গ্রামের স্কুলের মাঠে শালিসের মজলিশ বসেছে। বিচারক স্থানীয় এলাকার চেয়ারম্যান। আর আসামি সিরাজ মাঝির ষোড়শি মেয়ে জমিলা। তার অপরাধ - সে গ্রামের মসজিদের সম্মানিত ইমামের একুশ বর্ষিয় ছেলেকে ফুঁসলিয়ে-ফাঁসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে। তারপর তাকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছে। কিন্তু ইমামের সাঙ্গ-পাঙ্গরা গ্রাম ছাড়বার আগেই খুঁজে তাদের ধরে ফেলেছে। এখন ইমামের ছেলের জায়গা হয়েছে ইমামের বাড়ির একটা তালা বদ্ধ ঘরে। আর জমিলার বিচার বসেছে ভরা মজলিশে। তার পাশে তার বাবা সিরাজ মাঝিকেও দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ইমামের ভাস্য মতে সে হচ্ছে এই পাপের ইন্ধন দাতা।
বিচারক চেয়াম্যানের পাশেই চেয়ারে বসে ইমাম পান চিবুচ্ছে কচাৎ মচাৎ করে। আর কিছুক্ষণ পর পর ফিচিৎ করে পিক ফেলছে এদিকে সেদিকে। সেই সাথে তুবরি ছুটাচ্ছে গালাগালির জমিলা আর জমিলার বাবার উদ্দেশ্যে। সে থামলে চেয়ারম্যান শুরু করে গালাগালি। এভাবেই চলছিল বিচার প্রক্রিয়া। যে বিচারের রায় শালিস বসার আগেই ঠিক হয়ে গেছে।
জমিলা শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। চেহারায় তার কোন অভিব্যাক্তি নেই। এতে চেয়ারম্যান আর ইমামের মেজাজ আরো চড়ে যাচ্ছিল। আরে বেটি একটু কান্নকাটি কর! অনুনয় বিনয় করে একটু মাফ চা ! - এই তাদের মনের ভাব। সিরাজ মাঝিও এক বোকচোদ। সেও তো একটু কান্না কাটি করতে পারে। তা না স্থির হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে মেয়ের পাশে।
অবশেষে বিচারের রায় ঘোষনা হলো। জমিলা তার অপরাধের জন্য পঁচিশ ঘা দোড়রা খাবে। আর পাপের ইন্ধন দাতা হিসেবে সিরাজ খাবে আরো পঁচিশ ঘা বেশি। এখন এই দোড়রা মারবে কে? একটু খুঁজতেই ভিড়ের মাঝে মজিদ লাঠিয়াল কে পাওয়া গেল। সে হচ্ছে এই তল্লাটের এক সময়ের বিখ্যাত লাঠিয়াল তুর্কি খা’র বংশধর। তুর্কি খা’র ভয়ে এই এলাকার বাঘ মহিষ এক ঘাটে পানিই খেত না কেবল। তারা নাকি গলাগলি ধরে নাচা নাচিও করতো।
কিন্তু সেই তুর্কি খা’র বংশধর মজিদের দোড়রা মারার কোন উৎসাহ দেখা গেল না। সে কিছুতেই রাজি না। চেয়ারম্যান আর ইমাম অনেক করে তাকে বোঝাল, অনুরোধ করলো। তাদের চ্যালা চামুন্ডারাও অনেক তেলানি কথা বলল। শেষে মজিদ তার লম্বা তেল চকচকে লাঠিটা নিয়ে উঠে দাঁড়াল।
প্রথমে জমিলার পালা। তাকে নিয়ে আসা হলো চেয়ারম্যান আর ইমামের একদম কাছাকাছি। দু’জন দু’দিক থেকে তার হাত চেপে ধরলো। মজিদ তার পেছনে গিয়ে দাঁড়াল দোড়রা মারার জন্য। জমিলা তখনও স্থির। যেন একটা পাথরের চাঁই। মজিদও দাঁড়িয়ে রইলো। লাঠি তার কিছুতেই উঠতে চাচ্ছে না। চেয়ারম্যান ধমকে উঠলো - আরে মজিদ মিয়া খাড়াইয়া রইলা কেন? মারো! মাইরা ওর হোগার চামড়া ছিল্লা ফালাও!!
হঠাৎ মজিদের কি হলো। সে চেঁচিয়ে উঠলো - ধুত্তরি! এই বালের বিচারের গুষ্টি কিলাই! বলেই সে তার লাঠিটা সাজোড়ে হাঁকালো চেয়াম্যানের মাথায়। চেয়ারম্যান গাঁক করে একটা আওয়াজ করে চেয়ারেই লুটিয়ে পড়ল। ইমাম অবস্থা বেগতিক দেখে চেয়ার ছেড়ে উঠছিল পালানোর জন্য। কিন্তু পুরোপুরি ওঠার আগেই তার মাথায়ও পড়লো এক বাড়ি। সে বাড়িতে তারও কম্ম কাবাড়। চেয়ারম্যানের চ্যালারা যে যেদিকে পাড়লো পালালো। গ্রামবাসী যারা মজা দেখার জন্য দাঁড়িয়েছিল তারাও হাওয়া হয়ে গেল।
এতক্ষণ লোকে গমগম করা মাঠে রইলো কেবল পাঁচজন। দু’জন সঙ্গাহীন। আর তিনজন দাঁড়িয়ে আছে কিংকর্তব্যবিমুঢ়, চুপচাপ। লাঠিয়াল তুর্কি খা’র বংশধর মজিদ তার লাঠির দিকে তাকিয়ে একবার শুধু বিরক্ত মুখে বলল - ধুরো বাল!!
মন্তব্য
আপনার গল্পগুলো পড়ার মজাটা হচ্ছে হঠাৎ করে একটা দারুন কিছু ঘটে যায়। গল্প অতি মজার হয়েছে
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
ধন্যবাদ
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
দারুন টুইস্ট!! মজা পাইলাম...
_______________
এক ছাগলের দুই কান,
তুই আমার জানের জান।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
আপনারা মজা পেলে আমিও মজা পাই।
ধন্যবাদ
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
যাক, ঈদের বন্ধের পর "ফ্যাক্টরী" আবার চালু হল
A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?
আমিও এই কথাটাই কইতে চাইসিলাম। কীর্তিভাই গল্পে জাঝা
=============================
@ রায়হান
হ তাতো কইবেনই। যাহা সত্য তাহা কইতেই হবে
আপনারেও জাঝা
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
@ প্রহরী
জি ভাই কল চালু দিছি ফুল স্পিডে
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ভালো
...........................
Every Picture Tells a Story
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
- ধুরু বাল!!!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কারে কইলেন ?
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
জটিল হইছে জটিল !!
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ধন্যবাদ শিয়াল মশাই
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ইমাম সাহেব আর চেয়ারম্যানকে বুশের সাম্প্রতিক জুতোমারা ভিডিওটা দেখানো হউক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভালো কইসেন!!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
বেশ...
ধন্যবাদ শিমুল ভাই
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
দারুণ!
....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
থ্যাঙ্কু
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আহা! বাস্তবেও যদি এমন হতো!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
দারুন দারুন.........
ধন্যবাদ, থ্যাঙ্কু !!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
নতুন মন্তব্য করুন