হঠাৎ বৃষ্টি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন রোমেল চৌধুরী [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ১৫/০৬/২০১১ - ৯:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কতদিন পরে অঝোর ধারায়
নামলো বৃষ্টি আমার বিজন ঘরে;
____________________

কতদিন পরে অঝোর ধারায়
নামলো বৃষ্টি আমার বিজন ঘরে;
ঘন বরষার ঘোর লাগা গানে
বন্ধু তোমাকে খুব বেশি মনে পড়ে।

জলবতী মেঘ সঘন সজল;
আকাশের কাছে সূর্য নিয়েছে ছুটি
আমার ঘরে যে আঁধার নেমেছে
মনে পড়ে তবু প্রিয়তম আঁখি দুটি।

কত খরদাহে কেটেছে সময়
দগ্ধ এ বুকে কত তৃষা জমে ছিল
ডাগর ঝোরার ছিটেফোঁটা বুঝি
করুণার মতো ভালোবাসা ঢেলে দিল।

তবু যদি ফোটে বর্ষার রাতে
প্রথম কদম তোমার মনের কোণে
বন্ধু জেনো গো সেই স্নিগ্ধতা
ছুঁয়ে যাবে এসে আমায় সংগোপনে।

ঢাকা
১১ জুন ২০১১


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"মেঘছায়ে সজল বায়ে মন আমার
উতল করে সারাবেলা কার লুপ্ত হাসি, সুপ্ত বেদনা হায় রে"

- কবিতা ধার করার জন্য আর, এন, টেগোরের চেয়ে ভালো ব্যাংক এই দুনিয়ায় আর নেই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

তবু যদি ফোটে বর্ষার রাতে
প্রথম কদম তোমার মনের কোণে
বন্ধু জেনো গো সেই স্নিগ্ধতা
ছুঁয়ে যাবে এসে আমায় সংগোপনে।

সংগীতময় কবিতা! ভালো লাগল ভাইয়া।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

বোধকরি রবীন্দ্রনাথকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছিল,

'জল পড়ে, পাতা নড়ে'
(সিনেমার গান নহে)।

তাই তাঁর পক্ষে বর্ষাকে এমন নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব হয়েছিল। কোন এক কবি বলেছিলেন, "মানুষ যে পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় প্রাণী তা বর্ষা ঋতু এসে মানব-মানবীকে বুঝিয়ে দিয়ে যায়। বৃষ্টি প্রকৃতির সকল জীবজগতের মাঝে গর্ভসঞ্চারের বাসনা জাগ্রত করে। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো মানুষ। শুধু মানুষই বৃষ্টির শব্দে নিঃশব্দ হাহাকার বুকে চেপে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকে।"

সীমাহীন ঘোর লাগা বর্ষণে উবু হয়ে বসে থেকে আচ্ছন্ন মানুষ কি ভাবে? অনেক ভেবেছি, মেলেনি উত্তর!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

শুধু মানুষই বৃষ্টির শব্দে নিঃশব্দ হাহাকার বুকে চেপে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকে।"

তাইতো সে মোহাবিষ্ট কেন হয়ে যায়!? উত্তর খুঁজছি..........

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

কবিতা ধার করার জন্য এন, ইসলামের ব্যাংকটিই বা মন্দ কিসের? কে জানে, এন, ইসলাম আবার আর, এন ঠাকুরের ব্যাংকে লুটতরাজ চালালেন কি না?

শুনি শিহরে কদম বিদরে কেয়া
নামিল দেয়া।

কাঁদে চখা চখি কাঁদে বনে কেকা
দীপ নিভায়ে কাঁদি আমি একা

বারি ধারে কাঁদে চারিধার
ঘরে ঘরে আজি রুদ্ধ দুয়ার
আজি মনে পড়ে মন দেয়া নেয়া
নামিল দেয়া।
(এন, ইসলাম)

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস্‌, ঈমানে কই প্রথমে "রিমি রিমঝিম রিমঝিম নামিলো দেয়া" লেখারই ইচ্ছে ছিলো। পরে লিরিক ভুল হয়ে যেতে পারে আশংকায় আর, এন, টেগোরের কাছে গিয়েছিলাম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

নজরুল ইসলামের (সচলাতয়নের নহে) আরো আছে। হার্ডলি এমন লোক খুঁজে পাবেন যিনি তন্ময় হয়ে শুনেন নি,

ভুলিও স্মৃতি মম নিশীথ স্বপন সম,
আঁচলের গাঁথা মালা ফেলিও পথ পরে॥

ঝরিবে পুবালী বায় গগন দূর বনে,
রহিবে চাহি তুমি একেলা বাতায়নে।

বিরহী কুহু-কেকা গাহিবে নীপশাখে
যমুনা নদী পারে শুনিবে কে যেন ডাকে।
বিজলী দীপ শিখা খুঁজিবে তোমায় প্রিয়া
দু’হাতে ঢেকো আঁখি যদি গো জলে ভরে॥

"আয়এএনা বাআআনু" শুনতে গাংগাটিয়ার জমিদার বাড়ীতে যাবার নেমন্তন্ন করেছিলুম, ঠকতেন না!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

নেমতন্ন প্রত্যাখান করিনি বস্‌! দিন-তারিখ জানান।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আর.এন. ট্যাগোর বা এন. ইসলামের আলোচনায় আমি নাই। তয় এমজিএম চোদ্রী সাব জব্বর একখান কবিতা আমাদের দিছেন, এই কবিতাখান। নো ডাউট।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

লইজ্জা লাগে

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সময়ের অভাবে সেভাবে ব্লগে আসা হয় না।
আর আসলেই আপনার আর রাত:স্মরণীয় দা'র লেখা খুঁজি।
লিখতে থাকুন...
আপনাদের দুজনের লেখা পড়ে মনটাই কেমন যেন অন্য রকম হয়ে যায়; শত ব্যস্ততার মাঝেও থমকে দাঁড়ায়।

শুভ কামনা রইল।
ভালো থাকবেন।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

জীবন মানে তো কেবলই সামনের দিকে ছুটে চলা নয়, মাঝে-মধ্যে একটু থামা, একটু পেছনে ফিরে তাকানো, কিছুক্ষণ ফিরে তাকাতে তাকাতে এগিয়ে যাওয়া। আপনিও ভালো থাকুন।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তিথীডোর এর ছবি

''নুতন মেঘের ঘনিমার পানে চেয়ে চেয়ে মনে পড়ছে বর্ষা মানে--
আমরা কেবল উড়েই যাচ্ছি, যাচ্ছি ধেয়ে পরস্পরের হৃদয় পানে!
বর্ষা মানে এই একলা হওয়া, দোকলা হওয়া,
হৃদয় খুলে উজাড় হওয়া, মানছি দু’জনেই।''
#সুমন সুপান্থ

চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

চর্যাপদের কবি থেকে শুরু করে হালের কবি পর্যন্ত সবাইকেই বর্ষা নিয়ে পদ রচনায় ব্রতী হতে দেখি। আমাদের সাম্প্রতিক কবিতায় বর্ষার কথা প্রায়শঃই উচ্চারিত হতে দেখি। কিন্তু ঘোর লাগা বর্ষনের মতো তন্ময় করে দেয়া চরণ পাই কোথায়। এই যে দেখুন, আমার এই রচনাটিতেও বর্ষা সঙ্গিনীকেই শুধু মনে করিয়ে দেয়। সবকিছু এমনকি সঙ্গিনীকেও ভুলিয়ে দিয়ে, তুচ্ছ করে দিয়ে আমাকে সৃজন বেদনায় ফুঁপিয়ে কাদায় না। এখানেই আমাদের অক্ষমতা।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তাসনীম এর ছবি

চলুক

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

হাসি

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি তো ভাবলাম সিনেমা চোখ টিপি
ভালো লাগলো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

"জল পড়ে পাতা নড়ে" এই বাণীবন্ধে সিনেমার নাচে-গানে যে উত্তুংগ-উল্লম্ফন দেখলুম তাতে ভয় হচ্ছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মরে গিয়েও আবার আত্মহত্যায় প্রবৃত্ত হবেন কিনা। তবে 'হঠাৎ বৃষ্টি' ছবিটা এই সাদা চোখে ভালোই লেগেছিল।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।