এই র্যাঙ্কিং নিয়ে এত কথা বলার কারণ আজ প্রকাশিত ফিফা র্যাঙ্কিং। এবার ব্রাজিল সেরা দশে থাকতে পারে নি। আর এ কারণেই মূলতঃ ব্রাজিল সমর্থকবৃন্দ মহা রেগে আছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয় তাদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চোখে পড়লো অনেক বার। সবারই কথার মূল বক্তব্য মোটামোটি একই, “গাঁজা খেয়ে এই র্যাঙ্কিং বানিয়েছে নাকি?”। তারা ভুলেই গিয়েছেন এই ফিফা র্যাঙ্কিং-এ সবচেয়ে বেশি সময় শীর্ষে থাকার রেকর্ডটা ব্রাজিলেরই। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত র্যাঙ্কিং যে পদ্ধতি অনুসারে তৈরি করা হয়েছিল তাতে ব্রাজিল ১৯৯৫ থেকে ২০০১ পর্যন্ত এবং ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত একটানা শীর্ষে ছিল। ২০০৬ সনে র্যাঙ্কিং এর হিসেব করার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয় যদিও তখনও ব্রাজিলই শীর্ষে ছিল। এর পর স্পেনের সাথে পালা বদলের মাধ্যমে ২০০৯ ও ২০১০ সনেও ব্রাজিল শীর্ষে ওঠে। মজার ব্যাপার, তখন কিন্তু এই র্যাঙ্কিংকে ব্রাজিল সমর্থকদের গাঁজা খাওয়া র্যাঙ্কিং মনে হয় নি। কিন্তু ২০১০ এর পর থেকে ব্রাজিলের অবনমন শুরু হলে তারা ধীরেধীরে নেমে যেতে থাকে এবং আজ (৪ জুলাই ২০১২) প্রকাশিত র্যাঙ্কিং-এ ব্রাজিল সেরা দশের বাহিরে চলে গেলো। আর্জেন্টিনার সমর্থকরাও কম যাচ্ছেন না। তারাও সমালোচনায় মুখর হয়েছেন কারণ সর্বশেষ র্যাঙ্কিং-এ তাদের অবস্থান গিয়ে ঠেকেছে সাতে। যদিও এই একই র্যাঙ্কিং-এ ২০০৭ এবং ২০০৮ সনে তারা শীর্ষে ছিল কিন্তু তখন “আমরা কেন শীর্ষে” সূচক সমালোচনা দেখা যায় নি!
এ তো গেলো আলোচনা-সমালোচনার গল্প। এবার একটু দৃষ্টি ফেরানো যাক র্যাঙ্কিংটার দিকে। ফিফার র্যাঙ্কিংটা কোন রকেট সায়েন্স নয়। সাধারণ গণিত। হিসেবটা খুবই স্পষ্ট এবং আমরা নিজে নিজেই করতে পারি। যদিও র্যাঙ্কিং কার্যকর হয় একটা নির্দিষ্ট সময় থেকে, যেমন আজ থেকে কার্যকর হলো নূতন র্যাঙ্কিং; কিন্তু আপনি চাইলে এটা আগেই হিসেব করে ফেলতে পারবেন যদি না এর মধ্যে আর কারো কোন ম্যাচ থেকে থাকে। আমি গত ১ জুলাই এই র্যাঙ্কিংটা হিসেব করে সেরা পাঁচ-এর তালিকা আমার ফেইসবুকে দিয়ে রেখেছিলাম। তখন থেকেই বাকযুদ্ধ শুরু যা এই লেখার অনুপ্রেরণাও বলা যেতে পারে। যাইহোক, আগ্রহীরা এই লিঙ্ক দিয়ে র্যাঙ্কিং পেইজটা ঘুরে আসতে পারেন। ডান পাশে যে হিসেবটা দেখাচ্ছে, সেটা স্পেনের হিসেব। অন্য যে কোন দলের উপর ক্লিক করলে ডান পাশে সেই দলের হিসেব দেখাবে।
লক্ষ্য করুন, পাশে M I T C এবং P বলে পাঁচটা বেলুন আছে। এখানে M মানে ম্যাচ থেকে আর্জিত পয়েন্ট। সরাসরি জিতলে ৩ পয়েন্ট, টাইব্রেকারে জিতলে ২ পয়েন্ট, ড্র করলে অথবা টাইব্রেকারে হারলে ১ পয়েন্ট এবং সরাসরি হারলে কোন পয়েন্ট নেই অর্থাৎ শূন্য। টাইব্রেকারে ফল নির্ধারিত হলে মূলতঃ ড্র-ই ধরা হয় কিন্তু যে জিতবে সে হেরে যাওয়া দলের থেকে ১ পয়েন্ট বেশি পাবে কিন্তু একটা পূর্ণাঙ্গ জয়ের যে ৩ পয়েন্ট, সেটা সে পাবে না।
অন্য দিকে, I মানে ম্যাচের গুরুত্ব (Importance)। যে কোন ফ্রেন্ডলি ম্যাচের ওজন ১। বিশ্বকাপ বা রিজিওনাল চ্যাম্পিয়ানশিপ (ইউরো, কোপা আমেরিকা অথবা আফ্রিকা, এশিয়া ইত্যাদির যে টুর্নামেন্টগুলো আছে) কোয়ালিফাইং ম্যাচের ওজন ২.৫। রিজিওনাল চ্যাম্পিয়ানশিপের প্রতিটা ম্যাচের ওজন ৩ এবং বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচের ওজন ৪ করে।
T মানে প্রতিপক্ষ কতটা শক্তিশালী। এটা নির্ধারণ করা হয় এভাবে,
T = (২০০ – প্রতিপক্ষের বর্তমান র্যাঙ্কিং)
যেমন, স্পেনের র্যাঙ্কিং ছিল ১। তাই তাদের T ছিল ১৯৯। অথবা ইংল্যান্ডের র্যাঙ্কিং ছিল ৬ তাই তাদের T ছিল ১৯৪।
C মানে কনফেডারেশনের গুরুত্ব। ইউরোপ এবং দক্ষিণ আমেরিকার ওজন ১ করে। সেন্ট্রাল আমেরিকা ০.৮৮, এশিয়া এবং আফ্রিকা ০.৮৬ এবং ওশেনিয়া ০.৮৫। যে দুটো দলের মধ্যে খেলা হবে তাদের গড়মানই হবে C এর মান।
যেমন, এখন যদি স্পেন এবং ব্রাজিলের খেলা হয় তাহলে C হবে ১। কিন্তু স্পেন এবং ঘানার খেলা হলে C হবে ০.৯৩ ।
সবশেষে P মানে পয়েন্ট। হিসেব করতে হবে এভাবে,
P = M x I x T x C
উপরের সূত্র থেকে এটা স্পষ্ট যে, কোন দল যদি ম্যাচ হেরে যায় তাহলে M হবে শূন্য এবং যা পুরো গুনফলকে শূন্য করে ফেলবে। অর্থাৎ, কোন দল যদি ম্যাচ হেরে যায় তাহলে তারা ঐ ম্যাচ থেকে কোন পয়েন্ট অর্জন করতে পারবে না। তা না হলে কিছু না কিছু পয়েন্ট তারা পাবে।
এভাবে পয়েন্ট বের করে প্রতিটা দলের জন্যে ম্যাচ প্রতি গড় পয়েন্ট বের করা হবে। তবে র্যাঙ্কিং এর জন্যে যে পয়েন্ট হিসেব করা হয় সেটা সরাসরি এখান থেকে আসবে না। সেটা আসবে এ বছর এবং আগের তিন বছরের পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে। সেক্ষেত্রে ওজন হবে,
বর্তমান বছর ১০০%
গত বছর ৫০%
তার আগের বছর ৩০%
তারও আগের বছর ২০%
২০০৬ সনের আগে আট বছরের পয়েন্ট নিয়ে র্যাঙ্কিং করা হতো। কিন্তু এতে একটা সমস্যা দেখা যেত। ধরুন, কোন দল ৬-৭ বছর আগে অনেক ভালো ছিল কিন্তু এখন তেমন ভালো খেলছে না। তবুও র্যাঙ্কিং-এ তাদের অবস্থান উপরের দিকেই থাকতো আগের বছরের পয়েন্টের কারণে। মিডিয়ার ব্যাপক সমালোচনার পর ফিফা ২০০৬ সনে তাদের র্যাঙ্কিং-এর পদ্ধতি পরিবর্তন করে হিসেবের সময়টা ৪ বছর করেছে।
এবার আসুন, সমালোচনাটা কেন হচ্ছে সেটা দেখা যাক। আর্জেন্টিনার সমর্থকরা খুব রাগ কারণ ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেও ৭ এ থেকে গেলো তাদের দল। কিন্তু কেন? কারণ তো অবশ্যই আছে। কি সেই কারণ? কারণ, আর্জেন্টিনা যে ম্যাচটা জিতেছে সেটা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ ছিল যার Importance ফ্যাক্টর ১। বরং, আর্জেন্টিনা ইকুইডরকে হারিয়ে বেশি পয়েন্ট পেয়েছে। অন্য দিকে, ইউরো চলার কারণে এখানে যে ম্যাচগুলো হয়েছে সেগুলোর Importance ফ্যাক্টর ছিল ৩। যার কারণে ইউরোতে ভালো ফল করা দলগুলো পয়েন্ট বেশি তুলতে পেরেছে। আর ব্রাজিলের অবনমনের কারণ তারা আগের র্যাঙ্কিং এবং আজকের র্যাঙ্কিং এর মাঝের সময়ে আর্জেন্টিনা এবং মেক্সিকোর সাথে দুটো ম্যাচ খেলেছে এবং দুটোই হেরেছে।
আরেকটা বিষয় লক্ষ্য করলাম – কেউ কেউ দুই একটা ম্যাচ ভালো খেললে সমর্থকরা ভাবেন, আরে দুর্দান্ত খেলছে আমাদের দল। কিন্তু পরে দেখা যাচ্ছে র্যাঙ্কিং-এ ফল ভিন্ন। এ রকম একটা উদাহরণ ফ্রান্স। দুর্দান্ত ফেলেছে ফ্রেন্ডলি এবং বাছাইপর্বের ম্যাচগুলো। কিন্তু ইউরোতে একটা ম্যাচ ড্র এবং শেষ দুটো ম্যাচ হেরেছে যা তাদের জন্যে অনেক ভারী পড়েছে। মনে রাখতে হবে, ৬ টা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ হারলে যে পরিমাণ পয়েন্ট হারানো সম্ভব, তার থেকে বেশি পয়েন্ট ইউরোর দুইটা ম্যাচে হারায় একটা দল। Importance ফ্যাক্টর এর ইমপোর্টেন্স কম নয় কিন্তু!
আবার কেউ কেউ বলছে, ইংল্যান্ড ৬ থেকে ৪ এ গেলো কেমন করে? উত্তর সহজ। এবারের ইউরোতে ইংল্যান্ড কোন ম্যাচ হারে নি। কোয়ার্টার ফাইনালে ইটালির বিপক্ষে টাইব্রেকারে হারটা আসলে ড্র (আগেই ব্যাখ্যা করেছি এ বিষয়টা)।
আরেকটা কথা বলে শেষ করি। ফিফার ওয়েব সাইটটা কিন্তু দারুন ইন্টারএ্যাকটিভ। কোন দলের খেলা বাকি থাকলে সেখানে আপনি সম্ভাব্য ফল বসিয়েও র্যাঙ্কিং ক্যালকুলেট করতে পারবেন। আমি ইউরো চলার সময় বসে বসে করতাম। তবে এখনই ফিফার সাইটে ঝাঁপ দিয়ে লাভ নেই। বড় দলগুলোর সম্ভাব্য কোন খেলা এই মুহূর্তে নেই। তেমন উপলক্ষ্য তৈরি হলে সেই দলের পেইজে ডেটা ইনপুট দেয়ার ফিল্ডও তৈরি হয়ে যাবে। তখন সেখানে ইনপুট দিয়ে দিয়ে সম্ভাব্য র্যাঙ্কিং তৈরি করার খেলায় মেতে উঠতে পারেন।
অতএব, এই ছিল র্যাঙ্কিং বিষয়ক “কিছু কথা”। যার মূল বক্তব্য হচ্ছে, গাঁজা খেয়ে এই র্যাঙ্কিং কেউ করে নি। আর করলেও তাতে ফলের কোন পার্থক্য হবে না।
মন্তব্য
উত্তম একটি পোস্ট।
টুইটার
দারুণ লাগলো লেখাটা ভাইয়া। শেয়ার করছি ফুটবল-ফ্রিক বন্ধুদের সাথে।
মাঝে মাঝে এইরকম কিছু লেখা দেবেন খেলাধূলা নিয়ে
অনেক অনেক থ্যাঙ্কস। চেষ্টা করবো এ ধরনের লেখা আরো দিতে।
টুইটার
বিষয়টা সহজভাবে তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
টুইটার
অনেক কিছু জানলাম, শিখলাম।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
টুইটার
আমি ব্যাক্তিগতভাবে এসব র্যাঙ্কিং-এ বিশ্বাস করি না। যাদের খেলা ভাল লাগে তাদের সাপোর্ট করি।এর মধ্যে ব্রাজিল, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল অন্যতম। ব্রাজিল ১০ এর বাইরে এতে অবাক হবার তেমন কিছু নাই। গত ২-৩ বছর ধরে তাদের পারফোর্মেন্স পড়তির দিকে। তবে ইংল্যাণ্ড নিয়ে কিছু কথা আছে। ইংল্যান্ড কোন খেলায় না হারলেও এদেরকে বড় টুর্নামেন্টে কখনই তেমন কিছু করতে দেখি না- ৯০ এর বিশ্বকাপ আর ৯৬ এর ইউরোর বাইরে গত ৪০ বছরে ওদের কোন অর্জন দেখি না (বেকহাম , জেরার্ড, ওয়েন আমার অন্যতম প্রিয় খেলোয়াড়)। ওদের মিডিয়া প্রতিবার ওদেরকে গোল্ডেন জেনারেশন বানায়। আর অধিকাংশ সময় বাজে খেলে টুর্নামেন্ট থেকে বের হয়ে যায়। এই র্যাঙ্কিং-এর যদি একটা দুর্বলতা বলেন- তা আমার মতে অনেক সময় দেখি কোন দল বিশ্বকাপ বা ইউরোতে বাছাই পর্ব পেরোতে পারে নাই, কিন্তু র্যাঙ্কিং-এ ১০-২০ এর ভিতর থাকে।
আপনার লেখাটা ভাল হয়েছে ধন্যবাদ
ইংল্যান্ড আসলে গড়পড়তার পারফর্মমেন্স দেয়। ক্রয়েশিয়া এবং ডেনমার্ককে লক্ষ্য করুন। ওরাও একই রকম। ফলে র্যাঙ্কিং-এর টপে পৌঁছে নাই কখনও কিন্তু দশের মধ্যে থাকছে নিয়মিত।
ইংল্যান্ডের কেইসটা আরেকটু ব্যাখ্যা করিঃ
ইউরোতে কোন ম্যাচ না হারার কারণে মোটামোটি সব ম্যাচ থেকেই পয়েন্ট পেয়েছে ইংল্যান্ড। এ ছাড়া, কোয়ালিফাইং রাউন্ডে (ই্ম্পর্টেন্স ফ্যাক্টর ২.৫) ইংল্যান্ড ৮ ম্যাচের মধ্যে ৫ টা জিতেছে, ৩ টা ড্র করেছে। কোন ম্যাচ হারে নি। (বিস্তারিত এখানে)। ফলে সেখান থেকেও সব ম্যাচ থেকে পয়েন্ট এসেছে। এছাড়া, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ফেন্ডলিগুলোর মধ্যে ইংল্যান্ড শুধু নেদারল্যান্ডস-এর কাছে হেরেছে সেই ফেব্রুয়ারি মাসে, জিতেছে পরের অন্য দুটো (বিস্তারিত এখানে)। অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে ইংল্যান্ড এই বছরের একটা ম্যাচ বাদে সব ম্যাচ থেকে কিছু না কিছু পয়েন্ট পেয়েছে। আর এ কারণে কোন টুর্নামেন্ট না জিতেও র্যাঙ্কিং-এ উপরে উঠে এসেছে তারা।
লেখা পড়ার জন্যে এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।
টুইটার
ভালো একটা লিংক পেলাম। অনেক ভালো লিখেছেন নিয়াজ ভাই ।
অসংখ্য ধন্যবাদ। ফিফার লিঙ্কটায় গিয়ে নিজে নিজেই ক্যালকুলেট করতে পারবেন
টুইটার
যদিও ব্রাজিল সমর্থক তবুও বেশ মজা পেলাম তথ্যগুলো জানতে পেরে।
হিল্লোল
ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার খেলা আমারও ভালো লাগে। যেহেতু দুটোর কাউকে আলাদা ভাবে সমর্থন দেই না, তাই তাদের খেলা উপভোগ করি সমান ভাবে।
ভালো থাকবেন।
টুইটার
সুন্দর পোস্ট...
অসংখ্য ধন্যবাদ
টুইটার
ধন্যবাদ নিয়াজ ভাই - একটা নতুন তথ্য জানলাম
আপনাকেও শুভেচ্ছা।
টুইটার
এতদিনে কাহিনী বুঝলামঃ সবই ষড়যন্ত্র!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
কঠিন ষড়যন্ত্র
অনেক অনেক
টুইটার
একটা দল হারলে কোনো পয়েন্ট যোগ হবে না,কিন্তু পয়েন্ট কমবে কি ভাবে বুজলাম না।আবার একটা দল
important match এ হারলে বেশি পয়েন্ট কেন কমবে বুজলাম না।
আপনার দুটো প্রশ্নেরই আমি উদাহরণ সহ উত্তর দিচ্ছিঃ
আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন, পয়েন্ট যোগ হবার কথা বলা হয় নি। পয়েন্ট অর্জনের কথা বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, দলগুলো প্রতিটা ম্যাচ থেকে কিছু পয়েন্ট অর্জন করে। পরে ম্যাচ প্রতি গড় বের করা হয়। র্যাঙ্কিং হিসেব করা হয় এই গড় পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে। একটা উহাদরণ দিচ্ছি। ধরুন, ক-দল ২০১২ সনে ১০টা ম্যাচ খেলে মোট অর্জন করেছে ৮১০০ পয়েন্ট। তাহলে তাদের ম্যাচ প্রতি গড় পয়েন্ট হচ্ছে ৮১০। এখন যদি পরের দুটো ম্যাচ তারা হেরে যায়, তাহলে ১২ ম্যাচে তাদের মোট পয়েন্ট হবে ৮১০০ (আগেরটাই)। পয়েন্ট একই থাকলেও, গড় কিন্তু কমে যাবে। এখন ক-দল এর ম্যাচ প্রতি গড় পয়েন্ট দাঁড়াবে ৬৭৫।
এখানেও লক্ষ্য করবেন, বেশি পয়েন্ট কমবে বলা হয় নি। বেশি পয়েন্ট হারাবে বলা হয়েছে। একটা উদাহরণ দিলে আশা করি বিষয়টা পরিষ্কার হবে।
ইউরো ২০১২-তে নেদারল্যান্ডস খেলতে গিয়েছিল ১২৩৪ পয়েন্ট নিয়ে। স্পেন খেলতে গিয়েছিল ১৪৫৬ পয়েন্ট নিয়ে। অর্থাৎ নেদারল্যান্ডসের স্পেনের থেকে ২২২ পয়েন্ট কম ছিল। যেহেতু ইউরোর ম্যাচ গুলোর ইম্পোর্টেন্স ফ্যাক্টর ৩, তাই এই টুর্নামেন্টের ম্যাচ থেকে বেশি পয়েন্ট অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু নেদারল্যান্ডস ৩টা ম্যাচই হেরেছে। পরপর ৩টা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ হারলে গড় যতটুকু কমে যেত, এখানেও ততটুকুই কমেছে কিন্তু পয়েন্ট হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস বেশি। আর সেটা বোঝা যাবে যখন আপনি অন্য দলগুলোর সাথে নেদারল্যান্ডসের পয়েন্টের পার্থক্যটা দেখবেন। ইউরো শেষে নেদারল্যান্ডসের গড় পয়েন্ট হয়েছে ১০৭৯ কিন্তু স্পেনের হয়েছে ১৬৯১ - পার্থক্য ৬১২ পয়েন্ট; যা আগের পার্থক্যের প্রায় তিনগুন। কারণ স্পেন ম্যাচ জিতে সেখান থেকে বেশি বেশি পয়েন্ট অর্জন করে নিয়েছে। নেদারল্যান্ডসেরও বেশি পয়েন্ট পাবার সেই সুযোগ ছিল কিন্তু তারা হেরে যাওয়াতে 'বেশি' পয়েন্ট হারিয়েছে। নেদারল্যান্ডসের আশেপাশের দলগুলোও এভাবে ওদের থেকে বেশি পয়েন্ট অর্জন করে নিয়েছে যার প্রভাব পড়েছে র্যাঙ্কিং-এ নেদারল্যান্ডসের অবস্থানে। তারা চার ধাপ নিচে নেমে গিয়েছে।
টুইটার
হুমম এতদিনে বুঝলাম র্যাঙ্কের হিসাব-কিতাব।
এই লন
আপনাকেও অনেক অনেক
টুইটার
এক্কেবারে জলের মত সহজ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন
কীভাবে পারেন এত সহজ করে বুঝাতে? সত্যিই ব্যপারগুলো আগে এত পরিষ্কারভাবে বোঝার সুযোগ হয়ে ওঠে নি। অসাধারন লিখেছেন ভাই!
-- দাঙ্গাবাজ
নতুন মন্তব্য করুন