; চোখের সামনে দেখতে পান কী করে সিতার-সরোদ-তবলা-তানপুরা যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে এই গুণী শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায়।
এরকমভাবে আরেকবার সুরের মূর্ছনা যেন মন্ত্রমুগ্ধ করে তোলে ম্যাডিসন স্কোয়্যার গার্ডেনের অসংখ্য দর্শককে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে, জর্জ হ্যারিসনের বিখ্যাত ‘হোয়াইল মাই গিটার জেন্টলি উইপস’ গানটির সময়। এই গানের লীড গিটারের অংশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, প্রয়োজন ছিল এমন একজন গিটারিস্টের যিনি গিটারের সুরকে কিছুটা বিষাদমগ্ন আবার একই সাথে আন্দোলিত আর অস্থির করে তুলতে পারবেন। এই কঠিন কাজটির দায়িত্ব সেদিন পালন করেন এরিক ক্ল্যাপটন; আর যারা কনসার্টটি দেখেছেন তারা জানেন যে কতোটা অসাধারণভাবে এরিক ক্ল্যাপটন সেদিন এই কঠিন কাজটি সম্পন্ন করেছিলেন, এই গানটির সময় তাঁর গিটারের সুরলহরী কতোটা স্পন্দনময় হয়ে উঠেছিল। অথচ এরিক ক্ল্যাপটনের এই কনসার্টে অংশগ্রহণ করা নিয়েই তৈরি হয়েছিল অনেক সংশয়। ষাটের দশকের শেষ ভাগে রক সঙ্গীতের মন্থর সেই সময়ে ক্ল্যাপটনও হয়ে পড়েছিলেন অনেকটা নির্জীব; প্রায় আড়াই বছর তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। সেই মানসিক অবস্থায় লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে এসে কনসার্টে অংশ নেয়া তাঁর জন্য সহজ ছিল না। কনসার্টের অল্প ক’দিন আগে জর্জ হ্যারিসন অনেকটা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন একজন গিটারিস্টের জন্য; বহু আগ্রহী গিটারিস্ট সেই সময় এসে ভিড় জমায় অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য। জর্জ হ্যারিসন মার্কিন গিটারিস্ট জেসি এড ডেভিস কে বেছে নেন; তিনি ব্লুজ সঙ্গীতশিল্পী তাজ মহল এর সাথে কাজ করেছেন, কাজ করেছেন জর্জ হ্যারিসন এবং জন লেননের নিজস্ব অ্যালবামেও। কনসার্টে জেসি এড ডেভিস অন্যতম গিটারিস্ট হিসেবে অংশ নেন। কিন্তু অনুষ্ঠানের ক’দিন আগে ঠিকই নিউ ইয়র্কে পৌঁছে যান এরিক ক্ল্যাপটন। পরবর্তীতে ক্ল্যাপটন বলেছেন, সেই সময় নিউ ইয়র্কে যাওয়া তার জন্য অনেক কঠিন হলেও অন্যান্য সঙ্গীতশিল্পীরা যেভাবে তাঁদের নিয়মিত কাজের বাইরে যেয়ে এই কনসার্টে অংশ নিয়েছেন, সেই দৃষ্টান্তই তাকে উদ্বুদ্ধ করেছে বাড়তি প্রচেষ্টা ব্যয় করে এই কনসার্টে অংশগ্রহণ করতে।
এরিক ক্ল্যাপটন কনসার্টের জন্য কোন রিহার্সেল-এও অংশ নিতে পারেননি; কিন্তু কোন প্রস্তুতি না নেয়ার পরও গিটার হাতে তার অনুপম পারফরম্যান্স অভিভূত করে দর্শকদের, এবং অন্য শিল্পীদেরও। ‘হোয়াইল মাই গিটার জেন্টলি উইপস’ গানটির জন্য তিনি ব্যবহার করেছিলেন একটি সেমি-অ্যাকুউসটিক গিটার। কিন্তু এমন একটি গানের জন্য তিনি সঠিক গিটার বাছেননি; পরে তিনি বলেছেন, তার উচিৎ ছিল একটি ফেন্ডার বা সলিড গিবসন গিটার ব্যবহার করা; সেমি-অ্যাকুউসটিক গিটার বেছে নিয়ে তিনি নিজের জন্য কাজটা অনেক বেশি কঠিন করে ফেলেছিলেন। কিন্তু এরিক ক্ল্যাপটনের মতো একজন শিল্পীর পক্ষে যে কোন পরিস্থিতিতেই যে গিটারের সুরকে অসাধারণ আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব সেদিন তাঁর কাজ তাই প্রমাণ করে।
জর্জ হ্যারিসন তাঁর বিভিন্ন বিখ্যাত গান যেমন ‘ওয়াহ্-ওয়াহ্’, ‘মাই সুইট লর্ড’, ‘বিওয়ের অফ ডার্কনেস’ একে একে পরিবেশন করেন; নিজের জনপ্রিয় গানগুলি নিয়ে বব ডিলান আসেন অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে। হাজার হাজার দর্শক উপভোগ করেন সেই দৃশ্য – ডিলান তাদের সামনে দাড়িয়ে গাইছেন তাঁর বিখ্যাত গান ‘ব্লোয়িং ইন দ্য উইন্ড’। ডিলানের ‘জাস্ট লাইক আ ওম্যান’ গানটির সময় গিটার হাতে তাঁর একপাশে দাড়ান জর্জ হ্যারিসন, আর অন্যপাশে ক্লাউস ভুরম্যানের নানা-নকশা-আঁকা রঙীন বেস গিটারটি নিয়ে দাঁড়ান লিওন রাসেল। কনসার্টে হ্যারিসন আর ডিলানের গানের মাঝে শোনা যায় রিঙ্গো স্টারের কন্ঠে ‘ইট ডোন্ট কাম ইযি’; আর পিয়ানোর সামনে চুপচাপ বসে থাকা লিওন রাসেল গেয়ে ওঠেন দ্রুত তালের ‘জামপিং জ্যাক ফ্ল্যাশ’ গানটি। এই গানটির সময়ই সব মিউজিশিয়ানদের সবচেয়ে বেশি উৎফুল্ল হতে দেখা গিয়েছিল। বিলি প্রেস্টন আর লিওন রাসেলের পিয়ানো, বিভিন্ন ধরনের গিটার, রিঙ্গো স্টার আর জিম কেল্টনারের ড্রাম আর বিভিন্ন হর্ন ইন্সট্রুমেন্টের মাধ্যমে পুরো কনসার্টে যে সঙ্গীত তৈরি করা হয়, তা ছিল অদ্ভুত চিত্তাকর্ষক। ধীরে ধীরে কনসার্টটি তার শেষ ভাগে চলে আসে। জর্জ হ্যারিসনের ‘সামথিং’ গানটির পর সব মিউজিশিয়ানরা স্টেজের পেছনে চলে যান; কিন্তু কিছু পরই তাঁরা আবার ফিরে আসেন। এবং তারপরই জর্জ হ্যারিসন গেয়ে ওঠেন এই অনুষ্ঠানের জন্য তাঁর নিজের লেখা বিশেষ গান, ‘বাংলাদেশ’; লিওন রাসেল তাঁকে বলেছিলেন গানটির শুরুতে একটি ছোট ভূমিকা দেয়ার জন্য; জর্জ হ্যারিসন রাসেলের পরামর্শটি পছন্দ করেছিলেন, এবং সেভাবেই গানটি শুরু হয় – “মাই ফ্রেন্ড কেম টু মি, উইথ স্যাডনেস ইন হিজ আইস; টোল্ড মি হি ওয়ানটেড হেল্প, বিফোর হিজ কান্ট্রি ডাইজ…”। জর্জ হ্যারিসনের বিখ্যাত কন্ঠে সেদিন অজস্র দর্শক এবং পরবর্তীতে সারা বিশ্বের অগণিত মানুষ শুনতে পান সেই অসাধারণ গান। এই মহৎ অনুষ্ঠানের আয়োজন, এর মাধ্যমে অন্যায় এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং মানবতার বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দেয়া, আর এমন একটি অনুষ্ঠান শেষ হয় মনকে গভীরভাবে স্পর্শ করে যাওয়া এই গানের মধ্য দিয়ে। এই কনসার্টের ২০ বছর পর, ১৯৯১ সালে প্রথম এই ‘বাংলাদেশ’ গানটি দেখি বিটিভিতে। মনে আছে, কী প্রচন্ডভাবে আলোড়িত হয়েছিলাম গানটি শুনে, শরীরে যেন কাঁটা দিয়ে উঠেছিল। পরে সমবয়সী বন্ধুরাও বলেছিল যে তাদেরও সেই একই অনুভূতি হয়েছে গানটি দেখার পর। এর পর পেরিয়ে গেল আরো ২০টি বছর। এখনও যখন গানটি শুনি, আলোড়িত হই। জানি যে, আগামীতেও হবো; গানটি এভাবেই মন স্পর্শ করে যাবে সবসময়। আর চিরদিন মনে থাকবে এই বিশেষ কনসার্টটির কথা, আর সেই সঙ্গীতশিল্পীদের কথা যাঁরা ১৯৭১-এ সেই সংকটময় সময়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাংলাদেশের পাশে।
*লেখায় ব্যবহার করা সঙ্গীতশিল্পীদের বিভিন্ন বক্তব্য ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ রিভিসিটেড: উইথ জর্জ হ্যারিসন অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ তথ্যচিত্র থেকে সংগ্রহ করা।
মন্তব্য
অত্যন্ত স্মৃতি জাগানিয়া এই বিষয়ে চমৎকার এই লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ! সচলায়তনের ব্যানার শিল্পীদের এ বিষয়ে ব্যানার করতে অনুরোধ জানাই।
কনসার্টের চল্লিশ বছর পূর্তির দিনে এই লেখাটি লিখতে পেরে আমারও খুব ভাল লেগেছে। আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।
দারুণ একটি পোস্টের জন্য সাধুবাদ।
অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো।
চমৎকার লেখা, অসাধারণ
ধন্যবাদ, অনেক ধন্যবাদ...সেই কনসার্টটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য! জর্জ হ্যারিসনের "বাংলাদেশ" শুনলে রক্ত গরম হয়ে ওঠে...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
ব্যাকগ্রাউন্ডের এতকিছু জানতাম না! সেগুলো লেখার জন্যও ধন্যবাদ!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।
একটা তথ্য যোগ করি, বাংলা ধুন কম্পোজিশনটা এই অনুষ্ঠান উপলক্ষেই সৃষ্টি করা হয়েছিলো।
...........................
Every Picture Tells a Story
কিছু ক্লিপিংস্ দিলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
অনেক ধন্যবাদ এই ভিডিও ক্লিপগুলোর জন্য।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
চমৎকার এই বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্যে ধন্যবাদ জুনাইদ ভাই।
অনেক ধন্যবাদ, সুহান।
লেখাটা আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
খুব ভালো লাগলো, লিখাটা পড়ে আমার গায়ে কেমন যেনো কাটা দিয়ে উঠলো শেষ প্যারাটায় এসে।
চমৎকার একটা লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
যারা কনসার্টটি দেখেননি তাদের জন্য:
কনসার্টের ভিডিও ক্লিপটি যুক্ত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এই লেখাটির জন্য কৃতজ্ঞতা।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ।
কি কাকতালীয় ব্যাপার, সাত দিন আগেও এমন এক লোককে দেখলাম যিনি বলেছিলেন যে ১৯৭১ এ জর্জ হ্যারিসনের সেই কনসার্ট এ গিয়েছিলেন ! আমার কাছে লোকটির ছবিও আছে, মন্তব্যে ছবি অ্যাড করতে হয়ে কিভাবে আমি জানিনা বলে দিতে পারছিনা।
পড়াচোর।
চমৎকার লেখাটির জন্য ক্তজ্ঞতা
অনেক ধন্যবাদ। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে, এজন্য আনন্দিত বোধ করছি।
সোনার ফ্রেমে রাখার মত পোস্ট। আপাতত প্রিয়তে রাখলাম।
আমি মডু হলে নাদির জুনাইদের অতিথি অলংকারটা কেটে দিতাম।
মুস্তাফিজ ভাইকে ধন্যবাদ অজানা তথ্যটি শেয়ার করার জন্য।
এই পোস্টে কনসার্টের ভিডিওটি যোগ করে ষোলকলা পূর্ণকরার জন্য ধন্যবাদ দ্রোহী ভাইকে।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ। লেখাটা আপনার ভাল লেগেছে জেনে অনেক আনন্দিত হলাম।
এক কথায় চমৎকার লাগল
এখানে কিছু ছবি আছে
...........................
Every Picture Tells a Story
খুবি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট! দ্রোহীদার ভীডীওটা দেখে অনেক কিছু জানলাম
ইন্দিরা গান্ধীর সন্মানে যে পুরুস্কারটা দেয়া হয়েছে এরকম পুরুস্কার জর্জ হেরিসন এবং রবি শঙ্করকে দেয়ার আবেদন জানাই
মাহমুদ.জেনেভা
সিম্পলি আউটষ্ট্যান্ডিং একটা পোষ্ট! অসাধারন। আপনাকে সাধুবাদ জানাই!
অনেক ধন্যবাদ।
চমৎকার এবং তথ্যবহুল একটা পোস্ট।
কানা
অনেক ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার এই লেখাটির জন্য।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।
অসাধারণ ! তথ্যসমৃদ্ধ মন্তব্যগুলোসহ একটি পূর্ণাঙ্গ পোস্ট !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
অনেক ধন্যবাদ।
এই অসাধারণ তথ্যবহুল লেখাটার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
লেখাটা আগামী ৪৮ ঘন্টা স্টিকিতে রাখলে খুব খুশি হব।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ জানাই। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে আনন্দিত বোধ করছি।
স্টিকি করা হলো।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার লেখা। গভীর শ্রদ্ধা রইল শিল্পীদের প্রতি।
ধন্যবাদ।
কন্সার্টের গান গুলো অনেক বার শুনেছি কিন্তু পেছনের বিষদ তেমন কিছু জানা ছিল না।
অনেক কিছু জানা হল নতুন করে।
অনেক ভাল্লাগলো।
ধন্যবাদ।
আমার নেট জীবনে কোন পোষ্টে এতক্ষণ থাকিনি।
অনেক ধন্যবাদ। লেখাটা আপনার ভাল লেগেছে, এজন্য আনন্দিত বোধ করছি।
অসাধারণ তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। পড়ে অনেককিছু জানতে পারলাম।
আর যারা বিভিন্ন ভিডিওক্লিপিংস শেয়ার করেছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
অনেক ধন্যবাদ।
চমৎকার!
অনেকদিন পরে লিখলেন।
হ্যারিসনের 'বাংলাদেশ' যতবারই শুনি একই অনুভূতি হয়...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অনেক ধন্যবাদ। হ্যাঁ, বেশ ক'মাস পর আবার লিখলাম।
কনসার্ট ফর বাংলাদেশের সাথে জড়িত সব কলাকুশলীদের প্রতি থাকলো গভীর শ্রদ্ধা! পোষ্ট লেখকের প্রতি অভিনন্দন এবং কৃতজ্ঞতা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
লেখাটা পরে মন ভাল হয়ে গেল, এই রকম একটা মারাত্মক ভাল পোস্টের জন্য আপনাকে "পূর্ণ সচল" দেবার দাবী জানাই, মডু প্যানেলের কাছে
লেখাটা পড়ে আপনার মন ভাল হয়ে গেল, একথা জেনে অনেক আনন্দিত বোধ করছি।
অনেক ধন্যবাদ।
অসাধারন লেখা। অনেক কিছু জানলাম। গান বাজনা নিয়ে মেতে থাকা ছোট ভাই গুলোর ফেইসবুকে ওয়ালে পোস্ট করে দিলাম।
অনেক ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এতো চমৎকার তথ্যসমৃদ্ধ একটা লেখার জন্য। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ভিডিও গুলোর জন্য আলাদা ধন্যবাদ জানাই। তথ্যচিত্রটা দেখার ইচ্ছা রইলো।
আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।
অত্যন্ত তথ্যবহুল পোস্ট। শেয়ার দিলাম।
যুক্তরাষ্ট্রে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমার এক বন্ধু অংশ নিচ্ছে। আশা করি, এ বিষয়ে সে কিছু লিখবে।
অলস সময়
অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।
তারা আসলেই শিল্পী, তাদের এ অনন্য অর্জন তাদের এত মহৎ করে তুলেছে তারা হয়তো চিন্তাও করতে পারবে না; বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে কৃতজ্ঞতার নাগপাশে জড়িয়ে ফেলেছে এ মানুষগুলো....অনাগত সব শিশুরাও চিরকাল স্মরণ করবে এ মহাবীরদের....সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে এ দিনটিকে কেন্দ্র করে এ সব বীরদের জাতীয় সম্মাননায় ভূষিত করার মধ্য দিয়ে আমাদের কর্তব্যটুকু তো আমরা করতে পারি...........
পোস্টটা চমৎকার হয়েছে
ধন্যবাদ।
কেবল লেখা হিসেবেই মনছোঁয়া। আর এমন একটি আয়োজনের নেপথ্যের যেসব তথ্য আপনি এই লেখায় দিয়েছেন, তাও আমাকে অভিভূত করেছে, স্যার। জর্জ হ্যারিসনের 'বাংলাদেশ বাংলাদেশ' শুনে যেমন গা শিউরে ওঠে, তেমনি 'বাংলা ধুন' পরিবেশনা নিয়ে আপনার লেখার অংশটুকু পড়ার সময় আমার মন জুড়িয়ে গিয়েছিল। এ লেখা বহুবার পড়া যায়। কনসার্ট ফর বাংলাদেশ নিয়ে আমার পড়া সেরা লেখা এটি। অনেক ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন