আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর (তারিখ: শনি, ১০/০৫/২০০৮ - ১১:৩৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একসময় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র আমার অনেকটা ঘরবাড়ির মতো ছিলো... ঢাকার বেশ কয়েকটা স্কুল আর বইমেলায় বুকস্টল পরিচালনা, একাদশ শ্রেণী কর্মসূচী... সবকিছুতেই আমি উপস্থিত। কেন্দ্রের ছাদ তো তীর্থস্থান ছিলো। এখনো যে জাভিকের কর্মীরা বছরে একবার তুরাগ নদীতে নৌকা ভ্রমনে যায় সেইটা আমরাই শুরু করছিলাম...
ঘনিষ্টতার কিছু হ্যাপা আছে... স্যারের সাথে আমার বা আমাদের কয়েকজনের বিগড়ি বাজলো... (বাপের আগে বাল পাকলে যা হয় আরকি) কেন্দ্র ছাড়লাম। বেশ অনেকবছর যাইনাই। মাঝে স্যারের সাথে দুইবার দেখা হইছে সাজ্জাদ ভাই আর মাজহার ভাই এর বাড়িতে... তবে কপাল খারাপ হইলে যা হয় আরকি... দুইবারই স্যারের সামনে বেজুইত্যা অবস্থায় পড়ছি (স্যারের সামনে বইসা সোনালী তরল পান করাটা খুব অস্বস্তিকর বটে)। এখন কেন্দ্ররে খুব মিস করি।
আমার কেন্দ্রের বই চুরি করতে হয় নাই জীবনে... বরঞ্চ স্কুলে স্কুলে পোলাপানে পুরস্কারের বই নিতোনা অনেক সময়... সেই জঞ্জাল সাফ করতেই বিরক্ত হইতাম। আর পাঠাগার থিকা কেমনে মারি... ঐটার দায়িত্বে তো বন্ধু কাজল ছিলো তখন।

এখন কেন্দ্ররে খুব মিস করি... খুব ইচ্ছা করে সুরঞ্জনায় আড্ডা দিতে... ছাদে বইসা ছোলা মুড়ি খাইতে। কিন্তু হায়... সেই কেন্দ্র এখন ধূলায় মিশায়ালছে... ১২ তলা বিল্ডিং হবে... বিশাল হম্বি তম্বি... মাস ২/৩ আগে একদিন বিকালে সেই ভগ্নস্তুপের উপরে দাঁড়ায়ে ছিলাম একা একা অনেকক্ষন। মনটা খুব খারাপ হইছিলো। এই বিল্ডিংটার উপরেও অনেক প্রেম ছিলো যে।

১২ তলা বিল্ডিং প্রকল্পের শুরুটা আমাদের সময়ই। তখন ডিজাইন টিজাইন কইরা ফোল্ডার ছাপায়া আমরা তো ১২ তলার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু বাগড়া বাজলো টাকা নিয়া... এত টাকা কইত্থে আসবে? জাপান সরকার দিতে রাজী হইলো... কিন্তু স্যার নিতে রাজী না। বিদেশী টাকায় না... কেন্দ্র হবে কেন্দ্রের লোকজনের ভালোবাসার টাকায়। একজন দুইজন না... সবাই মিলে কেন্দ্র গড়বে। ধরো তুমি পাঠাগারে একটা বইয়ের তাক কিনে দিলে... সেই তাকটা হবে নজরুল ইসলাম তাক। কেউ দিলো মিলনায়তনের খরচ... সেইটা হতে তার মিলনায়তন... এইসব করতে করতে পুরো প্রজেক্ট ভেস্তায়ে গেলো। আমরা হতাশ হইলাম। তারপর তো কেন্দ্রচ্চুতিই ঘটলো।
তবে সেদিন ধ্বংশস্তুপের উপরে খাড়ায়ে খাড়ায়ে স্যারের বিস্ত্রস্ত জার্নালের একটা কথাই মনে হইতেছিলো... সুরঞ্জনার লাল দেওয়াল প্রসঙ্গে তার কথা যে এইটা রক্ত দিয়া গড়া (বইটা হাতের কাছে নাই... তবে বিষয়টা এইরমই বোধহয়)। ভাবতেছিলাম... সেই রক্ত এখন ধূলায় মিশিয়া গেলো। এখন কেন্দ্র উঁচা বিল্ডিং হইতেছে। জানি না এই টাকা কোত্থেকে আসতেছে... তবে সেদিন গ্রামীণ ফোনের নিউজ বুলেটিনে একখানা ছবি দেখে বড় দিলচোট পাইলাম। বইপড়া কর্মসূচীর স্পন্সর করবে ডিজুস!!! তার সংবাদ সম্মেলনে পিছনে বিশাল ব্যানার... সেইখানে জিপির লোগো ইয়া বড়... কেন্দ্রের লোগো দেখাই যায়না। আর সামনে বসা রুবাবার গ্ল্যামার আর বিদেশীটার পাশে সায়্যীদ স্যার আর মনির মিয়ারে এমন নাজেহাল লাগতেছিলো... আহারে... জিপি স্যাররেও কিনলো? কেন্দ্ররেও? কেন্দ্র তাইলে নিজের লোকদের ভালোবাসার টাকায় চললো না? চলতে পারলো না? সত্যি... আমরা হালায় কেন্দ্ররে ভালোবাসলাম না... এইটাই সত্যি। স্যার কোনদিন প্রশ্ন করলো না কেন তোমরা কেন্দ্র থেকা দূরে সরলা? জীবন যুদ্ধে টাকার প্রয়োজনে ভুইলা গেলা কেন্দ্ররেই? কেন জিগাইলো না স্যার? আরেকদিন দেখা হইলে তারেই উল্টা জিগাইতে হইবো।
ধ্বংসস্তুপের উপরে খাড়ায়ে খাড়ায়ে খুব অভিমান হইছিলো... এই ভবনটা ভাঙ্গার আগে অন্তত একটা আওয়াজ কেন দেওয়া হইলো না? তাইলে আমরা যারা সাবেক কেন্দ্র প্রেমিক তারা শেষবারের মতো জমায়েত হইতে পারতাম... স্যারের কি উচিত্ ছিলো না পত্রিকায় অন্তত একবার ফাঁস করা যে এই ভবন ভাঙ্গা হইতেছে? খুব রাগ হইছিলো... তখন থেকে এখন পর্যন্ত আমি সিনিয়র জুনিয়র যারে সামনে পাইছি তার কাছেই স্যারের বদনাম করছি... জানাইলো না একবার?
এখন এই পোস্ট লেখতে লেখতে এইক্ষনে আইসা মনে হইতেছে... আমি শালা ছোটলোকেরও অধম... স্যার কেন একবার জানাইলো না সেইজন্য ক্ষোভাই... একবারও ভাবি না... কেন্দ্রের খোঁজ রাখার দায়িত্বটা তো আমরা একেবারেই পালন করি নাই? কি সুন্দর স্যারের উপরে দায়িত্ব চাপায়ে দিয়ে আবার তারই গিবত গাই। নি্শ্চিত তিনি এইজন্যও কিছুই বলবেন না আমাদেরে... হালায় এইরমই একটা অমানুষিক ভালো মানুষ।

স্যার মাঝে (এমনকি এখনও) কেন্দ্র থেকা অনেক দূরে সরে গেছেন... তার মূল আকর্ষন এখন পরিবেশ আন্দোলন... বাপা... আমার মনে হয় এইটাও তিনি একটা যুগান্তকরী কাজ করতেছেন... মাঝে মাঝে উত্কণ্ঠা হয়... কেন্দ্রে যেইরম একদঙ্গল পাগলা কর্মী পাইছিলেন বাপায় কি পাইছেন? খুব ইচ্ছা করে স্যারের সাথে আবার শামিল হইতে... কিন্তু পারি না। হয় না।

কেন্দ্রে সবচেয়ে লোভের জায়গা আমার ছিলো মিউজিক লাইব্রেরিটা... ঐখানে খুব একটা কেউ যাইতো না... কিন্তু কালেকশন ছিলো ভয়াবহ... তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জামিল ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে লাইব্রেরিটা গড়া হইছিলো...স্যাররে কত্ত কইছি এইটা আবার চালু করেন... একটা মিউজিক সার্কেল হউক... কিন্তু হইলো না। এখন সেইগুলা কই আছে জানি না। নষ্ট হয়া গেলে খুব কষ্ট পামু।

একদিন সুরঞ্জনায় বইসা আড্ডা দিতেছিলাম... স্যার গেছেন চট্টগ্রাম... হঠাত্ ফোন কইরা মুনির ভাইরে বললেন তার বাসায় গিয়া আলমারী ঘাঁইটা যেন তিনি একটা দলিল উদ্ধার কইরা চট্টগ্রাম রওনা হন... কেন? কিসের দলিল? স্যার নাকি অনেক আগে একটা পাহাড় কিনছিলেন... সেইটার কথা মনে ছিলো না... চট্টগ্রাম গিয়া মনে পড়ছে... এখন সেইটা উদ্ধার করবেন।
সেই থেকে একটা পাহাড় কেনার আমার দারুণ শখ... গারো পাহাড়ে কিনবো নাকি চট্টগ্রামে কিনবো তা নিয়া এখনো ভাবিত... খোঁজ চলতেছে।
পাহাড় হয়তো কেনা হবে আমার... কিন্তু এই জীবনে অনেক পর্বতরে হাতের কাছে পায়াও হেলায় পাশ কাটায়ে গেছি... যেমন আব্দুল্লাহ আবু সায়্যীদ... (দীর্ঘশ্বাসসমেত সমাপনী)


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লাগলো। সাথে দীর্ঘশ্বাসটাও ছুঁয়ে গেলো।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ শিমুল... আপনার লেখা অনেকদিন পড়ি না... কই ডুব দিলেন?______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ডুব দিই নাই, আছি আশেপাশে। ধন্যবাদ/

পরিবর্তনশীল এর ছবি

সেই যে আমার ... দিনগুলি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আবারো দীর্ঘশ্বাস
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

৯৪ পর্যন্ত কেন্দ্রের যতগুলো প্রকাশনা সবগুলো আমার বিনা পয়সায় সংগ্রহ করা
তার উপরে স্টক লাইব্রেরির প্রায় ৪০ টা বইতো আছেই
সঙ্গে ক্লাস সিক্স থেকে টুয়েল্ভ পর্যন্ত জাভিকের সব বই কেন্দ্রের পান্ডা হিসেবে বিনা পয়সাতেই আমার সংগ্রহে জমা হয়েছে (কেউ বলতে পারবেনা মারিং। কারণ ওগুলো আমার দায়িত্বেই ছিল)

০২
বিল্ডিং ভাঙার খবরটা এই মাত্র আমি জানলাম। বহুদিন বহুদিন যাই না...

সেই আড়াই তলার গেস্ট হাউজে যখন ইচ্ছা তখন এসে উঠে গেছি। আর যতদিন থেকেছি সাড়ে তিন তলার কিচেন থেকে বিশাল এক প্লেটের মাঝখানে বিশাল এক স্তূপ ভাত আর তার চারপাশে নানান রকম তরকারি নিয়ে নোয়াখালির এক চাচা এসে হাজির হয়েছেন ঠিক সময় মতো

আর সেই ছাদ
আমার মতো মফস্বলীদের কাছে একেবারে স্বর্গের উদ্যান। এখানেই এক মাইয়া তার ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে একবার একটা নতুন সিগারেট বের করে দিয়েছিল। টান দিয়ে দেখি আহারে অসাধারণ। দাম মাত্র এক টাকা প্রতি স্টিক। তখন আমি খাই গোল্ডলিফ। গোল্ডলিফের অর্ধেক দামে এমন মধুর সিগারেট। নাম নেভী

তার পরের দিনই আমি সিলেট যাবার সময় মনে মনে ব্রান্ড চেঞ্জ করে গোল্ডলিফের অর্ধেক দামে এক প্যাকেট নেভী কিনলাম
কিন্তু টান দিয়ে দেখি- ওয়াক থু...

তখনই বুঝলাম বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ছাদে বসে কোনো মেয়ের ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে সিগারেট খাওয়া আর একা একা ট্রেনে বসে সিগারেট খাওয়ার স্বাদ আলাদা...

তারপরে ছাদে বসে মাঝে মাঝে নিচে স্যারের ছোট মেয়ে জয়ার আসা যাওয়া দেখা...
(যদিও আমার মতো গ্রামের লোককে তার পাত্তা দেবার কোনো কারণ ছিল না। কথাও বলত না)

০৩

এই কেন্দ্রের ছাদ থেকে ধরে নিয়ে গিয়েই একদিন আমিরুল ভাই আমাকে রিকশায় নিয়ে ঢাকা শহরের সবগুলো রাস্তা চিনিয়েছিলেন। প্রথম চিনিয়েছিলেন নাজিমউদ্দিন রোডের হোটেল নীরব। আর এই ছাদে বসেই একদিন বলেছিলেন- ছড়া লিখলেই সব লেওড়াকে ছড়াকার বলে না। ওগুলো লেওড়াকার...

মুনির ভাই ছাড়া ওই সময়ের কেউই নেই এখন কেন্দ্রে। মুর্তোজা_ বিপ্লব- শাকিল- মোহন- মাজহার ভাই...

আর স্যারকে একবার দেখতে গিয়ে আমার ভাল্লাগেনি। স্যার কেমন যেন সোজা হয়ে সোফায় বসে আছেন। অথচ তিনি আগে সোফায় বসলে কেমন যেন ভেঙ্গেচুরে তার একটা নিজস্ব স্টাইলে বসতেন। মোর্তোজা কিছুদিন ওই স্টাইল ফলো করেছিল। কিন্তু তাকে উদ্ভট লাগাতো স্যারের সেই স্টাইলে বসলে

০৪

কেন্দ্রে গেলে কিছুটা মেজাজও খারাপ হয় এখন। গেটে জিজ্ঞেস করে- কোথায় যাবেন?
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ঢুকতে হলে কার কাছে যাবো তা বলে ঢুকতে আমার বাধে
আমি কেন্দ্রে এসছি এটাইতো শেষ কথা। কার কাছে আবার যাবো?
আমি কেন্দ্রে যাবো

০৫

স্যার একবার বলেছিলেন আবার সময় দেবার জন্য
হয় কেন্দ্রে কিংবা তার আবহমানে
কিন্তু দুটোই কেমন যেন একটু দূর দূর মনে হয় এখন আমার
শাহজাহান সিরাজের সাথে তার পরিবেশ আন্দোলন। গ্রামীণ ফোনের সাথে জাভিক আর বিজ্ঞাপন এজেন্সির সাথে আহবহমান...
অনেক অনেক দূরের মনে হয়
অথবা কেন্দ্র এখন এতো উপরে উঠে গেছে যে আমরা আর নাগাল পাই না এখন
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে আর ছুঁতে পারে না আমার মতো নগণ্য মানুষ

০৬
নাগালের যত দূরেই চলে যান না কেন
তবু আব্দুল্লা আবু সায়ীদ থাকুন
থাকুক বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র এই পোড়া দেশে শুধু বইয়ের বেসাত নিয়ে

০৭
স্যারকে আমি দোষ দেই না
একটা প্রতিষ্ঠান বানানো আর তাকে টিকিয়ে রাখতে হলে নিজেকে কতটা বিকিয়ে দিতে হয় তার উদারহণ আমরা রবীন্দ্রনাথ থেকেও জানি
শান্তি নিকেতনের ফান্ডের জন্য মাড়ওয়ারী কিংবা আদমজীদের কাছে লেখা রবীন্দ্রনাথের সেই চিঠিগুলো পড়তে পড়তে আমরা দেখি এরকম একটা দরবেশ মানুষ শুধু টাকার জন্য বেনিয়াদের কাছে কতটুকু নতজানু হতে পারে...

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে আমাদের সবার গর্বের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে টিকিয়ে রাখতেই হয়তো স্যারকে হাত মেলাতে হচ্ছে শাহজাহান সিরাজের সাথে
হাত পাততে হচেছ গ্রামীনের কাছে
আর কুড়াতে হচ্ছে আমাদের কিছু ঘৃণা...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমার একসময় কাঁধ ছাড়িয়ে নামা লম্বা চুল, বিশাল দাড়ি আর উপরের ঠোঁট নিরুদ্দেশ করা গোফ ছিলো... কেন্দ্রের ছাদে বসেই জনৈক নারী বলেছিলো এই ঠোঁট নিয়ে কিস করতে সমস্যা হয়না? আমি বলেছিলাম আপাতত আমার কিসমিস নাই... তবে পাইলে গোফ কর্তনে রাজী... হা হা হা হা...
আহা... কত কত কত্ত যে স্মৃতি... সেই সাড়ে তিন তলা ভাইঙ্গালাইলো? একবার জানাইলো না পর্যন্ত? (আমি একটা মেগাসিরিয়ালও লেখছিলাম সাড়ে তিন তলা নামে)

মোর্তোজা ভাই তো চ্যানেল আই গোষ্ঠী থেকে নতুন পত্রিকা বের করতেছে... বিপ্লবদা কয়দিন চলচ্চিত্রান্দোলন কইরা এখন কোন পত্রিকায় জানি... শাকিল টিভি সাংবাদিক... মোহন কে মনে করতে পার্তেছিনা... আর মাজহার ভাই তো আছেনই... এখনও আমার তার সঙ্গেই যোগাযোগটা বেশি হয়। মোর্তোজা ভাই সবসময়ই স্যারকে খুব ফলো করতো... একসময় স্যার যা যা বলতো ভাষণে বা অন্যস্থানে সব রেকর্ড কইরা রাখতো মিনি টেপ রেকর্ডারে... এখন কই সেগুলা আল্লায় জানে। বহুদিন কেন্দ্রে না যাওনে গেটে এই জাতিয় প্রশ্নের সম্মুখিন হই নাই... বাঁচছি... নাইলে তো ক্যালেঙ্কারি হয়া যাইতো। একসময় সুরঞ্জনার বোর্ডে আমার ছবি না থাকলে চিল্লায়া ফটো ঝুলাইছি... সেই অধিকার এখন কই?
স্যারের কিছু কিছু ভাবনায় দ্বিমত ছিলো বলেই আসলে দূরে সরেছিলাম... তবে তারপরও এই লোকটার প্রতি শ্রদ্ধা আমার অপরিসীম... বাঙ্গালী জাতিরে বই পড়া শিখাইছে... এরপরে আর কোনও কারন লাগে না। তবে আমিও একই কথা ভাবি যে এখন বিসাকে আমার মতো মানুষের নাগালের বাইরে হয়তো।

লিয়াকত ভাই ছিলো স্যারের সবচেয়ে ঘণিষ্ঠ... তিনি কেন্দ্র ছাইড়া সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র দিছেন... কিন্তু কেন্দ্র আসলে কেন্দ্রই।
স্যারকে ঘৃণা করি না... তার উচ্চতার জায়গাটা অনেক উচ্চেই আমার কাছে... আমার সমান্তরালে স্যারের যতটুকু অসম্পূর্ণতা দেখি তাই নিয়া মাঝে মাঝে রাগ ঝাড়ি।
ঐ যে শুরুতে বলছি ঘণিষ্ঠতার কিছু হ্যাপা আছে... দূরের স্যারটা মহানই থাকুক।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুজিব মেহদী এর ছবি

বহুজাতিকের ছোবল থেকে কোন প্রতিষ্ঠান বাঁচবে তবে!
স্যারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই হয়ত, তিনি প্রতিষ্ঠানটির ভিতটিই আরেকটু মজবুত করতে চাচ্ছেন, সন্দেহ নেই।

বড়ো ভবন হওয়ায় অত ভয় নেই, ভয় বরং প্রতিষ্ঠানটির একটি বিশেষায়িত এনজিওতে পরিণত হওয়ায়।

................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

জিপি যেই হারে আগাইতেছে... কখন জানি তারা বলে- ঠিকাছে, বাজেটে কত টাকার ঘাটতি? এত টাকা? আইচ্ছা... এইটা আমরা স্পন্সর করতেছি... এখন থেকে সরকারের নাম হবে গ্রামীন ফোন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। (ফাইজলামির ইমোটিকন)
কেন্দ্র এনজিওর পথেই আগাইতেছে মনে হয়। এখন সেখানে এমবিএরা বসবে... কর্পোরেট অফিস হবে... বারো তলা বিল্ডিংয়ের বাণিজ্য হবে... কতকিছু হবে।
তবে স্যারকে দোষ দেই না আসলে... সে তো অনেকই করছে? আর কত? একসময় ভাবতাম স্যার মারা গেলে আর কেউ কেন্দ্রর হাল ধরার থাকলো না... (মাজহার ভাইও যাওনের পরে)
এখন অবশ্য ভাবনা নাই... এইটা বোধহয় একেবারেই কর্পোরেট সিস্টেমে চইলা যাইবো। ______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অমিত এর ছবি

গ্রামীন ফোন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

ব্যাপক

নজমুল আলবাব এর ছবি

লেখাটা মন ছুঁয়ে দিল।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনেও কি কেন্দ্রের?______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নজমুল আলবাব এর ছবি

নাহ, তবে বই পড়া কর্মসূচিতে ছিলাম কিছুদিন। আর ঢাকায় গিয়া দু একবার কেন্দ্রে ঘুরতে গেছি এই যা।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

অতিথি লেখক এর ছবি

মনটাই খারাপ হয়ে গেল! আর কিছু পাওয়া গেল না, শেষ পর্যন্ত djuice !!!

ফেরারী ফেরদৌস

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ডিজুস যখন প্রথম বাজারে আসে আমরা ভাবিত হইছিলাম এইটার নাম ডিজুস কেন? জানা গেলো ডিজুস মানে হইলো ডিজিটাল জুস... এইখানে ডিজিটাল সকল মজাদার আইটেম থাকবো...
তৈরি হইলো ডিজুস কালচার... প্রজন্মের নাম হইলো ডিজুস প্রজন্ম... সেই আসরে শামিল হইলো বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের জাতিয় ভিত্তিক মানসিক উৎকর্ষ কার্যক্রম।
কপাল আমার।
_________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

স্মৃতি জাগানিয়া লেখা। নজরুল ভাই যা যা লিখলেন প্রায় সবই চোখের সামনে যেন দেখতে পেলাম। আমি ডাকা বুকোর দলে ছিলাম, এবং আমাদের ব্যাচের শেষ পর্যন্ত যে কজন নিয়মিত কেন্দ্রের সাথে নানা কাজে যুক্ত ছিলো আমি তাদেরই একজন। কেন্দ্রের ভূরিভূরি কাজের সাথে যু্ক্ত ছিলাম। আমার শেষ কাজ ছিলো - সায়ীদ স্যারের টকশো 'গল্প-সল্প' আর ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান 'সোনালী দরোজা'য় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করা। স্যারকে অন্য অনেকের চেয়ে অনেক কাছ থেকে দেখার বিরল সুযোগ পেয়েছিলাম। টিকিয়ে রাখতে পারিনি, একসময় ভুল বোঝাবুঝি হলো, কাজের ধরন নিয়ে মতের অমিল দেখা দিলো, আমরা ৬ জনের একটা টিম কেন্দ্র থেকে আস্তে আস্তে ব্যাখ্যাতীত অভিমান নিয়ে দূরে সরে এলাম । তাই আপনার ব্যথা অনেকখানি উপলব্ধি করতে পারি। আর অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস ফেলি।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এইটাই হইছে... সেই শুরু থেকে এখনতক বহু বহু লোকই কেন্দ্রিভূত হইছে... কিন্তু এক পর্যায়ে সইরা গেছে অভিমান ভরে... কিন্তু বাসের ড্রাইভার খান ঠিকই বাস চালায়ে যাইতেছে...
_________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

নজরুল ভাই, আপনার লম্বা চুল কই? আরও মোটা হইছেন অথবা ছবিতে লাগতাছে।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সিডরে উইড়া গেছে। মোটা? কি কন? আমি তো শুকাইছি... আজকাই তিনজনে বলছে যে শুকাইছি... আপনে তো আগে দেখেন নাই আমারে... মোটা হইছি বুঝলেন কেমনে?______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

বিপ্লব রহমান এর ছবি

--বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র নিয়ে আমারও অনেক স্মৃতি।

এই মুহূর্তে মনে পড়ছে, '৮৬-৮৭ সালে সদ্য কৈশর পেরুনো এক কলেজ পড়ুয়ার লাইব্রেরীতে হামলে পড়া, চিয়ারত পাঠচক্র, আর সাজ্জাদ শরীফের কবিতার ক্লাসের কথা।..

--ওই সময় কেন্দ্র থেকে মফিজুল হকের সম্পাদনায় প্রকাশ হতো পাক্ষিক সাহিত্য পত্রিকা 'প্রেক্ষিত'। বেয়াড়া তরুণ সায়্যীদ স্যারকে জানিয়েছিলো, বাংলা ভাষায় 'প্রেক্ষিত' বলে কোনো শব্দ নেই। স্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া পর ওই পত্রিকাটি বন্ধ করে দেন।

তাঁর মহত্ব এতোই বিশাল। তিনি নিজে পাঠচক্রে সবার সামনে এই নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।

অনেক ধন্যবাদ।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনেই কন বিপ্লবদা... এত লোকের স্মৃতি জাগানিয়া বিশ্ব সাহিত্য ভবনটা ভাঙ্গা হইলো... একটাবার অন্তত সবাই মিলতে পারলে মজা হইতো না? বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বিশ বছর উপলক্ষে যেইরম হইছিলো?________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

থার্ড আই এর ছবি

আমি তখন মাত্র মফস্বল ছেড়ে ঢাকায় এসেছি। ৯৫ সনের কথা , স্কুল জীবনের সাহিত্য কেন্দ্রের চর্চার লেজুর ধরতে ঢাকার একাদশ শ্রেনীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রর বই পড়া কর্মসূচীতে যোগ দিলাম। প্রথম দিন আমি একটু অবাক হয়েছিলাম সুরঞ্জনা নামটি দেখে।
শুরুতেই ভেবেছিলাম কেন্দ্রের সংগঠকদের কেউ বুঝি সুরঞ্জনা নামের সুদর্শন বালিকা।
কেন্দ্রে এসে দেখি অভ্যর্থনা কক্ষটির নাম সুরঞ্জনা !
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

৯৫ সালের দিকে তো আমি কেন্দ্রে ব্যাপক আড্ডাবাজী করি... আপনে কি রাসেল শিমূলদের ব্যাচ? রাসেল এখন লন্ডনে আছে... কিছুদিন আগে দেশে আসছিলো...
আপনাদের সময়ে একাদশ শ্রেনীর বই দিতো বোধহয় চমক আর অরণ্য তাই না?_________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কষ্টের ছোঁয়া পাইলে চলিবে
কিন্তু কষ্ট পাওয়াটা বিপজ্জনক
_______________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক এর ছবি

পড়লাম...
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ
_______________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শাহীন হাসান এর ছবি

পড়লাম, অনেক কিছু জানলাম। নজরুল ভাই আপনাকে ধন্যবাদ।
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ
_________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍মহত্ একটা কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এই গর্বটুকু তো অন্তত করতে পারেন।

ভালো লাগলো লেখাটা। বিশেষ করে এই লাইনটা "হালায় এইরমই একটা অমানুষিক ভালো মানুষ।"

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি তুষ্ট আত্মপ্রেমেই। এর সুবিধে হলো, প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ সন্ন্যাসীদা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

জিফরান খালেদ এর ছবি

আমার কেন্দ্রের সাথে কোনোই স্মৃতি নাই... আমি শুধু আমার কবিতার অকৃত্রিম ভক্তদের সাথে যোগাযোগ রাখতাম (নার্সিসাসের বাচ্চা একটা!! বা, বাপ!!)...

আপনার স্মৃতিকাতরতা ভালো লাগলো... কিন্তু কোথাও এইটা পাইলাম না যে আসলে আপনার কোনো বিকল্প সমাধান ছিলো কিনা বা আপনার এইটা রোধে কিছু করতে পারার ক্ষমতা ছিলো কিনা?

লিখা পড়ে মনে হয় - ছিল না...

শুধু আরামদায়ক দুঃখবোধের জন্যে হলে ঠিকাছে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি আপনের কবিতার ভক্ত... আমার সাথে যোগাযোগ থাকুক আপনের

বিকল্প সমাধান ছিলো কি ছিলো না সেইটা বলা মুশকিল... ধরা যাক স্যারের সঙ্গে মতের অমিল। এইটার বিকল্প সমাধান হইতে পারতো যে তার প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি থাকায় আমি তার মত মাইনা নিতে পারতাম... কিন্তু আমি শ্রদ্ধা ভক্তির কাছে চিন্তার পরাজয়টা মানতে চাই না। ফলে এইটা রোধেও কিছু করার থাকে না আমার।
আবার আমি কেন্দ্রে পইড়া থাকলেও যে কেন্দ্রের খুব উপকার কিছু হইতো তা দাবীও করি না। (ক্ষতি হওনেরই সম্ভাবনা ছিলো... বাড়ি ঘর বানায়ালাইছিলাম তো)
ব্যাপারটা এইরকম যে থাকতে না পারার কষ্টটাও একান্ত ব্যাক্তিক... থাকতে পারলে সেইটাও একটা ব্যাক্তিগত সুখানুভূতি ছাড়া আর কিছু কি হইতো আদৌ? সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর কেউ দিতে পারবে না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তানভীর এর ছবি

জানা হলো অনেক কিছু। ধন্যবাদ।

= = = = = = = = = = =
তখন কি শুধু পৃথিবীতে ছিল রং,
নাকি ছিল তারা আমাদেরও চেতনায়;
সে হৃদয় আজ রিক্ত হয়েছে যেই,
পৃথিবীতে দেখ কোনখানে রং নেই।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদটা আসলে আপনারই প্রাপ্য... আপনার লেখা পড়েই মাথা কেন্দ্রিভূত হইতে শুরু করলো যে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

মহৎ একটা কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এই গর্বটুকু তো অন্তত করতে পারেন।

ভালো লাগলো লেখাটা। বিশেষ করে এই লাইনটা "হালায় এইরমই একটা অমানুষিক ভালো মানুষ।"


সন্ন্যাসীদা'র সাথে আমিও পুরা একমত। লেখাটা অসম্ভব ভাল্লাগসে। মন ছুঁয়ে যাওয়া লেখা...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।