ঘর মন জানালা: আনন্দকে অনুসরণ করো

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর (তারিখ: সোম, ২৬/০৭/২০১০ - ৩:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:




১.

সকালে ঘুম ভাঙলো বিটিভির একসময়ের ডাকসাইটে প্রযোজন ম. হামিদ ভাইয়ের ফোনে। একটা ডকুমেন্টরি বানাতে হবে। আজকেই মিটিং। উনি আর আমি একই এলাকার বাসিন্দা। অন্য একটা কাজ বাদ দিয়ে গেলাম উনার বাড়িতে। তারপর দুজনে মিলে উত্তরায়। শুরু হলো দীর্ঘ বৈঠক। 

দুপুরে যখন তিনজন মিলে খেতে বসেছি, বৈঠকের উত্তেজনা কমে গেছে অনেকটা, তখন হঠা ব্যাপারটা খেয়াল করলাম। আমার দুপাশে দুজন বসে। একজন ম. হামিদ। টিভি প্রযোজকের চেয়ে আমার কাছে তাঁর বড় পরিচয়টা অন্য। বাংলাদেশের রূপক হয়ে যাওয়া দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর্য "অপরাজেয় বাংলা"। এই অপরাজেয় বাংলার পরিকল্পনাকারী এবং উদ্যোক্তা ম. হামিদ। ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক থাকাকালে ৭৩ সালে তিনিই পরিকল্পনা করেন কলা ভবনের সামনে একটি মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য হবে। কর্তৃপক্ষকে তিনিই রাজী করান। চারুকলা ঘুরে ঘুরে নিজেই খুঁজে বের করেন সেরা ভাস্কর খালিদকে। এমনকী বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র যখন ক্ষমতায়, তখনও অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটি নিয়ে কোনো চক্রান্ত হতে দেন নি। যাবতীয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে ভাস্কর্যটি খাড়া করিয়েছেন। এমন দৃঢ়তা এখন আর কজনের মধ্যে আছেবাউল ভাস্কর্য ভাঙে মৌলবাদীরা!

আরেকপাশে যিনি, তিনি আপাদমস্তক একজন শিল্পপতি। দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যাবসায়ীদের একজন, ব্যাবসায়ী সংগঠনের অন্যতম নেতাও তিনি।

খুব মজা লাগলো। উপভোগ করতে করতে বিকেলে বাড়ি ফিরছি, তখন শুনলাম ব্লগার টুটুল ভাই [আহমেদুর রশীদ না, চৌধুরী] নাজ দম্পত্তির ছেলেসন্তান হয়েছে। এসএমএসে অভিনন্দন।

 

২.

বাড়ি ফিরেছি চরম ক্লান্তি নিয়ে। সারাদিনের কর্পোরেট বৈঠক আমাকে শুষে নিয়েছে। কিন্তু ফেরার সঙ্গে সঙ্গে একজন মনে করিয়ে দিলো, আজ আব্দুল্লাহ আবু সায়্যীদ স্যারের জন্মদিন। স্যারের জন্মদিনে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে একটা আয়োজন হয়। নিতান্তই ঘরোয়া। গত দুবছর যাইনি। আজ গেলাম।

যেতে যেতে তবু একটু দেরী হয়ে গেলো। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সেই চিরপরিচিত ভবনটি এখন নেই। সেখানে এখন দশতলা দালান উঠে গেছে। আরো উঠবে দুতলা।

পাশের একটা ভবনে চলছে কেন্দ্রের কাজ। তারই ছাদে জমেছে আসর। আমি যখন গেলাম, তখন স্যার বক্তব্য রাখছেন।

বক্তৃতা সবসময়ই খুব বিরক্তিকর। একমাত্র ব্যতিক্রম সায়্যীদ স্যারের বক্তৃতা। এই মানুষটা ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বললেও একফোঁটা বিরক্ত হয় না কেউ। আমি অন্তত দেখি নাই। অথচ বক্তৃতায় সবচেয়ে বোরিং সাবজেক্টগুলোই তিনি বলেন। গড়ে প্রতি ৫ মিনিট পর পর একটা করে কবিতাংশ বলেন, গড়ে প্রতি ৩ মিনিটে অন্তত একটা করে বইয়ের রেফারেন্স দেন, বক্তৃতা ভর্তি থাকে উপদেশ... তবু কেউ বিরক্ত হয় না। কারণ তাঁর উপস্থাপন ভঙ্গি, এতো মজা করে কথা বলেন, কেবলই শুনতে ইচ্ছে করে। মোহ ছড়াতে পারেন। ঢাকা কলেজের ছেলেপেলেরা ক্লাস করে না, কিন্তু সায়্যীদ স্যারের ক্লাস কেউ মিস করতো না। কেন্দ্রে হাজার হাজার বক্তৃতা আমরা মুগ্ধ হয়ে শুনেছি সেই স্কুল বয়স থেকে। বক্তৃতা ছাড়াও এমনি সব আড্ডায় স্যারের কথা শোনার জন্য মুখিয়ে থাকতাম। গোলাম মুর্তজা ভাইরা একসময় স্যারের বক্তৃতাগুলো রেকর্ড করতো, এখন সেগুলো কোথায় আছে জানি না।

একসময় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র অন্তপ্রাণ ছিলাম। রাত দিন কাটতো সেখানেই। স্কুল কর্মসূচিগুলো চালাতাম। তিন বছর একটানা বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বইমেলার স্টলে কামলা খাটছি। কিন্তু একসময় সায়্যীদ স্যারের উপরেই বিরক্ত হয়ে কেন্দ্র ছাড়ছিলাম। সবাই তাই করে।

কিন্তু এখন বুঝি, এই মানুষটা কী! মাত্র ৩৫ টাকা নিয়ে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের শুরু করেছিলেন। সঙ্গে আর কিছু ছিলো না, ছিলো শুধু স্বপ্ন। এই স্বপ্নকে কেন্দ্র করেই তিনি গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বই পড়ার নেটওয়ার্ক। সারাদেশে বই পড়া কর্মসূচী চালিয়েছেন। স্কুলগুলোতে বই পড়া কর্মসূচী চালানোর পরিকল্পনাটা এতোটাই নিখুঁতভাবে তৈরি করেছিলেন যে এটা সারাবিশ্বেই উদাহরণ হওয়ার মতো একটা ব্যাপার। কেন্দ্রর মাধ্যমেই কোটি কোটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে বই পড়ার অভ্যাসটা। এই একটা ব্যাপারে উনাকে আমি পারলে নোবেল প্রাইজ দিতাম।

আজকে তাঁর কথা শুনছিলাম। "আমি জীবনে এমন কিছুই করি নাই, যাতে আনন্দ ছিলো না। আনন্দ না পেলে কোনো কাজ করা উচিত না। একজন আমাকে এসে জিজ্ঞেস করলো আমি এখন কী করবো? আমি বললাম আনন্দকে অনুসরণ করো। যাতে আনন্দ পাও, তাই করো।"

সায়্যীদ স্যার সবসময় বলেন- "মানুষ তাঁর স্বপ্নের সমান বড়"। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ তিনি নিজে।

অনেক কিছুর পরেও এই মানুষটা তাই আমার পছন্দের শীর্ষে থেকে যায় সবসময়। শুভ জন্মদিন স্যার। স্যালুট আপনাকে। আপনার ৭১টা বসন্ত শেষ হয়ে গেলো, আরো অনেক বসন্ত আসুক আপনার জীবনে।

 

৩.

স্যারের জন্মদিনের অনানুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানগুলোর আয়োজক হয় সাধারণত কলেজ কর্মসূচীর সাম্প্রতিক তরুণেরা। কিন্তু ভবন নির্মাণ হেতু গত দুবছর জাভিকের কার্যক্রম স্থগিত। আজকের আয়োজন করেছে পাঠচক্রের কিছু নতুন সদস্য। হতাশ হলাম। বুঝলাম, এরা কেন্দ্রের ঐতিহ্যর কিছুই জানে না। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা যে করছে, চরম বিরক্তিকর। অথচ কেন্দ্রের সব অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করতো সচল মৃদুল আহমেদ। একাই গান বাজনা করে মাতিয়ে রাখতো। আজকের অনুষ্ঠান আয়োজকরা জানেই না কেন্দ্রেই আছে অনেক শিল্পী বাজনাদার উপস্থাপক। তারা ছায়ানট থেকে শিল্পী এনেছেন!

তবু মৃদুলদা অন্তত তবলায় সঙ্গত দিয়ে কিছুটা রক্ষা করেছেন।

আর সেই থেকেই কেন্দ্রের পুরাতন পোলাপানদের মধ্যে একটা ক্ষোভ কাজ করতে শুরু করলো। কেন্দ্রের প্রাক্তনদের মধ্যে একটা সমন্বয় থাকা দরকার। একটা প্লটফর্ম তৈরি করা জরুরি। ওখানে বসেই একটা ছোট মিটিং হয়ে গেলো। আর কীভাবে কীভাবে যেন আমার উপরেই একটা দায়িত্ব চলে আসলো!

আশাকরি আগামী বছরের মধ্যে কেন্দ্র আবার সুসংগঠিত হবে!

আজকে আরেকটা খুব মজা হলো। ছাদের অনুষ্ঠান যখন ছায়ানটের গানের অনুষ্ঠান হয়ে গেলো, আমরা নিচে নেমে আসলাম। বৈঠক ঘরে তখন কেন্দ্রের অতি পুরাতন সভ্যরা জমেছে। আহমদ মাযহার, পারভেজ হোসেন, খায়রুল আলম সবুজ ভাইরা আড্ডা দিচ্ছেন। আছেন আব্দুন নূর তুষারও, তিনি কেন্দ্রের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। আমি ঢুকতেই সবুজ ভাই, মাযহার ভাই, পারভেজ ভাইদের সঙ্গে আড্ডা জমে উঠলো।

তুষার ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা সবসময়ই চমকার ছিলো। একই এলাকার আমরা। একসঙ্গে কাজ করেছি অনেকদিন। কিন্তু অভ্র ইস্যুতে তুষার ভাই একটা গিয়াঞ্জাম পাকালেন। সচল এস এম মাহবুব মুর্শেদ লিখলেন প্রতিক্রিয়া। আমি সেটার লিঙ্ক তুষার ভাইয়ের ফেসবুক ওয়ালে দিয়ে বলছিলাম পারলে জবাব দেন। উনি আমাকে তার বন্ধু তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ব্লক করে দিলেন। তাতে আমার কিছুই গেলো আসলো না। কিন্তু আজকে একটা দারুণ কাণ্ড হলো। সেই ঘরে যখন আমরা আড্ডা মারছি। তুষার ভাইও ছিলেন, তার পেছনেই ছিলো শামীম শাহেদ। এক পর্যায়ে শামীম শাহেদের সঙ্গেও কথা শুরু হলো, তখন ভদ্রতা করেই আমি তুষার ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম "কেমন আছেন?" তিনি আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। আমি যতক্ষণ ছিলাম আর সে ঘরে আসেন নি!

মজা পেলাম।

 

৪.

আমি নাটক বানিয়ে খাই। এটাই পেশা। টিভি চ্যানেলগুলোতে হরহামেশাই আমার নাটক চলে। আমি নিজে একটাও দেখি না। খবরও রাখি না কবে কোনটা প্রচার হলো। পেটের দায়ে লিখি, টাকা পাই, শ্যাষ। অনেকেই জিজ্ঞেস করে, আমি কিছু বলতে পারি না। কারণ আমি নিজেই খবর রাখি না।

আগামীকাল, মানে আসলে আজকে, রাত ৭.৫০ মিনিটে আমার পরিচালনায় একটা নাটক চ্যানেল আইতে দেখাবে। এটার খবরটা আমি রাখি। কারণ এর সঙ্গে আমার কিছু প্রিয় স্মৃতি জড়িত আছে। ফুটস্টেপ নামের এই নাটকটার শুটিং করেছিলাম সাড়ে চার বছর আগে। কিন্তু এডিট করা হয় নাই তখন। নানান ঝামেলায় সম্পাদনার কাজটা থেমে ছিলো। বছর দুয়েক পরে এডিট করলাম, কিন্তু তখন আমি অন্য মহলে। সব মিলিয়ে নাটকটা জমেই থাকলো। কিছুদিন আগে উদ্যোগ নিয়ে নাটকটা বিক্রি করলাম। আজ তা প্রচার হবে। এটা আমার অনেক পছন্দের একটা নাটক। এই নাটকটার শুটিং করার সময় নূপুর সর্বক্ষণ আমার সঙ্গে ছিলো। আমাকে সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তখন সে আমার বউ না, প্রেমিকা।

শুধু ওর জন্য নাটকটা আমার অনেক প্রিয়। আর প্রিয় নাটকটার গানটা। অনেক সুন্দর একটা গান আছে নাটকে। একেবারে নতুন। গানটা দেখি আপলোড করে দিবো ইউটিউবে।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

স্যারকে শুভ জন্মদিন। ওনাকে ভালো পাই।

আর আপনার নাটকের গানের লিংক দিয়েন চোখ টিপি

স্বপ্নদ্রোহ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ লাগল টুকরো কাহিনী।

ইয়ে... আনন্দকে সরাসরি অনুসরণ করা তো মুশকিল, কিছু একটা অনুসরণ করে আনন্দ পেতে হয়, যেমন বরফবাবু কাগুকে... খাইছে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বরফবাবু কাগু ==))
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিটি কম্পিউটারে অভ্র ব্যবহার দেখতে চাই।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আর কয়টা দিন সবুর করেন, দেশের সব কম্পিউটারেই শুধু অভ্রই থাকবে... কাগুর লগে গত ঝামেলায় লাভ যেটা হইছে, সেইটা হইলো এখন আমজনতা অভ্রর দিকে ঝুঁকতেছে। কাগুকে স্পেশাল থ্যাঙ্কস
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

১. কেন্দ্রের অভিজ্ঞতা অনেকেরই ঠিক এই রকম... স্যারকে নিয়ে উপলব্ধিও।

২. মানুষ স্বপ্ন দেখে, ষাড় দেখে দু:স্বপ্ন!
-----------
চর্যাপদ

-----------
চর্যাপদ

হিমু এর ছবি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মানুষ স্বপ্ন দেখে, ষাড় দেখে দু:স্বপ্ন!

==))
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার নাটক (এটার কথাই তো বলেছিলেন সেদিন, তাইনা?) যদি দেখতে পারি তো একটা রিভিউ দিবনি চোখ টিপি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ পিপিদা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তাসনীম এর ছবি

শুনেছি অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যের মডেলও ছিলেন ফাল্গুনী হামিদ।

স্যারকে শুভ জন্মদিন। উনার ক্লাস কোনদিন খালি থাকত না ঢাকা কলেজে। কলেজের স্মৃতির সংকলনেও লিখেছি সেই কথা। উনার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অনুষ্ঠানের বক্তৃতাও দারুণ লাগত, অনেক কিছু মনে পড়ল। ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।

অটঃ আপনার আরেকটা নাটক এনটিভিতে দেখিয়েছে আজকে। রেকর্ড করা আছে, দেখে রিভিউ লিখব হাসি

আপনার লেখার ফন্টটা মনে হয় BNG তে কনভার্ট করতে হবে, একটু ছোট দেখাচ্ছে।

ভালো থাকুন।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

উহু, অপরাজেয় বাংলার তিন মডেল হলেন-
auto
হাসিনা আকতার
auto
বদরুল আলম বেনু
auto
সৈয়দ হামিদ মকসুদ ফজলে

[কৃতজ্ঞতা: ব্লগার লাল দরজা]
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনে কেন্দ্রের? কোন ব্যাচ? আওয়াজ দেন।

যেটা রেকর্ড করছেন, সেটা বাদ, আজকেরটা দেইখেন পারলে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তাসনীম এর ছবি

জানার ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া জন্য ধন্যবাদ।

আমি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের লাইব্রেরির মেম্বার হই ১৯৮৪ বা ৮৫ সালে, এর দুই-এক বছর আগে থেকেই যাতায়ত ছিল বড় ভাইয়ের সাথে। আমি একটু অন্তর্মুখি হওয়াতে বই পড়া আর মাঝে মাঝে অনুষ্ঠান দেখা ছাড়া আর কোন এক্টিভিটিতে জড়িত ছিলাম না। আপনি জানেন কীনা জানিনা বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র এক সময় ইন্দিরা রোডের একটা বাসাতে ছিলে, সম্ভবত ভাড়া বাসা, আমি একবার এক বন্ধুসহ সেখান গিয়েছিলাম স্কুল পালায়ে ১৯৭৯ বা ৮০ সালে (অনুমান ঠিক মনে নেই)।

আমি তখন থেকেই অপেক্ষা করছিলাম কবে নিয়মিত যেতে পারব। আমি যখন যাওয়া শুরু করি তখন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র তার স্থায়ী ঠিকানায় (বাংলা মোটরের কাছে) চলে গেছে। ওই লাইব্রেরিটার ছবি আমার এখনো চোখে ভাসে, সামনে দারুণ সুন্দর একটা বাগান ছিল। পেছনে একটা রেঁস্তোরা ছিল যেখানে খুব ভালো স্ন্যাক্স পাওয়া যেত (আমার ফেভারিট ছিল সমুচা আর পেঁয়াজু)। আমার আবৃত্তির ক্লাসও করার ইচ্ছে ছিল, নানান কারণে করা হয়ে ওঠে নি। আমার কৈশোরে পড়া বইয়ের একটা বিরাট অংশ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের লাইব্রেরির। বুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর (১৯৮৯) আস্তে আস্তে যোগাযোগ কমে যায়।

আপনার লেখা পড়ে জানলাম যে ওটা বহুতল বাড়ি, একটু দুঃখিতই হয়েছি। কিন্তু ঢাকা শহরে উপর দিকটা ছাড়া আর কোন দিকই খালি নেই যে।

এনটিভিতে আপনার "ভালোবাসার শুরু" নাটকটা দেখলাম। ভালো লেগেছে। দেখা হয় না দেখে চ্যানেল আই কেটে দিয়েছি কয়েক মাস আগে তাই অপর নাটকটা দেখতে পাই নি। আপনি ইউটিউবে আপ্লোড করলে দেখতে পারব। আমার স্ত্রী জানালো যে এই শুটিং স্পটে নাকি অনেক নাটক হয়, শীর্ষেন্দুর মানবজমিনও নাকি এইখানে হচ্ছে, জায়গাটা কোথায়? (এটা ওর
করা প্রশ্ন হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইন্দিরা রোডে ছিলো তা জানতাম। ছবিও দেখেছি।
ইউটিউবে আপলোড করা এক বিশাল ঝক্কির কাজ।
কালকে থেকে চেষ্টা করছি ১ মিনিটের একটা ট্রেলার আপ করতে নেটে। পারি নাই মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌আবদুল্লাহ আবু সাঈদ আমারো সবসময়ের প্রিয় মানুষ। বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রের ভ্রাম্যমান গাড়ীটা আমাদের স্কুল বয়সে সৃষ্টি হয়নি বলে আজীবন আফসোস থেকে যাবে। তবু পথে যেতে যখন দেখতাম আমার ছেড়ে আসা স্কুলের মাঠে দাড়িয়ে বাসটা "আলো আমার আলো" গান গেয়ে ছাত্রছাত্রীদের জড়ো করছে, ভীষণ আনন্দ লাগতো।

একদিন শুনলাম সেই গাড়ীটা নিষিদ্ধ হয়েছে স্কুল মাঠে হেড মিসট্রেসের নির্দেশে। আজে বাজে বই দিয়ে ছেলেপিলেদের মাথা খাচ্ছে এই অভিযোগে বাসটিকে আর কখনোই ঢুকতে দেয়নি সেই ছুপা জামাতী হেডমিসট্রেস। সেই হেড ফেরদৌসী বেগমকে আমি সারাজীবনেও ক্ষমা করবো না।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই যদি হয় হেডমাস্টার, তাইলে ছাত্র ছাত্রীরা তো গোল্লায় যাবে!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আলমগীর এর ছবি

যেহেতু ঢাকায় কোনদিন থাকিনি তাই কেন্দ্রে নিয়মিত যাওয়ার প্রশ্ন আসে না। তবে কেন্দ্রের প্রকাশিত বেশ কিছু বই বহু আগে পড়েছি। কেন্দ্রে যাওয়ার অভিজ্ঞতা মাত্র একবার। উনাদের অনেকগুলো এলপি আছে, সেগুলোকে ডিজিটাল ফর্মেটে কম্পিউটারে রাখতে চান, কেমনে করবেন সে বিষয়ে সাহায্য করতে গিয়েছিলাম। স্যারের সাথে দেখা করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু তিনি ছিলেন না। কাজ শেষে ছাদে বসে দুপুরে মোটা চালের ভাত খেয়ে চলে এসছি হাসি (তখন আটতলাতে স্থানান্তর চলছে চলবে, হাতের ডানদিকে একতলাতেই প্রায় সবকিছু ছিল।) ২০০৩/২০০৪ সালের ঘটনা হবে।

ফেসবুকে বহুল আলোচিত নাটকটি কালকে কয়েক সেকেন্ড দেখার সুযোগ হয়েছিল। কাজেই মন্তব্য করব না। আজ রাতে বিদ্যুৎ থাকলে দেখব আশা করি।

২০০০ সালের দিকে ম. হামিদের সাথে একবার সাক্ষাত হয়েছিল, মাহবুব জামানের ডাটাসফটে (পাটের জিনোম নিয়ে কাজ হচ্ছে যেখানে) একটা প্রজেক্টে। মাহবুব জামান
এবং তার বন্ধু ম. হামিদ দু'জনেই ভাল মানুষ: কথা বলে তৃপ্তি হয়।

আপনি দিনলিপি লেখা শুরু করলেন ক্যান হাসি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কেন্দ্রের মিউজিক লাইব্রেরিটা খুব সমৃদ্ধ ছিলো। মাহবুব জামিল ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে সেটা তৈরি করা হইছিলো। শেষ পর্যন্ত কি ডিজিটাইজ করতে পারছিলেন?

এইটা ফেসবুকে বহুল আলোচিত নাটক নাকি? খাইসে... ধুর, এগুলা তো ক্ষ্যাপ...

দিনলিপি নিয়মিত লেখার ইচ্ছা, কিন্তু হয়ে ওঠে না। মাঝে মধ্যে লেখি অনিয়মিতভাবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আলমগীর এর ছবি

অনেক পুরনো কালেকশন ছিলো মনে হয়, এজন্যেই চাচ্ছিলেন ডিজিটাইজ করতে। আমি একবেলা ছিলাম, প্রসেসটা দেখিয়ে দিয়েছিলাম। পুরো এলপির কালেকশন ডিজিটাইজ শেষ করতে পেরেছিলেন কিনা জানি না। খোঁজ নেয়া হয়নি কখনও।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কেন্দ্রের এই মিউজিক লাইব্রেরিটার দিকে লোভ ছিলো প্রথম থেকেই। কিন্তু অযত্ন অবহেলা ছিলো।
খোঁজ নিতেছি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মর্ম এর ছবি

কেন্দ্রের ভক্ত আমি অনেক আগে থেকে, কলেজে 'বই পড়া কর্মসূচী'তে যোগ দিয়েছিলাম- পরে তারাশংকরের ধাক্কায় আর এগার ধাপ পার হতে পারিনি!

পরে ঢাকায় এসে ভ্রাম্যমান লাইব্রেরির নিয়মিত সদস্য ছিলাম এই বছর দুয়েক আগেও- এরপরে দূরে সরে গেছি, নানান কারণে- অ-কারণে বললেও খুব ভুল হয়না।

গোপনে একটা কথা বলি আপনাকে, কেমন? পরামর্শ চাই।

কেন্দ্রের একটা বই ছিল আমার কাছে, যদি ভুল না করি তো হাসনাত আব্দুল হাই-য়ের 'গল্পসমগ্র'। এনেছিলাম বইটা, কিন্তু আর ফিরিয়ে দেয়া হয়নি। বাসা অদল বদলের ঝামেলা শেষে দেখি সে বই আর নেই।

কি করব কি বলব করতে করতে আর কখনো যাইনি ঐ নীল বাস-টায়। লজ্জা লাঘবের উপায়টা জানাবেন আমায়?!

স্যার থাকুন আমাদের মাঝে, আরো অনেক অনেক দিন!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এটা কোনো ব্যাপার না, আপনার সংগঠককে সরাসরি বলুন বইটি হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

স্যারের বক্তৃতা আসলেই চমৎকার, আমার খুব প্রিয় একজন উপস্থাপক উনি...

আপনার নাটক দেখলাম। টিভিতে নাটক দেখি না অনেকদিন, অনেকদিন পর তাই দিলারা জামানকে দেখে ভাল্লাগ্লো। নাটকের নায়িকা ভালু দেঁতো হাসি

... খারাপ হচ্ছে চ্যানেল আই প্রচুর বিজ্ঞাপন দিসে, প্রচুর ...

_________________________________________

সেরিওজা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

নাটক ছিলো ৪৮ মিনিট। বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য ৪ মিনিট নাটক কেটে ফেলছে। চরম বিরক্ত হয়ে নিজেই টিভি বন্ধ করে দিছি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সিরাত এর ছবি

ভাল্লাগলো লেখাটা। হাসি আপনে তো হাই-প্রোফাইল মানুষ দেখা যায়।

এখানে ফন্টটা ভৃন্দামার্কা দেখাচ্ছে কেন? বিএনজি পড়ে ভৃন্দা দেখতে ভালো লাগে না।

এই জিনিসটা চালান।

স্পর্শ এর ছবি

নজরুল ভাই খুব ভালো লাগলো আজকের দিনিলিপি।

"...আমি এখন কী করবো? আমি বললাম আনন্দকে অনুসরণ করো। যাতে আনন্দ পাও, তাই করো।"

এইটা একটা খাটি কথা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

কাল রাত তিনটা পর্যন্ত যাইগ্যা ছিলাম। তবু দেখা পাই নাই আপনের নাটকের। মনই খারাপ হয়ে গেছে।

পলাশ রঞ্জন সান্যাল

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

"আনন্দকে অনুসরণ করো। যাতে আনন্দ পাও, তাই করো।"
লাখ কথার এক কথারে ভাই।

--------------------------------------------------------------------------------

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।