আধুনিক মানুষ(প্রচলিত অর্থে বলতে চাইছি – কেননা প্রকৃত অর্থে আধুনিক মানুষের সঙ্গা ও মানদন্ড নিয়ে বিস্তর বিতর্কের অবকাশ রয়েছে) তার যাপিত জীবনে যে সব শব্দ ব্যবহার করে এসেছে নিঃসঙ্গতা শব্দটি তার মধ্যে সবচেয়ে বায়বীয়। ইংরেজীতে নিঃসঙ্গতার বিকল্প হিসেবে solicitude, loneliness জাতীয় নানা গালভরা শব্দ থাকলেও বাংলায় এর সমকক্ষ কোন শব্দ নেই; মাঝেমাঝে নির্জনতা শব্দটি এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেখি(স্মরনীয়ঃ হুমায়ুন আহমেদ এককালে “জনতার মাঝেই আছে নির্জনতা” বাক্যটি দিয়ে পাঠক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন; আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অনুপ্রাসের লোভ সামলাতে না পেরে তিনি নিঃসঙ্গতার পরিবর্তে নির্জনতা শব্দটি বেছে নিয়েছিলেন যদিও তাতে পুরো বাক্যটি ব্যর্থ হয়েছে)। ব্যকরনগতভাবে নির্জন স্থানবাচক বিশেষণ আর নিঃসংগ ব্যক্তিবাচক বিশেষণ;উপলব্ধিগতভাবে নির্জনতা পরিবেশগত আর নিঃসঙ্গতা হৃদয়ঘটিত।
সাধারনের চোখে গুরুত্বহীন হলেও মানুষের আবেগ নিয়ে যারা বাণিজ্য করেন(কথাটা পড়তে খারাপ লাগলেও নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে প্রিন্ট বা দূরদর্শনের সকল অনুষ্ঠানের মূল উপজীব্য আবেগ,তাই এদের আবেগের ফেরিওয়ালা ছাড়া অন্য কিছু বলার উপায় নেই)তাদের কাছে লোভনীয় এক বিজ্ঞাপন নিঃসঙ্গতা। নিঃসঙ্গতা মানে সংগীহীনতা এতে আশা করি কারো মতভেদ নেই, থাকার কথাও নয়। তবে সংগী হিসেবে কে কাকে ভাবছেন এটি কিন্তু গুরুত্বপূর্ন। প্রকৃতিপ্রেমিক একজন মানুষ যদি দৈবক্রমে কোন গহীন বনে নির্বাসিত হোন- তাহলে তাকে নির্বাসিত বলা যাবে কিনা এতে আমার সন্দেহ রয়েছে। আগেই বলেছি ব্যাপারটি মনোগত তাই সংগী হিসেবে স্পর্শযোগ্য বা সজীব কিছুর অস্তিত্ব বা অনুপস্থিতি এ ব্যাপারটিকে প্রভাবিত করে না।মিডিয়ার লোকজন ঠিক এই ভাবনাটিকে কাজে লাগান; বিনোদন মাধ্যমের বিনোদনের কাজটি আসলে সম্পন্ন হয় সংগী সরবরাহের মাধ্যমে, হোক না সেটি virtual সংগী . সরবরাহের পদ্ধতিটা কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে আসুন প্রথমে আমরা মনের গঠন বিষয়ক একটি পুরাতন মতবাদকে নতুন করে দেখি-
অনেকেই মানবমনের তিনটি স্তরের কথা বলে থাকেন- আলফা স্তর, বিটা স্তর, ডেল্টা স্তর। আলফা স্তরে মানুষের দৈনন্দিনতার বিষয় গুলো প্রাধান্য পায়;কোন ঘটনা বা দূর্ঘটনায় সে কীভাবে সাড়া দেবে? পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার আচরণ কিরুপ হবে?ইত্যাদি নানা ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসে আলফা স্তর থেকে। বিটা স্তরকে মনোবিজ্ঞানের পরিভাষায় এককথায় বলা যায় অবচেতন মন।যখন আমরা কোন বই পড়ে মুগ্ধ হই, কোন চলচ্চিত্র আমাদের ভাল লাগে অথবা আমরা কারো প্রতি আবেগিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়ি (দূর্বল হয়ে পড়া বলতে আমি শুধু পজিটিভ দিককে বুঝাচ্ছি না সাম্যাবস্থা থেকে আবেগিক দৃষ্টিভংগগীর পরিবর্তনই আমার কাছে দূর্বলতা ;এ অর্থে কাউকে তীব্র অপছন্দ করার ব্যাপারটাও এক ধরনের আবেগিক দূর্বলতা)তখন বুঝতে হবে আমার অবচেতন মন যে ব্যাপারগুলোকে যত্ন করে সাজিয়ে রেখেছে(সাজিয়ে রাখাটা ঘটে পরিপার্শ্বের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে) তার আচরণ সেসবের পক্ষে নইলে বিপক্ষে। ধরি এ লোক বি লোকের প্রতি আবেগিকভাবে দূর্বল; এর মানে হচ্ছে বি লোকের আলফা স্তরের আচরণ এ লোকের বিটা স্তরের অনুরুপ অথবা বিপরীত; স্বাভাবিকভাবেই অনুরুপ হলে পছন্দের আর বিপরীত হলে অপছন্দের পাল্লা ভারী হবে। মানুষের পছন্দের প্রেক্ষাপট ভিন্ন শুধুমাত্র এ কারনেই। বিনোদনমাধ্যম নির্বাচনে এজন্য প্রতিটি লোকের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন।
মানবমনের তৃতীয় এবং সবচেয়ে দূর্বোধ্য স্তর হচ্ছে ডেল্টা স্তর; এ স্তরের উপর নিয়ন্ত্রন রয়েছে সাধু-সন্ন্যাসী টাইপ মানুষদের।সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতে বৈরাগ্য বা সন্ন্যাসীপনার উদ্দেশ্য হচ্ছে নিঃসঙ্গতার অনুসন্ধান, সাধুদের জীবন-বিশ্লেষণ কিন্তু তা বলে না; সাধুরা নিঃসঙ্গতার সন্ধান করে না করে নির্জনতার সন্ধান। আলফা ও বিটা স্তর পেরিয়ে ডেল্টা স্তরে পৌছুতে যে নির্মোহ নির্জনতার দরকার তার খোজ়েই সেদিনের সিদ্ধার্থ থেকে শুরু করে আজকের হায়দর শাহ ঘর ছেড়ে পথে নেমেছেন, যেখানে তাদের সাথী হয়েছেন পরমাত্না।
বেশিরভাগ জিনিসের মত মনের এই বিন্যাস ও শ্রেনীসংবেদী( class sensitive); একজন দিনমজুর তার সমস্ত জীবনে হয়ত পুরো একটি ঘন্টাও স্বনিয়ন্ত্রিত নন, বিটা স্তরের ভালবাসা আলফা স্তরে প্রকাশ করার সাধ্যটুকু তার কখনো হয় না; অপরদিকে মুকেশ আম্বানির মতো ধনকুবেররা অনায়াসে বিটা স্তরকে আলফা স্তরে নামিয়ে আনেন। তাই নিঃসঙ্গতা নিরুপণে শ্রেণীবিবেচনা যেমন গুরুত্বপুর্ন, নিঃসঙ্গতা-তাড়ুয়া হিসেবে বিনোদন মাধ্যমের ভুমিকা ততটাই প্রশ্নবিদ্ধ। আর বিনোদন মাধ্যম শ্রেনীসাপেক্ষ হবে এটি ঠিক ততটাই স্বাভাবিক।
বিশ্বায়নের যুগে অহর্নিশ আবেগ-বাণিজ্যে বুঁদ হয়ে থাকা আমাদের সমাজে নিঃসঙ্গতাবোধটুকু হারিয়ে যাচ্ছে এ কথা স্বীকার না করে উপায় নেই; তবে আমাদের মনের ভেতর নিঃসঙ্গতার আধাঁর যে ক্রমশই গাঢ় হতে গাঢ়তর হচ্ছে এ কথা কি কেউ ভেবে দেখেছে?
মন্তব্য
খুব ভালো লাগলো। এমন লেখা আরো চাই।
------------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভালো লাগল। মন্তব্য এর জন্য ধন্যবাদ।
-------------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
বেশ গুরুগম্ভীর আর কঠিন লেখা। তবে পড়াতে একটা লাভ হল, মনের স্তরগুলো সম্পর্কে জেনে গেলাম...
রিজভী
--------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;
জানিস ই তো আমি প্রেমের কাহিনী লিখলেও গুরুগম্ভীর হয়ে যায়; শব্দ ব্যবহারের অপারঙ্গমতা বোধহয় এর জন্য দায়ী।
---------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
আমিও হাত বাড়াতে চাই; তবে কীভাবে বাড়াতে হয় জানি না।
ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আপনার লেখার হাত বেশ ভাল।
নিয়মিত লেখা দেখতে চাই।
[ভূঁতেঁরঁ বাঁচ্চাঁ]
মন্তব্য এর জন্য ধন্যবাদ। আপনিও কিছু দিনপঞ্জি টাইপ লেখা ছাড়ুন, আমরা ভূঁতেঁরঁ গল্প পড়ি।
--------------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
অদ্ভুত আঁধার এক...?
---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
অলস মাছির শব্দে ভরে থাকে ............
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
--------------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
নিয়মিত পড়তে চাই।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আমিও।
-------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
রাফি - বিষয়-বৈচিত্র্যের দিক থেকে চমৎকার একটা লেখা। আর্থসামাজিক শ্রেনী আর মানব মনের বিভিন্ন স্তরের মধ্যকার সম্পর্কের উল্লেখটিও ভালো লাগলো। কিন্তু লেখাটার মূল যে বিষয় বা বক্তব্য - অর্থাৎ বিনোদন/বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যম এবং মনের তিনটি স্তর, বা বিনোদনের মধ্য দিয়ে মানবীয় অনুভূতি বা 'নিঃসঙ্গতা'র বানিজ্যিকরণ - এগুলোর মধ্যকার যোগসূত্রটা (আমার কাছে অন্তঃত) খুব পরিষ্কার হয় নি। আরেকটু বিশদ ব্যাখ্যা থাকলে লেখাটা আরো ভালো হতো।
তবে, অন্য স্বাদের একটা লেখা উপহারের জন্য অবশ্যই আপনার ধন্যবাদ প্রাপ্য হয়
আমি বলতে চেয়েছি বাস্তব জীবনে নিঃসংগ একজন মানুষকে বিনোদনের মাধ্যমে কিছু virtual সংগী দেয়ার কাজটিই সব বিনোদন মাধ্যম করে। যখন আপনি একটি বই পড়েন তখন বইয়ের চরিত্রগুলো আপনার সাথে কথা বলে; আপনি তাদের সাথে সাথে ঘুরে বেড়ান উপন্যাসের পুরো প্রেক্ষাপট জুড়ে। এদের মধ্যে কিছু চরিত্র আপনার মনে চিরদিনের জন্য দাগ কেটে যেতে পারে, যদি তারা আপনার বিটা স্তরের সাপেক্ষে আচরণ করে। উদাহরণস্বরুপ বলি, "পথের পাচাঁলী" উপন্যাসটি পড়ে অনেকেই চোখের জল পর্যন্ত ফেলেন; এর প্রধান কারন আমাদের বেশিরভাগ বাংগালীর মানসিক গড়ন অপু বা দুর্গার মত। তাই তাদের ব্যাথায় আমরা ব্যাথিত হই. তবে বই এর এ আবেদনের পাঠকের মনোযোগের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই ব্যবসার উপকরন হলেও বই আমাদের বিনাশের কারন নয় কোনভাবেই।
ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম( TV, কম্পিউটার) এই কাজটিই করে একটু অন্যভাবে, এদের সংগী সরবরাহের ব্যাপারটা আরো realistic, এতটাই যে বাচ্চারা স্পাইডারম্যান কে তাদের নিজেদের বন্ধু মনে করে; নিজেকে সুপারম্যান ভাবতে শুরু করে। বিনোদনগ্রহনকারীর খুব বেশী মনোযোগ এক্ষেত্রে জরুরী নয়।
ইদানীং দ্বিতীয়টির দাপট এতটাই বেড়েছে যে আমরা আজকাল নিঃসঙ্গতা আর অনুভব করি না।
অনুভবহীন নিঃসঙ্গতা আরো বেশি ভয়ানক নয় কি?
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
--------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
মনোজাগতিক বিশ্লেষণধর্মী লেখাটা চমৎকার হইছে। আরও লিখুন..
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
প্রশ্নটার জবাব খোঁজ়ার দায়ভার কিন্তু কবিদের উপরই বর্তায়।
পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
কিঞ্চিৎদ্বিমত পোষণ করলাম। জনতা'র বিপরীত শব্দ নির্জনতা ধরে নিতে হবে এমন কোন কথা আছে নাকি। শব্দের ভাবগত বিস্তৃতি ও গভীরতা বাড়াতে হলে যারা শব্দের কারবারি তাদেরকে তো শব্দের নতুন নতুন মাত্রা তৈরি করতে হবে। নতুন নতুন মাত্রার সন্ধানে যেতে হবে। চলমান বা প্রচলিত অভ্যস্ততাই আমাদের জন্য সমস্যার বিষয়। এর বাইরে কেন আমরা যেতে পারবো না। নির্জনতাকে নিস্তব্ধতা বা নিঃসঙ্গতা ধরে নিলেই তো চুকে যায়।
মাস্তান শব্দটির বর্তমানের চালু অর্থের সাথে কি আভিধানিক অর্থের মিল আছে ? সদ্য স্বাধীনতা উত্তরকালে লম্বা চুল দাঁড়ি গোফমন্ডিত আলুঝালু চেহারার যুবকরা নিশ্চয়ই কোন আউলিয়া দরবেশ ছিলো না।
খুব তলিয়ে চিন্তা করলে আমার সাথে নিশ্চয় ঐকমত্যে আসবেন যে, মানুষ যখন একা থাকে তখন সে আদৌ নিঃসঙ্গ নয়। কেননা তার চিন্তা, তার উপলব্ধি, তার মনোদৈহিক প্রণোদনাই আসলে তাঁকে সঙ্গ দেয় তখন। নইলে সে সৃজনোন্মুখ হতে পারতো না। অন্যদিকে মানুষ তখনই থাকে নিঃসঙ্গ থাকে, যখন সে অনেক মানুষের ভীড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে।
আরেকটু অন্যভাবে বললে, ভীড়ের মানুষ বা স্রোতের মানুষের দৃশ্যমান কোন আলাদা অস্তিত্ব বা সত্তা থাকে না। নির্জনতা বা নিঃসঙ্গতায়ই মানুষ বস্তুত অনন্য হয়ে ওঠে।
ধন্যবাদ, চমৎকার বিষয়ে চমৎকার একটি পোস্টের জন্য। শুভেচ্ছা রইলো।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বাংলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি ভাষা; এ ভাষায় প্রতিটি শব্দের আলাদা অর্থ রয়েছে; ইংরেজীর মত একটি শব্দের দ্বিতীয়, তৃতীয় ব্যাখ্যা নিয়ে বাংলা শব্দের কারবার নয়। যারা " শব্দের কারবারি " তারা নতুন শব্দের আমদানী করতে পারেন, তাতে ভাষা সমৃদ্ধ হবে; কিন্তু এক ই শব্দের অন্য অর্থে ব্যবহার ভাষার জন্য ক্ষতিকর।
আমিও আপনার এই বক্তব্যের সাথে ১০০ ভাগ একমত। এই আলাদা অস্তিত্বহীন মানবসত্তাকে আমরা নিঃসংগ বলতে পারি, নির্জন নয়; কারন নির্জন একটি স্থানবাচক বিশেষণ। মানবহৃদয় নিশ্চয়ই কোন স্থান নয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
----------------------------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
ফাইট দিতে পারি এমন জোর কব্জিতে নাই। কিন্তু কোথায় যেন পড়সিলাম - প্রত্যেকটা মানুষই এক একটা নির্জন দ্বীপ।
লেখা ভালো হইসে। তবে মানুষের আত্মকেন্দ্রিকতা ( আত্মনিমগ্নতা) বাড়তেসে। নি:সঙ্গতা অনুভব করার সুযোগ কই মানুষের? চাইরো দিগে এত্ত এত্ত রঙ, রঙের ফানুস, ফোয়ারা, রঙিলা গাল, ঠোঁট, রঙের প্লাস্টারে ঢাকা চোখের পাতা...
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
আমার আফসোস এখানেই।
ধন্যবাদ।
-------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
ইস্কুলের পড়া থেকেও কঠিন বিষয় লেখেন দেখি আপনি
মাথা ভনভন করে
"সহজ কথা কইতে আমায় কহ যে
সহজ কথা যায় না বলা সহজে"
সহজ কথা কইতে উস্তাদী লাগে, সেটা আমার নাই।
কষ্ট করে পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
--------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
অনেক ভাবগম্ভীর লেখা হলেও ভাল লেগেছে।
এতো গুরুগম্ভীর লেখা আমি বুঝিনা না বস্ ।
তবে তুমি যে মনের ব্যাপারে ভালোই ওস্তাদ এটা বুঝলাম।
............দেবু।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আর শেষ রাতের জন্য অপেক্ষা; যদি একটা মাইর দেয়া যায়।
--------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
ভাল লাগলো ভিন্ন স্বাদের লেখাটি। তবে, আরেকটু বড় করে পূর্ণাঙ্গ রচনার কলেবর দিলে ভাল লাগতো। মন্তব্যে উঠে আসা বক্তব্যগুলো তাহলে মূল লেখাতেই পেতাম হয়তো।
প্যারাগ্রাফগুলোর মধ্যে আরেকটা করে লাইন ব্রেক দিলে পড়তে সুবিধা হত।
পাঁচাইলাম।
লেখাটার কলেবর নিয়ে সংশয়ে ছিলাম;বড় হয়ে যাচ্ছিল বেশ। খটমট বিষয় নিয়ে এত বড় পোস্ট ?
যে জ়ন্য কিছুটা সারসংক্ষেপ করে দিয়েছি; এতে অনেক ক্ষেত্রে মূল বিষয় বুঝতে সমস্যা হয়েছে বোধহয়।
পরেরবার আপনার কথাগুলো মনে রাখব।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
পাচাঁনোর জন্য ধন্যবাদ টু দি পাওয়ার ৫
-----------------------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন