সবুজ ছাতার নীচে পেতে রাখা আয়তকার টেবিলটি যখন আমাদের কাছে পেয়ে প্রাণ পেল, টাস্কার বীয়রের হলুদ চাদরের মাঝে কালো হাতির সাদা দাঁতের দীপ আলোর পূর্ণ প্রতিফলনে আমাদের দৃষ্টি কেড়ে নিতে চাইলো, ঠিক তক্ষুনি নাওকো জলপান শেষ করে কিশোরী চাপল্যে-উচ্ছলতায়-আনন্দে ক্যামেরাবাজীতে মেতে উঠলেন। জলের বোতল ও কাগজের রুমালের আড়াল এড়িয়ে আমরাও নড়ে চড়ে বসলাম। ছবি পর্বের ইতি ঘটতে না ঘটতেই সাদা দাঁতে হাসির ঝিলিক তুলে মেন্যু কার্ড এগিয়ে দিলেন ওয়েটার। সাথে দু’একটা সৌজন্য উচ্চারণ, ‘কেমন উপভোগ করছো তোমরা?’ একে একে সবার পসন্দের মেন্যু টুকে নিয়ে দ্রুত চলে গেলেন তিনি, বুঝি শুনতে পেয়েছেন আমাদের পেটের ভেতরে ছুঁচোর চিৎকার।
মুহূর্তের অবসরে আমরা কথার খেই হারিয়ে ফেলি। অল্প সময়ের জন্য আনমনা হয়ে যাই। সেলফোন বের করে দেখে নিই কোন মেসেজ এসেছে কিনা। কেমন আছে লতা? রোদেলা কি ছোট্ট মনের সবটুকু উষ্ণতা মিশিয়ে বাবার জন্য নিজহাতে শুভেচ্ছা কার্ড তৈরির মাঝেই ভালোবাসার অপূর্ণ বৃত্তগুলিকে ক্রেয়নের রঙয়ে রাঙিয়ে যাচ্ছে? কুড়ি দিনের ফেলে আসা শিশু রিলকের মুখ আমার চোখের কোণকে মুহূর্তের জন্য হাইড্রান্টের শেষ বিন্দু জলের ছোঁয়ায় ভিজিয়ে দিয়ে যায়। বিদায় নেবার সময় মায়ের উৎকণ্ঠিত মুখখানি মনে পড়ে। সবকিছু ঝেড়ে ফেলে বিষণ্ণ বেদুঈনের মতো আমি বাস্তবের ছিটকে যাওয়া উটের রশিটি প্রাণপণে লুফে নিই। সেলফোনে ছেনে ছুনে লাউড স্পীকারে গান বাজিয়ে দিয়ে পালিয়ে আসি কেনিয়ার এই ঊষর মরূপ্রান্তরে। হাইওয়ে রেস্তোরাঁর শুকনো রসহীন বাকলের গায়ে কিছু সুর আটকে যায়, কিছু সুর ইথারের বিমূর্ত ডানার ভাঁজে ভাঁজে ভোকাট্টা ঘুড়ির মতো পতনের নিজস্ব শব্দ খুঁজে পায়। তিনজন জাপানী ও একজন ফরাসী যুবক-যুবতীর চারজোড়া অনুসন্ধিৎসু চোখ, একজন ইসরাইলী প্রৌঢ়ার বিদগ্ধ জীবনবোধ আর চীনেবাদামের খোসার মতো শুষ্ক বাতাসের শূন্য বুক চিরে সেলফোন গেয়ে উঠে ‘পিদিম জ্বালা সাঁঝের বেলা, শান বাঁধানো ঘাটে’। একজন আলাভোলা ভেতো বাঙালীর পিপাসার্ত মন বড় বেশি উদাসী হয়।
প্রথমেই হাতির দেখা পেলাম। বীয়রের লোগোর হাতি নয় জলজ্যান্ত হাতির পাল। দূরের প্রান্তরে গদাই লস্করি চালে দলে বলে এগিয়ে যাচ্ছে। ‘হাতি, ঐ দেখো হাতির পাল’, যতটা বিস্মিত নই তারচেয়ে ঢের বেশি বিস্ময় ফেটে পড়ে আমার অভিব্যক্তিতে। ‘কই, কোথায়?’, আমার পাশ থেকে বলে উঠে কেটি ওরোরি। কণ্ঠে একরাশ সরল আকুতি ঝরে পড়ে। বুঝি, বার্ধক্য পীড়িত চোখের ধুসর পথযাত্রা তাঁকে বিচলিত করে তুলছে। কেন জানিনা, দেশ-জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়সের বৈষম্যকে হার্ডেল রেসের নিপুণ দৌড়বিদের মতো নিমেষেই অতিক্রম করি, বড় আপন মনে হয় এই প্রৌঢ়াকে।
হয়তো তার আমারই মতো একটি ছেলে আছে অথবা আছে যুবক সন্তানের বলিষ্ঠ হাত ধরে ভরসা পাবার অপূর্ণ স্বপ্ন সাধ। ভালোবাসার দুটি ভিন্নমুখী সান্দ্রস্রোত সহসাই অলৌকিক অভিস্রবণে সম্প্রীতির পথ খুঁজে পায়। গাড়ীর চলিষ্ণু চাকার তোড়ে উড়ে বেড়ানো রাশি রাশি রাঙা ধূলিকণা ক্ষয়িষ্ণু পথের বুকে ফিরে আসে। আমরা এগিয়ে যাই তেজী সূর্যের দুপুর গড়িয়ে বিকেলের ক্লান্ত কমলা রঙ পথে (চলবে...)।
আগে যা লিখেছিঃ
প্রথম পর্ব
গ্রেট রিফট ভ্যালিতে এসে আমরা একজনের পেছনে আরেকজন দাঁড়িয়ে পড়লাম। এক সারিতে, দুহাত প্রসারিত করে। দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া থেকে পূর্ব আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত এই প্রান্তর। ৬০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বুক মেলে দিয়ে শুয়ে আছে প্রসন্ন বদনে। এখানে আকাশ পারে মৃত্তিকার বাদামী আয়নায় মুখ দেখে নিতে। এখানে মিশেছে এসে কত সভ্যতার সান্দ্রস্রোত, যুগে যুগে। সিনাইয়ের সুর ভেসে আসে কোন সে সুদূর থেকে, দূরচারী উটের গ্রীবার মতো। সেই সুরে মিশে থাকে গোলানের যুদ্ধগন্ধী বাতাস। জর্ডান নদীর বাষ্পীভূত জলকণা পরিমিত বর্ষণে সিক্ত করে নিদাঘ সময়। লোহিত সাগরের বালুকণা হতে চায় ডাকাতিয়া মরুঝড়ের প্রতিরূপ। দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাওয়া আফ্রিকান প্লেটের আর্তনাদ ম্লান হয়ে আসে। নবজাতকের প্রথম চিৎকারের মতো সোমালি কিম্বা নাবিয়ান প্লেট মাতা-পৃথিবীকে জানান দেয় নিজেদের আগমন বার্তা।
আমদের দেখার ছিল অনেক, সময় ছিল কম। এমনই তো জীবনের অনিবার্য সূত্র। আমরা সবাই সেটা জানতাম। সদ্য কলেজের চৌহদ্দি পেরুনো নাওকো সেটি জানতেন। জানতেন কেটি ওরিরি, যে প্রৌঢ়ার মুখে বলিরেখা নিপুণ জালের মতো দিন দিন দখল পাকাপোক্ত করে চলেছে। আমরা তাই এক জায়গায় বেশীক্ষণ আটকে থাকতে চাই নি। জীবনের গতিময় প্রস্থানকে চলিষ্ণুতার বাঁধনে বাঁধতে চেয়েছিলাম সাততাড়াতাড়ি। তবু আমাদের বিরতি নিতে হয়েছিল। সেখানে নানা রঙের স্যুভেনিরের পসরা সাজিয়ে রাস্তার পাশের দোকানগুলো যেন সেজে গুঁজে আমাদের পথ চেয়ে বসে ছিল রূপবতী মাসাই রমণীর মতো। সেখানে নৈঃশব্দ্যের ঝাঁঝালো তীর রৌদ্রদগ্ধ দুপুরের বুক চিরে দিয়েছিল।
আমরা কি খুঁজে ফিরছিলাম সেখানে? সেখানে কুড়িয়ে পাওয়া ফসিলের গন্ধ শুঁকে শুঁকে বংশগতির নদীপ্রবাহ ধরে আমাদের কেউ হেঁটে যেতে বলেনি। আমরা কেউই ছিলাম না কিংবদন্তীসম প্রত্নতত্ত্ববিদ ডোনাল্ড জোহানসনের ছাত্র-ছাত্রী কিম্বা নিবিষ্ট অনুসারী। আমদের কারুরই অতীতের খণ্ড খণ্ড শব খুঁড়ে তুলবার দুর্দমনীয় অভীপ্সা ছিলোনা কখনো। ঝাঁঝালো যুদ্ধের দিনশেষে ইতালীয় যুদ্ধবন্দীদের মতো শ্রমের জোয়াল কাঁধে আমরা স্বপ্নে ফিরিনি ঘুরে। শাবল-গাইতির শব্দে রুগ্ন পঙক্তিমালার মতো রচিনি কোন ‘গ্রেট নর্থ রোড’। সেখানে পাহাড় ছিল, ছিলো বৃহৎ জলাধার। এইসব পাহাড় বহু সুউচ্চ স্বপ্নের জন্ম দিয়েছে। এইসব জলাধার বহু দীর্ঘ পথগামী নদীর উৎস হয়েছে। তবু আমাদের যাত্রাপথে ছিলো না মহত্তর কোন ঊর্ধ্বগামী অভিযাত্রার উচ্চাশা। ছিলো না সেইসব সুপ্রাচীন পবিত্র জলে ডুব দিয়ে শুদ্ধ হবার বাসনা। তবু আমরা সবাই দুরন্ত আগ্রহের বলশালী ঘোড়ায় সওয়ার হয়েছিলাম। ছুটে গিয়েছিলাম গ্রেট রিফট ভ্যালি পেরিয়ে মাসাই মারার পথে।
শেষাবধি একটি স্যুভেনির কিনতেই হলো। কিনবো না কিনবো না করেও। সোপষ্টোনের উপরে গ্রেট রিফট ভ্যালির খোদাইচিত্র। দেখে যেন মনে হয়, বহু শতাব্দী আগের কোন প্রস্তরখণ্ড। গায়ে নখের আঁচড়ে আঁচড়ে আঁকা ছবি। মাউন্ট সাসওয়ার প্রকৃত উচ্চতা ৭৭৩০ ফুট। খোলনলচে দেখে পর্বতশৃঙ্গ বলে ভ্রম হলেও আসলে এটি একটি শিল্ড ভলকানো। মাউন্ট লঙ্গনট আরেকটু উঁচু, ৯১০৮ ফুট। কেঁচো খুড়তে গিয়ে এখানেও সাপ পাওয়া গেল। সুপ্ত আগ্নেয়গিরি, শেষবার ফুঁসে উঠেছিল ১৮৬০ তে। মাসাই ভাষায় ‘ওলুনঙ্গট’ অর্থাৎ ম্যালা চড়াইয়ের পাহাড়। ঘোড়সওয়ারের জুতোর স্পারের মতো অনেকগুলো খাড়া চড়াই। স্যুভেনিরের দোকানি খুব গর্বভরে উচ্চারণ করেছিলো ‘লঙ্গনট’ স্যাটেলাইট ষ্টেশনটির কথা। আমরা আশ্বস্ত হয়েছিলাম পুরো সাফারি জুড়ে সাফারিকম কাজ করবে জেনে। গ্রেট রিফট ভ্যালি জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাতটি লেকের মতোই আমরা তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছি একটি হুড খোলা মাইক্রোবাসের ভেতর দিলখোলা মন নিয়ে।
জকি ট্যুরস এর জর্জ আমাদের ড্রাইভার কাম গাইড। কি হাসিখুশি আর আন্তরিক এই মানুষটি! স্থির হাতে স্টিয়ারিং ধরে অবলীলায় পেরিয়ে যাচ্ছিলেন একটির পর একটি বিপদজনক বাঁক। চেনা পথ, তাই গতির চ্যারিয়ট একটু বুঝি লাগামছাড়া। আমাদের মাঝে সবচেয়ে লম্বা ছেলেটি শঙ্কিত কণ্ঠে বলে উঠে, ‘পোলে, পোলে’। জর্জের শান্তস্বরের উত্তর পাই, ‘হাকুনা মাতাতা’। আমাদের বুঝতে আর বাকী থাকে না, প্রাগৈতিহাসিক প্রস্তরখণ্ডে বর্তমানের নখের আঁচড় ইতিমধ্যে আমাদের কিছু শিখিয়েছে। পাঠশালার নামতা পড়ার মতো করে সবাই সমস্বরে বলে উঠি, ‘আসান্তে’।
‘ইটস টাইম ফর লাঞ্চ’, মারা গোল্ডেন স্পুন রেস্টুরেন্টের নুড়ি পাতা আঙ্গিনায় গাড়ী থামিয়ে বীর দর্পে ঘোষণা করলো জর্জ। সুড় সুড় করে নেমে এলাম আমরা, পেটে তখন ছুঁচোর কেত্তন। তবু গাছের বাকলে আঁকা সুস্বাগত বাণী নজর এড়ালো না, ‘কাবিবু’।
মন্তব্য
অসাধারণ বর্ণনা রোমেল ভাই। যা বলার তা তো অন্য একটা পোষ্টের কমেন্টে বলে দিয়েছে। তবুও আবার বলে যাই যদি আগেরটা আপনার চোখ এড়িয়ে যায়-
প্রকৃতার্থেই অগ্রজ আপনি বয়সে-দেখাতে-ঘোরাতে,
বড় সাধ জাগে কোনও একদিন
একদলে মিলে হদিস বিহীন
হয়তো ছুটবো মরুতে কিংবা বাইবো দজলা-ফোরাতে।।
কি রোমেল ভাই, হবে?
======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এমন উদাত্ত আহবান
যেন সোনালি ডানার ভাঁজে ভাঁজে
বুনে দেয় আকাশের পরমায়ু সুন্দরের আয়োজনে
তারে নিতে চাই প্রাণের ভিতরে অপরূপ নক্সা আঁকা খাঁজে
সাধ আর সাধ্যের বিলাসে
দিয়ে যেতে চাই যথার্থ সম্মান
রেখে দিতে চাই সযতনে পরানের গহীনে
তোমার নবীন আহবান!
ভালো থেকো ভাই, নিরাপদে থেকো!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বস্ আপনার পুত্রের নাম কি "রিলকে"? যথার্থ নাম। কবিপুত্রের নামতো এমনই হওয়া উচিত। রোদেলা আর রিলকের জন্য শুভেচ্ছা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ষষ্ঠ পাণ্ডব দা,
বড় শখ করে আমার দেয়া ওই নামটি এখনো আমার গিন্নির কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। গত তেরটি বছর ধরে আমিও যেমন রয়ে গেছি গুড ফর নাথিং (জি এফ এন)। আপনার শুভেচ্ছা রোদেলা ও রিলকের মাথায় আর্শীবাদের পুস্পবৃষ্টি হয়ে নেমে আসায় আমি কৃতজ্ঞ। আপনার পরিবারের সদস্যদের জন্যও শুভপ্রীতি জানবেন!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
দারুণ। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আগের পর্বের লিঙ্ক দিলেই চলবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
তাসনীম ভাই,
কৃতজ্ঞতা!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আরে আরে করেছেন কি! এত ঘোরাঘুরি ভালো না, দোরের বাইরের শিশিরবিন্দুই দেখুন না বসে বসে!
সেই শিশির বিন্দুতে আমার মেয়ের ঘুমিয়ে পড়া মুখ কতই না মোহনীয়! ধন্যবাদ কৌস্তুভ ভাই!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
নতুন মন্তব্য করুন