আগের দিনের সবকিছু আমাকে একেবারে বিধ্বস্ত করে দিয়েছিলো। চেয়েছিলাম গভীর একটা ঘুম। ভোর, সকাল কিছুই দেখার কোনো খায়েশ ছিলো না। বলেছিলাম গাড়ি পোখরার পথে রওনা হওয়ার আগে আমাকে ডেকে তুলে নিলেই হবে।
কিন্তু কেন যেন রাতে ঘুমটা হলো না ঠিকমতো। এরশাদের সিদ্ধান্তের মতো আমি ঘুম আর নির্ঘুমের দুই নৌকায় পা দিয়ে রাত কাটিয়ে দিলাম। সাধারণত এরকম রাতের পরে মেজাজটা খিটখিটে হয়ে থাকে সারাদিন। সেই শঙ্কা নিয়ে বারান্দার দরজাটা খুললাম, আর তখন মনে হলো আমি আসলে এখনো ঘুমাচ্ছি, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছি নির্ঘাত। এতোটাই নিশ্চিত ছিলাম যে চিমটি কেটে প্রমাণ করারও প্রয়োজন বোধ করলাম না। আমোদমনোভাবাপন্ন হয়ে স্বপ্ন দেখতে লাগলাম।
পাশের বারান্দায় দেখি পলাশ উঁকি দিলো, একটু পরে তৃষিয়া, সায়কা, তানিম ভাই, রাহিন, জ্যোতি... ব্যাপারটা যে স্বপ্ন না তা বুঝলাম। শুরু হলো ছবি তোলার পালা।
সচলে এসব লেখা খুবই কঠিন কাজ। সচলের লোকজন আমার ধারনা মঙ্গল গ্রহের পাহাড় পর্বত নদী নালা বরফ ঝর্ণা এগুলোও দেখে ফেলেছে। ইউরোপ আমেরিকা উত্তর দক্ষিণ মেরু জয় করা লোকজনের সামনে নেপালের এক হোটেলের বারান্দা থেকে দেখা এইসব 'এক ফোঁটা শিশির' এর মতোই তুচ্ছ নিশ্চয়ই। এ যেন শচীন টেন্ডুলকারের কাছে গলির মোড়ে ফিফটি পেটানোর গল্প বলা।
কিন্তু ভাইসব, মনে রাখবেন... প্রতিবেশি দেশ বলে নেপালকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেন না। নাগরকোট কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচা গ্রাম। সাগর সমতল থেকে ৭০০০ ফুট উঁচুতে বসে আসমানে মেঘের সঙ্গে কথা কইতেছি ভাবতেই তো নিজেকে এভারেস্টজয়ির জুনিয়র ভার্সন মনে হইতেছিলো! বিশাল কিছুর সামনে গেলে নাকি সবারই নিজেকে খুব ক্ষুদ্র মনে হয়, আমার হলো উল্টা... মনে হলো আমি এক দারুণ সৌভাগ্যবান, মেঘের উপর রাত কাটিয়ে দিয়েছি।
মেঘের প্রতি আমার একটা বাড়তি আকর্ষণ আছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আকাশও সারাক্ষণ বদলে বদলে যায়, প্রতিমুহূর্তেই নতুন আকাশ দেখতে পারে মানুষ আজীবন। এই পুরনো হয়ে যাওয়া পৃথিবীতে প্রতিমুহূর্তেই নতুনত্বের স্বাদ দেয় সুন্দর খোলা আকাশ। আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘের ভেলা। সারাজীবন এই মেঘপুঞ্জিত আকাশ দেখেছি সমতল থেকে। বান্দরবানে গিয়ে কিছুটা মেঘের কাছাকাছি পৌঁছেছিলাম। আর এই প্রথম দেখছি মেঘের উপর থেকে। কতো উপরে তা বুঝতে পারলাম নিচের গ্রামের দিকে তাকিয়ে। অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাড়িঘর, জনগোষ্ঠি দেখা যাচ্ছে। সেটাও প্রায় ৭০০০ ফুট উপরেই! এখান থেকে ঢাকা শহর দেখতে কেমন লাগতো?
প্রথম দেখায় প্রেমের মতো নাগরকোটের প্রেমে পড়ে গেলাম আমি। নেপালের অন্য অন্য জায়গায় সবকিছু পর্যটকের দেখার জন্য সাজিয়ে রাখা, শপিং... নাগরকোটে কোনো বিশেষ দ্রষ্টব্য নাই, সমস্তটাই দ্রষ্টব্য।
মনে পড়ে গেলো জীবনানন্দ দাশের কবিতা... প্রিয় কবিতা...
অলস মাছির শব্দে ভরে থাকে সকালের বিষণ্ন সময়,
পৃথিবীরে মায়াবীর নদীর পারের দেশ বলে মনে হয়!
সকল পড়ন্ত রোদ চারি দিকে ছুটি পেয়ে জমিতেছে এইখানে এসে
গ্রীষ্মের সমুদ্র থেকে চোখের ঘুমের গান আসিতেছে ভেসে,
এখানে পালঙ্কে শুয়ে কাটিবে অনেক দিন –
জেগে থেকে ঘুমাবার সাধ ভালোবেসে।
প্ল্যান অনুযায়ী সকালেই পোখরার পথে রওনা হওয়ার কথা। দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি। একবার মনে হলো সবাইকে বলি "তোমরা যেখানে সাধ চলে যাও..." তারপর মনে হলো এভাবে হবে না, শুধু নাগরকোটে অলস সময় পাড়ি দেওয়ার জন্য আবার আসতে হবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিলাম অচিরেই আবার আসবো। এই প্যারাডাইস ইন হোটেলেই তিনদিন জেগে থেকে ঘুমাবার সাধ ভালোবেসে কাটিয়ে দেবো।
কদিন ধরেই খুব বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, রোদ নাই। নয়তো এখান থেকেই এভারেস্টের চুড়ায় সুন্দর সুর্যোদয় দেখা যেতো। আমি আফসোসহীন মানুষ, যেটুকু পেয়েছি তাতেই আমি মুগ্ধ। আমার মন সবসময়ই ভালো থাকে, তবু কখনো কখনো অসম্ভব ভালো হয়ে যায়। নাগরকোট আমাকে সেই চমৎকার সকালটা দিলো।
নাস্তা করলাম। তারপর দুই মাইক্রোবাস রওনা দিলো অধঃপতনের দিকে। উঁচু থেকে নিচে নামতে লাগলাম। পথে শত শত লোক ট্র্যাকিংয়ের জন্য দল বেঁধে নামছে। হায়, এরা জীবনের আরামটাই বুঝলো না
রাতে এই পথেই গিয়েছিলাম আমরা। তখন ছিলো অন্ধকার আর সবকিছুই ছিলো বন্ধ। আলোকিত সকালেও দেখলাম সব বন্ধই। সেদিন ছিলো বিজয়া দশমী। নেপালের সবকিছুই বন্ধ!
যাওয়ার পথে বখতপুর। প্রাচীন অনেক কিছু আছে এখানে। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু প্যাগোডাও নাকি এখানে। আছে দরবার হল। কিন্তু এখানে থামতে গেলে দেরি হয়ে যাবে বলে থামলাম না। সবকিছু কেন আমাকেই দেখতে হবে?
নাগরকোট থেকে আমরা কাঠমুন্ডুর উপর দিয়ে পোখরার পথে যাচ্ছি। বৃষ্টি বেশ ভালোই পড়ছে। নেপালের মানুষ দেখছি। পথে থামলাম এক দোকানে চা খেতে। সুন্দরী দোকানীর হাতে চা খেলাম। তাঁর অনুমতি নিয়ে একটা ছবিও তুললাম।
তারপর আবার যাত্রা। উঁচু জায়গা থেকে পাহাড় ঘুরে ঘুরে নামার বিষয়টা দারুণ লাগলো। পথে পড়লো খরস্রোতা নদী। আরামহীন লোকজন এখানে রাফটিং করে। কী দরকার বাবা এই পাথরের মধ্যে ঠোক্কর খেয়ে খেয়ে নদীতে ভাসার? আসিস আমাদের নদীগুলোতে, পাল তোলা নৌকার গলুইয়ে শুয়ে চাঁদ তারা দেখতে দেখতে মাঝির ভাটিয়ালি গান শুনতে কতো আরাম!
বর্ণনা দিয়ে বোঝানো কঠিন কাজ, তবে কাঠমুন্ডু থেকে পোখরা যাওয়ার পথটা সত্যিই সুন্দর। অধঃপতনও ভালো লাগে।
পথে একটা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের বুফে খাবারের দোকান আছে। কিন্তু সকালে ফ্রি নাস্তা পেয়ে এতোটাই সাঁটিয়েছি যে সেখানে থামলেও কেউ খাওয়ার নাম মুখে নিলো না পর্যন্ত। ড্রাইভার দু'জন খেয়ে নিলে আমরা আবার পথ চলতে শুরু করলাম। সন্ধ্যার আগে আগে পোখরার কিছুটা আগে এক 'আল্লাহর দান' টাইপের হোটেলে গাড়ি থামালাম চা খেতে। কিন্তু সেখানে নেপালী থাল পেয়ে সবার ক্ষুধা জেগে উঠলো কুম্ভকর্ণের মতো। সবাই দেদারছে খেলো। আমি একটু বেশিই খাই। তাই আলাদা থাল না নিয়ে সবার থালে ভাগ বসাতে লাগলাম।
সকাল থেকেই দেখছি দশমী উপলক্ষে নারী পুরুষ সকলে কপালে একদলা লাল রঙের ভাত আর নারীরা মাথায় দুর্বাঘাস লাগিয়ে ঘুরছেন। পরে জেনেছি কপালের বস্তুটা ভাত না অন্যকিছু। সেটা দেখতে খুব একটা আরাম না, কিন্তু খোঁপায় তারার ফুল থুক্কু দুব্বা ঘাস দেখতে ভালো লাগছিলো। খেতে খেতেই একজনকে সামনে পেয়ে ছবি তুললাম (তাঁর অনুমতি না নিয়েই)।
কিন্তু খেতে বসেই হঠাৎ খেয়াল হলো, আমাদের কাছে ডলার থাকলেও কোনো রুপি নেই! প্রমোদ'দা যে নয় হাজার রুপি দিয়েছিলেন কর্জ হিসেবে সব শেষ হয়ে গেছে। কাঠমুন্ডুতে সবকিছু বন্ধ বিধায় আমরা বদল করতে পারিনি! এখন বিল দেবো কি উপায়ে? শেষ পর্যন্ত ড্রাইভারের কাছ থেকে রুপি ধার করে খাওয়ার বিল দিলাম।
ধার কর্জ করেই তো নেপাল ট্যুর হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে।
তারপর আবার যাত্রা। পথের দু'ধারে শুধু উঁচু উঁচু পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে আছড়ে পড়ছে মেঘ। গাছের পাতায় পাতায় আটকে থাকছে মেঘ। আহা... কী অপূর্ব। সুন্দর প্রকৃতি ছাড়িয়ে আমরা ক্রমশ ব্যস্ত নগরীর দিকে যাচ্ছি। সামনে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে পোখরা। নেপালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান।
(আমাদের যাত্রাসঙ্গী সচল দুষ্ট বালিকার আজ জন্মদিন। আর নেপাল ট্যুরে যিনি নিজের ডিএসএলআর ধার দিয়েছিলেন ছবি তোলার জন্য, সেই রোয়েনা রাসনাত এর জন্মদিন ছিলো গতকাল। দু'জনকেই শুভ জন্মদিন)
মন্তব্য
গলির মোড়ের ফিফটি কে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবেন না। সেই ব্যাটিং করার সময় কত সিরিয়াস থাকতাম, আশেপাশের বারান্দা থেকে মুরুব্বিদের গালাগাল, সুন্দরী আপুদের হাহাহিহি।
সুন্দর ছবি দেখলেই আমার খালি ক্যালেন্ডার ক্যালেন্ডার লাগে আর বইয়ের মলাট দিতে মন চায়।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
আমি তো গলির মোড়েও ফিফটিবাজ ছিলাম না, খালি আউট হয়ে যেতাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তাইলেই বোঝেন গলিতে ব্যাট করা কত ডিফিকাল্ট। পিচে আনইভেন বাউন্স, বোলারদের আনইঊজুয়াল অ্যাকশন, গলাবাজিই যেখান আম্পায়ার কে প্রভাবিত করতে যথেষ্ট, সেখানে ব্যাটিং করা সহজ কাজ না। সেই সাথে মাপা শট খেলতে হয় যাতে জানালার কাঁচ না ভাঙ্গে।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
হা হা হা হা, ভালো বলছেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমরা নেপাল গিয়েসিলাম অনেক বসর আগে হানিমুনে । এইরকম পুজার সময় টাতেই। আপনার লেখা পরে মনে পরে গেল সেই সময়টা আবার সেই মেয়েদের মাথায় ঘাস কপালে লাল সিদুর। পোখরা তে খুব ভাল লাগতো লেকের পাশে কন রেস্তরাতে বসে চা খেতে আর আল্সেমি করতে :D। তিনদিন মুলত আলসেমি করেই কাটে।
পোখরার গল্প আগামী পর্বে...
নেপালের এবারের ট্যুরটা রেকি ট্যুর বলতে পারেন, পরের বার যাবো আলসেমি করতে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অহো, কী সুস্বাদ বর্ণনায়!! আর এত সুন্দর সুন্দর ছবি!! আম্মো যাব একদিন উখানে।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আম্মো যাবো আরেকদিন উখানে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খাওয়ার ছবিটাই টেনেছে বেশি আমাকে, উফ কি জীবন্ত ছবি, যেনো তাকিয়ে আছে আর বলছে এখনি আমাকে ছিড়ে খাও। ।
এতো লোভনীয় উপাদানের সাথে একটা রুটি দেওয়া কি মানবধিকার থুক্কু পেটাধিকার লঙ্গন নয়? একখান সুষ্ঠু স্বচ্ছ নিরপেক্ষ বিচার চাই।
মাসুদ সজীব
খাওয়াটা দারুণ। বাংলাদেশের মতোই। আমি যেরকম আলুভাজী পছন্দ করি ঠিক সেরকম, পোড়া পোড়া। আমি তো ইচ্ছেমতো খেয়েছি।
রুটি একটা এখানে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু যতো খুশি ততো নেওয়ার অধিকার তো আছেই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রথম ছবিটাতেই তো ফিফটি মেরে দিলেন। শেষেরটাও দারুন! ধাপে ধাপে পাহাড়টা গ্রাডিয়েন্টে মিলিয়ে যাচ্ছে অসীমে!
আর, থালির দিকে আবার তাকাবার সাহস পাচ্ছি না, দেখলেই হয়ত পাকস্থলি আধাবেলা হরতাল ডেকে বসবে।
সচলে মেঘের এসব ছবি দেখার জন্য একটা কবিতা লিখে রেখেছি
জীবনে একবার এরকম মেঘের উপরে যাবার খুব সাধ।
কোন হাওয়াই জাহাজে চেপে না, আমি চাই মাটির উপরে
ঘাসের ডগায় খালি পা রেখে দাঁড়াতে -
যেখানে আমার থেকে নিচুতে থাকবে মেঘ!
শুভেচ্ছা
ছবিতে আসলে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তার উপর আমি ছবি টবি তুলতে টুলতে পারি না। নেপাল আসলেই সুন্দর। ভালো লেগেছে অনেক। ঘুরে আসেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বড় হইলে আমিও নেপাল যামু।
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনার যে নেপালের অলিগলি সব মুখস্ত সেটা সবাই জানে। নেপালে আপনার তোলা ছবিগুলোর স্লাইড শো'টা এখনো চোখে লেগে আছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হানিমুনে যাবার সময় (আমি না, যারা হানিমুনের দিকে যায় তারা) ক্যামেরার বদলে আপনাকে বগলদাবা করে নিয়ে যেতে হবে। কী সুন্দর বর্ণনা, কী সুন্দর বর্ণনা!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইয়ে মানে হানিমুনের বর্ণনাও লিখে দিতে হবে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আপনার নেপাল ভ্রমন পড়তে দারুণ লাগছে। প্রতিটি পর্বই পড়ছি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পাঁচ তারা!
লেখা ছবি দুই-ই উপভোগ করলাম।
দরজা খুলে বেরিয়ে এসে মেঘের উপর থেকে নীচের পৃথিবী দেখা - আহা!
আপনার সাথে পুরাই একমত, বেড়াতে গিয়ে আলসেমী না করতে পারলে কিসের বেড়ানো কিসের কি!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
হ... এই কথাই লোকজনরে বুঝাইতে পারি না
পরের বার এজন্য বউ পোলাপান রেখে একা একা যাবো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অইখানে আমার একটা বিশাল সুবিধা - বেড়াইতে গিয়া আমরা পুরা পরিবারই আইলসাই আইলসা।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমি তো শুধু পরিবার না, বন্ধু বান্ধবসহ যাই... সবাই নিরলস
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দারুন!!! ছবি আর লেখা দুটাই । আপনার লেখা পড়ে আমার মনটাও কয়েকদিন থেকে নেপাল নেপাল করছে
ইসরাত
চলে যান নেপাল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কোন কিছুই এক ফোঁটা শিশিরের মত তুচ্ছ নয়। আর কিছু কিছু জিনিসের বর্ণনা আর ছবি হাজারবার দেখলেও ভালো লাগে। আর আপনার ভাষা তো ভাষা নয়, যেন বাণী! ঐ এরশাদের মত দুই নৌকায় পা দেয়ার উপমা থেকে শুরু করে স্বচ্ছ নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের বুফে হোটেল খুঁজে বের করা পর্যন্ত - সবই খুব উপাদেয় লাগে।
আমার খালি একটাই প্রশ্ন - আপনি প্রথম থেকে নিজেকে অলস বলে দাবী করে আসছেন, অথচ যে স্পীডে লেখা দিয়ে যাচ্ছেন তাতে করে তারেক অণুর পোস্টানোর স্পীড হুমকির সম্মুখীন! কাহিনি কী? (আমি কিন্তু আপনারা এই স্পীডে লেখা দেয়ার সমালোচনা করছি না, বরং স্বাগত জানাচ্ছি!)
____________________________
প্রথমেই ডরাইলাম
দ্বিতীয়ত, আমি আসলেই অলস... এইটা কিভাবে কিভাবে যেন লিখে যাচ্ছি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বালিকাদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নাগরকোট সবচেয়ে উচা গ্রাম মানে? এশিয়ার? দক্ষিণ এশিয়ার? খুইলা কন
লেখা
facebook
কই জানি পড়ছিলাম একবার নাগরকোট সবচেয়ে উঁচা গ্রাম। ৭০০০ ফিট উপরে বলে অবিশ্বাসও করি নাই। এর বেশি বিস্তারিত জানি না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দার্জিলিংয়ের গড় উচ্চতাই তো সাত হাজার ফুটের বেশী, টাইগার হিল ৭৪০০ ফুট। অবশ্য দার্জিলিংকে গ্রাম বলা যায় না, ওটা একটা শহর।
বেসক্যাম্প হিসাবের বাইরে রাখলে নেপালে সবচাইতে উঁচু গ্রামের নাম দোলপা (১৪০০০ফুট প্লাস)। আর সবচাইতে উঁচু শহর পেরুতে (নাম জানিনা)। তার ঠিক কাছাকাছি উঁচুতে কয়েকটা গ্রাম আছে হিমাচল প্রদেশের স্পিটিতে (Coordinates: 32.331667, 78.008889), সেখানে বাসে যাওয়া যায়!!
...........................
Every Picture Tells a Story
তাইলে ভুল তথ্য পড়ছিলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ঠিক ভুল পড়েন নাই। আদর করে অনেকে নাগরকোটকে তাই বলে থাকে (The village at the top of the world where inhabitants look down at the clouds)
...........................
Every Picture Tells a Story
নজু ভাইয়ের "নেপালে একপাল" তিন পর্ব পড়ার পরে তো খালি ---- " নেপাল যাইতে মন্চায় "
যান, না করছে কে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমার এক বন্ধু আছে, বেচারা কিঞ্চিৎ গোমড়ামুখো টাইপের। কিছুদিন আগে বৌ-বাচ্চা সহ নেপালে বেড়াতে গিয়েছিল, ফিরে এসেও স্বাভাবসুলভ গোমড়ামুখো। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস করলেও এমনভাবে নেপালের বর্ননা দিল, যেন ধানমনডি থেকে টেম্পুতে করে মালিবাগে গিয়েছিল কারও চেহলাম উপলক্ষে। এখন উপলব্ধি হচ্ছে, এ জগতের কিছুই ফেলনা নয়, সমাজে এ জাতীয় মানুষেরও দরকার আছে, তা না হলে নজরুল ইসলামের মতো মানুষদের মহাত্ম উপলব্ধি করা যেত না।
হা হা হা হা... উনারে বলেন ব্লগ লিখতে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তিনি যদি ব্লগ লেখেন, আর তার মান যদি নেপাল ভ্রমণের বর্ণনার মত হয়, তাহলে কিন্তু সবারই খবর আছে।
প্লেনে উঠলাম, নামলাম, ভিসা দিলো, তারপর বাসে চড়ে কাঠমুন্ডু... কিছু কেনাকাটা। মন্দির দেখলাম। তারপর গেলাম পোখরা। বৃষ্টির জন্য কিছু দেখতে পারি নাই। মাঝখানে নাগরকোট গেলাম। কিছু নাই দেখার, খালি পাহাড় আর মেঘ।
তারপর ফেরত আসলাম।
এই নেন লিখে ফেললাম একটা ভ্রমণ কাহিনী
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এইটা খুব একটা সুখপাঠ্য না হলেও পড়া যায়, অন্ততঃ এটা পড়ে কেউ আপনাকে মারতে আসবে না। কিন্তু বর্ননা যদি এমন হয়?-
আরে ব্যাটা ক না
(মুখ বিকৃত করে)বিমানে গেলাম, পৃথিবীর সব থাইকা ফাউল একটা এয়ারলাইন। এরপর চুপ।
(কিছুক্ষন পর) তারপর?
তারপর আর কি, এয়ারপোর্ট থাইকা সোজা হোটেল, খুব টায়ার্ড আছিলাম, খায়া দায়া ঘুম। এরপর চুপ।
(কিছুক্ষন অপেক্ষার পর) তারপর?
আরে ম্যানেজার হালার পুতে জন্মের খাইষ্টা। এরপর চুপ।
কোন ম্যানেজার?
হোটেলের ম্যানেজার। এরপর চুপ।
কেন? কি করছে?
হালায় মনে হয় ইন্ডিয়ান। এরপর চুপ।
হালায় করছেটা কি?
চকরা বকরা একটা শার্ট পড়ছে, মনে হয় এক মাস ধোয় নাই। এরপর চুপ।
আরে বাদ দে তো, কই কই গেলি?
আর হালার ঝুম বৃষ্টি। এরপর চুপ। ..........................................
হো হো হো
নীলচে পাহাড়ের ছবিগুলো দারুণ লাগলো।পাহাড়প্রেমী পর্যটকদের নেপাল যাওয়া একটা অবশ্যকর্তব্যের মধ্যে পড়ে। নিজের বাড়ির কাছের মাউন্ট এভারেস্ট ছেড়ে এসে এই সুইস মুল্লুকে খেলনা খেলনা সব চূড়া দেখে বেড়াচ্ছি, মন কি তাতে ভরে? একদিন আমি যাবই যাব নেপাল।
আপনারা কি গিয়েছিলেন কাছাকাছি?
ভুল জায়গায় চলে এসেছে
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
দারুণ
পরের পব্ব!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
বাহ্, দারুণ ইন্টারেস্টিং তো... মজা পাইলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার ভ্রমণবৃত্তান্ত স্বচ্ছ নিরপেক্ষ হইলেও আন্তর্জাতিক মানের হইতেছে না খানাপিনার আরো ছবির অভাবে। মাত্র একখান ছবি দিলেন? সকালে বুফে খানার ছবি কই। প্রত্যেক বেলার খানাপিনার ফটুক খিঁচা এবং ছাপানো বাধ্যতামূলক
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
খাওনের সময় শুধু খেতে হয়, ছবি তুলতে গেলে লস
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চলুক!
চলতেছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই সিরিজটা পুরা সিরাম হইতাছে।
সুন্দরীর হাতের চা এর টেস্ট কেমুন ছিল??
জব্বর
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কি দারুণ পড়তে... চোখ দুটো টানা টানা - মনে হয় আরো বেশি লিখতে (মাঝখানেরটুকু মিলাতে পারি নাই )
শুভ জন্মদিন দুজনকেই
লন আবার যাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দারুণ লাগলো। ছবিগুলা মারাত্মক।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বালিকাকে ভাল্লাগছে ....
অজ্ঞাতবাস
মুরুব্বীদের মুখের উপরে কথা নাই। আমি রাজী। বালিকার এজিন আনতে পাঠান...
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বালিকার কথা শুনেই ধূগো হাজির
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এমন চমৎকার ভ্রমন অভিজ্ঞতায় সবাই তো ঋদ্ধ হতে চায় ।
ছবিগুলো জীবন্ত আর সজীব । অনেক ভালো লাগলো ।
ধন্যবাদ লেখক ।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ফাষ্টকেলাস লাগতাছে, পড়তে আর দেখতে।
তাড়াতাড়ি শেষ যেন না হয় ভাইডি।
ভালো থাকবেন।
-------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
আর দুই কি তিন পর্ব, তারপর শেষ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নীলচে পাহাড়ের ছবিগুলো দারুণ লাগলো।
পাহাড়প্রেমী পর্যটকদের নেপাল যাওয়া একটা অবশ্যকর্তব্যের মধ্যে পড়ে। নিজের বাড়ির কাছের মাউন্ট এভারেস্ট ছেড়ে এসে এই সুইস মুল্লুকে খেলনা খেলনা সব চূড়া দেখে বেড়াচ্ছি, মন কি তাতে ভরে? একদিন আমি যাবই যাব নেপাল।
আপনারা কি গিয়েছিলেন কাছাকাছি?
নাহ্, কাছাকাছি তো যাইনি। আমার মতো অলস যাবে এভারেস্টের কাছাকাছি? তারচেয়ে এভারেস্ট ব্যাটাই আসুক না একটু গড়িয়ে গড়িয়ে আমার কাছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার মত আমারও মেঘ, পাহাড়ের প্রতি কিছু বাড়তি আকর্ষণ আছে। ছবিতে মেঘ, পাহাড় দেখে দারুণ লাগলো।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
১। পলাশ, তৃষিয়া, সায়কা, তানিম ভাই, রাহিন, জ্যোতি... এনাদের মধ্যে ঠিক কে বারান্দায় আসার পর আপনি নিশ্চিত হইলেন যে ওইটা স্বপ্ন ছিল না?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কে যে আমার স্বপ্নভঙ্গ!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজু ভাই,
নেপাল যাইবার মন চায়, তয় খরচাপাতি তো ম্যালা, ২ জনের জন্য রীতিমত লাখখানেক টাকা। বড় হইলে যামুনে।
শ্রাবণ
হ, খরচাপাতি তো কিছু আছেই। তবু ছোটবেলাতেই ঘুরে আসেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খালি আমরারে হিংসা করেন, এখন নিজেরা এত ঘুরতাছেন তার কী হবে। নেপালে যাবার ইচ্ছা মেলাদিনের, কিন্তু কিছুতেই হয়ে উঠতেছেনা ।
কোথায় আপনাদের ইউরোপ আম্রিকা আর কোথায় নেপাল...
যানগা নেপাল। হয়ে উঠবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই প্যারাডাইস ইন হোটেলেই তিনদিন জেগে থেকে ঘুমাবার সাধ ভালোবেসে কাটিয়ে দেবো-} অনেক বিলম্বে হলেও লেখাটা পড়ে শেষ করলাম, ইচ্ছে ছিল না থামতে, তবুও থামতে হলো ।।। অনেক ভাল লাগল নজরুল ভাই ।।।
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
ধন্যবাদ শাহীন ভাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চার নম্বর পর্ব কবে আসবে নজু ভাই?
জমছে!
নতুন মন্তব্য করুন