গ্রুপ পর্যায়ের শেষ ম্যাচের আগে এক স্লাইস কাঁটা-ছেঁড়া - ১ (গ্রুপ এ – গ্রুপ ডি রিভিউ)

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: মঙ্গল, ২২/০৬/২০১০ - ৮:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কিছুদিন আগে বিশ্বকাপ কবে শুরু হবে সেই প্রহর গুনতে গুনতে অস্থির হয়ে যাচ্ছিলাম অথচ এখন কিনা দেখতে দেখতে দুটা করে ম্যাচ খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে সব দলের! আগামী কাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে গ্রুপ পর্যায়ের শেষ ম্যাচগুলো। এক্ষেত্রে একটা বিষয় বিশেষ ভাবে লক্ষণীয় যে প্রতিটা গ্রুপের শেষ ম্যাচ একই সাথে চলবে। এটা ফিফার কনভেনশন, সব বড় বড় টুর্নামেন্টে এমনটাই হয়। কোন দল যাতে পরে খেলার বিশেষ সুবিধা নিতে না পারে অথবা নিজেদের খেলা দিয়ে অন্য দলের পরবর্তী পর্বে যাওয়ার পথে ইচ্ছাকৃত ভূমিকা রাখতে না পারে, সেজন্যে এই রীতি। কিন্তু তবুও দলগুলো আগের দুই খেলা থেকেই বেশ খানিকটা হিসেব কষে নিতে পারবে শেষ ম্যাচে মাঠে নামার আগে। আসুন, আমরাও তাদের দুই খেলাকে কাঁটা-ছেঁড়া করে কী হচ্ছে বা কী হতে পারে – সেটা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলি। আজ লিখছি প্রথম কিস্তি। গ্রুপ এ থেকে গ্রুপ ডি পর্যন্ত প্রথম চারটা গ্রুপের রিভিউ আছে এখানে। আগামী ২৩ তারিখ দ্বিতীয় কিস্তিতে পরের চারটা গ্রুপের রিভিউ প্রকাশিত হবে।

গ্রুপ এ-এর রিভিউ
গ্রুপ এ-তে ১৯৯৮ সনের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান এবং গতবারের রানার্স আপ ফ্রান্সের বর্তমান অবস্থা চরম শোচনীয়। প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের সাথে গোল শূন্য ড্র করার পরও তাদের অবস্থান বেশ মজবুত ছিল কেননা গ্রুপের অন্য খেলায় মেক্সিকো দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। কিন্তু পরের ম্যাচে মেক্সিকোর সাথে তারা যা করলো, এরপর তাদের দেশে ফেরত যাওয়ার পর ঢোকার সুযোগ মেলে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে! যারা বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের খোঁজখবর রাখতেন তারা হয়তো জানেন ফ্রান্সের মূল পর্বে খেলতে আসা কত বড় বিতর্কিত ছিল। থিয়েরী অঁরির পরপর দুই-দুইবার হাত দিয়ে বল হ্যান্ডেল করে দেয়া পাস থেকে ফ্রান্স গোল করে রিপাবলিক অব আয়ার‌ল্যান্ডকে প্লে-অফে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকেট পায়। অঁরি আবার বীরদর্পে সেটা স্বীকারও করেছিল ম্যাচ শেষে এবং এরপর মাস খানেক তা নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ফিফার সর্বোচ্চ স্তরে বিষয়টা উপস্থান করা হয় যদিও ফলাফল পরিবর্তন হয় নি। ডিসিপ্লিনারি কমিটি অঁরিকে নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করেছিল বটে তবে সেই ফলও ফ্রান্সের অনুকূলে যায়। মাঝ দিয়ে সুইডিশ রেফারী মার্টিন হ্যানসন গাল খেয়ে মানে-অভিমানে রেফারী জীবনের ইতি ঘটিয়ে ফুটবল থেকে অবসর নেন।

যাইহোক, গত ১৭ জুন ছিল এত নাটক করে বিশ্বকাপে আসা ফ্রান্সের সাথে মেক্সিকোর খেলা। শুরু থেকেই দুই দলের আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে খেলাটা জমে উঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিল কিন্তু তবুও প্রথমার্ধ কাটে গোল শূন্য। দ্বিতীয়ার্ধের ৬৪ মিনিটে মেক্সিকোর হার্নান্দেজকে অফ সাইডের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে ফ্রেন্চ ডিফেন্স। কিন্তু উল্টা নিজেরাই বোকা হয়ে যায় যখন লাইন্সম্যান হার্নান্দেজকে অন সাইড ঘোষণা করে পতাকা অবনমিত রেখে। ক্ষিপ্র গতির এই মেক্সিকান স্ট্রাইকার প্রথমে উল্টা হয়ে বলটা দেখতে দেখতে দৌড়ে অরক্ষিত ফ্রেন্চ ডি-বক্সের দিকে চলে আসে। তারপর অসাধারণ টেকনিকে বলটাকে প্রথমে নিজের পায়ে নেয়, এরপর ফেন্চ কিপারকে এক ডজে বোকা বানিয়ে কাটিয়ে আরো সামনে চলে আসে। তখন তার সামনে ফাঁকা নেট। তবে গতি বেশী থাকায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন হচ্ছিল। তাছাড়া এভাবে দৌড়াতে থাকলে গোল পোস্ট ছাড়িয়ে যেত সে পরবর্তী সেকেন্ডেই। এরকম অবস্থায় অসাধারণ কায়দায়, অনেকটা যেন গাড়ি ব্রেক করার মত করে থেমে, কোনাকুনি শটে বলটাকে ফাঁকা জালে পাঠিয়ে দেয়। এক কথায় দেখার মত একটা গোল। শুধু এই একবারই নয়, পুরো খেলাতেই হার্নান্দেজের ঝলক চোখে পড়ার মত ছিল। যারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড-এর ভক্ত তাদের জন্যে সুখবর হলো এই ২২ বছরের তরুণ ম্যানইউ এর ইতিহাসে প্রথম মেক্সিকান হিসেবে এই মৌসুমে যোগ দিতে যাচ্ছে।

ঐ এক গোলেই মেক্সিকোর জয় তখনও নিশ্চিত হয়নি। ফ্রান্স মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছিল গোল শোধ দিতে। তবে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছিলাম স্টার লাইন আপ নিয়ে কী অসহায় ভাবে ফ্রান্সের আক্রমণগুলো মাঠে মারা যাচ্ছে। রিবেরী (বায়ার্ন মিউনিখ), এ্যানেলকা (চেলসি), এ্যাভরা (ম্যানইউ), অঁরি (বার্সিলোনা), গালাস (আর্সেনাল), আবিদাল (বার্সিলোনা), মলুডা (চেলসি) – প্রথম বন্ধনীর ক্লাবগুলোর নাম দেখলেই বোঝা যায় কত শত ইউরো-পাউন্ড এদের দাম। অথচ আফসোস, এত এত দামী পা থেকে একটা গোল বের হয়ে এলো না। উল্টা ৭৮ মিনিটে মেক্সিকান মিডফিল্ডার পবলো বেরেইরা বল নিয়ে সবাইকে কাটিয়ে আবার ভেতরে ঢুকে যায়। কোনাকুনি ভাবে তখন সামনে শুধু কিপার। এ অবস্থায় আবিদাল তাকে ফাউল করে ফেলে দেয়। আর যায় কোথায়! রেফারী কোন রকম চিন্তা ছাড়াই পেনাল্টি দেয়। আবিদালের ভাগ্য ভালো হলুদ কার্ডের উপর দিয়ে এই যাত্রা সে রক্ষা পায়। পরবর্তীতে পেনাল্টি থেকে ব্ল্যানকো গোল করে মেক্সিকোর ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত করে। ম্যাচ শেষে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার পায় হার্নান্দেজ। উল্লেখ্য যে এই খেলায় মূল একাদশে অঁরিকে না রাখায় এবং এ্যানেলকার উপর ভরসা করায় ফ্রান্সের কোচের ব্যাপক সমালোচনা করে ফ্রেন্চ মিডিয়া।

এই খেলায় হেরে ফ্রান্সের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। গ্রুপের অন্য খেলায় উরুগুয়ে ৩-০ গোলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করে। শেষ খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ফ্রান্সের ফলাফল যাইহোক না কেন, উরুগুয়ে এবং মেক্সিকো যদি ড্র করে তাহলেই তারা দুই দল চলে যাবে পরবর্তী রাউন্ডে। আর যদি যেকোন একটা দল জেতে এবং ফ্রান্স পাঁচ গোলের ব্যবধানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায়, তবেই একমাত্র ফ্রেন্চদের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

গ্রুপ বি-এর রিভিউ
গ্রুপ এ-তে যত নাটক, গ্রুপ বি-তে ঠিক তার উল্টা চিত্র। প্রায় একতরফা ভাবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। অথচ এই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে খেলবে কিনা সেটা নিশ্চিত ছিল না বাছাই পর্বের শেষ দিন পর্যন্তও! এ দলটায় তারার অভাব নেই। বার্সিলোনার মেসিকে নিয়ে কিছু বলার প্রয়োজন দেখি না। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ফুটবলার সে। সাথে আছে ম্যানসিটির তুমুল ফর্মে থাকা সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড তেভেজ, রিয়াল মাদ্রিদের ইগুয়াইন, লিভারপুলের রড্রিগাস এবং ম্যাশিরনো, ইন্টার মিলানের মিলিতো এবং ওয়াল্টার স্যামুয়েল। এরা সবাই নিজ নিজ ক্লাবের পক্ষে বেশ নজর কাড়া খেলা দেখালেও যখনই তারা আর্জেন্টিনার হয়ে খেলতে শুরু করে তখনই কেন যেন পালহীন নৌকায় পরিণত করে দলটাকে। সর্বশেষ কোপা আমেরিকার ফাইনালে তারা ব্রাজিলের কাছে শোচনীয় ভাবে ৩-০ গোলে পরাজিত হয়। আর বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে তাদের প্রদর্শনী ছিল “সেই রকম” – বলিভিয়ার কাছে ৬-১ গোলে, ইকুয়েডরের কাছে ২-০ গোলে, ব্রাজিলের কাছে ৩-১ গোলে, প্যারাগুয়ের কাছে ১-০ গোলে এবং চিলির কাছে ১-০ গোলে পরাজয় তাদের প্রায় ছিটকে দিয়েছিল মূল পর্ব থেকে। শেষ পর্যন্ত বাছাই পর্বের শেষ দিনে উরুগুয়েকে ১-০ গোলে পরাজিত করে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকেট হাতে নেয় তারা। কিন্তু বিশ্বকাপে এসেই সেই দল গেলো পুরোপুরি পাল্টে। প্রথম খেলায় নাইজেরিয়ার বিপক্ষে নূন্যতম গোলের ব্যবধানে জয় পেলেও খেলেছিল তারা অসাধারণ। সেদিন নাইজেরিয়া তাদের গোলকিপারের অসাধারণ দৃঢ়তায় ব্যবধান এত কম রাখতে পেরেছিল। ঐ খেলায় মেসির অন্তত তিনটা গোলের সুযোগ যেভাবে প্রতিহত হয়েছে তা সম্ভাব্যতার সূত্রদের সার্থকতাকে ওলোট-পালট করে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট!

তবে পরের খেলায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে তারা ৪-১ গোলের বড় জয় পায়। অথচ দক্ষিণ কোরিয়া কিন্তু সেদিন খারাপ খেলে নি। ডাবলিনের এক বাংলাদেশী ভাই-এর বাসায় প্রজেক্টার লাগানো হয়েছিল বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে। সেখানে খেলা দেখার আমন্ত্রণ ছিল আমার। যথাসময়ে গিয়ে দেখি হৈচৈ পড়ে গিয়েছে খেলা দেখা নিয়ে। আমি ইংল্যান্ডের সমর্থক হলেও ভালো খেলা সব সময় উপভোগ করি। ওখানে প্রায় সবাই আর্জেন্টিনার সমর্থক ছিল। তাই আমি ইচ্ছা করেই দক্ষিণ কোরিয়াকে সমর্থন করতে থাকি। শুরুতে কোরিয়া বেশ সমান তালে খেলে গিয়েছে। ১৭ মিনিটে আর্জেন্টিনার একটা কর্নার কিক পোস্টের সামনে জটলার মধ্যে দাঁড়ানো কোরিয়ান পার্ক চু-ইয়াং এর পয়ের উপর এসে পড়ে। মজার ব্যাপার ইয়াং কিন্তু চুপচাপ দাঁড়িয়েই ছিল, এমন কি পাও চালায় নি – শুধু এক কদম সামনে এগিয়ে ছিল। বলটা নাটকীয় ভাবে তার পায়ের উপর এসে পড়ে সোজা জালে ঢুকে যায়। মুহূর্তে আর্জেন্টাইন শিবির উল্লাসে ফেটে পড়ে আর কোরিয়ানরা হতবাক হয়ে যায়। আরো খানিকটা পরে খেলার ৩৩ মিনিটে মেসির পাস এলোমেলো হেডে আকাশে ঘুরে আন-মার্কড ইগুয়াইন এর কাছে আসে যে সম্ভবত চুলচেরা বিশ্লেষণে অফসাইডেই ছিল। ইগুয়াইন কিপারের প্রায় মুখের সামনে থেকে হেড করে আর্জেন্টিনার লিডকে ২-০ করে দেয়।

খেলা চলতে থাকে। প্রথামার্ধের অতিরিক্ত সময়ে, খেলায় যখন একটু ঢিলে আমেজ, তখন আর্জেন্টাইন সেন্টার ব্যাক মার্টিন ডেমিচেলিস অনেকটা অন্যমনস্ক ভাবে একটা পাস ধরে কিপারকে আবার ব্যাক পাস দিতে যায়। কিন্তু এ সময় অনেকটা ভূতের মত ডেমিচেলিসের পেছন থেকে আবির্ভাব হয় কোরিয়ান লি চুং ইয়াং-এর। চুং ইয়াং বলটা কিপারের কাছে যাওয়ার আগেই ক্ষিপ্র গতিতে ডেমিচেলিসকে পাশ কাটিয়ে ধরে ফেলে এবং এগিয়ে আসা আর্জেন্টাইন কিপারের শরীরের উপর দিয়ে সোজা জালে পাঠিয়ে দেয়। এই গোলটা নিয়ে পরবর্তীতে অনেক বিশ্লেষণ হয়েছে। মোটামোটি সবাই একমত যে ডিফেন্সের এই করুণ অবস্থার উন্নতি ঘটাতে না পারলে বড় দলগুলোর সাথে আর্জেন্টিনাকে ভুগতে হবে।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হলে কোরিয়ার দাপট স্পষ্ট হয়ে উঠে। একেকবার মনে হচ্ছিল যেন কোরিয়া সমতা নিয়ে আসবে। কিন্তু একের পর এক কোরিয়ান আক্রমণ গোল মুখে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছিল। তবে এটাও ঠিক এ জন্যে আর্জেন্টাইন ডিফেন্সকে সাধুবাদ দেয়া যায় না কেননা বিপজ্জনক ভাবে ঢুকে পড়েও গোল করতে না পারাটা কোরিয়ানদের বিফলতা ছিল, আর্জেন্টাইন সফলতা নয়। এভাবে খেলা যখন শেষের দিকে, তখন ৭৬ মিনিটে হঠাৎ করে তীব্র গতিতে মেসি বল নিয়ে বাম পাশ দিয়ে কোরিয়ান ডিফেন্স ভেঙ্গে ঢুকে পড়ে। মেসি কিপারের ঠিক সামনে গিয়ে শট নিলে সেটা কিপার হাত দিয়ে প্রতিহত করে। কিন্তু বেচারার দুর্ভাগ্য, বলটা গিয়ে আবার মেসির পায়ে পড়ে। এবার মেসি আবার শট নিলে সেটা সাইড বারে লেগে ডান দিকে সরে যায়। প্রিয় পাঠক, অনুমান করুন বলটা কার পায়ে গিয়ে পড়ে? হ্যা, আবারও ইগুয়াইন। ঠিক আগের গোলের সময় যেখানে সে ছিল, এবারও সেখানে দাঁড়ানো। এবারও পুরোপুরি আন-মার্কড এবং আবারও অফসাইড এবং এবারও লাইন্সম্যানের পতাকা অবনমিত! আলতো টোকায় বলটা জালে পাঠিয়ে দিতে রিয়াল মাদ্রিদের এই স্ট্রাইকার কোনই ভুল করে নি। খেলার ৮০তম মিনিটে আবার আর্জেন্টিনা বাম পাশ থেকে আক্রমণ করে এবং তিনজন আন-মার্কড আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় তখন ডান দিকে একই সারিতে দৌড়ে ভেতরে ঢুকছে – কোরিয়ান ডিফেন্সের ভয়াবহ করুণ চিত্র। আবারও বলটা ইগুয়াইনের কাছে যায়, প্রায় (একটু পেছনে) আগের দুটা গোলের জায়গা থেকেই কিপারের মুখের সামনে হেড করে সে হ্যাট্রিক করে ফেলে। আর্জেন্টিনা ৪ – দক্ষিণ কোরিয়া ১ – স্কোর লাইন যতটা একতরফা দেখাচ্ছে ততটা কিন্তু নাও হতে পারতো। তবে নিঃসন্দেহে আর্জেন্টিনা যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে। ম্যান অব দ্যা ম্যাচ ইগুয়াইন।

বি গ্রুপের অন্য খেলায় গ্রীস নাইজেরিয়াকে হারায়। খেলার ১৬ মিনিটে নাইজেরিয়া গোল করে লিড নেয়। কিন্তু ৩৩ মিনিটে, বল যখন সাইড লাইনের বাইরে, নাইজেরিয়ার সানি কাইটা সম্পূর্ণ অকারণে (কোন রাগারাগি পর্যন্ত হয়নি) গ্রীসের একজনকে লাথি মারে। সাথে সাথে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়। এ সময় সানি কাইটা অবাক হবার ভান করে যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল তাতে মনে হচ্ছিল দুই-একটা লাথি মাঠে মারাই যায়। এতে লাল কার্ড দেখানোর কী আছে?!!! এই অপেশাদারী মনভাবের কারণেই মূলতঃ ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হারে নাইজেরিয়া। ৪৪ এবং ৭১ মিনিটে ১০-জনের নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে দুটা গোল করে গ্রীস ২-১ গোলে জয় তুলে নেয়।

এই গ্রুপে বর্তমানে যে অবস্থা তাতে আর্জেন্টিনা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান এবং দক্ষিণ কোরিয়া গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। ইতিমধ্যে দুই খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে আর্জেন্টিনা তাদের কাজ অনেকটা সহজ করে রেখেছে। অন্য দিকে দুই খেলায় কোরিয়া এবং গ্রীসের সংগ্রহ ৩ পয়েন্ট করে। শেষ খেলায় গ্রীস খেলবে আর্জেন্টিনার সাথে যেখানে তাদের জিততে হলে অসাধ্য সাধন করতে হবে। এমন কি ড্র করলেও চলবে না কেননা তাহলে অবশ্যই নাইজেরিয়ার কাছে কোরিয়াকে হারতে হবে, যেটা আপত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে না সম্ভব হবে।

গ্রুপ সি-এর রিভিউ
এই গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ইংল্যান্ডের অবস্থা ভয়াবহ করুণ। পরপর দুই ম্যাচে ড্র করে তাদের পিঠ এখন দেয়ালে গিয়ে ঠেকেছে। আমি নিজে ইংল্যান্ডের সমর্থক। আলজেরিয়ার সাথে ম্যাচের আগে তাই প্রস্তুতির অভাব ছিল না। ডাবলিনে একটা নাম করা স্পোর্টস বার আছে – উলশেড। সেখানে গিয়ে নিয়মিত বিগ স্ক্রিনে খেলা দেখি। গত মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগের গুরুত্বপূর্ণ খেলাগুলো ম্যানইউ-র জার্সি পরে ওখানে গিয়েই দেখেছি। সেদিনের ম্যাচের আগেও গিয়ে হাজির হলাম। কিন্তু এরপর যা শুরু হলো তাতে বিরক্তি ছাড়া আর কিছু পাওয়ার ছিল না। টেনশনে দুইটা ড্রিংস শেষ করলাম। বার কয়েক টয়লেটেও গেলাম। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে এবং ঝাপাঝাপি করে টেবিলে ড্রিংস ফেলে একাকারও করলাম একবার। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হলো না। গোল আর হয় না। শেষ পর্যন্ত গোল শূন্য ড্র হলো খেলাটা। জেরার্ড আর ল্যাম্পার্ডের আক্রমণ দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের আলফাজ এবং জয় ফুটবল খেলছে। আর ওয়েন রুনী? তিনি মাঠে ছিলেন নাকি? ওহ, হ্যা ছিলেন। তবে সেটা খেলা দেখে বোঝা যায় নি, বরং মাঠ ছাড়ার সময় তেড়ে গিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে ইংলিশ সমর্থকদের এক হাত নেয়ার ঘটনায় বোঝা গেলো। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে গত দশ ঘণ্টা রুনীর কোন গোল নেই। এই হতাশা আর সমর্থকদের টিটকারি মিলে বেচারাকে অস্থির করে তুলেছিল সন্দেহ নেই। তবুও তার মাপের খেলোয়াড়ের কাছ থেকে আরো পরিণত ব্যবহার আশা করা যায়। পরদিন অবশ্য ইংলিশ ম্যানেজমেন্ট জোর করে তাকে দিয়ে ক্ষমা চাইয়েছে।

অন্য দিকে দিনের আরেক খেলায় যুক্তরাষ্ট্র এবং স্লোভেনিয়া দারুণ উপভোগ্য একটা ম্যাচ উপহার দিয়েছে। খেলার প্রথমার্ধ দেখে অবাক হচ্ছিলাম এই ভেবে যে যুক্তরাষ্ট্র কী করে ইংল্যান্ডের সাথে আগের ম্যাচ ড্র করলো? স্লোভেনিয়ার আক্রমনের মুখে এলোমেলো যুক্তরাষ্ট্র দুই গোল হজম করে বসে ১৩ এবং ৪২ মিনিটে। কিন্তু বিরতীর পর যেন অন্য এক যুক্তরাষ্ট্র খেলতে নামে। ৪৮ মিনিটে ডনোভ্যানের গোলটা এবারের বিশ্বকাপের চোখ ধাঁধানো গোলগুলোর একটি ছিল। সাইডবারের কাছে দাঁড়িয়ে খুবই জটিল এ্যাঙ্গেলে এবং কিপারের ঠিক মুখের সামনে থেকে যেভাবে সে গোলটা করলো সেটা না দেখলে কিছু মিস করা হবে নিঃসন্দেহে। তাদের সমতাসূচক গোলটা আসে ৮২ মিনিটে ব্র্যাডলির পা থেকে। এর পরপরই তারা আরেকটা গোল করে যেটা ফাউলের দায়ে বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু পরে রিপ্লেতে দেখা যায় আসলে ফাউল করা হয় নি বরং স্লোভেনিয়ার একজন খেলোয়াড় নিজে নিজেই পড়ে যায় আর রেফারী ভাবে তাকে টেনে ফেলে দেয়া হয়েছে। উল্টা গোল না হলে যুক্তরাষ্ট্র পেনাল্টি পেত কেননা তাদের তিনজন খেলোয়াড়কে টেনে ধরে রাখা হয়েছিল। ম্যাচ শেষে তাদের কোচকে বেশ আনন্দিত মনে হলো। ০ – ২ গোলে পিছিয়ে থেকে যে ২ – ২ গোলে ম্যাচ ড্র করতে পেরেছে সেটাই তার কাছে বড় মনে হচ্ছিল। তার হাসি দেখে আইরিশ টিভির বিশ্লেষকরা বলছিল সে হয়তো হোটেলে গিয়ে রিপ্লে দেখলে তখন বুঝতে আসলে রেফারী তাদের জয়টা ছিনিয়ে নিয়েছে!

বর্তমানে এই গ্রুপ থেকে স্লোভেনিয়া ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। তাদের পরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ড ১ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে ২য় এবং ৩য় স্থানে রয়েছে। তৃতীয় খেলায় যদি ইংল্যান্ড স্লোভেনিয়াকে হারাতে পারে তাহলে তারা সরাসরি ৫ পয়েন্ট নিয়ে পরের পর্বে চলে যাবে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্র যদি আলজেরিয়াকে হারাতে পারে তাহলে তারাও ৫ পয়েন্ট পাবে এবং পরের পর্বে যাবে। সেক্ষেত্রে বাদ পড়ে যাবে শীর্ষে থাকা স্লোভেনিয়া এবং গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান নির্ধারিত হবে গোল গড়ে। কিন্তু কোন ভাবে যদি স্লোভেনিয়া ইংল্যান্ডের সাথে ড্র করতে পারে তাহলে তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে বাদ পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে ইংল্যান্ডের কেননা যুক্তরাষ্ট্রের গোল গড় ইংল্যান্ডের থেকে ভালো।

গ্রুপ ডি – এর রিভিউ
অন্যান্য ইউরোপিয়ান দলের এবারের বিশ্বকাপের রীতি ধরে রাখতেই কিনা, শেষ পর্যন্ত এই গ্রুপ থেকে জার্মানীও করুণ পরিণতি বরণ করলো, অন্তত এক খেলার জন্যে। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-০ গোলে বিধস্ত করা দল পরের ম্যাচেই হেরে গেলো সার্বিয়ার কাছে ০-১ গোলে। যতই বলা হোক খেলা থেকে রাজনীতিকে দূরে রাখা উচিত, কিন্তু যখন বিষয় এসে যায় বৈরী ইতিহাসের তখন আর সেটা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। নব্বইয়ের দশকে ইউগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে যে ছয়টা (বর্তমান সময়ের কসভোকে ধরলে সাতটা) আধুনিক রাষ্ট্র জন্ম নিয়েছিল তার একটি সার্বিয়া। প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ – দুবারই জার্মানী কর্তৃক নির্যাতিত হয়েছিল এই দেশটি। তাই এক কালের রণক্ষেত্রের শত্রুকে এদিন ফুটবল মাঠে পেয়ে সার্বিয়ানরা হয়তো রোমাঞ্চিত ছিল – অন্তত আইরিশ ধারাভাষ্যকার তিনজন যেন তাই প্রতিষ্ঠা করে ফেলল! আর তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে খেলার রেফারীও প্রথম থেকে শুরু করলো গুলি ছোড়ার মত করে হলুদ কার্ড ছোড়া। ১২ মিনিটে ক্লোসেকে একটা অহেতুক হলুদ কার্ড দেখাল। যদিও ক্লোসে পেছন থেকে ট্যাকেল করেছিল কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেলো সে আসলে ফাউল করে নি বরং পড়ে যাওয়ায় তার পা লেগে যায় সর্বিয়ান খেলোয়াড়ের পায়ে। একটু পরই ১৮ এবং ১৯ মিনিটে পরপর দুই জন সার্বিয়ান – ইভানোভিচ এবং কলারভকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে দিল। সমতা করতেই হয়তো ২২ এবং ৩২ মিনিটে জার্মানীর কেডিরা এবং লাহমকেও হলুদ কার্ড দিল। খেলা দেখছিলাম আইরিশ ন্যাশনাল টিভির অনলাইন ভার্সন থেকে। যখনই অনলাইনে খেলা দেখি তখনই ফেইসবুকে সহ ব্লগার সাবিহ ওমরের সাথে আমার স্ট্যাটাসে কমেন্ট চালাচালি চলতে থাকে। ওমর জার্মানীর ফ্যান। সেদিন তার স্ট্যাটাস ছিল অনেকটা “আমাকেও না আবার হলুদ কার্ড দেখায়” বা এই ধরণের। খেলাটাকে যখন কমেডি বানিয়ে ফেলেছে রেফারী তখন আমি গিয়ে ওমরের সাথে স্ট্যাটাসে কমেন্ট চালাচালি শুরু করলাম। হঠাৎ দেখি ওমর কমেন্ট করেছে, ক্লোসেকে লাল কার্ড দেয়া হয়েছে! দ্রুত স্ট্রিমিং-এ ফিরে গেলাম। ঘটনা সত্যি – ৩৭ মিনিটে তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড তথা লাল কার্ড দেখান মহামান্য কার্ড বিশেষজ্ঞ রেফারী। ক্লোসে নিতান্তই ভদ্রলোক। তাই খুব একটা উচ্চবাচ্চ করে নি। কেবল বিস্ময় মাখা হাসিটা বোঝাচ্ছিল সে কতটা অবাক হয়েছে এই সিদ্ধান্তে।

যাইহোক, ঠিক কী করেছিল ক্লোসে সেটা বোঝার চেষ্টা করছি যখন তখনই গোল! ১০ জনের জার্মানীর বিরুদ্ধে ৩৮ মিনিটে করা সার্বিয়ার প্রথম আক্রমণ থেকেই গোল। যারা গোলটা দেখেন নি তাদের অবশ্যই অনলাইনে সার্চ দিয়ে গোলটা দেখা উচিত। সার্বিয়ার জোভানোভিচ কিপারের মুখের উপর লাফ দিয়ে শুন্যে থাকা অবস্থায় নব্বই ডিগ্রী কোনে (শুন্যে ভাসমান অবস্থায় অত্যন্ত কঠিন একটা এ্যাঙ্গেল) কিক করে তাদের দেশের জন্যে ঐতিহাসিক গোলটা করে। উল্লেখ্য যে জার্মানীকে দেয়া এটাই সর্বিয়ার ইতিহাসের প্রথম গোল।

খেলা এগিয়ে চলতে থাকে। এ সময় ১০ জনের জার্মানী বেশ দাপটের সাথেই আক্রমণ করছিল কিন্তু আসল যে উদ্দেশ্য সেটায় তারা সফল হতে ব্যর্থ হচ্ছিল বারবার। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য দেবী মুখ তুলে তাকায় জার্মানীর দিকে এবং তারা ৬০ মিনিটে পেনাল্টি পায়। কিন্তু হায়! দুর্ভাগ্য যেদিন তাড়া করে সেদিন মনে হয় শেষ দেখে ছাড়ে। পোডোলস্কির নেয়া শটটা ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেয় সার্বিয়ান কিপার। এরপর আর কোন দিকেই গোল সংখ্যা বাড়ে নি। তবে হলুদ কার্ডের মহড়া ঠিকই চলছিল। ৫৭ এবং ৫৯ মিনিটে দুইজন সার্বিয়ানকে এবং ৭৩ মিনিটে আরো একজন জার্মানকে কার্ড দেখানো হয়। ফলে পুরো ম্যাচে মোট আটটা হলুদ কার্ড এবং একটা লাল কার্ড প্রদর্শিত হয়।

তবে এই পরাজয়ে জার্মানীর খুব একটা ক্ষতি হয়েছে বলা যায় না। তারা এখনও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হতে পারবে যদি শেষ ম্যাচে ঘানাকে পরাজিত করতে পারে। কেননা পরদিন গ্রুপের অন্য খেলায় ঘানা অস্ট্রেলিয়ার সাথে ১-১ গোলে ড্র করে। সেই খেলায় অস্ট্রেলিয়া ১১ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় কিন্তু ২৫ মিনিটে ঘানা পেনাল্টি থেকে সমতা ফিরিয়ে আনে। বর্তমানে ঘানার পয়েন্ট ৪ এবং জার্মানী ও সার্বিয়ার ৩। যদি জার্মানী শেষ খেলায় ঘানাকে হারায় এবং সার্বিয়া অস্ট্রেলিয়াকে হারায় তাহলে এরা দুই দল চলে যাবে পরের রাউন্ডে – গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় সে ক্ষেত্রে জার্মানী বিশেষ সুবিধা পাবে। কিন্তু যদি জার্মানীর সাথে ঘানার খেলা ড্র হয় এবং সার্বিয়া জিতে যায়, তাহলে জার্মানী নক আউট হয়ে যাবে। অতএব বুঝতেই পারছেন প্রিয় পাঠক, অবস্থা দারুণ টানটান এই গ্রুপে। আগামী তেইশ তারিখের খেলার পরই এই জটের সমাধান হবে।

এই ছিল মোটামোটি প্রথম চারটা গ্রুপের অবস্থা। পরের চার গ্রুপের খেলায়ও ঘটেছে দারুণ সব নাটক। ব্রাজিল বনাম আইভরি কোস্টের রেসলিং ম্যাচ অথবা পর্তুগালের গোল বন্যা – সব থাকবে দ্বিতীয় কিস্তির লেখায়। দুই দিন অপেক্ষার অনুরোধ করে আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি।

২১ জুন ২০১০
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

"মেসি কিপারের ঠিক সামনে গিয়ে শট নিলে সেটা কিপার হাত দিয়ে প্রতিহত করে।" যদ্দূর মনে পড়ে, বলটা কিপারের পায়ে লাগে। অবশ্য ভুল ও হতে পারে আমার।

সজল

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

হ্যা, ভুলটা আমারই। বলটা কিপারের বাম পায়ে লাগে। এই মাত্র ইউটিউব থেকে হাইলাইটস দেখলাম।

শুভেচ্ছা রইলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

রিভিউ দুর্দান্ত হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির অপেক্ষায় রইলাম হাসি

-------------------------------------
কুটুমবাড়ি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

দ্বিতীয় কিস্তি লেখা শুরু করেছি। আশা করিছি গ্রুপ ই-এর ম্যাচ শুরুর আগেই পোস্ট করতে পারবো। হাসি

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

রিভিউটা জটিল ... গোগ্রাসে গিললাম। পরের পর্বের অধীর অপেক্ষায় ...

জেরার্ড আর ল্যাম্পার্ডের আক্রমণ দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের আলফাজ এবং জয় ফুটবল খেলছে। - আমার দ্যাশের সুনার ছেলেদের অপমান সইবোনা রে কালিয়ে ... ঢিচ্চিয়া ... ঢিচ্চিয়া ... ঢিচ্চিয়া ...

===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ। পরের পর্ব আসছে শীগ্রই হাসি

আমার দ্যাশের সুনার ছেলেদের অপমান সইবোনা রে কালিয়ে ... ঢিচ্চিয়া ... ঢিচ্চিয়া ... ঢিচ্চিয়া ...

দেঁতো হাসি

দিগন্ত এর ছবি

এক্ষেত্রে একটা বিষয় বিশেষ ভাবে লক্ষণীয় যে প্রতিটা গ্রুপের শেষ ম্যাচ একই সাথে চলবে। এটা ফিফার কনভেনশন, সব বড় বড় টুর্নামেন্টে এমনটাই হয়।

১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা আর ১৯৮২ সালে পশ্চিম জার্মানী ও অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে গড়াপেটার অভিযোগের ভিত্তিতে এই নীতি। ১৯৮২ সালে গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে জার্মানী ও অস্ট্রিয়ার খেলা জার্মানী ১-০ জিতলে দুই দলই পরের রাউন্ডে যাবে এই অবস্থায় খেলা শুরু করে প্রথম দশ মিনিটে গোল পেয়ে যায় জার্মানী। এর পরে খেলা শুধু মাঝমাঠেই হয়, কেউ গোল করার বিশেষ চেষ্টা করেনি। শেষ দিকে দর্শকেরা চেঁচামেচি শুরু করে। এর ফলে আলজিরিয়া ছিটকে যায়, কিন্তু জার্মানী ফাইনাল অবধি ওঠে।

৪৮ মিনিটে ডনোভ্যানের গোলটা এবারের বিশ্বকাপের চোখ ধাঁধানো গোলগুলোর একটি ছিল। সাইডবারের কাছে দাঁড়িয়ে খুবই জটিল এ্যাঙ্গেলে এবং কিপারের ঠিক মুখের সামনে থেকে যেভাবে সে গোলটা করলো সেটা না দেখলে কিছু মিস করা হবে নিঃসন্দেহে।

আমি পরিষ্কার গোলকিপারের দোষ দেখি। গোলকিপার গোল ছেড়ে বেরিয়ে আসার কোনো চেষ্টাই করেনি। গোলকিপারের পজিশন দেখুন ছবিতে, পোস্ট ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। শট মারার পরে তো গোলের ভেতরেই ঢুকে গেল। হান্ডানোভিচ ইউরোপের একজন অন্যতম ভাল গোলকিপার - কেন এরকম করল বুঝলাম না।
auto


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা আর ১৯৮২ সালে পশ্চিম জার্মানী ও অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে গড়াপেটার অভিযোগের ভিত্তিতে এই নীতি। ১৯৮২ সালে গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে জার্মানী ও অস্ট্রিয়ার খেলা জার্মানী ১-০ জিতলে দুই দলই পরের রাউন্ডে যাবে এই অবস্থায় খেলা শুরু করে প্রথম দশ মিনিটে গোল পেয়ে যায় জার্মানী। এর পরে খেলা শুধু মাঝমাঠেই হয়, কেউ গোল করার বিশেষ চেষ্টা করেনি। শেষ দিকে দর্শকেরা চেঁচামেচি শুরু করে। এর ফলে আলজিরিয়া ছিটকে যায়, কিন্তু জার্মানী ফাইনাল অবধি ওঠে।

ইতিহাসটা জানা ছিল না। অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্যে।

আমি পরিষ্কার গোলকিপারের দোষ দেখি।

একমত। কিপার অনেক জায়গা ছেড়ে দিয়েছিল উপরে। ফেবিয়ানোর গোলটাও অনেকটা এমন ছিল। এই পজিশনে এবার অনেককে বল পেতে দেখেছি কিন্তু এই দুইটা গোল ছাড়া সফল হতে তেমন একটা নজরে পড়েনি কাউকে।

দিগন্ত এর ছবি

ফাবিয়ানোর গোলে কোণ অনেক বেশী ছিল, তাছাড়া ফাবিয়ানো অনেক কম সময় দিয়েছে গোলকিপারকে ... কাট করে ঢুকে এসেই শট। সেখানে ডোনোভান অনেক সময় নিয়ে ধীরে ধীরে ক্রস করবে কিনা ভেবে চিন্তে শট নিল ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অফিসে বইয়া তড়পাইতেছি, ফ্রান্সকে দক্ষিন আফ্রিকা ভরে দিয়েছে দেখে ব্যাপক শান্তি পাইলাম, হে হে হে, পুরাই হা হা হে দি অবস্থা। এইটা কি অন্য কুনু ফ্রান্স? গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

লেখা ভালু পাইলাম, হে হে হে
ছাতার অফিস, আর্জেন্টিনার খেলা লাইভ দেখতে পারুম না, বাসায় গিয়া দেখতে হইব চিন্তা করতে গায়ে আগুন ধইরা যাইতেছে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ফাহিম এর ছবি

রিভিউ ভালৈসে, দ্বিতীয় পর্ব ছাইড়া দেন তাড়াতাড়ি...

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

দিগন্ত এর ছবি

প্রথম দুটো গ্রুপের ম্যাচ শেষ - মেক্সিকো খেলবে আর্জেন্টিনার সাথে আর উরুগুয়ে খেলবে কোরিয়ার সাথে। উরুগুয়ে আর আর্জেন্টিনার জেতা উচিত। নাইজেরিয়া অসংখ্য সুযোগ নষ্ট করে কোরিয়ার সাথে ড্র করল, গ্রীস দেওয়ালের মত ডিফেন্স করেও দুগোলে হারল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।