প্রবাসী আয় (রেমিটেন্স) এবং অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: সোম, ২৩/০৪/২০১২ - ৫:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গতকাল আগামী অর্থবছরের বাজেট বিষয়ে দেশের অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী দেশে প্রবাসীদের পাঠানো টাকা তথা রেমিটেন্সকে কালো টাকার অন্যতম উৎস হিসেবে উল্লেখ করেছেন [১]। অর্থমন্ত্রী বলেছেন,

অন্য দেশে আয় করে আমার দেশে পাঠাচ্ছে। এদের ওপর কোনো কর আরোপ করা হয় না। এতে টাকা কালো হচ্ছে।

সব সময় অর্থনীতিবিদদের মুখে শুনে এসেছি বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। এ কারণে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে যখনই নূতন অর্থমন্ত্রী এসেছেন, তাঁকে দেখা গিয়েছে এই রেমিটেন্স নিয়ে কথা বলতে। কর আরোপ তো অনেক দূরের ব্যাপার, অর্থমন্ত্রীরা কী করে রেমিটেন্স আরো বেশি আসবে সে বিষয়ে সব সময় গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এবারই প্রথম উল্টো কথা শুনলাম।

আমি কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্র, অর্থনীতিতে আমার সুবিশেষ জ্ঞান নেই। তাই মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য সার কি অসার সে বিষয়ে সরাসরি বিতর্কে যাবার সাধ্য বা সাধ কোনটিই আমার নেই। তবে একজন প্রবাসী হিসেবে মাঝে মাঝে দেশে টাকা পাঠানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়াও কর্মস্থান সূত্রে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়াটিকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। সেসব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আমি দেখানোর চেষ্টা করবো অর্থমন্ত্রীর বলা কথাটা সাধারণ দৃষ্টিকোন থেকে কতটা অযৌক্তিক।

ইউরোপের দুটো দেশ, যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডে থাকার এবং আয় করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। উভয় দেশেই যে বিষয়টি খুবই স্পষ্ট, তা হচ্ছে সাধারণ মানুষ যারা অফিস-আদালত-রেস্তোরা ইত্যাদিতে চাকরী করেন, তাদের কর ফাঁকি দেয়ার উপায় নেই। হাতে মাসের আয়ের টাকা আসার আগেই করের টাকা কেটে রেখে দেয়া হয়। আমি নিশ্চিত একই ব্যবস্থা ইউরোপের অন্যান্য দেশ এবং উত্তর আমেরিকার জন্যেও প্রযোজ্য। সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হলেও আমার ধারণা এই ব্যবস্থা মধ্যপ্রাচ্যেও রয়েছে।

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়াটাও নিয়ন্ত্রিত। দুই ভাবে টাকা পাঠানোর উপায় রয়েছে। প্রথমতঃ ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড থেকে পাঠালে ১৫ ইউরো এবং ইউকে থেকে পাঠালে ১০-১৫ পাউন্ড ফিস দিয়ে হয়। উভয় ক্ষেত্রেই যে টাকা পাঠাচ্ছে, তার যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা যে কোন মুহূর্তে দেখতে চাইতে পারে। যেহেতু ব্যঙ্কের কাছে পাসপোর্টের ফটোকপি, ঠিকানা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে, চাইলেই আপনার সম্পর্কে সেই নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা বিভিন্ন তথ্য বের করে নিতে পারবে। অন্য দিকে টাকাটা যেহেতু বাংলাদেশে একটা ব্যাঙ্কে সরাসরি প্রবেশ করবে, চাইলে বাংলাদেশ সরকার সেটাও মনিটর করতে পারবে।

দ্বিতীয় পথটি হচ্ছে মানি ট্রান্সফার কোম্পানীর মাধ্যমে টাকা পাঠানো। আয়ারল্যান্ড থেকে আমি ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম এবং ইইউ মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে এবং যুক্তরাজ্য থেকে মানিগ্রামের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠিয়েছি। টাকা পাঠানোর সময় আপনার এবং আপনি যাকে পাঠাচ্ছেন তার ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য, যেমন নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার ইত্যাদি জমা দিতে হয়। তবে ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হয় না যদি না টাকার অংক বড় হয় (এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে বলছি)। এক্ষেত্রে কোম্পানীগুলোর নিজ নিজ রেইট আছে। যেমন আয়ারল্যান্ড থেকে ৩০০ ইউরো বাংলাদেশে পাঠালে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের ২৯ ইউরো (নিশ্চিত) এবং মানিগ্রামের ১৯ ইউরো (যতটুকু মনে পড়ছে) ফিস। তথ্য ও ফিস দেয়া হলে তারা আপনাকে একটা পিন নাম্বার দেবে যা দেশে আপনি যার নাম-ঠিকানা দিয়েছেন তিনি পাসপোর্ট বা ন্যাশনাল আইডিকার্ড দেখিয়ে তুলতে পারবে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও মনিটর করার সুযোগ থাকছে।

উপরের আলোচনা থেকে দেখা যাচ্ছে, টাকা পাঠানো এবং দেশে গ্রহণ করার পদ্ধতি বেশ নিয়ন্ত্রিত এবং মনিটর করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে মনিটর করা হয় কি না জানি না, তবে ইউরোপে হয়। এবার সে বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। আয়ারল্যান্ডে থাকাকালিন একটা মানিট্রান্সফার কোম্পানীতে আমি আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছি। কোম্পানীটা কয়েকজন বাংলাদেশী ভাই মিলে দিয়েছেন। তারা চাচ্ছিলেন আমি তাদের আইটির ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার গঠনে সাহায্য করি। তখন তাদের সাথে কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছুই দেখার এবং জানার সুযোগ হয়।

আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের একটা উইং আছে যার নাম ‘ফিন্যানশিয়াল রেগুলেটর’[২]। তারা প্রতিটা মানিট্রান্সফার কোম্পানীকে নিয়মিত ইন্সপেকশন করে। তাদের কিছু কঠোর নীতিমালা রয়েছে যা প্রতিটা কোম্পানীকে মেনে চলতে হয়। এই নীতিমালাগুলোর মধ্যে রয়েছে, যদি কেউ ১০০০ ইউরোর নীচে টাকা পাঠায় তাহলে তাকে তথ্য জমা দিতে হবে কিন্তু প্রমাণ করতে হবে না যে সে সব তথ্য সঠিক। কিন্তু যদি ১০০০ ইউরোর উপরে পাঠায়, তাহলে তাকে পাসপোর্টের ফটোকপি, প্রুফ অব এ্যাড্রেস ইত্যাদি জমা দিতে হবে। যদি কেউ বারবার অথবা অনেক বড় অংকের টাকা পাঠায়, তাহলে ফিন্যনশিয়াল রেগুলেটরকে সেটা জানাতেও হবে। এক্ষেত্রে ফিন্যানশিয়াল রেগুলেটর ঐ ব্যক্তিকে তার আয়ের উৎস, ট্যাক্স হিসাব ইত্যাদির বিষয়ে জিজ্ঞেস করার অধিকার রাখে। অর্থাৎ, কেউ বিদেশ থেকে বড় অংকের টাকা পাঠালে এবং তার আয়ের প্রকৃত উৎস না থাকলে তাকে বিদেশেই আদালতের মুখোমুখি হতে হবে। অনেকে হয়তো মনে করতে পারেন, এগুলো নিতান্তই কিছু নিয়ম। আসলে তা নয়। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি সংস্থাটা কয়েক মাস পরপর ইন্সপেকশন করে এবং তখন তাদের প্রত্যেকটা ট্রানজেকশন আলাদা আলাদা করে বুঝিয়ে দিতে হয় এবং কোন রকম অনিয়ম পেলে তারা পদক্ষেপও কঠোর ভাবে নেয়।

বিদেশে এসব নীতিমালা কতটা কঠোর সে বিষয়ে আরেকটা উদাহরণ দিচ্ছি। আমার পরিচিত একজন আইরিশ-বাংলাদেশী ব্যবসা করেন। ফলে তাকে প্রতিবছর ট্যাক্স হিসাব জমা দিতে হয়। সেখানে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টও জমা দিতে হয়। সেই স্টেটমেন্টে যদি এ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে, তাহলে সেটা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে হয়। এমন কি আপনি কাউকে টাকা ধার দিয়েছেন এবং সে আপনাকে টাকাটা ফেরত দিয়েছে। তাহলেও আপনাকে বিষয়টা সুন্দর করে ব্যাখ্যা করতে হবে এবং হিসেব মিলিয়ে দেখাতে হবে যে আপনার আয় এবং ব্যাঙ্কে টাকা ঢোকার মধ্যে সমন্বয় রয়েছে।

উপরের এই আলোচনা এজন্যে করলাম কারণ দেখাতে চেয়েছি, যে টাকাটা আয় করা হচ্ছে সেটা কর দিয়েই আয় করা হচ্ছে। এ টাকা দেশে পাঠাতেও কিছু খরচ আছে। তার উপর আবার কর আরোপ? এখন যদি বিদেশে আয় করতেও কর দেয়া লাগে, দেশে পাঠাতেও টাকা দেয়া লাগে এবং সেই টাকার জন্যে দেশে গিয়েও কর গুনতে হয়, তাহলে মানুষ টাকা পাঠানোর ভিন্ন পথ খুঁজতে বাধ্য হবে যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমাবে বৈ বাড়াবে না। এই ভিন্ন পথটা কী? লুকিয়ে নেয়া। বড় নোট ইউরোতে কনভার্ট করে তারপর দেশে যাবার সময় লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া। যদিও সাধারণ মানুষ এই কাজটা মাঝে মাঝে করে ঐ ২৯ ইউরোর ফিসটা বাঁচানোর জন্যে। কিন্তু সরকার যদি তাদের এটা নিয়মিত করতে বাধ্য করে তাহলে দেখা যাবে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা আরো রমরমা ব্যবসা খুলে বসেছে। আর সেটা স্বাভাবিক ভাবেই রেমিটেন্সের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তবে এর পরও কি অনিয়ম ঘটছে না? হ্যা ঘটছে। কেউ কেউ দেশ থেকে টাকা বিদেশে নিয়ে পরে সেটাকে বিদেশের আয় দেখিয়ে আবার দেশে পাঠাচ্ছেন। এভাবে কালো টাকা দেশে সাদা হয়ে ঢুকছে। তবে এ কাজ সাধারণ মানুষ করছে না। করছে দূর্নীতিগ্রস্থ মন্ত্রী, এমপি, আমলা এবং তাদের পরিবার। যারা সাধারণ মানুষ, তাদের ক্ষমতার দৌড় এত নেই যে বিদেশের সেন্ট্রালব্যাঙ্ককে হাত করে বাংলাদেশে টাকা পাঠাবে। এ কাজ করতে যেমন টাকা থাকতে হবে, তেমনই ক্ষমতাও থাকতে হবে। অতএব সাধারণ মানুষের উপর কর আরোপ করে তাদের কষ্টার্জিত টাকাটা দেশে পরিবারের কাছে পৌঁছানোর পথটা কঠিন করা এ সমস্যার সমাধান নয়। বরং দেশে নিয়মিত যেসব বড় অংকের টাকা ঢুকছে সেগুলোকে মনিটর করতে হবে এবং কোন ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, শুধু মুখের কথা নয়, মাননীয় অর্থমন্ত্রীর ‘প্রকৃত ইচ্ছা’ থাকতে হবে এ ধরনের অপরাধকে দমন করার।

২৩ এপ্রিল ২০১২
গ্লাসগো, যুক্তরাজ্য

তথ্যসূত্রঃ
[১] http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-04-23/news/252272
[২] registers.financialregulator.ie


মন্তব্য

চরম উদাস এর ছবি

লেখায় চলুক

আগেই সন্দেহ ছিলো, এই লোকের ঘাড়ের উপর যা আছে সেটা মাথা না নারকেল। কালকে এই বক্তব্য শোনার পর ধারণা পোক্ত হলো।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এর আগে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি শেয়ার বাজার বোঝেন না। কাল বললেন রেমিটেন্সের কারণে টাকা কালো হচ্ছে। দেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাঁর থেকে এ ধরনের কথা প্রত্যাশিত নয়।

কেউ কেউ দেখলাম আজ তাঁকে ছাগলে বড় সংস্ককরণ হিসেবেও উল্লেখ করছে ফেইসবুকে!

বাঙ্গাল  এর ছবি

প্রবাসীরা যে টাকা আয় করে, সেটা সেই দেশের ইনকাম ট্যাক্স দেয়ার পরেই হাতে পায়। তারা আপনাদের মতো রাষ্ট্রিয় টাকায় গাড়িও পায় না, ফ্ল্যাট পায় না, আপনারটা খাচ্ছেও না- পড়ছেও না। প্রবাসীদের পাঠানো ১৪ বিলিয়ন ডলারে(per year) বাজেট করেন, এক মাস টাকা পাঠানো বন্ধ রাখলে আপনার মত ১০ টা মুহিত আসলেও পতন ঠেকাতে পারবে না

রেল মন্ত্রাণালয়ের দূর্নীতির মাত্র ৭০ লাখ টাকার জন্য যদি রেলমন্ত্রীর পদ যায়, অর্থমন্ত্রীর হাজার কোটি টাকার শেয়ার মার্কেট বিপর্যয় ঘটানোর জন্য কেন গদি নড়ে না। কে বেশি ব্যর্থ? শেয়ার বাজারীরা হয়ে গেল ফটকা, প্রবাসীরা হলো কালোবাজারি। আর আপনি রয়ে গেলেন ধর্মপূত্র যুধিষ্টির!

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

মন্ত্রীকে বিদেশে চাকরী করতে পাঠানো দরকার। তাহলে হাতে-কলমে শিখতে পারবে!

ইয়াসির এর ছবি

মনের কথা চলুক

দ্রোহী এর ছবি

যার নাম "আবুল মাল" আবদুল মুহিত তার কাছ থেকে এরচেয়ে ভাল আর কী আশা করতে পারি!

আমাদের উল্টোরথের দেশে সবকিছুই উল্টো চলে। ভিওআইপির মতোই বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অবৈধ ঘোষণা করা উচিত। প্রাগৈতিহাসিক দেশে সবকিছু চলবে প্রাগৈতিহাসিক পদ্ধতিতে। ভিওআইপি যেমন শুধুমাত্র টিএন্ডটির মাধ্যমে করা যাবে তেমনি টাকা পাঠানোর জন্য মান্ধাতা আমলের সোনালী এক্সচেঞ্জ তো আছেই।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

দ্রোহী দা, যথার্থ বলেছেন। ভিওআইপি নিয়ে চলছে দেশে আজব সব নাটক। ভিওআইপি এবং মাদক ব্যবসা যেন আনেকটা কাছাকাছি। র‍্যাবের ছোটাছোটি দেখলে তাই মনে হয়।

মন্ত্রীর কথাতে তো মনে হচ্ছে সোনালী এক্সচেঞ্জ দিয়ে টাকা পাঠালেও ট্যাক্স দিতে হবে। আচ্ছা, এদের তো উপদেষ্টা থাকে। তারা কী করে?

ন এর ছবি

চলুক

হিমু এর ছবি

মন্ত্রীর একটা বক্তব্য বেশ উদ্বেগজনক এবং পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট। আবুল মাল বলছে, গণতান্ত্রিক সরকারকে অনেক কিছু করতে হয়। এবং এই অনেক কিছু দিয়ে সে বোঝাচ্ছে, কালো টাকার মালিকের সাথে আপোষ। এই কথাটা যে মেসেজ পৌঁছে দেয়, সেটা হচ্ছে, কালো টাকার সাথে মোকাবেলার জন্যে গণতন্ত্র উপযুক্ত পরিবেশ দিতে পারে না, এবং এ থেকে অনুসিদ্ধান্তে আসা যায়ে যে কালো টাকার সাথে যুঝতে হলে অগণতন্ত্র প্রয়োজন। আমাদের দেশের সুদীর্ঘ সতেরো বছরের তিন দফার অগণতান্ত্রিক সরকারের আমলে কালো টাকার মালিকেরা বিকশিতই হয়েছে, তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। কিছু কসমেটিক কেচ্ছা আমরা দেখেছি, কিন্তু ঘোমটার নিচে ব্যাপক খ্যামটা নাচও গোপন থাকেনি।

একটা গণতান্ত্রিক সরকারের মন্ত্রী যখন এই ধরনের বেওকুফমার্কা কথা বলে, তখন দেশের গণতন্ত্রকে আবার বিপন্নই হতে দেখি। কালো টাকা সাদা করবেন যখন, কথা কম কন।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

মন্ত্রীর আরেকটা কথাও আমার খুব চোখে লেগেছিল,

আমাদের দেশে কালোটাকা উৎপাদিত হয়ে আসছে বহু দিন। এটা হতেই থাকবে। নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে না, নিরুৎসাহিত করাও এক-দুই দিনে সম্ভব হবে না।

এ কথা মন্ত্রীর অক্ষমতা প্রকাশ করে। এ থেকে বোঝা যায় তিনি কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ অথবা নিজ থেকে হার স্বীকার করে নিচ্ছেন।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

জনগণের সেবা করতে পরম করুণাময় দয়ালু মহান রাষ্ট্রসুভানুওয়াতা'লার যে টেকাটুকা লাগে, সেইটা যদি সে বেক্তিত্থেকে কামাই করতে না পারে, তাইলে ঐ টেকা কি আমনে দিবেন? খাইছে

জোক্স অ্যাপার্ট, যে ব্যক্তি টাকাটা পায়, সেটাতো তার ইনকাম হয়ে যাচ্ছি, নাকি? অন্যান্য রাষ্ট্রে প্রাপকের উপর রেমিটেন্সের আয় কি কর বহির্ভূত?

ভারতে সম্ভবত বহির্ভূত। অন্যান্যগুলোও জানা দরকার।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অন্যান্য রাষ্ট্রে প্রাপকের উপর রেমিটেন্সের আয় কি কর বহির্ভূত?

এটা একটা বেশ ভালো প্রশ্ন। উত্তরটা যদিও আমার জানা নেই। নেট ঘাটতে হবে। তাছাড়া অর্থনীতি পড়ছেন এমন সচলরাও এ বিষয়ে আলোকপাত করতে পারেন।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

সচল অর্থনীতিবিদের কথা বলায় ফাহিম হাসানের কথা মনে পড়ে গেলো। অনেকদিন ওনাকে দেখছি না

সচল জাহিদ এর ছবি

ফাহিম ভাইজান ব্যাস্ত আছেন নব্য চাকুরী নিয়া। গতকাল রাস্তায় হঠাৎ দেখা হইয়া গেল।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জাহিদ ভাই। জেনে খুব ভালো লাগলো। ফাহিম ভাইজানকে নতুন চাকরির অভিনন্দন আর শুভ কামনা।

ইয়াসির এর ছবি

অর্থনীতি কি বলে জানি না, তবে কমন সেন্স বলে, আপনি যদি কোন টাকা হাতে পান সেটা তখনই ইনকাম হিসেবে বিবেচিত হতে পারে যদি তার বদলে আপনি কোন সেবা/পণ্য দিয়ে থাকেন। প্রবাস থেকে যে রেমিটেন্স যায় সেটা সাধারণত পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, পরিবর্তে কোন বিক্রয়যোগ্য সেবা/পণ্য দেয়া হয় না। কখনো কখনো ব্যক্তি নিজের নামে থাকা একটা ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠান, এটা কোনভাবেই ইনকাম নয়। শুধু টাকার হাতবদলকে ইনকাম বললে ধার নেয়া ইনকাম এবং ফেরত দেয়া এক্সপেন্ডিচার (অন্য কারো ইনকাম) হয়ে যেতে পারে

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আপনার কমনসেন্স ভালো লাগলো। আবার আমার কমনসেন্সে - সেবা দিবো, পণ্য দিবো, আবার তার বিনিময়ে যেই অর্থ পাবো, রাষ্ট্রকেও কেনো সেটার ভাগ দিবো - সেটাও ধরে না।

কিন্তু রাষ্ট্রব্যবস্থা অনেক সময়ই এইসব কমনসেন্সের ধার ধারে না। এই যেমন ধরেন, কিউবা রেমিটেন্সের উপর যে শতকরা বিশভাগ কেটে রাখে, ওইটাও আমার কমনসেন্সে ধরে না। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে তারা তাদের দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসূচকের উন্নতি ঘটিয়ে এইরকম কাটাটাকে হালাল করে ফেলেছে। ফলে রাষ্ট্রসেন্সে স্রেফ টাকার হাতবদলকে ইনকাম ধরা যাবে কিনা সেটাও বিচার্য হয়ে যেতে পারে। মন খারাপ

হিমু এর ছবি

দ্বৈত-কর এড়ানোর চুক্তি থাকে এক দেশের সাথে আরেক দেশের। আমাদের দেশের সাথে অনেক বড় অর্থনীতিরই এমন ব্যবস্থা আছে বলে জানি। রেমিট্যান্সের ওপর এ কারণে ট্যাক্স রেমিশন আছে।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

এটা একটা ভালো তথ্য জানাইলেন।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

'ট্যাক্স রেমিশন' কথাটা আমাকে ডাবলিনে এক ভদ্রলোক বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রেমিটেন্সের টাকায় যদি বাড়ি বানানো হয় তখন সেই বাড়ির ভাড়া থেকে আয় এলে সেখানে ট্যাক্স বেনিফিট পাওয়া যায়। যদিও এর বেশি ভদ্রলোক ব্যাখ্যা করতে পারেন নি। এ বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত জানাবেন হিমু ভাই?

হিমু এর ছবি

আমি তেমন বিশদ জানি না। তবে আমাদের রাজস্ব বোর্ডের উচিত কর সংক্রান্ত সিচুয়েশনগুলো প্রাঞ্জলভাবে ব্যাখ্যা করা। তারা হাতি যেতে দেখে না, মশা দেখলে হাততালি দেয়।

মাহমুদুল ফয়সল আল আমীন এর ছবি

" যে ব্যক্তি টাকাটা পায়, সেটাতো তার ইনকাম হয়ে যাচ্ছি, নাকি?"

আমি যদি দেশের মধ্যে থেকে আয় করি আর তার অংশ আমার বাবা/মাকে দিই, তাহলে সেটা কি আমার বাবা/মার আয় হয়ে যাবে? যদি সেটা তাদের আয় না হয়, তবে যারা বিদেশে আয় করছেন এবং দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন, সেটা কেন তাদের প্রাপকের আয় হিসেবে ধরা হবে?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আমি যদি দেশের মধ্যে থেকে আয় করি আর তার অংশ আমার বাবা/মাকে দিই, তাহলে সেটা কি আমার বাবা/মার আয় হয়ে যাবে?

আপনার বাবা মাকে বা আপনার বিবাহিত ভাই বা বোনকে ধরুন টাকা পাঠালেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের ট্যাক্স ফাইলে হাউসহোল্ড ইনকামের খাতে রেমিটেন্সকে সম্ভবত দেখাতে হবে। সেই অর্থে বলেছি। সেক্ষেত্রে কর রেয়াতের প্রশ্ন চলে আসে। এ সংক্রান্ত কী আইন সেটাই জানতে চেয়েছিলাম। এরপর অনেকে উল্লেখ করেছেন আইনের কথা।

পরাগ এর ছবি

হায় মাল , এই বুড়া কালে, তোমাকে দংশিল কিনা রাম ছাগলে ।
যে দিকে তোমার দুচোখ যায় ,তার সব কালো
আর তুমি , সাদা ধবল বলাকা, বাংলার আলো!
তোমাকে ঢাকায় এনেছে কুজন , বিরাট এক বড় ভুল করে
তোমার আসল ঠিকানা কিন্তু যমুনাপাড়ে।

ফকির লালন এর ছবি

যদ্দুর জানি, দুই দেশের মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি থাকলে একই আয়ের জন্য দুই দেশে কর দেয়ার কথা নয়। সেজন্য যেখান থেকে রেমিট্যান্স পাঠানো হলো সেখানে কর দেয়াই যথেষ্ট।

বাংলাদেশে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের উপর কোন কর নেই বলেই জানি। অই রেমিট্যান্স পুনরায় বিনিয়োগ করা হলে তার লভ্যাংশের উপর কর হওয়ার কথা। যেমন তা ব্যাঙ্কে রাখলে, বাড়ী বানিয়ে ভাড়া দিলে সেই ভাড়াসেই সুদের উপর কর হবে।

যিনি বিদেশে অবস্থান, জীবিকা বা আয় অবৈধ তিনি আইনগত পথে টাকা দেশে পাঠাতে পারেন না। ওখানকার নিয়ম এবং টেরর ফাইনান্সিং মনিটরিং এর কারণে তা সম্ভব হয়না, কেননা সাধারণত সব দেশেই আয়ের উতস, পরিচয় পত্র, প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানা দিতে হয় টাকা পাঠাতে। এইরকম ভিসাহীন প্রবাসীর সংখ্যা যথেষ্ট, তাদের টাকা দেশে আসে হুন্ডির মাধ্যমে। এভাবে আসা টাকা কালো টাকা।

আবার দেশে অর্জিত কালো টাকাও একই ভাবে বিদেশে স্থানান্তরিত হয়। ধরুন করিম দেশে সাত হাজার টাকা ঘুষ খেলো। তার শালার একটা মানি এক্সচেঞ্জ আছে লন্ডনে। আপনি তাকে একশো ডলার দিলেন দেশে পাঠাতে। করিম তখন আপনার তরফের প্রাপককে দেশে অই কালোটাকা দিয়ে দেবে এবং তার শালা করিমের লন্ডনের একাউন্টে বা নিজের কাছে করিমের অই একশো ডলার রেখে দেবে সে যখন লন্ডন যাবে তখন খরচ করার জন্য। এই এক্সচেঞ্জটা তারা অফিসিয়ালি দেখায়না।

যুক্তরাজ্যের বাঙ্কের বা এক্সচেঞ্জ দ্বারা প্রেরিত সকল প্রেরিত অর্থ কোথায় পৌছায় তাও মনিটর করার কথা টেরর ফাইনান্সিং মনিটর করার জন্য।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

যিনি বিদেশে অবস্থান, জীবিকা বা আয় অবৈধ তিনি আইনগত পথে টাকা দেশে পাঠাতে পারেন না। ওখানকার নিয়ম এবং টেরর ফাইনান্সিং মনিটরিং এর কারণে তা সম্ভব হয়না, কেননা সাধারণত সব দেশেই আয়ের উতস, পরিচয় পত্র, প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানা দিতে হয় টাকা পাঠাতে। এইরকম ভিসাহীন প্রবাসীর সংখ্যা যথেষ্ট, তাদের টাকা দেশে আসে হুন্ডির মাধ্যমে। এভাবে আসা টাকা কালো টাকা।

অর্থমন্ত্রী যে করের কথা বলছেন, সেটা কি এই টাকার উপর নাকি যারা অফিসিয়ালি পাঠাচ্ছে তাদের টাকার উপর? তাছাড়া কর বসানো হলে কি তখন মানুষ হুন্ডির দিকে অধিক ঝুঁকে পড়বে না?

শারেক শহিদ এর ছবি

হিমু ভাইয়া যে কথাটা বলেছেন, আমি ঠিক তাই বলতে যাচ্ছিলাম । দ্বৈত কর ব্যবস্থার সামন্জস্য সাধনের জন্য, যেন একই টাকা দু'বার আয়কর এর আওতায় না পড়ে, তা নিশ্চিত করার জন্য, বাংলাদেশ বেশিরভাগ দেশের সাথেই চুক্তি করেছে । তার আলোকে যে আয় বিদেশে একবার আয়করের আওতায় (যেটার হার বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশি) পড়েছে, সেটার ওপর আবার আয়করের কথা বলা কোন ধরনের যৌক্তিকতা, সেটা মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া যেতেই পারে ।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

নিচে হাসিব ভাই হয়তো এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানাতে পারবেন।

দুর্দান্ত এর ছবি

স্টকবাজার অনিয়মে নিরদিষ্ট লোকের নাম এসেছিল, সেসময়ে সে বলেছিল আমার ক্ষমতা সীমিত। সহজ ভাষায় আগামি নিরবাচনে যারা আয়ামী লীগ কে চাঁদা দেবেন, ইনি তাদের পক্ষে কথা বলবেন।

আমুল মাল মন্ত্রী নন, ইনি আওয়ামি লীগের পারটি ট্রেজারার।

***
"কেউ বিদেশ থেকে বড় অংকের টাকা পাঠালে এবং তার আয়ের প্রকৃত উৎস না থাকলে তাকে বিদেশেই আদালতের মুখোমুখি হতে হবে।"

ইউরোপের রেস্টুরেন্ট মালিকদের কয়জনের প্রক্ক্রিত আয় রোজগারের হিসাবে সরকারের কাছে দেন বলে আপনি মনে করেন? বাংগালি রেস্টুরেন্ট মালিকদের কতজন এযাবত বিদেশী আদালতের মুখোমুখি হয়েছে বলে আপনার মনে হয়? এদের শতকরা কয়জন আনুষ্ঠানিক মানি এক্সচেন্জের মাধ্য়মে দেশে টাকা পাঠায় বলে আপনার মনে হয়?

***

"উভয় ক্ষেত্রেই যে টাকা পাঠাচ্ছে, তার যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা যে কোন মুহূর্তে দেখতে চাইতে পারে। যেহেতু ব্যঙ্কের কাছে পাসপোর্টের ফটোকপি, ঠিকানা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে, চাইলেই আপনার সম্পর্কে সেই নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা বিভিন্ন তথ্য বের করে নিতে পারবে।"

"চাইলেই" পারবে না। আপনার বিরুদ্ধে যদি কোনরকম আইনগত অভিযোগ না থাকে, তাহলে আপনার তথ্য় দেখতে বা অন্য়ভাবে ব্য়াবহার করতে হলে যে সরকারি অথরিটি এই কাজটি করতে চাচ্ছে, তাকে প্রথমে আপনার কাছে যথোচিত নোটিশ পাঠাতে হবে, আপনি লিখিত সম্মতি দিলে তবেই তারা আপনার তথ্য় (ব্য়ান্ক স্টেটমেন্ট এর অন্তরগত) দেখতে ও ব্য়াবহার করতে পারবে।

***

প্রক্ররিত বিদেশী আয়ই কি বিদেশ থেকে দেশে রেমিটেন্স স্রোতের একমাত্র উতস? তাহলে গারমেন্ট্সের আন্ডার ইন্ভয়েসের টাকা, বিদেশী সরবরাহকারির কাছ থেকে সরকারি করমচারিকে দেয়া ঘু্ষ, বিদেশে বেনামে কিনে রাখা সম্পদের মাসিক ভাড়া, রাজনীতির চাঁদা, বিদেশ থেকে দেশের ভেতরে কলকাঠি নাড়ার খরচাপানি এগুলো দেশে ঢোকে কিভাবে?
***

বিদেশের আয়ে বিদেশে আয়কর দেয়া হল। কিন্তু সেই টাকা ‌যখন দেশে গিয়ে সম্পদে পরিনত হয়ে নতুন আয় রোজগার শুরু করলো, তখন? আপনি যদি আপনার বোনের কাছে আপনার জন্য় একটি এপারটমেন্ট কেনার জন্য় দেশে টাকা পাঠান, আর আপনার বোন যদি সেই এপারটমেন্টের মাসিক ভাড়া আপনার নামে কোন ব্য়ান্কে জমা রাখে, আর সেই আয় যদি করসীমার ওপরে হয়, তাহলে কি শুধু বিদেশে থাকেন বলে আপনার কর মওকুফ আশা করা উচিত?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ইউরোপের রেস্টুরেন্ট মালিকদের কয়জনের প্রক্ক্রিত আয় রোজগারের হিসাবে সরকারের কাছে দেন বলে আপনি মনে করেন? বাংগালি রেস্টুরেন্ট মালিকদের কতজন এযাবত বিদেশী আদালতের মুখোমুখি হয়েছে বলে আপনার মনে হয়? এদের শতকরা কয়জন আনুষ্ঠানিক মানি এক্সচেন্জের মাধ্য়মে দেশে টাকা পাঠায় বলে আপনার মনে হয়?

ইউরোপের বাঙালী রেস্টুরেন্টের মালিকরা আয় লুকোয় কিন্তু সেটা তারা চতুর ভাবে আইনকে ফাঁকি দিয়ে করে। এ বিষয়েও আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে তাদের কাছ থেকে দেখার। কর্মচারীদের বেতন বাবদ অনেক টাকা দেখায় কিন্তু দেয় মাত্র ২৫০ ইউরো সপ্তাহে। ব্যক্তিগত গাড়ির তেল থেকে শুরু করে অনেক কিছুই রেস্টুরেন্টের নামে দেখায়। এভাবে এক সময় আয়ের থেকে ব্যায় বেশি হয়ে যায়। ফলে বিদেশী আদালতে মুখোমুখি হবার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু এই উদাহরণটা আপনি আমার যে লাইনকে কোট করলেন সেটার সাথে কী করে যায় বুঝলাম না। আর কত জন আনুষ্ঠানিক ভাবে টাকা পাঠায়? আমি যেখানে জব করতাম, সেখানে অনেককেই পাঠাতে দেখেছি।

"চাইলেই" পারবে না। আপনার বিরুদ্ধে যদি কোনরকম আইনগত অভিযোগ না থাকে, তাহলে আপনার তথ্য় দেখতে বা অন্য়ভাবে ব্য়াবহার করতে হলে যে সরকারি অথরিটি এই কাজটি করতে চাচ্ছে, তাকে প্রথমে আপনার কাছে যথোচিত নোটিশ পাঠাতে হবে, আপনি লিখিত সম্মতি দিলে তবেই তারা আপনার তথ্য় (ব্য়ান্ক স্টেটমেন্ট এর অন্তরগত) দেখতে ও ব্য়াবহার করতে পারবে।

পাসপোর্টের ফটোকপি এবং প্রুফ অব এ্যাড্রেস চাইলেই দেখতে পারে। আমি নিজে যখন জব করেছি তখন দেখেছি মানিট্রান্সফার কোম্পানীর কাছে তারা প্রতিটা বড় ট্রান্জেকশনের জন্যে এই দুটো জিনিস দেখতে চেয়েছে। ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট যদি দেখার দরকার পড়ে ওরা দেখতে পারবে, এমন কি জব্দও করতে পারবে। হোম আফিসের কোন রকম নোটিস ছাড়া ব্যাঙ্ক একাউন্ট জব্দ করার উদাহরণ অতীতে বেশ কয়েকটা শুনেছি কাছের মানুষের কাছ থেকে।

প্রক্ররিত বিদেশী আয়ই কি বিদেশ থেকে দেশে রেমিটেন্স স্রোতের একমাত্র উতস?

আমার লেখার কোন জায়গায় বলেছি বিদেশীদের আয় রেমিটেন্সের 'একমাত্র উৎস' একটু দেখাবেন কি?

বিদেশের আয়ে বিদেশে আয়কর দেয়া হল। কিন্তু সেই টাকা ‌যখন দেশে গিয়ে সম্পদে পরিনত হয়ে নতুন আয় রোজগার শুরু করলো, তখন? আপনি যদি আপনার বোনের কাছে আপনার জন্য় একটি এপারটমেন্ট কেনার জন্য় দেশে টাকা পাঠান, আর আপনার বোন যদি সেই এপারটমেন্টের মাসিক ভাড়া আপনার নামে কোন ব্য়ান্কে জমা রাখে, আর সেই আয় যদি করসীমার ওপরে হয়, তাহলে কি শুধু বিদেশে থাকেন বলে আপনার কর মওকুফ আশা করা উচিত?

আমি আলোচনা করছি রেমিটেন্স দেশে পাঠানো হলে সেটার উপর কর না বসানো নিয়ে। সেটা দিয়ে নূতন আয়-রোজগার দিয়ে নয়। এখন যদি সেটা দিয়ে আমি বাংলাদেশে ব্যবসা করি, তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই আমাকে কর দিতে হবে। আমি কোন দেশে বাস করি মূখ্য নয়, কোন দেশে আয় করি সেটাই মূখ্য। কিন্তু এই পোস্ট কিম্বা মন্ত্রীর মন্তব্য সে বিষয়কে নিয়ে নয়।

ইয়াসির এর ছবি

চলুক

দুর্দান্ত এর ছবি

"এই উদাহরণটা আপনি আমার যে লাইনকে কোট করলেন সেটার সাথে কী করে যায় বুঝলাম না।"

আপনি বললেন বিদেশে কালো টাকা থাকলে সেখানেই আইনের মুখোমুখি হতে হবে। আমি রেস্টুরেন্ট মালিকদের উদাহরন দিয়ে বললাম যে কথাটা সত্য় নয়। পশ্চিমের অনেকদেশেই খুচরা ব্য়াবসায় ছিঁচকে চুরিতে আইনের প্রয়োগ বেশ শিথিল। প্রাবাসি বাংলাদেশী (সেই সাথে আরো অনেক দেশী)খুচরা ব্য়াবসায়ী মানে রেস্টুরেন্টের মালিক ও দোকানদারেরা যে দেশে থাকেন, সে দেশে খুব কমই কর দেন, কেউ কেউ কোন করতো দেনই না, উল্টো পোষ্য়দের জন্য় নিয়মিত বেনেফিট আদায় করে থাকেন। যে টাকার ওপরে তারা কর প্রদান করেন না, সে টাকার তারা বাংলাদেশেই স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পাঠান। যেহেতু সেই আয় প্রকাশিত নয়, করারোপিত নয়, তাই সেটা সেই দেশে কালো টাকা। সেই টাকা যেহেতু প্রকাশ্য়ে বাংলাদেশে আসে না, তাই সেটা বাংলাদেশেও করারোপিত নয়, এবং সেটা কালো।

"আমার লেখার কোন জায়গায় বলেছি বিদেশীদের আয় রেমিটেন্সের 'একমাত্র উৎস' একটু দেখাবেন কি?"

আপনি সেরকম বলেছেন, সেটাতো আমিও বলিনি। আমি বলেছি যেযে ধরনের লেনদেনের কথা আপনার লেখায় এসেছে, সেখানে নিয়্ন্ত্রনের সুযোগ-উপায়-সদিচ্ছা এগুলো মন্ত্রীর বা ব্য়াক্তির থাকতে পারে। যেসব অন্য়ান্য় লেনদেনের কথা আমি মন্তব্য়ে বলেছি, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ-উপায়-সদিচ্ছা নিয়ে কি আলোচনা জরুরী নয়?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আপনি আবার আমাকে ভুল ভাবে কোট করলেন। আমি বলি নি বিদেশে কালো টাকা থাকলে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। আমি বলেছি,

অর্থাৎ, কেউ বিদেশ থেকে বড় অংকের টাকা পাঠালে এবং তার আয়ের প্রকৃত উৎস না থাকলে তাকে বিদেশেই আদালতের মুখোমুখি হতে হবে।

আপনি যদি তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সাথে কাজ করে থাকেন অথবা কাজ করে এমন কাউকে জিজ্ঞেস করনে, তাহলে দেখতে পাবেন এই বিষয়টা মোটেও ছোট করে দেখার অবকাশ আর নেই। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের কারণে প্রতিটা উন্নত রাষ্ট্র এখন বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা কোথায় যাচ্ছে সেটার খোঁজ রাখে; একই সাথে কে পাঠাচ্ছে সেটারও খোঁজ রাখে। মাত্র ১০০০ ইউরো, সেটার জন্যে আয়ারল্যান্ডের ফিনান্সিয়াল রেগুলেটর যেভাবে আমাদের কাছ থেকে পই পই করে ডকুমেন্ট চেয়েছে তা রীতিমত অবিশ্বাস্য।

সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ-উপায়-সদিচ্ছা নিয়ে কি আলোচনা জরুরী নয়?

অবশ্যই জরুরী। সে আলোচনার অবকাশও রয়েছে। আমি মূলতঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর বৈধ উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেতে চেয়েছি এই পোস্টে।

দুর্দান্ত এর ছবি

১০০০ ইউরোর জন্য় পই পই করে ডকুমেন্ট চাইবার মত লোকবল আয়ারল্য়ান্ডের কেন্দ্রীয় ব্য়ান্কের নেই। এরকম ঘটনা তখনই ঘটবে, যখন আপনি যে বিশেষ প্রতিষ্ঠানের কথা বলছেন, তাদের নাম কেন্দ্রীয় ব্ত্য়ান্কের কোন একটি সন্দেহ খাতায় তোলা আছে।

আয়ারল্য়ান্ডের কেন্দ্রীয় ব্য়ান্কের নিয়মকানুন নিয়ে আপনিও আরেকটু খোঁজ নিন। আয়ারল্য়ান্ড থেকে বিদেশে টাকা পাঠানো সেবা সহ যাবতীয় অরথবানিজ্য় ২০১০ সালের মানি লন্ডারিনং ও টেররিস্ট ফাইনান্সং এক্ট এর আওতায়, পুরাতন আইনকে এই নতুন নতুন এক্ট এর মাধ্য়মে হালনাগাদ করা হয়েছে ইয়রোপিয় আইনের সাথে সমতা আনার জন্য়। এই আইন অনুযায়ী ১৫ হাজার ইউরোর এককালীন লেনদেনের নিচে তদারকি শুধুমাত্র ঝুঁকিভিত্তিক পরযালোচনার পরেই করা হবে।

যেটা বলছিলাম, আপনার যদি একটি চালু ব্য়াবসা থাকে আর সেইসাথে আপনি যদি সন্দেহের খাতায় নাম নেই এরকম কোন ব্য়ান্ক থেকে অনিয়মিত ভাবে বাংলাদেশে ১৪৯৯৯ ইউরো পাঠাতে থাকেন, তাহলে ইউরোপের কোন করত্রিপক্ষের নজরে আপনি নেই। সেই ১৪৯৯৯ আকারের কয়েকটি ব্য়াবসার নগদ হিসাব (কারেন্ট একাউন্ট) পরিশোধের বিপরিতে যদি আবার আপনার সমান আকারের রোজগার দেখানো থাকে, তাহলে সেটাও কর করত্রিপক্ষের গোচরে আসবার কোন কারন নেই, সেটারও বিবিধ কারন আছে, যার একটা হল আবার সেই ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি। সেই টাকা আপনার নিজের হতে হবে সেটারও কোন প্রয়োজনে নেই, যুতমত চালান ব্য়াবহার করে আপনি অন্য়ের টাকাও দেশে পাঠাতে পারবেন। ব্রিটেনে এরকম "চালানের খেলা" ব্য়াবহার করে অনেকেই তাদের এইচ-এস-এম-পি ভিসা বলবত রাখেন, ফ্রেট ফরওয়ারডিং এর কমিশন ওঠান। মূলধনের বিপরীতে বড় বড় কয়েকটি অনাদায়ী চালান দেখিয়ে আপনি হোল্ডিং এর একটি প্রতিষ্ঠানে লালবাতি দেখান, পরের বছর চক্রাকের আবার একই জিনিস চলুক। আবার যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিং জারসি বা গারনসি তে নিবন্ধিত হয়, তাহলে তো মহারানির হোম অফিস বা ইউরোপিয় ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ আপনাকে ছুঁতেও পারবে না।

হাজার হাজার ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের ব্য়ান্কস্টেটমেন্ট খুঁটিয়ে দেখার মত তথ্য়প্রযুক্তিতে খাটানোর মত বাইক্কা টাকা আয়ারল্য়ান্ড সরকারের অনেকদিন ধরেই নেই। এইসব বলছি, এর কারন, আপনার এই পোস্টের বক্তব্য়ের বিপরীতে ব্য়াক্তি রিমেটেন্স এর চাইতে ইউরোপে প্রবাসি হাই প্রোফাইল রাজনইতিক আশ্রয়প্রাপ্ত বাংলাদেশীদের প্রাতিষ্ঠানিক রেমিটেন্স অনেক বড় সমস্য়া। এইসব লেনদেনের ক্ষেত্রে আয়ের উতস বা কোথায় টাকা যাচ্ছে, কে পাঠাচ্ছে তার তদারকি নেই বললেই চলে। আর সেই সুযোগটাই ব্য়াবহার করছে এরা।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ভাই, ব্লগে বসে অনেক কথাই বলা যায়। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে বোঝা যায় কি আছে আর কী নেই। যেমন আপনি ধুম করে বলে দিলেন তথ্য প্রযুক্তির অবকাঠামো নেই। কিন্তু মশা মারতে কামান কেন দাগাচ্ছেন? সব সময় হলিউড স্টাইলে নজরদারী করা লাগে না।

প্রতিটা ট্রানজেকশনের ব্যাখ্যা সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ককে কোম্পানী গুলো দেয়, সেটার জন্যে আইরিশ সরকারের তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োজন পড়ে না। কোম্পানীগুলো যে মানি ট্রান্সফার করে, সেটা তাদের নির্দিষ্ট একাউন্ট থেকে করতে হয়। সেই একাউন্টের একটা ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট নিলেই বেরিয়ে যায়। আমি সরাসরি তাদের ইন্সপেকশন দেখেছি। অফিসাররা ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টের ট্রানজেকশন এবং সেটার রেসপেক্টিভ রিসিট নিয়ে বসে। তারপর দেখতে থাকে। তাছাড়া টাকাটা ট্রান্সফার হয় একটা সফটঅয়্যার দিয়ে। সেখানে যে পাঠাচ্ছে, তার প্রতিটা আগের ট্রানজেকশন দেখা যায়। কারো ব্যাপারে সন্দেহ হলে আগের ট্রানজেকশনেও চোখ বোলাতে পারে অফিসাররা। আর এটা এমন নয় যে কোম্পানী সন্দেহজনক। সবার জন্যে নিয়মিত এই ইন্সপেকশন হয়।

১৪৯৯৯ ইউরো যদি আপনি আয়ারল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে একবারও পাঠান, সেটা নজরে আসতে বাধ্য। হয়তো আপনাকে তখনই ঘাটাবে না কিন্তু নজরে আসবে আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমি মন্তব্য করার আগেই আপনি আগের মন্তব্যটা কিছুটা পাল্টে দিয়েছেন। তাই আরেকটু যোগ করছি,

হাজার হাজার ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের ব্য়ান্কস্টেটমেন্ট খুঁটিয়ে দেখার মত তথ্য়প্রযুক্তিতে খাটানোর মত বাইক্কা টাকা আয়ারল্য়ান্ড সরকারের অনেকদিন ধরেই নেই।

আমি যেটা পোস্টে আলোচনা করেছি এবং মন্তব্যে বলেছি, সেটা মোটেও হাজার হাজার ছোট প্রতিষ্ঠানের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট চেক করা নয়। আমি বলেছি মানি ট্রান্সফার কোম্পানীগুলোর ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট চেক করার কথা। আয়ারল্যান্ডে মানি ট্রান্সফারিং কোম্পানী ১০০টার উপরে নেই। সবার লিস্ট ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ওয়েব সাইটে একটা পিডিএফ ফাইলে। এখন পাচ্ছি না তবে একান্তই দরকার হলে আমি ডাবলিনে যে কোম্পানীতে ছিলাম তাদের অনুরোধ করতে পারি লিস্টটা পাঠাতে।

দুর্দান্ত এর ছবি

"আমি বলেছি মানি ট্রান্সফার কোম্পানীগুলোর ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট চেক করার কথা।"

সেটাই তো আমার পয়েন্ট রে ভাই। মানি ট্রান্সফারে যে রেমিটেন্স যায়, সেটা দেশে বা বিদেশে কালো হবার সুযোগ-উপায়-সদিচ্ছা কম। আমি বলছি বিদেশ থেকে দেশে রেমিট্য়ান্স যাবার রাস্তা শুধু মানি ট্রান্স্ফার কোম্পানি না। আরো অনেক আছে, আরো বড় আছে, সেগুলো তদারকির কোন যথোচিত পন্থা নেই।

হাসিব এর ছবি

বিদেশের আয়ে বিদেশে আয়কর দেয়া হল। কিন্তু সেই টাকা ‌যখন দেশে গিয়ে সম্পদে পরিনত হয়ে নতুন আয় রোজগার শুরু করলো, তখন?

তখন নতুর আয় রোজগার শুরু হলে সেটা নতুন ভ্যালু এডিশন। সেটা অবশ্যই ট্যাক্সেবল।

"চাইলেই" পারবে না। আপনার বিরুদ্ধে যদি কোনরকম আইনগত অভিযোগ না থাকে, তাহলে আপনার তথ্য় দেখতে বা অন্য়ভাবে ব্য়াবহার করতে হলে যে সরকারি অথরিটি এই কাজটি করতে চাচ্ছে, তাকে প্রথমে আপনার কাছে যথোচিত নোটিশ পাঠাতে হবে, আপনি লিখিত সম্মতি দিলে তবেই তারা আপনার তথ্য় (ব্য়ান্ক স্টেটমেন্ট এর অন্তরগত) দেখতে ও ব্য়াবহার করতে পারবে।

এইটার জন্য নোটিশ লাগে না। অন্তত বলা যায় অনেক দেশেই লাগে না। পুলিশ, টোলঅফিস এটা আপনাকে না জানিয়েই করতে পারে অনেক জায়গাতে।

ইউরোপের রেস্টুরেন্ট মালিকদের কয়জনের প্রক্ক্রিত আয় রোজগারের হিসাবে সরকারের কাছে দেন বলে আপনি মনে করেন? বাংগালি রেস্টুরেন্ট মালিকদের কতজন এযাবত বিদেশী আদালতের মুখোমুখি হয়েছে বলে আপনার মনে হয়? এদের শতকরা কয়জন আনুষ্ঠানিক মানি এক্সচেন্জের মাধ্য়মে দেশে টাকা পাঠায় বলে আপনার মনে হয়?

অনেকেই, বিশেষ করে ব্যবসা যারা করেন তারা অধিকাংশই নয় ছয় করেন। তবে সেটা কিন্তু আমার টাকা কালো টাকা এইটা বলার বৈধতার জন্য ভালো কারণ না।

হাসিব এর ছবি

বিপদ হলো অর্থমন্ত্রী একটা গুরুত্বপূর্ন পদ এবং এই পদে রাজনৈতিক মাথার সাথে এ্যাকাডেমিক মাথাটাও থাকা লাগে। অর্থমন্ত্রী মনে হয় ডাবল ট্যাক্সেশন নামে একটা টার্ম আছে সেই বিষয়ে অবহিত নন। দুই দেশের মধ্যে লেনদেন হলে একই প্রকার ট্যাক্স যাতে দুই দেশেই না দিতে হয় সেজন্য সরকারগুলো চেষ্টা করে। যেমন,

আমি বিদেশে একটা ক্যামেরা কিনলাম। সে ক্যামেরা দেশে নিয়ে গেলাম। এয়ারপোর্টে সেক্ষেত্রে এটাকে রপ্তানী হিসেবে দেখবে। রপ্তানীযোগ্য পন্যে ভ্যাট থাকে না সাধারণত। এক্ষেত্রে এয়ারপোর্ট থেকে দোকানে দেয়া ভ্যাট ফেরত পাওয়া যায়। আপনাকে ট্যাক্স দিতে হবে দেশে ফিরে দেশের এয়ারপোর্টে আমদানী শুল্ক হিসেবে। আপনি যদি বিদেশে ভ্যাট ও আমদানী শুল্ক দুটোই দেন তাহলে আপনার ডাবল ট্যাক্সেশন হবে।

অর্জিত ট্যাক্সউত্তর আয়ের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণের চেষ্টা করা হয়। বেশিরভাগ ইউরোপিয়ান দেশে বাবামা বা পরিবারের কাউকে টাকা পাঠালে ট্যাক্স রেয়াত পাওয়া যায়। তবে এটার কারণ ডাবল ট্যাক্সেশন নয়। এটার মূল কারণ হলো আপনি ডিপেন্ডেন্ট সাপোর্ট করেন মানে হলো আপনার আবশ্যকীয় খরচের খাত বেশি। অর্থাত আপনার ব্যয়যোগ্য আয় কম। বাবামা ছাড়াও অবিবাহিত থেকে বিবাহিত হলেও ট্যাক্সের চাপ কমে একই যুক্তিতে।

অর্থমন্ত্রী মনে হয় জানেন না যে বাংলাদেশের সাথে ২০টা দেশের ইতিমধ্যে এই ডাবল ট্যাক্সেশন চুক্তি আছে। আরো অন্তত ২০টা দেশের সাথে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে বা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইন্ডিয়া ৮০টিরও বেশি দেশের সাথে এই চুক্তি করে ফেলেছে। এই চুক্তিগুলোর বলে ডাবল ট্যাক্সেশন এড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। অর্থমন্ত্রীর কথা শুনে মনে হলো উনার মন্ত্রনালয়ে কী হয় সেটা উনি নিজেই ভালো করে জানেন না। এই মন্ত্রী দেশ চালাবে কীভাবে!

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমি বিদেশে একটা ক্যামেরা কিনলাম। সে ক্যামেরা দেশে নিয়ে গেলাম। এয়ারপোর্টে সেক্ষেত্রে এটাকে রপ্তানী হিসেবে দেখবে। রপ্তানীযোগ্য পন্যে ভ্যাট থাকে না সাধারণত। এক্ষেত্রে এয়ারপোর্ট থেকে দোকানে দেয়া ভ্যাট ফেরত পাওয়া যায়। আপনাকে ট্যাক্স দিতে হবে দেশে ফিরে দেশের এয়ারপোর্টে আমদানী শুল্ক হিসেবে। আপনি যদি বিদেশে ভ্যাট ও আমদানী শুল্ক দুটোই দেন তাহলে আপনার ডাবল ট্যাক্সেশন হবে।

হ্যা, আমিও এটা লক্ষ্য করেছি। আয়ারল্যান্ডে কিছু দোকান আছে যারা অন্য দেশের মানুষদের পাসপোর্ট এবং টিকেট দেখে করটা ফেরত দিয়ে দেয়। 'ক্যারলস'-এর মধ্যে অন্যতম। সারাক্ষণ দোকানে মাইক বাজতে থাকে, 'তুমি যদি টুরিস্ট হয়ে থাকো, তাহলে ডিউটি ফ্রি পারচেজ করতে পারবে।' তাছাড়া হিথ্রো এয়ারপোর্টেও রেভিনিউর একটা বুথ আছে যেখানে রিসিট দেখিয়ে কর ফেরত নেয়া যায়।

২০টা দেশের ইতিমধ্যে এই ডাবল ট্যাক্সেশন চুক্তি আছে। আরো অন্তত ২০টা দেশের সাথে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে বা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত জানানো যায় কি?

হাসিব এর ছবি

আমার হাতে এই মুহুর্তে কোন আপডেটেড কাগজ নেই। ওয়েব ঘেটে ২০০২ সালে বানানো একটা ডকুমেন্ট পেলাম ওটা পড়ে দেখতে পারেন। দুইপাতা, বেশি সময় লাগবে না। লিংক

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

লিঙ্কটা শেয়ার করার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। ডকুমেন্টটা পড়ে অবাক হলাম। সেই ১৯৭৮ সন থেকে বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের যাতে ডাবল ট্যাক্স দিতে না হয় সে বিষয়ে কাজ করছে। ২০টা দেশের সাথে চুক্তিও হয়েছে। অথচ আমাদের মন্ত্রী পুরোই ভিন্ন স্রোতে কথা বলছেন! এখন মনে প্রশ্ন জাগছে, আদৌ তিনি জানেন তো এই চুক্তিগুলোর কথা?

হাসিব এর ছবি

আয়ারল্যান্ডে কিছু দোকান আছে যারা অন্য দেশের মানুষদের পাসপোর্ট এবং টিকেট দেখে করটা ফেরত দিয়ে দেয়।

এটা শুধু কয়েকটা দোকানই না। মানসম্মত দোকানগুলোর সবগুলোতেই এই সুবিধা থাকার কথা। ওখান থেকে আপনি একটা ফর্ম পাবেন। ওই কাগজটা দেখিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে ভ্যাট রিফান্ড নিতে পারবেন। জার্মানিতে এই কাজ করে গ্লোবাল ব্লু নামে একটা সংস্থা। আয়ারল্যান্ডে কিছু দোকান আছে যারা অন্য দেশের মানুষদের পাসপোর্ট এবং টিকেট দেখে করটা ফেরত দিয়ে দেয়।নির্দিষ্ট দেশের লিংকে গিয়ে ক্লিক করেআপনি নিয়ম জেনে নিতে পারবেন ওদের সাইটে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আবারও ধন্যবাদ। দুর্দান্ত লিঙ্ক। অনেকগুলো দেশের লোকাল রেগুলেশন এখানে রয়েছে।

ইয়াসির এর ছবি

অবিবাহিত থেকে বিবাহিত হলেও ট্যাক্সের চাপ কমে একই যুক্তিতে

পার্টনার নিজেও চাকুরীরত হলে ট্যাক্স বেড়ে যেতে পারে, কারন দুইজন মিলে অবকাঠামো শেয়ার করেন আর খরচের খাত কমে যায় (থিওরেটিক্যালি কমে, বিয়ে করে কে কবে খরচ কমাতে পেরেছে?)। সুইজারল্যান্ডের নিয়মটা এই রকমই। ইউরোপের বাকি দেশগুলোতে কেমন কে জানে?

এবিএম এর ছবি

আগেই জানতাম, এই লোকের কথাবার্তায় ভেজাল আছে।
বিষয়টা পরিষ্কার হলো আরো।
লেখা ভালো লাগলো।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ভালো লাগলো জেনে আমারও ভালো লাগলো। লেখাটা পুরোই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। অর্থনীতি আমার বিষয় নয়, তাই থিউরিটিকালি আমি তেমন জানি না। চলতে-ফিরতে যা দেখেছি তাই লিখেছি।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

সব সরকারই দেখি মন্ত্রী-সভায় একটা কইরা তার-ছিঁড়া বসায়।

মরুভূমিতে যেই শ্রমিকের ঘাম বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে মিহি লবনে পরিণত হয়- তিনি কি সেই লবণ চাটতে চান? তার আগে ভদ্রলোকরে আরব দেশে পাঠাইয়া দুই মাস রাখালের কাজ করতে অনুপ্রাণিত করা হউক!

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

মরুভূমিতে যেই শ্রমিকের ঘাম বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে মিহি লবনে পরিণত হয়- তিনি কি সেই লবণ চাটতে চান? তার আগে ভদ্রলোকরে আরব দেশে পাঠাইয়া দুই মাস রাখালের কাজ করতে অনুপ্রাণিত করা হউক!

চলুক

সচল জাহিদ এর ছবি

কস্কি মমিন!


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

যদিও অর্থনীতি তেমন বুঝিনা, তারপরেও সাহস করে বলি, আমার দেখা বাংলাদেশের ব্যর্থতম অর্থমন্ত্রী, বেহায়াও বটে।
লেখায় চলুক

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

আর কোন দেশে পাঠানো টাকার উপর সরাসরি কর আছে কি? কেউ জানেন?

একটা বিষয়ে দেখলাম একজনের (দুর্দান্ত দা) বিভ্রান্তি রয়েছে। বিদেশ থেকে পাঠানো টাকায় লাভজনক যাই করেন না কেন, আপনাকে তো কর দিতে হবে। সেই পাঠানো টাকায় যদি নিউমার্কেটে দোকান চালানো হয় সেখান থেকে আয়কর দেব না এমন কোন কথা কেউ কোন দিন বলেনি।

আপনার বোন যদি সেই এপারটমেন্টের মাসিক ভাড়া আপনার নামে কোন ব্য়ান্কে জমা রাখে, আর সেই আয় যদি করসীমার ওপরে হয়, তাহলে কি শুধু বিদেশে থাকেন বলে আপনার কর মওকুফ আশা করা উচিত?

এটা কেউ এখানে বলছে না।

আরেকটা কথা: বাংলাদেশে যারা চাকরি করেন তারা আয়কর দিচ্ছেন, অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা ঠিকই পার পেয়ে যাচ্ছেন। বাড়িওয়ালারা কি আয়কর দিচ্ছেন? কোন দলই বাড়িওয়ালাদের চটানোর সাহস রাখবে না কোনদিন

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আর কোন দেশে পাঠানো টাকার উপর সরাসরি কর আছে কি?

এ বিষয়টা আজ জানার চেষ্টা করছি সারা দিন কিন্তু সুফল পাইনি এখনও। তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয় বলব, বাংলাদেশ থেকে অনেকে টিউশন ফিস পাঠায় বৃটেনে। বেশ বড় অংক। ১৪-১৫ হাজার পাউন্ড। তখন কিন্তু নির্দিষ্ট ফিস ছাড়া কোন কর দেয়া লাগে না। যদিও এটা যেহেতু টিউশনের ব্যপার, সেজন্যে ব্যতিক্রমও হতে পারে। মূল কথা হলো, সুনির্দিষ্ট করে কোন ডকুমেন্ট পাই নি যেখানে 'দেয়া লাগে' অথবা 'দেয়া লাগে না' বলা আছে।

Hasan Mahmood এর ছবি

এই টাকা উনিভার্সিটি বা কলেজে পাঠানো হচ্ছে। এটা তাদের আয়।

Hasan Mahmood এর ছবি

কানাডা এবং যুক্ত রাষ্ট্র আপনার গ্লোবাল আয় এর উপর কর আরোপ করে। এখানে বিদেশ থাকে টাকা আসলে আপনাকে কর দিত হবে। তবে Double Taxation আরোপ করা হয় না (if you paid the tax in the originating country. If it was somebody else who earned the money and paid tax. It will be considered income)

প্রীতম  এর ছবি

ভাইয়া, বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড-এ উচ্চ শিক্ষা –৪ কবে পাব?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শেষ পর্বটা বাকি আছে। সেটা পোস্ট করবো আগামী মাসের শুরুর দিকে।

হিমু এর ছবি
বিভিন্ন শাসনামলে কালো টাকা সাদা হওয়ার তথ্য:
সাফি এর ছবি

প্রথম বিএনপি আমলে কালো টাকা সাদা করার কি কোন বিধান ছিলনা নাকি পর্যাপ্ত তথ্য নেই? দ্বিতীয় আমলে দেখা যায় সুদে আসলে সেটা পুষিয়ে দিয়েছে- ৬০০০ কোটি টাকা! জনসংখ্যা ১৫ কোটি ধরলে মাথাপিছে ৪০০টাকা সাদা করা হয়েছে। আর অপ্রদর্শিত কালো টাকার কথাতো বাদ ই দিলাম!

হিমু এর ছবি

বিধান ছিলো না।

গৃহবাসী বাঊল এর ছবি

বিম্পির আমলে কোন কালো টাকা সাদা করা হয় নাই। নিন্দুকেরা এও বলেন ম্যাডামও নাকি কাল টাকা সাদা করেছিলেন। সব মিথ্যা। “মহান জামায়াতে এছলামী’র” বিম্পি শাখার সাবেক মহাসচিব বোতলে আল্লামা দেলওয়ার হোসেন ওরফে পাজামা দেলু বলেছিলেন “ম্যাডাম কোন কাল টাকা সাদা করেন নাই, ম্যাডাম সাদা টাকাই সাদা করেছেন"।

দিগন্ত এর ছবি

প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে আঠাশটি দেশের ডাবল ট্যাক্সেশন এভয়েডেন্স এগ্রিমেন্ট আছে - অর্থাৎ দুদেশেই যাতে একই আয়ের ওপরে ট্যাক্স না দিতে হয় তার জন্য চুক্তি। আমি ভারত-মার্কিন ট্যাক্স চুক্তি সম্পর্কে জানি ও এ নিয়ে কিছু উত্তর দিই। সুবিধার জন্য আমি ধরে নিচ্ছি বছরে ১২ মাসই আমি মার্কিন দেশে আছি।
১) মার্কিন দেশে আমার স্যালারি ইনকাম সম্পূর্ণ ট্যাক্স মার্কিন দেশে দিচ্ছি।
২) ভারতের আয় - যেমন ভারতে ব্যাঙ্কে জমানো টাকার সুদ ও ক্যাপিটাল গেইন্স এর ওপর ট্যাক্স ও দিচ্ছি মার্কিন দেশকে। ভারত সরকার যদি কোনও ট্যাক্স কেটে নেয় তা ফেরত রিফান্ড পাই। উল্লেখ্য, এটা আমার নামে থাকা একাউন্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
৩) ভারতে আমার বাড়ি থাকলে ও তা আমি ভাড়া দিলে ভাড়ার টাকার ওপর ট্যাক্স দেব ভারত সরকারকে। ইনকাম অন ইমমুভেবল প্রপার্টি যাবে যেই দেশে প্রপার্টি তার কাছে।
৪) অংশীদারী ব্যবসা থাকলে সেই আয়ের ট্যাক্স যাবে মার্কিন দেশে।

আমি যদি ৬ মাসের কম আমেরিকায় থাকি তাহলে ব্যাপারটা পুরো উলটো হয়ে যাবে।

বাংলাদেশের সাথে অন্যান্য দেশের কেমন চুক্তি আছে তার ওপর নির্ভর করছে কি ট্যাক্স দেওয়া হচ্ছে সেটা। একটা উদাহরণ দেখতে পারেন বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে।

এইবারে আসা যাক মন্ত্রীর বক্তব্যের কথায়। অন্য দেশের আয় করা টাকা কেউ দেশে পাঠালেই সেই টাকা কালো হয়ে যায় না, যদি কেউ সেই টাকায় অন্য দেশে ট্যাক্স দিয়ে থাকে। এমনকি ভুল করে কেউ বাংলাদেশে দেওয়া উচিত এমন ট্যাক্স ইংল্যান্ডে দিলেও তাকে শুধু রিফান্ডের জন্য আয়কর দপ্তর সময়সীমা দিতে পারে, যেহেতু এটা ইচ্ছাকৃত ফাঁকি দেওয়া হয় না। সুতরাং মন্ত্রীর বক্তব্য ভুল।

তবে ভারত-মার্কিন চুক্তির মত কিছু একটা থাকলে ইঙ্গ-বাংলাদেশ চুক্তি থেকে ইংল্যান্ডের ফায়দা বেশী। ইংল্যান্ডে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা দেশে শুধু ব্যাঙ্কে টাকা জমা রেখে ১০-১২% সুদ তুলে নিয়ে আবার দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এর ওপরে ট্যাক্স পাচ্ছে বিদেশী সরকার।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ। বিষয়টা আরো পরিষ্কার হলো।

কল্যাণ এর ছবি

গাধার মত কাজ করার পর মাস শেষে বেতনের ২৫% আয়কর কেটে নেয়। দেশে টাকা পাঠানোর জন্যে ব্যাঙ্কে গেলাম, ব্যাঙ্ক স্থানীয় মুদ্রা র‍্যান্ড থেকে ইউএসডি করে পাঠাবে, দেশী ব্যাঙ্ক টাকা দেবে। তার মানে মুদ্রা বিনিময়ের ডাবল ধাক্কাটা আমার উপর দিয়েই যাবে। তার উপর সার্ভিস চার্জ রাখবে। এখন আবার কর কর্ত্রিপক্ষের ছাড়পত্র আর বাড়ির লিজ এগ্রিমেন্ট জমা দিতে বলতেছে। এত হ্যাঙ্গামা করে সময় নষ্ট করে শালার টাকা পাঠানোর পর আবার ট্যাক্স অ্যাঁ কোই যাই!!!! এর থেকে চারিদিকে যে হুন্ডি ওয়ালারা ঘুরতেছে ওদের কাছে যাওয়াইতো দেখি সোজা। চাদাবাজীর নতুন ও চমকপ্রদ পদ্ধতি।

গুরুত্বপুর্ন বিষয়, লেখায় উত্তম জাঝা!

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

রাষ্ট্রায়ত্ত সেবা পাইতে রাষ্ট্ররে টেকাটুকার ভাগ আপনারে দিতেই হবে। না পাইতে চাইলেও দিতে হবে। কিউবায় টাকা পাঠাইলে নাকি সবকিছুর উপর আরও ২০% কাইটা রাখে।

মানিগ্রাম ব্যবহার করা যায় না?

কল্যাণ এর ছবি

রাষ্ট্ররে টেকার ভাগ দিতে তো সমিস্যা নাইরে দাদা। বরং আনন্দের সাথেই দিতে চাই, সোজা রাস্তাতেই তো যাইতে চাই সবসময় (এই জন্যেই না যত ভোগান্তি)। ছুটিতে দেশে যাওয়ার সময় দুনিয়ার কাগজপত্র, এক্সচেঞ্জরেটের ঝামেলা পার করে ইউএসডি নিয়ে যাই যে দেশে সামান্য হইলেও কিছু ডলারতো ঢুকুক। মানিগ্রাম বা ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন অতি উত্তম প্রস্তাব, দুইটাই আছে এইখানে, গেছিলামও, বৈধ বাংলাদেশী রেসিডেন্ট হওয়ায় আমারে এইগুলা জমা দিতে কইছেঃ পাস্পোর্ট ও ওয়ার্ক পারমিটের কপি, এমপ্লয়মেন্ট কন্ট্রাক্টের কপি, বাড়ির লিজ এগ্রিমেন্টের কপি, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টের কপি, সর্ব শেষ পে স্লিপ, ইউটিলিটি বিলের কপি দেঁতো হাসি । মাত্র ১০০০ র‍্যান্ড (১২৯ থেক ১৩১ ডলার মত) পাঠাইতে এই হ্যাপা, কাগজপত্রের লিস্টি শুনে সার্ভিস চার্জ জিজ্ঞেস করতেই ভুলে গেছি ইয়ে, মানে... । যাই হোক আমি হাল ছাড়ি নাই এখোনো, ব্যাঙ্কে ফরেক্স সেকশনের হেল্পে ফোন করে রিকোয়ারমেন্ট ফাইল করছি, দেখি ব্যাটারা কি হেল্পায়। কাল রাতে মনের দুঃখে ওই হুন্ডি শুন্ডি লিখে ফেলছিলাম।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

এতো কিছু চাওয়াটা একটা বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলা ছাড়া আর কিছু না। অধিকাংশগুলাই মনে হচ্ছে রিডান্ডেন্ট। যাই হোক, আপনার কাছে সবই যদি থাকে তাইলে তো আর সমস্যা দেখি না। তবে সরকাররে গরীব মানুষের থেকে ট্যাক্স কম কম কাটতে বলেন। টেকা দিতে এতো তাড়াতাড়ি রাজি থাকলেও তো সমিস্যা। হাসি

কল্যাণ এর ছবি

খাইছে

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সত্যপীর এর ছবি

কালো টাকা মানে হল গান্ধা টাকা। যে টাকার উৎস জানাতে আয়কারী উতসাহী নয়। মন্ত্রীসাব বলেন, বিদেশ থেকে টাকা এনে ওরা সব কালো করে দিল। সন্দ হয় ভদ্রলোক বুঝে মন্তব্যটি করেছেন কিনা। বিদেশ থেকে যখন টাকা আসে, তখন টাকা কিভাবে প্রবাসী আয় করেছে তা বিবেচ্য নয় মন্ত্রীসাবের, অইটা নিয়ে মাথা ঘামাবে ওই দেশের সরকার। সে আইবিএম এ কাজ করে না গাঞ্জার মহাজনী ব্যবসা করে তা নিয়ে বাংলাদেশের মন্ত্রীসাবের মাথার চুল ফেলার কারন নাই।

মন্ত্রীসাবের মূল মাথাব্যথা হওয়া উচিত টাকাটি কি পন্থায় দেশে এল তা নিয়ে। যদি টরন্টোর গাঞ্জা মহাজন ব্যাংক মারফত বা মানিগ্রাম ইত্যাদি দ্বারা টাকা পাঠায় (যেখানে টাকার পাইপয়সা হিসাব দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক পাচ্ছে) তাহলে মন্ত্রীসাব নাকে তেল দিয়ে ঘুমাতে পারেন। মানি সাপ্লাই বিগ্নিত হবে না। কিন্তু যদি স্যুটকেসে ডলার ভরে গাঞ্জা মহাজন ঢাকায় হাজির হয় তাইলে দুইটা কথা আছে। কারন তখন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক আতকা আরো কিছু টাকা ছাপিয়ে ফেলবে, কিন্তু জিনিষপত্র ওই একই থাকবে। সাপ্লাই সমান কিন্তু পাব্লিকের হাতে পয়সা, অর্থাৎ ডিমান্ড বেশি। ফট করে জিনিষের দাম বেড়ে যাবে। মুদ্রাস্ফীতি। বিক্রেতা যদি দেখে মুর্গী কিছু মানুষ দুইশ টাকায় কিনছে তাহলে কত মানুষ মুর্গীর পিছনে একশ টাকার বেশি খরচ করতে পারছেনা তা তার বিবেচ্য বিষয় নয়। সেজন্যই কালো টাকা ভয়ংকর। এই টাকা কিছু মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়ে দ্যায়, ফলে সব জিনিষের দাম বেড়ে যায়।

সমস্যা হল মন্ত্রীসাবের উক্তি পড়ে আমার মনে হয়েছে তিনি বলছেন বিদেশ থেকে আসা টাকা কালো তার কারন ট্যাক্স বসানো হচ্ছেনা এর উপর। এই যুক্তির কোন মাথামুন্ডু নাই। যতক্ষন পর্যন্ত টাকা বৈধপথে আসছে ততক্ষন রেমিটেন্স কালো টাকাও না এর উপর কর বসানোরও যুক্তি নাই। আর যদি অবৈধ পন্থায় এসে থাকে তার উপর ট্যাক্স বসাবেন কেন?তার উপর জরিমানা বসান, কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করুন। কালো টাকার উপর ট্যাক্স বসানো একে প্রকারান্তরে বৈধতাই কি দিল না? অত্যন্ত অনৈতিক চিন্তাধারা। তিনি যেমন শেয়ার মার্কেট বোঝেননা তেমন মানি সাপ্লাই ও বোঝেন না। অথবা সবই বোঝেন আর মিডিয়ার সামনে নানান মিনমিন করেন।

..................................................................
#Banshibir.

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

সে আইবিএম এ কাজ করে না গাঞ্জার মহাজনী ব্যবসা করে তা নিয়ে বাংলাদেশের মন্ত্রীসাবের মাথার চুল ফেলার কারন নাই।

হো হো হো

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কল্যাণ এর ছবি

চরম মন্তব্য গুল্লি

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এই লেখাটার জন্য ধন্যবাদ নিয়াজ ভাই। প্রয়োজনীয় লেখা।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ অনার্য সঙ্গীত ভাই। এই লেখায় যে মন্তব্যগুলো এসেছে সেখানেও চমৎকার তথ্য রয়েছে। পরে এক সময় ছোট করে একটা পরিশিষ্ট যোগ করে দেব লেখার নিচে সেসব তথ্য নিয়ে।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

লেখাটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর মন্তব্যগুলো থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে।

দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলো যারা প্রনয়ন করেন তারা দেশের স্বার্থ অতটা ভালো করে দেখতে পাননা। উদহারন হিসেবে বলি, ইউএই এর সাথে চুক্তির ফলে ইউএই বাংলাদেশে যে বিনিয়োগ করবে তার অর্জন থেকে প্রাপ্য লভ্যাংশ সারাজীবন এদেশে কর অবকাশ ভোগ করবে আর কর্পোরেট ট্যাক্সের ক্ষেত্রে উৎপাদনে যাবার প্রথম ১০ বছরের কর অবকাশের পরেও আগামী দশ বছর কর অবকাশের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। দ্বৈত কর পরিহার চুক্তির বিভিন্ন ধারা (আমাকে বেশ কয়েকটি পড়তে হয়েছে কর্মক্ষেত্রে) অপব্যবহার করা হয় এবং ধারাগুলো অনেক কিছুই স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। সরকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি ও মতামত বিভাগের উচিত এ বিষয়ে আরো ভালভাবে কাজ করা।

অনিবাসী কর্তৃক আয়কৃত অর্থ দেশে বিনিয়োগকালে কর প্রদানের প্রয়োজন হয়না ( কিন্তু বিভিন্ন দলিলাদি যেমন ট্রেড লাইসেন্স, বিনিয়োগ বোর্ডের অনুমতি প্রভৃতি সংগ্রহের নিমিত্তে ফী/কর প্রদান করতে হয়) তবে বিনিয়োগকরার কালে বাংলাদেশ ব্যাংকে অবহিত করতে হয় (অনিবাসী বাংলাদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়) এবং বিনিয়োগের ফলে আয়কৃত অর্থ করযোগ্য হবে।

নৈষাদ এর ছবি

অর্থমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য পড়া হয়নি। তবে আপনার লেখা পড়ে যথেষ্ট কনসার্নড হলাম। এখানে দুটো ব্যাপার হতে পারেঃ

১। বাজেটে ‘কালোটাকা সাদা করার অপসন’ রাখার যুক্তি হিসাবে এধরণের ‘কিছুটা অর্থহীন’ কথাবার্তা বলেছেন।

২। সত্যিকার অর্থেই রেমিটেন্সের উপর কর বসানোর চিন্তা করছেন। (সোনার ডিম পাড়া হাস বধের সিন্ড্রোম আগেও দেখা গেছে, তবে এই ভুলটা হয়ত করবেন না। আমার ধারণা রেমিটেন্সের ব্যাপারে সব সরকারই বেশ নমনীয়, কম্পিকেশন সৃষ্টি করে ‘ধান্ধাবাজ’ অফিসাররা।)

উপরের কিছু মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কয়টা জিনিস পরিষ্কার করিঃ

১। যে ২৮ দেশের সাথে ডাবল-ট্যাক্সেসন-অ্যাভয়ডেন্স-ট্রিটি আছে, সেগুলি কোন ‘কাগুজে ব্যাপার না’, পুরোপুরি কার্যকর।

২। এই মুহূর্তে হাতের কাছে কাগজ পত্র নেই, তবে আমার জানা মতে ‘প্রপার ব্যাংকিং চ্যানেলে আনা বিদেশী রেমিটেন্স’ করমুক্ত। বিদেশে অর্জিত সেই আয়ের উপর বিদেশে আয়কর দেয়া হয়েছে কিনা সেটাও জানানোর বাধ্যবাধকতাও নেই। (আয়কর ওর্ডিন্যান্সের রেসিডেন্স/নন-রেসিডেন্স বিবেচ্য, সেটার বিস্তারিত ব্যাখ্যায় গেলাম না)। তাই বলে সেটা কালো হয়ে যাচ্ছে না, কারণ সেই টাকাটা ‘ডিক্লেয়ার্ড’। যারা রিটার্ন ফাইল করেন তারা সেখানে আয় হিসাবে দেখান।

৩। তবে হুন্ডির মাধ্যমে আনা টাকাটা যেহেতু ডিক্লেয়ার্ড না, ‘কালোর’ ডেফিনিশনের মধ্যে পরে যাচ্ছে কীনা জানিনা। এবং, আইন অনুযায়ী ‘প্রপার ব্যাংকিং চ্যানেলে’ যেহেতু আসছে না, ‘করমুক্ত’ ক্যাটাগরিতে পরছে না।

৪। ‘প্রপার ব্যাংকিং চ্যানেলে আনা বিদেশী রেমিটেন্স’ হিসাবে বছর চারেক আগে আমি নিজে খুব কম হলেও কিছু টাকা পেয়েছিলাম, যেটা করমুক্ত ছিল। (যেহেতু টাকাটা আমার বাংলাদেশে চাকুরীর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল, সেহেতু সেটা ‘প্রপার ব্যাংকিং চ্যানেলে আনা বিদেশী রেমিটেন্স’ হিসাবে ট্রিট হবে কিনা সেটা আরেক মজার আইনি মারপ্যাচ, কিন্তু সেটা এখানে বিবেচ্য না। তবে সেই অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বিদেশ থেকে আনা রেমিটেন্সের ব্যাপারে অনেকটা নমনীয়)।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজাকশন-২০০৯ এ নির্দেশনা দেয়া আছে যা পরিপালন করা সব অথরাইজড ডিলার ব্যাঙ্ক শাখার (যারা বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করতে পারে) দায়িত্ব এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এটা কঠোরভাবে মনিটর করে।

(আমি লিঙ্ক দিতে পারছিনা দুঃখিত কারন লিঙ্ক দেয়ার নিয়মই জানিনা ওঁয়া ওঁয়া কিন্তু গুগলে লিখে সার্চ দিলে পাওয়া যাবে বা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটেও দেয়া আছে)

বাউলিয়ানা এর ছবি

বিষয়টা আগে ভাসা ভাসা শুনেছিলাম। খুবই দুঃখজনক। আমি দেখেছি ব্যাঙ্ক চার্জ প্রতি হাজারে ৫ ডলার দিতে হয় বলে, অনেকে ২ ডলার দিয়ে হুন্ডিতে টাকা পাঠায়। সেই টাকা অনেক সময়ই মার যায়, তারপরও তারা পাঠায়। আর ট্যাক্স আরোপ করা হলেতো কথাই নাই। হুন্ডিতে টাকা পাঠানো আরও জনপ্রিয় হবে। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ এভাবে অবৈধ পথে দেশে পাঠানোকে কোনোভাবেই উতসাহিত করা উচিত নয়।

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

নারিকেল এর একটা জোক্স পড়েছিলাম দুই নেত্রী কে নিয়ে। এখন মনে হয় নারিকেল এর সংখ্যা বাড়াতে হবে দুই এর জায়গাতে তিন করা :-।

পোষ্টের জন্য চরম ধন্যযোগ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

monir  এর ছবি

আমার ইউরোপিয়ান ব্যাংক একাউন্ট থেকে বাংলাদেশি একাউন্টে টাকা পাঠানোর সময় দুটো চার্জ থাকে, একটা আমার একাউন্ট থেকে কাটে, আরেকটা যে পাচ্ছে তার একাউন্ট থেকে - ইচ্ছা করলে দ্বিতীয়টাও আমার একাউন্ট থেকে কাটানো যায়; দুটো চার্জই যদি আমি দিয়ে দিই, তাহলে যে পাচ্ছে তার একাউন্ট থেকে আর কিছু কাটবে না। ৩০০০ ইউরো'র জন্য দুটো মিলিয়ে সাড়ে আট ইউরো লাগে।

শুধু বাংলাদেশের জন্য, ইউরোপের আরেকটি দেশ - বেলজিয়ামে শুনেছি ৫০ ইউরো প্লাস যত এমাউন্ট যাচ্ছে তার একটা % কাটে, ১০০০ ইউরো'র জন্য ১৪০ ইউরো কাটে। এটা অনেক।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বাংলাদেশের বাইরে তিন দেশে আমার তিনটে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট আছে। এগুলোর একটা এখনও এ্যাকটিভ আছে এবং একটু খোঁজখবর করলে বাকী দুটোও এ্যাকটিভ করা সম্ভব। কিন্তু তা করবো না কারন ওই তিন এ্যাকাউন্ট ইন্দোনেশিয়ায়, মালাউইতে আর সোমালিয়ায়। তবে 'মাল' স্যার যা শুরু করেছে তাতে বিদেশে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার চিন্তা করতে বাধ্য হচ্ছি, থাইল্যান্ডেই ভালো হবে মনে হচ্ছে।

টাকা কামাই করি আমি কিন্তু ভাবখানা যেনো টাকার মালিক মুহিত। এই ক্রেজী লোকটা কি করে তা সম্ভবত সে নিজেও জানেনা। এই করতে করতে সে ডলারের দাম আটষট্টি থেকে প্রায় নব্বুইতে এনে ঠেকিয়েছে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নৈষাদ এর ছবি

বাজেট আলোচনায় দেখলাম বিদেশ থেকে আনা রেমিটেন্সের উপর ৫% প্রণোদনার কথা বলা হচ্ছে। জানিনা এটা সম্ভব হবে কিনা? যদি প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যেত, চমৎকার হত। আমাদের দেশের লোকজন বিদেশে চাকুরী করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে, আমাদের মত জনবহুল দেশে এর চেয়ে চমৎকার রিসোর্স ইউটিলাজেশন কী হতে পারে?

(দেশে গারমেন্টস সেক্টারের প্রাথমিক দিনগুলোতে এক্সপিবি [এক্সপোর্ট প্রমোশন বেনিফিট সম্ভবত] নামে প্রণোদনার ব্যবস্থা ছিল।)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।