ভাল আছি।কুশল-জিজ্ঞাসার উত্তরে এমন বলতেই হয়।এটাই ভব্যতা।
সভ্যতার হাত ধরে মুছে ফেলি সরল স্বীকারোক্তিগুলো।
হাইরাইজের খাঁচার ভিতরে স্মৃতিতাড়িত-বিনিদ্র রাত।
ভুলে গেছি প্রথম বৃষ্টির সোঁদা-গন্ধ।
টিনের চালে বর্ষণের ঝমঝম করতাল;ঘুমের মদিরা।
"বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল........................"
শ্রাবনের ভরা গাঙ্গে ভেসে যাওয়া পদ্মপাতায় আঁকা পায়ের ছাপ;অভিজ্ঞান।
বকুল তলায় জেগে উঠা ভোর
ডাকপিয়নের প্র ...
কু-উ-উ-উ-ঝিক-ঝিক-ঝিক---কু-উ-উ-ঝিক-ঝিক-----
চলে যাচ্ছি----চলে যাচ্ছি-----চলে যাচ্ছি-----------
ছুটে চলেছে বিশাল ড্রাগন মুখে আগুনের ধোঁয়া ।আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে স্টেশন----চেনা শহরের শেষ চিহ্ন।
দু'পাশের ধানক্ষেত --ক্ষেতে কাজ করা চাষী---মাঠে চরা গরুর পাল--বাঁশী-বাজানো রাখাল-বালক----খাল-বিল-----নদী-
মাছের জাল আটকে রাখা বাঁশের মাচান---দূরগ্রাম---হাটুরে মানুষ; কত দ্রুত পিছনে চলে যাচ্ছে সব---আড়াল হয়ে যাচ্ছে।
জ ...
ক্রমশঃ মিশে যাচ্ছি পাহাড়ের অশ্রুধারার ভিতরে।এই জলধারার অন্তে জন্ম নিয়েছে যে নদী আমি তার নাম দিয়েছি--'নিঃসঙ্গতা'।
দূর থেকে দেখলে------সে কেবল দূর থেকেই দেখা----মনে হয় দিগন্তে আকাশ আর পাহাড় একসাথে মিশে আছে- খুব ঘনিষ্ঠ
বন্ধুর মতো- জড়াজড়ি করে আছে।দৃষ্টিভ্রম।এক বন্ধু বলেছিল,-'পাহাড়ের জন্য আমার খুব কষ্ট হয়।কেমন একাকী-নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে থাকে'।মানি।চোখের বিভ্রমে যাই মনে হোক --পাহাড়তো সত্যি সত ...
দেখো----
কেমন করে পুড়ে যাচ্ছে এক একটি সবুজ পাতা;
আর ছাইগুলো কলমের কালি হয়ে তোমার লেখার খাতা ভরে দিচ্ছে নতুন শব্দ-সম্ভারে।
সহজ নয়-----
পুরোনো ক্যালেন্ডার জমানোর বাতিক ছেড়ে দেয়া।
পিছনের পাতাগুলো ঘাটলেই---------
কখনো ঝরে পড়ে একরাশ ফুল
কখনোবা তাড়া করে বিবর্ণ-হলুদ কঙ্কাল
অথবা ঘর-পালানো জ্যোৎস্নায় মাধবীর বনে সাপের নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ।
'কেবল আজকের জন্য বেঁচে থাকা'
--এমন আপ্তবাক্য মেনে নিয় ...
সবাই চলে গেছে শুধু একটি মাধবী তুমি......................................."
ফুরিয়ে গেছে চরকার সুতো---------
বোনা হয়নি রূপকথার সেই নকশীচাঁদর।
মাঝরাতে আচমকা আকাশের জানালা খুলে গেলে
একটি নক্ষত্র খসে সোজা আমার স্বপ্নের ভেতরে ঢুকে পড়ে
'খসে পড়া তারার কাছে কিছু চাইলে ইচ্ছা -পূরণ হয়'
----------------তুই বলেছিলি।
তারা খসা-------------
তুই।
কিছুতেই মনে পড়েনা কিযে চাই।
গুলমোহরের লতানো ঝোপে চাঁদ নেমে এলে
এক বুক চাঁদনীতে গলে গলে যা ...
লিখে যাচ্ছি নিঃসঙ্গতা আর খুলে যাচ্ছে
একটি বাদামী-দরোজা........................
জিতে যচ্ছে
জিতে যাচ্ছে প্রবল-প্রতাপ অবসাদ;
অসহ-দহনে ক্ষয়ে যাচ্ছে আয়ুর সোনালী ডানাগুলো
কোথায় পালাবো?
কোথায় ফিরবো?
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত নগরীতে ঠিকানা দিক্-চিহ্ন হীন।
অথবা
কোথাও কি কখনো আদৌ কোন ঘর ছিল?
দূরাগত মিহি সুরে বেজে ওঠা বীণ;
স্পর্শাতীত দিগন্ত-বলয়;
দিগন্ত-বালিকার কোন ঘর থাকেনা।
করতলে একটি কুয়াশা-মাখা ভোর ছিল
আঙ্গুলের ফাঁকে কখন যে ঝরে গেছে বুঝতে পারিনি।
কষ্ট পাই
বর্ণাঢ্য-জলসায় অচেনা মুখের ভীড়ে একা হয়ে গেলে
ক্রমশঃ কুঁকড়ে যাই নিজের ভেতরে।
হারতে চাইনা।বারবার হেরে যাই।
নিজের প্রলম্বিত ছায়াটুকু ক্রমাগত নিজেকে অতিক্রম করে যায়।
কষ্ট পাই।
বিস্মরণের আজন্ম-স্বভাবে ঠিকানা-বিভ্রাট;
এ গলি ও গলি খুঁজতে খুঁজতে
তোমার গলির একদম পাশ দিয়েই
আনমনে এক ভুল বাড়ীতে ...
--কত বড় হতে চাও?
--আমার হাতগুলো এমন দীর্ঘ হবে --কীনব্রীজের রেলিংযের ফাঁকে বাড়িয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে দেবো আলী আমজদের ঘড়ির কাঁটাগুলো।
--পারবেনা।মানুষ এত বড় হয়না।শরীর-কাঠামোর নির্দিষ্ট সীমা আছে।
অতএবঃ
স্বপ্নের দুরন্ত-ঘোড়াটির টগবগ টগবগ গতি রুদ্ধ হয়।
আকাঙ্ক্ষার পালকগুলো একে একে এভাবেই খসে পড়ে----
এভাবেই শুরু---
ইচ্ছে-পথের মোড়ে মোড়ে রোড-ব্লক;
দ্বিধা-দ্বন্ধ-উদাসীনতার দরোজার ক...
বিমুগ্ধ-আবেশ কেটে গেলে শরাব মিথ্যে হয়ে যায়
তবু লালপানির পেয়ালা হাতে বসে থাকি;
জীবন দোল খাচ্ছে অবিরত ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো।
এখনো এ ঘরের সব কোন ছেয়ে আছে শেষ বিকেলের সুরভী-মদিরা
এখনো মুছেনি তানপুরার শেষ ঝংকারের রেশ
গোধুলীর কনে দেখা আলোর ঘেরে ফুটি ফুটি সন্ধ্যামালতী
আকাশে পাখসাট বাজে-------বিহঙ্গম ফিরছে কুলায়;
নিষ্প্রাণ স্ট্যাচুর মতো এক জোড়া মানব-মানবী
নির্বাক।ওদের সব কথা শেষ হয়ে ...
দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে যাতায়াত শুধু
সময় মিশে যায় মহাকাল স্রোতে
এভাবেই বদলে যায় দৃশ্যপট
রূপান্তরের পালে দোলা দিয়ে যায়
কিছু স্মৃতিভারাতুর দীর্ঘশ্বাস।
কেউ জানেনা কোথায় পথের শেষ.........
মনে পড়ে
লেবু-গন্ধী উদাস-অলস দুপুরগুলো
সৌরভে বিভোর রমণীয় প্রজাপতি মেলা
লাল ফড়িংয়েরা বাতাসের গায়ে ডানা মেলে দিলে
হাওয়ায়
হাওয়ায়
কেমন মদালসা সুরের কাঁপন বেজে যেতো
থোকা থোকা রুধির-পুষ্পিত কৃষ্ণ...