দাপ্তরিক কাজে যশোরে এসেছিলাম। যশোর আমার পূর্ব পরিচিত। তরুণ জীবনের কিছু সোনালি দিন কাটিয়েছি এখানে। আমার সেই পরিচিত যশোর দুই দশকে ফেরে পাল্টে গেছে অনেক। বুড়ি ভৈরব আর নবগঙ্গার বুক শুকিয়ে গেছে, সবুজকে উপড়ে ফেলে অহংকারের মূর্তির মতো সারি বেঁধে দাঁড়িয়েছে আধুনিক ধাঁচের অট্টালিকার সারি। সেখানে মান আছে প্রাণ নেই। এমনিতেই এবারে কাজের ব্যস্ততা ছিল বেশি। দম ফেলবার ফুসরত মিলছিল না কিছুতেই। তার উপর কিছু নির্বোধ মানুষের অনাসৃষ্টি মগজে ছিটিয়ে দিয়েছিল মরিচের গুঁড়ো। হপ্তা বাদে একটু বুঝি ফুসরত মেলে। মনে মনে ঠিক করলাম অলিতে গলিতে ঘুরে ফিরে পুরনো সখ্যতাকে ঝালাই করে নেয়া যাক। ঝোলা কাঁধে বেরিয়েই পড়েছিলাম। এমন সময় মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। ফোর হুইলার নিয়ে বেরিয়েছিলেন একজন সহকর্মী। গন্তব্য সাগরদাঁড়ি।
“যাবেন নাকি?” ভাবলাম এমন প্রস্তাব পায়ে ঠেলা ঠিক হবে না। রাজী হয়ে গেলাম। আহা, মধুসূদনের সাগরদাঁড়ি। একুশ বছর আগে সেখানে গিয়েছিলাম একবার, সেই ১৯৯০ সালে। বাংলা কবিতার বিবর্তনের ধারায় নবযুগ সংযোজন করেছিলেন মধুসূদন। একাই বাংলা সাহিত্যকে এগিয়ে দিয়েছিলেন পাঁচশো বছর। সেই কবির স্মৃতিমাখা বাতাসের মাঝে গিয়ে দাঁড়াবো আমি, ভাবতেই শিহরিত হচ্ছিলাম। সাধ হচ্ছিল, আমি যদি অফুরান নীরবতা খুঁজে নিয়ে কপোতাক্ষের কোল ঘেঁষে এক একটি হাওয়ার রাত কাটাতে পারতাম।
আমরা তো পেছন ফিরে তাকালে সেইসব দিনের খোঁজ পাই, যখন বাংলা সাহিত্যে প্রকৃত অর্থে কোন মহাকাব্য ছিল না। মধুসূদন মহাকাব্য লিখলেন। রামায়ণের আর্যগাথার ভেতর থেকে নিংড়ে আনলেন অনার্য বেদনার সঙ্গীত। সেকালে বাংলা কবিতা লেখা হতো সুর করে গীতের ধরনে পড়বার জন্য। সুরের ঝংকার ছাড়িয়ে নিলেন তিনি। কবিতা হয়ে উঠল আধুনিক। পয়ারের এলানো বহতা এসে থেমে দাঁড়াত চরণের শেষে। প্রথম চরণে এক দাঁড়ি, দ্বিতীয় চরণে দীর্ঘ বিরতিসূচক দুই দাঁড়ি। মানলেন না তিনি। সৃষ্টি করলেন অমিত্রাক্ষর ছন্দ। রচিত হলো বাংলাভাষার প্রথম ট্রাজেডি। প্রহসন এলো। বাংলা ভাষার মেজাজের সাথে সুন্দর মিলিয়ে নেবে, বুঝতে পেরে সুদূর ইতালি থেকে নিয়ে এলেন সনেট। অখণ্ড ভাব প্রকাশের অমিত শক্তি। আমাদের চেতনায় সঞ্চারিত হলো আধুনিকতা। সবমিলিয়ে মধুসূদন তুলনাহীন, আর সেখানেই যাচ্ছি আমি।
চাচড়ার ভেঙে পড়া রাজবাড়ি আর হালে সংস্কার করা মস্ত মন্দিরটা একনজর দেখতে না দেখতেই হুশ করে পেরিয়ে গেল গতির গাড়ি। আমরা চুকনগরের রাস্তায় উঠে পড়লাম। বেশ ভালো রাস্তা। এখান থেকে সাগরদাঁড়ি পৌঁছুতে সময় নেবে ঘন্টাখানেক। রাস্তার দুপাশে অসংখ্য মেহগনির সারি। গায়ে গা লাগিয়ে সবুজের দেয়াল তুলেছে। পত্র-পল্লবে বিকশিত হয়ে চোখ জুরিয়ে দিচ্ছে। তার ভেতর দিয়ে দেখা যাচ্ছে বিস্তীর্ণ প্রান্তর। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য খেজুর গাছ। আলু থালু বেহুলার মতো তাঁদের মাথাভর্তি এলো চুল। ইরির আবাদ উঠেছে। নাড়ার মাঝে মাঝে চিকন সবুজ ঘাসে ক্ষুন্নিবৃত্তি করছে ইতস্তত: চড়ে বেড়ানো কিছু গরুছাগল। আর দিকে পাটক্ষেত। কালচে সবুজ পাতায় ছেয়ে যাওয়া হাঁটু-সমান চারাগুলি ড্রিলের স্কোয়াডের ধরণে সারিবদ্ধ দাঁড়ানো।
হঠাৎ বাতাস ছুটলো। দমকা হাওয়া এসে ধুলো উড়িয়ে দিলো। আর কালো হয়ে এলো আকাশের কোণ। বাতাসের বেগ বেড়েই চললো। কিসের আকুতিতে মাথাভর্তি এলো চুল প্রবলবেগে দুলিয়ে খেজুর গাছগুলো নেচে উঠলো ছিন্ন খঞ্জনার মতো ইন্দ্রের সভায়। পাটগাছগুলো একসারি ধনুকের মতো বেঁকে গিয়ে ছিলা টান টান করে দাঁড়িয়ে থাকলো। প্রথমটায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ঝাঁপটা গায়ে লাগায় মন্দ লাগছিল না। এর মধ্যদিয়ে আমরা যখন দমদম পীরের ডিবি পেরিয়ে গেছি, বৃষ্টি পড়তে লাগলো বড় বড় ফোঁটায়। বাতাসের বেগ গেল বেড়ে। অগত্যা গাড়ী থামাতেই হলো। মিনিট পনের যেতে না যেতেই বৃষ্টি বিদেয় হলো। সেইসাথে কমে এলো বাতাসের তোড়। আমরা আবার রওয়ানা দিলাম।
তিরিশ মিনিটের মাথায় গাড়ী এসে গেল মনিরামপুর বাজারে। আমার মনে পড়ে গেল বাল্যবন্ধু হরিচাঁদ হালদারের কথা। সে কথা না হয় থাক। আমরা বরং কালকে অতিক্রম করতে করতে এগিয়ে যাবার মূর্খ প্রচেষ্টায় সামিল হই। এরপর কেশবপুর। হাইওয়ের পাশেই মধুসূদন তোরণ। গাড়ীতে বসেই আমার ও আমার ক্যামেরার সাধারণ চোখে ছবি তুলে রাখলাম। এই দেখুন সেই ছবি।
সাগরদাঁড়ি পৌঁছে বাড়ীটার চারদিকের গ্রিলের সীমানা ঘুরে গেটে এসে দাঁড়াল আমাদের জীপ। এই দেখুন প্রবেশ পথের সাইনবোর্ডগুলো।
বাঁধানো ঘাটের শান্ত পুকুরের স্থির হয়ে থাকা জল আর অনেক গাছের সবুজে ঢেকে থাকা আকাশের পটভূমি মেলে ধরে আমাদের স্বাগত জানালো মধু পল্লী। ত্যাজ্য হয়েছিলেন যিনি ধর্মান্তরের কারণে, বিনে প্রচেষ্টায় আজ তার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সময়ের আঁচড়ে।
কোলকাতার ডাকসাইটে আইনজীবী ছিলেন মধুসূদনের বাবা, সামনেরই দেখা যাচ্ছে তার কাচারি ঘর। এখন সেখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত কাষ্টোডিয়ানের অফিস। পেছনে বসতবাটির বাহির মহল।
কাচারি ও বসতবাটির মাঝে দেয়াল তুলে দিয়ে বসতবাটির অন্দরমহলকে পৃথক করে রাখা হয়েছে। দেয়ালের মাঝ বরাবর তোরণ। তোরণের ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে বসতবাটির প্রবর্ধিত অংশ। দেয়ালের পেছনের দিকটায় বাঁয়ে কাচারি ঘরের মতো আরো দুটো দালান আছে। সেগুলো কি কাজে ব্যবহৃত হতো জানা গেল না। এখন অবশ্য সেখানে একটি পাঠাগার আছে। পুস্তকও দেখা গেল কিছু, মাইকেলের লেখা কোন গ্রন্থ খুঁজে পেলাম না। না স্বহস্তে লিখিত, না ছাপার অক্ষরে।
বসতবাটির সামনে মধুসূদনের আবক্ষ মূর্তি। নিচে তথ্য ফলকের শুভ্র শিলালিপি।
রিসেপশনের দেয়ালের একদিকে কাঠের বোর্ডে তৈরি কবির বংশলতিকা, অন্যদিকে কবির কীর্তি পরিচিতি। পাশে জনৈক সৈয়দ আলী হাসান লিখিত একটি পোষ্টার। সেখানে লেখা, মোট বারোটি ভাষা জানতেন মধুসূদন। বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, উর্দু, তামিল, তেলেগু, ল্যাটিন, গ্রীক, হিব্রু, ফরাসি, জর্মান, ইতালীয়।
বসতবাটির ভেতরের দিকটায় আস্তে করে পা রাখলাম। বাঁ দিকে ফিরে তাকাতেই নজরে এলো জোড়ায় জোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে সুউচ্চ থামগুলি, বারোটি, পুরনো গোথিক আদলে গড়ে তোলা। দুপাশে গোলাপ বাগান।
সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলাম। সেখানে এক সুপরিসর উপাসনালয়। দত্ত পরিবারের পুজো-অর্চনার কাজে ব্যবহৃত হতো একসময়। এখনো এখানে পুজো হয় পুজোর মৌসুমে। উঁহু, ঠিক বলিনি, সবসময়ই হচ্ছে। দেয়ালে সাঁটা ভক্তদের নৈবেদ্যের চিহ্নগুলি দেখে অন্তত: আমার তো তাই মনে হলো।
বসতবাটির পুরোটা জুড়ে আলো-রোদ্দুরের মনকাড়া খেলা। দরজা-জানালা-খিড়কি-ঘুলঘুলিগুলো প্রস্তরীভূত প্রহরীর মতো মুখ ব্যাদান করে বাতাসকে আটকে দিচ্ছে না, আবার যেদিক খুশী চলে যেতেও দিচ্ছে। রোদ্দুর দুরন্ত চড়ুইয়ের মতো খেলা করছে ঘুলঘুলিতে। এখানে এখন সংগ্রহশালা হয়েছে। সংগ্রহশালা আছে সংগ্রহ নেই তেমন কিছু। মধুর স্মৃতি বলতে মধু ব্যবহৃত কিছু খাট-পালঙ্ক। থাকবেই বা কি করে? এই ধামে তিনি তো কাটিয়েছিলেন শুধুই শৈশব আর কৈশোর। বাকি সময়টার কিছুটা কেটেছে মাদ্রাজে, কিছুটা ভার্সাইয়ে। সংগ্রহশালায় ছবি তোলা নিষেধ। ফেজ টুপি রাখার পাত্র দেখলাম একটা, একটা গ্রামোফোন, কিছু পাথরের তৈজস, খাট-পালঙ্ক-কাঠের টেবিল, দেরাজ লাগানো আলনা, লোহার সিন্দুক-মাটি খুঁড়ে পাওয়া লোহার তৈরি জংধরা বিশাল তালা কাঁচের কিউবিকলে ঢেকে রাখা হয়েছে। সব পিছনের ঘরটিতে মধুসূদনের বাংলা ও ইংরেজি হাতের লেখার নমুনা, মূল নয়, বিভিন্ন পুস্তক থেকে ফটোকপি করে রাখা। মূল হাতের লেখা দেখবার জন্যে মনটা আঁকুপাঁকু করছিল। খুপরির দরজা দিয়ে উঁকি দেয়া পায়রার মুখে ফুটে থাকা ভোরের আলো দেখাতে পাবার সুখের মতো একটা প্রিয় বোধ মনের ভেতর গ্রীবা-সঞ্চালন করছিল এদিক সেদিক। অনেক প্রশ্ন করেও মূল হাতের লেখার কোন সন্ধান পেলাম না, হস্তলিখিত কোন পাণ্ডুলিপিও দেখতে পেলাম না। সেইসাথে একটা ভাবনা মাথায় হুশ করে ঢুকে পড়লো। আচ্ছা, এই শতাব্দীতে কি-বোর্ড গুঁতিয়ে গুঁতিয়ে যেসব সাহিত্য লেখা হল, তার তো কোন হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপি থাকছে না। তবে কর্মের কোন কিছু কিভাবে শোভা পাবে ভবিষ্যতের সংগ্রহশালাগুলোতে?
দেয়ালে কোলকাতার রেড রোডে মধুসূদনের আবক্ষ ব্রোঞ্জ মূর্তির ছবি, কোলকাতা থেকে মাদ্রাজে পালিয়ে গিয়ে তিনি যে গির্জায় আশ্রয় নেন তার ছবি, মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটির পুরাতন গৃহ, মধুসূদন রেবেকার বিবাহ সনদ, আর কিছু পোট্রেট। সবই ফটোকপি। কেন যে ছবি তোলা বারণ, ঠিক বুঝলাম না।
একটি পোস্টারের সামনে এসে চোখ আটকে গেল। ঢাকায় দেয়া বক্তৃতার অংশ বাঁধাই করে রাখা হয়েছে। হয়তো কোন বই থেকে ফটোকপি করা। সেখানে লেখা,
আমার সম্বন্ধে আপনাদের আর যে কোন ভ্রমই হউক, আমি সাহেব হইয়াছি এই ভ্রমটি হওয়া ভারি অন্যায়। আমার সাহেব হইবার পথ বিধাতা রোধ করিয়া রাখিয়াছেন। আমি আমার বসিবার ও শয়ন করিবার ঘরে এক এক খানি আর্শি রাখিয়া দিয়াছি এবং আমার মনে সাহেব হইবার ইচ্ছা বলবত হয় অমনি আর্শিতে মুখ দেখি। আরো, আমি সুদ্ধ বাঙ্গালি নহি, আমি বাঙ্গাল, আমার বাটি যশোহর।
প্রসূতি-ঘরের সামনেই সবুজ ঘাসের চত্বর। এক পশলা সবুজাভ শিশির উড়ে এসে যেন মন ভিজিয়ে দিল। এখানটায় অন্দরমহলের বর্ধিত অংশে দুটো কামরা ছিল। আন্দাজ করতে পারি এই দুটি রুমেই কেটেছে শিশু মধুসূদনের মায়ের কোলে শুয়ে থাকবার, হামাগুড়ি দেবার আর এক পা দু’পা করে চলতে শেখার দিনগুলি। তাই বুঝি ঘাসের গায়ে এখনো লেগে আছে এতটা সবুজ।
আর এই হলো প্রসূতি-স্থান, এই তুলসী-তলায়। এই ঘাস, এই তুলসী-তলায় আস্তে করে পা রাখি। ধীরে, অতি ধীরে, নরম নগ্নপদ এসে দাঁড়াই তোমার পাশে। সাম্প্রতিক জীবন-শৈত্যের বিভ্রান্ত অস্থিরতায় আমরা যদি তোমাকে বিস্মৃত হই, আমাদের অর্বাচীন উপেক্ষায় তুমি ব্যথা পেও না কবি! মহৎ পদবাচ্য অতীত-শিল্পকে বর্তমানের নির্দয় রেঁদা চিরকাল বিস্মরণের দিকেই ঠেলেছে। কালের রেঁদার টানে সর্বশিল্প করে থর থর, তুমি কি কালের অধিক?
বসতবাটি থেকে বেরিয়ে এসে শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে এসে কিছুক্ষণ নীরবে বসে থাকলাম। বিক্ষিপ্ত অনুভূতিতে ভরে উঠা মনের আকাশের সাথে একাত্ম হয়ে বাইরের আকাশও ছেয়ে গেছে ম্লান গোধূলির লাল ছোপ ছোপ ধুসর-বরণ মেঘে। উঠে দাঁড়ালাম, কি ভেবে যেন একটু থমকে দাঁড়ালাম, তারপর বেরিয়ে এলাম পা চালিয়ে। সন্ধ্যের সুকেশী আঁধার এসে খোঁপা বেঁধে নেবার আগেই কপোতাক্ষের চোখ এড়িয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। আমাদের নদী মরে গেছে কোন কালে।
ফিরে আসার পথে চোখে পড়লো সেই মসজিদখানা। ছেলেবেলায় মধুসূদন এখানে আরবি-ফারসির দীক্ষা নিয়েছিলেন।
মন্তব্য
একটা মন ভরিয়ে দেবার মত ভ্রমণ হয়ে গেলো ভাইয়া আপনার লেখার হাতধরে! ছবিগুলো আসেনি। পরে আবার পোষ্ট ঘুরে দেখে যাবো ছবি। আচ্ছা, হাতেলেখা পাণ্ডুলিপিসহ অন্যান্য জিনিসগুলোর আসল কপিগুলো কোথায় জানা
সম্ভব না?
অভিমানী ছবিগুলো আসেনি। এবার নেমন্তন্ন করে আনলুম!
হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি কোথায় তা জানার চেষ্টায় আছি। কিছু ফ্রান্সে, কিছু ভারতে পাওয়া যেতে পারে হয়ত।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ছবি কই? (
হিজলের বনে যখন রাত্রির ট্রেন থেমেছিল, অভিমানী ছবিগুলো টুপ করে নেমে পড়েছিলো।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ইশ, যশোর যাই নি কখনো। যশোরের নদীগুলো না কি সেইরকম মায়াবী, আমার এক বন্ধু ছিলো ওই এলাকার, কী সব গল্প করতো।
ছবি তুলেন নি?
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
তুলেছি ভাই, সাদা ক্যামেরায় সাদা চোখে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
কবির গদ্যও মুগ্ধ হয়ে পড়ি।
আগে একবার ঢুঁ মেরেছিলাম এই পোস্টে, তখন মনে হয় ছবিগুলো ছিল...কোথায় গেল সেগুলো?
দুই-একটা লাইন উদ্ধৃত করা ইচ্ছে ছিল। কিন্তু লেখাচোরদের উৎপাতে কপি-পেস্ট মনে হয় বন্ধ করা হয়েছে
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভালোলাগা ও ভালোবাসা দুই-ই সযত্নে রাখবো, দামী এসেন্সের মতো, নীলকন্ঠ বোতলে পুরে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অসাধারণ.....
ধন্যবাদ রাজাসাহেব।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অসাধারণ একটা ভ্রমণ মেরেছেন বস। সাগরদাড়ীতে সেই ছেলেবেলা থেকে যাতায়ত, কারনে, অকারনে। পিকনিকে, ঘুরতে-ঘুরতে, ইত্যাদি। তবে গত কয়েকটা বছর ওখানে যাওয়া হয়নি। কেশবপুর সদরে গেছি কিন্তু সাগরদাড়ীতে যাওয়া হয়নি।
আপনার ছবি এবং লেখা বেশ একটা সুখানুভূতি দিলো। আমি যখন সেখানে গেছি, তখন দেখেছি নিদারুণ অব্যবস্থা, সব ভেঙেচুরে পড়ছে, সর্বত্রই একটা বিশৃঙ্খলা। তোরণের-আবক্ষ মুর্তির যে ছবি দিলেন সেগুলো তখনও হয়নি। খুবই দুঃখজনক অনুভূতি মধুকবির বাড়ির অবস্থা দেখে। যাক, ভালো যে এখন ওগুলোর যত্ন হচ্ছে। এবার শীতে দেখি যেতে পারি কি না। কেশবপুরের একটা গরুর খামারে সামান্য কিছু পয়সা ইনভেস্ট করা আছে। ওটা দেখতে গেলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যেতে পারে।
মধুকবির বাড়ির দিকে যেতে সামান্য আগে হাতের ডান দিকে সরু একটা হেরিংবোন রাস্তা চলে গেছে কপোতাক্ষের দিকে। সেখানে একটা বেদী আছে যেখানে বসে মধুসুদন লিখতেন। ওটা দেখেছেন কি?
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
কপালে জুটে গেল আর কি!
অবিকল আগের আদলে পুরোনো বাড়িটা সংস্কার করার কৃতিত্ব প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে অকুন্ঠচিত্তে দেয়া যেতেই পারে। তবে সেখানে একটা মধুসূদন একাডেমী হতে পারতো সরকারি উদ্যোগে। হতে পারতো গবেষণা, শুধুমাত্র বাংলা ভাষা ও কাব্যের উপর। সেটা হয়ত অন্যকোন মন্ত্রকের কাজ।
সেই বেদীটা গত ২১ বছর আগে দেখেছিলাম। তখনই কপোতাক্ষের শীর্ণদশা। এবারও লাল ইটের সুরকি বিছানো রাস্তা আমায় টেনেছিলো। কিন্তু মুমূর্ষু নদের মৃত্যুদশা দেখার মতো মনকে শক্ত করতে পারিনি। তাই কপোতাক্ষের চোখ এড়িয়ে মোটামুটি পালিয়ে এলাম।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
এই দেখুন আপনার কপোতাক্ষের অবস্থা
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বছর কুড়ি আগে যে তীর্থ ভ্রমণ করেছিলাম আপনার কল্যানে তার পুনর্ভ্রমণ হয়ে গেলো। আপনার ভাষা আর শব্দচয়ন নিয়ে কথা বলা নিরর্থক, অন্তত আপনার কবিতা যারা পড়েছেন তাদের কাছে।
জায়গাটার অবকাঠামোগত কিছু উন্নতি হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। তবে সেখানে বৈশ্যবুদ্ধি কাজে লেগেছে কেবল, তাও নিম্নমানের বৈশ্যবুদ্ধি। সাহিত্য বুঝেন, মগজে ও হৃদয়ে তা ধারণ করেন, প্রত্মতত্ত্ব জানেন, জাদুঘর কৌশল জানেন, ইতিহাসের চর্চা করেন এমন মানুষদের হাত ও চিন্তার ছোঁয়া সেখানে লাগেনি বলেই মনে হচ্ছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
সহমত। বানিজ্য ও কৃষির সমন্বয়ে যে বুদ্ধির বিকাশ, কৃষির কারণে সেখানে হয়ত মননের ছিটেফোঁটা লাগতেও পারে। তবে তা শীর্ণদশা ছাপিয়ে ফল্গুধারার মতো বহতা হবার সম্ভাবনা খুব সামান্যই বলে বোধ হয়।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
মধুকবির সাগরদাড়ীর ছবি এবং লেখায় চমৎকার একটি পোস্ট। মনটা খুব ভালো হয়ে গেল। অনেক ধন্যবাদ।
প্রিয় বোন, অনেক ধন্যবাদ।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অভিমান ভুলে ছবিগুলো সব এসেছে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া! দেখে গেলাম, আর জমা রেখে গেলাম অপার মুগ্ধতা।
মুগ্ধ হয়ে আপনার মুগ্ধতার টংকার শুনছি!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
এখানে গেছিলাম মনে হয় বছর ১৫ আগে... আপনার ছবি দেখে বুঝলাম অনেক কিছুই পাল্টে গেছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। আবার পাল্টায় নি অনেক কিছুই। যেমন ধরুন, পুরোনো আদলে বাড়িটির সংস্কার সাধন করা হয়েছে। সেখানে ভাষা, কাব্য কিম্বা প্রাসঙ্গিক জ্ঞানচর্চার পীঠ গড়ে উঠতে পারতো। অনেকটা শান্তিনিকেতনের আদলে। কিন্তু হয়নি। তাহলে কি হলো? ষষ্ঠপাণ্ডবের মন্তব্যে সে কথার জবাব দেয়া আছে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
দারুণ একটা ভ্রমণ হয়ে গেল!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ, ফাহিম হাসান।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সাহিত্যের সুরে ভ্রমণ করে আসলাম সাগর দাঁড়ি, কাব্যসুষমা তার পরতে পরতে জুড়ে দিয়েছেন। দারুণ সময় কাটল।
আমার এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি আপনাদের সময়ের ললাটে এঁকে দিতে পারে কিছু গান্ধর্ব ভালো লাগা, তবেই আমি ধন্য।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
খুব বিস্তারিত লেখা। বেশ ভালো লাগল। তবে মধু কবি ঐ আবক্ষ ভাস্কর্যটাকে কেন জানি কোনদিনই পছন্দ হয় নি।
facebook
ধন্যবাদ, তারেক অণু! বোধকরি ঐ প্রস্তরমূর্তি নিজের সামান্যতা দিয়ে মধুকবির বিশালতা ধরে রাখতে অক্ষম, তাই আপনার ভালো লাগেনি!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
এমন বিস্তারিত গদ্যে ভ্রমন পোস্ট--অসাধারণ লাগল
ধৈর্য নিয়ে পাঠ করবার জন্য ধন্যবাদ, রিসাদ ময়ূখ! শুভকামনা!
আর হ্যাঁ, আপনার 'নিক'টি বেশ তো! ময়ূখ চৌধুরীর কবিতা পড়তে ভালোলাগে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
নতুন মন্তব্য করুন