প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
।। চতুর্থ পর্ব শুরু ।।
বৃষ্টির শেষে পৃথিবী নতুন হয়ে ওঠে, পাতাগুলো ঝকমকিয়ে ওঠে নরম রোদে। ভূটানের রাস্তাগুলো দারুণ, শান্ত নদীর মতো... দুপাশে রঙিন সব ফুল, বুনো ফুল... দেখতে বেশ লাগে। এখন যেমন লাগছিলো। পৃথিবীটা একটা দারুণ অদ্ভুত জায়গা। চারদিকে ছড়িয়ে আছে হাজারটা সুন্দর। এই যে রাস্তার পাশে ছোট ছোট ফুলগুলো... দেখলে পাষাণেরও মন ভালো হয়ে যেতে বাধ্য। তবু যে কেন মানুষের মনখারাপের রোগ দিনে দিনে বাড়ছে!
পাশে কোথাও একটা ইশকুল ছুটি হয়েছে। বাচ্চাগুলো অমানবিক আনন্দে বাড়ি ফিরছে, পাখিদের নীড়ে ফেরার মতো।
আচ্ছা, পাখিদের আনন্দ কোথায়? নীড়ে ফিরে আসায়? নাকি আসমানে ভাসায়?
আমার আনন্দটাই বা কোথায়? বুঝতে পারি না। নীড় কোনটা তাই তো জানি না। বাংলাদেশ? তাহলে ফিরছি না কেন? নাকি ভাসতেই বেশি ভালো লাগে? ভাসমান? পাখিদের আনন্দ কোথায়? ভাসমানে?
ধুর, বৃষ্টিটা সবসময়ই খুব গোলমেলে। জল পড়ে পাতা নড়ে, তাহার কথা মনে পড়ে। একটুখানি জলবাদল দেখলেই কেন যে এখনো খালি মীরার কথাই মনে পড়ে! এখন প্রথম কাজ মাথা থেকে এসব চিন্তা ভাবনাকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা। কীভাবে করা যায়? খুব জটিল অথবা কুটিলভাবে ব্যাবসা নিয়ে ভাবতে হবে। তাই ভাবা যাক।
কোম্পানী চাইছে পর্যটককে ভূটানে টেনে নিয়ে আসতে। কিন্তু এই এক আজিব দেশ, পকেটে নাই দুটো ফুটো পয়সা, ভাত খেতে পায় না দুবেলা, তবু শালারা নাকি চরম শান্তিতে আছে! যত্তোসব।
টুরিস্ট দেখতে পারে না, তারা নাকি তাদের মতোই ভালো আছে। আরে গণ্ডরামাধামাচোদা... শান্তির তোরা বুঝিসটা কী? পাগলের সুখ মনে মনে!
অথচ পর্যটনের কতো দারুণ সম্ভাবনা ছিলো এই দেশে। একদিকে হিমালয়, আনদিকে তিব্বত। কী সুন্দর পাহাড়ী দেশ।
নাহ্, এসবে কান দিলে চলবে না। সাদাগাধাগুলোকে ধরে ধরে এখানে নিয়ে আসতে হবে, ডলারের ঝনঝনানি এদের কানে ঢুকিয়ে দিতে হবে... তখন বুঝবে সুখ কাকে বলে কতো প্রকার ও কী কী! ট্যাকার গন্ধ বড় চমতকার!
এসব নিয়েই একটা বিস্তারিত প্ল্যান করতে হবে। রিপোর্ট আকারে পেশ করতে হবে, কীভাবে সাদাগাধাটুরিস্টগুলোকে এখানে কানে ধরে নিয়ে এসে দুটো ডলার খসানো যায়। এজন্যই তো এতো খরচা করে কোম্পানি এখানে পাঠিয়েছে তাকে, বসে বসে বৃষ্টি বিলাস আর মীরাভজন করার জন্য তো নয়, তাই না?
তার আগে পশ্চিমা ডলারম্যানগুলোকেও এই দেশের প্রতি আকৃষ্ঠ করতে হবে। সেটার জন্য একটা ভালো মার্কেটিং প্ল্যান লাগবে। এই দেশের কী কী প্রমোট করা যায়? উমম... ভূটান গরীব কিন্তু শান্তির দেশ... ইনাফ... বিক্রির জন্য এই দুটোই ইনাফ। গরীব গুর্বা দেখলেই এই ডলারম্যানগুলোর প্যানপ্যানে সুখ উথলে ওঠে। সাহায্য করার নামে দুটো সুখ কেনে... শালা বাঞ্চোতের দল!
যাহোক, তাতে কিছু আসে যায় না। বাণিজ্যটাই মুখ্য। আচ্ছা, এই পাহাড়ী দেশটার আর কী কী তুলে ধরা যায় সাদাগাধাগুলোর সামনে? ল্যান্ড অব থান্ডার ড্রাগন! আচ্ছা, এই থান্ডার ড্রাগনটা কী? নিশ্চয়ই কোনো রূপকথা আছে প্রচলিত, সেটাকে খুঁজে বের করতে হবে। ইন্টারেস্টিং কিছু না হলে আরো রঙ টঙ চড়িয়ে ইন্টারেস্টিং বানাতে হবে। দরকার হলে পশ্চিমা কোনো এক পিএইচডিকে দিয়ে একটা জম্পেশ কাহিনী বানিয়ে ফেলতে পারলে মন্দ হতো না।
দেখা যাক, অনেক কিছু ভাবতে হবে... বৃষ্টি বিলাস করে হবে না। অনেক কাজ আছে।
এই ভাবতে ভাবতে পাহাড়ি পথ বেয়ে হোটেলের দিকে ফিরছিলো। রাস্তার দুপাশে প্রচুর গাছ। আসার আগে ভূটান নিয়ে কিছুটা পড়াশোনা করেছে। ৭২% বনভূমি এদেশে! যা তা অবস্থা দেখি...
এখানে খালি একটা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ঢুকিয়ে দিতে পারলেই মজাটা টের পাওয়া যেতো... হা হা হা হা...
ভাবতে ভাবতে হাসতে হাসতে কখন হোটেলের কাছাকাছি চলে এসেছে খেয়াল করেনি। অনেকটা পথ হেঁটে অত্যধিক ক্লান্ত। হাঁটার অভ্যাসটা বড্ড কমে গেছে। ধূম্রপানটাও খুব ভোগায়... দম বলতে নেই...
আর এই সময়েই সত্যি সত্যি দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হলো...
সকালের সেই বৃষ্টি ভেজা বাচ্চা মেয়েটা দৌড়ে তার সামনে দিয়ে রাস্তা পার হয়ে গেলো। আর যার কাছে গেলো, তাকে দেখেই দমটা আটকে গেলো... মীরা! এখানে!
.......................................................................
দোহাই:
মূলোদাই যতো নষ্টের গোড়া। কোত্থেকে এক ভূটানী গল্প শুরু করে দিয়েছে, বারোয়ারি গল্প। তা বাবা সাহিত্যের লোকেরা এসব লিখবে টিখবে আমরা পড়বো টড়বো। তাই না?
সেই মতোই চলছিলো, মূলোদার পরে কল্যাণদী আর বুনোদি বেশ দুটো পার্ট লিখেও ফেলেছিলেন, ভেবেছিলাম এরপর এগিয়ে আসবেন অন্য গল্পাধারেরা। আর এই ফাঁকে আমি একটু নাহয় দুষ্টুমি করে বলেইছিলাম যে এই বারোয়ারি গল্পে আমি একটা পার্ট লিখে গল্পের বারোটা বাজিয়ে দিবো।
তাই বলে সেটাকে অতো ধর্মজ্ঞান করার কী ছিলো? আমার জন্যই নাকি এই গল্প আগাচ্ছে না, আমি সিরিয়ালের চক্করে বান্ধা!
কই যাই?
ইনিয়ে বিনিয়ে নানাভাবে রেহাই পেতে চেষ্টা করেও শেষতক আর পারলাম না। আজ তাই বাধ্য হয়েই যা খুশি তাই একটা লিখে ফেললাম। দোষ কিন্তু একটুকও আমার না। আগেই বলে রাখছি। সব দোষ মূলোদার।
মন্তব্য
যাক বাবা! শেষমেষ দিলেন কিস্তিটা! কিন্তু নজু ভাই, আগের পর্বগুলো "উত্তম পুরুষ"-এ ছিলো কিন্তু! খুউব খিয়াল কইরা!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
১জনের অপছন্দ?!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সমান সমান করে দিলাম।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
তা না, ভাই! আসলে এই মন্তব্যে অপছন্দের জায়গাটা ঠিক ধর্তারিনাই। যিনি অপছন্দ করেছেন তিনি বুঝিয়ে দিলে ভুলটা বুঝতে পারতাম আরকি
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বাহ বেটার লেট দ্যান নেভার আর এই তো আবার ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরে এসেছে মানে ভুটানের গল্প ভুটানে এবং ভুটানী কনোটেশন সহ জবজবে হয়ে ফেরৎ এসেছে দেখে/পড়ে খুব ভাল লাগলো। ধন্যবাদ নজরুল লেখা ভালো হয়েছে। এবার কার পালা? লিখে ফেলুন তাড়াতাড়ি।
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
সরি দুবার পোস্ট হয়ে গেছিল।
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
গুড জব নজরুল ভাই।
হুজ নেক্সট?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাঃ বাঃ নজ্রুলিস্লাম সাহেব খাসা হয়েছে! পরের লেখক, চলে আসেন।
ভালো লাগলো।
বুনোহাঁস গল্পোটাকে হোটেল থেকে কেবল রাস্তায় নামালো; আর আপনি আবার হোটেলে নিয়ে এলেন। ভাবলাম একটু ভূটান দর্শণ করবো।
রাইখা গেলাম, আগে পুরোনোগুলো পড়ে আসি।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
আইঢিয়া! অ্যান আইঢিয়া ক্যান চেইঞ্জ অ্যা গল্প! এইবারে আমি! প্লিজ?
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আরে আবার জিগান? তাড়াতাড়ি পোস্টান!
অল্রেডি লেখা ইশটাট!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
বেশ কয়েকটা খুনজখম, রক্তপিপাসু ইয়েতি আর উড়ন্ত লামা (আবারো বলছি, লামা দ্য মঙ্ক, নট লামা দ্য চতুষ্পদ ক্রিয়েচার) চাই কিন্তু। দরকার হইলে আমার থেকে আইডিয়া নাও।
BTW লেখা ভালো হইছে, নজরুলভাই কখনো ভুটান গেছিলেন নাকি?
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
দাদাই, আইডিয়া দাও দিকি! পুতু পুতু পেম বেশী ভালু পাইতেসিনা!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
পুতুপুতু পেম নিয়ে সব দোষ বাকিদের, আমি ভাবলাম বেশ ঝাড়পিট হবে কিন্তু কোথায় কী! নিন, আপনি এইটাকে একটা রগরগে থ্রিলার বানিয়ে দেন দিখি? বেশ বন্দুক টন্দুক চাই, ছিনতাই রাহাজানি না রাজাহানি কোনটা যেন সেইটা, দু চার ডজন সুন্দরীও আনতে পারেন যারা পাইন গাছের ফাঁকেফোকে বিকিনি পরে রোদ পোহাবে আর নায়ক এলে টুপটাপ খসে খসে পড়বে পাইনের কোনের মতো। তারপর মাঝরাত্তিরে ধুম বৃষ্টি নামবে (হুমায়ূনী স্টাইলে হলে ঝুম বৃষ্টি), পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ভিলেন আর নায়ক ঢিসুমঢিসুম করতে করতে গড়িয়ে পড়বে খাদে, পুরোনো হিন্দি সিনেমার মতো খাদের পাড়ে ঝুলে থাকবে টোকা দিলেই টপ করে পড়ে যায় এমন ভাবে, তারপর পড়ে গেলে স্মৃতিভ্রংশ আর না পড়লে উল্টো কেলানি, সাথে দুটো ভজনও দিতে পারেন নায়িকার মায়ের কণ্ঠে, পাহাড়ি চুল্লু খেতে খেতে আধশোয়া ভিলেন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হেলেনের নাচ দেখবে কিম্বা ঝিঙ্গালালাহু, আর যদি কুম্ভমেলায় বিছড়া হুয়া ভাই আনতে পারেন তো কথাই নেই! নিন অনেক আইডিয়া পেলেন এবার শুরু করুন তো! নজ্রুলসাহেবের মতো শর্টে সারবেন না যেন, বেশ রসিয়ে রসিয়ে লম্বা করে লিখুন।
প্রত্যেকটি পর্বই ভালো লাগছে।
এত সংক্ষিপ্তমাথাআউলানোজটিল্ভাবনায়নিমজ্জিত পর্ব পড়ে মনে হলো ইটাটা আপ্নের মাথায় ভাঙ্গি!
আর এই মেয়ে আনন্দী! আমার পছন্দের ছোটগল্পকার এমন প্যাঁচই লাগাইল শুরুতেই মীরাকে টাইনা আইনা! অহন কে এইটারে খুনজখমরক্তপিপাসুমার্ডারমিস্ট্রি বানাইবে যেমনটা আমি ভাবতেছিলাম শুরুতে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
"পুতুপুতু পেম" টা বড় ভালো পাইলাম! আমরা বাঙ্গালীরা তো "পুতুপুতু পেম"ই করি---তাই। "তোমাকে ভালোবাসি" এটা বলতেই তো যৌবন কাবার হয়ে যায়।
--------------------------------------------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন