জামিল যখন ট্যাক্সি থেকে বাসার সামনে নামলো, ঠিক তখনি বিদ্যত্ চলে গেল। লোডশেডিং। এখন বাজে রাত আটটা। জামিল অফিস থেকে ফিরেছে। আজ তার অফিসে পার্টি ছিল। নাচ গান আর খানাপিনা হয়েছে জমজমাট। তবে পিনা'টাই বোধহয় বেশি জমেছিল। ওয়াইন, হুইস্কি, ভদকা, জিন, বিয়ার কি ছিল না সেখানে! জামিল অবশ্য বেশি পান করেনি। বউ'র ভয় আছে না! বাসায় ফেরার পরে বউ যদি কোনক্রমে টের পায় যে সে শুরা পান করে এসেছে, তবে তুলকালাম কান্ড বেধে যাবে। তাই সে শুধু সবগুলো আইটেম থেকে অল্প অল্প চেখে দেখেছে। তবে ঐ একটু চেখে দেখাতেই জামিলের চোখ এখন ঢুলু ঢুলু করছে। শরীরটাও খুব হালকা লাগছে। পা ফেলছে থপ থপ করে। মনটা হয়ে আছে ফুরফুরে। সে হালকা শিস দিতে দিতে সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে লাগলো। বাসা তার চার তলায়। লোড শেডিং হয়ে সব আঁধার হয়ে থাকলেও তার কোন সমস্যা হচ্ছিল না। তার মনে ভিষন আনন্দ হচ্ছিল। আর মনের ভেতর তিব্র একটা ইচ্ছা জাগছিল কিছু একটা করার।
অন্ধকারে হেটে হেটে গিয়ে জামিল তার বাসার দরজায় নক করলো। শিরিন এসে দরজা খুলল। দরজা খুলতেই জামিল তার উপর ঝাপিয়ে পড়লো। জামিলের মনের সেই কিছু একটা করার ইচ্ছা আরো তিব্রতর হয়েছে। এখন সে ইচ্ছা তার বউকে কেন্দ্র করেই টগবগ করে উঠলো। সে শিরিনকে জাপটে ধরে ঘরের ভেতরে ঢুকলো। তারপর পায়ের এক ধাক্কায় দরজা বন্ধ করে দিল। তার যেন আর তর সইছে না। ড্রয়িং রুমের কার্পেটেই সে শিরিনকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।
অন্ধকারে শিরিন প্রথমে ভড়কে গেলেও, তার স্বামীর এ কান্ডে সে মজাই পেল। আস্ত পাগল একটা! তারপর ঝড় উঠলো। জামিল শিরিন দুজনেই সে ঝড়ে উথাল পাথাল হয়ে গেল। কার বসন কোথায় ছিটকে পড়লো কোন ঠিক ঠিকানা থাকলো না। কারো মুখে কোন কথা নেই। কেবল ঝড় ঝড় আর ঝড়। কেউ কারো চেয়ে কম যায় না। দুজনেই অবাক। এই শক্তি আগে ছিল কই?
সমানে সমানে যুদ্ধ চলল অনেক ক্ষন। তারপর যুদ্ধ থামলো। দুজন পাশাপাশি শুয়ে হাঁপাতে লাগলো ভিষন। জামিল কাত হয়ে শিরিনের ঠোঁটে চুমু খেল আবার। তার নেশার ঘোর তখন ধিরে ধিরে কাটতে শুরু করেছে। শিরিনের মুখে তৃপ্তির হাসি। এমন সময় বিদ্যুত্ চলে এলো। উজ্জ্বল আলোয় ভরে উঠলো ঘর। জামিলের দিকে তাকিয়ে শিরিন জমে গেল। এতো তার স্বামী সেলিম নয়। এতো চার তলার জামিল ভাই! জামিলেরও শিরিনের মতো অবস্থা। হায় হায় এতো দেখি শিরিন ভাবী! সে কি তবে চারতলা মনে করে তিন তলার দরজায় টোকা দিয়েছিল?
প্রথমে শিরিনেরই সংবিত্ ফিরলো। সে দ্রুত উঠে ভেতরের ঘরে ছুটলো। তারপর জামিল লাফিয়ে উঠলো তড়াক করে। সেলিম ভাইর আসার সময় হয়ে গেছে। এখন চলে এলে এখানে মহাভারতের কুরুক্ষেত্র কান্ডের পূনরাবৃত্তি হবে। সে দ্রুত তার কাপড় পড়ে সদর দরজা খুলে চার তলায় উঠে গেল। তার মদের নেশা কেটে গেছে তখন। ভীষন লজ্জ্বা হচ্ছিল তার। আবার কেমন একটা ভালো লাগাও কাজ করছিল।
তিন তলায় শিরিন তখন ড্রয়িং রুমে এসে নিজের কাপড়গুলো পড়ে নিচ্ছে। তার মনে প্রচন্ড একটা ভয় কাজ করছে। সেলিম জানতে পাড়লে কি হবে? আবার জামিলের ওপর রাগও হচ্ছে প্রচুর। সে কি ভাবে এরকম করতে পাড়লো? শিরিন ভাবছে আর অবাক হচ্ছে। এতকিছুর মাঝে তার মনে একটা মৃদু ভালোলাগাও উঁকি দিচ্ছে। সে এটাকে কিছুতেই পাত্তা দিতে চাইলো না। কিন্তু অনুভুতিটা ক্রমেই তিব্র হচ্ছে ।
চারতলায় নিজের ঘরের দরজায় কলিংবেল বাজাতে গিয়ে জামিলের ঠোঁটে মৃদু হাসি ফুটে উঠলো। হাসি ফুটলো তিন তলায় শিরিনের মুখেও। হায় লোডশেডিং! হায় মধুর লোডশেডিং!
মন্তব্য
হাহাহাহাহা
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
যাক একজন অন্তত হাসছে।
------------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
- সেইরম
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ
-------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
হায় মধুর লোডশেডিং!
হাহ হাহ হাহ......... সেইরম কাহিনী!!
মজা পাইছেন তাইলে!
----------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
নতুন মন্তব্য করুন