গ্রুপ ই-এর রিভিউ
বিশ্বকাপ মানেই আমাদের চোখে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল। পত্রিকার পাতায় তাদের গুনগানই বেশী শোনা যায়। আর ব্রিটিশ মিডিয়ার লাফ-ঝাপের কারণে ইংল্যান্ডও মাঝে মাঝে মিডিয়ার পাদপ্রদীপে চলে আসে – সেটা খেলে হোক বা না খেলেই। জার্মানীও আসে মাঝে মাঝে। হালের স্পেন বা পর্তুগালও আলোচনার টেবিলটা বেশ খানিকটা দখল করে রাখে। এত এত আলোচনার মাঝে ইউরোপের আরেকটি শক্তিশালী দল যে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে সেটা নজর এড়িয়ে গিয়েছে অনেকের। দলটি নেদারল্যান্ডস। প্রথম ম্যাচে ডেনমার্ককে ২-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে তারা জাপানকে হারিয়েছে ১-০ গোলে। গত দুই খেলায় অন্তত একটা ম্যাচে ইউরোপের পাওয়ার হাউজগুলোকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ইংল্যান্ড এবং ইটালী প্রথম দুই ম্যাচেই ড্র করেছে। জার্মানী হেরেছে সার্বিয়ার কাছে, স্পেন হেরেছে সুইজারল্যান্ডের কাছে, ফ্রান্স ড্র করেছে উরুগুয়ের সাথে আর হেরেছে মেক্সিকোর কাছে (ষোলকলা পূর্ণ করেছে শেষ খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে), পর্তুগাল ড্র করেছে আইভরি কোস্টের সাথে। কিন্তু নেদারল্যান্ডস জিতে নিয়েছে দুটো ম্যাচই। ৬ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরের রাউন্ড ইতিমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। শেষ ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা ক্যামেরুনের সাথে খেলা। সেটা থেকে ১ পয়েন্টও যদি অর্জন করতে পারে তাহলেই তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হয়ে যাবে। অন্য দিকে জাপান এবং ডেনমার্ক ৩ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এক্ষেত্রে জাপানের গোল গড় ভালো। তারা একটা গোল দিয়েছে এবং একটা গোল হজম করেছে। কিন্তু ডেনমার্ক দুই গোল করার সাথে সাথে তিন গোল হজম করেছে। ফলে -১ গোল গড় নিয়ে তারা একটু সমস্যায় আছে। শেষ খেলা তাদের জাপানের সাথে। সেখানে যদি জাপান ড্র করে, তাহলেই পরের রাউন্ডে চলে যাবে। আর ডেনমার্ককে সেই স্বপ্ন দেখতে হলে জয় ছাড়া বিকল্প নেই। এখন দেখার বিষয় সেটা ডেনমার্ক করতে পারে কিনা।
গ্রুপ এফ-এর রিভিউ
“ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ান”, “বর্তমান চ্যাম্পিয়ান” ইত্যাদি শব্দযুগল যে কোন টুর্নামেন্টেই বেশ আলোচিত হয়। সেটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এবার কি তেমন একটা শুনতে পাচ্ছেন? আসলে এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে এবার মিডিয়া লজ্জা পাচ্ছে। চার বছর আগে যখন ইটালী খুড়িয়ে খুড়িয়ে ফাইনালে গিয়ে দিব্যি কাপটা জিতে নিল, এই লজ্জার তখন থেকে শুরু। মিডিয়ায় বিভিন্ন দলের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে কিন্তু ইটালীকে সবাই অন্তরালেই রেখে দিচ্ছে। আর সেই ব্যবহারকে সম্মান দেখিয়ে ইটালীও একের পর এক ড্র করে চলেছে। প্রথম ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে প্যারাগুয়ের সাথে ড্র করতে পেরেছিল। আর এর পরের ম্যাচেতো রীতিমত লজ্জার মাথা খেয়েছে। বিশ্বকাপের অন্যতম অনভিজ্ঞ দল (এটা তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ, এর আগে খেলেছে ১৯৮২ সনে) নিউজিল্যান্ডের সাথে পিছিয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি থেকে গোল করে ড্র করে। পেনাল্টিটা না পেলে হয়তো পরের পর্বে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা ওখানেই শেষ হয়ে যেত। এই গ্রুপ থেকে প্যারাগুয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। তারা ইটালীর সাথে ড্র করা ছাড়াও স্লোভাকিয়াকে ২-০ গোলে পরাজিত হরেছে গত খেলায়। ইটালী এবং নিউজিল্যান্ড ২ পয়েন্ট নিয়ে যৌথ ভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছে (তাদের গোল গড়ও সমান – ২টা দিয়েছে, ২টা খেয়েছে)। শেষ ম্যাচে ইটালী খেলবে দূর্বল স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে। সেখানে যদি তারা জয় পায় তবে ৫ পয়েন্ট নিয়ে পরের রাউন্ডে চলে যাবে। অন্য খেলায় প্যারাগুয়ে নূন্যতম ড্র করলেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে কে হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান সেটা নির্ধারিত হবে গোল গড়ে যেখানে প্যারাগুয়ে এগিয়ে আছে দুই গোলে। আর যদি প্যারাগুয়ে জিতে যায় তাহলে আর এত হিসেব কষার প্রয়োজন পড়বে না। সরাসরি তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হয়ে যাবে।
গ্রুপ জি-এর রিভিউ
এবেরর বিশ্বকাপের ডেথ গ্রুপ এটা। উত্তর কোরিয়া বাদে গ্রুপের অন্য তিনটা দলই দারুণ খেলে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা পাঁচ জন ফুটবলারকে যদি বেছে নিতে বলা হয় তাহলে যাদের নাম আসবে তাদের তিনজনই খেলে এই গ্রুপে! এখানে আছে কাকার ব্রাজিল, রোনাল্দোর পর্তুগাল এবং দ্রগবার আইভরি কোস্ট। ফলে ম্যাচগুলোও হচ্ছে টানটান উত্তেজনার। পর্তুগাল এবং আইভরি কোস্টের খেলায় কেউ কাউকে হারাতে পারে নি। গোল শূন্য ড্র হয় সেই ম্যাচ। অন্য দিকে প্রথম ম্যাচে ব্রাজিল এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে নীচু র্যাঙ্কিং-এর দল উত্তর কোরিয়াকে ২-১ গোলে হারায়। খেলার শেষ দিকে একটা ভয় ঢুকে গিয়েছিল অনেক ব্রাজিল সমর্থকদের যে ম্যাচটা হয়তো উত্তর কোরিয়া ড্র করেও ফেলতে পারে। ফলে ব্রাজিলের সামর্থ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছিল। সেটাকে দূর করতে আইভরি কোস্টের সাথে ব্রাজিলের বিশেষ কিছু করে দেখানোর প্রয়োজন ছিল।
গত ২০ জুন ব্রাজিল মুখোমুখি হয় আইভরি কোস্টের। আইভরির দলনায়ক দ্রগবা সেদিন প্রথম থেকেই খেলার জন্যে প্রস্তুত ছিল। শুরুর দিকে ম্যাচটা বেশ উপভোগ্য ছিল। আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণে ভরপুর একটা খেলার ইঙ্গিত বহন করছিল। ২৫ মিনিটে লুইস ফ্যাবিয়ানো যে গোলটা দেয় সেটা রীতিমত চোখের জন্য একটা ট্রিট ছিল। ক্ষিপ্র গতিতে আইভরির ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে ডানদিকের বার বরাবর ভেতরে ঢুকে পড়ে সে। তারপর কিপারের সামনে গিয়ে সরাসরি তাকায় মাটির দিকে। রিপ্লেতে দেখা যায় ফ্যাবিয়ানো তার পাকে বলের নীচে একটু বেশী করে ঢুকিয়ে শট নেয় যা কিপারের মাথার উপর দিয়ে গিয়ে সরাসরি গোলে ঢুকে পড়ে। এই গোলের পর আইভরি কোস্টের খেলায় ফাউল করার প্রবণতা বেড়ে যায়। তারা এমন কিছু ভয়ঙ্কর ফাউল করতে থাকে কিছু ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়ের পায়ে যার মাধ্যমে জোড়া পা ভাঙ্গার ঘটনা ঘটতে পারতো আন্তত দুইবার। অথচ একবারও লাল কার্ড বের হয়ে আসেনি রেফারীর পকেট থেকে। এরই মধ্যে ব্রাজিল পেয়ে যায় তাদের দ্বিতীয় গোল ৫০ মিনিটে। আবারও লুইস ফ্যাবিয়ানো। তবে এবার সে দুই-দুই বার হ্যান্ডবল করে গোলটা দেয়ার আগে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল এসোসিয়েশন ফুটবলের খালাতো ভাই রাগবী ফুটবলকেই হয়তো এখন সবাই অনুসরণ করছে। দুই একবার হাতে বল লাগলে খেলা থামানোর চিন্তা কেউ করে না, এমন কি রেফারীও না! ৬২ মিনিটে ব্রাজিল তৃতীয় গোল করে খেলাটায় শেষ পেরেক ঠুকে দেয়। ৭৯ মিনিটে দ্রগবা হেড থেকে গোল করে এক গোলের ব্যবধান কমিয়ে আনে। উল্লেখ্য যে মেসি, রুনী, কাকা, রোনাল্দো এবং দ্রগবা – এই পাঁচ খেলোয়াড়ের বিশ্বকাপে গোল ক্ষরা নিরসনের পথে এটাই প্রথম স্কোর।
তবে আসল নাটক শুরু হয় এরপর। আইভরি কোস্টের খেলোয়াড়রা তখন ফুটবল ছেড়ে রেসলিং শুরু করে দিয়েছে। ৮৫ মিনিটে আইভরির মারামরি আর নাটকের মধ্যে কাকা হালকা কথা কাটাকাটি করতে গেলে সোজা হলুদ কার্ড দেখিয়ে তাকে রেফারী। খেলা তখনও থেমে আছে। ঠিক কী হচ্ছে মাঠে বোঝার চেষ্টা করছিলাম। হঠাৎ আইভরির আব্দুল কাদের কাকার কাছে ছুটে আসে, কাকা হাত তুলে নিজেকে ধাক্কার থেকে বাঁচায় এবং সাথে সাথে কাদের হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে মাটিতে পড়ে কাতরাতে শুরু করে। অথচ কাকার হাত তার মুখেই লাগেই নি। এই ঘটনা ৮৮ মিনিটে। বল তখন কাকার থেকে বেশ দূরে ছিল এবং রেফারী সেখানে দাঁড়ানো ছিল। ফলে সে ভালো করে বোঝেই নি কী হয়েছে। তবে রেফারীর বোঝারও তেমন আগ্রহ দেখা গেলো না। সে কাকাকে আবার তিন মিনিটের ব্যবধানে আবার হলুদ কার্ড তথা লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেয়। এরপর মাঠের উত্তেজনা আরো বাড়তে থাকে। তবে ভাগ্য ভালো এই রেসলিং ম্যাচ আর একটু পরই শেষ হয়ে। বলাবাহুল্য, এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলো এই ম্যাচটা।
আগের ম্যাচটা যদি বাজে হয় তো পর দিন পর্তুগাল এবং উত্তর কোরিয়ার ম্যাচটা ছিল হাস্যকর। প্রায় দুই হালী গোল হয়েছে সেদিন। ফাইনাল স্কোর দেখে এক সময় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল বিশ্বকাপটা কি ফুটবলের নাকি হকির! প্রথমার্ধের খেলায় পর্তুগাল ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। উত্তর কোরিয়ার ডিফেন্ড করা দেখে মনে হচ্ছিল তারা ব্রাজিলের মত পর্তুগালের সাথে হয়তো নূন্যতম রেখে দেবে ব্যবধান। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তারা হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে। গুনে গুনে ছয় বার তাদের গোলে বল ভরে দেয় পর্তুগাল। আরো মজার ব্যাপার, সাতটা গোল হয়েছে অথচ কোন হ্যাট্রিক নেই। এই সাত গোল ছয় পর্তুগিজের পা থেকে এসেছে। উল্লেখ্য যে এই ম্যাচে গোল করে রোনালদো তার বিশ্বকাপের গোলের খাতা খুলতে সক্ষম হয় যেটা এখন পর্যন্ত খুলতে পারে নি মেসি, রুনী অথবা কাকা।
এই গ্রুপে বর্তমানে ব্রাজিল সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। সরাসরি দুটা ম্যাচ জিতে তারা ইতিমধ্যে নাম লিখিয়েছে পরের রাউন্ডে। এখন দেখার বিষয় তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হতে পারে কিনা। শেষ ম্যাচে ব্রাজিল মুখোমুখি হবে পর্তুগালের। এখানে পর্তুগাল জিতে গেলে তারা ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হবে কিন্তু হেরে গেলে হিসেবটা অন্য রকম হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রেও তাদের সম্ভাবনা বেশী কেননা সাত গোলের বিজয় তাদের গোল গড় আকাশে তুলে দিয়েছে। পর্তুগাল যদি ১-০ গোলে হারে তাহলে আইভরি কোস্টকে ৮-০ গোলে হারাতে হবে উত্তর কোরিয়াকে যা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। অতএব, এটা ধরে নেয়া যায় যে ব্রাজিল এবং পর্তুগালই এই গ্রুপ থেকে পরের রাউন্ডে যাচ্ছে।
গ্রুপ হেইচ-এর রিভিউ
এই গ্রুপটা এখনও বেশ উন্মুক্ত আছে। এখান থেকে স্পেন, সুইজারল্যান্ড এবং চিলির মধ্যে যেকোন তিনটা দল পরের রাউন্ডে যেতে পারে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে স্পেনের অবস্থা বেশ নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরের ম্যাচেই হন্ডুরাসকে ২-০ গোলে হারিয়ে তারা আবার ফিরে এসেছে ফর্মে। ১৭ এবং ৫১ মিনিটে ভিলার করা দুই গোলের সুবাদেই এই বিজয়। আজই পত্রিকায় দেখলাম স্পেনের কোচ হুঙ্কার দিয়েছেন তাদের হালকা ভাবে না নিতে। এক ম্যাচ জিতেই এত লাফ-ঝাঁপ একটু দৃষ্টিকটু তবে দলটা যখন স্পেন যারা গত এপ্রিলেও বিশ্বের এক নাম্বার দল ছিল (বর্তমানে দুই নাম্বার দল), হুঙ্কারটা একদম উড়িয়েও দেয়া যায় না।
পরের রাউন্ডে ব্রাজিলকে এড়াতে (ধরে নিচ্ছি ব্রাজিল-পর্তুগাল ম্যাচ অন্তত ড্র হবে অথবা ব্রাজিল জিতবে) স্পেনের জন্যে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হওয়াটা জরুরী। তা না হলে বিশ্বের এক এবং দুই নাম্বার দল মুখোমুখি হয়ে পড়বে দ্বিতীয় রাউন্ডেই। সেই পথে তাদের বড় বাধা চিলি। এই চিলি প্রথম এবং দ্বিতীয় খেলায় ১-০ গোলে যথাক্রমে হন্ডুরাস এবং সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে বর্তমানে গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে। শেষ খেলায় চিলি-স্পেন দ্বৈরথই বলে দেবে কে হতে যাচ্ছে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ। তবে সুইজারল্যান্ডকেও হিসেবের বাইরে রাখাটা ঠিক হবে না। শেষ খেলায় যদি তারা দুর্বল হন্ডুরাসকে দুই গোলের ব্যবধানে হারাতে পারে তাহলে বাদ পড়ে যাবে চিলি এবং স্পেনের খেলার পরাজিত দল। আর যদি সুইজারল্যান্ড ব্যবধানটা একটু বড় করতে পারে তাহলে হয়তো তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ানই হয়ে যাবে। অতএব, এই গ্রুপে এখনও অনেক যদি-তবে রয়েছে দলগুলোর ভাগ্যে। শেষ পর্যন্ত কী হয় সেটা দেখার জন্য অবশ্যই চোখ রাখুন টিভির পর্দায়।
গ্রুপ পর্যায় শেষ হতে আর বাকী মাত্র দুই দিন। এরপর শুরু হবে “আসল” বিশ্বকাপ। নক আউট পর্ব। একদল হাসবে তো আরেক দল কেঁদে বিদায় নিবে বিশ্বকাপ থেকে। ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকবে দল সংখ্যা। ষোল থেকে আট, তারপর চার এবং দুই। সবশেষে কাপটা হাতে নেবে একটা মাত্র দল – এটাই নিয়তি। কে সেই বীর? দেখার জন্যে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুদিন। এর মাঝে বিভিন্ন খেলার রিভিউ নিয়ে মাঝে মাঝেই চলে আসবো আপনাদের কাছে। জমিয়ে তুলুন আড্ডা, জমতে থাকুক বিশ্বকাপ।
মন্তব্য
বস কি ব্রাজিল সাপোর্ট করতেসেন নাকি?
যদিও আমি ইংল্যান্ডের সাপোর্টার, তবে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার প্রতি প্রচ্ছন্ন ভালোবাসা থাকে সব সময়। ভালো ফুটবলের সমর্থক আমি সব সময়।
টুইটার
বস, একটু শর্টকাট মারলেন মনে হৈতেসে! নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রাজিল জয় নয়, অক্ষত দেহে ম্যাচ শেষ করতে পারসে এই জন্যই আমি বেশি খুশি! নক আউট পর্বে তারা হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ না করেই খেলতেসে- এমনটা দেখলেই বর্তে যাব
-----------------------------
কুটুমবাড়ি
দারুণ বলেছেন।
টুইটার
আহা! কি দারুণ রিভিউ, খুব ভালো লাগল। আসলেই রেফারির বাচ্চা যে কি খেয়ে মাঠে নামছিল ব্রা-জিল বনাম আইভরি কোস্টের খেলায়, কাকা বেচারাকে লাল কার্ড দেওয়াটা আমার মত আর্জেন্টিনা ভক্তের জন্যেই গ্রহনযোগ্য নয়। ঠিক একইভাবে ফ্যাবিয়ানোর ২য় গোলটাও
নেদারল্যান্ড আমার ২য় পছন্দের দল, তাদের নিয়েও আমি অনেক আশাবাদি, কিন্তু কেন যেন পাংখা দল নিয়েও প্রতিবারই তারা বাড়ি ফিরে যায়, সম্ভবত তনু আপা আর রেশনুভাই হাইফাই রান্ধা করে আর সেই খাবার গান্ধায় পাগল হইয়া ছুইটা যায় সেই রান্না খাইতে।
২য় রাউন্ড নিয়া আপনার লেখা পড়নের লাইগা কোমর বাইন্ধা অপেক্ষা করতেছি, দেরী কইরেন না, বিশেষ কইরা আজকের ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জার্মানীর খেলার রিভিউ অতি উপাদেয় হবে, অফিসে বইসাও আমি লাফাইছি উত্তেজনায়
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
তাহসিন ভাই, দ্বিতীয় রাউন্ডের আগে দুঃখ ভরা হৃদয়ে (ইংল্যান্ডের গ্রুপ রানার্স আপ হওয়াতে) লিখতে বসবো শেষ খেলার রিভিউ এবং নক আউট পর্বের প্রিভিউ। সাথে থাকার জন্যে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
টুইটার
ক্রিকেট জাতির ফুটবলীয় ধারাভাষ্য
টুইটার
কারেকশন
এটা হবে,
টুইটার
ইটালি আউট
তবে খেলাটা হয়েছে এবারের বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচ। এত উত্তেজনা আর কোন ম্যাচে ছিল না। নিরপেক্ষ দর্শক হিসেবে দারুণ উপভোগ করেছি।
টুইটার
তা ঠিক, আমি খেলা দেখলাম শেষ আধা ঘন্টা। সারাজীবন যেই ইটালিয়ান ডিফেন্স আর গোলকিপিং এর নাম শুনলাম, তার ছিটে ফোঁটাও অবশ্য দেখলাম না।
আহারে দূর্বল স্লোভাকিয়া
ইতালির বিদায়ে খুশি হইলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
গুরুজি, আমিও, হে হে হে, জিএমটি আইজকা সকালেও আমারে হামকি দামকি দিতেছিল, দেইখা লইব, দেখায়া দিব, এমন দেখান দেখাইছে, কি কমু, পুরাই হাহাপগে। ইতালি কিনা চ্যাম্পিয়ন, এখন মনে হইতেছে শব্দটা হইব চম্পা অন দ্যা ওয়ে ব্যাক
জিএমটি কই গেলো, লুকায়া কান্তাছে মনে হয়
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আচ্ছা ২-১ থাকার সময় ইটালি যে একটা অ্যাটেম্ট নিল, ঐটা কি গোল ছিল ? আমার তো মনে হল যে ডিফেন্ডার গোল লাইনের ভিতরে থেকে বল আটকাল।
... 1-0 সময়ে ছিলো না, ওই আক্রমণটা ?? ...
আমি যদ্দুর জানি, এখানেও ক্রিকেটের বাউন্ডারি লাইনের নিয়ম। খেলোয়াড়ের শরীরসংশ্লিষ্ট অংশ গোললাইনের ভেতরে লেগে থাকলে, ঐ অবস্থায় সে ঠেকালেও গোল। কিন্তু ঐ ডিফেন্ডারের (স্কাটেল) শরীর তো মনে হয় শুণ্যে ছিলো...
তবে এটা খুব ক্লোজ কল, আমরা তো বারকয়েক রিপ্লে দেখেও বুঝতে পারলাম না। বেচারা রেফারিও তো মানুষ...
_________________________________________
সেরিওজা
আসলে ১-০ থাকার সময় ছিল মনে হয়। আপনিই ঠিক।
নিয়ম হল পুরো বলটা পুরো লাইন পেরোতে হবে। আমার মনে হয়না পুরো বলটা পেরিয়েছিল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমার যদ্দুর মনে পড়ে, নিয়মটা হইলো বল লাইনের ভিতরে ড্রপ খাইতে হবে। ড্রপ না খেয়ে লাইন ক্রস করার পর কেউ বল ক্লিয়ার করলে সেটা গোল হবে না। তবে কোন রেফারেন্স দিতে পারতেসি না, স্যরি।
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
আসলে কি তাই ? আমারও কোনো রেফারেন্স নেই। তবে আমি ধারণা করতাম বল গড়িয়ে বা উড়ে যেভাবেই হোক গোল-লাইনের ভেতরে ঢুকে গেলেই গোল।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ড্রপ খাওয়া সম্ভবত লাগে না। মাঝে মাঝে কিছু খেলায় এমন হয়েছে যে কিপার পোস্টের ভেতর থেকে গোল ঠেকিয়েছে এবং সেটা নিয়ে পরে সমালোচনা হয়েছে। (আমিও রেফারেন্স ছাড়া কথা বলছি। তাই ভুল হতে পারে। আগেই ক্ষমাপ্রার্থী)
টুইটার
আপনার কথা ঠিক আছে ...
"A goal is scored when the whole of the ball passes over the goal line, between the goalposts and under the crossbar, provided that no infringement of the Laws of the Game has been committed previously by the team scoring the goal."
রেফারেন্সঃ এইখানে, পৃষ্ঠা ৩০ ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
রেফারেন্সটা দেয়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমাদের গোল বিষয়ক আলোচনার একটা সুন্দর সমাপ্তি হলো এটা পাওয়ায়।
টুইটার
বল লাইন অতিক্রম করল কি না তার নিয়ম সব খেলায় একই রকম হওয়ার কথা। ক্রিকেটে বাউন্ডারি লাইনের বাইরে থেকে বল ঠেকিয়ে মাঠের ভেতরে পাঠালেও ছক্কা হবে না, যদি প্লেয়ার বল টাচ করার সময় বাউন্ডারি রোপে বা রোপের বাইরে পাড়া না দেয়। একইভাবে, গোলকিপার বা ডিফেন্ডার যদি গোল লাইনের ভেতর থেকে বল ঠেকায়, কিন্তু বল টাচ করার সময় শরীর শূন্যে ভাসমান থাকে তাহলেও গোল হবে না। (আমিও রেফারেন্স ছাড়াই বললাম, তবে ক্রিকেটের বেলায় এই আইনই প্রযোজ্য)
----------------------------------
কুটুমবাড়ি
খুব খুশি হইছি। একটা নতুন দল চ্যাম্পিয়ন হোক এই কামনা করি। তাইলে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা সাপোর্টাররা ঠান্ডা হইয়া যাইব।
নূতন দলের চ্যাম্পিয়ান হবার সম্ভাবনা কিন্তু তেমন জোরালো ভাবে দেখছি না। আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলকে বেশ অপ্রতিরোধ্য লাগছে। নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল এবং স্পেনের কাপ জেতার ক্ষমতা আছে বটে, কিন্তু সেটা ঠিক বিকশিত হচ্ছে না এবার। আমার মনে হচ্ছে কাপ এবারও ঘুরে ফিরে আগের দলগুলোর কাছেই থেকে যাবে।
টুইটার
হা হা হা! ব্রাজিল সাপোর্টার রা গেলো কই! ড্র করছে এইটা বড় কথা না, বাজে খেলছে ব্যাপক। এই ফর্ম অব্যাহত থাকুক আশা করি। ভামোস ভামোস আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল বলে আর পারি না!
পথিক রহমান
ব্রাজিল যা খেললো তাতে তাদের বিশ্বকাপ জয় করা বেশ কঠিন হবে। দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনা হয়তো সহজে পার পেয়ে যাবে, কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই তাদের আসল পরীক্ষা শুরু হবে। দেখা যাক কী হয়!
টুইটার
বড় দলের সাথে আর্জেন্টিনা কী করে তা দেখার বিষয় আছে। আগেই এত লাফায়েন্না, ভাই!
পরে কেঁদে কুল পাবেন না।
-----------------------
কুটুমবাড়ি
বড়(!) দলের সাথে ব্রাজিল যা করল! হাতে পায়ে একাকার!
এখন অবশ্য ব্রাজিল এর ফাইনালের রাস্তা পরিষ্কার - ব্রাজিলের সামনে এখন খেলাগুলা এরকমঃ
১) ২য় রাউন্ড - ব্রাজিল বনাম চিলি (ধরে নিচ্ছি ব্রাজিল জিতবে)
২) ১/৪ ফাইনাল - ব্রাজিল বনাম নেদারল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ম্যাচ জয়ী (ধরে নিচ্ছি ব্রাজিল জিতবে)
৩) ১/২ ফাইনাল - ব্রাজিল বনাম ইউএস, ঘানা, কোরিয়া বা উড়ুগূয়ে
ব্রাজিল তো মনে হচ্ছে ফাকতালে ফাইনালে!!
আর্জেন্টিনার ট্র্র্যাকটা খুব কঠিন। কিন্তু ব্রাজিলেরটা বেশ সহজ। মোটামোটি ফাইনালের আগে নেদারল্যান্ডসই একমাত্র বড় দল। তবে পচা শামুকে পা কাটার সম্ভাবনা আছে। ব্রাজিল সম্ভবত সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডের কাছে হেরে যাবে!
টুইটার
নেদারল্যান্ডস কি পচা শামুক? ব্রাজিলের কাছে হেরে ওরা আগে দুবার (1994, 1998) বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে, আর একবার (1974) ওরা ব্রাজিলকে আউট করেছে। গ্রুপের খেলায় নড়বড়ে মনে হয়নি মোটেও, তাও রবেন ছাড়া।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
অতিথি লেখকের নাম কি? নাম ছাড়া মন্তব্য প্রকাশিত হওয়ার তো কথা নয়
আমার আশা নতুন কেউ চ্যাম্পিয়ন হবে।
ব্রাজিল এখন বিরক্তিকর খেলা খেলে। অবশ্য ওদেরকে দোষ দেয়া যায় না। এখন ফল নির্ভর খেলা খেলে সবাই। আনন্দ দানের জন্য খেলা মনে হয় স্পেন ছাড়া (বড় দলগুলোর মধ্যে) কাউকে খেলতে দেখলাম না।
'৮৬,'৯০-তে সবচেয়ে সুন্দর খেলা উপহার দিয়ে ব্রাজিল বাদ পড়ে। কারণ ওরা শুধু আক্রমণ করতে জানত। '৯০-তে আর্জেন্টিনা বলই পাচ্ছিল না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যারাডোনার সেই এক পাসেই ব্রাজিল কুপোকাত। রক্ষণ ভাগ আর গোলকিপার তেমন সুবিধাজনক ছিল না। অথচ এখন বিশ্বের সেরা গোলকিপার আর রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড়দের অনেকেই ব্রাজিলিয়ান।
"তবে আর যাই হোক ইংল্যান্ড মিডিয়া সৃষ্ট বড় টিম ছাড়া আর কিছুই নয়।"
জার্মানি ওদের স্বাভাবিক খেলা খেল্লে ইংল্যান্ড-এর জিতার কথা না।;-)
নতুন মন্তব্য করুন