১.
যেমন আমি ভুলে গিয়েছিলাম সব যুদ্ধই আসলে অন্তহীন
জীবনের বীজকম্প্র, যৌবনের প্রতীক!
এইভাবে ভ্রমণে যাওয়া ঠিক হয়নি আমার হৃদয়ে হয়তো কিছু
ভুলভ্রান্তি ছিল,
আমি পুষ্পের বদলে হাতে তুলে নিয়েছিলাম পাথর!
আমি ঢুকে পড়েছিলাম একটি আলোর ভিতরে, সারাদিন আর ফিরিনি!
অন্ধকারে আমি আলোর বদলে খুঁজেছিলাম আকাশের উদাসীনতা!
মধু- বদলে আমি মানুষের জন্য কিনতে চেয়েছিলাম মৌমাছির
সংগঠনক্ষমতা!
[ভ্রমণ যাত্রা, আবুল হাসান]
পথ হারিয়ে গেলে কবিতায় যাই, কবিতা ঈশ্বর আমার... আশ্রয়ের মতো। আমি অশ্রুতে লুকিয়ে ফেলি আরশোলায় আহত শহর। বেঁচে থাকে উলুকঝুলুক বৃক্ষ।
২.
বিমান বন্দর চত্বরে এখন শোভা পাচ্ছে মিনার। শুনেছি পথের রাজা মৃনাল হকই বানিয়েছেন এটাও।
অথচ তারই বানানো বাউল ভাস্কর্য যখন ভেঙ্গে ফেললো মৌলবাদীরা। দেশ তখন উত্তাল। সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড়। বিমান বন্দর চত্বরে আমরাই প্রথম, এই সচলায়তন থেকেই ডাক দিয়ে প্রকাশ্যে জানান দিয়ে প্রতিবাদের ব্যানার হাতে দাঁড়িয়েছিলাম বিমান বন্দর চত্বরে। যেখানে আর কেউ প্রতিবাদের সাহস পর্যন্ত করে নি। বাঘের গুহার সামনে আমরা দাঁড়িয়েছিলাম কটি মানব। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে কাকভেজা আমরা তবু সরে আসিনি। হামলার ভয়ে সরে আসিনি। পুলিশের ভয়ে সরে আসিনি।
ফোনে অব্যাহত হুমকীতে সরে আসিনি। রেকি করতে আমরা কজন আগের দিন বাঘের আড়তেও চলে যেতে দ্বিধা করিনি।
গভীর রাত পর্যন্ত অব্যাহত নিষেধের বেড়াজাল ভেঙ্গে গোপন বৈঠক... সদ্যশিশু সন্তান, সন্তানের মাতার অসহায়ত্ব, কিছুই দমাতে পারেনি। কী এক অসম্ভব সাহস আমাদেরকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলো সেই ঝড়ের দিনে।
কিছুই ছিঁড়তে পারিনি। কিছুই পারি না। আমাদের বুঝি প্রতিবাদটুকুই সম্বল। মৃনাল হকের ভাস্কর্যর বদলে সেখানে মৃনাল হকেরই মিনার ওঠে।
আমরা কেবলই উপহাস...
৩.
কবিতাই আশ্রয় ভালো...
এখন অন্যেরা কার করুণার ভিক্ষা চায়- যাবো
তাদের গলায় দেবো আমার আরাধ্য মালা, সকলের ভালো।
আমাকে গ্রহণ করতে হবে সব মানুষের উত্থান পতন;
জয় পরাজয় বোধ, পিছু ফেরা সামনে তাকানো-
আমার অনলে আজ জাগো তবে হে জীবন, জয়শ্রী জীবন!
[জলসত্তা, আবুল হাসান]
মন্তব্য
ভয়ের, লোভের কাছে মানুষের পরাজয়: নিয়তির নির্ঘোষ শুনে
প্রতিবাদী স্বরগুলি নির্বাসনে চলে যায় অনির্দেশ বিস্মৃতির বনে
' মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়। সকালে বিকালে বদলায়, মুহূর্তে মুহূর্তে বদলায়।...'
মৃনাল হক মরে যায় নি, বেঁচে আছে। তাই হয়তো......
হা হা হা ! দুঃখে কাঁদে অসহায়রা। যে দুঃখ পরিহাসের, সেখানে হাসতে হয়, অট্টহাসি দিয়ে ! হা হা হা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কী আর বলবো?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মৃণাল হক তো আমাদের আমাদের সভা-ভাস্কর। সেই আদিকাল থেকেই তো রাজানুকম্পার জন্য সভা-ভাস্কররা রাজাদেশের বাইরে যেতে পারেনি। রাজাজ্ঞাতো ‘লাইন-মতন’ই হচ্ছে। সভা-ভাস্কর ‘লাইন-মতন’ই এগোচ্ছেন। আপনাদের মত কিছু ‘আনফিট’ চিল্লাচিল্লি করেন, ‘আমাদের’ মত লোক মন খারাপ করে চুপচাপ বসে থাকি কিছুক্ষণ, কিন্তু আর সবকিছু তো যেভাবে ‘চলার’ সেভাবেই চলছে…।
যতদূর মনে পড়ে নির্বাচনের আগে জামাত-বিএনপি জোট ইস্যু তৈরী করার জন্য তাদেরই পোষ্য মৃণাল হকের তৈরী লালনের ভাস্কর্য্য অন্য একটি চুনোপুটি ইসলামী দলকে দিয়ে ভাঙ্গায়, পড়ে বিভিন্ন রকমের প্রতিবাদে ইস্যুটি তৈরী হয়নি ঠিকই কিন্তু মৃণাল বাবুর পকেট ফুলে ঢোল হয়েছে ঠিক!
এই মৃণাল বাবুই জেলখানায় তারেক রহমানকে ম্যুরাল তৈরী করেন ! শধু তাইনা তারেক সাহেব যে ঢাকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করেন সেখানেও সকল ভাস্কর্য্যের কন্ট্র্যাক্ট পান ঐ মৃণাল বাবুই!
আপনারা প্রতিবাদ করে সঠিক কাজটিই করেছেন,কাছে থাকলে আমিও যোগ দিতাম তাতে। কিন্তু আজকে এতোদিন পরে মনে হচ্ছে নিজের অজান্তে আমরা ঐখেলার গুটি ছিলাম !
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
এক বিচ্ছিন্ন দিনে আমাদের জন্ম হয়েছিল
ততোধিক অসুস্থ সময়ে
আমাদের মৃত্যু হয়ে যায়।
দূরে-কাছে শাদা উঁচু দেয়ালের ছায়া দেখে ভয়ে
মনে করে গেছি তাকে---ভালোভাবে মনে করে নিলে---
এইখানে জ্ঞান হতে বেদনার শুরু.
(এই শতাব্দী-সন্ধিতে মৃত্যু, জীবনানন্দ দাশ)
--------------------------------------------------------------------
. . এইসব নগর বন্দর দেশ আজো
অতীতের উত্তরাধিকার থেকে ক্লান্ত প্রাণে উঠে
নতুন সূর্যকে সেধে তবু তাকে শীত করে দিতে চায় যেন।
. . . . . . . . . . . . . .
এছাড়া এসব দেশ জাতি অধিনায়কের প্রাণে
কোথাও প্রেরণা নেই--দীপ্তি নেই;
আজ এই আধুনিক দিনে মাসে সময়ে কী কাজ হতে পারে
সে জ্ঞান হারায়ে ওরা অন্তহীন হেতুহীন সময়ের হাতে
সব ভুল শুদ্ধ হবে ভেবে
অবচেতনার অন্ধকারে প্লান পড়ে, প্যাক্ট করে।
সময়ের ব্যাপ্ত চোরাবালির ভিতরে
ডুবে যায়. .
(আকাশে রাত, জীবনানন্দ দাশ)
----------------------------------------------------------------------------------
অনেক কথাই বলা যেত। কিন্তু লেখাটা পড়ে মনটা এমন ছিঁড়ে গেল যে গুছিয়ে কিছু লেখা এখন অসম্ভব। তবে একটা কথা বলি। একটা তরবারীর শেষ কাজ তার মালিককে বধ করা। তারপর সে নতুন মালিকের হাতে ওঠে। ধন্যবাদ নজরুল ভাই, মন খারাপ করে দেবার জন্যে।
--আরিফ বুলবুল,
বুলবুল ভাই, আপনাকে এখানে দেখে ভালো লাগছে। সচলে শুধু কমেন্ট নয়, আপনার লেখাও দেখতে চাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বুলবুল ভাই কিন্তু নিয়মিতই লিখতেছে এখন সচলায়তনে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কী নামে সেইটা আমারে কানে কানে জানায়া দেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অতিথি লেখক হিসাবেই আছেন এখনো, অচল... কবিতা/গান লিখে চলেছেন অবিরাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মন খারাপ হয়ে গেলো।
কেমন বোকা বোকা লাগে এরকম দেখলে, প্রতারিত মনে হয়। আপনার জন্যে, এবং আমাদের সবার জন্যে সমবেদনা।
-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
মানুষের বিচিত্র রুপ দেখে বিস্মত হই।
মিতু
রিফাত জাহান মিতু
কী বলব বুঝতে পারছি না
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
সেই বৃষ্টিভোজা সাহসের কথা আজও মনে পড়ে হঠাৎ
মনে হয় কতটুকু ক্ষুদ্রতা নিয়ে কতটা নগণ্য সাহসের বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম আমরা সেদিন
০২
শুরুর দিকে মৃনাল হক মৃনাল সেন হয়ে গেছে স্যার। ঠিক্করে নেন
এইটাই তো ভালো। এইটাই তো সমীচীন। আওয়ামীলীগের হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের সামনে বিএনপি'র মৃনাল হকের "আল্লাহু" "মুহাম্মদ" লেখা মিনার শোভা পাইতেছে। দেশকে তো তারা সবাই মিলে আগায়া নিতেছে। আপ্নে আমি বেধাতি বিভ্রান্ত অর্বাচীনেরা চিল্লাপাল্লা ক'রে সবকিছু পিছায়া দিমু- এইটা তো হইতারে না!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
তাহলে...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
যা ঘটছে, তার কতটা ন্যায়।
এই যে বেঁচে আছি তার কতটা ন্যায্য।
অস্তিত্বহীন ঈশ্বরকে অভিশাপ দিই।
আর যদি ভুল করে কাছে পাই ,
যদি একা পাই, তবে বিদ্রোহী ভৃগুর মত
পদ চিহ্ন বুকের উপর আঁকতে ভুলব না।
সহস্রবছরের নির্জনতার মাঝে ,
আমাদের মতো মানুষের দ্বিতীয়বার জেগে উঠবার
কি কোন সুযোগই নেই।
-ভোট দেবার অধিকার না থাকায় ভোট দিতে চেয়েও দিতে পারলাম না
নজরুল ভাই
কৃষ্ণ কানহাইয়া
কী বলবো মাঝে মাঝে কবিতার কাছে ছাড়া আর আশ্রয় মেলে না।
লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক অভিনন্দন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
(মন খারাপ)
মূল লেখা নিয়া কীই বা বলা যায়...
নতুন মন্তব্য করুন