১
বনের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে সরু রাস্তাটি খোলা মাঠে মিশেছে। সাপের মতো এঁকে বেঁকে একটু একটু করে ঢালু হয়েছে সামনের পথটা। একজোড়া বাইসাইকেল ফ্রি হুইল করে এগিয়ে আসছিল। একটিতে বাবা, অন্যটিতে ছেলে। প্যাডেলে একটুও চাপ ছিলনা, তবু এগুচ্ছিল বেশ ভ্রুতই। বাপ বেটা দুজনেই শ্বাস ফেলছিল অনায়াসেই। অবশেষে বনের প্রান্তে এসে সামনে চোখ মেলে সামনে তাকালো তারা। ফ্রি হুইলের স্বস্তি ফুরিয়ে যাবার আগেই দেখলো, ছোট্ট ঢালুটা ফুরিয়ে এসেছে। সেইসাথে রাস্তাটা আবার উপরে উঠতে শুরু করেছে।
বাইসাইকেলের সীটে নিজেকে শক্ত করে সেঁটে রাখবার জন্যে পেছনের দিকে দেহটা ঝুঁকিয়ে দিলেন বাবা। ছেলেকে বললেন, “আর অল্প একটু পথ, সামনের চড়াইটুকু উঠেই আমরা সাইকেল থেকে নেমে পড়ব, ওখানে গিয়ে বেশ খানিকটা সময় জিরিয়ে নেয়া যাবে।”
ছেলে বললো, “এক্ষুণি একটু জিরিয়ে নিই, বাবা? আমার পা’গুলো ভারী হয়ে আসছে যে!”
“চূড়োয় উঠে বিশ্রাম”, শান্ত স্বরের খাঁজে দৃঢ়তা মিশিয়ে বললেন বাবা, “মনে আছে, তোমাকে কি বলেছিলাম সেদিন? একজন শরীরচর্চাকারী হিসেবে প্রথমেই তোমাকে শিখতে হবে ক্লান্তিকে কিভাবে জয় করতে হয়।”
“আমি তো তাই-ই করেছি। ঐ যে বড় রাস্তা ধরে যাবার সময়, আমি তখন খুব ক্লান্ত, আর তখনই তো আমি...”
“যখন রাজ্যের অবসাদ এসে দু’পায়ে জমা হয়, তখন শুধু চলতেই থাকো, যতক্ষণ না সেটা চুপিচুপি সটকে পড়ে। দেখবে, ফের তুমি তোমার দম ফিরে পাবে, সেই সাথে বাড়বে তোমার কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা।”
“সে অনুশীলন তো আমি এরই মধ্যে করেই ফেলেছি।”
“আর কথা নয়, আমরা উপরে উঠছি, ওখানে গিয়ে বিশ্রাম”, বাবা বলে উঠেন। একটা হালকা শ্বাস ছেড়ে দিয়ে প্যাডেলের উপর প্রায় দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। বাইসাইকেলটা ভারবাহী শ্রমিকের মতো একবার বামে আরেকবার ডানে টলতে টলতে বিরসবদনে চলতে শুরু করে চড়াইয়ের পথে। মুখরা কামিনের মতো ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে উঠে সেটার যান্ত্রিক শরীর। বয়ঃসন্ধিতে আটকে থাকা ছেলের মুখের অনুচ্চারিত কথাগুলি থিতিয়ে পড়ে, পড়িমরি করে প্যাডেল চালানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না তার।
খাঁড়া রাস্তার মাঝ বরাবর ধীরগতিতে সাইকেল দু'টো সোজা উপরে উঠতে থাকে। উপরে উঠার পর সাইকেল থেকে নেমে আসেন বাবা। নামার সময় একটু যেন ইচ্ছে করেই পায়ে অস্বাভাবিক দৃঢ়তা ফুটিয়ে তুলেন তিনি, ছেলেকে দেখাবার জন্যে। সন্তর্পণে সাইকেলটাকে আস্তে করে পাশে এলিয়ে দেন। তারপর বিশ্রামে ডুবে যাবার আগেই গা থেকে জ্যাকেটটাকে খুলে মাটিতে বিছান তিনি।
ছেলের তখন কাহিল অবস্থা। কোনোমতে প্যাডেল থেকে মাটিতে পা নামিয়ে দিয়েই সাইকেলটাকে ধপ করে একপাশে ফেলে দেয় সে। ফেলেই ঘাসের উপর শুয়ে পড়ে একেবারে সটান হয়ে।
“উঁহু, ভেজা ঘাসের উপর শুয়ে পড়ো না”, উৎকণ্ঠিত কন্ঠ বাবার, “ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো।”
“কোন সমস্যা নেই, আমার শরীর যথেষ্টই গরম আছে।”
“এসো, এখানে এসে জ্যাকেটের উপর বসো। যখন তোমার শরীর বেশীমাত্রায় গরম থাকে, তখনই ঠাণ্ডা লাগবার সম্ভাবনা বেশী... ”
“কোন সমস্যা নেই, বাবা। আমি এখানেই শুয়ে থাকতে চাচ্ছি। আমার পিঠ ব্যথা করছে।”
“বুঝতে পেরেছি, তোমার পিঠ আরো শক্ত হওয়া প্রয়োজন। এজন্যই ওটা ব্যথা করে। ইস, আমাদের বাসার কাছাকাছি যদি একটা নদী থাকতো, তাহলে নিশ্চয়ই লগি ঠেলে ঠেলে নৌকো বাইতে পারতাম আমরা। বৈঠা বাইবার মতো চমৎকার পিঠের ব্যায়াম আর কিইবা আছে!”
বাবার কথার কোন উত্তরই দিলো না ছেলে। আর বাবাও ততক্ষণে বুঝতে পারলেন, তাঁর আচরণে উদ্বিগ্ন অভিভাবকের জেদ ফুটে উঠছে। ছেলের কাছে নিজের ইচ্ছাকে পরাজিত হতে দিলেন তিনি। তাঁর কাছে এসে জ্যাকেটের উপর বসার জন্য আর বেশি জোর করলেন না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন, তারপর কব্জি উল্টিয়ে ঘড়িটার দিকে একনজর তাকালেন।
“বারোটা বাজতে দশ মিনিট বাকী, এক মিনিটের মাথায় রওনা হতে হবে।”
“কি বলো তুমি? আমি তো ভেবেছি আমরা আরো কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেব।”
“হুম, তুমিই বলো, আমরা কি এখন বিশ্রাম নিচ্ছি না? আমি তো আমার দম ফিরে পেয়েছি, তুমিও পেয়েছ নিশ্চয়ই!”
“এখনো আমার পিঠ ব্যথা করছে। আমি আরো কিছুক্ষণ শুয়ে থাকতে চাই।”
“দুঃখিত”, বাবা উঠে দাঁড়ালেন। সাইকেলে চড়তে চড়তে বললেন, “বেলা একটায় বাসায় পৌঁছে লাঞ্চ, এখনো বারো মাইল বাকী!”
“বাবা, আমাদের যদি বেলা একটার মধ্যে ফিরতেই হবে তো এত দূরে কেনই বা আসতে হয় প্রতিদিন? তারচেয়ে চল একটা টেলিফোন বুথ খুঁজে বের করা যাক। মাকে ফোন করে বলে দেব, আমরা...”
“উঁহু, আমরা দুজন সুস্থ-সবল মানুষ। কোনো যুক্তি নেই যে একঘন্টা দশ মিনিটে বারো মাইল সাইক্লিং করতে পারবো না।”
“কিন্তু আমরা তো মনে হচ্ছে এরই মধ্যে প্রায় হাজার মাইল সাইক্লিং করেই ফেলেছি!”
“আন্দাজ করি, আমরা চৌদ্দ মাইলের মতো শেষ করেছি”, মিঃ উইলসন শক্ত গলার স্বরে বলে উঠেন, “একটু যদি বেশী দূরই না গেলাম তাহলে আর বাইক রাইডে বেরুনোর মজাটা থাকলো কোথায়?”
মাঠে শুইয়ে রাখা নিজের বাইসাইকেলটি তুলে নিয়ে ছেলের জন্য অস্থিরভাবে অপেক্ষা করতে থাকলেন বাবা। নিজের হাত দুটো দিয়ে চোখ ঢেকে মরার মতো পড়ে থাকলো তারুণ্য ছুঁই ছুঁই দেহটি। ঘন সবুজ ঘাসের পটভূমিতে তার পা দুটো বড় শীর্ণ ও ফ্যাকাসে লাগছিল।
“আহা এসো না!”
ছেলের মাঝে কোন প্রতিক্রিয়াই হলো না। বাবার কথা শুনতেই পায়নি যেন। “আমি যাচ্ছি”, বাবা ধীরে ধীরে সাইকেল চালাতে শুরু করলেন।
মাটিতে শুয়ে থাকা ছেলেটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, সে যেন মাঠে কেটে ফেলে রাখা ফসলের মতো নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে আছে। মনে হচ্ছিল, সে যেন আকস্মিক কোন এক দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছে, ভেতরের রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু ঘটেছে, দেহের বাইরে আঘাতের চিহ্নমাত্র নেই। গজ পঞ্চাশেক এগিয়ে গেলেন বাবা, একশো গজ, তারপর বিরক্তির সাথে একটা ছোট্ট চক্কর দিয়ে ফিরে এলেন ছেলের কাছে।
“সত্যিই কি তোমার কিছু হয়েছে, নাকি খামোখাই তুমি এমন করছো?”
চোখের উপর থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে বাবার মুখের দিকে তাকালো পীড়িত চোখ দুটি। তারপর সে দুটো বিস্ময়করভাবে শান্ত হয়ে এল, সেখানে এতটুকু দ্রোহের আগুন জ্বলে উঠতে দেখা গেল না।
“আর পারছি না, আমি ক্লান্ত, আমার পিঠ ব্যথা করছে।”
“বাবা”, শান্ত স্বরে বললেন মিঃ উইলসন, “তোমাকে চমকে দিতে চেয়েছিলাম বলে আগে বলিনি, বাসায় ফিরে তোমার জন্য একটা সুন্দর উপহার অপেক্ষা করছে।”
“কি রকম উপহার?”
“একটি বিশেষ উপহার, শুধুই তোমার জন্য। আজ সকাল থেকেই সেটা বাসায় লাগানো হচ্ছে, এতক্ষণে বোধহয় লাগানো হয়েই গেছে। তুমি যাতে ওটা দেখে চমকে যাও, তাই তো তোমাকে সাইকেল চালানোর নাম করে সকাল সকাল বাসা থেকে বের করে এনেছি।”
“কি সেটা?”
“উঁহু, সেটাই তো চমক। চলো, ঝটপট সাইকেলে উঠে পড়, বাসায় ফিরে দেখতে পাবে।”
ধীরে ধীরে উঠে বসলো ছেলে। তারপর পায়ের উপর উঠে দাঁড়ালো আরো ধীরে ধীরে। ক্লান্তস্বরে বিড় বিড় করে বলে উঠলো, “বাসায় ফিরবার সংক্ষিপ্ত কোন রাস্তা নেই?”
“বোধহয় নেই। কিন্তু মাত্র তো বারো মাইল পথ।”
ছেলের মুখে কোন রা নেই।
“আর ঐ রাস্তার অনেকটাই তো পাহাড়ের ঢালু বেয়ে নিচে নেমে গেছে”, বলতে বলতে উইলসনের মুখে এক চিলতে উজ্জ্বলতা ফুটে উঠে। তাঁর নিজের পা জোড়াও তখন ক্লান্ত। মাংসপেশিগুলো ব্যথায় টনটন করে সারা শরীর জুড়ে একধরণের বিরক্তিকর অনুভূতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেটি চেপে রাখতে গিয়ে মিঃ উইলসন হঠাৎ টের পেলেন যে তাঁর প্রচণ্ড তেষ্টাও পেয়েছে। ছেলের মুখে তখনও রা নেই, ধীরে ধীরে মাঠে ফেলে রাখা সাইকেলটা তুলে দাঁড় করালো ও। আবার চলা শুরু হলো।
মন্তব্য
চলুক। পড়ছি।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সবার অনুবাদ ভাল লাগেনা। আপনারটা ভাল লাগছে।
ধন্যবাদ, প্রেরণা পেলাম।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
পরের লেখা পড়তে অপেক্ষায় থাকব।
mahinaaa@gmail.com
ধন্যবাদ, জানি অপেক্ষার প্রহর বড় কষ্টের!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অপেক্ষায় রইলাম। (যেমন আছি চণ্ডীশিরার বা সাহিত্যিকের।।। আশা করি আপনিও ঝুলাবেন না। আমার হাতে ক্ষেমতা থাকলে আমিও অমন একটা লিখে ঝুলিয়ে দিতাম। তখন ইনারা বুঝতেন অপেক্ষার প্রহর কেমন লাগে।)
পাগ্লারে কইছিল, "পাগ্লা, সাঁকো নাড়াইচ না।"
পাগ্লা কয়, "এইত্ত মনে করায় দিলি"।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সবার অনুবাদ পরতে ভাল লাগেনা। আপনার অনুবাদ বেশ ভাল।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সৌরভ কবীর
ধন্যবাদ, সৌরভ।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অনেক ভাল লেগেছে আপনার অনুবাদ! এক পর্বে শেষ করলে এমন কি ক্ষতি ছিল, রোমেল ভাই? যাই হোক, এখন পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লান্তিকর অপেক্ষা!
ধন্যবাদ ভাই, এক পর্বে শেষ করলে কোন ক্ষতি ছিল না।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
রকিব হাসানের অনুবাদে ফ্রেড জিপসনের দ্য হাউণ্ড ডগ ম্যান পৌরুষ নামে রহস্যপত্রিকায় ছাপা হত। যদিও বই বেরিয়েছিল শিকারি পুরুষ নাম দিয়ে।
facebook
তাই নাকি, কত অজানারে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বেশ...
কড়িকাঠুরে
ধন্যবাদ, ভাই কড়িকাঠুরে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সবি বুঝলাম, লেখা ও ভালো কিন্তু এত অল্প অনুবাদ করেই আপনার দম চলে গেলো কেন রোমেল ভাই । তাড়াতাড়ি শেষ করেন।
পরের পর্ব বার বার অনুবাদ করবার পর কেটে দিতে হচ্ছে। কিছুতেই মনঃপুত হচ্ছে না নিজেরই। বলুন, এমন লেখা কি পাঠকের হাতে তুলে দেয়া যায়?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অপেক্ষায় থাকলাম।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
অপেক্ষায় রাখবার জন্য আগেভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিই।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
রোজ আসি রোজ আসি আর ভাবি এই বুঝি গল্পের বাকীটুকু এলো।
কই????
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এবার আমি ঠিক ঠাক চলে এসেছি, বোন।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
কবে আসবে গল্পের বাকীটা? মানুষের কৌতূহলের কাছে অসমাপ্ত গল্প যে কী যন্ত্রণার--
নাহয় বলে দিন মূল গল্টার নাম কী, খুঁজে দেখি পাই নাকি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মূল গল্পটার নাম 'ম্যানহুড', প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮০ তে, লিখেছেন বিখ্যাত আমেরিকান গল্পকার জন ওয়েইন।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
নতুন মন্তব্য করুন