এপ্রিল ফুল এবং মুসলিমদের পুড়ে মারার ভ্রান্ত গল্প

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: রবি, ০১/০৪/২০১২ - ৬:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাঙালির ধর্মচর্চা যতটা না উপাসনালয় কেন্দ্রীক, তার থেকে অনেক বেশি তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক। যখন কলেজে পড়তাম, সেই ১৯৯৯ - ২০০০ সনের ঘটনা, তখন ইমেইল পেতাম বার্তা সহ। ঐ ইমেইল ফরোয়ার্ড না করলে গজব আসবে, ধ্বংস হয়ে যেতে হবে ইত্যাদি। এর পর মোবাইল ফোন জনপ্রিয় হবার পর একই ধরনের বার্তা আসতে লাগলো এস.এম.এস এর মাধ্যমে। আর এখন স্যোসাল নেটওয়ার্কিং এর যুগে প্রতিদিন সকালে ফেইসবুক খুলে বসলে ওয়ালে ওয়ালে ছড়িয়ে থাকে শত শত বার্তা। যারা ছড়াচ্ছে, তারা জানারও চেষ্টা করছে না যে সত্য ছড়াচ্ছে নাকি মিথ্যা। তার উপর এক শ্রেনীর স্বল্প শিক্ষিত মোল্লা তার অজ্ঞতাকে তথাকথিত শিক্ষিত হবার মোড়কে ঢেকে সাধারণ মানুষদের করছে আরো বিভ্রান্ত। তারই রেশ ধরে আমরা জানতে পারি এপ্রিল ফুলের ইতিহাসের মুসলিম সংস্করণ। মিথ্যে এবং বানোয়াট গল্প দিয়ে গড়া এই ইতিহাস।

এক শ্রেনীর মোল্লার মতে এপ্রিল ফুলের ঘটনা বড়ই কষ্টের। বড়ই করুণ। এই দিন রানী ইসাবেলা এবং রাজা ফার্ডিনান্ড এর সেনাবাহিনী মুসলিমদের মসজিদে ঢুকিয়ে পুড়িয়ে মেরেছিল। পর্যুদস্ত মুসলিম বাহিনীকে ক্রিশ্চিয়ানরা আত্মসমর্পনের সুযোগ দিয়ে বলেছিল মসজিদে আশ্রয় নাও। এভাবে তারা কৌশলে মুসলিমদের মসজিদে ঢুকিয়ে দরজায় তালা মেরে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। মুসলিমরা যখন পুড়ে মরছিল, ক্রিশ্চিয়ানরা তখন উল্লাস করছিল। মুসলিমদের বোকা বানানোর এই দিনটি ছিল এপ্রিলের এক তারিখ। সেই থেকে ক্রিশ্চিয়ানরা এই দিনটি উদ্‌যাপন করে আসে “এপ্রিল ফুল দিবস” হিসেবে।

প্রিয় পাঠক, আমি নিশ্চিত উপরের ইতিহাস আপনি শুনেছেন। শুনেছেন বহুবার। কিন্তু কখনও কি ইতিহাস ঘেঁটে দেখেছেন এর সত্যতা কতটুকু? আসুন আজ আমরা এক সাথে ইতিহাস ঘেঁটে দেখি। জোসেফ ও' কালাহান এর লেখা এবং কর্নেল ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত গ্রন্থ A History of Medieval Spain থেকে আমরা দেখতে পাই (বইটা অনলাইনে পড়া যাবে) মুসলিমরা স্পেনে শাসন শুরু করে ৭১১ খৃষ্টাব্দ থেকে। আল ওয়ালিদ ইবন আবদ আল মালিক প্রথম উমাইয়া খেলাফতের পক্ষ থেকে স্পেনে শাসন প্রতিষ্ঠা করে এবং কিছু অংশ নিয়ে গঠিত এলাকাকে উমাইয়া খেলাফতের প্রদেশ হিসেবে ঘোষণা করে। তবে তারা ৭৫০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকে। এরপর ক্ষমতায় আসে করডোবার আমিরাত (৭৫০ থেকে ৯২৯ খৃষ্টাব্দ), করডোবার খেলাফত (৯২৯ থেকে ১০৩১ খৃষ্টাব্দ) এবং আলমনজুর (৯৩৮ থেকে ১০০২ খৃষ্টাব্দ)। শেষের জন আসলে একজন শাসক যিনি মুসলিম শাসনকে স্পেনে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তবে ইতিহাসে এর পরে দুশো বছর একচ্ছত্র আধিপত্য দেখাতে পারে নি কোন সুনির্দিষ্ট মুসলিম শাসক। মুসলিমদের স্পেন শাসন আবার পাকাপোক্ত হয় মূলতঃ ১২৩৮ সনে যখন গ্রানাডার আমিরাত প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে মুসলিমরা স্পেনের গ্রানাডা ভিত্তিক একটা খুবই শক্তিশালী রাজ্য হিসেবে পরিচিতি পায়।

স্পেনে যখন মুসলিমরা শাসন করছে তখন বিভিন্ন রাজারা যা করতে পারেন নি, একজন নারী হয়ে রানী ইসাবেলা তা করে দেখিয়েছিল। সে মুসলিমদের বিতাড়িত করেছিল স্পেন থেকে। প্রশ্ন জাগতে পারে, কে এই ইসাবেলা? হ্যা, এই সেই ইসাবেলা যে কলম্বাসকে আমেরিকা আবিষ্কারে পাঠিয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সিদ্ধান্ত গুলো স্পেনের ইতিহাসকে নূতন রূপ দিয়েছিল। ইসাবেলা অনুভব করেছিল মুসলিমদের হারাতে হলে স্পেনের ছোট ছোট রাজ্যগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আই. এল. প্লাঙ্কেটের লেখা Isabel of Castile গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি ইসাবেলা রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার কজিন এ্যারাগনের রাজা ফার্ডিনান্ডকে বিয়ে করেছিল। এই বিয়েও খুব একটা সহজ ছিল না কেননা সে সময় কাজিনকে বিয়ে করতে খোদ পোপের অনুমতি প্রয়োজন ছিল। শেষ পর্যন্ত ইসাবেলা সেটাও জোগাড় করেছিল এবং ১৯ অক্টোবর ১৪৬৯ সনে তারা বিয়ে করে।

বিয়ের পর ইসাবেলা-ফার্ডিনান্ড এর প্রধান মিশন হয়ে দাঁড়ায় মুসলিমদের পরাজিত করা। ১৪৮২ সনের ১ ফেব্রুয়ারি রাজা-রানী ভ্যালাডোলিড প্রদেশের মেডিনা ডেল ক্যাম্পোতে এসে পৌঁছান গ্রানাডা আক্রমনের লক্ষ্য নিয়ে। জন এ্যাডওয়ার্ড তার লেখা পিয়ারসন এডুকেশন থেকে প্রকশিত গ্রন্থ Ferdinand and Isabella. -তে এ দিনটিকে গ্রানাডা যুদ্ধের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ্যাডওয়ার্ডের ঐ ইতিহাস গ্রন্থ থেকেই জানা যায় যে এ সময় ইসাবেলা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে তার সেনাবাহিনীতে সৈন্য নিতে শুরু করে এবং তাদের কামান বিভাগকে আরো সুগঠিত করে সাজাতে তৎপর হয়। গ্রানাডা আক্রমনের মূল সমস্যা ছিল প্রকৃতি। অঞ্চলটা এমন ভাবে দুর্গম প্রকৃতি দ্বারা বেষ্টিত ছিল যে সেখানে নূতন করে গিয়ে আক্রমন করতে হলে অসাধারণ সেনাবাহিনী প্রয়োজন। ইসাবেলা দারুণ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে দশ বছর ধরে যুদ্ধ করে তবেই মুসলিমদের স্পেন ছাড়া করতে পেরেছিল।

এ্যাডওয়ার্ডের বর্ণনা মতে, ইসাবেলা একবারে গ্রানাডা দখল করার মত উচ্চাভিলাস দেখায় নি। বরং সে মুসলিস সাম্রাজ্যটাকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে একটু একটু করে দখল করে। ১৪৮৫ সনে রন্ডো এবং ১৪৮৬ সনে গ্রানাডার লজা দখল করে ইসাবেলার সেনাবাহিনী। লজা দখলের সময় গ্রানাডার শাসক দ্বাদশ মোহাম্মদকেও তারা বন্দি করে কিন্তু পরে ছেড়ে দেয়। ১৪৮৯ সনে দখল করে বাজা। এভাবে আস্তে আস্তে গ্রানাডার একেকটা অঞ্চল দখল করতে করতে শেষ পর্যন্ত ১৪৯১ সনে মূল গ্রানাডা আক্রমণ করে ঘেরাও করে ইসাবেলার সেনাবাহিনী। ফলে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে দ্বাদশ মোহাম্মদ আত্মসমর্পণ করে।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত পেগি লিসের লেখা গ্রন্থ Isabel the Queen অথবা জন এ্যাডওয়ার্ডের লেখা পিয়ারসন এডুকেশন থেকে প্রকশিত গ্রন্থ Ferdinand and Isabella অথবা আই. এল. প্লাঙ্কেটের লেখা Isabel of Castile গ্রন্থ অথবা জোসেফ ও' কালাহান এর লেখা কর্নেল ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত গ্রন্থ A History of Medieval Spain থেকে আমরা দেখতে পারি ১৪৯২ সনের ২ জানুয়ারি ইসাবেলা এবং ফার্ডিনান্ড গ্রানাডায় প্রবেশ করে এবং দ্বাদশ মোহাম্মদের কাছ থেকে শান্তি পূর্ণ ভাবে নগরের চাবি গ্রহণ করে।

ইতিহাসের এই পর্যায়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি, প্রথমতঃ কোন রকম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঐ দিন ঘটে নি। এবং দ্বিতীয়তঃ দিনটি ১ এপ্রিল ছিল না বরং দিনটি ছিল ২ জানুয়ারি। অর্থাৎ যে দিনকে মোল্লারা মুসলিমদের পুড়িয়ে মারার দিন হিসেবে চিহ্নিত করে, তার তিন মাস আগেই গ্রানাডা বিজয় করে ক্রিশ্চিয়ানরা। এটা ঠিক, অত্যাচার তারা করেছিল। এ্যাডওয়ার্ডের বর্ণনা থেকে জানা যায় মুসলিমদের সবচেয়ে বড় মসজিদটাকে তারা চার্চ বানিয়েছিল এবং অন্য ধর্মের মানুষদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এ কাজ যুগে যুগে সব ধর্ম ভিত্তিক শাসকরাই করেছে। তুরষ্কের সবচেয়ে বড় যে মসজিদটা রয়েছে সেটা এক কালে চার্চ ছিল।

এখন দেখা যাক এপ্রিল ফুলের ইতিহাস কী ছিল। এ্যানসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা থেকে জানা যাচ্ছে যে এপ্রিল ফুলের উৎপত্তি মূলতঃ রোমান উৎসব হিলারিয়া থেকে যা হতো ২৫ মার্চ। তবে দিনটি পরবর্তিতে বিভিন্ন জাতির মধ্যে বিভিন্ন ভাবে উৎসবের দিন হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ হিসেবে ধরা হয় ১৩৯২ সনে প্রকাশিত চসারের কেন্টারবেরি টেলস। সেখানে মার্চের ৩২ তারিখ হিসেবে এপ্রিল ফুলের উল্লেখ রয়েছে। “মিউজিয়াম অব হোক্স” এর ওয়েব সাইটে বিভিন্ন এপ্রিল ফুলের ঘটনা তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায় ইতিহাসে এপ্রিল ফুলের বড় দৃষ্টান্ত ১৬৯৮ সনে লন্ডনে ঘটে, যখন বহু মানুষকে বোকা বানিয়ে টাওয়ার অব লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। মূল কথা, এ দিনটি ইউরোপের বিভিন্ন জাতি বসন্তের শুরুর দিকের একটা উৎসব হিসেবে উদ্‌যাপন করে।

অতএব, উপরের আলোচনা থেকে এতটুকু দেখা যাচ্ছে যে স্পেনের ক্রিশ্চিয়ান সম্প্রদায়ের গ্রানাডা বিজয় এবং এপ্রিল ফুলের মধ্যে সামান্যতম সম্পর্কও নেই। অথচ মুসলিমদের পুড়িয়ে মারার এই মিথ্যেটা যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির লক্ষ্যে এক শ্রেনীর মৌলবাদী মোল্লা আমাদের সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ ধরনের মানুষের উদ্দেশ্য কখনওই ভালো হতে পারে না। এরা ধর্মকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থে। এদের কাছে ধর্ম একটা পণ্য। ক্ষমতা বিস্তারের পণ্য। এদের এখনই রোধ না করা হলে আমাদের সমাজে এরা ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে পড়বে। এদের বিনা রেফারেন্সে বলা বক্তব্যকে সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বা ইমেইলে ছড়িয়ে দিয়ে আপনার ধর্মকে আপনিও পণ্য বানানো থেকে বিরত থাকুন।

হ্যাপি এপ্রিল ফুল ডে!

১ এপ্রিল ২০১২
গ্লাসগো, যুক্তরাজ্য।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এইসব ইতিহাস নাসারাদের তৈরি! সব মিথ্যা! এই বাণী ১০০ জনকে না জানালে আপনার উপর গজব পড়বে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি
দায়ীন (frdayeen) এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ইঁদুর এর ছবি

আজ সারা দিন ফেসবুকে পোস্টের ছড়া ছড়ি দেখলাম। এতরকম পোস্ট-ই যে কাউকে ফুল বানাতে যথেষ্ট! তথ্য সূত্র হিসেবে বলা হচ্ছে-সৈয়দ আমীর আলী : দ্য স্পিরিট অব ইসলাম অ্যান্ড সারাসিল, সম্পাদনা-মাসউদ হাসয়ান, স্পেনে মুসলিম কীর্তি—এমদাদ আলী, ইউরোপে ইসলাম—তালিবুল হাশেমী, অনুবাদ—আমীনুর রশীদ এগুলো।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

স্যার সৈয়দ আমীর আলীর দ্যা স্পিরিট অব ইসলাম এবং এ্যা শর্ট হিস্ট্রি অব সারাসিন্স গ্রন্থ দুটোই আমার লাইব্রেরিতে আছে। পেইজ নাম্বার কত বলতে বলেন। এখনই ঢাকায় ফোন লাগাচ্ছি ক্রস-চেকের জন্যে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নিয়াজ ভাই,
আপনার সংগ্রহে কি "মাসউদ হাসান" কর্তৃক 'সম্পাদিত' কপি আছে? চিন্তিত
সৈয়দ আমীর আলীর লেখাটা কিন্তু "ছহীহ" না, খুউপ খিয়াল কইরা। চোখ টিপি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

হিমু এর ছবি

ঢাকায় আগে মাঝে মাঝে পাড়ার মসজিদে ওয়াজ শুনতে হতো। আমাদের গলির মোড় পর্যন্ত তার টেনে মাইক ঝুলানো হতো। কতিপয় খাপোর ধারণা ছিলো যে এই ওয়াজ না শুনলে আমার চরম গুনাহগার হবো। ফলে বাধ্য হয়ে গায়ে হলুদের বেসুরা গানের মতো কোনো মোয়াল্লেমের অসহনীয় চিৎকার শুনতে হতো পুরো সন্ধ্যা। ইসলামের নামে হেন প্যারোডি নাই যেগুলি এই লোকগুলি করে না। এরা হাদিসের নামে এমন সব উদ্ভট গল্প অবলীলায় বলে যায়, যেগুলো কেবল মতিকণ্ঠ-মগবাজারে মানায়।

ফেসবুকে দেখলাম এক ছাগলের বাচ্চা গল্প লিখেছে, স্পেনের খ্রিষ্টানরা নাকি মুসলিমদের মসজিদে বন্দী করে আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে হাসতে হাসতে "ফুল, ফুল" বলে চিৎকার করছিলো, সেই থেকে এপ্রিল ফুল'স ডে। ছাগলগুলি এইটাও জানে না যে স্পেনে ইংরেজি বলা হয় না। এই জিনিস আবার ফেসবুক মুমিনের দল নিষ্ঠার সাথে শেয়ার দিচ্ছে।

ফেসবুকে লাইক শেয়ার যে কোনোভাবে ইবাদত-বন্দেগির অংশ না, এইটা নিয়ে পত্রিকায় কোনো আলেমের লেখা উচিত। ধর্ম বেশি কুড়কুড়ালে ফেসবুক থেকে লগ আউট করে নামাজ পড়।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ধর্ম বেশি কুড়কুড়ালে ফেসবুক থেকে লগ আউট করে নামাজ পড়

চলুক

হিমু ভাই, ইদানিং আরেকটা চল শুরু হয়েছে। ইউটিউবে ওয়াজ। সেখানেও এই কমেডিগুলো ইনিয়ে বিনিয়ে ঘ্যানঘ্যান করছে আর কিছু ছাগু পরিচালিত ফেইসবুক পেইজ সেগুলো লেজ উচিয়ে শেয়ার দিচ্ছে। কিছু দিন পর হয়তো এ ধরনের 'মুমিন পোস্ট'-এ প্রতি লাইকে কয় নেকি সেটা হিসেব করবে এরা চোখ টিপি

মাহমুদ.জেনেভা এর ছবি

আমার শহরে একজন আছে ব্যাপক লোক, দুপরে লাঞ্চে আমি কি খাই আমার প্লেটের দিকে আড় চোখে চোখে চায় হারাম টারাম খাই কিনা। ওই লোক ফেইসবুক কিভাবে ইসলামী কায়দায় ব্যাবহার করা যায় তার উপর একটা নোট বিভিন্ন সময় শেয়ার দেয়
আজকে আমি বললাম ভাই ফেইস বুক ব্যাবহার করা কি ইসলামে জায়েজ? এই সম্পর্কে কোরআনে কিছু আছে? সে বলল ডাইরেক্ট নাই তবে কোন একটা আয়াতের সুত্র ধরে বলল আছে তবে ইহুদী দের মতো এত খোলামেলা ভাবে না। আর মহিলাদের ছবি দেয়া কোন ভাবেই জাবেনা। আমার বিনোদনের অভাব হলে আমি এই লোকরে খুঁজে বের করি তারপর গম্ভীর মুখে নানান প্রশ্ন জানতে চাই, সে এপ্রিল ফুল ইস্যুতে খুবই সোচ্চার। কোন ভাবেই যাতে মুসলমানেরা এই দিবস পালন না করে এই নিয়ে বিরাট বক্তৃতা দিলেন।
নির্মল আনন্দদায়ক লোক, উনি আমাকে এটাও বললেন যে মাদার তেরেসা জতই ভালো কাজ করুক বেহেশতে জেতে পারবেন না। উনার যুক্তি দেখে আমি অবাক হই, তার ঘরে আবার খ্রিস্টান বউ (জদিও সে বলে ওই মহিলা নাকি ইসলাম গ্রহন করেছে, কিন্ত আমার বাসায় রাতে খাবারের আগে হোয়াইট ওয়াইন আছে কিনা জানতে চাইলে আমি বললাম ইহা তো হারাম তখন ওই লোক শুনিয়া ও না শুনার ভান করিলেন)
ইদানীং একটা প্রশ্ন প্রায় আমার মাথায় আসে। ধার্মিক ভাইরা সবাই এত ভণ্ড হয় কেন?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এ ধরনের বিনোদন কিন্তু আমাদের মত প্রবাসীদের মাঝে মাঝে কাজে লাগে। আমি যখন আগে ডাবলিনে একা থাকতাম, তখন এ ধরনের বিনোদনের পাশে বসে বড়ই মজা নিতাম। এদের ভন্ডামী যে কত ধরনের হতে পারে, তাদের কাছ থেকে না দেখলে বোঝা যায় না। আপনার মত আমারও বেশ কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে। অন্য কোন দিন লেখার মাধ্যমে শেয়ার করবো।

চিলতে রোদ এর ছবি

জেনেভা ভাই, আমার মতে যাদের নিজেকে নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা কম তারাই ধর্ম নিয়ে বেহুদা বাড়াবাড়ি করে। নিজের ভেতরের চাপা অপরাধবোধ থেকে একটা মিথ্যা মুখোশে নিজেকে ঢাকতে চায়। আমার এক বন্ধু, যার ধর্ম নিয়ে আবেগ সবচেয়ে বেশি- সেই আবার বিকৃত পর্ণোগ্রাফিতে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট। কোন মেয়েবন্ধু তার সাথে গা ঘেষে বসলে তার সুরসুড়ি লাগে, তাই সে মেয়েদের বোরখার ব্যাপারে সবচে সোচ্চার! এটা মানসিক সমস্যা। আর কিছু না।

shopnomoy ekdin এর ছবি

ধার্মিক ভাইরা সবাই এত ভণ্ড হয় কেন?

সবাই না ভাই।।।কিছু কিছু।।।দয়া কোরে ঠিক কোরুন

অচেনা মানব এর ছবি

আপনি কি বললেন একটু ভেবে বললেন কি ??? যারা ভণ্ড তারা কখনও ধার্মিক হয় না , আপনার কথামত উনি আপনার প্লেটে আড়চোখে চায় , অন্য ধর্মের মেয়ে মুসলমান না করে বিবাহ করে , সে কিভাবে ধার্মিক হয় ।

suvo এর ছবি

সবাই কে এক পাল্লায় না মাপলে ভাল হয় না

অতিথি লেখক এর ছবি

আজকে আমি বললাম ভাই ফেইস বুক ব্যাবহার করা কি ইসলামে জায়েজ? এই সম্পর্কে কোরআনে কিছু আছে? সে বলল ডাইরেক্ট নাই তবে কোন একটা আয়াতের সুত্র ধরে বলল আছে তবে ইহুদী দের মতো এত খোলামেলা ভাবে না। আর মহিলাদের ছবি দেয়া কোন ভাবেই জাবেনা।

হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি
জনাব,
তা ঠিক কোণ সুরার কোণ আয়াতের সূত্র ধরে আপনার চোখে ধার্মিক এই কথাটি বলেছিল সেটা কি একটু বলা যায়? আমারাও একটু বিনোদন নিতাম আরকি?
না কি আপনিও শিক্ষিত হবার মোড়কে ঢাকা তাথাকথিত মোল্লাদের ন্যায় আধা সের কথার সাথে এক সের ফ্রিতে দিয়ে দিলেন? চিন্তিত

জবাবের অপেক্ষায়
ওমর ফারুক

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপ্নে অগোত্তে বেশি বুজেন?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

হো হো হো

সাবেকা এর ছবি

আপনি যতিই যুক্তি দেখান তারা মানবে না । বুঝে না বুঝে শেয়ার করবে, নেকী যেন মিস না হয়ে যায় হাসি সবই ইহুদি নাছারাদের শড়যন্ত্র কিনা !

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

সবেশে এবং ছদ্মবেশে তারা ফেইসবুকের পেইজে পেইজে যেভাবে নেকি কামায়, মাঝে মধ্যে মনে হয় পিছিয়ে পড়ছি না তো? খাইছে

কম্ফোর্টেবলি নাম্ব এর ছবি

কাল পর্যন্তও আমি এই গুজবকেই সত্য বলে জানতাম।
গুজবের শুরু নাকি মালয়েশিয়ান মিডিয়া থেকে বছর দশেক আগে? ফেসবুকে কার যেনো একটা নোট দেখলাম।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

যদিও আমি নোটটা পড়ি নি, তবে হতে পারে তাদের ওখান থেকেই ছড়িয়েছে। মালেশিয়ানরা গুজব ছড়াতে ওস্তাদ। ইমেইল চেইনের অনেক হোক্স মালেশিয়া থেকে শুরু হয়েছে। লিঙ্কটা এখানে শেয়ার দেয়া যায়? তাহলে সচলায়তনের পাঠকরাও পড়তে পারবেন।

কাজী আহমদ পারভেজ এর ছবি

না আরও আগে। ৭৮-৭৯ সাল থেকে শুরু করে আশির দশকের শুরুতে। শিবিরের মগজ-ধোলাই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে। মগজ-ধোলাই প্রক্রিয়ায় এস্টাবলিস্ট বিলিভকে আঘাত করা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিওর। তাঁরা এইরকম দুইটা জিনিষ দিয়ে শুরু করে ছিল। ১) "খোদা-হাফেজ" ভুল, বলতে হবে "আল্লাহ হাফেজ"। যদিও আরবী গ্রামার অনুজায়ী এরকম কোন ফ্রেজ হয় না। সঠিক হতে পারতোঃ "আল্লাহু হাফেজুন"। ২) এপ্রিল ফুল পালন গুনাহের কাজ।

কাজী আহমদ পারভেজ এর ছবি

লিংকটা সেভ কোরে রাখছি। প্রতি বছর একবার করে শেয়ার দেবো। ধন্যবাদ এমন একটা অস্ত্র হাতে তুলে দেবার জন্য যা বছরের পর বছর কাজে লাগবে।

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

এইগুলা ইয়াহুদি নাছারাদের লেখা ইতিহাস! মানি না মানবো না চোখ টিপি

---------------------
আমার ফ্লিকার

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তথ্যসমৃদ্ধ পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
তবে বৃথাই খাটলেন
যুক্তি আর তথ্যর প্রতি মিনিমাম শ্রদ্ধা থাকলে তো কথাই ছিলো

শেয়ার দিলাম

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

নজরুল ভাই, শ্রদ্ধাতো তাদের নাই-ই, বরং ইদানিং এদের মধ্যে আরেকটা অসুস্থ চর্চা শুরু হয়েছে। পড়ছে ধর্ম তত্ত্ব, আর লিখছে ইতিহাস, অর্থনীতির বই। তারপর বিভিন্ন লেখায় সেগুলোকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

শেয়ার দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ফেইসবুকে শেয়ার করলাম।

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শেয়ার দেয়ার জন্যে থ্যাঙ্কস। তথ্যগুলো মানুষের জানা দরকার। প্রয়োজনে আরো বই পড়ুক, কিন্তু সত্যটা জানুক।

নিটোল এর ছবি

চলুক

_________________
[খোমাখাতা]

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

চরম উদাস এর ছবি

এহ আপনে বল্লেই হইলো? আমাদের এপ্রিল ফুল বানান? খাইছে
ক্লাস টু তে থাকতে একবার ক্লাস টিচারকে এপ্রিল ফুল বানিয়ে যেই প্যদানি খাইছিলাম
শেয়ার দিলাম।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

হায় হায়, আমি ভয় পাচ্ছি! না জানি আপনার টিচার আবার আমাকেও প্যাদানি দেয় চোখ টিপি

দিগন্ত এর ছবি

ছোট থেকে এইরকম অনেক "ফুল" নিউজ পড়ে পড়ে এপ্রিল ফুল হবার পরে এখন এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কয়লাইন পড়ার পরে পড়েও দেখি না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ঠিক বলেছেন। এদের লেখার টোনটা দু লাইন পড়লেই বোঝা যায়। তখনই ভেতর থেকে ইগনোর বাটন ক্লিক হয়ে যায়।

অরফিয়াস এর ছবি

অজস্র উচ্চশিক্ষিত মানুষ (পড়বেন গরু !!) কে ফেসবুকে কয়েকদিন ধরেই শেয়ার দিতে দেখছি এই এপ্রিল ফুলের কিচ্ছা, হাস্যকর লাগে এই ভেবে যে যাদের কাছে সুযোগ আছে ব্যাপারগুলো জেনে নেয়ার, খুঁজে দেখার তারাই যদি এই কাজ করে তাহলে যারা অশিক্ষিত কিংবা অল্প শিক্ষিত তারা কি করবে??

ফেসবুক এখন আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, হয়ে গেছে ধর্মীয় প্রোপাগান্ডার ডাস্টবিন !!!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ফেসবুক এখন আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, হয়ে গেছে ধর্মীয় প্রোপাগান্ডার ডাস্টবিন !!!

জোরালো সহমত। রীতিমত বিরক্ত হয়ে গিয়েছি এ ধরনের প্রোপাগান্ডা দেখতে দেখতে।

রফিকুন্ননবী নয়ন এর ছবি

যাদের কাছে সুযোগ আছে ব্যাপারগুলো জেনে নেয়ার, খুঁজে দেখার তারাই যদি এই কাজ করে তাহলে যারা অশিক্ষিত কিংবা অল্প শিক্ষিত তারা কি করবে??

ঠিক এই কথাটার উত্তর খুঁজছি বহুদিন ধরে।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা হাসি

এবিএম এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো হয়েছে নিয়াজ ভাই।
নতুন করে জানলাম "এপ্রিল ফুল" এর ঘটনাটা। আর এতদিন কি সব হাবিজাবি শুনে আসছিলাম !

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আপনি গুগলে একটু সার্চ করে দেখেন, আরো তথ্য সমৃদ্ধ আর্টিকেল পাবেন। আমাদের হাবিজাবি শোনা ঘটনাগুলোর কোন ভিত্তিই নেই।

পদ্মজা এর ছবি

বাঙ্গালী আসলে অযথা সময় নষ্ট করেনা। তাই ফেসবুকে রসের আলাপ করতে করতে একটউ আধটু ধর্ম চর্চাও করে। চোখ টিপি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

দারুণ বলেছেন। হাসি

মুখর এর ছবি

আমরা ধর্মের নাম শুনলে দূর্বল হয়ে যাই, সেটা সত্য না মিথ্যা যাচাই করার প্রয়োজনীয়তাটুকু ভুলে যাই। লেখাটার দরকার ছিল। হাসি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ধর্ম আমাদের স্পর্ষকাতর একটা অংশ। এক শ্রেনীর মোল্লারা এটা জেনেবুঝেই আমাদের অনূভুতিকে ব্যবহার করে। তাহলে চিন্তা করে দেখুন, আদৌ তাদের কি ধর্মের প্রতি কোন শ্রদ্ধাবোধ আছে?

তাপস শর্মা এর ছবি

গতকাল থেকে ফেবুতে এই ধর্মীয় বিপ্লবে আমার দেয়াল ভেসে যাচ্ছে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমি আজ কিছু পেইজ ব্লক করে দেব ভাবছি। না হলে এই প্লাবন থেকে আমিও বাঁচতে পারছি না!

অনরণ্য এর ছবি

তাহলে তো ব্যাপক বিনোদন মিস করবেন খাইছে

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এত এত ছহি বিনোদন হজম করতে হচ্ছে যে বদহজম হবার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে চোখ টিপি

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

জব্বর লেখা। তুলনা নাই।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ।

কাজি মামুন এর ছবি

আপনার চমকানো লেখাটি পড়ে সত্যি বিস্মিত। আমরা যা জেনে এসেছি (বা আমাদের জানানো হয়েছে মাল্টি দাওয়াত সিস্টেমের মাধ্যমে, মানে 'সেন্ড টু ওয়ান হান্ড্রেড ফ্রেন্ড'), তা তাহলে সবই ভুল! কষ্ট করে এমন একটি তথ্য জানানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
তবে নিয়াজ ভাই, কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন না করেই পারছি না। যেমনঃ
(১) মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে সুড়সুড়ি দেয়ার জন্য মিথ্যা ইতিহাস রচনা করতেই পারে ইসলামি পণ্ডিতরা এবং সেই মিথ্যা মিথ ভেঙ্গে দেয়া দরকার; কিন্তু জোসেফ ও' কালাহানের 'A History of Medieval Spain' এর তথ্য কি পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য?
(২) রোমান হিলারিয়া থেকে কি করে এপ্রিল ফুল হল? হিলারিয়া উৎসবের প্রকৃতি/বিষয় কি? এপ্রিল ফুলের 'বোকা বানানোর আনন্দের' সাথে তার যোগসূত্র কি?
(২) মার্চের ৩২ তারিখ বলতে আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছেন? এ দিন এপ্রিল ফুল হল কি করে? বসন্ত শুরুর দিকে যে উৎসব তা থেকে এপ্রিল ফুলের বোকা বানানোর আনন্দের সাযুজ্য ও আনুষ্ঠানিকতা কি করে গড়ে উঠল?
জানার জন্যই প্রশ্নগুলো করেছি। চমৎকার আর নতুন একটি বিষয় জানানোর জন্য নিয়াজ ভাইকে আবারো ধন্যবাদ।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

১) ও' কালাহান বা অন্য ইতিহাসবিদদের সব কথা যে বিশ্বাসযোগ্য এটা ভাবার কোন কারণ নেই। কিন্তু মোল্লারা মাছ দিয়ে শাক ঢাকতে গিয়ে যেখানে ভুল করে সেটা হলো তারিখটা। ইসাবেলা গ্রানাডা বিজয় করে ১৪৯২ সনের জানুয়ারির ২ তারিখ। দিনটা কোন ভাবেই এপ্রিলের ১ তারিখ ছিল না। ইসাবেলা ভালো কি খারাপ ছিল, এধরনের তথ্যে বিভিন্ন মত থাকা বিচিত্র নয়। কিন্তু গ্রানাডা বিজয় স্পেনের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন এবং সেটার জন্যে ও' কালাহানকে অবিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। তাছাড়া, গ্রানাডা বিজয়ের সাথে এপ্রিল ফুলের সামান্যতম সম্পর্কও ইতিহাস থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় না।

২) হিলারিয়া এক ধরনের উৎসব ছিল যা চার-পাঁচ দিন ধরে চলতো। একেক দিন একেকটা থিম ছিল। যেহেতু হিলারিয়ার ঠিক পরপরই এপ্রিলের ১ তারিখ, তাই ধারণা করা হয় এর থেকে এপ্রিল ফুল এর উৎপত্তি। অনেকটা অল সেইন্টস উৎসব থেকে যেমন হ্যালোইনের অরিজিন খোঁজা হয়। তবে জনপ্রিয় উৎসব হিসেবে এপ্রিল ফুল পালিত হচ্ছে বড়জোর গত তিন-চারশ বছর ধরে।

৩) মার্চের ৩১ তারিখের পর আসে এপ্রিলের ১ তারিখ। কিন্তু চসারের ক্যান্টারবেরি টেলস-এ এপ্রিলের ১ তারিখকে মার্চের ৩২ তারিখ হিসেবে দেখিয়ে বোকা বানানো হয়েছিল গল্পের একটা চরিত্রকে। এই বইটা প্রকাশিত হয় গ্রানাডা যুদ্ধের ঠিক একশ বছর আগে। এটা এজন্যে উল্লেখ করলাম, যে ইউরোপের ইতিহাসে এপ্রিলের ১ তারিখ বোকা বানানোর চলটা গ্রানাডা যুদ্ধের আগেও দেখা যায়।

মূল কথা, দুটো পরষ্পর সম্পর্কহীন বিষয়কে জোর করে এক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি মনে করি, ইতিহাসে দুই পক্ষেরই বক্তব্য থাকে। নিরপেক্ষ পাঠককে সেখান থেকে সত্য বের করে নিতে হয়। একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে এবং প্রয়োজনে কিছু বই ঘেটে দেখলে দেখবেন কাউকে বিশ্বাস না করেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব যে অন্তত এদুটো ঘটনা এক সাথে ঘটে নি।

চমৎকার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা রইলো।

কাজি মামুন এর ছবি

এটা এজন্যে উল্লেখ করলাম, যে ইউরোপের ইতিহাসে এপ্রিলের ১ তারিখ বোকা বানানোর চলটা গ্রানাডা যুদ্ধের আগেও দেখা যায়।

এ থেকেই আমাদের দেশের মোল্লাতান্ত্রিক মিথের জারিজুরি বেরিয়ে পড়ে। আপনার শ্রমসাধ্য গবেষণাকে অভিনন্দন। চলুক চলুক

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ধন্যবাদ, একটি প্রয়োজনীয় তথ্যবহুল পোস্টের জন্য। সম্ভব হলে এ বিষয়ে আরও লিখুন, রেফারেন্স সহ। অনেকেরই ভুল ভাঙ্গবে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আসলে এ বিষয়টা এতটাই ঐতিহাসিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত যে এটা নিয়ে কী করে মানুষ অপপ্রচার চালায় সেটা ভেবে বিস্মিত হই। যে কেউ একটু আধটু ইতিহাস বই পড়লেই (মোল্লাদের লেখা ইতিহাস বই না আবার) বিষয়টা বুঝতে পারবে।

কুমার এর ছবি

উৎকন্ঠার ব্যাপার ফি বছর এই ধর্মীয় প্রোপাগান্ডা বাড়ছে। তথ্যগুলো মানুষের অতিআবশ্যক জানা দরকার।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আগে দেখতাম মহল্লায় মহল্লায় কিছু লোক দাওয়াত দিতে আসতো। হাবিজাবি বহু গল্প শোনাতো যার অনেকগুলোর ধর্মীয় সমর্থনও নেই। ইদানিং দেখছি তারা তাদের মিথ্যাচার নিয়ে ফেইসবুকে চলে এসেছে। এরা ছত্রাকের মত। ক্রমেই ছড়ায়। উপড়ে দেয়া জরুরী।

আকতার আহমেদ এর ছবি

খুবই দরকারি পোষ্ট।
সত্যটা সবার জানা দরকার। এরপর মানলে মানুক না মানলে মুড়ি খাক!

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

জানি কিছু মানুষ এরপরও মানবে না। ইনিয়ে বিনিয়ে যুক্তি খোঁজার চেষ্টা করবে। কিন্তু যারা সাধারণ মানুষ এবং ঐ 'কিছু মানুষ' এর অপপ্রচারের স্বীকার, তারা অন্তত প্রকৃত ঘটনা জানুক বা জানার চেষ্টা করুক।

সৌরভ কবীর  এর ছবি

চলুক

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ।

জিউস এর ছবি

সব জায়গায় ইহুদী নাছাড়া!! বানোয়াট মিথ্যা গল্প। আপনেতো কিছুই জানেন না, আমার গলির মাওলানা জানে আসল ইতিহাস। খাইছে
লাভ নাই তাও শেয়ার করলাম।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ।

গলির মাওলানারা এখন ইউটিউবের মাওলানা হয়ে গিয়েছে। যুগের সাথে তাল মেলাচ্ছে চোখ টিপি

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

শেয়ারড। লজ্জা লাগছে ভাবতে যে আমি নিজেও এতদিনে একবারও বিষয়টি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বোধ করিনি।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ভাইয়া, লজ্জার কিছু নেই। তবে এ ধরনের প্রচুর বিষয় আছে আমাদের সামনে যা আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি কিন্তু খতিয়ে দেখছি না। এখন থেকে সেটা শুরু করা প্রয়োজন। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এবং আবেগ কে পণ্য করে যেন কেউ স্বার্থ হাসিল করতে না পারে সেদিকটায় নজর রাখা প্রয়োজন।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

চলুক চলুক চলুক
এপ্রিল ফুল নিয়ে লিখবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক মুসলমান এপ্রিল ফুলের সাথে স্পেনের ঘটনা মিলিয়ে ফেলে। অথচ এই দুটো ঘটনার মাঝে কোন মিল নেই।
এই বিষয়ে মানুষের মনের ভ্রান্ত ধারণা দূর হোক।
আপনার প্রয়াসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

তবে, আপনার পোস্টের কিছু লাইনে আপত্তি রেখে গেলাম।
০১। "স্পেনে যখন মুসলিমরা শাসন করছে তখন বিভিন্ন রাজারা যা করতে পারেন নি, একজন নারী হয়ে রানী ইসাবেলা তা করে দেখিয়েছিল।"
=>
আপনি কি প্রশংসা(!) করলেন?
ইসাবেলা তো ভাল কিছু করেনি; দুটো জাতিকে পৃথিবীর একটি ভূখন্ড থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। ইহুদী ও মুরদের জাতিগত ও ধর্মগত ধোলাইয়ের মত অপরাধের দায় কখনোই ইসাবেলা এড়াতে পারবে না। বিংশ শতাব্দীর হিটলারের জাতিবিদ্বেষের সাথে পঞ্চদশ শতাব্দীর ইসাবেলার জাতিবিদ্বেষের পার্থক্য কি? নারী হিসেবে নারীদের প্রশংসাও তো এই মহিলার প্রাপ্য নয়।

০২। "পরবর্তীতে তাঁর (ইসাবেলা) দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সিদ্ধান্ত গুলো স্পেনের ইতিহাসকে নূতন রূপ দিয়েছিল।"
=>
এটি কি একটি প্রশংসাসূচক(!) বাক্য?
যদি প্রসংশাসূচক বাক্য হয়, তাহলে বলব-
জার্মানীর হিটলার আর স্পেনের ইসাবেলার পর-জাতিবিদ্বেষের মধ্যে পার্থক্য কতটুকু? মানবতাবাদী হিসেবে ম্যারানোস, মরিস্কোস শব্দগুলো ভুলে গেলে তো আর চলবে না।
১৪৯৬ সালে ইসাবেলার সম্মতিতে আর্চবিশপ তালাভ্যারা আলহামরা ডিক্রি জারি করে। এই ডিক্রি অনুসারে স্পেনের ইহুদী ও মুসলিমদের হয় ক্যাথলিক ক্রিশ্চান ধর্মগ্রহণ নয়তো দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। ১৫০২ সালে ইসাবেলা ইহুদী-মুসলিম ও অন্যান্য ক্রিশ্চানদের বাধ্যতামূলক ক্যাথলিক ক্রিশ্চান ধর্মে ধর্মান্তরিত হবার অথবা, দেশত্যাগের আদেশ দিয়ে সরকারী ফরমান জারি করে।
গ্রানাডার পতনের পর প্রায় এক লক্ষ মুসলমান মারা যায়, চার লক্ষ মুসলমান দেশত্যাগে বাধ্য হয় ও তিন লক্ষ মুসলমান ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হয়। ইহুদীদের ইতিহাস তো আরো করুণ। দুই লক্ষ মারা যায়, এক লক্ষ ইহুদী ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হয়, এক লক্ষ ইহুদী দেশত্যাগ করে।(সূত্র: Spain 1469 - 1714; A Society of Conflict, লেখক: Henry Kamen)

০৩। "এ্যাডওয়ার্ডের বর্ণনা থেকে জানা যায় মুসলিমদের সবচেয়ে বড় মসজিদটাকে তারা চার্চ বানিয়েছিল এবং অন্য ধর্মের মানুষদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এ কাজ যুগে যুগে সব ধর্ম ভিত্তিক শাসকরাই করেছে। তুরষ্কের সবচেয়ে বড় যে মসজিদটা রয়েছে সেটা এক কালে চার্চ ছিল।"
=>
এই কথাটার মানে কি দাঁড়ালো? "কিন্তু" শব্দটি ব্যবহার করে আপনি কি বিষয়টি জাস্টিফাইড করতে চাইলেন? আমার কাছে সেরকমই মনে হল। এক অপকর্ম আরেক অপকর্মের বৈধতা দেয় কি?

ইসাবেলার স্পেন বিজয়ের পর বিজয়ী স্পেনিশ ক্যাথলিক ক্রিশ্চানদের দ্বারা মুসলমান ও ইহুদীদের জাতিগত ও ধর্মগত ধোলাই, ইউরোপীয়ানদের দ্বারা রেড ইন্ডিয়ানদের জাতিগত ধোলাই, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের আর্মেনিয়ান নিধন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জামার্নীর ইহুদী ও জিপসীদের জাতিগত ধোলাই, একাত্তরে বাংলাদেশে পাকিস্তানীদের বাঙালী-গণহত্যার সাথে জড়িত মানুষগুলোর(!!!) কথা মনে পড়লে শুয়োরগুলোর জন্য মুখে একদলা ধুতু জমে।

নেপাল রায় এর ছবি

সবুজ পাহাড়ের রাজা কে অনেক ধন্যবাদ।
অনেক মুসলমান এপ্রিল ফুলের সাথে স্পেনের ঘটনা মিলিয়ে ফেলে। অথচ এই দুটো ঘটনার মাঝে কোন মিল নেই।
ইনকুইজিশন স্পেনিশ ইতিহাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ সময় অনেক মুর, ইহুদী, ম্যারনোস, মরিসকোস দের পুড়িয়ে মারা হয়। ইহুদীদের নির্বাসিত করার জন্য আল হামরা ডিক্রি জারি করা হয়েছিল ১৪৯২ সালের ৩১ মার্চ। লক্ষ করেন, এর পরের দিন ১ এপ্রিল বা এপ্রিল ফুল বা অল ফুলস ডে। এদিন থেকে ইহুদীদের উপর নেমে আসে চরম নির্যাতন। আর মুসলমানদের প্রতি ক্ষোভ তো আগের থেকেই ছিল। আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনাও স্পেনে অনেক ঘটেছে।

আপনার মন্তব্যের পাঞ্চ লাইন:এক অপকর্ম আরেক অপকর্মের বৈধতা দেয় কি? অনেক ভাল লেগেছে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

লক্ষ করেন, এর পরের দিন ১ এপ্রিল বা এপ্রিল ফুল বা অল ফুলস ডে।

নেপাল রায়,
আপনি কি এপ্রিল ফুলের সাথে স্পেনের মুসলমান নির্যাতনের ঘটনা মিলিয়ে ফেলতে চাইছেন?
আলহামরা ডিক্রি জারি হয় ১৪৯২ সালের মার্চে আর তা কার্যকর করা হয় ২৯ এপ্রিল, ১৪৯২-এ। এর মাধ্যমে স্পেনিশ ইহুদীদের হয় ক্যাথলিক ক্রিশ্চান ধর্মগ্রহণ নয়তো দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।
০১ এপ্রিল, ১৪৯২ সালে গ্রানাডায় মুসলমানদের মসজিদে আটকে রেখে আগুনে পুড়িয়ে মারার কোন ঘটনা ঘটেছে বলে ইতিহাস স্বাক্ষী দেয় না। গ্রানাডা পতনের পর থেকে মুসলমানদের উপর নির্যাতন করা শুরু হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে নিপীড়ণ শুরু হয় ১৪৯৬ সালে আর্চবিশপ ত্যালাভ্যারা কর্তৃক গ্রানাডা চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নেয়ার পর হতে।
১৪৯৬ সালে ইসাবেলার সম্মতিতে আর্চবিশপ তালাভ্যারা আলহামরা ডিক্রির মত আরেক ডিক্রি জারি করে, যার মাধ্যমে স্পেনের মুসলিমদের হয় ক্যাথলিক ক্রিশ্চান ধর্মগ্রহণ নয়তো দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।

তাই, এপ্রিল ফুলের সাথে স্পেনের মুসলমান নির্যাতনের কোন সর্ম্পক নেই।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

না ভাই, আমি প্রশংসা করি নি। ইসাবেলার কয়েকটা কৃতিত্ব আছে সেটাকে স্বীকার করেছি মাত্র। ইসাবেলার স্বদেশ ছিল স্পেন। সেটা যখন বহিরাগতরা (মুসলিম) শাসন করছিল তখন কোন রাজা মুসলিমদের পরাজিত করতে পারছিল না। ইসাবেলার উদ্যোগেই স্পেন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং বহিরাগতদের বিতাড়িত করেছিল। ইসাবেলাকে নিয়ে লিখতে হলে এই কথাগুলো বলা প্রয়োজন না হলে ইসাবেলার চরিত্র পুরোপুরি ফুটিয়ে তোলা সম্ভব না। একই ভাবে পরবর্তিতে কলোনিয়াল যুগে স্পেনকে একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার পেছনেও এই নারীর অবদান অনেক। সে কারণেই কথাগুলো বলা। একই সাথে আমি এটাও উল্লেখ করেছি ইসাবেলার সেনাবাহিনী মুসলিমদের সবচেয়ে বড় মসজিদটাকে চার্চ বানিয়েছিল এবং অন্যধর্মের মানুষদের ধর্মান্তরিত করেছিল। এটাও একটা ফ্যাক্ট, বদনাম না। কে ভালো কে খারাপ, সেটা পাঠক বিবেচনা করবেন।

২য় বিষয়টা, অর্থাৎ হত্যা বা অত্যাচারকে জাস্টিফাই করছি কিনা সে বিষয়ে বলবো, আমি একটা উদাহরণ দিয়ে দেখালাম যে মসজিদকে যেমন চার্চ বানানো হয়েছে, তেমনই চার্চকেও মসজিদ বানানোর ঘটনা ঘটেছে। কোন রকম অত্যাচারকে জাস্টিফাই করার জন্যে এ কথা বলা নয়।

ইসাবেলার স্পেন বিজয়ের পর বিজয়ী স্পেনিশ ক্যাথলিক ক্রিশ্চানদের দ্বারা মুসলমান ও ইহুদীদের জাতিগত ও ধর্মগত ধোলাই, ইউরোপীয়ানদের দ্বারা রেড ইন্ডিয়ানদের জাতিগত ধোলাই, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের আর্মেনিয়ান নিধন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জামার্নীর ইহুদী ও জিপসীদের জাতিগত ধোলাই, একাত্তরে বাংলাদেশে পাকিস্তানীদের বাঙালী-গণহত্যার সাথে জড়িত মানুষগুলোর(!!!) কথা মনে পড়লে শুয়োরগুলোর জন্য মুখে একদলা ধুতু জমে।

আপনার উপরের বক্তব্যে আমি একমত, তবে আমার চোখে শুরুটা ইসাবেলা থেকে নয় আরো অনেক আগে থেকে। মুসলিমদের নবীর যুগ থেকেই তাদের গনহত্যা এবং বন্দিদের দাস বানানোর ইতিহাস দেখেও আমার মুখে থুতু জমে।

সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

বিজেতা মুরদের প্রথম জেনারেশনকে বিদেশী বলা চলে।
কিন্তু তাদের বংশধর যারা সাতশ বছর ধরে সেখানে স্থায়ী বসতি স্থাপন করেছিল, তাদেরকে বিদেশী বলাটা আমার কাছে অযৌক্তিক ঠেকে।
ইসাবেলা ইবেরিয়ান পেনিনসুলাকে যতটুকু নিজের স্বদেশ দাবী করতে পারে, ততটুকু দাবী ইবেরিয়ান পেনিনসুলার স্থায়ীবসতি স্থাপনকারী মুরদেরও থাকে।
কারন, স্পেনের ভূমিপুত্র বলে কিছু নেই। সবাই বহিরাগত স্থায়ী নিবাস স্থাপনকারী।
---
পরিশেষে, সচেতনতামূলক এই পোস্টের জন্য আবারো অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বাঙালীর মন কুসংস্কার ও ভুল ইতিহাসের ধারণা থেকে মুক্তি পাক।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

@নেপাল রায়

আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনাও স্পেনে অনেক ঘটেছে।

ভাই, একটু ঝেড়ে কাশলে ভালো হয়। তবে কাশির সাথে রেফারেন্স দিতে ভুলবেন না। তা না হলে এ ধরনের লাইন স্ট্যানবাজির মত শোনায়।

নেপাল রায় এর ছবি

The historian Hernando del Pulgar, contemporary of Ferdinand and Isabella, estimated that the Spanish Inquisition had burned at the stake 2,000 people by 1490 (just one decade after the Inquisition began).[8] In the terms of the Spanish Inquisition a burning was described as relaxado en persona.
http://en.wikipedia.org/wiki/Execution_by_burning

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

রেফারেন্স দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ। এবার একটু দেখান যে ১৪৯২ সনের ১ এপ্রিল মুসলিমদের মসজিদে বন্দি করে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে এবং সেই থেকে এপ্রিল ফুলের সূচনা বা চল। অপেক্ষায় থাকলাম।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

তুখোড়।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

শফকত মোর্শেদ এর ছবি

খোমাখাতায় দেখলাম, মুনির স্যারকে ব্যাপক আক্রমন করে বসল এদেরকে ছাগু বলাতে; খুবই অবাক হলাম এই রকম হালকা বিষয়টাকে এরা টানতে টানতে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে গেল; আরও অবাক হলাম এদেরকে সাপোর্ট দেয়ার মানুষের অভাব নাই দেখে।
যাই হোক পোস্টটা আমার ফেইসবুকে দিচ্ছি; অন্তত কিছু মানুষ হলেও সত্যটা জানুক আর এই গোবর গনেষগুলো মানুষ হোক। (যদিও বৃথা আশা)

- শফকত

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ। সত্য বেরিয়ে আসুক। এটাই প্রত্যাশা করি।

রানা মেহের এর ছবি

আমি সকালেই টেক্সট পেয়েছিলাম এই এপ্রিল ফুল টাইপ বেদায়াতি জিনিস যেন পালন না করি মন খারাপ

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

তাদের কাছে অনেক কিছুই বেদাতি। অনেক কিছুতেই ইহুদি-নাছারাদের অনুসরণ করা হয়ে যায়। কিন্তু টিভিতে অনুষ্ঠান করা, ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করা অথবা ব্লগিং বা ফেইসবুকিং বেদাতি না যদিও এগুলা ইহুদি-নাছারাদের আবিষ্কার চোখ টিপি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

'এপ্রিল ফুল' নিয়ে যারা এই গল্পটা ছড়ায় তারা এই যুক্তিটা কেনো দেয় না যে, মজা করার নামেও কাউকে মিথ্যা কথা বলা যাবে না বা কাউকে বোকা বানানো প্রতারণা করার শামিল - যেগুলো মুনাফিকের লক্ষণ! কেনো তারা ইসাবেলা-ফার্ডিনান্ডকে নিয়ে আষাঢ়ে গল্প বানায়? উত্তরটা হচ্ছে মিথ্যা কথা বলা, প্রতারণা করা এগুলো ঐসমস্ত লোকেদের মধ্যে বহুল প্রচলিত। যাদের নীতির ভিত্তি মিথ্যার উপর দাঁড়ানো তারা এমন গল্প তো বানাবেই। শবে বরাত, শবে মেরাজ, ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর দিনগুলোতে বা শুক্রবারে জুম'আর সময় মসজিদের মাইকে দেয়া বয়ানগুলো খেয়াল করলে অসংখ্য ঐতিহাসিক মিথ্যা গল্প শুনতে পাবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শবে বরাত, শবে মেরাজ, ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর দিনগুলোতে বা শুক্রবারে জুম'আর সময় মসজিদের মাইকে দেয়া বয়ানগুলো খেয়াল করলে অসংখ্য ঐতিহাসিক মিথ্যা গল্প শুনতে পাবেন।

সহমত। অক্লান্ত ভাবে মসজিদে বসে এরা যে মিথ্যাচার চালায় সেটা দেখে আমি সব সময় বিস্মিত হই।

shariful islam sheikh  এর ছবি

apnar shompurno likhata pore to mone holona apni islam shomporke temon kichu jane,, ba se shikkhata peyechen... afsos lage apnara tobuo opokothe bolen " সহমত। অক্লান্ত ভাবে মসজিদে বসে এরা যে মিথ্যাচার চালায় সেটা দেখে আমি সব সময় বিস্মিত হই।"

নজমুল আলবাব এর ছবি

বেদাতি পোস্ট। বরদাশত করা যায় না। কিন্তু তবু সহ্য করতে হবে। কি আর করা। তবে মনে রাখবেন একদিন, সেইদিন দুরে না, যেদিন আপ্নে নিজেই একটা মেইল তৈরি করে লিখবেন এইটা এক হাজার জনরে ফরোয়ার্ড করতে। যাতে এইরাম একটা পোস্ট দিয়া যে গুনা হাসিল কল্লেন তা থিকা মুক্তি পাইতে পারেন। তবে একখান কথা, পিলিজ লাগে, সেই মেইলটা আপ্নে আমারে পাঠাইয়েন না। শয়তানী হাসি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

তবে একখান কথা, পিলিজ লাগে, সেই মেইলটা আপ্নে আমারে পাঠাইয়েন না।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

দ্রোহী এর ছবি

আমনে লিচ্চিত ইয়াহুদি-নাছাড়াদের পইসা খাইছেন।

পাপ কাটানোর জন্য জলদি নিচের এই "মাছেজ"টা ১১জন বন্ধুকে পাঠান।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

চিন্তায় পড়ে গেলাম। এই 'মাছেজ' ১১ জন 'ছহি ছাগু'কে পাঠানো দরকার। ইমেইল এ্যাড্রেসের স্বল্পতা বোধ করছি খাইছে

asif এর ছবি

খুব ভালো লিখেছেন ভাই, তবে আপনার কথায় ও কিছু ফাক আছে। খ্রিস্টানরা ২ জানুয়ারী গ্রানাডা বিজয় করলেও সেই দিনই কিন্তু মুসলিমদের মসজিদে আশ্রয় নিতে বলে নি। যখন মুসলিমদের উপর শত অত্যাচার করেও তাদের খ্রিষ্টান করতে পারলো না, তখন তাদের শায়েস্তা করতে ১ এপ্রিল বেছে নেয়া হয়।
আর বাঙ্গালিদের এটা একটা সমস্যা দেশের কেও তাদের কাছে মূল্য পায় না। কিন্তু যদি বিদেশি হয় তবে সে যা বলল তাই ঠিক। শত হলেও তাদের কাছে বিদেশিরাই সর্ব শ্রেষ্ঠ।

হিমু এর ছবি

একদম ঠিক বলছেন ভাই। দেখেন না, দেশের নিয়াজের কথার কেউ দাম দেয় না, বিদেশী ছাগু জোকার নায়েকের কথা নিয়ে ফাল পাড়ে সবাই।

কাজি মামুন এর ছবি

দেখেন না, দেশের নিয়াজের কথার কেউ দাম দেয় না, বিদেশী ছাগু জোকার নায়েকের কথা নিয়ে ফাল পাড়ে সবাই।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

খুব ভালো লিখেছেন ভাই, তবে আপনার কথায় ও কিছু ফাক আছে। খ্রিস্টানরা ২ জানুয়ারী গ্রানাডা বিজয় করলেও সেই দিনই কিন্তু মুসলিমদের মসজিদে আশ্রয় নিতে বলে নি। যখন মুসলিমদের উপর শত অত্যাচার করেও তাদের খ্রিষ্টান করতে পারলো না, তখন তাদের শায়েস্তা করতে ১ এপ্রিল বেছে নেয়া হয়।

ব্যাখ্যাটা ভালই ছিল। কিন্তু একটা ফাঁক রয়ে গেল। আগে তো প্রচার করা হচ্ছিল, মুসলিমদের পরাজিত করতে না পেরে তাদের আত্মসমর্পনের জন্যে মসজিদে ঢোকানো হয়েছিল। সেটার মাধ্যমেই গ্রানাডা বিজয় এসেছিল। তাই না? তো আপনার ব্যাখ্যা মতে গ্রানাডা বিজয়ের তিন মাস পর মুসলিমদের মসজিদে পুরে কেন মারা লাগলো? গ্রানাডা তো ক্রিশ্চিয়ানদের হাতেই ছিল। চাইলে বাড়ি গিয়েই মারতে পারে। আর ঐ যে মসজিদগুলো পোড়ানো হয়েছিল, সেগুলো ইতিহাস থেকে একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেলো কেমন করে?

আর বাঙ্গালিদের এটা একটা সমস্যা দেশের কেও তাদের কাছে মূল্য পায় না। কিন্তু যদি বিদেশি হয় তবে সে যা বলল তাই ঠিক। শত হলেও তাদের কাছে বিদেশিরাই সর্ব শ্রেষ্ঠ।

নারে ভাই। দেশীদের কথাও মূল্য পায়। তবে ছাগুদের টা পায় না। দেশী এবং ছাগুর মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ চোখ টিপি

বাউলিয়ানা এর ছবি

জানলাম।

অনেক ধন্যবাদ পোস্টের জন্য চলুক

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।

সুলতান এর ছবি

ধন্যবাদ, এই তথ্যবহুল পোস্টটির জন্য।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শুভেচ্ছা রইলো।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

প্রয়োজনীয় একটা লেখা। চলুক
বোকা হবার জন্য বিশেষ দিবস লাগে নাকি।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এরাই আমাদের বোকা বানায় এবং সেটা এপ্রিলের ১ তারিখ।

স্যাম এর ছবি

কোরান, গীতা, বাইবেল, ত্রিপিটক এর আপডেটেড ভার্শন এর জন্য অপেক্ষা করি - এছাড়া ধর্ম বাচানোর কোন উপায় নাই চোখ টিপি দারুন পোস্ট!!!
আসল কথা হল -

ফেসবুকে লাইক শেয়ার যে কোনোভাবে ইবাদত-বন্দেগির অংশ না, এইটা নিয়ে পত্রিকায় কোনো আলেমের লেখা উচিত। ধর্ম বেশি কুড়কুড়ালে ফেসবুক থেকে লগ আউট করে নামাজ পড়।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

ছোট বেলা থেকে মনে হয় স্কুলে আর মসজিদে এই বোকা বানানোর আইডিয়া কপচাতে গিয়ে অনেকেই নানান শাস্তি ভোগ করেছি আমরা। সে যাই হোক, জানলাম পোষ্ট থেকে অনেক কিছু সেই সাথে মন্তব্যের ভান্ডার থেকেও পরিপূরক আলোচনার স্বাদ টুকু বাদ দেয়া যায়না। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ইদানিং দেশের সকল সমস্যা তা পারিবারিক বলুন কিংবা সামাজিক, যেই সে সমস্যায় পড়ুক না কেন একটি মেজিক সমাধান এই জাতীয় লোকের মুখে জিভের ডগায় গড়িয়ে যাবার জন্য সদা প্রস্তুত থাকে " পর্দা করলেই তো আর এই কোন সমস্যা তৈরী হতোনা। ঠিক যেমন দেশের যে কোন আন্দোলনের পিছনে সরকার বলেন রাজাকার বাঁচানোর জন্য এই পায়তাঁরা আর অপজিশন বলবে দেশ বেচার জন্য এই পায়তারা।
কত দিকের টানা পোঁড়েনে যে আমি আমরা মেঙ্গজনতা।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

একটা সময় সবাই বুঝতে শেখে। এটা প্রকৃতির নিয়ম। দেশের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে যে মন্তব্যটা করেছেন সে প্রসঙ্গে বলছি, আমরাও এক সময় উপলব্ধি করবো যে এখন পরিবর্তনের সময় এসেছে। তখন ঐ নেতারা পালিয়ে পার পাবে না।

শুভ কামনা রইলো।

মারুফ এর ছবি

The Rise and Fall of Islamic Spain: Full documentary (PBS) ।এই ডকুমেন্টারির ব্যাপারে মতামত জানতে চাই। ইউটিউব এ আছে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ডকুমেন্টারিটা দেখার ইচ্ছে রইলো। এখানে লিঙ্কটা শেয়ার দিয়ে গেলে সুবিধা হয়। তাহলে সচলায়তনের পাঠকরাও দেখতে পারবে।

Abdul Halim এর ছবি

How do you like it when someone plays a trick on you or make a fool out of you? I don’t like to be fooled and I am sure no one does. Yes, we do enjoy making fool out of others. You heard of the “do onto others as you want others to do on you” so, let’s just not make fool out of each others. Mullas are not Islam. They became mullas by reading some Islamic books; they are not profits. So, everything that they say is not Islam. They my misinterpret Islam intentionally or by mistake. The best thing to do in this case is go to the sources. We, everyone reading this is capable to become a mulla with just a bit of afford. I am sure; if we do this no mullas can take advantage of misinterpreting Islam to us. Islam prohibits wrong; mullas do wrong by misinterpreting and we do wrong by blaming Islam on what we hear from mullas. Why listen to mullas when we have the sources at our fingertips. How stupid are we to celebrate a day to make fool out of each other.

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ। আপনি যেভাবে মন্তব্য করেছেন, এর পর যুক্তিপূর্ণ এবং গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে। এ ধরনের মন্তব্য আমরা সচলায়তনে প্রত্যাশা করি।

এবার সরাসরি মন্তব্য প্রসঙ্গে চলে আসছি। আপনি হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন, আমার লেখার মূল বক্তব্য কিন্তু এটা নয় যে এপ্রিল ফুলস ডে পালন করা ঠিক কি না। আমি মনে করি, এটা একেক জনের কাছে একেক রকম মনে হতে পারে। যেমন অনেকে মনে করে পশু কোরবানী দেয়া বর্বরতা আবার সেটাই মুমিন মুসলিমদের কাছে পুণ্যের কাজ। সবাই যার যার দৃষ্টিকোন থেকে দেখছে বিষয়টা। তবে এই পোস্টে আমি যেটা বোঝাতে চেয়েছি তা হলো এপ্রিল ফুলের যে ভ্রান্ত ইতিহাসটা এক শ্রেনীর মোল্লা আমাদের সমাজে প্রচার করে সেটার কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। শুধু এপ্রিল ফুল নয়, এমন আরো অনেক কিছুই আছে যা তারা প্রচার করে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্যে। কিন্তু আমরা যদি নিজেরা কোন কিছু শেয়ার করার আগে অথবা বিশ্বাস করার আগে যাচাই করে নেয়ার চেষ্টা করি সেটা সত্য কি মিথ্যা, তাহলে ঐ মানুষগুলো আর তাদের এই অপপ্রচার চালিয়ে যেতে পারবে না।

শুভেচ্ছা রইলো।

কাজি মামুন এর ছবি

I don’t like to be fooled and I am sure no one does.

একমত নই। এটা ঠিক যে, অনেকই বোকা বানানোর পদ্ধতিকে সমর্থন করেন না; তারা নিজেরা যেমন বোকা বনতে চান না, তেমনি অন্যদেরও বানাতে চান না। এরা অত্যন্ত সিরিয়াস টাইপ (আর বেরসিক টাইপও হাসি ) লোক হিসেবেই সমাজে পরিচিত হন। কিন্তু আবার অনেকের কাছেই এপ্রিল ফুলের মত অনুষ্টানগুলো নিছক একটা খেলা। আমার বন্ধু আমাকে বোকা বানালে আমি মাইন্ড করি না; কারণ আমিও তাকে বোনা বানানোর সুযোগ খুঁজতে থাকি। আপনি কি দেখেছেন, বন্ধুরা অনেক সময় মারপিটে লিপ্ত থাকে খেলাচ্ছলে? আপনার 'সাধারণীকরণ' করা যুক্তিটি মেনে নিলে বলতে হবে, দুনিয়াতে হাসি-রঙ্গ-তামাশা-কৌতুকের কোন অস্তিত্ব কোনকালে ছিল না।

How stupid are we to celebrate a day to make fool out of each other.

মেঘা এর ছবি

যারা এই ধরণের পোষ্টগুলো ফেসবুকে শেয়ার করে তাদের জন্য আমার এটা কথাই বলতে ইচ্ছা করে সেটা হলো যদি তোমার ফেসবুক থেকে থাকে তাহলে তোমার গুগল ও আছে। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে সেটা ৫০জনের হোম পেইজে ছড়িয়ে দিলেই সেটা সত্যি হয়ে যাবে না। নিজের ঘটের বুদ্ধি একটু খরচ করে গুগল করলেই হয়। আর এখন আমাদের দেশের অর্ধশিক্ষিত মানুষের জন্য গুগলও বাংলায় হয়ে গেছে। লেখাই থাকে অনুসন্ধান করুন! সো সেটা করলেই তো হয়!!!!

ছাগুদের এই ধর্মের নতুন নতুন আইন নিজের হোম পেইজে দেখতে দেখতে ক্লান্ত আমি। কি যে করতে মন চায় নিজেই বুঝি না। মানুষ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে অন্যের কথা এতো মেনে কিভাবে নিতে পারে? মানসিকতার উন্নতি দরকার আগে ভাইয়া তারপর তারা যুক্তি মানবে। ধর্মভীরু মানুষেরা ধর্মের ব্যাপারে যুক্তির দরজা বন্ধ করে তর্ক করতে বসে। মাঝে মাঝে নিজেকেই বোকা মনে হয় ওদের যুক্তি শুনে। আমি কেন মেনে নিতে পারি না চোখ বুজে? আমি কেন যুক্তি খুঁজি কিছু বিশ্বাস করার আগে? সমস্যা আমার নাকি ওদের?

শেয়ার দিলাম।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক

স্বাধীন এর ছবি

যাদের উদ্দেশ্যে লেখা তারা কি আর যুক্তি বুঝে ওঁয়া ওঁয়া

তাদের মাথায় কে কবে মুসলমান হইলো, কোন বাণী ছড়াইলে এক হাজার নেকি হবে এগুলান থাকে ইয়ে, মানে...

নমানুষ এর ছবি

পুরাই সত্যি। কোন ভুল নাই। যাইহোক এপ্রিল ফুল নিয়ে কোন ফুলের লেখায় কমেন্ট আর লিংক শেয়ার বর্জন করলাম।

নমানুষ এর ছবি

এপ্রিল ফুল বিষয়ক একজনের কমেন্টে এই লিংকটা শেয়ার করেছিলাম। প্রতি-কমেন্ট হিসেবে ৫ টা লিংক পেলাম। বলাই বাহুল্য সবগুলোই ইসলামিক সাইটের লিংক। সাথে জোকার নায়েকের একটা ভিডিও। এপ্রিল ফুল নিয়ে এরা ফুলই থাকুক, হোক জোকারের শিষ্য। তাদের সত্যটা জানিয়ে, আনন্দটা মাটি করার কী প্রয়োজন।

লেখায় চলুক

kumkum ahmed  এর ছবি

ভালো লাগলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আজকে এই একবছর পর আবারো শেয়ার দিলাম! বেশ লিখেছেন ভাইয়া!

মিনহাজ.রাতুল

ইস্ক্রা এর ছবি

যদ্যপি ইহার সহিত ধর্মের কোনো সম্পর্ক নাই, তথাপি, মানুষকে বোকা বানাইবার অহেতুক উৎসবের কোনো উপযোগিতা খুঁজিয়া পাই না। এই বিশ্বে আমরা প্রতিনিয়তই বোকা হইতেছি, উৎসব করিয়া বোকা হইবার কোনো সাধ জাগে না।

Ullash এর ছবি

খুব ই দরকার ছিল এইরকম একটা পোস্ট অনু ভাই। অনেক ধন্যবাদ।

guest_writer এর ছবি

জানা ছিল। আবারো জেনে ভাল লাগলো। বুকমার্কড!
-ড্রয়েড

Mahmudul Faisal Al Ameen  এর ছবি

Shanto vai, nice article...
I did a same research on it 4 years before - I know that April fool has been started a long before granada ... yes... at the time Roman empire... so, at least it has not been started at least from Granada incident.
About date, I can't remember now... I have to check it in my sources. Until I defend you, consider my support to you.
But I could not prove that the mosque burning tragedy was a false claim.
Your article at least can not guaruntee it too. Some historian can missed a date for various reasons.
I am not saying that the story cannot be fabricated but before you claim so you have to produce some information about the fate of the muslim leaders of granada.... or some stronger evidence... at least I couldn't collect it...

Mahmudul Faisal Al Ameen  এর ছবি

In Chaucer's Canterbury Tales (1392), the "Nun's Priest's Tale" is set Syn March bigan thritty dayes and two. Modern scholars believe that there is a copying error in the extant manuscripts and that Chaucer actually wrote, Syn March was gon. Thus, the passage originally meant 32 days after April, i.e. May 2, the anniversary of the engagement of King Richard II of England to Anne of Bohemia, which took place in 1381. Readers apparently misunderstood this line to mean "March 32", i.e. April 1.
from wikipedia http://en.wikipedia.org/wiki/April_Fools%27_Day

Mahmudul Faisal Al Ameen  এর ছবি

And, apart from history, do you enjoy making fool of others... and do you think the practice is good? Well, for me, it is not a "nirmol anondo" except you are making fool of a very clever people who tends to show that no body can make him fool...

মুশফিক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ । আমিও এতদিন ঐ পুড়িয়ে মারার ঘটনা ই জানতাম
ইয়েস বাঘ মামা, ইয়েস!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

ঘটনা কি সত্য ?

khalil Mazid খলিল মজিদ এর ছবি

ভালো লাগলো লেখাটা। বেশ কিছু কমেন্টও সমৃদ্ধ করলো আলোচনাটাকে।

কাজী আহমদ পারভেজ এর ছবি

এখনে কিছু রেফারেন্স দিচ্ছি। জানা গেল, এইসব রেফারেন্সে বলা আছে ১ এপ্রিল ১৪৯২-তে স্পেনে মুসলমান্দের পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। এবং তা কোন কোন ক্ষেত্রে মসজিদে আটকিয়ে। এর পর থেকেই এপ্রিল ফুল ডে পহেলা এপ্রিলেই নিয়মিতভাবে পালন করা হচ্ছে। দেখুন -
[1] Bartolomé de Las Casas, A Brief Account of the Destruction of the Indies, 1542 (published in 1552) (Last reprinted in January 1, 2009, available at amazon) (Ch. IV, Spain and Queen Isabella)
[2] George Bancroft, A review of medieval europe, Harvard University Press, 1885 (Ch. 7)
[3] Malcolm Cowley, A History of the Atlantic Slave Trade (1962), The Viking Press, NY; Aug 1967-3rd Prt edition (Ch. 4 (Pg. 189-190) and Ch. 9 (pg. 305-309) )
প্রকৃত সত্যটাও জানা দরকার।
ধন্যবাদ

কাজী আহমদ পারভেজ এর ছবি

আমার পাঠানো রেফারেন্সের দাবীগুলা ইগনর করবেন। ঐগুলা একটা এপ্রিল ফুল এটেমপ্ট ছিল। ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

ফেবু এখন ধর্মীয় গুজব আর বিদ্বেষ ছড়ানোর আদর্শ জায়গা। বকধার্মিকরা ফেবুতে এসে ধর্ম দেখায়, ধর্ম শিখায়।। আর অসংখ্য গুজব আর বালছাল শেয়ার মারে। দেখতে দেখতে বিরক্তির সর্ব্বোচ্চ সীমায় চলে এসেছি। মাঝে মাঝে ভাবি এইসব লোক দেখানো ভন্ডামী এরা আর কতকাল করবে? এরা কি সব কিছুকে এইভাবে নষ্ট করতে থাকবে? সবখানেই কি ধর্মকে টেনে নিয়ে আসবে?

আমার পাশের সিটে বসা উচ্চ শিক্ষিত কলিগটিও আমাকে বলে জানেন চাঁদে গিয়ে প্রথম নারী উইলিয়াম ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছেন, মাইকেল জ্যাকসন ও ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছেন? আমি কি বলবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, একটা শিক্ষিত মানুষ বাশেরকেল্লা টাইপো সংবাদে যাচাই বাছাই না করে বিশ্বাস করে কি করে? কিন্তু সত্যটা হলো এইভাবেই চলছে বিশ্বাসের কানামাছি খেলা, ধর্মীয় বিশ্বাস ছড়াতে এখানে শিক্ষা আর অশিক্ষা লাগেনা, দুজনি সমান গ্রাহক।

মাসুদ সজীব

আবির অনন্য অসীম এর ছবি

এগুলো ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রচারণা

মাহবুবুল হক এর ছবি

এই ইতিহাস জানা খুব দরকার ছিল। ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

guest_writer এর ছবি

আপনার উপরের বক্তব্যে আমি একমত, তবে আমার চোখে শুরুটা ইসাবেলা থেকে নয় আরো অনেক আগে থেকে। মুসলিমদের নবীর যুগ থেকেই তাদের গনহত্যা এবং বন্দিদের দাস বানানোর ইতিহাস দেখেও আমার মুখে থুতু জমে

উপোরের কথাটা দিয়ে কি বুজাতে চাচছেন? দয়া করে কি বলবেন?
সাদিকনাফ

ইউসুফ আহমেদ তুহিন এর ছবি

আমি নিশ্চিত নই। আপনি সত্যি তথ্য দিয়েছেন না মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।কিন্তু, উইকিপিডিয়াতে পড়ে মনে হলো, আপনার তথ্যই সঠিক। যাই হোক, এটা নিয়ে আরো পড়া-শুনা করতে হবে। অবশ্যই সত্যি ইতিহাস প্রচারের দাবী রাখে। কোন মোল্লার কথায় যদি পুরো দেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়, এটা অবশ্যই ভয়ঙ্কর।
আপনার কাছে, আমার এমনিতে দুইটি প্রশ্ন আছে। আমি ইতিপূর্বে অনেককে করেছিলাম, কেই উত্তর দিতে পারেনি। আশা করব আপনি দিবেন।
১. মুসলিমদের উপরই নাস্তিকদের এতো বিদ্ধেষ কেন? অন্য ধর্মের বিষয়ে তো সমালোচনার আরো অনেক কিছু রয়েছে। তাদের সমালোচনা করা হচ্ছে না কেন?
২. নাস্তিকতাবাদ কি কোন ধর্ম বিশ্বাস যে এটার প্রচার করতে হবে? ব্যক্তি আপনি বিধাতায় বিশ্বাস নাই করতে পারেন,কিন্তু অন্যদের কেন আপনার মতাদর্শে আনতে হবে? সাধারণতঃকোন ধর্মেই কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। মানুষের ধর্ম বিশ্বাসের কারণে সমাজে শৃঙ্খলা বজায় থাকে।আপনারা কি চান না এই শৃঙ্খলাটুকু বজায় থাকুক?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

১। সব মতাদর্শের সমালোচনাযোগ্য অংশের সমালোচনাই করা হয়, আপনি খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছেন কি? নাকি শুনে শুনেই অভিযোগ করতে এসেছেন?

২। ধর্মগুলোও “মতাদর্শ” বৈকি। কখনও কি জিজ্ঞাসা করেছেন কেন ধর্মগুলো প্রচারণা চালায়? নাকি আপনার ধারণা অবিশ্বাস এক ধরণের অপরাধ তাই এটির প্রচার করা যাবে না?

মানুষের ধর্ম বিশ্বাসের কারণে সমাজে শৃঙ্খলা বজায় থাকে।

একটু ব্যাখ্যা করবেন? ধর্মের সাহায্য নিয়ে সৃষ্টি করা শত শত বিশৃঙ্খলা দেখতে পাচ্ছি, নিয়মিত।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

এপ্রিল ফুলের অরিজিন নিয়ে লেখক মিথ্যা বলছেন নাকি আপনি নিশ্চিত না, কিন্তু নাস্তিকরা যে শুধু ইসলাম নিয়ে পড়ে থাকে এইটা আপনি নিশ্চিত। এইটা নিয়ে আর রিসার্চ করার দরকার নাই। রীতিমতো একটা গর্তের মধ্যে না থাকলে এমন কথা বলতেন না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।