কলিমুদ্দি মৌয়ালদের দলে এবারই প্রথম যোগ দিয়েছে । সুন্দরবনেও এসেছে এই প্রথম। তাই অন্যান্য মৌয়ালরা যখন সর্দারের সাথে মধু সংগ্রহের জন্য জঙ্গলের ভেতরে গেল, কলিমুদ্দি তখন সিজু মাঝির সাথে রয়ে গেল নৌকা পাহারা দিতে।
নৌকা যে খালের পাড়ে ভিড়েছে তার সামনে বেশ এক টুকরো খোলা জায়গা। তারপরে শুরু হয়েছে বন। তা দেখে কলিমুদ্দির মনটা একটু উশখুশ করে ওঠে। সে সিজু মাঝিকে বলে - সিজু বাই, আমি ইট্টু ঐ খোলা জাগা দিয়া ঘুইররা আসি? সিজু হাসে, বলে - কোন অসুবিদা নাইরে ব্যাডা, যা মনের আউস মিডাইয়া ঘুইররা আয়। কলিমুদ্দি ভয়ার্ত চোখে জিজ্ঞেস করে - বাগে দরবে না তো আবার?
এ কথায় সিজু রেগে যায় - হারামজাদা, তরে না কইছি জঙ্গলে আইয়া ঐ নাম মুহে লবি না!! ক'বি বড়মিয়া। হের পরও কইলি ক্যা ? সে নিজের বুকে এক দলা থু থু ছিটায়। তারপর আবার বলে - আবার যদি কইছস, তাইলে থাবড়া মাইররা তোর দাঁত হালাইয়া দিমু।
সিজুর বকায় কলিমুদ্দি চুপশে যায়, বলে - আইচ্ছা, আর কমু না। এহন কও বড়মিয়ায় খাইবে না তো আবার? সিজুর রাগ তখনো পড়েনি। সে গজ গজ করে বলে - বড়মিয়া এহানে আসে না। যা ঘুইররা আয়।
আশ্বস্ত হয়ে কলিমুদ্দি নৌকা থেকে নামে। বনের হাওয়ায় তার মন উদাস হয়। হাটতে হাটতে সে বেশ দূরে চলে আসে। সেখানে সে একটা বড় গাছের গুরি পড়ে থাকতে দেখে। তাতে হেলান দিয়ে সে বসে পড়ে। তার মনটা আরো উদাস হয়ে যায়। এত উদাস যে তার ঘুম চলে আসে।
ঘুমের মাঝে কলিমুদ্দির কান চুলকে ওঠে। সে প্রথমে হাতের কনে আঙুল দিয়ে কান চুলকায়। কিন্তু তাতে জুত হয় না। তখন সে চোখ বন্ধ অবস্থাতেই এদকি ওদিক হাতড়ায় এবং একটু পড়ে তার হাতে নরম পেলব কি যেন ঠেকে। সেটাই টেনে নিয়ে সে কানের ভেতর ভরে দেয়। জিনিসটা এত মোটা যে কানের ফুটোয় পুরোপুরি ঢোকে না। তাতে কি, যতটুকু ঢুকেছে তাতেই সে আরাম পায়। সে ভালো করে জিনিসটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কান চুলকাতে থাকে।
চুলকাতে চুলকাতে জিনিসটা আরেকটু আয়ত্বে আনার জন্য সে মৃদু টান দেয়। অমনি ঘাউ করে একটা আওয়াজ ওঠে। সে আওয়াজে কলিমুদ্দির তন্দ্রা ছুটে যায়। সে এদিক ওদিক তাকায়। কিছু দেখে না। তারপর নিজের হাতে ধরা জিনিসটার দিকে তাকিয়েই সে জমে যায়। মনে মনে বলে - ওরে আল্লারে! এইডা দেহি বাগের ল্যাঞ্জা! তারপর গাছের গুরির ওপাশে উঁকি দেয়। দেখে একটা ইয়া বড় বাঘ ভোঁস ভোঁস করে নাক টেনে ঘুমাচ্ছে।
কলিমুদ্দি প্রথমে আতঙ্কে একেবারে তলিয়ে যায়। একটু পরে নিজেকে ফিরে পেয়ে আস্তে বাঘের লেজটা ছেড়ে দিয়ে পা টিপে টিপে সেখান থেকে একটু দূরে চলে আসে। তারপর দেয় দৌড় সোজা নৌকার দিকে।
নৌকার কাছে আসতেই সিজু তাকে জিজ্ঞেস করে - ঐ ব্যাডা এইরম পাগলের লাহান দৌড়াস ক্যা ? কলিমু্দ্দি প্রশ্ন শুনে হাসে হি হি হি করে, বলে - বাগের ল্যাঞ্জা দিয়া কান খাউজ্জাইসি!
শুনে রেগে গিয়ে সিজু দেয় এক থাবড়া - হারামজাদা তরে না কইসি জঙ্গলে ঐ নাম লবি না। তাও ক্যান কইলি? কইলি ক্যা ?? কথা শেষ করে সে আবারো এক থাবড়া হাকড়ায় কলিমুদ্দির পিঠে। কিন্তু তাতে কলিমুদ্দির কোন ভাবান্তর হয় না। সে হাসতেই থাকে - হি হি হি হি, হে হে হে হে!!
মন্তব্য
হোই হোই ফ্যাক্টরি চালু হইছে আবার। যাই পইড়া আসি।
=============================
মজা পাইলাম।
=============================
তোমার মতো উৎসাহদাতাদের জন্যই এখনো এসব আবজাব লিখে যাচ্ছি।
ধন্যবাদ, অসংখ্য ধন্যবাদ!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
বাঘের লেঞ্জুর দিয়া কান খাঁউজ্জাইতে মঞ্চায়...............
--------------------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।
দৃশা
অতি সত্তর হিমু ভাই'র সাথে যোগাযোগ করুন ...
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ভালো লাগছে। যদিও শেষে একটা জোরেশোরে থাপ্পড়ের আশা করছিলাম।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
কাছে আসেন থাবড়াটা আমিই দিয়া দিতাসি ......
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ফ্যাক্টরি চালু হইতে দেখে বড়োই আনন্দ লাগতেসে
বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকাইলে নাকি পরিণতি ভালো হয় না
ফিনিশিংয়ে আপনার ইউজুয়াল "থাপ্পড়" মিস করলাম
তবে মজা পাইসি অনেক। আরো লেখেন
আইচ্ছা লিখুমনে
বিখ্যাত সচল বিডিআর'কে ধন্যবাদ
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
- কপাল ভালো লেঞ্জা দিয়া কান চুলকাইয়াই কলি মিয়া ঠান্ডা থাকিয়াছে, ভ্রান্তিবশে বাঘের পোঁদে অঙুলি প্রবিষ্ট করিয়া ফেলিলে কী অনিষ্টটাই না হইতো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হ তাহা হইলে নিজের পোঁদের আর সন্ধান থাকিত না.........
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
কারখানা তাইলে পুরাদমে চালু
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
হ ..........
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
তখন ঘুমাচ্ছিলাম, কিছু করতে পারি নাই। কিন্তু এই অপমানের খবর ব্লগে চলে আসছে! যাই একটা হরিণ মারি ।
হরিন নাকি হরিনী ?
দাঁত মেজে যাবেন, নাকি খালি হাতেই ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
হরিণ মাইরেন না, হরিং মাইরেন
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
হিমু ভাই যেরম অপমানিত হইছেন তাতে হরিং মারলে হইবো না। পারলে একখান ডাইনোশুয়ার মারেন.........
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
তাও ভাগ্যিস বাঘ ওরে চুলকায় নাই ...
তাইলে আর থাবড়াটা খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা লাগত না ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
হ তাইলেই হইছিল কাম..........
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আহারে, সেই ছোটবেলার পর কতোদিন বাঘের গোঁফ দিয়া কান চুলকাই না! শালা, এই ঢাকার শহরে কুনু বাঘই নাই।
অবশ্য ভার্চুয়ালি একজন সবুজ বাঘ আছেন।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আপাতত ভার্চুয়াল বাঘ দিয়াই কাম সারেন তাইলে .......
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
দারুন মজার লেখা। সহজ, সরল, সুন্দর... সমুদ্ধ।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
তীরু'দা, আপনার মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ব্যাপক ভাব-সমৃদ্ধ বইলা বোধ হইতেসে, মানে আমি কিছুই বোঝলাম না।
তয় পইড়া ব্যাপক মজাক পাইলাম।
(শব্দশিল্পী)
ভাব নিয়া ভাবিত হইয়া কোনই ফায়দা নাই।
এখানে মজাটাই আসল
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
গল্পের নামটা সংশোধন করেন তাড়াতাড়ি, 'বাঘ'র জায়গায় 'বড়মিয়া' ক'রে দেন। নাইলে, বড়মিয়ায় যদি নাগাল না-ও পায় আপনারে, সিজুমিয়া'র থাবড়া থেইক্যা আপ্নেরে বাঁচাইবে কিডা?
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
অতিব মুল্যবান কথা
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ভাগ্যিস কলিমুদ্দির সাথে যাই নাই, আমার তো ঘুম আসে না সহজে, বাঘের পেটেই যাইতাম
হা হা ভাল কইছেন
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
নতুন মন্তব্য করুন