বায়োকেমিস্ট রাশেদ সাহেব তার নিজস্ব গবেষনাগারে বসে কি সব নাড়াচাড়া করছিলেন। হঠাৎ সেখানে ঝড়ের বেগে তার গৃহ ভৃত্য নুরুর আগমন। সে একটানা হেসেই যাচ্ছে - হা হা হা, হো হো হো। রাশেদ সাহেব ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন - কি রে অমন ফ্যাক ফ্যাক করে হাসছিস কেন? লাফিং গ্যাস ঢুকেছে নাকি পেটে?
নুরু তার হাসির ফাকেই বলতে লাগলো - সার রাস্তার মোড়ের মাঠে মতিগো গরুডার পিঠে একটা কুত্তা উঠছে। তারপর চাইর পায় গরুডার পিঠ খামচাইয়া ধইরা ইচ্ছা মতো গরুডার হোগা মারতাসে। গরুডা ল্যাজের বাড়ি মাইরাও কুত্তাডারে সরাইতে পারতাসে না। ঐ ল্যাঞ্জার ফাক দিয়াই কুত্তাডা সমানে মাইরা যাইতাসে। হো হো হো!
রাশেদ সাহেব হাসি মুখে বললেন - বলিস কি?
নুরু বলল - হ সার! মতি মিয়া একটা লাডি দিয়া কুত্তাডারে সমানে পিডাইতাসে। তাও কুত্তাডা নামে না। হে হে হে! নুরুর হাসি আর থামতেই চায় না।
পরিচিতদের কাছে পাগলাটে বলে ক্ষ্যাত রাশেদ সাহেব তিড়িং করে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর দু'পাক নেচে নিলেন হুররে বলে। দেখে নুরুর হাসি থেমে গেল। সে জিজ্ঞেস করলো - কি হইসে সার?
রাশেদ সাহেব বললেন - সে কথা পরে হবে। আগে বল তোর গা থেকে এমন মাছের গন্ধ আসছে কেন? গন্ধে আমার বমি পেয়ে যাচ্ছে। এদিকে আয়! নুরু গোমড়া মুখে রাশেদ সাহেবের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো আর মিন মিন করে বলল - মাছের বাজার দিয়া আসছি। মাছের গন্ধ আইবো না তয় কি ফুলের গন্ধ আইবো?
রাশেদ সাহেব টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা ছোট শিশি বের করলেন। তারপর শিশির মুখটা খুলে নুরুর গায়ে তা থেকে কিছু তরল ছিটিয়ে দিলেন আর বললেন - নে তোর গায়ে আঁতর ছিটালাম। আর দুর্গন্ধ আসবে না। এখন যা মোড়ের দোকান থেকে গরম চা আর সিঙ্গারা নিয়ে আয়। তোর জন্যও আনিস দুজন মিলে খাবো।
নুরু টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেল। কিন্তু পাঁচ মিনিট যেতে না যেতেই হঠাৎ বাইরে তুমুল একটা শোরগোল শোনা গেল। কেউ একজন তারস্বরে চেঁচাচ্ছে - ওরে মারে! ওরে বাবারে! খাইয়া হালাইলো রে! মাইরা হালাইলো রে! আর সেই সাথে কিছু কুকুরের ঘেউ ঘেউ চিৎকারও শোনা গেল। এর মাঝেই নুরু এসে ঘরে ঢুকলো। তারপর সপাটে দরজা বন্ধ করে দিল। হাপাচ্ছে সে ভিষন। রাশেদ সাহেব আগ্রহ নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকলেন।
একটু নিজেকে সামলে নিয়ে নুরু বলল - সার রাস্তার কুত্তাগুলা সব পাগল হইয়া গেছে। সবগুলা মিল্লা আমারে এমন দৌড়ানি দিছে! ধরতে পারলে আমার জানটা গেছিল আজকে। বাইরে তখনো কুকুরের ডাক শোনা যাচ্ছে - ঘেউ ঘেউ ঘেউ!
রাশেদ সাহেব আবারো নেচে উঠলেন সাথে চিৎকার - হুররে ! মার দিয়া কেল্লা! তার আচরনে নুরু আবারে থমকে গেল। বলল - সার এদিকে আমার জান নিয়া টানাটানি আর আপনে করেন নাচানাচি। এইটা কেমন ইনসাফ হইলো?
রাশেদ সাহেব হেসে উঠলেন - আরে রাগিস না রে গাধা! তুই জানিস না কত বড় আবিস্কারে তুই সাহায্য করেছিস আমাকে। এখন যা গোসল করে নতুন কাপড় পড়ে আয়। তোর সামনে এখন অনেক কাজ।
নুরু গজ গজ করতে করতে গোসল করতে গেল। সে ফিরে আসতেই রাশেদ সাহেব তার দিকে অনেক গুলো আঁতরের শিশি এগিয়ে দিলেন সাথে একটা কাগজ - এই নে এই আঁতরগুলো এই কাগজে লেখা ঠিকানাগুলোয় কুরিয়ার করে দিয়ে আয় এক্ষুনি।
নুরু জিজ্ঞেস করলো - কিন্তু সার, এতকিছু থাকতে আঁতর পাডাইতাছেন কারে? রাশেদ সাহেব আবারো হাসলেন - শোন এটা যেই সেই আঁতর না। এই আঁতরে এমন এক সুগন্ধি ব্যাবহার করেছি আমি যা কোন কুকুরের নাকে গেলে সেই কুকুর পুরোপুরি কামোন্মাদ হয়ে যাবে। এই গন্ধ যার শরীর থেকেই আসুক, সে মানুষ, গরু কি বাঘই হোক কুকুর তার দিকে ছুটে যাবে যৌনাকাঙ্খা মেটানোর জন্য। আর মদ্দাগুলো কোন একটা ছিদ্র পেলেই হোল, অমনি তার অঙ্গখানা ঢুকিয়ে মারা শুরু করে দেবে। সকালে আসার পথে ঐ গরুটার গায়ে এই আঁতর ছিটিয়ে দিয়েছিলাম কিছুটা তাই গরুটার ঐ দশা। তোর গায়ের মাছের গন্ধও দূর করেছিলাম এই সুগন্ধী দিয়ে। তাই তোকেও কুকুর তাড়া করেছিল। যাক সে কথা এখন যা ওগুলো কুরিয়ারে দিয়ে আয়।
এসব কথা শুনে নুরুর মুখ হা হয়ে গেল। বলল - সার এত বড় সব্বোনাশটা কার করতে চাইতাসেন? যারাই এই আঁতর মাখবো তারাই তো কুত্তামারা খাইবো!
আরে সেটাই তো আমি চাই - রাশেদ সাহেব বললেন - ঠিকানার নামগুলো দেখ সবগুলা যুদ্ধাপরাধী। একাত্তরের রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস। ওদের জন্যই আমার এ আঁতর আবিস্কার। আরো ঠিকানা জোগাড়ের চেষ্টা করছি। একে একে সবগুলার কাছেই পাঠাবো। শয়তান গুলার একটাও যদি কুকুরের কাছে ধরা খায়, তাহলেই আমার আবিস্কার স্বার্থক।
নুরু বলল - তাইলে যাই সার, অক্ষনই কুরিয়ারে দিয়া আসি। কিন্তু সার ব্যাটারা যদি এইটা নিজে ব্যাবহার না কইরা অন্য কাউরে দেয়?
দিলে তো ওদের সাঙ্গ-পাঙ্গ, বন্ধু-বান্ধবকেই দেবে - রাশেদ সাহেবের উত্তর - যারা যুদ্ধাপরাধীদের সাথে সম্পর্ক রাখে তাদেরও শাস্তি পাওয়া দরকার। যা তুই দিয়ে আয়।
নুরু : হ সার, দিয়া আসি। হালারা মাগনা আঁতর পাইয়া খুশি হইয়া গায়ে মাখবো আর রাস্তায় বাইর হইলেই কুত্তামারা খাইবো। কেন খাইলো বুঝবারও পারবো না। খা হালারা কুত্তামারা খা!!
মন্তব্য
হাহাহাহ! বেড়ে আবিষ্কার।
কি কি সব ফেরোমেন মিশিয়ে এ্টা তো বাস্তবেই করা সম্ভব!
তাই নাকি? জানতাম না তো !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
সত্যি যদি এরকম আতর তৈরি করা যেতো!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আহারে !
এইরকমটা সত্যি হলে কি ভালোই না হতো !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
নাশু ভাই আপনার কারখানা দেখি আবার পুরাদমে চালু হইছে পারফিউম সিনেমার গল্প মনে পড়ে গেল আপনার এই অণুগল্প পড়ে ।
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
না রে ভাই ঠিক করছি ফ্যাক্টরি আর চালামু না।
পারফিউম সিনেমাটা কি খুব ভালো? তাইলে দেইখা ফালামু।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
নাশু ভাইয়ের ফ্যাক্টরীতে দেখি আতর-ও তৈরি করা হয়! এই অত্যাশ্চর্য আবিষ্কারের জন্য নাশু ভাইকে মেডেল দেয়া হলো
মেডেল কি তামার না দস্তার?
গোল্ড তো দিবেন না জানিই।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
সোনা, রূপা, হীরা, পিতল, তামা - সব মেডেলই থাকবে। যে-টা খুশি বেছে নিয়েন
হা হা হা হা ! এক্কেবারে নাশ করছে, কীর্তি নাশ করছে...!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
তথাস্তু গুরু
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ভাই,
কঠিন লেখা।
তয়, এই আতরের খুব দরকার হয়ে পড়েছে।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
- হেহ হেহ হেহ
এটা গল্প না হয়ে চুটকী হিসেবেই ভালো মানায়!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
চুটকিই তো বস্
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
একটু ইয়ে হলেও ইয়েটা খারাপ হয়নি..... ইয়ে মানে বুঝে নিয়েন।
নিজের ফুলদানীতে যারা পৃথিবীর সব ফুলকে আঁটাতে চায় তারা মুদি; কবি নয়। কবির কাজ ফুল ফুটিয়ে যাওয়া তার চলার পথে পথে। সে ফুল কাকে গন্ধ দিলো, কার খোঁপায় বা ফুলদানীতে উঠলো তা দেখা তার কাজ নয়।
___________________________ [বুদ্ধদেব গুহ]
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
বুঝছি
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
নতুন মন্তব্য করুন