শুরুটা এভাবে - নিউ ইয়র্কের একটা উঁচু দালানের উপর থেকে ঝাঁপ দিচ্ছে সুপার হিরো। সবাই বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখছে তার পতন। উপর থেকে সে পড়ছে, পড়ছে। এক সময় মাটিতে এসে পড়লো এবং প্রায় আলু-ভর্তা প্রকৃতির কিছুতে পরিণত হয়ে মৃত্যু বরণ করলো। নাহ! সে আমাদের সুপার হিরো ছিল না। সেতো মানসিক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসা এক রোগী মাত্র। আমাদের “সুপার হিরো” কিম্বা “সুপার হিরো বৃন্দ” অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্যে। আপনার পাশের সিনেমা থিয়েটারেই। কাউন্টারে গিয়ে শুধু বলুন “কিক্-এ্যাস”। সাথে সাথে পেয়ে যাবেন সুপার হিরোদের দর্শন!
স্টার ডাস্ট-এর ব্রিটিশ প্রযোজক এবং পরিচালক ম্যাথু ভন এবার হাজির হয়েছে নূতন প্রকল্প নিয়ে। সাথে প্রযোজনায় সঙ্গি করেছে ব্র্যাড পিট-কে আর কাস্টিং-এ নিকোলাজ কেইজ। মার্কিন কমিক লেখক মার্ক মিলারের নূতন কমিক “কিক্-এ্যাস” এর প্রথম সংস্করণ তখনও বাজারে যাওয়ার সুযোগ হয় নি। তার আগেই সেটার সিনেমা স্বত্ব কিনে নেয় ভন। তারপর শুরু করে অন্যরকম এক মুভি বানানোর কাজ। ট্রেইলার দেখলে খুব সাদাসিধে একটা মুভিই মনে হয়। বড়জোর “এ্যামেরিকান পাই” ধরণের কিছু হবে হয়তো। পার্থক্য শুধু এক ঝাঁক টিন এইজারদের মাঝে একটা বড় মুখ – নিকোলাস কেইজ ওরফে বিগ ড্যাডি।
সিনেমার কাহিনী বলে দিয়ে আপনাদের মুভি দেখার মজাটা নষ্ট করতে চাই না। শুধু এতটুকু বলব, খুব সাধারণ কিছু মানুষ সম্পূর্ণই ভিন্ন ভিন্ন কারণে হয়ে উঠতে চায় অসাধারণ, সুপার হিরো। কেউ হিট গার্ল, কেউ বিগ ড্যাডি, কেউ রেড মিস্ট অথবা কেউ কিক্-এ্যাস। কিন্তু সবচেয়ে বড় সত্য দিন শেষে তারা আসলে নিতান্তই সাধারণ মানুষ। তাদের কোন সুপার পাওয়ার নেই। কিন্তু পরিস্থিতি সেই সাধারণ মানুষগুলোকে সুপার পাওয়ার ছাড়াই সুপার হিরো হতে বাধ্য করে। আর সেই গল্প নিয়েই হাজির হয়েছে এই নূতন মুভি - ২০১০ সনে এখন পর্যন্ত আমার দেখা সেরা মুভি।
গতকাল ২৬ মার্চ কিক্-এ্যাস মুক্তি পেয়েছে বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ডে। আজ সিনেমায় গিয়েই তাই অন্য কোন দিকে চোখ না দিয়ে সরাসরি দেখতে ঢুকলাম। খুব ভালো লাগছে এই ভেবে যে এ্যামেরিকায় মুক্তির আগেই মুভিটা দেখতে পেলাম যা ব্রিটিশ আইলস-এ বসবাস করা আমাদের জন্যে খুবই বিরল ঘটনা। তবে এ্যামেরিকা নিবাসীদের খুব বেশী দিন অপেক্ষা করতে হবে না। আগামী ১৬ এপ্রিলই আপনাদের থিয়েটারগুলোতে দেখতে পাবেন মুভিটা।
এখানে একটা মজার ব্যাপার হয়। খুব ভালো মুভি হলে মুভি শেষে দর্শক তালি দিয়ে তাদের ভালো লাগা প্রকাশ করে। আজ মুভিটা দেখতে দেখতে আমার কাছে অদ্ভুত ভালো লাগছিল। মনেমনে তখন ভাবছিলাম নিশ্চয় আজ দর্শক তালি দেবে এবং শেষ পর্যন্ত শুধু তালিই না, সবাই চিৎকার দিয়ে ভালো লাগা জানিয়েছে। এতেই ধারণা করে নিতে পারবেন দর্শককে কতটা আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে মুভিটা।
শুধু দর্শকই নয়, সমালোচকদেরও দারুণ ভাবে টেনেছে কিক্-এ্যাস। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য রোটেন টমাটোতে এখন পর্যন্ত ক্রিটিকদের ৯৫% পজেটিভ রিভিউ পেয়েছে মুভিটা আর স্কোর এসেছে ১০ এর মধ্যে ৮.৪। এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ডে সপ্তাহের সেরা ব্লক বাস্টার এখন কিক্-এ্যাস। রিলিজের দ্বিতীয় দিনেই বাতাসে কিক্-এ্যাস এর সিকুয়েল বানানোর কথা উঠতে শুরু করেছে যা প্রযোজক ভন নিশ্চিতও করেছে।
অতএব আর দেরি নয়। দ্রুত দেখে আসুন কিক্-এ্যাস এবং অপেক্ষা করতে থাকুন কিক্-এ্যাস দুই এর জন্য। কিক্-এ্যাস, ২০১০ সনের “মাস্ট ওয়াচ” মুভি।
২৭ মার্চ ২০১০
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।
মন্তব্য
হ - দেখমু নে - ট্রেইলার দেইখ্যা ব্যাপক মজা পাইছি - মার্ভেলের এ যাবত প্রায় সব কার্টুন ক্যারেক্টার মুভি হিট, যদিও কমিক বলতে আমি ডি,সি,র ভক্ত - মুভিগুলা সেমি ভুয়া হইছে - সবচে ভুয়া সুপারম্যান - কপাল আর করে বলে
-ধন্যবাদ ওয়াইল্ড-স্কোপ, ট্রেইলার দেখে বেশ মজা পাইলাম। মাঝে মাঝে এইসব ছবি দেখতে বেশ ইচ্ছা করে।
-আমার কাছে সুপারহিরো টাইপের প্রায় সব ছবি আজাইরা মনে হইছে। শুধু ডার্ক নাইট ছাড়া। ওটা আসলেই দারুন হইছে।
===অনন্ত ===
এটা আসলে সুপার হিরো ছবি না। কিছু সাধারণ মানুষের সুপার হিরো হবার ব্যার্থ চেষ্টা। দেখলে ভালো লাগবে আশা করি।
ওয়াইল্ড-স্কোপ, আপনাকে ধন্যবাদ। ট্রেইলারটা দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি দিয়ে দেয়ায় অন্যদের জন্যে সুবিধা হলো।
শুভেচ্ছা রইলো।
টুইটার
দেখার আগ্রহ হইল।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
দেখতে হবে
দেখব, যদিও ব্যাটম্যান ছাড়া অন্য কোনটাই ভালো লাগেনি।
______________
বিধিবদ্ধ পংকিলতা।
জীবন বাবু,তাঁর কবিতা।
তৃপ্তিদায়ী আত্মশ্লাঘা।
এবং এ রাতজাগা।
***************
হলে গিয়ে দেখার মতো নাকি ডাউনলোড করে দেখলেই চলবে?
অবশ্যই হলে গিয়ে দেখার মত এবং যদি সম্ভব হয় হলের সবচেয়ে বড় স্ক্রিনে।
আশা করি ভালো লাগবে।
টুইটার
এইটা ভাল লাগলে মিস্টেরী মেন দেখা উচিত।
নতুন মন্তব্য করুন