দুইটি পাগল বিষয়ক কৌতুক

কীর্তিনাশা এর ছবি
লিখেছেন কীর্তিনাশা (তারিখ: বুধ, ১৭/০৯/২০০৮ - ২:৪৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দারুন ব্যাস্ততায় দিন যাচ্ছে। সচলে আসার সময় মেলে না ঠিক মতো। ওদিকে কিছু না পোস্টাইতে পাড়লেও মন আনচান করে। তাই কি করবো, আবারো দুইখান কৌতুক নিয়া চলে আসলাম। আপনাদের পছন্দ হইলে আওয়াজ দিয়েন। অপ্রাপ্ত বয়স্করা প্রথম কৌতুকখান পইড়া চোখ বন্ধ কইরা ফালায়েন দেঁতো হাসি

পাগল বিষয়ক কৌতুক ০১

পাগলাগারদের ডাক্তার এক পাগলের কাছে গিয়ে বলল - আপনার জন্য একটা সুসংবাদ আর একটা দুঃসংবাদ আছে। কোনটা আগে শুনতে চান?

পাগল ফিচ করে হেসে - সুসংবাদটাই আগে বলেন।
ডাক্তার - সুসংবাদটা হলো, আপনি আজ যে দুঃসাহসিক কাজ করেছেন, হাসপাতালের পুকুরে ডুবন্ত আরেক পাগলকে যেভাবে ঝাপিয়ে পড়ে উদ্ধার করেছেন, তাতে আমরা নিশ্চিত আপনি আর পাগল নন। আপনি সুস্থ হয়ে গেছেন। এবার আপনি নিশ্চিন্তে বাড়ি যেতে পাড়েন।
পাগল - আর দুঃসংবাদটা কি?
ডাক্তার - দুঃসংবাদটা হচ্ছে, আপনি যে পাগলকে পানি থেকে উদ্ধার করেছিলেন, সে পরবর্তিতে আত্মহত্যা করেছে পুকুরের পাশের আমগাছের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে।
পাগল আবারো ফিচ করে হেসে - আরে না! ও তো নিজে গলায় দড়ি দেয় নাই। পুকুর থিকা উঠানোর পর দেখলাম ব্যাটা ভিজা পুরা চুপচুপা হইয়া রইছে, তাই আমিই ওরে আম গাছের লগে লটকাইয়া শুকাইতে দিছিলাম।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

পাগল বিষয়ক কৌতুক ০২

এক 'পাগলের হাসপাতালে' নিয়ম করা হলো - যে সব পাগল একটু সুস্থতার পথে, প্রতি মাসে তাদের ইন্টারভিউ নেয়া হবে। তাতে যদি দেখা যায় সেই পাগল অসংবৃত কোন কথা বলছে না অথবা কোন পাগলামি মাথাচাড়া দিচ্ছে না তার মধ্যে, তবে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।

তো এই নিয়মের আওতায়, পাগল মদন কুমারেরও ডাক পড়লো এক দিন প্রধান ডাক্তারের কাছে মদন কুমার সেখানে যেয়ে দেখলো তিন চারজন ডাক্তার বসে আছেন টেবিল ঘিরে। তার জন্যও একটা বসার চেয়ার আছে। সে গিয়ে সেই চেয়ারে বসলো। তারপর সবাইকে সম্ভাসন জানালো ভদ্রভাবে। ডাক্তাররা তার আচরন দেখে বেশ মুগ্ধ হয়ে গেলেন। একজন ডাক্তার জিজ্ঞেস করলেন - মদন কুমার, তুমি তো এখন ভালো হয়ে গেছ তাই না?
মদন হেসে উত্তর দিল - জ্বি সার, আমি এখন পুরাপুরি সুস্থ। কোন পাগলামি করি না।
আরেক জন ডাক্তার বললেন - বাহ্ বেশ, তাহলে তো তোমাকে এবার ছেড়ে দেয়া যায়। তা বাড়িতে গিয়ে কি করবে তুমি?
মদন - সার আমি বাড়িতে গিয়া একটা বড় গুলতি বানামু। তারপর অনেকগুলা মার্বেল কিনুম। তারপর সেই গুলতি আর মার্বেল নিয়া আইসা এই হাসপাতালের যতগুলা কাঁচের জানলা আছে, সবগুলার কাঁচ ভাইঙ্গা ফালামু।

মদনের উত্তরে ডাক্তারদের মুখ অন্ধকার হয়ে গেল। তারা মাথা নেড়ে মদনকে আবার হাসপাতালের ভেতর পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু সেদিনই মদনের আরেক পাগল বন্ধু ইন্টারভিউতে পাশ করে মুক্তি পেয়ে গেল। বিদায় নেবার সময় মদন তার কাছে জানতে চাইলো - দোস্ত তুমি মুক্তি পাইলা আর আমি পাইলাম না ক্যান? তার বন্ধু জানতে চাইলো - আচ্ছা ইন্টারভিউতে তোমারে কি জিগাইছিল আর তুমি কি উত্তর দিছিলা? মদন তখন তার বন্ধুকে সব খুলে বলল।

সব শুনে তার বন্ধু বলল - দোস্ত তুমি যদি এই রকম উত্তর দেও, তাইলে এই জীবনে তুমি মুক্তি পাইবা না। আবার যদি তোমারে এই সব জিগায় তাইলে তুমি বলবা, বাড়িতে গিয়া তুমি পড়াশুনা করবা, তারপর পাশ কইরা চাকরি নিবা, তারপর বিয়া করবা তারপর মনে আর যা আসে সব বলবা। মানে, মনে মনে সুন্দর কাহিনী বানাবা আর সেইগুলা ডাক্তারগো বলবা। দেখবা তারা খুশি হইয়া তোমারে ছাইড়া দিবে। মদন মাথা ঝাকালো এরপর সে এভাবেই ইন্টারভিউ দেবে।

পরের মাসে মদনের আবার ইন্টারভিউতে ডাক পড়লো। সেখানে ডাক্তাররা যখন তাকে জিজ্ঞেস করলো বাড়িতে ফিরে সে কি করবে, তখন সে বলা শুরু করলো - সার, বাড়িতে গিয়া আমি আবার পড়াশুনা শুরু করুম। তারপর পাশ কইরা চাকরি নিমু। তারপর সুন্দর দেইখা এক মাইয়ারে বিয়া করুম।

ডাক্তারদের মুখে সন্তুষ্টির হাসি ফুটলো। তারা জানতে চাইলেন - তারপর কি করবে?

মদন : তারপর সার সেই মাইয়ারে নিয়া বাসর রাইত করুম।
ডাক্তারদের মুখের হাসি বিস্তৃত হলো - কি করবে তুমি বাসর রাতে?
মদন : বাসর রাইতে বউরে অনেক আদর করুম।
ডাক্তারগন : তারপর ?
মদন : তারপর বউ’র সব কাপড়-চোপর খুইলা ফালামু।
ডাক্তারগন : তারপর ? (বেশ উত্তেজিত তারা)
মদন : তারপর বউ’র ব্রা, ্ান্টিতে কোন ইলাস্টিক আছে কিনা দেখুম।
ডাক্তাররা হতভম্ব হয়ে - কেন ?
মদন : যদি ইলাস্টিক থাকে তাইলে সেইগুলা সব টাইনা টাইনা বাইর করুম। তারপর সেইগুলা দিয়া একটা গুলতি বানামু আর অনেকগুলা মার্বেল কিনুম। তারপর সেইগুলা নিয়া এই হাসপাতালে আইসা, এইখানে যত কাঁচের জানলা আছে, সবগুলার কাঁচ ভাইঙ্গা ফালামু।

অ্যাঁ চোখ টিপি হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি


মন্তব্য

খেকশিয়াল এর ছবি

হিহি দুইটাই মজার, তবে এই দুইটাও শুনছিলাম দেঁতো হাসি

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

আনিস মাহমুদ এর ছবি

মনে পড়ল আরেকটা গল্প:

টিএসসি-র মোড়ে বসে এক পাগল হাতে বেশ বড় একটা পাথর নিয়ে সারাদিন ধরে নিজের মাথায় ঠকাশ-ঠকাশ করে মারে আর ব্যথায় আর্তনাদ করতে থাকে। তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হল, কী ব্যাপার ভাই, আপনি নিজেই নিজেরে মারেন, আবার নিজেই চিল্লান... ঘটনা তো বুঝলাম না।

পাগল একটু মুচকি হেসে বলল, বুঝবেন... একটু কাছে আসেন।

প্রশ্নকর্তা ঘাবড়ে গেল... মারবে নাকি রে বাবা?

মনোভাব বুঝতে পেরে পাগল বলল, না রে ভাই, মারুম না, কানে কানে কমু।

আশ্বস্ত হয়ে পাগলের মুখের কাছে কান নেবার পর ফিসফিস করে পাগল বলল, ভাই রে, মারা যখন বন্ধ রাখি, তখন কী যে আরাম লাগে!

.......................................................................................
Simply joking around...

খেকশিয়াল এর ছবি

হাহাহাহাহাহহাহা

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

আলমগীর এর ছবি

ক'বছর আগে হলে হয়ত হাসতাম। কিন্তু এখন এধরনের কৌতুক কেবল রুচিহীন না, বড় নির্মম ঠেকে। আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির কিছু জিনিশ বড় কদর্য।

(মন্তব্য ভুল না বুঝলে ভাল।)

কীর্তিনাশা এর ছবি

মন্তব্য ভুল বোঝার কোন কারন নেই, আলমগীর ভাই। আমি আসলে এভাবে কখনো ভেবে দেখিনি। এখন ভাবলাম এবং অপরাধবোধেও ভুগতে হলো।

তবে দেশীয় সংস্কৃতিকে যে আপনি গালি দিলেন, সে ব্যাপারটা ঠিক মানতে পাড়লাম না। কারন এ দুটো কৌতুকই আমি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে বাংলায় অনুবাদ করে ছেড়ে দিয়েছি। তাই এ দোষ শুধু আমাদের দেশের সংস্কৃতির ওপর বর্তায় না, পুরো পৃথিবীতেই এ ধরনের কৌতুক প্রচলিত আছে বলে আমার ধারনা।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

আলমগীর এর ছবি

এতে অপরাধবোধে ভুগার মতো সিরিয়াস কিছু নাই। আমি মনে হয় বেশী সিরিয়াস করে ফেল্লাম, মাফ করবেন।

দেশী সংস্কৃতিকে গালি দেই নাই। কিছু কদর্যতা আছে আমাদের যা অন্যদের মাঝে অতটা দেখি না। ধরুন, দৃষ্টিহীন কাউকে আমরা অহরহ কানা নামে সম্বোধন করি (আদর্শলিপিতে যাই পড়ি না কেন)।

আরো আছে, তা নিয়ে না হয় পরে বলা যাবে।

ভাল থাকবেন।

আজিজুল বাশার এর ছবি

কিন্তু আপনি নিজে যখন সূবর্ণার বিয়ের গল্প লিখে রস খুজেন ? আর আখি আলমগীরের ভিডিও ক্লিপ আপলোড করে মজা পান , সেটা কি খুব রুচিপূর্ণ কাজ হয় জনাব আলমগীর ?
অভাজন

আলমগীর এর ছবি

সুবর্ণার গল্পে আমি রস খুঁজলাম? ভালই বুঝেছেন।
আঁখির ভিডিও আমি আপলোড করেছি?
আমি লিংক দিয়েছি, তাও রেস্ট্রিক্ট করে।
আপনার যদি সৎ সাহস থাকে নিজের নামে লিখেন বা পোস্ট দেন।

ঝরাপাতা এর ছবি

আসলে যে সময় থেকে পাগল (কাউকে পাগল বলা সামাজিক অপরাধ), মানসিক প্রতিবন্ধী, এতিম এদের কষ্টগুলোকে বুঝতে শিখেছি, তখন তাদের নিয়ে কৌতুকগুলো শুনলেই অপরাধবোধে ভুগি।

প্লিজ ভুল বুঝবেন না। আপনার কাছ থেকে চীনা কৌতুক শুনতে চাই।


যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

কীর্তিনাশা এর ছবি

ভুল বোঝার কোন কারন নেই ঝরাপাতা। আমি সত্যিই এখন অপরাধবোধে ভুগছি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার এমন ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য।

চীনা কৌতুক আরো সংগ্রহ করতে পাড়লে অবশ্যই পোস্ট করবো।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

খেকশিয়াল এর ছবি

ওভাবে ভেবে দেখা হয়না কৌতুক শোনার সময়, শুধু গল্পটাই শুনি, কিন্তু ব্যাপারগুলো আসলেই অমানবিক, আমিও অপরাধবোধে ভুগলাম

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মুশফিকা মুমু এর ছবি

প্রথমটা পড়ে ভয় লাগল দ্বিতীয়টা হাসির হো হো হো
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

আনিস মাহমুদ এর ছবি

অনেকদিন আগে প্রমথনাথ বিশী-র একটা লেখায় পড়েছিলাম: পাগল প্রধানত দুই প্রকার- মুক্ত পাগল ও বদ্ধ পাগল। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুক্ত পাগলদের হাত থেকে সংখ্যালঘিষ্ঠ বদ্ধ পাগলদেরকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে আশ্রম-বিশেষে ভরে রাখা হয়।

তাই বলি, ভাইসব, এত অপরাধবোধে জর্জরিত হওয়ার কিছু নেই। ওই রোগ কমবেশি আমাদের সকলেরই আছে। কেউ বউ-পাগল, কেউ গদি-পাগল, কেউ নাম-পাগল, কেউ টাকা-পাগল, কেউ সচল-পাগল, কেউ অচল-পাগল, কেউ এমনি পাগল। তাই এক পাগল আরেক পাগলকে নিয়ে মজা করছে, এর মধ্যে তেমন কোনো দোষ আমি দেখি না, যদি না সেটা আক্রমণাত্মক হয়। তা ছাড়া, তথাকথিত পাগলদের প্রতি করুণার মধ্যে এক ধরনের ego massage হয় বলে আমার ধারণা।

.......................................................................................
Simply joking around...

খেকশিয়াল এর ছবি

আমিও এমনই কিছু বলতে চাচ্ছিলাম কিন্তু কথা খুজে পাচ্ছিলাম না, আপনি বলে সোজা করে দিলেন । আমার মনে হয় না এখানে কেউই কারো দুর্বলতা নিয়ে হাসাহাসি করছিল ।

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

ঝরাপাতা এর ছবি

সুনীলের উপন্যাসে (সম্ভবত: প্রথম আলো-তে নৌকাডুবি হয়ে মরতে বসার পরে রবি ঠাকুরের সেজদা) একটি কথা ছিলো এরকম- মৃত্যু নিয়ে আমাদের উচ্চমার্গের বিলাসিতাগুলো করার মূল কারণ বোধহয় এটাই যে আমরা বেঁচে আছি। সত্যিকারভাবে মৃত্যুর সম্মুখে থেকে উচ্চমার্গের সাহিত্য রচনা করা সম্ভব নয়। আর হ্যাঁ, সমবেদনা আর করুণাকে এক না করাই ভালো। ভুল হোক বা শুদ্ধ হোক এই অনুভূতিগুলিকে এভাবেই না হয় বেঁচে থাকতে দিন।


যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

আবির আনোয়ার [অতিথি] এর ছবি

দ্বিতীয়টা বেশী মজার। আর ভাই কৌতুক নিয়ে এতো সিরিয়াস হওয়ার দরকার কি?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।