বৃষ্টি দেখেই বুঝেছি এই ব্যাটা দুর্ভাগ্যের মতো নাছোড়বান্দা, সারাক্ষণ সঙ্গে সঙ্গে ঘুরবে। এবং আকাশ পরিষ্কার না থাকলে যেহেতু সূর্য উঠবে না সেহেতু স্মরণকোটে গিয়ে সূর্যোদয় সূর্যাস্ত দেখা হবে না, মেঘলা আকাশ ঢেকে দিয়েছে পাহাড় পর্বত সব। তাই আসলে কিছুই দেখা হবে না। এই আধেক দেখা আর না দেখার চেয়ে রেস্টুরেন্টের বারান্দায় বসে সোনালী শিশির পান করাই ভালো। পরেরবারে একবারে পুরোটা দেখবো এই সিদ্ধান্ত যখন নিলাম, তখনই দেখি সবাই বাইরে যাওয়ার তাড়া দিচ্ছে। শহর ঘুরতে বের হবে! কিছুক্ষণ আগেই দাম্পত্য ঘিটিমিটি হয়ে গেছে একচোট, তাই আর রিস্ক নিলাম না। কী যাতনা বিয়ে, বুঝিবে সে কিয়ে, কভু আসি বিষে, দংশেনি যারে...
ঘেটুপুত্র থুক্কু গামছা মাথায় দিয়ে রাস্তায় নামলাম।
সূর্য চোখে দেখি নাই সারাদিন, কিন্তু ডুবে যে গেছে তা অন্ধকার দেখে টের পেলাম। পৃথিবীর সবচেয়ে বেসুরো কণ্ঠটির গর্বিত মালিক আমি, সেই কণ্ঠকে সম্বল করে গুনগুনিয়ে 'যেমন মেঘের আড়ে পাহাড় লুকায় দেখ না' গাইতে গাইতে রাস্তায় হাঁটছি। কিছুক্ষণ পরেই আবিষ্কার করলাম এটা আসলে স্বরচিত লালনগীতি হয়ে গেছে। সাঁইজি বলেছিলেন কেশের আড়ে পাহাড় লুকানোর কথা, আমি গাইছি মেঘের আড়ে! লালন বলে বিপদ আমার...
অবশ্য তারচেয়ে বড় একটা আবিষ্কারও হলো, হাঁটতে হাঁটতে কিছুদূর যেতেই দেখি সচল ওডিন, সস্ত্রীক ঘুরে বেড়াচ্ছে। হলো কিছুক্ষণ আড্ডা। দলেও বেশিরভাগই সচল লেখক, হোথায় গিয়ে পেলাম আরেক সচল। বেশ একটা সচলাড্ডা ব্যাপার স্যাপার।
ধর্মীয় উপসনা উপলক্ষ্যে বেশিরভাগ দোকানপাটই বন্ধ। এমনকি পাব’এ লাইভ মিউজিকের আসরও বন্ধ। কদিন আগেই সচল দুষ্ট বালিকা পোখরা ঘুরে গেছে, তাই আর আমাদের রেস্টুরেন্ট খুঁজে বেছে নেওয়ার প্রয়োজন হলো না। সেই দিলো এক রেস্টুরেন্টের সন্ধান। খাবার তো বেশ ভালোই, সবচেয়ে ভালো সামনের বারান্দাটা। বারান্দায় বসেই সারাদিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। আমি আসলে যেখানেই একটু বসার সুযোগ পাই, সেখানেই সারাদিন কাটিয়ে দেওয়ার সুযোগ খুঁজি অবশ্য । যাহোক, সেখানে কেউ খেলো আর কিছু খাবার প্যাকেট করে নিয়ে চললাম হোটেলে। সঙ্গী হলো স্কটল্যান্ড থেকে আগত জ্যাক ড্যানিয়েল সাহেব। তার সঙ্গে গল্প গুজব করে কখন যে রাত পার হয়ে গেলো টেরই পেলাম না।
পরদিন আবার যন্ত্রণা। সবাই ছুটলো ডেভিস ফলস না কী যেন একটা দেখবে বলে। আমি ভেবে পেলাম না উপর থেকে পানি পড়ছে সেটা এই বৃষ্টি বাদলা মাথায় নিয়ে টিকিট কেটে কেন দেখতে যেতে হবে? তারচেয়ে নাহয় ঐ রেস্টুরেন্টের বারান্দাতেই...
কিন্তু ঐ যে... কী যাতনা বিয়ে বুঝিবে সে কীয়ে? তানিম ভাই আর জ্যোতি বুদ্ধিমানের মতো রেস্টুরেন্টের বারান্দায় বসে গেলো সারাদিনের জন্য। আমি তাদের প্রতি তীব্র ঈর্ষা জ্ঞাপন করে চললাম জলপ্রপাত দেখতে। কিন্তু মাইক্রো থেকে নামতেই সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো কেনাকাটায়। যতো না কেনে, দেখে আর দামাদামি করে তারচেয়ে বেশি। আমি রাস্তা পার হয়ে এক রেস্টুরেন্টে বসে পড়লাম নেপাল আইস নিয়ে... দাম্পত্য রক্ষার রথ দেখাও হলো আবার কলা বেচাও হলো। আগে আছিলাম বোকা, অহন অইছি বুদ্ধিমান।
যাহোক, কেনাকাটায় একটু বিরতি দিয়ে বিশ রুপি টিকিট কেটে যখন ডেভিস ফলস দেখলাম তখন সত্যি সত্যিই বিশ রুপির জন্য খুব কষ্ট হলো। তারপরের গন্তব্য রাস্তার ওপারের কী এক গুহা। নাম গুপ্তেশ্বর গুহা। যদিও আমি সবসময়ই ভুল করে গুপ্তকেশর গুহা বলে ফেলছিলাম (আমার শিক্ষা এই জীবনে আর হবে না)। সেখানেও কেনাকাটার ব্যাপক সুবন্দোবস্ত আছে। যদিও গুপ্তস্যারের বই সেখানে কিনতে পাওয়া যায় না।
ডেভিস ফলসের অভিজ্ঞতা খারাপ, এখানে আবার একশ রুপি টিকিটের দাম। অতোটা লস করা ঠিক হবে কী না বুঝতে পারছিলাম না, বর্ষ দেখে এসে সার্টিফিকেট দিলো যে দেখা যায়। তার কথায় ভিত্তি করে টিকিট কেটে নেমে গেলাম গুপ্তকেশর... থুক্কু গুপ্তেশ্বর গুহায়। ফেওয়া লেকের পানিই গড়িয়ে ডেভিস ফলস দিয়ে পড়ছে এই গুহায়। একই বস্তু দু’বার টিকিট কেটে দেখতে হলো। ব্যাপারটা মন্দ না।
ফেওয়া লেকের জল কোথা দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে সেটা টিকিট কেটে দেখার চেয়ে আসলে বিনা পয়সায় লেকের পাশে চুপ করে সারাদিন বসে থাকাই সত্যিকার অর্থেই ভালো। লেকটা দারুণ পছন্দ হলো। এই লেকের পাশে বসে থাকার জন্য আমি টিকিট কাটতে রাজি আছি। চারদিকে পাহাড়, গাছপালা, মাঝখানে টলটলে জল। ইচ্ছে হলো ডুবিয়ে এক বেলা সাঁতার কাটি। কিন্তু আগেই ভেবে রেখেছি এবার নেপাল দেখবো না, শুধু খোঁজ করে যাবো, পরেরবার সব দেখবো। তাই ফেওয়া লেকের লোভ ছেড়ে ভদ্রলোকের মতো রেস্টুরেন্টের বারান্দায় তানিম ভাই, পলাশ আর জ্যোতির সঙ্গে বসে গেলাম। আহ্, পৃথিবীটা কেমন জলবৎ তরলং হয়ে গেলো। অন্যরা গেলো ফেওয়া লেক দেখতে। দেখুক। ফেওয়া লেকের চেয়ে স্বর্গ অবশ্যই উত্তম।
নিধি ঘুমাবে, তাঁকে নিয়ে হোটেলে ফিরলাম। কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে খেলেধুলে কাটালাম, এক পর্যায়ে ঘুম দিলো। এখন তাঁকে নিয়েই বা যাই কোথায় অথবা রেখেই যাই কোথায়? উপায় জুটলো। বর্ষর বাবা মার কাছে রেখে আমি গান শুনতে গেলাম। প্রথমে যখন শুনেছিলাম বর্ষ সপরিবারে যাচ্ছে, একটু না শুধু, ব্যাপক টেনশনে ছিলাম। মুরুব্বী আমি খুব ভয় পাই। কিন্তু যাওয়ার শুরুতে এয়ারপোর্টে বসেই বুঝে গিয়েছিলাম, উনারা একদমই মুরুব্বী না, বর্ষর চেয়ে বেশি বন্ধুত্ব হয়ে গেলো আঙ্কেলের সঙ্গেই। দারুণ আড্ডাবাজ। তাঁর কাছে কোনো কিছুই লুকোতে হয় না! বর্ষকে ঈর্ষা না করে উপায় থাকলো না।
গিয়ে বসলাম এক পাব’এ। লাইভ গান গাইবে স্থানীয় এক ব্যান্ড গ্রুপ। সেই আশায় বসলাম। গিটারিস্ট দুজনই দুর্ধর্ষ, ভালো লাগছিলো। গিটারের মুগ্ধতা কাটিয়ে দিতে ড্রামার ভদ্রলোক একাই যথেষ্ট ছিলেন বলে ভাবছিলাম, কিন্তু যখন ভোকাল ভদ্রতরুণটি কণ্ঠ ছেড়ে গাইতে শুরু করলো, সেটা এতোই যাচ্ছেতাই যে ড্রামিংটাও তখন মধুর মনে হতে লাগলো! হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া থেকে শুরু করে পৃথিবীর ইতিহাসের জনপ্রিয় গানগুলো একে একে গাইতে লাগলো। সবগুলোই প্রিয় গান। কিন্তু ভদ্রতরুণ বোধহয় গানস এন রোজেসের ভাবশিষ্য অথবা নিজেকে এক্সেল রোজ মনে করে। এক্সেল রোজ লিভিং অন আ জেট প্লেন গাইলে যে দশা হতো, কণ্ঠদাতা ভদ্রতরুণ সব গানই সেভাবে গাইলেন।
আমি অবশ্যই বলছি না গান বদহজম হয়েছে, তবু আমার গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা তীব্র হয়ে উঠলো। সেটা মোটামুটি এতোটাই অসহ্য হয়ে উঠলো যে পলাশকে বললাম আমাকে ধরে একটু হোটেলে পৌঁছে দিতে। পলাশই কী একটা খাওয়ালো, কিছুক্ষণ পরেই আমি সুস্থ হয়ে ড্যানিয়েলের সঙ্গে বসে গেলাম।
একটু পরে সবাই মিলে এত্তো বড় এক পিজা নিয়ে হাজির, সেখানে লেখা “নজু এন নুপু”। যেরাতে মোর দুয়ারগুলি ভেঙ্গেছিলো ঝড়ে (দীর্ঘশ্বাস), সেই বিয়ের ৭ বছর পূর্তি হয়ে গেলো! (কী যাতনা বিয়ে, বুঝিবে সে কিয়ে, কভু আসি বিষে, দংশেনি যারে...)
যাহোক, কেকের বদলে পিজা কাটাকাটি করে ফটো তুলে ফেসবুকে আপলোড দিয়ে আবার ড্যানিয়েল সাহেবের সঙ্গী হলাম।
পরদিন আমাদের কাঠমুণ্ডুতে যাওয়ার কথা। বৃষ্টির কারনে পোখরার প্রায় কিছুই ঘুরাঘুরি হলো না, দেখা হলো না। পরেরবার দেখবো বলে কাঠমুণ্ডু যাবার সময় যখন হলো, ভোরেও ছিলো মেঘলা আকাশ আর কিপটে বৃষ্টি। কিন্তু একটু সকাল হতেই ঝকঝকে রোদ!
একবার ভাবলাম আরেকটা দিন থেকে যাই পোখরায়। কিন্তু তাতে পুরো সিডিউল ক্যাচাপ হয়ে যাবে, তাই রোদ মাথায় নিয়ে ছুটে চললাম কাঠমুণ্ডুর দিকে। এরপর যতো কাণ্ড কাঠমুণ্ডুতে।
বাংলাদেশে পর্বত নেই, এভারেস্টের মতো শৃঙ্গ নেই। নেপাল বা পোখরা গিয়েও অতো উঁচু কিছু দেখার ভাগ্য হয়নি আমার। কিন্তু মানুষ হিসেবে অনেক উঁচু কারো দেখা আমি বাংলাদেশেই পেয়েছি। সেই তালিকার একটা নাম 'নজমুল আলবাব' আমাদের প্রিয় অপু। সচল অপু।
যাঁর বউ বাটা বল সাবান নামক বইটা আমি মোটামুটি স্বত্ব কিনে নেওয়ার মতো ব্যাপার হয়েছে, আমি অন্তত শ'খানেক মানুষকে উপহার দিয়েছি এই বই...
আর এক মিনিট পর তাঁর জন্মদিন! শুভ জন্মদিন অপু...
এই নাদান পোস্টটা আপনার জন্য
মন্তব্য
খাওয়ার ছবি দেখে সক্কাল সক্কাল খিদা লেগে গেল
খালি খাই খাই না করে একটা পোস্ট দেন জলদি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছবিগুলো কি তুলেছেন নজরুল ভাই? একদম ফাটিয়ে দিয়েছেন তো?
আপনের মতো একজন ফটোগ্রাফার যদি এই মন্তব্য করেন... তাইলে লজ্জা পাওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারি না আসলে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
গ্রেট!
থালি? না কি থালি ভর্তি খাবার?
শিলালিপির লেখকেরা তো দেখা যাচ্ছে সুশীল সমাজ ভুক্ত।
ফেওয়া লেকটা এরকম ফাঁকা কেন? মানে কোন বোট নাই, কেউ সাঁতার কাটছে না? ঠাণ্ডাই কি কারন, না কি অন্য ব্যাপার আছে?
নজু এন নুপু লেখা বস্তুটা কি আসলেই পিজা? আমার তো তন্দুরি রুটির মত লাগছে।
আসি বিষের যন্ত্রণা অনুভব করার জন্য নেপাল কি মোটামুটি উত্তম একটা জায়গা?
থালি ভর্তি খাবারটাকেই ওরা থালি বলে।
ফেওয়া লেক এতোটা ফাঁকা থাকে না, রংবেরঙের নৌকা থাকে। নৌকা ভাড়া করে ঘুরে আসা যায়। লেকের মধ্যে দ্বীপ বানিয়ে নাকি একটা মন্দিরও আছে।
বৃষ্টি ছিলো বলে হয়তো এরকম ফাঁকা।
এটা পিজাই...
আসি বিষ আসলে কিছু না, দৈনন্দিন জীবন যাপনের অংশ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বড় হলে একদিন আমি ও নেপাল যাবো
মাসুদ সজীব
বড় হন নাই এখনো?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনি এখনো বড় হননি, আমি হই ক্যামনে?
লেকের প্রথম ছবিটা সত্যি অসাধারন হয়েছে, সারাদিন বসে থাকা যাবে এমন স্থান। আর খাওয়া দাওয়ার ছবি কম দিবেন, ডায়ার্টের মাঝে আছি কিন্তু ।পরে তেতুল হুজুরের মত খাওয়া দেখলে মুখে রস আসলে আপনি কিন্তু দায়ী থাকবেন, রোজ হাশরের ময়দানে আপনাকেই জবাবদিহি করতে হবে এই কিন্তু বলে রাখলাম
মাসুদ সজীব
ডায়ার্টে আছেন!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চেষ্টায় আছি, ঘটনা হইল একমাস কঠিন ডায়ার্টে থাকি আর বাকী দুইমাস সেই ডায়ার্ট ওসুল করি। এভাবেই চলছে
ফেওয়া লেকের (বিশেষত) প্রথম ছবিটা দেখে পুরোই মাথা আউলে গেল।
কাঠমুণ্ডু কাহিনি তাড়াতাড়ি (মানে যত জলদি পারা যায়) শোনান।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এটা প্রথম পাতা থেকে সরে গেলেই শেষ পর্ব হাজির হবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ফেওয়া লেক-এর প্রথম ছবিটা দেখে যেতে না পারার কষ্টটা উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে! যাইহোক, আপনার লেখা নিয়ে বলার কিছু নাই, ছবি দেখে মনে হচ্ছে এইবার আপ্নে আমগো ভাত মারবেন নিশ্চিত!
- শ্রাবস্তী
আপনে মিয়া আগে পাসপোর্ট বানান...
আপনের ভাত আমি কিভাবে মারি বলেন? সব ছবিই তো আপনার কাছ থেকে ধার করে নেওয়া আপনার ক্যামেরায় তোলা!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চমৎকার বর্ণনা
আপনার সাথে একবার যাব - ড্যানিয়েল কেও বলে রাখতে হবে।
নেপাল যাওয়ার তাল তো আসলে আপনিই তুলছিলেন, তারপর ফাঁকি দিছেন, যান নাই...
পরেরবার আপনার সাথে যাবো, তৃতীয়বার যাবো মুস্তাফিজ ভাইয়ের সাথে। মুস্তাফিজ ভাই যদি আসতে পারেন, তাহলে একসাথেই যাওয়া যায়। দারুন মজা হবে।
ড্যানিয়েল সাহেব ওখানেই থাকেন, বলে রাখার কিছু নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ড্যানিয়েল ভাইয়ের আইডিয়াটা ভালো। ড্যানিয়েল ভাইয়ের সাথে একটু বেশি খায়খাতির হলে ঢাকায় বসেই নেপাল দেখা সম্ভব।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমি এখন খাইতেছি ডাবল ব্ল্যাক... আমি তো এখন জার্মািনিতে আছি বলে মনে হইতেছে!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হাহহাহাহা কথা মিছা না! নজু ভাই তার জানি দোস্ত, ইদানীং আমার সাথে ভাইয়ের সম্পর্ক ত্যাগ করছে - ড্যানিয়েলের প্রভাব আছে এতে।
আমি কই ত্যাগ করলাম? আপনিই তো আমারে ত্যাগ করছেন!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ডাকেন শ্রাবস্তী দত্ত কে
আমি আর কী ডাকবো? আপনিই তো কী কী সব করে বেড়াচ্ছেন... আমি খোঁজ পাই না মনে করছেন? হুশিয়ার হয়ে যান
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ঢাকায় বসে ড্যানিয়েল... অনেক এক্সপেন্সিভ... তারচেয়ে নেপাল ঘুরে আসা যায়
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
স্মরণকোট> সারাংকোট বা সারানকোট। কোট মানে দূর্গ, সারাংকোট মানে পূবের দূর্গ।
ডেভিস ফলস>Devi's Fall. অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ফেওয়া লেকের বাঁধের গেট খুলে গেলে পানির তোড়ে সাঁতার কাটতে থাকা এক সুইস রমনীকে ভাসিয়ে এই গর্তে এনে ফেলে (১৯৬২)। হারিয়ে যাওয়া সেই রমনীর নামে এটা। স্থানীয় নাম ‘পাতাল ছাঙ্গু’। গুপ্তেশ্বর গুহাটা সেসময়ই আবিষ্কার হয়।
ফেওয়া লেক (নেপালী ভাষায় ফেওয়া তাল, তাল মানে লেক) নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক। ছোট দুইটা নদী পাহাড়ের নীচ দিয়ে এসে এতে মিশেছে (হারপান আর ফিরকে খোলা, নেপালী ভাষায় খোলা মানে নদী)। লেকের মাঝে ছোট দ্বীপটার নাম তালবারাহি, মন্দিরটার নাম বারাহি মন্দির, পুরো কম্পাউন্ড অসম্ভব নোংরা, দূর্গন্ধ, কবুতরের বিষ্ঠা আর স্থানীয় দর্শনার্থিদের যত্রতত্র মলত্যাগে জঘন্য অবস্থা। তবে শান্ত সুন্দর দিনে ফেওয়া তালে এই মন্দিরের ছায়া কিংবা দূরে পুরোটা অন্নপূর্ণা রেঞ্জের ছায়া পানিতে অদ্ভুত দেখায়। আর বিকেল থেকে ড্যানিয়েল সাহেবকে নিয়ে লেকে ভেসে থাকলে কখন যে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমে আসবে টেরই পাবেননা। (এ সংক্রান্ত দুইটা ছবি দিলাম, বারাহি মন্দির আর লেকে সূর্যাস্ত)
পরেরবার যখন যাবেন ড্যানিয়েলের সাথে আমাকেও নিয়ে যাবেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
সবচেয়ে বেশি ইচ্ছা তো ছিলো আসলে আপনার সঙ্গে নেপাল যাওয়ার। নেপাল নিয়ে আপনার ডকুটা এখনো চোখে লেগে আছে!
সুন্দরবন অনেকেই যায়... কিন্তু এর মধ্যে ১ জনও কি সুন্দরবন দেখে কি না সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমার কপাল যে আমি আপনার সঙ্গে খুব সংক্ষিপ্ত একটা অধিবেশনে সুন্দরবন যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। যেটা আমি কোনোদিন ভুলবোনা।
আমার জীবনে শুধু একজনকেই অনুরোধ করেছিলাম তাঁর দু'টো ছবি প্রিন্ট করে ঘরের দেয়ালে। আচানকভাবে সেই দুটো ছবিই আপনার তোলা!
বস, আপনি আসলেও জানেন না আমার জীবনে আপনি আসলে কতোটা...
যে কোনো দরকারে আমি আপনাকে ফোনে না পাওয়াটা অসম্ভব মিস করি
তারচেয়ে বেশি মিস করি আপনি যখন আশির দশকের রাজনীতি নিয়ে লেখেন না!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
একটা ভুল করলাম, কোট মানে আসলে গ্রাম, দূর্গ না, সারাংকোট মানে পূবেরগাঁ।
...........................
Every Picture Tells a Story
- ২০০% একমত। বিশেষ করে 'জাতীয় ছাত্র লীগ' নিয়ে আপনার মতো যারা আছেন তাদের কেউই যদি না লেখেন তাহলে একসময় লোকে সংগ্রামের ঐ ইতিহাসটা সম্পর্কে তো জানতেই পারবে না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
একমত
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মুস্তাফিজ ভাই - ফেওয়া লেক খুব জনপ্রিয়, আমারো প্রিয় কিন্তু একটু দূরে বেগনাস লেক অসম্ভব প্রিয়...
পোখারার আরেকটা লেকও অদ্ভুত - রুপা তাল......... বেশি ভালোলাগছে এই দুইটা জনসমাগম আর দোকান পাট কম (প্রায় নাই) থাকায়।
গিয়েছিলেন নাকি? প্রশ্নটা করলাম না গিয়ে থাকলে নজু ভাই এর অফারটা যাতে ভেবে দেখেন আর গিয়ে থাক্লে যাতে একটা লেখা দেন
হে হে হে, আমার শেষ পোস্টে নেপাল নিয়ে একটা ভিডিয়ো আছে (আর সচলে লেখা শুরুই হয়েছিলো মনে হয় নেপাল নিয়ে)।
জানুয়ারী/ফেব্রুয়ারীতে যাবার ইচ্ছা আছে, দেখা যাক।
...........................
Every Picture Tells a Story
জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে গেলে আওয়াজ দিয়েন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মাথায় থাকলো। পরেরবার এই দুই লেকেও যাবো। লেকে পেহলে পেহলে পেয়ার
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পাসপোর্ট রেডি। নেপাল যাওয়ার ধান্দায় আছি।
আপনার পোস্টটা কাজে লাগবে।
ছবিগুলো হয়েছে একদম ক্লাসিক
ঘুরে আসেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই পর্বও চমৎকার লাগল। একটা খটকা - জ্যাক ড্যানিয়েল সাহেব ত আমাদের এলাকার লোক! জ্যাক ড্যানিয়েল-এর ঠাকুমা ছিলেন স্কচ। কিন্তু জ্যাক নিজে আমেরিকান বলেই জানি। আর তার ডিস্টিলারী, বলা চলে আমাদের পাশের গাঁয়ে। রসিক লোকে কয় সে ডিস্টিলারীর পানীয় বড়ই উমদা জিনিষ!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আম্মো তাই জান্তাম! জেডি আর জেবি বড় গাঙ্গের ঐপাড়ের জিনিস।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ব্যাপারটা হোন্ডার মতো, যে ব্র্যান্ডেরই হোক... নাম তার হোন্ডা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনারা ঠিক কী নিয়া কাইজ্যা করতাছেন?
আচ্ছা, খোরমা-খেজুরের ভালো ব্র্যান্ড কী? কোথায় পাবো তারে?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অপেক্ষা করেন, কয়দিন পরে বাংলাদেশেই পাইবেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
"কি যাতনা বিয়ে, বুঝিবে সে কিয়ে পুরাই পাঙ্খা,
"কিপটে বৃষ্টি দারুণ নামকরন।
এক কথায় অসাধারণ ছবি ও বর্ণনা। এখনও যাইনি আপনার এই সিরিজ যাবার একটা তাগিদ দিচ্ছে।
ভালো থাকবেন।
চলে যান, আগামি বছর আবার যাবো আমি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধুর নেপাল কোন বেড়াবার জায়গা হলো!! ফেউয়া লেকটেক এসব অলীক ধারমা!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হ... তেতুল টক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চমৎকার বর্ণনা । নেপাল যাওয়ার বাসনা জাগছে মনে।
ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পর্ব ফর্ব না করে একটানে লিখে ফেলুন না..... কাঠমান্ডুর কান্ড কবে পাব? ড্যানিয়েল সাহেব তো আমি যতদূর জানতাম আটলান্টিক এর ওপারের লোক, উনার ধরণ ধারণও এই কারণে স্কচ এর থেকে আলাদা।
আলসেমি লাগে। পরের পর্বেই শেষ হয়ে যাবে। এই পর্ব প্রথম পাতা থেকে সরলেই আশাকরি কাঠমান্ডু কান্ড দিয়ে দিবো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সচলাড্ডা তাইলে নেপালে হইল ।
নিধির ছবিটা দারুন কিউট। আর বৃষ্টির গুলি অসাধারণ।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ঠিক কর্ছি নেপাল যাবো। বিবাহ করা ভালুনা যখন বললেন তখন পরস্ত্রী নিয়েই যাবো।
পরের পর্ব দেন অক্ষণ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পরস্ত্রী একটা ভ্রান্ত ধারমা মাত্র
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনি মিয়া নেপাল গিয়ে খালি ড্যানিয়েল সাব আর সোনালী শিশির নিয়েই দিন পার করসেন দেখসি!!
____________________________
এতো ভালো ভালো কথা লিখলাম সেগুলা চোখে পড়লো না? এগুলো তো ঝাপসা দেখার কথা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার এই সিরিজটা অনেক কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে আমাকে। পোখরায় একটা রেস্টুরেন্ট এর নাম এখন ও মনে গেথেঁ আছে- ‘লাফিং বুদ্ধ’ পতি-পত্নী পরিচালিত সেই রেস্টুরেন্ট এ ’থুকপা’ খাওয়া হয়েছিল।
ডেভিড’স রেস্টুরেন্ট এর এই বারান্দায় আমিও সেপ্টেম্বরে বসেছিলাম, পতি দেবতার সাথে, আর ডেভি’স ফলসের সামনের এই দোকানদারের সাথে ব্যাপক দরদাম করে স্যুভেনির কিনেছিলাম। আমাদের সফরসঙ্গীদ্বয়ের কন্যা আড়াই বছরের লিনিয়া ফেওয়া লেকের নৌকা বিহারে বলে উঠল ‘কত পানি, কত পানি’।
ইশ! কত স্মৃতি !
দার্জিলিং এ গিয়েও এমনই আবহাওয়ার কবলে পড়েছিলাম দু বছর আগে। বৃষ্টি আর বৃষ্টি আর সেই সাথে কনকনে শীত। সে শীত জার্মানির শীতের মতো তীব্র না হলেও সারাক্ষণই লেপটে থাকে শরীরে আর আঘাত করে হাড়ে। হোটেল রুমে হীটার থাকলেও সে হীটার উষ্ণতার বদলে বেশি আলোই দেয়। হোটেলে, রেস্টুরেন্টে সবখানেই শীত!
কিন্তু মাইক্রো থেকে নামতেই সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো কেনাকাটায়। যতো না কেনে, দেখে আর দামাদামি করে তারচেয়ে বেশি।
এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সত্যি, অন্ততপক্ষে আমাদের দেশীয় ট্যুরিস্টদের বেলায়।
আপনার লেখা আর ছবি যেন রসমালাই! ভালো থাকবেন নজরুল ভাই।
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কি সুন্দর কি সুন্দর!!!!!!!!!!!!!! নিধির ছবিটা সবচেয়ে সুন্দর।
ইসরাত
নজরুল ভাই, ঘুরাঘুরি ছারা আপনার কি কুনো কাজ নাই?
জটিল।
পরের পর্ব জলদি দ্যান নজরুল ভাই।
শুভেচ্ছা জানবেন।
------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
নজরুল ভাই, দুঃখিত দেরিতে মন্তব্য করছি বলে। আসলে সময়মতো এই লেখাটা দেখিনি। ২ দিন পর রানা মেহের বল্ল, তারপর পড়লাম। সে না বল্লেও পড়তাম তবে আরও পরে হয়তোবা। কিন্তু মন্তব্য করা হয়নি। কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনি জানেন না হয়তো আমি নিজেও পাহাড়ের মতো বিশাল মনের কিছু মানুষকে পেয়েছি সচল এর সুবাদে। আপনি তাদের একজন। আমার জীবনে আটোসাটো হয়ে আছেন আপনি, নুপুর আর নিধিমা। ভালোবাসা জানবেন
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
নতুন মন্তব্য করুন