• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ডাবলিনের ডায়েরী - ১৭ (২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯)

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: সোম, ২৮/০৯/২০০৯ - ৩:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেক দিন পর ব্লগে এলাম। ঠিক কত দিন পর মনে নেই। তবে আমার ভিসতা মহাশয় তার ফ্রিকুয়েন্টলি ইউজড এপ্লিকেশন মেন্যূ থেকে ওপেন অফিস রাইটার সরিয়ে দিয়েছিল। তাতেই বুঝলাম বিরতীটা বেশ লম্বাই হয়েছে।

এমনিতেই আমার জীবন রোবটিক। সপ্তাহের পর সপ্তাহ আমি একই কাজ করে যাই। তবুও আমার কাছে এতটা রোবটিক মনে হয়নি যতটা এখন হচ্ছে। এটাকে ঠিক চাপ বলা যায় না। কেননা চাপতো চাপিয়ে দেয়া থেকে আসে। আমার চাপটা নিজের থেকে। সামনে থিসিস সাবমিশন। সেই কাজ নিয়ে এতটাই ব্যাস্ত যে রান্না করাও বন্ধ করে দিয়েছি গত দুই মাস। রান্না করা যদিও আমার কাছে বিশেষ কিছু নয়। ২০০৭ এর নভেম্বর থেকে ২০০৮ এর মার্চ পর্যন্ত আমি জাঙ্ক ফুড খেয়েই জীবন কাটিয়েছি। তিন মাস পর ভাত খেয়েছি শুনে আম্মু নাকি নফল নামাজ পড়েছিল! অতএব খাওয়া বা রান্না দিয়ে আমার জীবনের রোবটিক ভাবটাকে বোঝানো যাবে না। বরং অন্য একটা উদাহরন নেই। আমার বিছানাটা আমি গত প্রায় দুই মাস গোছাই না। সকালে ঘুম থেকে উঠে সোজা ল্যাবে যাই। আর রাত নয়টায় বাসায় ফিরে খানিকক্ষণ ফেইসবুক-ইমেইল ঘেটে আবার ঘুম। সারাটা সময় ল্যাবে খট খট করে থিসিস টাইপ করা, গিম্প দিয়ে থিসিসের ছবিগুলো তৈরী করা, লেইটেক্সের ফরমেটিং নিয়ে ঘাটাঘাটি করা আর অপনেট থেকে আমার প্রোটকলের রেজাল্ট নেয়া। এই আমার জীবন। এমনও হয়েছে আমি স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করে হাটতে হাটতে হঠাৎ প্লাটফর্মের হলুদ দাগ পেরিয়ে বিপজ্জনক সীমানায় চলে গিয়েছি। বলাইবাহুল্য, তখনও মাথায় থিসিসের চ্যাপ্টার ঘুরছিল।

এই যখন জীবন, তখন সবকিছু বায়োবীয় লাগাটাই স্বাভাবিক। একটা ঈদ গেলো কয়েকদিন আগে।এবারের ঈদ ছিল রবিবার। তাই সাপ্তাহিক ছুটিটাকেই সবাই ঈদের ছুটি বানিয়ে নিয়েছিল। সেদিনও সন্ধ্যা পর্যন্ত ল্যাবে কাজ করতে করতে ভাবছিলাম, আসলে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি? কিছু মানুষ জীবনকে উপভোগ করছে। কিছু মানুষ ডিগ্রীর পর ডিগ্রী নিচ্ছে। কিছু মানুষ ধর্মের জন্য প্রাণ দিয়ে দিচ্ছে। আসলে এদের কেউ কি আদৌ জীবনের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেছে? কিম্বা এই যে আমি এত বকবক করছি, আমিও কি বুঝেছি? গৌতুম বুদ্ধ ঈশ্বরকে জন্ম দিতে চেয়েছিলেন, ডারউন হত্যা করতে। দুজনই দুজনের অবস্থান থেকে সফল। ঈশ্বর থাকুক বা না থাকুক, তাঁরা তাদের ধারণাকে প্রচার করতে পেরেছেন। আমার কাছে কেন যেন মনে হয়, এটাই আসলে জীবনের উদ্দেশ্য। একটা শিশু জন্ম নেয়া মাত্রই প্রথম যে কাজটা করে সেটা হলো চিৎকার দিয়ে কান্না। অর্থাৎ সে তার অস্তিত্বকে প্রকাশ করে। এরপর মানুষের মধ্যে যে প্রবৃত্তিটা সবচেয়ে বেশি কাজ করতে শুরু করে সেটা এই প্রকাশ করা। কিছু মানুষ পারে, কিছু মানুষ পারে না। যারা পারে তারই হয়তো পরবর্তিতে ডারউন হয়।

এত ডারউন ডারউন করার পেছনে একটা কারণ আছে। গত শুক্রবার ডারউনের অত্মজীবনী নিয়ে তৈরী করা চলচিত্র ক্রিয়েশন মুক্তি পেয়েছে। দেখার ইচ্ছে আছে। থিসিস লেখার মাঝে ঘন্টা-দেড়েকের একটা বিরতী নিয়ে এক সময় দেখে আসবো। ট্রেইলারে একটা লাইন আছে, “ইউ হ্যাভ কিল্ড গড, স্যার"। ভাবতেই অবাক লাগে, সে রকম একটা সময়ে চার্চ অব ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দাড়িয়ে মানুষটা ঈশ্বরের অস্ত্বিকে তুচ্ছ জ্ঞান করেছিল। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ডারউইনের স্ত্রী ছিল খুবই ধার্মীক। ফলে তার জন্য এই তত্ত্ব দেয়াটা ব্যাক্তিগত জীবনেও খুব যন্ত্রণাদায়ক ছিল।

যাইকোহ, ক্যাম্ব্রিজের ডারউন থেকে এবার ডাবলিনের হ্যামিলটনে আসি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র উইলিয়াম রোয়ান হ্যামিলটন ১৮৩২ সনে আলোর কোনিকাল রিফ্র্যাকশন ঘটার সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। ২০০৯ সনে এসে ট্রিনিটিরই দুই পদার্থ বিজ্ঞানী সেটা প্রমান করেছেন। গত অগাস্ট মাসে অপটিক্স এক্সপ্রেস জার্নালে তাদের এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়। কয়েকদিন আগে হ্যামিলটন লাইব্রেরী থেকে একটা বই তুলে বের হবার সময় দেখি বেশ কিছু কাঁচের গ্যালারী চকচক করছে। বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের কাজ নিয়ে ঐ বিল্ডিং-এ অনেকগুলো গ্যালারী আছে। তার ভেতরে হঠাৎ নজরে পড়ে এই গবেষণার টাইম লাইনের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা গ্যালারীটা। অদ্ভুত লাগলো দেখে। সেই কবে হ্যামিলটন অনুমান করেছিল। এরপর বিজ্ঞানীরা এই অনুমানকে প্রমান করার জন্য কত চেষ্টা করেছে। ১৭৭ বছরের চেষ্টার পর সেটা সফল হলো এই অগাস্টে। একেই হয়তো বলে সাধনা!

এবার থামছি। ঘুম পাচ্ছে খুব। যদিও মাত্র বাজে সাড়ে নয়টা। তবু শরীর এই রুটিনে চলে এসেছে। আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ....! আগামী বুধবার আমার সুপারভাইজারকে দুটা চ্যাপ্টার জমা দিতে হবে। লিখে শেষ করা খুব দরকার। কিন্তু শেষ হচ্ছে না। আগামী কাল সকাল সকাল গিয়ে লেখা শুরু করতে হবে। সারাদিন থিসিস লিখে, রাতের বেলা জিম করে বাসায় এসে শাওয়ার। তারপর আবার ঘুম। সেই একই রুটিন, একই জীবন। অক্টোবরের ৩০ তারিখ সাবমিশন। তারপর হঠাৎ করেই হয়তো সব ব্যাস্ততা দূর হয়ে যাবে। হয়তো না। মাস্টার্সইতো কেবল শেষ হচ্ছে। আসল কাজতো এরপর শুরু হবে। না থাক। অত ভাবার দরকার নেই। আপাতত থিসিসের ইম্প্লিমেন্টেশন চ্যাপ্টার নিয়েই ভবি। বিন্দু বিন্দু জল দিয়ে গড়ে তোলা সাগরটাকে পূর্ণাঙ্গতা দেয়াই এখন আমার মূখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। মহাসাগর নিয়ে পরে ভাবা যাবে!

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৯
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।


মন্তব্য

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আসলেই অনেকদিন পর লিখলেন...

লেখাটা ভাল্লাগল। এই ধরনের দিনপঞ্জি পড়তে ভাল্লাগে।
ডারউইনের উপর বেশ কিছু ডকুমেন্টারি আছে। দেখেছেন সেগুলো? দেখলে ভালো লাগবে, আশা করি।

থিসিসের জন্য শুভকামনা। ভালো থাকুন। :-)

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অতন্দ্র প্রহরী ভাই, দেরীতে উত্তর দেয়ায় আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ব্যাস্ততাটা একটু বেশি যাচ্ছে।

ডকুমেন্টারীর যদি ইউটিউব লিঙ্ক দেয়া যায় খুব ভালো হয়। অবশ্যই দেখবো।

শুভকামনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

কাজের ফাঁকে নিজের চিন্তাভাবনা, উদাস হয়ে যাওয়া, সব মিলিয়ে আদর্শ ব্লগরব্লগর। অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো।

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা রইলো।

অমিত এর ছবি

গুড্লাক

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।

রায়হান আবীর এর ছবি

সিনেমাটা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। টরেন্টো থেকে টরেন্টে কবে আসে দেখা যাক!


পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এই মাত্র পাইরাটস বে-তে সার্চ দিয়ে দেখলাম এখনও আসেনি। আশা করি ১৫ দিনের মধ্যেই চলে আসবে। এর মধ্যে যদি আমি পাই, তাহলে এখানে কমেন্টে লিঙ্ক দিয়ে যাবো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।