সম্প্রতি সবাই যে দাবী তুলছেন পাকিস্তানের সঙ্গে সবরকম কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার। জাতীয় দৈনিকেও লেখালেখি হচ্ছে, মিটিং সেমিনারে আলোচনা হচ্ছে। সেই দাবী আমরা করে আসছি আরো অনেক আগে থেকে। দুই বছর আগে এই দাবী তুলে ব্লগ লিখেছিলাম। কোনো কাজ হয় নাই।
দাবীর আওয়াজটা আবার গলা উঁচু করে তুলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তার আগেই কণ্ঠ চেপে ধরলো চলতি বিপিএল। বিপিএল ভর্তি পাকিস্তানী খেলোয়াড়। এমনকি বাংলাদেশ জাতীয় টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের জায়গায় তাঁর দলের অধিনায়ক করা হয়েছে একজন পাকিস্তানীকে! সেই আফ্রিদীকে, ঢাকার স্টেডিয়ামে যার নামে তরুণীরা প্লেকার্ড বহন করে 'ম্যারি মি আফ্রিদী' লিখে।
আমাদের পত্রিকার খেলার পাতাগুলো উচাটন থাকে পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের বন্দনায়, আমাদের আমজনতা খেলার সঙ্গে রাজনীতি না মেশানোর ছুঁতোয় পাকি ক্রিকেট দলকে সমর্থন করে, গালে পাকিস্তানী পতাকা এঁকে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যায়, বিপিএল-এ কোনো পাকিবিহীন টিম পাওয়া যায় না, আমাদের ক্রিকেট হিরোদের আদর্শ পাকি ক্রিকেটাররা... মোটকথা গোটা বাংলাদেশের সবচেয়ে অহংকার, গর্ব আর আনন্দ যে ক্রিকেট নিয়ে... যে ক্রিকেটে জয়ের আনন্দেই কেবল সারাদেশ একত্রে নেচে ওঠে, যে ক্রিকেটে পরাজয়ে গোটা জাতি কাঁদে... সেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরতে পরতে পাকিস্তান! আমরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে পাকিস্তান থেকে আফ্রিদি, আকমল, আমিরদের নিয়ে আসি কারন আমাদের দেশের দর্শকেরা তাদের 'ভালোবাসে'। আমাদের পত্রিকাওয়ালারা পাকি ক্রিকেটারদের কেচ্ছা বেশি ছাপে কারন আমাদের পাঠকদের কাছে এগুলোর ডিমান্ড বেশি!
আমরা খেলার আড়ালে পাকিস্তানকে আর্থিক সমৃদ্ধি দিচ্ছি। আমাদের ললনারা লন কিনে সুন্দরী হচ্ছে আর সেই টাকা যাচ্ছে পাকিস্তানে।
তাই বলে পাকিস্তানও মোটেই বেঈমান জাতি না, এসবের বিনিময়ে তারাও বাংলাদেশে টাকা পাঠাচ্ছে, সেই টাকায় সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের জঙ্গীরা! ছদ্মবেশে পাকিলোক পাঠিয়ে জঙ্গীবাদের ট্রেনিং দিচ্ছে!
পাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান বলেছে "বাংলাদেশে একটি গ্রুপ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের 'বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের' বিরুদ্ধে কাজ করছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মানুষ অতীতের তিক্ততা ভুলে এখন 'বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক' গড়ে তুলতে চায়।" বিবৃতির এই অংশটা গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান খুব ভালো করে জানে আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশে বাকী সবাই তাদের ভাই বেরাদর, যাদের সঙ্গে তাদের একটা 'বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক' আছে। তাই জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশকে অস্থির করে তুলতে হবে, যে কোনো মূল্যে শেখের বেটিকে সরাতে হবে। তাহলেই তাদের আর কেউ শত্রু নাই এদেশে, সবাই ভাই আর বন্ধু। কেউ আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে আসবে না। কিন্তু শেখের বেটি থাকলেই সমস্যা, রাজাকারগুলার বিচার শেষ হলে যদি পাকি খুনি অফিসারদের বিচার করতে চায়? অতএব সরাও শেখ হাসিনাকে!
গত ৪৪ বছরে পাকিস্তান 'অতীত ভুলে সামনে আগানোর' আর 'বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্কের' তত্ত্ব আমাদের গিলিয়েছে, আমরা গিলেছিও পরম স্বাদে। কিন্তু পাকিস্তান ৪৪ বছর ধরে তিলে তিলে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার আয়োজন করেছে।
এই পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক আগেই সবরকম সম্পর্ক ত্যাগ করা জরুরী ছিলো। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে এই সম্পর্ক যতদিন থাকবে ততোই বাংলাদেশের ক্ষতির আশংকা কেবল বাড়তেই থাকবে।
কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ত্যাগ করে পাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীকে সামনে আনতে হবে। পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা আদায়ে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে হবে। কাপড়ের ব্যবসায়ী, কূটনীতিক, পর্যটক ইত্যাদি ছদ্মবেশে বাংলাদেশে পাকিজঙ্গীদের আগমন ঠেকাতে হবে। পাকিস্তানী মশলা, জুস, লন থেকে শুরু করে সবরকম পণ্য আমদানী নিষিদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের ঘরোয়া লীগে পাকিস্তানী ক্রিকেটার আনা বন্ধ করতে হবে।
আর সবার আগে আমাদের অন্তর থেকে পাকিপ্রেম মুছতে হবে। সেজান জ্যুস খেয়ে বড় হওয়া প্রজন্মকে ৭১ এর প্রকৃত ইতিহাস জানতে দিতে হবে। আমাদের সবচেয়ে গর্ব আর অহংকারের গল্পটি নতুন প্রজন্মর মনে গেঁথে দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরো বেশি বেশি সমৃদ্ধ শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ শিশুকিশোর সংগঠন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। রাজনীতিটা সবখানেই মেশাতে হবে, কারন রাজনীতিটা আসলে সবখানেই বিরাজ করে।
নইলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর লাগবে না, ৭১ সালে যে পাকিস্তান বাংলাদেশে গণহত্যা আর গণধর্ষন করেছিলো সে কথা বলার মতো একজন বাঙালিও পাওয়া যাবে না।
মন্তব্য
পাকিপ্রেম আমাদের জাতীয় সফটওয়্যারে এমনভাবে ইন্টিগ্রেটেড হয়ে গেছে যে সফটওয়্যার পরিবর্তনের চেষ্টা মনে হয় অর্থহীন। এখন হার্ডওয়্যার বদলানোর চেষ্টা করা দরকার।
হ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পাকিপ্রেম এর পাশাপাশি ভারতপ্রেম এর বাড়াবাড়ি একটু কমানো উচিত না, কি বলেন ? ট্রানজিটের নামে কোন শুল্ক না দেয়া কিংবা টাকা ধার দেয়ার নামে নিজের দেশের মানহীন পণ্য কিনতে বাধ্য করা কিন্তু বন্ধুত্বের লক্ষণ না
@ঘুণপোকা । কথা হয় পাকিস্তান নিয়া । এইখানে ভারত আইলো কইত্থেকে । যেই পোস্টে ভারতের পন্য বর্জনের কথা হয় আপনি কি সেইখানে গিয়া পাকি পণ্য বর্জনের ডাক দেন ?? তাতো দেন না । আপনাদের পাকি-প্রেম এমন পর্যায়ে গেছে যে পাকিস্তানের সমালোচনা শুনলে আপনাদের খারাপ লাগা শুরু হয় । তা পাকিস্তানের তো ভালো কিছুই নাই যা দিয়া আপনাদের পাকি-প্রেম ডিফেন্ড করতে পারবেন । তখন বাধ্য হইয়া শুরু হয়ে আলোচনার মধ্যে ভারতরে টাইনা আনা ।
মামুনুর রশীদ
==========
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
ত্যানা একটু কম পেচান, কেমন? আপনাদের এই 'ভারত নিয়েও কিছু বলেন' মাতকার প্রত্যেকবার পাকিস্তান নিয়ে কিছু বললেই শুরু হয় কেন, বলেন তো? আর ট্র্যানজিট যদি একাত্তরের সমার্থক মনে করেন, তাহলে খালি এটাই বলতে পারিঃ Get well soon, bro!
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
ও আচ্ছা, আমি তো একবারও বললাম না, পাকিরা ভালো। লাইনটা ভালো করে আবার পড়েন, তারপর কমেন্ট করেন। ওদের প্রতি কোন কালে দরদ ছিলনা, আর ভবিষ্যতে থাকবো না। পাকিস্থানের সম্পর্ক ছেদ করার আর কেউ না থাকলে আমি এক পায়ে খাড়া। আমার দেখা মতে, প্রতিটা পাকি একেকটা বদের হাড্ডি।
কিন্তু ভাইজান, আপনার ভারত তো দুধে ধোয়া তুলসী পাতা কবে থেকে, বা ভারতের প্রেম বাদ দিতে বললে আপনার এতো লাগে কেন, সেইটা খোলাসা করেন দেখি আগে পাকিস্তান শোষণ করছে, যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীন হইছি, কিন্তু ভারত শোষণ করতেছে এই কথা বললে আপনি খালি, বাংলা এর মধ্যে ইংরেজি পরীক্ষা এর ধুয়া দেন কেন? আর নিজেও একটু বড় হোন।
পাকিস্তান খারাপ, কিন্ত ভারত কি ভাল্? ভারতকে বর্জন করতে হবে। আমাদের অন্য প্রতিবেশি বার্মাও খারাপ- বার্মাকেও বর্জন করুন। একইভাবে ইহুদি ইসরায়েল, তার দোসর আমেরিকাকে কীভাবে ভাল বলবেন? চীন-পন্থী, রাশিয়া-পন্থী, উত্তরপন্থী, দক্ষিণ-পন্থী, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-উরুগুয়ে, জার্মানী-নেদারল্যান্ডস-ফ্রান্স সবাই খারাপ। আসুন সবকটা দেশকে সমানভাবে ঘৃণা করে আমরা পাকিস্তানের উপর ঘৃণার চাপ কমাই- '৭১ এ ভাইয়েরা নাহয় একটু গোন্ডোগল করছিল আরকি।
-চিহুয়াহুয়া
শাহবাগ আন্দোলনের প্রয়োজন ছিল। আর এই আন্দোলন টা ধরে রাখা দরকার ছিল
মানতে পারলাম না ভাই। দলের চেয়ে দেশ বড়, কিন্তু সেই দেশকে যখন পাশের দেশ অঙ্গরাজ্যের মত ব্যবহার করে তখন আর বসে থাকা উচিত না।
ঘুণপোকা আপনার জন্য।
সহমত, সবচেয়ে মজার ব্যপার হইলো ইম্রাঙ্খাঁর সাকা/মুজার ফাঁসি নিয়ে সর্বশেষ বক্তব্য, প্রচুর ইম্রাঙ্খাঁ-ভক্ত ওই ঘটনার পর চিপায় পইড়া গেছে, কেউ কেউ আছে যারা সাকা/মুজা/কাদুয়ারেও কোলে নিতে পারেনা আবার ইম্রাংখাঁরেও ফেলতে পারেনা, তারা পড়ছে বেশী বিপদে।
তবে এই "লন" চিজ টা কি? একটু বিস্তারিত থাকলে ভালো হইত।
এই লন 'লন'
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এইটার আজকাল খুব চাহিদা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই লন লইয়াই ললনাদের এত লঙ্কাকাণ্ড তাতো জানতাম না, শুকরিয়া।
পৃথিবীর অন্য কোন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক আর বাণিজ্যিক সম্পর্ক কী হবে সেটা ভিন্ন ব্যাপার। পাকিস্তানকে আলাদা বিবেচনাতেই রাখতে হবে। কারন পাকিস্তান জাতিগতভাবে বাংলাদেশে গণহত্যা আর গণধর্ষন করছে। যে আপনের ভাইরে খুন করে আর বোনরে রেপ করে তারে যদি আপনি দুনিয়ার আর দশটা মানুষের মতোই ট্রিট করতে চান তাইলে আমার আর কোনো কথা নাই।
ভালো থাইকেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রতিটা বাক্যের সাথে সহমত। বর্তমান প্রজন্মের একটা অংশ তো রাজনৈতিক মতাদর্শের জায়গায় Hate politics লিখে পরম তৃপ্তি পায়। এই ব্যাপারে পরিবারের ভুমিকাই মুখ্য। তবে সময় পাল্টাচ্ছে। আজ থেকে ১০ বছর আগেও পাকিদের এত সমালোচনা কেউ করত না। বন্ধুত্বের মহান আদর্শ পালনে সবাই উদ্বুদ্ধ ছিল। এখন তরুণদের একটা বড় অংশ পাকিস্তানকে ঘৃণা করে। এই ঘৃণার পরিমাণ আরও বাড়বে। শত সমালোচনার পরেও তাই শাহবাগ আন্দোলনকে আমি মনেপ্রাণে শ্রদ্ধা করি। এমন একটা আন্দোলনের খুব প্রয়োজন ছিল।
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
হ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দর্শকদের কথা কি বলবেন আমাদের দেশের খেলোয়ারদের যা পাকিস্তান খেলোয়ারপ্রিতী দেখি খুব খারাপ লাগে। কাল দেখলাম ক্রিকেটের ইতিহাসের লম্বা ছাগলের সাথে নাসিরের, আজ মুস্তাফিজের ছবি। বিশ্বকাপের সময় দেখেছি মুশফিকের। মুস্তাফিজতো তার কোলেই চড়ে বসেছে। এমনভাবে ছবি শেয়ার করে যেন, তারা ইতিহাসের লম্বা ছাগলের সাথে ছবি তুলে সবাই বিরাট ভাগ্যবান।
এজন্য প্রয়োজন পারিবারিক আর সামাজিক সচেতনতা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে হবে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
"আমাদের অন্তর থেকে পাকিপ্রেম মুছতে হবে"।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই ব্যাপারে সচলায়তনে প্রকাশিত প্রাসঙ্গিক পোস্টের লিংকঃ
পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখাটা কি জরুরী? (প্রথম পর্ব)
http://www.sachalayatan.com/guest_writer/50966
পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখাটা কি জরুরী? (শেষ পর্ব)
http://www.sachalayatan.com/guest_writer/51002
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
রাজনীতিটা সবখানেই মেশাতে হবে, কারন রাজনীতিটা আসলে সবখানেই বিরাজ করে। এর উপরে আর কোন কথা নাই।
এই সমৃদ্ধ ইতরের দেশে সবাই রাজনীতি’র সাথে কোন না কোনভাবে জড়িত থাকতে না পারলে রাতে ঘুমাতে পারে না, কিন্তু ‘রাজনীতি করিনা’ মাফলার গলায় জড়িয়ে ঘুরে বেড়ায়।
হ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
যতই এই ধরনের আলোচনা/সমালোচনা হোক না কেন পাকিস্তান/ভারত প্রেমিদের সংখ্যা একটা পর্যায় পর্যন্ত বেড়তেই থাকবে, অন্তত ধর্মীয় চেতনা যত দিন আমাদের মধ্যে থাকবে তত দিন ত থাকবেই। দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ দেশের হিন্দুরা ভারতের প্রতি দূর্বল। এবং একইভাবে ধর্মীয়ভাবে অন্ধ মুসলমানরাই পাকিস্তানের বেশি প্রতি উদার।
নিরপেক্ষভাবে বিচার করলেও দেখা যাবে এ দেশের হিন্দুরা সংখ্যালঘু এবং সাম্প্রদায়ীক সহিংসতা/ নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে ভারতই তাদের শেষ আশ্রয়স্থল। সেদিক থেকে ভারতের প্রতি তাদের সহানুভূতি বা দূর্বলতা থাকাটাও স্বাভাবিক (যদিও সেটা একেবারেই অনুচিত), কিন্তু আমাদের পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর "ধর্মীয় মিল ছাড়া" কোন ব্যখ্যা নেই।
খুবই সস্তা এবং মূল লেখার প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য। আমার ইচ্ছা, আমি নিকারাগুয়া-প্রেমিক, এটার সাথে আমার ধর্মের কী সম্পর্ক? দেশের সব মুসলিম যদি এভাবেই চিন্তা করত- আমরা হয়ত এখনো ইসলামিক রিপাব্লিক অব পাকিস্তানের অংশই থেকে যেতাম। আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা ভারত-বার্মা-নেপালে চলে যেত। আসলে আপনি খেলার সাথে রাজনীতি মেশাবেন কি মেশাবেন না- এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্ভর করে আপনার পারিবারিক মূল্যবোধ ও কিছুটা নিজস্ব রুচির উপরও।
-চিহুয়াহুয়া
পাকিস্তান নিয়া কথা হইলেই চলে আসে বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারতপ্রীতি নিয়া। আমার দাদু (নানা) এবং তার ৩ ভাই ৭১ এর পরে ১৬ ডিসেম্বর এর পরে একটা দিন দেরী করে নাই বাংলাদেশ চলে আসছে। কিন্তু তাদেরই আরো দুই ভাই ইন্ডিয়াতে ভালোভাবেই আছেন। তাদের ছেলেমেয়েরা আইএএস সার্ভিসে পর্যন্ত চাকরী করে। আর বিনিময়ে ৯২/২০০১ এ আমার মামার বাড়িতে হয় হামলা।২০০১ নির্বাচনের আগে ভোটের আগে বাধা প্রদান, ভয় দেখানো।
৭১ এ পাকিস্তানীদের হাতে নিহত এবং নির্যাতিত হিন্দুদের মোট সংখ্যা বনাম মোট হিন্দু জনসংখ্যা আর পাকিস্তানীদের হাতে নিহত এবং নির্যাতিত মুসলমানদের মোট সংখ্যা বনাম মোট মুসলমান জনসংখ্যার পার্থক্য কি খুব বেশি সামান্য? জীবনে কোন হিন্দুকে তো দেখলাম না ৭১ এর নির্যাতনের জন্য আলাদা কোন সমাদর দাবী করতে।
এই সমস্ত কথা বলতে রুচি হয় না। তারপরও মাঝে মাঝে গা জ্বালা করে উঠে তাই বলে ফেলি। সবমিলায়া একটা কথাই বললাম "বালছাল"।
শুধু পাকিদের প্রসঙ্গ আসলেই আমাদের বাং-পাকিরা রাজনীতিবিমুখ হয়ে যায়। কেন খেলা আর রাজনীতির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, সেই ব্যাপারে পড়ুন এক পাকির ভাষ্য!
http://www.espncricinfo.com/blogs/content/story/950525.html
বাংপাকি লীগের খেলা দেখছি না, তবে ফেসবুকে আলুর সারাংশ পড়ে মনে হচ্ছে এইটা পাকি চুরাগুলোর রুটি রুজির ব্যবস্থা করার লীগ। পাকি আর দেশি খেলোয়াড়দের বেতন স্কেল দেখেই মেজাজ খারাপ হয়েছিল, যত টুর্নামেন্ট গড়াচ্ছে তত সেটা বাড়ছে। আমার ধারণা ছিল পাকিস্তানকে এখন প্রকাশ্যে সমর্থন দেওয়া বাংলাদেশে কমে এসেছিল, অন্তত কেউ দিলে সেটার প্রতিবাদ হয়। এই লীগ এবার বাংপাকিদের জন্য এক্কেবারে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে মনে হয়।
পাকিস্তানের সাথে কেন আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে না, এইটা এখনো বুঝে পাই না আমি। ক্ষতিপূরণ পাবো একাত্তরের সেই আশায়? সেইজন্য কোন কাজ হয়েছে? ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী পাকিসেনাকে যে পাকিস্তান নিয়ে গিয়েছিল নিজেরা বিচার করবে সেই চুক্তি করে, সেই চুক্তি কতটা পালিত হয়েছে?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
facebook
পাক উম্মাহর সাথে ভাতৃত্ববোধের এই অগ্রগতি দেখে গর্বে বুকের খাঁচা ফুলে ফেঁপে গ্যাস্ট্রিক হয়ে গেল!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এই একটা ক্ষেত্রে খেলার সাথে রাজনীতি মিলাইয়া মিশাইয়া একেবারে শরবত বানাইলেও কোন গুনাহ হইবে না। বরং সেইটা না করিলেই গুনা!
আফ্রিদির কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার হতে বসেছিলেন আমব্রিন!- ইত্তেফাক
আমব্রিনের প্রথম 'ক্রাশ' আফ্রিদি! -- কালের কন্ঠ
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=1050035818391503&set=a.168371523224608.40842.100001552834931&type=3
https://www.facebook.com/Ambrina.sarjeen/posts/1050539515007800
পাকিপ্রেম!
নতুন মন্তব্য করুন