শীর্ষেন্দুর উপন্যাস 'গয়নার বাক্স'। সেই গল্প নিয়ে সম্প্রতি সিনেমা বানিয়েছেন অপর্ণা সেন।
মূলত একটি গয়নার বাক্সকে কেন্দ্র করে গল্প। অদ্ভুতুরে গল্প।
সেই গল্প নিয়ে, সাম্প্রতিক সিনেমায় ভূতের আছড় নিয়ে, শিল্পী নির্বাচন নিয়ে, অভিনয় নিয়ে, সিনেমার নির্মাণ নিয়ে এবং আরো অনেক অনেক প্রসঙ্গ নিয়েই আলাপ করা যেতো, নাহয় বলা যেতো চারটে ভালো আর দু'টো মন্দ কথা। সিনেমাটা ভালো মন্দ মিলিয়ে আগাচ্ছিলো বেশ।
কিন্তু শেষটায় এসে মুক্তিযুদ্ধকে গয়নার বাক্সে ঢুকিয়ে, অথবা গয়নার বাক্সকে মুক্তিযুদ্ধে ঢুকিয়ে একেবারে গুবলেট পাকিয়ে ফেললো।
গয়নার বাক্সে মুক্তিযুদ্ধ কেন?
উপন্যাসটা পড়েছিলাম অনেক আগে, অনেক কিছু ভুলে যেতে পারি, কিন্তু এটুকু নিশ্চিত যে সেখানে মুক্তিযুদ্ধ ছিলো না। এই প্রসঙ্গটা পরিচালক অপর্ণা সেন উড়িয়ে এনে জুড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর সিনেমায়। তা তিনি করতেই পারেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভিনদেশীরাও সিনেমা বানাচ্ছেন, তাও আবার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিচালক অপর্ণা সেন। খুশি হওয়ারই কথা। সাধু।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ কেন জরুরী অথবা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠলো গয়নার বাক্সে? এই খুঁতখুঁতটা থেকেই গেলো শেষ অব্দি, এখনো অব্দি।
উপন্যাস এবং সিনেমার মূল চরিত্র সোমলতার স্বল্পকালীন লাজুক প্রেমিক যে কিনা প্রতি ভোরে সোমলতার দরজার সামনে রেখে যেতো একটি লাল গোলাপ। পরিচালক তাকে বানিয়ে দিলেন (তৎকালীন) পূর্ববঙ্গের কবি। সিনেমার শেষে যার আর কোনো হদিস পাওয়া যায় না। কিন্তু পাওয়া যায় গোলাপের পাপড়ির সমারোহে তার কাব্যচিঠি, সোমলতাকে নিবেদিত কবিতা। তা দেখে সোমলতা আকুল। যে স্বামী আর পরিবারের জন্য এতো শ্রম জীবনপণ, সব ভুলে সিনেমা শেষ হলো সেই পূর্ববঙ্গীয় কবির কল্পিত বাহুডোরে।
মাঝখানে আরো আছে। সিনেমার শেষ অংশে অর্থাৎ গয়নার বাক্সের তৃতীয় প্রজন্মের স্বত্ত্বাধীকারি চরিত্রটির উপন্যাসে নাম ছিলো বসন, সিনেমায় তিনি হয়ে যান চৈতালী। উপন্যাসে যিনি ভালোবাসেন বান্ধবীর এক বিলেত পড়ুয়া জ্ঞানী ভাইকে (আশাকরি স্মৃতি প্রতারণা করেনি)। সিনেমায় তিনি ভালোবাসেন বেনু নামের একজন মুক্তিযোদ্ধাকে। বেনু শুধু একা না, তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে বাংলাদেশে রীতিমতো অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেন। গুলি খেয়ে আহত হন। পশ্চিমবঙ্গেরই কোনো একটা পোড়োবাড়িতে লুকিয়ে থাকেন দলেবলে। সেই পোড়োবাটি আবার সোমলতার সেই হারিয়ে যাওয়া কবি প্রেমিকের। যেই বাড়ির ড্রয়ার থেকে উড়ে এসে চৈতালীর কোলে জুড়ে বসে কোন অতীতের এক চিঠি, আবিষ্কৃত হয় গোলাপের পাপড়ি জড়ানো চিঠিভাণ্ডার। কন্যা মায়ের হাতে তুলে দেন সেই চিঠিস্তুপ, বিনিময়ে গয়নার বাক্সটি দান করেন মুক্তিযোদ্ধাদের। কেননা "এরা মুক্তিযুদ্ধটা বোধহয় আর বেশিদিন চালাতে পারবে না, সম্বল বড় কম, মুক্তিযোদ্ধারা শুধু মরছে খানসেনাদের হাতে, ডাক্তার নেই আর্মস নেই ওষুধ নেই...।" গয়নার বাক্সেই রক্ষা অবশেষে।
মাঝখানে এক লাইনে দেশ বিভাগ, ভাষা আন্দোলন সকলই উঠে আসে সেলুলয়েডের অডিওতে। আর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি'।
উপন্যাসের মিষ্টিপ্রেম সিনেমায় হয়ে যায় মহান পরদেশপ্রেম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় অবদানের দলিল হয়ে থাকে অপর্ণা সেনের গয়নার বাক্স।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান মোটেই কম না, অনেক বেশি অবশ্যই। সশ্রদ্ধ চিত্ত্বেই তা স্মরণ করি।
এও জানি কোলকাতাসহ ভারতের অনেকেই নিজেদের সম্বল তুলে দিয়েছিলেন, পথে পথে গান গেয়ে চাঁদা তুলে সাহায্য করেছিলেন বাঙালি শরনার্থীদের। অনেক তরুণ তরুণী রাত দিন সেবা দিয়েছেন শরনার্থী শিবিরগুলোতে। এগুলোর কিছুই অস্বীকার করার নয়। অবশ্যই অনস্বীকার্য মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবদান।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যখন চলছে নকশালবাড়ি আন্দোলন, শ্রেণীশত্রু খতম। ক্রসফায়ারে প্রাণ হারাচ্ছে তরতাজা তরুণেরা। তখন সেই ভয়াবহ সময়ে তরুণরা বাংলাদেশের হয়ে যুদ্ধ করছেন! প্রাণ হারাচ্ছেন!
খটকাটা গেলো না।
এর মধ্যে ভূত হয়ে যাওয়া পিসিমা আবার নিজের জন্মভিটা ফরিদপুরের জমিদারবাড়িতে ঘুরেও গেছেন। যেখানে পাকিরা আস্তানা গেড়েছে। সেই পাকি সেনা ক্যাম্পের যে ভিজ্যুয়াল দেখা গেলো, তা বেশ হাস্যকর হয়ে গেছে।
কিন্তু তবু একটা খটোমটোখটোমটোতে সিনেমা দীর্ঘ হয়ে যেতে থাকে। বার বার শুধু মনে হয় গয়নার বাক্সে একেবারে অপ্রাসঙ্গিকভাবে অথবা জোর করে মুক্তিযুদ্ধকে কেন আনতে হলো?
মাস কয়েক ধরেই দুই বাংলার চলচ্চিত্র ব্যক্তিরা দল বেঁধে দুই বাংলাতেই সভা সেমিনার করছেন। দুই বাংলার সিনেমা আদান প্রদানের বিষয়ে বলছেন, ব্যবস্থা নিচ্ছেন। মন্ত্রী, পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা, পরিবেশক সমন্বয়ে বেশ কয়েকটা বৈঠক হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। অপর্ণা সেন কি সেই পথেই এগিয়ে থাকলেন কিছুটা?
গয়নার বাক্স তাই হয়ে গেলো মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা?
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের এতো অসাধারণ সব গল্প আছে ইতিহাসের পাতায় পাতায়, সেগুলো নিয়ে অনেক সুন্দর সিনেমা তৈরি হতে পারতো। গয়না বাক্সকে বলি দিতে হতো না।
মন্তব্য
দেখি নাই!! পড়িও নাই! কিন্তু বিষয়টা ভাল লাগ্লোনা!!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
দেখলে বিরক্তই হবেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আবেগ অনুভূতি সরিয়ে রাখলেও সিনেমা হিসেবেই শেষটায় একেবারে গুবলেট হয়ে গেছে। অযথাই।
আর বইটা আগে পড়া থাকলে তো কথাই নেই।
অথচ মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ আসার আগ পর্যন্ত সিনেমাটা বেশ ভালো লাগছিলো। অপর্ণা সেনের অন্যতম সেরা ছবি হতে পারতো এটা।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শীর্ষেন্দুর মূল গল্পের থেকে সিনেমাটা কতটা আলাদা? আমি বইটা পড়িনি, তাই এটা কেউ বলে দিলে ভাল হবে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সোমলতা সাফল্যের ইতিহাস পর্যন্ত সিনেমা উপন্যাস সবই একেবারে ঠিকঠাক আছে।
সোমলতার মেয়ের পর্ব থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোটাই সিনেমার, ওখানে উপন্যাসের ছিঁটেফোঁটাও নেই।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সিনেমা দেখতে গিয়েও সেরকমই লাগল, প্রথমের দিকটা সুন্দর ছিল, পরে কেমন ঝুলে গেল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
উপন্যাসের শেষদিকটাও বেশ সুন্দর ছিলো। সোমলতার মেয়ের প্রেমের অংশটা তো যতদূর মনে পড়ে দারুণ ছিলো। তরুণ দর্শকের জন্য বেশ আকর্ষণীয় হতো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
গল্পটা পড়া ছিল। পুরো মুভিটা ইউটিউবে আছে। তিন চার দিন আগে দেখেছি ছবিটা। ছবিটা দেখতে গিয়ে অনেক আগে পড়া বইটার গল্পটা মনে পড়ে গেল।
মুক্তিযুদ্ধের অংশটা বাদ দিলে ছবিটা বইয়ের মতো হচ্ছিল। যেই পরিবারটা নিয়ে গল্পটা তারা ফরিদপুরের লোক। সেই সূত্রে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সেই পরিবারের কন্যার সক্রিয় সমর্থন খুব আরোপিত মনে হয় নি। তবে এইটা ছাড়াও মুভিটা চলত। এটাকে মুক্তিযুদ্ধের ছবি বলাটা অনুচিত হবে।
আগ্রহীরা ছবিটা এই লিঙ্কে পাবেন।
http://www.youtube.com/watch?v=s2O6P8xopQY
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তার সমর্থন আরোপিত তা বলিনি, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধর উপস্থাপনটা এই সিনেমায় বড্ড কাঁচা হাতের হয়ে গেছে। আর অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে।
মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গটা বাদ দিলেও সিনেমা হিসেবেই শেষ অংশটা একদম ভালো লাগেনি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কয়েকদিন হয় সিনেমাটা দেখেছি আমি। এর উপরে একটা লেখা তৈরি করে দেয়া হয়নি। তার আগে আপনিই দিয়ে দিলেন যদিও আমার লেখাটি 'মুক্তিযুদ্ধ'কে একমাত্র কারণ ধরে নয়। নারী অধিকার নিয়ে ভূতের মুখে বলা কথাগুলো সেভাবে নেয়া যায়নি বলেই লিখতে চেয়েছিলাম। তবে মুক্তিযুদ্ধের অবতারনা এবং উপস্হাপনায় চরম রকমের অবহেলার কথাও আছে। এটিকে কিন্তু কোনভাবেই মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা বলা যায় না। অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে আনা হয়েছে যার উপস্হাপনায় আছে চরম অবহেলা। বাংলাদেশের ইতিহাস বা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় পরিচালকদের এমন অবহেলার ভাবটা নতুন না কিন্তু। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আছে এমন একটি অতি অখাদ্য বাংলা সিনেমা, এছাড়া মাষ্টার দা সূর্যসেনকে নিয়ে তৈরি হিন্দীসহ বেশ কিছু সিনেমা দেখে আমার এই ধারণার জন্ম। যেখানে ইতিহাসকে শুধু বিকৃতই করা হয়নি উপস্হাপনায় দেখানো হয়েছে চরমতম অবহেলা। অপর্ণা সেন নাকি দারুণ রকমের পার্ফেক্টশনিষ্ট। তাঁর কাছ থেকে এভাবে কোন রকমে পাতে তুলে দেবার ব্যাপারটি সুত্যিই দুঃখজনক মনে হয়েছে। সিনেমাটি নিয়ে কিছু সাক্ষাৎকার দেখা হয়েছিল, সেখানে তিনি এটি নিয়ে এতটা উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন যার রেশ প্রথমাংশ পর্যন্ত ঠিকাছে। কিন্তু হঠাৎ করে সোমলতার প্রেমিকের উদয় হবার ঘটনা থেকে শুরু করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে হাজির করা এবং উটকো প্রেমিকের চিঠি দিয়ে সিনেমার ইতি টানায় হতাশ না হয়ে পারা যায়নি। যদি শুধুই ভূত আর তাকে ঘিরে নানান ঘটনা নিয়ে এটি করা হতো 'ভূতের ভবিষ্যতের' মতই আরেকটা নিখুঁত সিনেমা পেতাম আমরা সন্দেহ নাই।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগনের অনেক অবদান, অস্বীকার করিনা। কিন্তু চৈতালির ভাবচক্করে এমন মনে হয়েছে যে তার/তারা সেভাবে সক্রিয় না হলে স্বাধীনতা পেতে বাংলাদেশের 'খবরই আছে'।
বিশেষ করে তার অতি চিন্তিত সংলাপ, ' মিসেস গান্ধীর ডিসিশনটা যদি একটু আগে জানা যেত'।
এটি আমার কাছে খুব আরোপিত মনে হয়েছে কিন্তু! আরো অনেকই বলা যায়। মন্তব্য দীর্ঘ করে বিরক্তির কারণ হতে চাই না বাবা!
আপনি লিখেছেন তো পোস্ট করুন না। সিনেমা নিয়ে একা আমাকে কথা বলার দিব্যি কে দিলো? আর আমি তো আসলে পুরো সিনেমাটা নিয়ে কথাই বলিনি। ঐ যে বললাম, সিনেমাটা যেভাবে আগাচ্ছিলো, তা নিয়ে চারটে ভালো আর দুটো মন্দ কথা বলাই যেতো।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ এসেই যে একেবারে জল ঢেলে দিলো! তাই আর নারী, ভূত এসবের কিছু নিয়েই বলতে ইচ্ছে হলো না। আপনার রিভিউটা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দিব্যি টিব্যি না ভাই এখানেই তো সব কথা হয়ে গেলো, মিছে আর কথা বাড়ানো কেন।
তাছাড়া নীচে সবজান্তা খুব চমৎকার করে বলেছেন যা বলার।
সোমলতার মেয়ে এসে সিনেমাটার প্যান্ট খুলে দিয়েছে। তার আগ পর্যন্ত ভালোই লাগছিলো।
এক বাক্যে দারুণ রিভিউ করলেন। সোমলতা পর্যন্ত সিনেমাটা বেশ ঠিকঠাক ছিলো। তারপর থেকেই হতাশার শুরু।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
একেবারে মনের কথা বললেন নজরুল ভাই। বইটা পড়া হয়নি। তাই একেবারে কোন ধারণা ছাড়াই দেখতে বসলাম মুভিটা, এই সপ্তাহদেড়েক আগে। ভালোই চলছিল। বইয়ের সাথে কোন সম্পর্ক না টেনেই বলা যায়, এই সিনেমার প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধ একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক লেগেছে। মনে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধকে কোনভাবে এই গল্পে ঢোকাতেই হবে এমন ভেবেই কিছু অনাবশ্যক জটিলতা আর অবাস্তবতার আশ্রয় নিতে হয়েছে। চমৎকার একটা সিনেমা হতে গিয়েও শেষটায় মেরে দিয়েছে। তারপরেও সিনেমার মধ্যে 'আমার সোনার বাংলা' শুনে বেশ ভাল লাগল, সিনেমার সাথে একেবারে সম্পর্কহীন সেই ভাললাগা। দুই বাংলার মানুষের মাঝেই সহজে ব্যব্যসার কোন পরিকল্পনা মাথায় ছিল কি? মুক্তিযুদ্ধ আছে, এই কথা শুনলে এই বাংলার অনেকেই দেখতে আগ্রহী হবেন যারা হয়ত সচরাচর ওই বাংলার সিনেমা দেখেন না। এরকম কোন ভাবনাও হয়ত কাজ করতে পারে। কে জানে!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
শুধু পশ্চিমবঙ্গ কেন, সারা বিশ্বের চলচ্চিত্র নির্মাতা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা বানাক না। তাহলে তো আমাদেরচেয়ে খুশি আর কেউ হবে না তাই না?
কিন্তু একটু ঠিকঠাক বানাক। নইলে যে বিপদ।
আমারও মাথার মধ্যে এটাই বার বার ঘুরপাক খাচ্ছিলো শুধু, এখানে মুক্তিযুদ্ধ কতোটুকু মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান জানিয়ে, আর কতটুকু বাংলাদেশের দর্শককে টার্গেট করে বানানো?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সেটাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সহমত
ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছবির ভাষা নিয়ে একটা জিনিস জানতে চাই, কেউ যদি ব্যাপারটি একটু ব্যখ্যা করতেন।
বাঙ্গাল ভাষা বলতে বাংলাদেশের ভাষা বোঝানো হয় ।
আমার একটা প্রশ্ন বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের লোকজন এভাবে কথা বলে??
যদ্দুর জানি ফরিদপুরের লোকজন তো এভাবে কথা বলে না। তাহলে কেন বাংলাদেশের লোকজনের ভাষা অঞ্চল নির্বিশেষে এরকম দেখানো হয়। নাকি ঐপারের লোকজন ধরেই নেয় আমরা সবাই এইভাবে কথা বলি।
এই ভাষা কলকাতার মিডিয়ার আবিষ্কার। তাদের ধারণা আমরা সবাই এইভাবে কথা বলি।
facebook
ভাল কথা বলেছেন। কোলকাতায় এই ভাষাটা বাংলাদেশের বাংলা হিসেবে খুব চালু। যদিও এই বিদঘুটে ভাষায় এদেশে কেউ কথা বলে না। দাদারা এটা কোথায় পেলো কে জানে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তাদের পক্ষে ঠিকঠাক করে বলাটাও সমস্যা। আপনি যদি দার্জিলিঙের বাঙ্গালিরা কীভাবে বাংলা বলে সেটা নিয়ে কাজ করতে চান তাহলেও একই সমস্যা হবে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
দিশা পড়তে দিয়েছিল বইটা। একদম দিলখুশ হয়ে গেছল এত চমৎকার একটা বই পড়ে। কিন্তু তার পরপরই মুভিটা দেখে মুখ একেবারে তেতো হয়ে গেলো । খটকার খটমটিতে আমার কাছে প্রথম অংশটাও পছন্দ হয়নি। বইতে সোমলতাকে যেরকম বুদ্ধিমান ব্যক্তিত্বময়ী মনে হয়েছে তার কিছুই সেলুলয়েডে দেখিনা। এরকম একজনকে কেন তোতলাতে হবে বুঝলাম না। সেটা যদিবা সহ্য করা গেলো, একটু পরেই জোর করে গুঁজে দেয়া বিষয়গুলো রীতিমত ভুরু কুঁচকে দেয়। সিনেমাটা না হয়েছে ভুতের, না বাচ্চাদের, না বড়দের, না মুক্তিযুদ্ধের আর নাই বা গয়নার বাক্সের। শেষে মহা মেজাজখারাপ নিয়ে আমারও মনে হয়েছে চটকানোর জন্যে আর কোন গল্প কি ছিলোনা ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
উপন্যাসে সোমলতার একটা দেবী প্রতিমা টাইপ রূপ ছিলো। সিনেমায় সেটা না পেয়ে ভেবেছিলাম ভালোই হলো, দেবী প্রতিমা ছাড়া গৃহলক্ষ্মী ভাবতে না পারার চল থেকে বেরিয়ে আসছে, আসুক।
সোমলতার ব্যক্তিত্বটা পিসির কাঁধে চাপিয়ে দিতে গিয়ে সোমলতাকে খুব খাটো করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ঐ গোলাপ দেনেওয়ালাকে প্রত্যাখ্যানের মধ্যেও সোমলতার অসম্ভব জেদ আর ব্যক্তিত্ব ছিলো উপন্যাসে। একটা দৃঢ় সঙ্কল্প ছিলো।
শেষটায় যখন সোমলতা ঐ কবির স্মৃতির কাছে আত্মসমর্পন করলেন, তখন কি তিনি নিজেই দর্শককে বলে দিলেন না যে তার এই সংগ্রামী পথটা ভুল ছিলো? এগুলো না করে এই কবির সাথেই 'দুলেছিনু বনে' হলে বেশ হতো জীবনটা?
এখানে এসে সোমলতা নিজেই নিজেকে মেরে ফেলে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সোমলতাকে আমার দেবী প্রতিমা মনে হয়নি নজরুল ভাই। বরং সূক্ষ্মভাবে অন্যদের ম্যানিপুলেট করে নিজের মত কাজ করিয়ে নিতে পারার মত বুদ্ধি ধরে এরকম একজন মনে হয়েছে। তার মানে সে ভেতরে যথেষ্ট কনফিডেন্ট একজন মানুষ। এরকম একজন কেন হটাত সেই মৃত কবির জন্য আউলে যাবে আর কেনইবা তার মেয়ে 'এত ভালোবাসা ফিরিয়ে দিলে?' বলে খোঁচা দেবে সেটা মাথায় ঢোকে না কোনভাবেই। আমারও আপনার মতই মনে হয়েছে সোমলতা নিজেই নিজেকে মেরে ফেলেছে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
যতদূর মনে পড়ে, উপন্যাসে সোমলতার একটা লক্ষ্মী প্রতিমা টাইপ চেহারার চিত্র অঙ্কিত ছিলো। কিজানি, ভুল হতে পারে।
কিন্তু আপনি কী বলতে চাইছেন? দেবীদের বুদ্ধি আর কনফিডেন্স থাকতে নেই?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার ভুল হয়নি। ঐরকমই ছিল। দেবীপ্রতিমা কথাটা আক্ষরিক অর্থে বলিনি। বুদ্ধি কনফিডেন্স যে কারোই থাকতে পারে। আমার কাছে মনে হয়েছে ওখানে মেয়েটা ভীতু, নরম সরম, জড়োসড়ো সবার সামনে, কিন্তু ঠিকই সব্বাইকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়। দেখুন না, বাড়ির অলস অহঙ্কারী পুরুষদের সবাইকেই কিন্তু একে একে কাজে নামিয়ে দেয় ওই সোমলতাই। নিজের ইমেজ না বদলেও যেভাবে একটু একটু করে কাজটা করে সেটা খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। জবুথবু ভীতু মানুষরা তো অমন করেনা সেটাই বলছি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আরে বাবা, সিরিয়াস হয়ে গেলেন কেনু? ইমোটিকন খেয়ালে রাখতে হবে তো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সিরিয়াস হইনিতো। হুদাই বকবক করি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হা হা হা। বক বক করে একটা পোস্ট নামায়ে ফেলেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সিনেমায় সম্ভবত কিছু বাধ্যতামূলকভাবে কমেডি সিন থাকাই লাগে, এই ধারণা থেকে এই তোতলানোর ব্যপারাটা যোগ হয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। আমার কাছে অবাক ব্যপার লাগছে একটাই, বইটা না পড়েই এই অসঙ্গতিগুলো আমার চোখে ধরা পড়েছে। বইটা কতটা মেদহীন আর ঝরঝরে সেটা মনে হচ্ছে, পড়তে হবে। সিনেমাটা খুব খুব ভাল সিনেমা হতে গিয়েও হতে পারল না এই এক সিনেমায় সব খাওয়াতে গিয়ে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হ। এইজন্যই আরো বেশি খারাপ লেগেছে, এটা তাঁ্র সেরা কাজগুলোর একটা হতে পারতো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বন্ধুর কাছ থেকে লিংক পেয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে ছবিটা দেখতে বসেছিলাম। ভুতের অদ্ভুতুড়ে কাহিনীও খারাপ লাগছিল না। কিন্তু সোমলতার অন্ধকার প্রেমিকের ভুতুড়ে আগমনের পর থেকে অস্বস্তির শুরু এবং মুক্তিযুদ্ধের জোড়াতালি অনুপ্রবেশ দেখে চরম বিরক্তিতে সমাপ্তি। শেষটা দেখে মেজাজই খারাপ হয়ে গেল। যদিও আমার সোনার বাংলা গানটা শুনে লোমকুপ খাড়া হয়ে গেছিল। আমার মনে হয়েছে জোর করে মুক্তিযুদ্ধ আনয়নের পেছনে বাংলাদেশের দর্শক টার্গেট। কাল্পনিক ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা, ভারতের মাটিতে তাদের লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে পোড়োবাড়িতে, এটা খুব হাস্যকর অবাস্তব এবং জেনেশুনে ভুল মনে হয়েছে। অপর্নার ছবির প্রতি যে মুগ্ধতা ছিল এই মুভিটা তাতে কষে চড় দিয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, গয়নার বাক্সে মুক্তিযুদ্ধের ব্যবহারটা টেস্টিং সল্টের ব্যর্থ প্রয়োগের মতো হয়ে গেছে। সোমলতা ও চৈতালী দুজনের প্রেমিকের গালে দাড়ি কেন এটাও একটু ভাবিয়েছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পূর্ববঙ্গের কবির চেহারা আঁকতে সোমলতার প্রেমিকের বেশ কাবুলিওয়ালামার্কা একটা গেটআপ কেন নিতে হলো বুঝিনি।
মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গটা বোধকরি বাণিজ্যকারনেই এসেছে সিনেমায়। ঢাকা কোলকাতায় বেশ অনেক মিটিং টিটিং হয়েছে দুই বাংলার মৈত্রী চলচ্চিত্রের সন্ধানে। কিন্তু তা বলে মুক্তিযুদ্ধকে অতোটা হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করার প্রয়োজন ছিলো না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমরা পূর্ববঙ্গের কবিরা পরস্ত্রীর পিছে পিছে ঘুরি, হাতে হারিকেন।
মাইর্যালা
- একলহমা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দুই সময়ের দু'জন লোকের দাঁড়ি থাকতেই পারে। এটা নিয়ে রহস্যের সন্ধান না করে বরং বেনুকে কেন রাসমণিদের বাড়ির পিটিয়ে মেরে ফেলা কাজের লোকেরই(রামকিলর?) বংশধর হতে হলো সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। তাছাড়া বাংলাদেশের সব লোকই কি একই রকমের আঞ্চলিক টানে কথা বলেন? মুম্তিযোদ্ধাটিও কিন্তু রাসমণির টানেই বাংলা বলেছেন। অবশ্য এসব নিয়ে আমরা যতই কথা বলি না কেন গয়নার বাক্সকে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে অপর্ণা সেনের শ্রেষ্ঠ একটি কাজ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আজকাল কোনো সমস্যা নিয়ে পড়লেই আমি ভাবি এর সমাধান কী? বেশি কিছু তো জানি না। তাই নিজের মত করেই ভাবি।
যেমন, এই যে ওরা সিনেমা বানালো, নিজেদের গল্প, সেইটাকে আবার ইচ্ছে মত রঙ চড়িয়ে যা খুশি তাই। এর সমাধান কী? আর্টের বিরূদ্ধে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ কাজ করে না। শুধুমাত্র ওর চেয়ে শ্রেয়তর কোনো সৃষ্টিই ওকে ছাপিয়ে উঠতে পারে। আমাদের এতবড় অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। এত বৈচিত্রময়, হৃদয়গ্রাহী, বীরত্বপূর্ণ তার ইতিহাস। তা নিয়ে কয়টা মানসম্পন্ন সিনেমা আমরা বানাচ্ছি? কয়টা ছোটোগল্প লিখছি? উপন্যাস? নাটক? এই জন্যই, ওদের এইসব টুটাফাটা সৃষ্টি ফোকাসে এসে যাচ্ছে। এসব মেজাজ খারাপ করা ঘটনাকে উপলক্ষ্য করে একবার তাই আয়নাতে তাকানোটাই সমাধান।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হবে হবে... অবশ্যই হবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পূর্ণ সহমত
- একলহমা
জনপ্রিয় কোন উপন্যাসের চিত্ররূপ প্রায় সময়ই দর্শকের একটি বড় অংশকে হতাশ করে, কারন উপন্যাস পাঠের সময় পাঠক নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী দৃশ্য রচনা করে। সিনেমায় যদি নিজের রচিত দৃশ্য বদলে যায় তাহলে আর ভাল লাগে না, তাঁর উপর কাহিনীর যদি ব্যাপক রদবদল ঘটে তাহলে তো আর কথাই নাই।
আব্দুল্লাহ এ এম
উপন্যাসের চিত্রনাট্য, পরিচালকের স্বাধীনতা এগুলো ভিন্ন বিষয়। মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যই আস্তে পারে সিনেমায়।কিন্তু একটু বুঝেশুনে আনা উচিত। নিজের সিনেমার বারোটা বাজানোর কী দরকার?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছবির ব্যাপারে বলছিনা, কিন্তু ছবিতে যখন জাতীয় সঙ্গীত টা শুনলাম, আবারো মনে হল আমাদের জাতীয় সঙ্গীত সবচেয়ে শ্রুতিমধুর বিশ্বে; এই পরবাসে থেকে লোমকূপ খাড়া হয়ে গিয়েছিল, দেশকে ভীষণ মিস করছিলাম।
আমি পড়েছিলাম বিরাট সমস্যায়। বাতি নিভিয়ে টেবিলের উপর ঠ্যাং তুলে দিয়ে আরাম করে সিনেমা দেখছিলাম। হঠাত জাতীয় সংগীত শুনে তব্দা, কোনো প্রস্তুতি নাই। তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়াতে গিয়ে গ্লাস ভাংগার উপক্রম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বাণিজ্যের মুখোমুখি সব ভুলে যায়
ইতিহাস লাট খেয়ে পড়ে,
নানা কিসিমের চক্রে ও ধান্দায়
বিশিষ্টেরা রুপোলী চাকতি ধরে।
- একলহমা
হ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খুব আগ্রহের সাথে আম্মুকে নিয়ে মুভিটা দেখতে বসেছিলাম। আমার আম্মুকে আমি যে বই পড়ে মজা পাই সেটা পড়ে শোনাই। এই বই শতমুখ করে শুনিয়েছিলাম। নিঃসন্দেহে এটা একটা পছন্দের বই। কিন্তু মুভি দেখতে যেয়ে মনে হলো একি অবস্থা! খুব রাগ লেগেছিল শেষে এসে! সোমলতার মেয়ের চরিত্র অতি পাকামো মনে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চিত্রায়ন অতি নিম্নমানের হয়েছে। এক কথা শেষ অংশ বাজে উপস্থাপনে মুভিটা গ্রহণ যোগ্য হয় নি।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
আমি সবাইরে কইতেসি, এইটা দেখার দরকার নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার রিভিউটি পড়েই সিনেমাটা দেখতে বসলাম। ভেবেছিলাম হঠাৎ মুক্তিযুদ্ধের অবতারণা আপনার ভালো লাগে নাই তাতে কী হয়েছে। আমার তো ভালো লাগতেও পারে!
সিনেমাটা দেখার পর মনে হলো দুটো আলাদা সিনেমা একসাথে জোড়া লাগানো। একটি সোমলতার মায়ের এবং আরেকটি সোমলতার মেয়ের। মায়ের অংশটুকু তরতর করে এগোলেও মেয়ের অংশে এসে আটকে গেলো। শির্ষেন্দুর উপন্যাসটি পড়া নেই বলে প্রতিমুহুর্র্তে বই এর সাথে তুলোনার স্বাভাবিক প্রবনতা থেকে বেচে গেছি।
এইজন্যই পূববংেগর কবি বলেছেন ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খুব বিশ্রী, জগাখিচুড়ি মার্কা সিনেমা, প্রথমটা একেবারে হালকা মেজোজের একটা সিনেমা, শেষে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটা ব্যাপার ভূতুড়ে একটা গয়নার বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা পরিচালকের ওপর একটা নেতিবাচক ধারণায় দিয়েছিল মনে। আজ আপনার লেখাটা পড়ে সেটা আরো পোক্ত হলো।
ভূত-মুক্তিযুদ্ধের জগাখিচুড়ি!
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
অথচ ছবিটার অনেক ভালো হউনের সম্ভাবনা ছিলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
রিভিউ নিয়া কোন কথা নাই। উপন্যাসটা ভাল্লাগছিল। সিনেমাটা ঐখানে রাখলেই হইতো। মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারটা পুরাই হুইস্কির উপর রসগোল্লার মতো হইছে।
কিন্তু আমাদের যেটা দরকার সেইটা হইতেছে প্রচুর প্রচুর মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা। যেইখানে যুদ্ধে বাঙালীর বীরত্বের গল্পগুলো প্রাধান্য পায়। সেইটা হচ্ছে না একেবারেই ....
অজ্ঞাতবাস
হুইস্কির উপর রসগোল্লা। হা হা হা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কিন্তু আমাদের যেটা দরকার সেইটা হইতেছে প্রচুর প্রচুর মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা। যেইখানে যুদ্ধে বাঙালীর বীরত্বের গল্পগুলো প্রাধান্য পায়। সেইটা হচ্ছে না একেবারেই....
আমার জানামতে নক্সালপন্থীরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি যথেষ্ট সমর্ধন ও সহযোগিতা করেছিলেন। শরনার্থী ক্যাম্পগুলোতেও তারা সেচ্ছশ্রম দিয়েছেন।
এমনও জানা যায়, ঐ সময়ে এদেশ থেকে যাওয়া অনেক পাতি নেতারা এসপ্লানেড বা চৌরঙ্গি এলাকায় সান্ধ্য আড্ডা বসাতেন। ঐ সব আড্ডায় যেয়ে নক্সালপন্থিরা তাদেরকে হুমকি দিতেন, দেশের মুক্তির জন্য এসেছেন, শরনার্থীরা কত কষ্টে আছে তাদের খোঁজ খবর নেন, এখানে যেন আর আসবেন না। তাহলে একদম......। যাহোক এসব শোনা কথা।
আর সিনেমাটা আমার দেখা হয় নাই। শুনেছি তেমন ভাল হয় নাই, তাই আগ্রহ হয় নাই।
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ। মুক্তি যুদ্ধকে এভাবে যত্রতত্র অযৌক্তিকভাবে ব্যবহার ঠিক নয়।
নক্সালপন্থীরা তাদের ভাষায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কী কী বলেছিলো তা নিয়ে আলাদা পোস্ট দিমুনে তাইলে, এই আলোচনায় সেটা আর না আনি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হুইস্কির উপর রসগোল্লা। দারুন কইছেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
জবাব নেই ভাই আপনার। tobe ekta katha bolte pari emon satyakar review pochhimbonge bose sombhob noi. aamodgere bazari kuttara gheu gheu kore uthbe. oho ekta katha amader pochhimbogio buddhijibira naki buddhiman/moti bole suntam, eje dekhi thakurer khor-kuto berie poreche.
পশ্চিমবঙ্গে বসে কেন সম্ভব না? লিখুন না ব্লগে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মুভিটা চৈতালী আসার আগ পর্যন্ত বেশ ভালো লাগছিলো। এরপর মনে হয়েছে অযথা ইলাস্টিক করসে কোন উদ্দেশ্যে!
তয় চৈতালীরে সুন্দর লাগসে
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
মূল বইকে অনুসরণ করলে হয়তো ইলাস্টিক মনে হতো না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নকশালবাড়ি আন্দোলন নিয়ে কালপুরুষ বা এই দুএকটা লেখাই পড়েছি, প্রকৃত ইতিহাস জানার কোন সোর্স জানা আছে কি? (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট)
নকশালবাড়ি আন্দোলন নিয়ে তো অনেক বই-ই আছে। এখন তালিকা দেওয়া সম্ভব না। তবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাঁদের অবস্থান জানতে নেসার আহমেদ এর গ্রন্থনায় 'মুক্তিযুদ্ধ ও চারু মজুমদার' বইটা পড়ে দেখতে পারেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট
ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বইটা খুব ভালো লেগেছিল। আপনার রিভিউ পড়েই সিনেমার উপে মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে - আর দেখবো না।
বইএ সোমলতাকে চমৎকার ব্যক্তিত্বময়ী এবং দৃঢ়চিত্তের একজন মানুষ হিসেবে দেখানো হয়েছে - যে সূক্ষ সূক্ষ মোক্ষমচালে একটি জীর্ণ, অহংকার সম্বল পরিবারকে আধুনিকতার এবং অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে নিয়ে এসেছিল দীর্ঘদিনের অধ্যবসায়ে। অনামা প্রেমিককে ফিরিয়ে দেয়ার মধ্যে তার ব্যক্তিত্বের চমৎকার বহিপ্রকাশ ঘটেছিল। এই ঘটনাকে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরিয়ে দেয়া মানে যে ভিতের উপরে উপন্যাসের কাহিনি দাড়িয়ে আছে তার মূলে কুঠারঘাত করা।
আমি ভাবছি উপন্যাসের এতটা অবনমন শীর্ষেন্দু কিভাবে নি্যেছেন!!
সিনেমার এই ডিটেলগুলো নিয়ে কথা বলতে আর ইচ্ছে করেনি, তাহলে পোস্টটা অনেক বড় হয়ে যেতো। উপন্যাসে সোমলতার চরিত্রটা অনেক শক্তিশালী ছিলো। সিনেমায় যা অনেকটা দুর্বল। ব্যাক্তিত্ব তেমন নেই, একটু বোকা বোকা, ভীতু। সোমলতা এখানে অনেকটাই পিসির হাতের পুতুল। তার উপর পিসি চরিত্রে মৌসুমীর দূর্দান্ত অভিনয়ের কারনেই সোমলতার দৃঢ়তা হারিয়ে গেছে অনেকটা।
শীর্ষেন্দু বোধহয় প্রশংসাই করবেন এই সিনেমার। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ এনে সিনেমা যে আরো মহিমান্বিত হয়েছে এমনটাই বলবেন হয়তো। অনুমান করে বললাম, ভুল হতে পারে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বইটা পড়িনি, ছবিটা দেখার ইচ্ছা ছিল। আগ্রহ হারালাম।হাবিজাবি দেখার চেয়ে অন্য কিছু দেখা ভাল।
হ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অতি নাটকীয়তা করেছে সম্ভবত বাংলাদেশের দর্শকমহলের কথা মাথায় রেখে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
বাংলাদেশে শীর্ষেন্দুর পাঠক প্রচুর। গয়নার বাক্স বইটা বাংলাদেশে ভালোই পাঠকপ্রিয়। অপর্ণা সেনের ভক্তও কম নেই।
অপর্ণা সেন পরিচালিত শীর্ষেন্দুর গয়নার বাক্সই বাংলাদেশের দর্শকের জন্য বেশ আকর্ষণীয় ছিলো। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে সিনেমাটা ভালো ব্যাবসা করতে পারতো।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অতি নাটকীয়তা করে দর্শক হারালোই আসলে। বাড়লো না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কোন এক সময়ে আমরা মানে আমাদের ancestor রা ও দেশে থাকতেন। পরিস্থিতির কারণে চলে আস্তে হ্য়। প্রায় দুট generation এর খুবই খারাপ time এর madhye diye jete hayechhe. Bangladeshi ra hayto realize kare na, still ekhono aamaader aager generationer purbo banglar upor taan aache. sei karanei bodhhay Aparna sen onar chhabite "Mukti Judhha" tenechhen. Basically, cinemata okhane jhule gechhe, kintu mukti juddho taanle khati ta ki?
By the way ei patai, amar Tarek Anu, ebang Johra Firdausir blog besh bhalo lage.
সিনেমায় মুক্তিযুদ্ধ আনলে ক্ষতি হবে কেন? মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন দেশে ভালো সিনেমা হলে আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ হবে না।
কিন্তু গয়নার বাক্সর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গটা যেমন বেমানান লেগেছে, তেমনি মুক্তিযুদ্ধটাও অবহেলিত হয়ে গেছে। অপর্ণা সেন এর কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র সিনেমার আশায় রইলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমি অবশ্য সিনেমাটা সম্পর্কে ভিন্ন ধারণা পোষণ করি। সিনেমাটা আমার ভালো লেগেছে, শুধু ভালো না- বেশ ভালো লেগেছে। আমি সিনেমাটা দেখি এক রাতে, অনেক বন্ধুর সঙ্গে। সিনেমার কিছু ব্যাপারে এতোটাই মুগ্ধ হয়েছিলাম, বাসায় এসে আবার পুরোটা দেখেছিলাম ওই রাতেই।
প্রথমে সিনেমাটার কিছু খুঁতের ব্যাপারে বলি। পূর্ববঙ্গের ভাষা সম্ভবত তার মধ্যে প্রধানতম। এই ব্যাপারটা এতোটাই বিরক্তিকর যে, আমি আর কিছু আশা করি না পশ্চিমবাংলার চলচ্চিত্র/টিভি মিডিয়ার কাছে। বর্তমান বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ববাংলা) ভাষার নামে তারা একটা যা-তা, মনমতো জিনিস অনেকদিন ধরেই গেলানোর চেষ্টা করছে। আমি এটাকে উন্নাসিকতা হিসেবেই ধরি, এবং এটা অবশ্যই সিনেমার প্রধানতম খুঁত।হলিউডি সিনেমাতে যখন কোনো বৃটিশ চরিত্রকে আনা হয়, তখন কিন্তু তার অ্যাকসেন্টেও সিগনিফিক্যান্ট পরিবর্তন থাকে, পুরো দস্তুর বৃটিশ উচ্চারণ। সিনেমার ব্যাপারে যদি অপর্ণা সেন এবং অভিনেতারা নূন্যতম যত্নশীল হতেন, তারা অবশ্যই সঠিক আঞ্চলিক টাণে কথা বলতেন।
দ্বিতীয়ত, সিনেমাটা শেষাংশে একটু ঝুলে গেছে, এটাও স্বীকার করতে হবে। কঙ্কনা সেনশর্মার মেয়ের ভূমিকায় শ্রাবন্তীর অভিনয় যথেষ্ট বাজে ছিলো (এবং কম বয়েসি পিসিমা'র চরিত্রেও)। বিশেষত পিসিমা হিসেবে, তার উচ্চারণ কানে বাঁধছিলো বার বার, এবং সোমলতার মেয়ে হিসেবে এক্সপ্রেশন আড়ষ্ট মনে হয়েছে। পুরো সিনেমাতে বাকি সবার দুর্দান্ত অভিনয়ের পাশে তাকে অসম্ভব ম্লাণ লাগছিলো। আর মুক্তিযুদ্ধের চিত্রায়ণটা সম্পূর্ণ ছিলো না- মুক্তিযুদ্ধের মতো বিশাল ব্যাপারকে অতো ছোট ক্যানভাসের মধ্যে ঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলার দক্ষতা অপর্ণা সেন দেখাতে পারেন নি।
এবার ভালো লাগার ব্যাপারটাকে বলি। শীর্ষেন্দুর গয়নার বাক্স উপন্যাসটা আমি এতো আগে পড়েছিলাম যে, তেমন কিছুই বলতে গেলে মাথায় ছিলো না। অবশ্য তেমন ডিটেইল কিছুই মনে না পড়াতে ভালো হয়েছে, কারণ বইয়ের সাথে উপন্যাসকে মেলাতে যাওয়া আমার কাছে অদরকারি মনে হয়, বরাবরই। এমনকি যেই চলচ্চিত্রকে, উপন্যাস থেকে রূপান্তরের ক্ষেত্রে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বলে ধরা হয়- সেই লর্ড অভ দ্য রিংস যখন বই পড়েছিলাম (সিনেমা দেখার পর), তখন অনুভব করেছিলাম- বইটাকে দিয়ে সিনেমাটাকে যাচাই না করাই ভালো। দুইটা সম্পূর্ণ ভিন্ন শিল্প মাধ্যম, তাদের প্রকাশ আলাদা। শীর্ষেন্দুর মূল উপন্যাস থেকে বিচ্যুতিতে তাই আমার তেমন কোনো অভিযোগ নেই- বরং এই ধরনের বড় আকারের বিচ্যুতি আমি অনেক সিনেমাতেই দেখেছি। আমার কাছে তাই প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন- সিনেমা হিসেবে কি অপর্ণা সেন গয়নার বাক্সের প্রতি সুবিচার করতে পেরেছেন? আমার দৃষ্টিতে- হ্যাঁ, পেরেছেন।
অপর্ণা সেন সিনেমাটিকে ভূতের গল্প হিসেবে দাঁড় করাননি। ভূত এসেছে শুধু মাত্র অনিবার্য অনুষঙ্গ হিসেবে- গল্পটিকে গতি দেওয়ার জন্য। গয়নার বাক্স আসলে কী? আমার মনে হয়েছে, গয়নার বাক্সে আটকে আছে স্বাধীনতা। বুড়ি, বালবিধবা পিসিমা যেই স্বাধীনতাকে সারাটা জীবন বাক্সবন্দী করে আটকে রেখেছেন। সোমলতা যেই স্বাধীনতার স্বাদ নিতে পারেনি, সাহসের অভাবে। কিন্তু সোমলতার মেয়ে পেরেছে- সে স্বাধীনতা পেয়েছে জীবনে, সে গয়নার বাক্স উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সিনেমাটিতে পিসিমার ভূমিকায় মৌসুমীর অভিনয় এতোটাই চমৎকার ছিলো যে, উচ্চারণগত বিরক্তি ভুলে যেয়ে, আমি মুগ্ধ হয়েছি। অমানবিক সামাজিক এবং ধর্মীয় কাঠামোর শিকার হয়ে যৌবনের অমূল্য দিনগুলিকে হারানোর বেদনা যে কী গভীর, মৌসুমীর অভিনয়ে সে কথা ফুটে উঠেছে। সিনেমাটার শেষ অংশে অনেকগুলি সুতোর প্রান্ত বের হয়েছিলো- যে কোনো একটি প্রান্তকে আঁকড়ে ধরেই সিনেমাটা শেষ হতে পারতো। কিন্তু পরিচালক সবচে Subtle Thread টাকেই বেছে নিয়েছেন- যেটা সম্ভবত কেউই অনুমান করেননি। পরিবার, সমাজ, কিংবা অনিশ্চয়তার ভয়ে যে ভালো লাগাকে প্রশ্রয় দেয়নি সোমলতা, সেই হারিয়ে যাওয়া হৃদয়াবেগই আসলে গয়নার বাক্সে লুকিয়ে থাকা অলংকার। তবে এখানেও স্বীকার করতে হবে, পূর্ববঙ্গের কবি চরিত্রের চিত্রায়ণ, এবং কাহিনীটুকু ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া ছিলো। এতো গভীর প্রেম কী করে, শুধুমাত্র রাতের বেলা পিছু পিছু হেঁটে আসাতেই তৈরি হলো, সেটা কোনোমতেই পরিষ্কার না।
এই যে বেশ কিছু দুর্বলতা, তারপরেও কেন সিনেমাটা আমার ভালো লাগলো? কারণ এইসব খামতি প্রায় পুরোটাই পুষিয়ে দিয়েছে সিনেমাটির দুর্দান্ত ক্যামেরার কাজ, কিছু দারুণ আইডিয়া (যেমন সংলাপের মধ্যে র্যাপ স্টাইল) এবং অসাধারণ গান। "কাফের, তোমাকে ভালোবাসলাম বলে"- গানটার লিরিকস দুর্দান্ত রকমের ভালো। এছাড়া শোভা মুগদালের গলাতে "সাখি রে, সাওয়ান ভাওয়াত নাহি" কিংবা "বাসনার গান" শুনে প্রাণ জুড়িয়ে গিয়েছিলো। বিশেষত আজকাল পশ্চিমবাংলার সিনেমাতে গানগুলি সব একঘেঁয়ে লাগে আমার কাছে, মনে হচ্ছে সামান্য সুর সহযোগে কেউ কবিতা পড়ছে। সেই বিচারে এই সিনেমার গান দুর্দান্ত, এবং তার চেয়েও বেশি দুর্দান্ত সেই গানের প্রয়োগ।
একই সঙ্গে ব্যবসাসফল এবং নান্দনিক সিনেমা বানানো খুব কঠিন একটা কাজ। ডিটেইল ওরিয়েন্টেড, আর্ট ফিল্ম গুলি যে কারণে ব্যবসায়িকভাবে সাফল্যের মুখ দেখে না। অথচ হলিউডে কিন্তু এমন ছবি হচ্ছে। অন্তত আমি একজন পরিচালকের কথা অবশ্য বলবো, নোলান। যার বানানো প্রতিটা সিনেমা একই সঙ্গে সিনেমা হিসেবে দারুণ, প্রচুর ভাবার ব্যাপার থাকে- ফিলোসফিক্যাল ডাইলেমা থাকে, আবার বক্স অফিস ফাটানো ব্যবসা করে। গয়নার বাক্সকে নোলানের সিনেমার সঙ্গে তুলনা দেওয়া অনুচিত হবে, তবে আমি মনে করি, এটা কিছুটা হলেও সেই পথেই হেঁটেছে। টিপিক্যাল লিভ টুগেদার, অবিশ্বাস, দেদারসে ড্রিঙ্কিং, কলকাতার নাগরিক জীবনের দ্বন্দ্বের চিত্রায়ণ এখন চর্বিত চর্বণ। সেখান থেকে আমাকে মুক্তি দিয়েছে গয়নার বাক্স। প্রাণ খুলে হেসেছি (হ্যাঁ, সিনেমাটিতে হিউমার এলিমেন্ট ছিলো প্রচুর), গানে মুগ্ধ হয়েছি, অভিনয়ে অভিভূত হয়েছি। বেশ কিছু ত্রুটি থাকার পরও আমি তাই বাতিল করার আগে সবাইকে 'গয়নার বাক্স' একবার দেখতে অনুরোধ করি। সব সমালোচকের কথা ভুলে যেয়ে, শুধু মাত্র নিজের বিচারবুদ্ধিতে একবার যাচাই করবার জন্য।
অট: বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, 'আমার সোনার বাংলা' গাওয়াটা অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। এতো আবেগ দিয়ে অনেকদিন কাউকে গাইতে শুনিনি। এখনো মাঝে মাঝে এই গানটা শুনি।
সংযোজন- এই হাতি মন্তব্যে একটা জিনিস বাদ পড়েছিলো। আমি মনে করি গয়নার বাক্সকে, শীর্ষেন্দুর গয়নার বাক্স না বলে অপর্ণা সেনের গয়নার বাক্স বলাই যুক্তিযুক্ত। অপর্ণা সেন শুধু শীর্ষেন্দুর গল্পের শরীরটাকে ধার নিয়েছেন নিজের গল্পটাকে বলার জন্য। কাজেই শীর্ষেন্দুর উপন্যাস থেকে বিচ্যুতি আমার দৃষ্টিতে কোনো সমস্যাই না।
মুক্তিযুদ্ধ টেনে আনাতেও আমি কোনো সমস্যা দেখি না। যেহেতু অপর্ণা সেন সিনেমাটা বানিয়েছেন, তার স্বাধীনতা আছে এই কাটা ছেঁড়াটুকু করার। খেয়াল করুন, গল্পটা যে পরিবারকে কেন্দ্র করে, তাদের শিঁকড় পূর্ববাংলাতে। পিসিমার শৈশব, যৌবন কিংবা তার স্বল্প সময়ের "স্বপ্নের" স্বামীর সংসারও ওপার বাংলায়। মুক্তিযুদ্ধে কি তাদের অন্যরকম আবেগ থাকবে না? ভারতবর্ষের নাগরিক হয়েও চৈতালি যদি এই যুদ্ধের প্রতি আলাদা টান অনুভব করে, সেইটা কি খুব বেশি কিছু? মুক্তিযুদ্ধ দেখানোর পিছনে আদৌ রাজনীতি আছে কিনা জানি না। শুধু এটুকু বলতে পারি, এই সিনেমার গল্পের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ দেখানো অবাস্তব কিছু না। কিন্তু সমস্যা একটা জায়গাতেই হয়েছে, যেটা আগেও বললাম- চিত্রায়ণ। মুক্তিযোদ্ধারা পোড়াবাড়িতে কেন থাকছে, সেটা আমার কাছে পরিষ্কার না। এতো স্বল্প সময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিশালতা ফুটিয়ে তোলার জন্য যে মুন্সিয়ানা দরকার হয়, অপর্ণা সেন তা দেখাতে পারেন নি। গল্পটা জমেনি ঠিক মতো। ফ্রেমের মধ্যে বিসদৃশ হয়ে ঢুকে পড়েছে বলে মনে হয়েছে। সেটা পরিচালনার দুর্বলতা। তবে আরেকটা ব্যাপার, গয়নার বাক্স খুলে সব গয়না মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে দেওয়াটা হয়তো একটু অবাস্তব হয়েছে বাস্তবতার নিরিখে, কিন্তু আমার মনে হয় না, এটাতে দেখানোপনার কিছু আছে। আগেও যেটা বলেছি, গয়নার বাক্সে বন্দী আছে স্বাধীনতা, মুক্তি। সেই গয়নাটুকু তাই মুক্তিযুদ্ধেই অবদান রেখেছে, এভাবে দেখাতেই চেয়েছেন পরিচালক।
এইসব মিলিয়ে গয়নার বাক্স, সিনেমা হিসেবে, তার নিজের গুনেই আমার কাছে ভালো লেগেছে।
অলমিতি বিস্তারেণ
সবজান্তা, আপনার বেশিরভাগ মন্তব্যের সঙ্গেই একমত। পোস্টে এবং মন্তব্যে অনেকবারই বলেছি, ঠিক মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গটা আসার আগ পর্যন্ত 'গয়নার বাক্স' দূর্দান্ত লাগছিলো। এখনো পর্যন্ত আমার দেখা অপর্ণা সেন এর অন্যতম সেরা কাজ মনে হচ্ছিলো। যদি বুঝিয়ে না থাকতে পারি তাহলে আবারো বলছি সেকথা। গয়নার বাক্স অসাধারণ একটা সিনেমাই হচ্ছিলো।
বরঞ্চ সেজন্যই খারাপ লাগাটা বেশি, আক্ষেপটা বেশি।
একটি চমৎকার সিনেমা শেষটায় এসে ঝুলে যাওয়াটা ১০০ মাইল হেঁটে এসে রাস্তাটা যে কানাগলি ছিলো তা আবিষ্কার করার মতো ব্যাপার।
জাতীয় সঙ্গীতটা আমারো ভালো লেগেছে।
ভালো লাগেনি মুক্তিযুদ্ধের অংশটা। খুব দুর্বল হয়েছে। বার বার মনে হয়েছে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো। এতে না যত্ন হলো সিনেমাটার, না যত্ন হলো মুক্তিযুদ্ধের।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে যতো বেশি সিনেমা হবে, অবশ্যই খুব খুশি হবো। কিন্তু বাজারের প্রয়োজনে, সিনেমার অপ্রয়োজনে বাড়তি মেদের মতো সিনেমার শরীরে মুক্তিযুদ্ধ ঝুলে না থাকুক, এটাই কামনা করি। আর কিছু না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
aar je "accent" er katha hochhe, tate amar experience bolte chai. amar ma'r baari purbo banglar Narayan gunge, babar dik theke, farid pur, ami dui family tei dekhechi ei rakam bhabe mane jemon cinema te bangal bhasha bole temon bhabe kotha bolte. kintu chottogram er kichu atmiyo onyo rakam bhabe bole. tai amar mote eta bisadrisho na.
নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদি-বিক্রমপুরের টান আর ফরিদপুর-মাদারিপুর-শরিয়তপুরের টান কিছুটা ভিন্ন। পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া বাকিদের কথা আসলে কনসিস্টেন্ট ছিলো না। আমাদের কানে "আলুনি"টা ধরা পড়ে, বুঝতেই পারছেন।
বাংলায় লিখুন প্লিজ। কমেন্ট বক্সের ওপরে মেনুবারে দেখুন "অ" লেখা একটা বাটন আছে। ওখান থেকে পছন্দসই কীবোর্ড লেআউট বেছে নিতে পারবেন।
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এপার বাংলায় জন্মেছেন। শৈশব-কৈশোরের একটা অংশ পার করেছেন। বোধ করি সে কারণেই তার উচ্চারণ কানে বাঁধেনি। তবে এটা কোনো অজুহাত হতে পারে না- ভালো অভিনয়ের জন্য, ভালো সিনেমা বানানোর জন্য উচ্চারণের এই বাঁধা পার হওয়াটা কোনো সমস্যা হওয়া উচিত না। ভালো অভিনেতা এবং পরিচালকেরা এরচে অনেক কঠিন কিছু করেন।
অলমিতি বিস্তারেণ
প্রিয় এম. রায়চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গের মিডিয়াগুলো নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের মানুষ, স্থান আর প্রতিষ্ঠানের নামগুলো ভুল বানানে লিখে থাকে। এর পেছনে এক করুণ উন্নাসিকতা কাজ করে থাকে। আপনি দেখছি তার ব্যতিক্রম নন। নিজের দাদুবাড়ির ঠিকানা নারায়ণগঞ্জকে (Narayanganj) নারায়ণ গুঞ্জে (Narayan gunge) বলে কী প্রকাশ করতে চাইলেন? জায়গার নামের শেষে 'গঞ্জ' থাকলে বা 'পুর' থাকলে সেটা আলাদা ভাবে লিখতে হয় না, একসাথে লিখতে হয়। যেমন, ডালটনগঞ্জ বা বহরমপুর। সেটা আপনার অজানা থাকার কথা না। তবু আপনি Narayan gunge বা farid pur এভাবেই লিখলেন। এগুলো দেখলে এখন রাগও হয় না, বিরক্তও হই না। স্রেফ করুণা হয় এই স্মার্ট আলেকগুলোর জন্য।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
mairi, bangladesher lokeder saathe kono katha bolai baatulata. ami kono dino jaini bangladeshe. ami apnader moto sabjanta noi. achcha bolen to bharoter kono jaigar naam apni thik thak likhte parben kina? honestly bolun. aar ekhon dekhlam bangladeshira kono rokome ektu truti khunjte parley holo.
জনাব রায়চৌধুরী, আমরা ভারতের জায়গার নাম, ব্যক্তির নাম, সবই ঠিকমতো লিখতে পারবো। অনেস্টলি। আপনি পারবেন তো?
অনুগ্রহ করে বাংলায় লিখুন। বাংলায় লিখতে না পারলে এখানে মন্তব্য করতে আসার প্রয়োজন নেই।
Na, satyi parbo na. Jodi English haraf na pachhando hay ta hole, option ta tule din. aar, ami asbo ki asbo na seta ami thik korbo, apni bolar ke? Is it your personal website?
বিদায় জনাব রায়চৌধুরী। বাল অন্যত্র গিয়ে ফেলুন।
মেজাজ খারাপ করা মন্তব্যের জবাব কি মুখ খারাপ করে দিতেই হবে?
অনেস্টলি বলছি, পারবো। পারি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
বইটা পড়া হয়নি
তবে সিনেমাটা দেখে চৈতালির আগমন পরবর্তী অংশটুকু দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে
সেটাই
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সম্প্রতি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একটা ছোটোগল্প পড়লাম, "রাসমণির সোনাদানা"। "গয়নার বাক্স" সিনেমাটা দেখেছি কিছুদিন আগে। মনে হলো রাসমণির সোনাদানা গল্প থেকেও অনেক কিছু সিনেমাটায় নিয়েছে। শীর্ষেন্দুর উপন্যাস গয়নার বাক্স পড়িনি এখনো। তবে শীগগীর পড়বো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
রাসমণির সোনাদানা পড়িনি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
likhte to cheyei chilam, kintu bheeshon asubidhaa hochhe. er manual thakle bhalo hoto.
sorry.
http://www.omicronlab.com/avro-keyboard.html
..................................................................
#Banshibir.
লাভ নেই, উনি সম্ভবত চেষ্টা করতেই রাজী না। উনি মুরাদ টাকলা ভাষাতেই লিখতে চান।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার পোস্টে রোমান হরফে প্রচুর পোঁদপাকা মন্তব্য পড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের কোনো কিছু নিয়ে ভবিষ্যতে কিছু লিখলে একটা ডিসক্লেইমার দিয়েন বস, যে এইখানে সবাই কষ্ট করে বাংলা হরফে লেখে, কাজেই অংশগ্রহণের জন্য বাংলা হরফে মন্তব্য কাম্য। বাংলা হরফে লিখতে না পারলে তারা যেন পাকনামি ঘরে বসেই চোদান।
আমি উপন্যাসটাও পড়িনি। সিনেমাটাও দেখিনি। তবে সিনেমাটাই দেখতে চেয়েছিলাম। এখন বুঝতেছি, শুধু বইটা পড়লেও চলবে।
তবু দেখতে পারেন, শেষটুক ছাড়া পুরাটাই ভালো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বইটাই পড়েন । সিনেমাটা আমিও দেখি নাই । পোস্ট এবং পোস্টের কমেন্ট দেখে মনে হচ্ছে খুব একটা কিছু মিস করছি না ।
সিনেমাটা খারাপ না, ভালোই টাইম পাস। বিশেষত প্রথমাংশটা তো যথেষ্ট ভালো ছিলো। কিন্তু শেষে কিছুতেই ধরতে পারতেছিলাম না, হঠাৎ মুক্তিযুদ্ধ কেনো? এখন বোঝা গেলো, সিনেমার সাথে "বানিজ্য"টা ও অর্পনা সেন ভালোই বুঝে!!!
সেটা বুঝতে গিয়ে সিনেমাটা দুর্বল হয়ে গেলো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই,
এখানে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই একটা প্রশ্ন করতে চাই - কিছুদিন আগে অন্য একটা লেখায় আমার মন্তব্যের জবাবে আপনি লিখেছিলেন - বাঙালদেশের মুক্তিযুদ্ধে ২৮ হাজার ভারতীয় সৈন্য মৃত্যুবরণ করেছে। আমি কিন্তু এই তথ্য টি পরে খুঁজে পাই নি।
মানছি, যে আমি উইকি লক্ষণ পণ্ডিত - বেশি খোজা খুজি আমার কম্ম নয় - আপনার কাছে কোনো রেডি রেফারেন্স হবে - অনলাইন ? আমি পড়তে চাই।
আর হ্যা - গয়নার বাক্স হতাশ করেছে - জাপানি বউ - দেখার পর যে উত্সাহ তা অপর্ণা সেন কে নিয়ে পেয়েছিলুম - তা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে - গল্পে গোজামিল দেওয়ার কথা অবশ্য আমি জানতুম না।
পুন: অতি-সূত্র গুলি দিতে পারা গেল না এখানে - খালি বলে (To complete this form, please complete the word verification below)
রেফারেন্স অবশ্যই দিতে পারবো। এখন অফিসে, একটু সময় দিন। এখানে তো দিবোই, আপনার ইমেইল ঠিকানা দিলে সেখানেও পাঠিয়ে দিবো। আমার ইমেইল amiডটnazrulএটজিমেইলডটকম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছবিটা দেখার আগ্রহ ছিল কিন্তু এখন আর দেখব না। গয়নার বাক্স খুব পছন্দের একটা বই বিশেষত বসন আর অমলেশ এর অংশ সেটার এই অবস্থা করলে এইটা ত মোটেই ভাল হইল না।
ইসরাত
ই-মেইল করেছি, আপনাকে।
ধন্যবাদ নজরুল ভাই, গয়নার বাক্স দেখার পর মেজাজটা খিঁচরে ছিল, আপনার লেখা পড়ে সেটা প্রশমিত হল। আমার মাথায় ঢুকেনি কেন মূল গল্পের অর্ধেকটা বদল করে সেখানে এতো বিচ্ছিরি ভাবে "মুক্তিযুদ্ধ" - কে উপস্থাপন করা হল! ইয়ার্কির একটা সীমা থাকা উচিত।
সিনেমাটি দেখেছি।জানতাম না যে এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উপরে।তেমন কিছুই নেই যুদ্ধের।আমার মনে হয় অপর্না সেন কেবল বানিজ্যিক দিক ভেবেই মুক্তিযুদ্ধ ঢুকিয়ে দিয়েছেন।যদি এটাকে মুক্তিযুদ্ধের ছবি বলতে চাই, আমার মনে হয় ব্যাপারটা অপ্রাসঙ্গীক হবে।তবে ভালো লেগেছে গয়্নার বাক্স..….…দৃপ্ত কন্ঠ
মুভিটা অনেক দেরিতে দেখলাম।
সোমলতার তোতলামি বেখাপ্পা মনে হয়েছে, অতি প্রখর মৌসুমীর পাশে কঙ্কনাকে মনে হয়েছে ম্লান, শ্রাবন্তী করেছেন অতি অভিনয়। প্রেম আর নীরব প্রেমিক ঢুকে ১ ঘন্টা ৫৫ মিনিটের দিকে গোটা সিনেমাটাকে থেঁতলে দিল। আর পোড়াবাড়ির অতি ক্ষুদ্র ক্যানভাসে অপ্রাসঙ্গিক মুক্তিযুদ্ধ টানাটা? সে নিয়ে মন্তব্য না করি আর।
চমৎকার লেগেছে গানগুলো। ক্যামেরার কাজ, ছোট্ট ছোট্ট কিছু সুতোয় গভীর কিছু দেখানোর জাল বোনা। বেলোয়ারি ঝাড়, পুরোনো বনেদী পেইন্টিং বা কষ্টিপাথরের মূর্তিগুলো, বর্মাটিকের পালঙ্ক একে একে হারিয়ে যাচ্ছে পাওনাদারের হাতে-- দেখানোর কৌশলটা পছন্দ হয়েছে। বণিকদাকে কোট করি-- 'অমানবিক সামাজিক এবং ধর্মীয় কাঠামোর শিকার হয়ে যৌবনের অমূল্য দিনগুলিকে হারানোর বেদনা যে কী গভীর', সে দৃশ্যায়ন ছিল চমৎকার!
চৈতালী আসার আগ পর্যন্ত আমার রেটিং ছিল ৪/৫।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন