"তোমার দীর্ঘশ্বাসের নাম চন্ডীদাস
শতাব্দী কাঁপানো উল্লাসের নাম মধুসূদন
তোমার থরোথরো প্রেমের নাম রবীন্দ্রনাথ
বিজন অশ্রুবিন্দুর নাম জীবনানন্দ
তোমার বিদ্রোহের নাম নজরুল ইসলাম"
(হুমায়ূন আজাদ)
আমার প্রাণের ভাষা বাংলা। পৃথিবীতে প্রচলিত তিনহাজার ভাষাভাষীদের মধ্যে বাংলাভাষার স্থান পঞ্চম। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্যের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা। আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওন বাংলাকে তাদের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। ২৩ কোটি মানুষের ভাষা বাংলা। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের ইউনেস্কো বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই স্বীকৃতির পেছনে রয়েছে ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত দীর্ঘ এক সংগ্রামের ইতিহাস।
১৪ আগষ্ট ১৯৪৭ সাল। ভারত ভেঙ্গে এর একাংশ নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান। এর আগেই তৎকালীন আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ জিয়াউদ্দিন মতপ্রকাশ করেন প্রস্তাবিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত উর্দূ। এ চক্রান্ত অনুধাবন করে ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আবুল কাশেম তমুদ্দুন মজলিস গঠন করেন। আবুল কাশেম মজলিস প্রতিষ্ঠার ১৫ দিনের মধ্যে একটি পুস্তক প্রকাশ করেন বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা দাবি করে।স্বরলিপি আরবীর অনুরূপ এবং আরবী শব্দ ও পরিভাষার প্রাচুর্য থাকায় তখন উর্দূকে মুসলমানী ভাষা হিসেবে মনে করা হতো; অন্যদিকে সংস্কৃত শব্দের প্রচলন থাকায় পাকিস্তানি শাসকদের দৃষ্টিতে বাংলা ভাষা ছিল হিন্দুয়ানী । ভাষার মুসলমানিত্ব নামে এই উদ্ভট মনগড়া যুক্তিতে সমগ্র পাকিস্তানের ছাপ্পান্ন শতাংশ জনগোষ্ঠীর ভাষা বাংলাকে অগ্রাহ্য করে সাত শতাংশ লোকের ভাষা উর্দূকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার পায়তারা শুরু হয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর অক্টোবর মাসে নতুন করে ছাপানো ডাকটিকিট, মুদ্রা আর রাষ্ট্রীয় নথিপত্র থেকে সুচিন্তিতভাবে বাংলাকে বর্জন করা শুরু হয়,পাকিস্তান সরকারী কর্ম কমিশন তাদের অনুমোদিত ভাষার তালিকা থেকে বাংলাকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, ৬ ডিসেম্বর ১৯৪৭ সালে করাচীতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় শিক্ষা সম্মেলনে উর্দূকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সুপারিশ করা হয়।ওইদিনই বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্ররা এর প্রতিবাদে ঢাকায় মিছিল ও সমাবেশ করেন।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উত্থাপন করে সরকারী দলের তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হলেন। প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান উর্দূকে ১০ কোটি মুসলমানের ভাষা বলে এক নির্জলা মিথ্যা বিবৃতি দেন। অথচ ১৯৫১ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রথম আদম শুমারিতে বাঙালির সংখ্যা ছিল ৫৪.৬, পাঞ্জাবি ২৮.৪, পশতু ৭.৮ উর্দু ৭.২, সিন্ধি ৫.৮ আর ইংরেজি ভাষাভাষী ১.৮ শতাংশ।এ পরিস্থিতিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি তমুদ্দুন মজলিস, মুসলিম ছাত্রলীগ এবং অন্যান্য সংগঠনের সমন্বয়ে বর্ধিত কলেবরে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি পুনর্গঠিত হল। ১১ মার্চ প্রতিবাদ দিবস সফলভাবে পালিত হল। হরতাল ও বিক্ষোভ প্রদর্শিত হল। মিছিলে পুলিশের হামলা হল। গ্রেপ্তার হলেন অনেকে। কিন্তু বিক্ষোভ থামল না। ১৪ই মার্চ পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত রইল। ১৯ মার্চ মুহম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এলেন। ২১শে মার্চ রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে ভাষণ দানকালে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করলেন যে, “"Urdu, and only Urdu" embodied the spirit of Muslim nations and would remain as the state language of Pakistan”। ২৪শে মার্চ ছাত্রনেতাদের সাথে একান্ত বৈঠকে তিনি মতপ্রকাশ করেন ”In the interest of integrity of Pakistan, if necessary you will have to change your mother tongue”।ফলে বাঙ্গালিদের মনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করা নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে।
১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে পূর্ব পাকিস্তানের সরকারী ভাষা হিসেবে বাংলাকে অনুমোদন দানের পর পরিস্থিতি বলতে গেলে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে প্রথম সফল গণবিস্ফোরণের স্মৃতি উজ্জল করে ধরে রাখার লক্ষ্যে “রাষ্ট্রভাষা দিবস” পালিত হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীন ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারী ঢাকা সফরে এসে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে জিন্নাহকে সমর্থন করে বলেন “ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মূল নীতি নির্ধারক কমিটি পাকিস্তানের সরকারী ভাষা হিসেবে উর্দুকে অনুমোদন দিয়েছে”। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩১শে জানুয়ারি মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত 'সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ’ আরবী হরফে বাংলা লেখার তীব্র বিরোধিতা এবং ২১শে ফেব্রুয়ারি হরতাল, সমাবেশ ও মিছিলের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
২১শে ফেব্রুয়ারির সমাবেশ ও হরতাল কে বানচাল করার উদ্দেশে ঐদিন ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের পুকুর পাড়ে অনুষ্ঠিত সভায় ছাত্রনেতারা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে হলেও ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নেন।
২১শে ফেব্রুয়ারি ছিল প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন। সেদিন সকাল ৯টা থেকে সরকারী নিষেধ অমান্য করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এসে জড়ো হতে থাকে। তারা ১৪৪ ধারা জারির বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকে এবং পূর্ব বঙ্গ আইন পরিষদের সদস্যদের ভাষা সম্পর্কে সাধারণ জনগণের মতকে বিবেচনা করার আহ্বান জানাতে থাকে।পুলিস অস্ত্র হাতে সভাস্থলের চারদিকে প্রাচীর তৈরি করে। বেলা সোয়া এগারটার দিকে ছাত্ররা গেটে জড়ো হয়ে প্রতিবন্ধকতা ভেঙে রাস্তায় নামতে চাইলে পুলিস কাঁদানে গ্যাস বর্ষণ করে ছাত্রদের সতর্ক করে দেয়।কিছু ছাত্র এই সময়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের দিকে দৌড়ে চলে গেলেও বাকিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পুলিস দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে এবং পুলিসের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। উপাচার্য তখন পুলিসকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ বন্ধ করতে এবং ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগ করতে বলেন। কিন্তু ছাত্ররা ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময় পুলিস তাদের গ্রেফতার করা শুরু করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
বেলা ২টার দিকে আইন পরিষদের সদস্যরা আইনসভায় যোগ দিতে এলে ছাত্ররা তাদের বাধা দেয় এবং সভায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি উত্থাপনের অনুরোধ জানায়। কিছু ছাত্র সিদ্ধান্ত নেয় তারা আইন সভায় গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করবে। বেলা ৩.৩০ টার দিকে ছাত্ররা সেই উদ্দেশে রওনা করলে পুলিস দৌড়ে এসে ছাত্রাবাসে গুলিবর্ষণ শুরু করে ।পুলিসের গুলিবর্ষণের পর অনেক ছাত্রকে ছাত্রাবাসের বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। আব্দুল জব্বার এবং রফিক উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সে সময় আহত আবুল বরকত সেদিন রাতে প্রয়াত হন।ছাত্র হত্যার সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে জনগন ঘটনাস্থলে আসার উদ্যোগ নেয়। ছাত্রদের শুরু করা আন্দোলন সাথে সাথে জনমানুষের আন্দোলনে রূপ নেয়।
সরকারী আদেশে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ২২শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা নারায়ণগঞ্জ সহ সারা দেশে হাজার হাজার ছাত্র জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে। এইদিন জনতার মিছিলে তুলে দেয়া সামরিক বাহিনীর ট্রাকের চাপায় পড়ে আব্দুল আওয়াল এবং নাম না জানা এক কিশোর শহীদ হন। গায়েবানা জানাযায় শরীক হওয়া মুসলমানদের উপর চালানো গুলিতে শহীদ হন শফিউর এবং ওহিউল্লাহ। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা ২৩ ফেব্রুয়ারির রাত শেষে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার তৈরির কাজ শুরু করে। কাজ শেষ হয় ২৪ ফেব্রুয়ারির ভোরে।২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল দশটায় শহীদ শফিউরের পিতা অনানুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন। ২৫শে ফেব্রুয়ারি সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও সেনাবাহিনী মেডিকেলের ছাত্র হোস্টেল ঘিরে ফেলে এবং প্রথম শহীদ মিনার গুঁড়িয়ে দেয়। পাকিস্তান সরকার তাদের নিজেদের মত করে তদন্ত চালাতে থাকে; প্রহসনের তদন্ত শেষে ১৪ই এপ্রিল প্রকাশিত রিপোর্টে ভাষা আন্দোলনকে হিন্দু এবং কমিউনিস্টদের একটি চক্রান্ত বলে আখ্যায়িত করে। ১৬ই এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হয় এবং ২৮শে এপ্রিল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে বার এসোসিয়েশন হলে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা ২১শে ফেব্রুয়ারি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, সকল বন্দীর মুক্তি এবং মিছিল সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবানে এরপর থেকে প্রতিবছর সারা দেশে পুলিশের নানা জুলুম, নির্যাতন আর হুমকির মুখেও ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে। শহীদদের স্মরণে ঐদিন সকল স্কুল কলেজ অফিস আদালত বয়কট করা হত। কিন্তু এরপরেও বাংলা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মর্যাদা লাভ করতে পারে নি। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগ বিরোধী বিভিন্ন দল ২১ দফা দাবীতে মাওলানা ভাসানী, এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে বিপুল বিজয় লাভ করে; যারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেবার অঙ্গীকার করেছিল।এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে ভাষা আন্দোলন শুরুর প্রায় দশ বছর পর ১৯৫৬ সালের ২৯শে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। ৩রা মার্চ বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃতিদানকারী পাকিস্তানের সংবিধান কার্যকর হয়।
রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলা স্বীকৃতি লাভের পরও শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে বাংলার প্রচলনে অনেকের অনীহার প্রেক্ষাপটে তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবুল কাসেম ১৯৬২ সালে দেশে বাংলা মাধ্যমে প্রথম ‘বাংলা কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বর প্রকাশিত বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। ধারণা করা হয় অচিরেই বাংলা জাতিসংঘের সপ্তম দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা পেতে যাচ্ছে।
ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে ১৯৫৭ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু হয়। এর নির্মান কাজ শেষ হয় ১৯৬৩ সালে। ১৯৬৩ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ আবুল বরকতের মা হাসিনা বেগম কর্তৃক এই শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঐ শহীদ মিনার আবার গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে ‘মসজিদ’ সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়। পরবর্তীতে হামিদুর রহমান প্রদত্ত মূল নকশা ঠিক রেখে তা পরবর্তীতে পুনর্নিমাণ করা হয়।
বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরেকবার বাঙ্গালিকে রক্ত দিতে হয় ১৯৬১ সালে। বারাক উপত্যকার তিনটি জেলার বাঙ্গালিরা তাদের মাতৃভাষাকে দাপ্তরিক মর্যাদা দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে শিলচর রেলওয়ে স্টেশন এর কাছে পুলিশের গুলিতে ১১ জন শহীদ হন। এর ২৫ বছর পর গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় অসমীয়া ভাষা কে শিক্ষাদানের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ঘোষণা করলে তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ২১শে জুলাই, ১৯৮৬ সালে আরো দু’জন শহীদ হন।
প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি’র প্রথম প্রহরে হাজার হাজার বাঙ্গালি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
বাংলা ভাষার আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
মহান একুশে অমর হোক।
২১শে ফেব্রুয়ারি সন্ধেবেলায় লিখিত একুশের প্রথম কবিতা
কবিঃ মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী
বিস্তারিত জানতেঃ
উইকিপিডিয়া
২১শে ফেব্রুয়ারি
ভার্চুয়াল বাংলাদেশ
বাঙ্গালনামা
মন্তব্য
কিছু ব্যাখ্যা চাই:
১. ভাষা শহীদ হিসেবে ওহিউল্লাহ নাম এখন মোটামুটি অপরিচিত, কেন?
২. ৩.৩০এ ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনাই কি ইদানীংকালের বহুল পরিচিত "ঐতিহাসিক ৩০ মিনিট"?
- মুক্ত বয়ান
শহীদ ওহিউল্লাহ ছিলেন নয় বছরের বালক। বয়সের কারণেই হয়তো ভাষা আন্দোলনের চেতনায় তার শহীদ হওয়াটাকে সবাই সমর্থন করেন না। তবে ওহিউল্লাহ কিন্তু ততটা অপরিচিত নন। উনার নাম শহীদদের তালিকায় আছে। আর এক নিঃশ্বাসে রফিক, বরকত, জব্বার, সালাম উনাদের নাম উচ্চারিত হওয়ার একটা কারণ বোধহয় উনারা ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ হন। আর ওহিউল্লাহ এবং শফিউর শহীদ হন ২২শে ফেব্রুয়ারি। তবে এটা নিতান্তই আমার নিজস্ব ব্যাখা।
ঐতিহাসিক ত্রিশ মিনিট বলতে বোঝানো হয় ৩:২০ থেকে ৩:৫০ পর্যন্ত এই ত্রিশ মিনিটকে। এই সময়ের মধ্যেই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আমার তেমনটা মনে হয় না, কেননা, শফিউরের নামটা আমাদের কাছে পরিচিত, আর সত্যি বলতে, শহীদ ওহিউল্লাহ'র নামটা আমি আজ প্রথমবারের মত জানতে পেরেছি। এটা আমার ব্যর্থতা।
ধন্যবাদ, একজন শহীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্যে।
- মুক্ত বয়ান
বার চারেক চেষ্টা করে ফরম্যাটিং(justify) করতে ব্যর্থ হলাম। এ কারণে পাঠকগণ দয়া করে মনে কষ্ট পাবেন না
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
জটিল লেখা। শুরুর কবিতাটায় 'লাইক' দিলাম
"লাইক" ধন্যবাদের সহিত গৃহীত হইল।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
ভীষণ জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। অনেক ধন্যবাদ, রাফি।
ধন্যবাদ প্রহরী ভাই।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
কবিতাটা দারুণ!
নানা কিছু জানিয়ে দেয়া
পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি!!!
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
দারুণ পোস্ট। অনেক ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই আপনি একটা খেলাপী লেখক। এত করে বললাম যে বইমেলা'র সিরিজটা চালু রাখেন; কথা রাখলেন না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
তথ্যবহুল লেখাটা ভাল লাগল, আরো ভাল লাগল শিরোনামটা!
কৌস্তুভ
ধন্যবাদ ভাই।
আচ্ছা 'কৌস্তুভ' অর্থ কী??
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
একুশের প্রেক্ষাপটে অনন্য পোষ্ট।
লেখককে ধন্যবাদ।
পাঠককেও ধন্যবাদ।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
১১ বছর আগে স্কুল জীবণে বাংলা একাডেমীর একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে বিস্তর পড়াশোনা করতে হয়েছিল, সেই সুবাদে এই পোস্টের সকল তথ্যই মোটামুটি জানা ছিল। তবে আমার ধারণা অধিকাংশ মানুষই ভাষা আন্দোলন এর পুরো ইতিহাস জানেন না।
অত্যন্ত জরুরী সব তথ্য সকলকে জানানোর আপনার উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
সন্ধ্যা
ধন্যবাদ আপনাকেও।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
মহামতি হুমায়ুন আজাদ কবিতায় নজরুলের নাম নিয়েছেন দেখে অবাক হচ্ছি!
----------------------------------
~জীবন অনেকটা জড়ই, কিন্তু অনন্য!~
হুমায়ূন আজাদ প্রথাবিরোধী অনেক কিছুই করে গেছেন।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম, রাফি।
ভাল্লাগলো।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ শিমুল আপু।
কেমন আছেন আপনি??
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
দরকারি লেখা।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
ঐ মিয়া, এখন আর লিখেন না কেনু?
আমায় খুঁজে ফিরি
অলস সময়
এতো সব ভাল লেখা লিখে কোথায় হারালেন ভাই?
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
নতুন মন্তব্য করুন