আপু চলে গেল। এক এক করে চারিদিকের সব আলো নিভিয়ে দিয়ে। ঘর আলো করা ওর সেই উজ্বল হাসি, ক্যান্সারের প্রবল আঘাতেও যেটা এতটুকুও ম্লান হলো না তাকে সঙ্গে করে নিয়ে চলে গেল চিরতরে। অসুস্থ অবস্থায়ও সবার প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে পাশে থাকা মানুষটা আমাদেরকে অতল শূন্যতায় ডুবিয়ে নিমিষেই নেই হয়ে গেল। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাত্র ২৮ বছর বয়সে ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ে আপুর। তারপরে সার্জারি-কেমোথেরাপি। কিছুদিন ভালো থাকার পরে গত বছরের আগস্টে ব্রেন টিউমার। সেটার সার্জারি-রেডিওথেরাপির পরে খোঁজ পাওয়া যায় আক্রান্ত ফুসফুস আর যকৃতের। এসবের সাথে লড়াইটা আর শেষ হল না ওর। গত ৬ নভেম্বর রাতের গাঢ় অন্ধকারকে গাঢ়তর করে দিয়ে আপু পাড়ি জমাল না ফেরার দেশে।
আপুর চলে যাওয়াটা ওর লড়াকু চরিত্রের সাথে একেবারেই বেমানান। গত চার বছরে একদিনের জন্যও আপুকে ভেঙ্গে পড়তে দেখিনি আমি। বরং উলটো এই দুঃসময়ে নিজেই বাবা-মা আর সন্তানকে আগলে রেখেছে পরম মমতায়। ও জানতো বাবা-মা’র প্রথম সন্তান হিসেবে সে-ই তাদের বিশ্বস্ত অবলম্বন আর ওর পাঁচ বছরের ছেলেটার মাথার উপরের ছায়া। ওকে তাই শক্ত হতে হবে। দিনশেষে তাই শারীরিক-মানসিক সব যন্ত্রণা ছাপিয়ে ঘর ভরে উঠতো ওর তুমুল হাসির শব্দে। আপুর কথা ভেবে মন খারাপ হলে তাই মন ভালো করার সবচেয়ে সহজ উপায় ছিলো ওর কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ গল্প করে আসা। ব্যস, কোন দুশ্চিন্তার আর সাধ্য কি আমার আশেপাশে ঘেঁষে! শেষ পর্যন্ত ওর এই দৃঢ় মনোভাব বা ওর উপরে আমাদের অসীম বিশ্বাস কিছুই কাজে এলো না। চলে যাওয়ার একদিন আগে তাই খুব অবিশ্বাস ভরা কন্ঠে আঙ্কেলের কাছে আপু জানতে চাইলো, ‘আমি তাহলে সত্যিই মরে যাচ্ছি, আব্বু?’
আপু ছিল অসম্ভব প্রাণশক্তিতে ভরা একজন। এই সমাজে তথাকথিত কালো-অসুন্দর হওয়ার অপরাধে টিকে থাকার লড়াইটা ওকে অনেক আগে থেকেই শুরু করতে হয়েছিল। তার জন্য ক্ষোভ বা আক্ষেপ করে পিছিয়ে আসেনি কখনো। বাধা আসলে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে সবসময়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসীতে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে একটা ঔষধ কোম্পানীতে যোগ দেয়। বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ির হাজারটা আপত্তি-অত্যাচার আমলে না নিয়ে নিজের কাজ করে গেছে। প্রথম অসুস্থ হওয়ার পরে শরীরের কথা ভেবে এই চাকরিটা ছেড়ে একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়। আর বিসিএস এর জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। দ্বিতীয় বার আবার অসুস্থ হওয়ার পরে যখন আর ঘর থেকে বের হওয়ার মত অবস্থা নেই তখন খুঁজতে থাকে ঘরে বসে করতে পারবে এমন কিছু। একটা অনলাইনে বুটিক শুরুর কাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছিলো। বিসিএস এর রিটেন পরীক্ষার আগেই লিভারে মাল্টিপল ক্যান্সার সেলের খোঁজ পাওয়া যায়। কেমোথেরাপি চলছিলো। এর মধ্যে কেমোথেরাপির ডেট দুইদিন পিছিয়ে বসে যায় পরীক্ষা দিতে।
দৈনন্দিন জীবনের কখনও ওর অসুস্থতার প্রভাব পড়তে দেয়নি। ছেলেটাকে তিন বছর দুই মাস বয়সে যখন স্কুলে ভর্তি করলো তখন খালামণি বেশ আপত্তি করেছিল। খালামণি চাচ্ছিলো ও আরেকটু সুস্থ হয়ে ছেলেকে নিয়ে দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করুক, সময়তো আর ফুরিয়ে যাচ্ছে না। ও বলেছিলো, ‘আমি অসুস্থ বলে পৃথিবীর আর কিছুতো থেমে নেই, আম্মু। আমার ছেলের জীবন কেন থেমে থাকবে?’ অনেকদিন আপুর কেমোথেরাপির সময় ওর সাথে হাসপাতালে বসে থেকেছি। রোগীর পাশে বেশিক্ষণ থাকতে দিত না। একা একা হাসপাতালে বসে আপুকে নিয়ে অনেক চিন্তা মাথায় ভর করতো। কিন্তু ওর কেমো দেয়া শেষে ওকে দেখলেই সব ঠিক হয়ে যেত। বের হয়েই হয়তো বলবে, ‘চলো তোমাকে সিপির চিকেন খাওয়াই।’
আমি ছিলাম ওর ছোটবেলার খেলার পুতুল। আমার জন্মের পরের প্রথম চার বছর আমরা এক বিল্ডিং এ থাকতাম। আপুরা তিনতলায় আর আমরা নীচতলায়। প্রতি বিকেলে আমার সাজগোজে আম্মুর সাথে সাথে আপুরও হাত থাকতো। আপুই নাকি স্কুল থেকে এসে আমার কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রাখতো সব। আর কোনদিন কি পরবো, কিভাবে ঝুঁটি করবো এসবও ঠিক করে দিতো। ওর ডান হাতের কব্জিতে একটা কালো দাগ ছিলো। একবার নাকি আম্মু আমাকে রেখে শপিং এ যাওয়ার পরে আমাকে কোলে নেয়ার যুদ্ধে জিততে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীর কামড়ে সৃষ্টি হয় সেই ক্ষত। আমাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় সবাইকে সেটা দেখিয়ে গল্প করতো। এত আদর পেয়ে আমিও খুব আপুর ন্যাওটা হয়েছিলাম। একসাথে থাকতেতো বটেই, যখন অন্য শহরে চলে গেলাম তখনও ছুটিতে ওদের বাসায় বেড়াতে আসলে আপুর কাছ থেকে একটুও দূরে সরতাম না আমি। আপুর এসএসসি/ এইচএসসি পরীক্ষার আগে আমি তখন থ্রি-ফোরে পড়ি, আম্মু আমাকে খুব বুঝিয়ে শুনিয়ে হয়ত নিয়ে এসেছে যে আপুর পরীক্ষা ওকে বিরক্ত করা যাবে না, ওর সাথে বেশি গল্প করা যাবে না। কিন্তু কিসের কি! আপুর সাথে নাম-দেশ-ফুল-ফল না খেললে আবার কিসের ওদের বাসায় আসা। এমনকি বাসায় ওকে টিউটর পড়াতে আসলেও আমি আশেপাশে এতই ঘুরঘুর করতাম যে দুইদিন পর থেকে ও আমাকে পাশে নিয়েই পড়তে বসতো। হাতে হয়তো ধরিয়ে দিতো একটা গল্পের বই। আর স্যারের সাথে গর্বভরে গল্প করতো, ‘জানেন, স্যার, আমার এইটুকু বোনটা এত বই পড়ে! কালকে রাত থেকে এটা ওর তৃতীয় বই। আমি ওকে বইয়ের যোগান দিয়ে সেরে উঠতে পারছি না।’
আপুর সাথে থেকেই আমার বই পড়া শুরু। ঠাকুমার ঝুলি, মালাকাইটের ঝাঁপি থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে আঙ্কেল টমস কেবিন, প্রথম আলো সব আপুর সংগ্রহ থেকে নিয়েই পড়া। প্রথম একুশে বই মেলা গিয়েছি আপুর হাত ধরেই। প্রথমবার স্টল খুঁজে খুঁজে বই কেনা আপুর সাথে। সে কি উত্তেজনা! এই ঢাকা শহরে আপুই আমাকে হাত ধরে চলতে শিখিয়েছে। গত কয়েক বছরে আপু খুব একটা বাইরে বের হতো না। তারপরেও কোথাও যেতে হলে কিভাবে যাবো, কোথায় বাস-কোথায় রিকশা সব ডিরেকশন আপুর কাছ থেকেই নিয়েই যেতাম। গত বছরেও একদিন আমাকে হাত ধরে রাস্তা পার করে রিকশা ঠিক করে দিয়েছে। আমার সবদিকেই সবসময় খেয়াল রাখতো। কখন কি লাগবে না লাগবে তার হিসেব আম্মুর পরেই যে বেশি রাখতো সে ছিল আপু। শপিং করার প্রতি আমার যেমনই তীব্র অনীহা আপুর ছিল তেমনই তীব্র আগ্রহ। আমার জন্য প্রথম সালোয়ার-কামিজটা আপুই কিনে নিয়ে গিয়েছিল। প্রথম শাড়িটাও কিনেছিলাম ওর সাথেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটিতে আপু কোনবারই আমার জন্য গিফট না নিয়ে বাড়িতে যায়নি। গত বছরের জন্মদিনেই নিজেই ডিজাইন করে একটা লাল টুকটুকে জামা বানিয়ে দিয়েছিল, সাথে ম্যাচিং লাল স্যান্ডেল। ঈদের শপিংও বেশিরভাগ সময়ই আপুই করে দিতো। আমি এমনকি সাথে যাওয়ার কষ্টটুকুও করতাম না।
সেদিন আমার বন্ধু বলছিল, ‘আপু ছিল তোর না থাকা বড় বোন।’ ভেবে দেখলাম আপু যেভাবে আমার খেয়াল রাখতো আমি নিজে আমার ছোট বোনটার জন্য তার সিকিটুকুও করি না। আমার নিজের বড়বোনও আমার জন্য এতখানি করতো না। বা শুধু আমার জন্যই বলছি কেন? সবার জন্যই কি আপু এমন নিবেদিত ছিল না? ওর নিজের ছোট দুই ভাই, আমার ছোট বোন, অন্যসব কাজিন, বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিত যে কোন মানুষ। এমনকি সবদিক দিয়েই আপু ছিল আমার বাবা-মা’র আরেক সন্তান। বড় সন্তানের যা যা দায়িত্ব তা আপুই পালন করতো। আম্মুর প্রয়োজনীয় কিছু ঢাকা থেকে নিয়ে যেতে হলে সেটা আপুই পাঠিয়ে দিত। আম্মু আপুকেই জানাতো সেসব বা আমাকে জানালেও আমি কোন না কোনভাবে আপুর ঘাড়েই চাপিয়ে দিতাম। সানন্দে সেসব কাজ করে ফেলতো আপু। আমার বিয়ে নিয়ে উৎসাহের শেষ ছিল না। খুব চাইতো আমি যেন আগামী বছরের শুরুর দিকে বিয়েটা করে ফেলি, আমার তেমন একটা ইচ্ছে ছিল না। নিজে নিজে আম্মুর সাথে কতসব প্ল্যান করে ফেলছিল। সেই সময়টুকুও পেলে না, আপু।
এই লেখা আসলে ফুরোবে না কোনদিন। গত চারদিনে চোখের সামনে ভেসে উঠছে এমন হাজারো দৃশ্য, চোখ বন্ধ করলেই দেখছি সেই একই মুখ।সবকিছু কেমন থমকে গিয়েছে। অযথা নিজের অগোছালো স্মৃতির ভারে সচলের নীড়পাতাকে ভারাক্রান্ত করতে চাইনি। কিন্তু আপুর হাসিমাখা মুখটা কিছুতেই মাথা থেকে সরাতে পারছি না। মনে হলো একবারে কোথাও এই কথাগুলো বলে ফেললে হয়তো একটু হালকা লাগবে। তবে মন্তব্য পাতায় দু’টো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে আলোচনা করতে চাই। প্রথমত, আপুর পাঁচ বছরের ছেলেটাকে কিভাবে ওর জীবনের এই বিশাল পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দেয়া যায় সেটা নিয়ে চিন্তা করে কেউই কোন কূলকিনারা করতে পারছি না। এ বিষয়ে আপনাদের সুপরামর্শ পেলে ভালো লাগবে। দ্বিতীয়ত, আপু চলে যাওয়ার পরে গত চারদিনে আরো তিনজনের ক্যান্সারে মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ক্যান্সার কি মহামারীতে রূপ নিচ্ছে? এ বিষয়ে কি কোন সতর্কতা বা কোন সচেতনতাই কাজে আসে না?
আমার অনুভূতির অনেকখানিই দীপন ভাইয়ার এই গানে আগেই সুর-তাল-লয়ে প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। আশা করছি গান শুনে আমার লেখার অসংলগ্নতা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
মন্তব্য
কঠিন প্রশ্ন। আর উত্তর কঠিনতম!
মৃত্যু, সেতো জীবনের এক অলঙ্ঘনীয় বিধি। ক্ষয়, লয়, মৃত্যু অনিবার্য।
স্নেহ আর ভালবাসার দাবীতেতো মৃত্যুকে পরাস্ত করা যায়না।
সান্ত্বনা জানানোর ভাষাতো জানা নেই, তাই,
"মরণ তোমার হার হলো যে মনের কাছে।
ভাবলে যারে কেড়ে নিলে সে যে দেখি মনেই আছে,
মনের মাঝেই বসে আছে।"
মৃত্যু। ব্যস, এক নিমেষেই অলঙ্ঘনীয় বিশাল দেয়াল গেঁথে গেল আমাদের মাঝে। যোগাযোগের আর কোন উপায় নেই। এটা মেনে নিতেই কষ্ট হচ্ছে ভীষণ।
কি বলবো জানি না। আমি আসলে স্বান্তনা দিতে পারিনা। উপরওআলা এসে সব ঠিক করে দিবে এমন কথায় নিজেই ঠিক ভরসা পাই না। জানি ওরকম কেউ আসে না যাদু বলে সব ঠিক করে দিতে। যার ক্ষত তাকেই বয়ে বেড়াতে হয়, সময়ের কিছুটা পরত হয়তো পড়ে। মাঝে মাঝে মনে হয় জীবন এতো নিষ্ঠুর কেন!
আপনার বোনের গল্প পড়ে নিজের বোনের কথা মনে পড়ে গেল, আর পাঁচ বছরের ছেলেটার কথা জেনে নিজের ছেলের কথা মনে আসলো, কোনভাবেই নিজেকে সামলাতে পারলাম না। জানিনা এতো ছোট বয়সে তার ভেতরে কতটা ঝড় বয়ে যাচ্ছে বা আদৌ এখনো এ ঝড়ের আভাস সে পেয়েছে কিনা। বাবা-মা হারানোর প্রভাব শিশুর উপর নানাভাবে পড়ে, যার খুব কমই চোখে দেখা যায়। সবসময়ের জন্য ওকে বুকে আগলে রাখতে পারে এমন কাউকে লাগবে, আমার মনে হয় আপনার আন্টি এ কাজ করতে পারবে।
আমার বর-কে দেখেছি সবসময় নিজেকে গুটিয়ে রাখে, খুব বেশি চাপা স্বভাবের আর প্রিয়জনদের বাচ্চার মতো করে আগলিয়ে রাখে। যেন একটু চোখ আড়াল হলেই সবাই হারিয়ে যাবে। যার কারণ হয়তো ওর চার বছর বয়সে আকস্মিক বাবা হারানো। আপনার এই সুন্দর বোনটার ছোট্ট ছেলেটা যেন মা হারানোর মতো অপূরণীয় কষ্ট সামলিয়ে মায়ের মতোই উচ্ছ্বল, প্রাণবন্ত মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠে এই কামনাই করি মনে-প্রাণে!
ও এমনিতে খুব বুদ্ধিমান ছেলে। সবকিছুই তাড়াতাড়ি বুঝে ফেলে। সব বিষয়েই খুব কৌতূহলী। অনেক প্রশ্ন করে সবসময়। কিন্তু গত ক'দিনে মাকে নিয়ে কিচ্ছু জিজ্ঞেস করছে না। অথচ মাকে যে নতুন একটা জায়গায় রেখে আসা হয়েছে এটা সে দেখেছে। আমরা আসলে বুঝতে পারছি না সব বুঝে চুপ করে আছে নাকি ও বুঝতে পারছে না। যে অপত্য স্নেহ আমরা আপুর কাছ থেকে পেয়েছি তার ছেলে হয়েও ও তার কিছুই পাবে না ভাবলেই খুব কষ্ট হয়।
আপনার শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ।
নীলম, আপনার লেখাটা পড়ে আচ্ছন্য মন নিয়ে লিখছি। সম্ভব হলে আপনার হাত দু’টো একটু ধরতাম। আর যে শিশুটি মা’কে হারালো তাকে বুকে জড়িয়ে ধরতাম।
যিনি চলে গিয়েছেন, তাঁর মঙল কামনা করছি। মা’হারা শিশুটির সুন্দর একটা জীবন কামনা করছি। যে মানুষটি এত আলো ছড়িয়ে দিয়ে গিয়েছেন, তাঁর সন্তানটি ভালোভাবে মানুষ হোক।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
সচলে ক্যান্সার ট্যাগে সার্চ দিয়ে আপনার লেখা পড়েছিলাম, আপু। সময়-সুযোগ হলে আরো লিখবেন লড়াইয়ের কথা। আমার বোনকে দেখে প্রতিদিন অবাক হয়েছি আমি। কিভাবে পারছে ও! আমার খুব ইচ্ছে ছিল আপু যখন একটু সুস্থ হবে তখন ওকে নিয়ে লিখবো। হলো না। শেষ পর্যন্ত এই পরাজয়ের কথাই লিখতে হল।
আপনার আপুর জন্য আমার মনটাও কেমন করে উঠল। আমি আর কী বলব, যা বলার তিনিই বলে গিয়েছেন, আমি শুধু দু লাইন পুনিরোক্তি করতে পারি মাত্র--
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
এরকম ছিল না লাইনগুলো?
পড়তে পড়তে চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল বারবার আর নিজের ছয় বছরের মেয়ের কথা মনে পরছে ।
ইসরাত
মানুষ বোধহয় যৌবনে মৃত্যুকে সবচেয়ে বেশি চোখে দেখে। চারিদিকে যখন জীবনের আহ্বান তখন দিকে-বেদিকে মৃত্যুর মিছিল ভয়ের একটা হিমস্রোত বইয়ে দেয় শরীরে। প্রতিটি প্রিয় মানুষের বিদায় গভীরতম শোক, আর সেটি যদি অকালে হয় তাহলে সেটির কোন প্রকাশ ক্ষমতা থাকেনা মানুষের। উনার রেখে যাওয়া সন্তান যেন উনার আদর্শকে ধারণ করে বড় হতে পারে সেই প্রার্থনা করছি।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
পড়তে গিয়ে খুব কষ্ট হচ্ছিল। মানুষ সবাইকে একদিন মরতে হবে এ বাস্তবতা যত ই মেনে নেই না কেন অসময়ে সবাইকে কাদিএ চলে যাওয়া, যেখানে যোগা যোগের সব পথ বন্ধ। বাবুটার জন্য খুব মায়া হচ্ছে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
তবু ভালো থাকুক সবাই।
যে যেখানে থাকুক, ভালো থাকুক- কামনা এটুকুই।
দীপংকর চন্দ
নতুন মন্তব্য করুন