নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: সোম, ০৪/০৩/২০১৩ - ৮:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাঁচ বছরের ব্লগ জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি এ ধরনের লেখা বিপদজনক। মানুষ খুব সহজে ভুল বোঝে এবং ভুল ব্যাখ্যাও করে। তাই লেখার শুরুতে একটা বিষয় পরিষ্কার করে নিতে চাই। আমার এই লেখার উদ্দেশ্য নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা সুস্পষ্ট বিষয় সম্পর্কে অবিহিত করা। কোন রকম সমালোচনা করা নয় অথবা প্রাইভেট-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ককে উস্কে দেয়া নয়। এছাড়া কোন ধর্ম বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে হেয় করাও নয়।

খুব সম্প্রতি আমরা দেখতে পেয়েছি ব্লগার রাজিব হত্যায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ[১]। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গ্রেফতারের দিনই ঐ পাঁচ ছাত্রের ছাত্রত্ব স্থগিত করেন এবং পর দিনই তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করেন[২]। কর্তৃপক্ষের এই দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ অবশ্যই একটা ইতিবাচক দিক। আমি আশা করবো এই লেখায় যে বিষয়টা তুলে ধরার চেষ্টা করবো, সেটাকেও কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেবেন।

আমার জানার সূত্র

শুরুতেই একটা বিষয় পরিষ্কার করে নেয়া ভালো। আমি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয় এবং কোন ভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকে যুক্ত নয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কী হচ্ছে সেটা আমার জানার উপায় নেই। তবুও এই লেখা লিখতে বসার কারণ আমার স্ত্রী এবং তার ছোট বোন। আমার স্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল যে ২০১১ সনের ডিসেম্বরে পাশ করে বের হয়েছে। তার ছোট বোন এখনও পড়ছে। তাদের দুজনের থেকে নিয়মিত শোনার সুযোগ হয়েছে কিছু বিষয় যা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করতে চাই।

সমস্যা

দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই শিক্ষার মান বজায় রাখা সহ ক্যাম্পাস ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে আসছে। এজন্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সম্প্রতি এমন কিছু বিষয় উঠে এসেছে যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকে নষ্ট করার জন্যে যথেষ্ট। তেমনই একটা বিষয় ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়ানোর প্রবণতা। শুধু যে রাজিব হত্যায় জড়িত ছাত্ররাই একমাত্র উদাহরণ, তা কিন্তু নয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এফ.বি.আই কর্তৃক ধৃত বাংলাদেশি ছাত্র নাফিসও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। পরবর্তীতে সে ফলাফল খারাপ করতে থাকলে এবং অনিয়মিত হয়ে পড়লে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর সে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যায় এবং বাকিটা মোটামোটি সবাই জানি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটা আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন এবং কেমন করে এ ধরনের ছাত্ররা তৈরি হচ্ছে? আসুন এ বিষয়ে আমরা একটু গভীরে দেখার চেষ্টা করি।

সমস্যার উৎপত্তিস্থল

আমার স্ত্রী তার চার বছরের বিবিএ জীবনে খুব কাছ থেকে এমন কিছু বিষয় দেখেছে যা তাকে আতঙ্কিত করেছে। এই আতঙ্ক আজকের নয়। আমাদের বিয়ের আগে থেকে আমার স্ত্রীর মুখে শুনেছি এমন কিছু ঘটনা যা আজ বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি।

প্রিয় কর্তৃপক্ষ, আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নামাজের ঘরটায় কি আপনারা নিয়মিত মনিটর করেন? আমার স্ত্রীর মুখে শোনা, মেয়েদের নামাযের ঘরে নিয়মিত বোরকায় আবৃত এক বা একাধিক মেয়ে গোল হয়ে বসে অন্যান্য সাধারণ মেয়ে যারা নামায পড়তে আসে তাদের নিয়ে আলোচনা সভা করে। আপাত দৃষ্টিতে এ ধরনের সভা করা খারাপ কিছু না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই সভাগুলো একটা সময় সাধারণ ছাত্রীদের ব্রেইন ওয়াসের ক্ষেত্র হয়ে উঠে। আমার স্ত্রী প্রথমে কৌতূহল বশত এবং পরে তাদের আলোচনার ধরন ও প্রকৃতি বোঝার জন্য নামাযের ঘরে নিয়মিত গিয়ে তাদের সাথে মিশে শোনার চেষ্টা করতো তারা কী বলছে। খুব দ্রুতই সে লক্ষ্য করে ঐ নির্দিষ্ট মেয়েদের বক্তব্য এবং দাওয়াত দেয়ার ধরণ জামাত-শিবিরের রাজনীতির সাথে হুবহু মিলে যায়। ঐ মেয়েগুলো সাধারণ ছাত্রীদের সাথে প্রথমে মিষ্টি ভাষায় কথা শুরু করলেও ধীরেধীরে তাদের উগ্র মতবাদ চাপিয়ে দিতে শুরু করে। আমার স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মানুষকে কনভিন্স করার ভয়াবহ ক্ষমতা রয়েছে এই মেয়েগুলোর মাঝে। তাদের ধৈর্য অপরিসীম। এভাবে দিনের পর দিন ব্রেইন-ওয়াসের ফলে তারা এক সময় ঠিকই তাদের দল ভারী করতে সক্ষম হচ্ছে। সব কথা উন্মুক্ত ব্লগে লেখা সম্ভব না। শুধু এতটুকু বলবো, আমার স্ত্রীর কিছু বান্ধবী যারা এক সময় আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতই উচ্ছল ছিল, আজ এদের সাথে মিশে পুরোপুরি বদলে গেছে। ফেইসবুক থেকে তারা নিয়মিত ছড়াচ্ছে ঘৃণা আর উগ্রবাদ। অন্য ধর্মের মানুষ তাদের চোখে মানুষই না। তারা স্বপ্ন দেখে এক ইউটোপিয় পৃথিবীর যেখানে শুধুই তারা থাকবে! একেবারেই সম্প্রতি আমার স্ত্রীর ছোটবোনও মেয়েদের নামাযের ঘর ঘুরে এসে জানালো গত দুই বছরে চিত্র এতটুকু বদলায় নি। ঠিক আগের মতই আছে। ক্ষেত্র বিশেষে বরং বেগবান হচ্ছে। প্রিয় কর্তৃপক্ষ, শুধু এতটুকু চিন্তা করে দেখুন, একজনের বন্ধুদের মাঝেই এমন বেশ কিছু মেয়ে দেখা গেলে সামগ্রিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতগুলো ছেলেমেয়ে এদের দ্বারা পথভ্রষ্ট হচ্ছে?

সম্প্রতি যখন ব্লগার রাজিবের হত্যাকারীরা ধরা পড়লো, তখন একটা বিষয় আমার দৃষ্টিকে ভালোভাবে নাড়া দেয়। হত্যাকারীরা জানায় তারা পরস্পরের সাথে পরিচিত হয় নামাজের ঘরে। এ বিষয়ে প্রেস কনফারেন্সে ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন[৩],

গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তাঁরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামাজকক্ষে নামাজ পড়তে গিয়ে পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ হন।

এছাড়া যে ছেলেটা সবাইকে এ বিষয়ে উস্কে দিচ্ছিল সে ছিল জামাত-শিবিরের প্রাক্তন সদস্য এবং ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র [৪]। যেভাবে তারা রাজিবকে মারার জন্যে দুটা আলাদা আলাদা দল গঠন করে পুরো পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করেছে, তা রীতিমত অবিশ্বাস্য। সুস্পষ্ট জামাতের হাত ছাড়া এটা হওয়া কঠিন। তাছাড়া ধরা পড়া ছাত্রদের মধ্যে কোন অনুশোচনা নেই। এতটাই তাদের ব্রেইন-ওয়াশ করা হয়েছে যে তারা বলছে তারা ঈমানী দায়িত্ব পালন করেছে!

এই পুরো ঘটনাটা পড়ার সাথে সাথে বুঝতে পারি আমার স্ত্রী মেয়েদের নামাজের ঘরের যে বর্ণনা দিয়েছে, সেটা ছেলেদের নামাজের ঘরেরও চিত্র। এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে না দেখে বরং নাফিসের ঘটনাকেও একই কাতারে দাঁড় করানো যায়। নাফিসের বাবার একটা সাক্ষাতকারে পড়েছিলাম (তথ্যসূত্রটা এই মুহূর্তে খুঁজে পাচ্ছি না) প্রথমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অন্য আর দশটা ছেলের মতই উচ্ছল ছিল সে। এছাড়া নাফিসের বাবা প্রথম আলোকে বলেছে তার ছেলে ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকম প্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হয়ে আট সেমিস্টার পড়েছে [৫]। তাহলে প্রশ্ন হল, উচ্ছল একটা ছেলে কীভাবে আট সেমিস্টারে (আড়াই বছরের একটু বেশি) বদলে গেলো? ইন্ধন কোথা থেকে আসতে লাগলো? নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই, তবে কর্তৃপক্ষ যদি খোঁজ নেন তাহলে হয়তো দেখবেন এই প্রশ্নের উত্তরও মিশে আছে আপনাদের নামাজের ঘরে। কারণ এভাবেই আরও অনেককে বদলে যেতে দেখা গিয়েছে।

অনুরোধ

প্রিয় কর্তৃপক্ষ, নামাজের ঘর একটা পবিত্র স্থান। যারা এই পবিত্র স্থানকে তাদের অসুস্থ মানসিকতা দিয়ে কলুষিত করছে, হিংসা ও উগ্রবাদের বিষ ঢালছে ওখানে গিয়ে, তাদের প্রতিহত করুন। এটা শুধু আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বজায় রাখার জন্যেই জরুরী নয়, এটা নামাজের ঘরের পবিত্রতা রক্ষার জন্যেও জরুরী। আপনাদের কাছে অনুরোধ, দেরি হবার আগেই এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিন।

তথ্যসূত্র

[১] http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=f8b5e431cff21a61bd97219510fd08a0&nttl=02032013178182
[২] http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article597832.bdnews
[৩] http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-03/news/333441
[৪] দৈনিক আমাদের সময়েরর রিপোর্ট
[৫] http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-22/news/299957


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

স্লিপারি স্লোপ আর্গুমেন্ট কি জানেন? স্লিপারি স্লোপ ফ্যালাসি হচ্ছে:

A slippery slope argument states that a relatively small first step leads to a chain of related events culminating in some significant effect, much like an object given a small push over the edge of a slope sliding all the way to the bottom.

অর্থাৎ
স্লিপারি স্লোপ আর্গুমেন্টের মতে তুলনামূলকভাবে ছোট একটি পদক্ষেপ একাধিক চেইন রিঅ্যাকশন ঘটিয়ে একটা বড় কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলবে। যেমন, একটা খাদের উপর থেকে পাথর ধাক্কা দিলে গড়িয়ে নীচে গিয়ে বিশাল ক্ষতি করে ফেলবে।

স্লিপারি স্লোপ আর্গুমেন্টে ব্যবহার করে আমেরিকার রক্ষণশীল দল ফতোয়া দেয় এভাবে, যদি একটা ছেলেকে আরেকটা ছেলের সাথে বিয়ে করতে দেয়া হয় তাহলে একটা পাথরের সাথে বিয়ে করতে দিতে অসুবিধা কোথায়? একাধীক লোকের সাথে বিয়ে দিতে অসুবিধা কোথায়? এভাবে আমাদের সমস্ত সমাজ ভেঙ্গে পড়বে।

কিন্তু ফটাশ করে না বুঝে শুধু ভারী কথা জুড়ে দেবার জন্য আপনাকে কি বলা যায় বুঝতে পারছি না।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

একি! যে মন্তব্যটার উত্তর দিচ্ছিলাম সেটা মডারেট হয়েছে? মডারেটররা বড় অস্থির প্রকৃতির হয়ে গেছেন আজকাল।

ক্রেসিডা এর ছবি

আপনার স্ত্রী ২০১১ এ পাশ করা; সো ধরে নেয়া যায় যে তিনি নতুন ক্যাম্পাসের ছাত্রী। আমার কোন ধারনা নেই এ ব্যাপারে। তবে হ্যাঁ, আগের ক্যাম্পাসে(বনানী)এরকম খুবএকটা ছিল না। "খুব একটা ছিল না" বলতে আমি নামাজের স্থান কে বুঝিয়েছি। বেশ খোলামেলা ছিল নামাযের স্থান (ছেলেদেরটা)। মেয়েদের নামাযের স্থান এ যাওয়ার তো অনুমতি বা সুযোগ ছিল না, তবে ক্লাশমেটদের কথা শুনে কখনো এরকম লাগে নি। মেয়েদের যতদূর মনে পড়ে "রিক্রিয়েশন" রুমের মধ্যেই নামায আদায় করতে হতো।

তবে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে HT এর অনেক আনাগোনা ছিল সে সময়। নামাযের স্থান ছাড়া আরো কিছু এড করি আমি। মূলতঃ ক্যাফেটেরিয়া, ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী হোটেল বা ফাষ্টফুড শপ গুলো ছিল প্রাথমিক ব্রেইন-ওয়াসের মূল স্থান। প্রথমত শুরু হতো কিছু হালকা আড্ডা দিয়ে, এর পর ঘন ঘন খাবার অর্ডার ও বিল দিতে না দিয়ে আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে ধীরে ধীরে আপন করে নেয়া।

ইদানিং আরো একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয়। সেটা হচ্ছে, এইসব গ্রুপ এখনো সক্রিয়। ফলে পূর্বে যারা ছিল,তারা বেশিরভাগই দেখা যায় এখন কোন না কোন জবে ভালো পজিশনে। ফলে নতুন টার্গেটদের দলে টানতে বা ব্রেইন ওয়াশ করতে ওই সব কম্পানীতে পার্ট-টাইম বা ফুল-টাইম জব অফার করে তাদের দলে টানার নতুন কৌশল। আর এ ব্যাপারটা ইজি হয়ে দাড়ায় যেহেতু একটা ষ্টুডেন্ট এর জন্যে ছাত্রাবস্থায় জব একটা লোভনীয় অফার। আমাদের অবিভাবকদের ও সাথে সাথে ষ্টুডেন্টদের ও সচেতন থাকতে হবে। ১৯-২২ বছরের (বা তারো অধীক) একজন ছাত্র তার বোধ ও বুদ্ধির মিশ্রন ঘটিয়ে চোখ-কান খোলা রেখে এসব থেকে দূরে থাকতে হবে।

জানিনা কেন, প্রায়শই দেখা যায় (আমার সময়কার দেখা) এই সব গ্রুপের লোকজন কিভাবে যেন শিক্ষকতায় বেশি জড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে নামীদামি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের আঙ্গিনায় তাদের দেখা যায়।এবং একটা সময়ে গ্রুপের কয়েকজন মিলে নতুন স্কুলের জন্ম দেয় কোন জনবহুল ও নামীদামী এলাকায়। বোধ করি সেখানে শিক্ষার পাশাপাশি খুব ছোটবেলা থেকেই স্লো ওয়েতে একটু একটু করে বেইন ওয়াশ করা হয়।

আমাদের অবিভাবকদের এটাও এখন চিন্তা করার সময়, যে আপনার সন্তানকে যে স্কুলে দিচ্ছেন, সেখানকার পরিবেশ বা ইনটেরিওর ডিজাইন হয়তো লোভনীয়, কিন্তু সে সঠিক শিক্ষা পাবে তো? শিক্ষার মোড়কে তাকে কু-শিক্ষা দেয়া হবে নাতো?

এনিওয়ে, ভালো লাগলো আপনার লেখা। আশা করি এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরো সচেতন হবেন; হয়তো ১০০% নজরদারী কখনোই সম্ভব না, তবু যতটুকু সম্ভব, যেভাবে সম্ভব, তারা যেন সেটা করেন; তাতে শিক্ষক, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষর্থী সবারই মঙ্গল।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণের জন্যে ধন্যবাদ। আমি মূলতঃ এ পোস্টে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তাঁদের নামাজের ঘরের বিষয়ে সচেতন করতে চেয়েছিলাম। তবে আপনার মন্তব্যে আরো অন্যান্য বিষয় উঠে আসায় এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছে। এখানে আলোচনাটা বিস্তৃত হবার সুযোগ পাবে। আমি আমার কিছু মতামত যোগ করছি:

১) আপনার সাথে একমত, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে এ ধরনের ব্রেইন-ওয়াশের প্রবণতা খুব বেড়ে যাচ্ছে। এই ট্রেন্ডটা সে সব স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে মূলতঃ শিক্ষকবৃন্দ। ফলে বিষয়টা হয়ে উঠছে খুবই স্পর্ষকাতর। যে আপনাকে শিক্ষিত করে তুলবে, সেই যদি কুশিক্ষার আলোয় একজনকে বড় করতে থাকে, তাহলে এক সময় একটা পুরো দেশাত্ববোধহীন প্রজন্ম তৈরি হয়ে যাবে। আমাদের সরকারগুলো (কোন নির্দিষ্ট দলকে টার্গেট করে বলছি না, সামগ্রিক ভাবে বলছি) এ বিষয়ে অসেচতন ছিল বরাবরই আর সেটার সুযোগ নিয়েছে জামাত এবং তাদের মত আরো কিছু উগ্রবাদী দল। তবে সময় এখনও ফুরিয়ে যায় নি। এ বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ নিলে এ ধরনের ব্রেইন-ওয়াশ প্রতিহত করা সম্ভব।

২) বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটা ছাত্র যথেষ্ট পরিণত হয়েই আসে। তারপরও তাকে ব্রেইন-ওয়াশ করতে হলে তার বন্ধু হয়ে ঢোকা ছাড়া উপায় নেই, যেমনটা আপনি বললেন। এর পাশাপাশি আমি কোচিং-এ জবের সুযোগ করে দেয়াও দেখেছি। অর্থাৎ তথাকথিত বড় ভাই হিসেবে প্রথমে ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্ট দেয়, তারপর ধীরে ধীরে শুরু করে স্লো পয়জনিং। ব্যাপারটা তখন এমন হয়ে দাঁড়ায় যে ঐ বড় ভাই যা বলছে তা মেনে নেয়াও যায় না আবার না মানাও কঠিন হয়। এই সময়ে অনেকে জামাতিদের পাকচক্র থেকে ফিরে আসে। আর যে পারে না, সে পুরোপুরি তলিয়ে যায়। পরে এদের দিয়েই রাজিব হত্যাকান্ডের মত ঘটনাগুলো ঘটানো সহজ হয়।

৩) আরেকটা ক্যাটাগোরি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এরা খুবই মারাত্মক। পাবলিক-প্রাইভেট - সব জায়গাতেই এদের দেখা যায়। এদের থেকে ছাত্রছাত্রী নিরাপদ রাখতে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।

দিগন্ত এর ছবি

"বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটা ছাত্র যথেষ্ট পরিণত হয়েই আসে।"

- আমার ব্যক্তি-অভিজ্ঞতায় দেখেছি সবাই একই-রকম পরিণত হয় না। খেটে খাওয়া ঘরের ছেলেপুলে খেটে খেতে হবে এই ব্যাপারটা মাথায় নিয়ে রাখে কিন্তু উচ্চকোটির সকলের মধ্যে সেই চিন্তা থাকে না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

হ্যা, এ বিষয়ে একমত।

সাধ এর ছবি

আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ছাত্র পরিণত বয়সে যায় না; সে যায় শিক্ষা নেয়ার জন্য একটা পরিণত বয়সে । কিন্তু মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বয়স হলো ভার্সিটির ৪ বছর, এসময়েই তার মন-মানসিকতা ও ভবিষ্যত জীবনের পথের ছাঁচ তৈরি হয় ।
ঘটনা হলো, ভার্সিটির টিচারদের কন্ট্রোল করা সম্ভব ক্যামনে? শিক্ষককে সারাক্ষণ মনিটর করা সম্ভব না; করলে সে আর ভার্সিটির শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না । একজন শিক্ষকের সঠিকভাবে কাজের জন্য যথেষ্ট স্বাধীনতা দরকার । আসলে ব্যপারটা জটিল । কোন নিয়ম করে এদের ঠেকানো যাবে না, সেটাকে তারা অপ্রেসন হিসেবে দেখবা - অপ্রেসন হলেই হার্ডলাইনে যাবে । যেটা এর থেকে মুক্তি দিতে পারে তা হলো সামগ্রিক সচেতনতা - এটাই ইউটোপিয়ায় সম্ভব, বাস্তবে না । সুতরাং বাস্তবে সমস্যা সমাাধানে কঠোর না কিন্তু সুচিন্তিত সমাধান (ডিফেন্স মেকানিজম) দরকার ।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ছাত্র পরিণত বয়সে যায় না; সে যায় শিক্ষা নেয়ার জন্য একটা পরিণত বয়সে । কিন্তু মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বয়স হলো ভার্সিটির ৪ বছর, এসময়েই তার মন-মানসিকতা ও ভবিষ্যত জীবনের পথের ছাঁচ তৈরি হয় ।

আমার মন্তব্যে পরিণত বলতে আসলে আমি বোঝাতে চেয়েছি একটা স্কুলের বাচ্চার কচি মনের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণে। স্কুলে ছোটবেলা থেকে শিক্ষকরা যখন বাচ্চাদের মাথায় বিষবাষ্প ঢোকায়, তখন সেটা বেশ সহজে তাদের মাঝে স্থান করে নেয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ছেলেকে ওভাবে বলে লাভ হয় না। তার জন্যে বন্ধু হয়ে ঢুকে ধীরে ধীরে স্লো পয়জনিং করতে হয়।

ঘটনা হলো, ভার্সিটির টিচারদের কন্ট্রোল করা সম্ভব ক্যামনে? শিক্ষককে সারাক্ষণ মনিটর করা সম্ভব না; করলে সে আর ভার্সিটির শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না । একজন শিক্ষকের সঠিকভাবে কাজের জন্য যথেষ্ট স্বাধীনতা দরকার । আসলে ব্যপারটা জটিল । কোন নিয়ম করে এদের ঠেকানো যাবে না, সেটাকে তারা অপ্রেসন হিসেবে দেখবা - অপ্রেসন হলেই হার্ডলাইনে যাবে ।

আমি নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলাম। মনিটরিংকে আমারও খুবই অসহ্য লাগতো। এটা কোন শিক্ষকই ভালো ভাবে নেবে না। কিন্তু একেবারে ছেড়ে দেয়াটাও কর্তৃপক্ষের জন্যে সুখকর হবে না। তাছাড়া শিক্ষকদের ইন্টারভিউর সময় তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করাটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে আয়রনি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ তথা ডিন, ভিসি ইত্যাদি পোস্টগুলোও শিক্ষকদেরই। তাই নিয়ন্ত্রনের প্রশ্নে মুরগী আগে না ডিম আগে, তেমন একটা ডায়লেমার সৃষ্টি হয়। তবে এর একটা সুচিন্তিত সমাধান যে জরুরী, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

শিশিরকণা এর ছবি

ছাত্রদের ফীডব্যাক সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে শক্ত ভূমিকা নিলে একটা চেক এন্ড ব্যালান্স হতে পারে।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সাইদ এর ছবি

আপনার এই লেখাটার সাথে আমার দুই পয়সা যোগ করতে চাই। ইংরেজি মাধ্যমের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও নজরদারি করা উচিত। আমার নিজের কিছু বন্ধু বান্ধব কে আমি দেখেছি খুবই আধুনিক চাল চলনে কিন্তু আদর্শগত ভাবে তারা ছাগু বান্ধব বা ছাগু। আমি আজ থেকে ১২-১৪ বছর আগের কথা বলছি। এরা এখন অনেকেই পাশ্চাত্যের অনেক বড় ডিগ্রিধারি, কিন্তু ছাগুত্বের বিষবাষ্প একটুও কমেনি।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এ বিষয়ে একটু আগেই উপরে মন্তব্য করছিলাম। ইংরেজি মাধ্যমের এই স্কুলগুলো যে ব্রেইন-ওয়াশড ছেলেমেয়ে সাপ্লাই দিচ্ছে সমাজে, তারা আরো মারাত্মক। এরা অধিকাংশই ওয়েল-অফ ফ্যামিলি থেকে আসে। তাই তাদের পেট চালানোর চিন্তা খুব একটা করতে হয় না। তাদের সামর্থ্যের পুরোটাই ধর্মের নামে বিষবাষ্প ছড়াতে ব্যবহার করে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে দুইবেলা নাম ধরে ধোলাই করা (প্রায়শই সঙ্গত কারণে) কয়েকটি চ্যানেলকে এই প্রসঙ্গের নিউজে বলতে শুনলাম "একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়"।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

সাধারণত দেখা যায় বোর্ড অব ট্রাস্টি-তে যারা থাকে তারা বেশ ক্ষমতাবান। মিডিয়াতে তাদের যথেষ্ট প্রভাব থাকে। এটা হয়তো তারই একটা উদাহরণ। তবে আমি মনে করি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়টাকে ইতিবাচক ভাবে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেন, তাহলে তাদের এভাবে মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে না।

রিপন মজুমদার এর ছবি

সহপাঠীদের বাঁচাতে নিশ্চয়ই নর্থ সাউথেরই কোন ছাত্র লিখাটি ছড়িয়ে দিবে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আশা করবো তারা এ বিষয়টাকে সমালোচনা হিসেবে না দেখে দৃষ্টিআকর্ষণ হিসেবেই দেখবেন এবং নিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে তাদের অবস্থান থেকেও বিষয়টাকে ব্যাখ্যা করবেন।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডিবেট ক্লাব, ফিল্ম ক্লাবের মতো মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সংগঠন গড়ে তোলা জরুরী... যারা দেয়ালিকা বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেবে। ভিকারুন্নেসায় এরকম একটা হয়েছে শুনেছি... একটা কক্ষ বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যার দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তথ্য ছবি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়েছে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

নজরুল ভাই, নটরডেমেও সম্ভবত এরকম কিছু শুরু হচ্ছে। ‌...মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবার মাঝে ছোট থেকেই জাগ্রত করতে হবে। পারিবারিক ভাবে কিছুটা হয়ে থাকে (যদিও সব পরিবারে নয়), কিন্তু স্কুল থেকে, তাও একদম ছোট ক্লাস থেকে এই চেতনা ছড়িয়ে দিতে শুরু করলে অনেক বেশি কার্যকর হবে।

Hasan Rahman এর ছবি

এন এস ইউ তে প্রায় ১৬ টা ক্লাব ছিল, এখন মনে হয় আরো বেড়েছে, এইসব ছাগুরা বেশির ভাগই কোন ক্লাব এ জড়িত থাকেনা, এদের নিজেদের বিভিন্ন আলাদা ফোরাম থাকে। একটা সময় লিবারেটেড ইউথ এর নাম শুনতাম, এখন জানিনা এদের কি হাল! আমার কাছে বেশ কিছু শিক্ষককে সবসময়ই ছাগু ভাবধারার বলেই মনে হয়েছে! এদের সংখ্যা কোন এক কারনে ইনিজনিয়ারিং বিভাগেই বেশি! আমার মনে হয় পরিবার ও একটা বিরাট ফ্যাক্টর। অনেক ধনী পরিবারই আজকে ধর্ম নিয়ে বেশ মাথা ঘামাচ্ছে, অথবা তাদের ছেলে মেয়েরা নামাজ পড়লে খুবই উল্লসিত হন, তাঁরা খেয়াল করেন না যে তাদের সন্তানরা নামাজের পাশে পাশে কি করছে, অথবা কেন ঘন ঘন মসজিদে যাচ্ছে! ধর্ম পালনের সাথে আমার কোন বিরোধ নাই, কিন্তু এটার বাড়াবাড়ি নিয়ে আমি সর্বদাই শঙ্কিত! মুক্তমনের মানুষ হবার জন্যে লিবেরেল আরটস এর কোন বিকল্প নাই! যে যা বিষয়ে পড়ুক না কেন আমার মনে হয় লিবারেল আর্টস ছাড়া আমাদের মুক্তি নাই, এবং অবশ্যই প্রয়োজন ডারউইন সাহেব এর! ধন্যবাদ!

Fahmid এর ছবি

আমার জানামতে nsu তে সাংস্কৃতিক সংগঠন, সিনে & ড্রামা ক্লাব, photography ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব, কম্পিউটার ক্লাব ইত্যাদি আরও কিছু ক্লাব আছে, এদের জন্য ইউনিভার্সিটি থেকে টাকা বরাদ্দ আছে এবং প্রতিটা ক্লাব এর আলাদা আলাদা অফিস রুম, রিহার্সাল রুম ও আছে. এই ক্লাব গুলা কিন্তু সবসময় ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে এবং তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে এ চেতনা ছড়িয়ে দেয় - দুঃখের বেপার হলো এইযে HT টাইপ পোলাপান কিন্তু এইসব ক্লাব একটিভিটিস এ কোনভাবে ই যুক্ত থাকেনা...আরেকটা বেপার হলো এরা কেউ ই ইউনিভার্সিটি'র চেনা মুখ ও নাহ.

অতিথি লেখক এর ছবি

মাদ্রাসা থেকে শুরু করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সব স্থানেই জামাত শিবির চক্র ধর্মকে ব্যাবহার করে সুপরিকল্পিতভাবে নিজেদের নীলনকশা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে।যার পরিনতি আজ আমারা দেখতে পারছি।প্রশাসন এবং কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনটা এর জন্য দায়ী।

রসি মজুমদার

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

প্রশাসন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার সুযোগ নিয়েই এ ধরনের কাজগুলো করছে জামাত এবং সমমনা কিছু দল। এ বিষয়ে প্রশাসনের এখনই সচেতন হওয়া জরুরী।

স্পর্শ এর ছবি

(ডুপ্লি)


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমেরিকায় টেরর হামলার পরিকল্পনাকালে গ্রেফতারকৃত চান্দু কাজী মোহাম্মাদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলো।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

নাফিসের এই ঘটনাটা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে একটা ওয়ার্নিং ছিল, যা তারা তখন শুনতে পান নি। তবে রাজিব হত্যাকান্ডের পরও যদি না শুনতে পান তাহলে সেটা তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্যেই ভবিষ্যতে দুঃসময় বয়ে আনবে।

স্পর্শ এর ছবি

ট্রাস্টি বোর্ড বা নিয়ন্ত্রকরা এগুলো এড়িয়ে যেতে চাইলেও বর্তমান ছাত্রছাত্রীদেরকেই সোচ্চার হতে হবে। তাদের নিজেদের স্বার্থেই। নইলে কদিন পরে নর্থ-সাউথ এর ডিগ্রি নিয়ে উচ্চশিক্ষার্থে দেশের বাইরে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
রূপক এর ছবি

মনিপুর উচ্চ বিদ‌্যালয়ে "নামাজ ক্যাপ্টেন" বলে একটা ব্যাপার ছিলো (আমি নিজেও ক্লাস সিক্স আর এইটে থাকতে নামাজ ক্যাপ্টেন ছিলাম), যার কাজ ছিলো মসজিদে যেসব ছাত্র যোহরের নামাজ পড়তে আসে তাদের উপস্থিতি লিপিবদ্ধ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে তো আর এসব চলে না, তাই দায়িত্ব নিতে হবে সহপাঠীদেরই। তবে মস্তিষ্ক ধৌতিতদের সুপথে আনতে সময় প্রয়োজন; কারণ, একদিনে দালান গড়া যায় না; ভাঙ্গাও যায় না একদিনে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

একদিনে দালান গড়া যায় না; ভাঙ্গাও যায় না একদিনে।

এটা খুবই সুন্দর একটা কথা বলেছেন। জামাত-শিবির তাদের দালান অনেক দিন ধরে বানাচ্ছে। এটাকে হুট করে ভাঙ্গা সম্ভব নয়। কিন্তু সচেতনা এখনই আসা জরুরী। জামাতের এসব দালান ভাঙ্গা যে জরুরী, সেটা বিভিন্ন স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উপলব্ধি করাতে হবে।

বাউলিয়ানা এর ছবি

নামাজের স্থানে জামাত শিবিরের কার্যক্রম নিয়ে সম্পুর্ণ একমত। এরকম আরও কয়েকটা কেইস সম্মন্ধে জেনেছি। আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজের সময় ব্যতীত অন্য সময় প্রেয়ার রুম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সমস্যা বাধায় তবলীগের লোকজন। তাদের ব্যপারে দেখলাম কারও কোনো অভিযোগও নেই। তাই তাদের নামাজের রুম ব্যাবহার করতে দেয়া হয়। এই সুযোগটা জামাত শিবিরের লোকজন কাজে লাগাতে পারে।

Mohon এর ছবি

Update from VC NSU:

"Dear All:

It has been decided that all the PRAYER ROOMS of NSU shall be used only for the prayer.
purpose and not for any other purpose e.g. any sorts of discussion (political/religious.
etc), gossip, rest and refit etc.

All the PRAYER ROOMS shall remain closed except the five prayer times in a day. These
rooms shall be opened only during Azan timings and shall be closed immediately after the.
prayer is over.

Since the prayer room is not a mosque, therefore, Jumma prayer in NSU prayer room (Boy’s.
Lunge) shall be discontinued.

The above policy shall come into effect forthwith.

For strict compliance by all concerned please.

All concerned are requested to follow the NSU Dress code before entering the campus.

Thank you"

সত্যপীর এর ছবি

জোস। পাব্লিক ভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট থেকে এইরকম দ্রুত অ্যাকশনের ব্যাপার কল্পনাতীত।

..................................................................
#Banshibir.

মেঘা এর ছবি

দেঁতো হাসি খুব বেশি দ্রুত

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

রিপন মজুমদার এর ছবি

চিন্তিত

মেঘা এর ছবি

প্রায় বছর দুই আগে আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে খুব অবাক করা কিছু ঘটনা শুনেছিলাম। আমার এক বন্ধু ছিলো নর্থ সাউথের। ওর কাছে যা শুনেছিলাম আর আজ যা দেখছি তাতে খুব মিল পেলাম। ভাইয়া নামাজ ঘরের কথা ঠিক বলেছেন। সেই সাথে এটাও ঠিক কিছু ছেলেকে বিশেষ অর্থায়নে পড়ানো হতো বড় বড় ভার্সিটিতে। যারা লেখা পড়ার পাশাপাশি মানুষকে ইসলামের পথে আনার কাজ করতো। ওদের ভার্সিটিতে এমন কিছু ছেলে ছিলো! জানি না এখনো এমন কিছু হয় নাকি!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

সেই সাথে এটাও ঠিক কিছু ছেলেকে বিশেষ অর্থায়নে পড়ানো হতো বড় বড় ভার্সিটিতে। যারা লেখা পড়ার পাশাপাশি মানুষকে ইসলামের পথে আনার কাজ করতো।

এই অর্থায়ণ কারা করতো? এটা তো ভয়াবহ ব্যাপার। এ বিষয়ে আরো আলোকপাত করলে ভালো হয়।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

অকল্পনীয় দ্রুত পদক্ষেপের জন্য সাধুবাদ। ছাত্রদের থেকে ভাইরাসাক্রান্ত শিক্ষকরা হলে সেটা বেশি ক্ষতিকর। সেই শিক্ষকদের প্রতি অর্ধচন্দ্রদানপূর্বক উপযুক্ত ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ নিবে সেই আশাও রাখি।


_____________________
Give Her Freedom!

SADIK CHOWDHURY এর ছবি

৮ বছর পুর্বের অভিজ্ঞতায় বলছি। আমার মনে হয় সবচেয়ে ব্রেণ ওয়াসের কাজটা ব্যপকহারে হয় কোচিং সেন্টার গুলোতে। ব্যাচ ভিত্তিক এ সব কোচিং সেন্টারে ব্যাচমেট, আড্ডা, ভাল কলেজ - বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারার আকাঙ্খা ইত্যাদি সেনসিটিভ বিষয় গুলোকে শিবির সুনিপুণ ভাবে কাজে লাগায়। কোচিং সেন্টারের উপর সরকারের মনিটরিং প্রক্রিয়াটা খুব জরুরী।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

কোচিং সেন্টার হচ্ছে জামাতের ব্রেইন-ওয়াসের মূল বেইজ। স্কুল/কলেজ লেভেল থেকেই অনেকে পড়তে যায় যা চলে একেবারে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পর্যন্ত। তারপরও শেষ নেই। ওরা রেখে দেয় শিক্ষক হিসেবে। ফলে ওদের সাথে আড্ডা-মেলামেশাটা চলতেই থাকে।

হাসিব এর ছবি

উদ্বেগ যথার্থ। তবে নামাজের ঘর পাহারা দিয়ে কী হবে এটা বোঝা গেল না। আমরা কি আশা করছি নামাজের ঘর নিয়ন্ত্রন করলে ছাগুচিন্তা বন্ধ হবে? ছাত্রদের মধ্যে সঠিক রাজনৈতিক সচেতনাতা তৈরি না করা গেলে নামাজ ঘর বন্ধ লাভ নেই।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বন্ধ হয়ত হবে কিন্তু ডেটার করবে। নামাজ পড়ার পর আসর জমিয়ে ব্রেইন ওয়াশ বন্ধ করতে হবে। ক্যাম্পাসের ধারে কাছে কোথায় যেন না ব্রেইন ওয়াশের জামাতে না পড়তে পারে সেদিকে লক্ষ‌্য রাখতে হবে।

হাসিব এর ছবি

সমস্যা হলো আপনি গ্যাদারিং ব্যক্তিগত লেভেলে ঠেকাতে পারবেন না।

দিগন্ত এর ছবি

সাধারণভাবে একটা বয়সের পরে ছাগুচিন্তা এলেও তা থেকে কারও বোমা হাতে নামা বা খুন করার প্রবণতা চট করে আসবে না। তাই কিছুটা হলেও এর পজিটিভ দিক আছে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

হাসিব ভাই, আমি কোন সমাধানের উদ্দেশ্যে কথাটা বলি নি। আসলে সমাধান আমারও জানা নেই। কিন্তু একটা সমাধান আসা দরকার, সেটা উপলব্ধি করেই লেখা। আমি লক্ষ্য করেছি নামাজের ঘরটাকে ছাগু-চিন্তা ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয় খুব বেশি। এর কারণ সম্ভবত এই যে যারা নামাজ পড়ে না, তারা ওখানে যায় না। আর যারা নামাজ পড়তে যায়, তারাই টার্গেট অডিয়েন্স। তাই বাহিরের কোলাহল মুক্ত পরিবেশে অডিয়েন্সের ব্রেইন ওয়াসটা খানিকটা সহজ হয়।

শিশিরকণা এর ছবি

ঘরে ঘরে হালাকা পার্টিও আজকাল ব্রেইন ওয়াশের একটা জায়গা। এগুলা আয়োজনের নেতৃত্বে সব সময়ই ধর্মপ্রাণ লোকের চেয়ে ধর্মান্ধ লোকদের অত্যুৎসাহী দেখা যায়।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

একমত। এই পার্টিগুলা আরো ভয়াবহ। জামাতের এক ধরনের মহিলা দল রয়েছে যারা নিয়মিত বিভিন্ন ঘরে 'ইসলামের আলোচনা' করার নামে প্রবেশ করে নিজেদের পয়জন ছড়ায়। এটাকে তারা নাম দিয়েছে 'মেহফিল'।

তারানা_শব্দ এর ছবি

@Mohon- নর্থসাউথে তো জায়গার অভাব নাই। নামাজের পর নামাজের রুমটা বন্ধ করে দিলে সামনের লাউঞ্জে বসে ব্রেন ওয়াশ করবে। ঐখানে বসতে না দিলে অডিটোরিয়ামের সামনের খোলা জায়গায় যাবে, সেইটাতে না হলে কন্সার্টের ঐ গ্যালারীতে যাবে।
যেইটা করা দরকার আমার মতে সব সময় তদারকি করা। বিশেষ করে নামাজের জায়গাগুলাতে। নিজস্ব লোক রেখে সব সময় চোখ রাখা স্টুডেন্টরা কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে, ভর্তির সময় ব্যাক-গ্রাউন্ড চেক করা- [যেইটা আদৌ সম্ভব নাকি জানি না], ইত্যাদি। অবশ্য এই সব ঘটনার পর নিশ্চয়ই তারা অনেক সতর্ক হয়ে যাবে এই সংক্রান্ত আলোচনায়।

পার্সোনালি এই সব ঘটনায় খুবই বিরক্ত। আপনার স্ত্রী এবং উনার বোন এক বিন্দুও বাড়িয়ে বলেন নি এটা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। আমি নিজেই একটা লেখা দিতে চেয়েছিলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন একটা বিষয় তুলে আনার জন্য।

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

হাসিব এর ছবি

যেইটা করা দরকার আমার মতে সব সময় তদারকি করা। বিশেষ করে নামাজের জায়গাগুলাতে। নিজস্ব লোক রেখে সব সময় চোখ রাখা স্টুডেন্টরা কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে, ভর্তির সময় ব্যাক-গ্রাউন্ড চেক করা- [যেইটা আদৌ সম্ভব নাকি জানি না],

শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ালো বিষয়টা? ছাত্র ছাত্রীরা আলাপ করবে, দপ্তরী এসে জিজ্ঞাসা করবে আফার কি নিয়া আলাপ করেন? তারপর আফারা বলবে আমরা কুমড়োর বড়ার রেসিপি নিয়ে আলাপ করি। এইটা কোন সমাধান না। সচেতনতা শিক্ষা এগুলোর বিকল্প নাই। এনএসইউ কিন্ডারগার্টেন না, ওটা ইউনিভার্সিটি। সবাই প্রাইভেসি চাইবে, বেশি নজরদারি খবরদারি পছন্দ করবে না এটাই স্বাভাবিক।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এরকম না। প্রথমতঃ মসজিদে নামাজ ছাড়া কোনো রকম গ্যাদারিং করা যাবে না। দুই: চিহ্নিত জামাতীগুলোকে ক্যাম্পাসে কারো সাথে ফুসুর ফুসুর করতে দেখলে বাইরে যেতে বলতে হবে। তিন: এসব বিষয়ে লিফলেট, ইমেইল বিতরন করলে তাকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। চার: পড়াশোনা ছাড়া আরো বিভিন্ন ধরণের মেধা বৃদ্ধির অ্যাকটিভি, যেমন ডিবেট, খেলা ধুলা, মিউজিক এগুলোর চর্চা বাড়াতে হবে।

তারানা_শব্দ এর ছবি

হাসিব ভাই, আপনি যেটা বলেছেন সেটা খুবই হাস্যকর। আমি অবশ্যই এমন কিছু বলি নি যেটার অর্থ দাঁড়ায় দপ্তরী এসে জিজ্ঞেস করবে আফারা আপনারা কী নিয়ে আলোচনা করতেসেন আর উত্তর আসবে কুমড়া বড়ার রেসিপি। অবশ্যই প্রাইভেসি ম্যাটার করে। চুপচাপ থেকেই কথার ধরণ থেকে আন্দাজ করা যায়। নামাযের রুমে গেলে আমিও বুঝতে পারি কারা এই ধরণের আলোচনা করছে। সেই জন্য আমার ওদেরকে জিজ্ঞেস করতে হয় না আপনারা কী নিয়ে আলোচনা করছেন আর উত্তরে কুমড়া বড়ার রেসিপিও শুনতে হয় নি। ঠিক যেমনটা নিয়াজ ভাই এর স্ত্রী এবং উনার বোন আন্দাজ করে বের করে ফেলেছেন। এর জন্য উনাদেরকে নিশ্চয়ই একই প্রশ্ন এবং কুমড়া বড়ার উত্তর শুনতে হয় নি আশা করি। নিয়াজ ভাইই ভালো বলতে পারবেন।

আন্দাজের উপর ভিত্তি করে অবশ্যই কাউকে অ্যাকিউস করা যায় না। কিন্তু দীর্ঘদিন নজরদারিতে থাকলে কিছুটা হলেও সন্দেহের পাল্লা ভারী করা যায় কারা এই ধরণের ব্রেইন ওয়াসড হচ্ছে। একই সাথে অথোরিটি থেকে এইসব ব্রেইন ওয়াসড ছেলেমেয়েদের সাথে পারিবারিক ভাবে যোগাযোগ করে সাবধান করা যেতে পারে ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ ভাই- -একমত।

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা শুধু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর সমস্যা নয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর ও সমস্যা। বর্তমান সরকার আসার পর আওয়ামীলীগ এর শিক্ষকদের হাত ধরেই শিবির এর রাজিনীতির সাথে সরাসরি জড়িতদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু মাত্র সিলেটী সহমর্মিতায়। এরা নানাভাবে ছাত্রদের ব্রেনওয়াস করছে। তাছাড়া চারদলীয় জোটের সময় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাতো আছেই। আমরা যখন গণজাগরন মঞ্চে আসতে উৎসাহিত করি তখন তারা ক্যারিয়ারের লোভ দেখায় আর ইসলামিক প্রচার চালিয়ে যায়। আমরা যখন অনার্সে ছিলাম তখন এনএসআই ওখানে সক্রিয় ছিল, কিন্তু পরে কেন আর তাদের সেভাবে দেখা যায়নি বলতে পারবো না। আর এর সুযোগে জামাত-শিবির সমর্থক শিক্ষকদের কর্মতৎপরতা বেড়ে চলছে।

আমারআমি

কাঁচামরিচ এর ছবি

লেখার সাথে সম্পূর্ণ একমত। এন এস ইউ এর বেশীরভাগ ছাত্রেরই এই সকল বিষয়ে খোজ রাখা হয়ে ওঠে না। ফলে নামাজ ঘরে কে কি নিয়ে আলোচনা করছে সেইটা বেশীরভাগ ছাত্রই খেয়াল করে না। সেই সু্যোগে HT তাদের দাওয়াতি কা‌র্য‌্যক্রম চালাতে থাকে। তবে সবার সাথে এদের ব্যবহার খুবই ভালো হওয়া‌য় বাইরে থেকে এদের চেনা দায়। সাধারণত দেখা ‌যায় এরা এন এস ইউ তে ভর্তি হবার পরে এই ধরনের কা‌র্য‌্যক্রমে ‌‌যুক্ত হ্য় এবং পরিবর্তনটা খুব হঠাৎ করেই হয় এবং এটা মেয়েদের মধ্যে বেশী চোখে পড়ে। আমার দেখা ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের আমার ব্যাচে ১০ জন মেয়ের মধ্যে ৮ জন মেয়েই ভর্তির ১-২ বছর পর হিজাব পরা শুরু করে। হিজাব পরা খারাপ না কিংবা তারা হ্য়তো এই ধরণের কাজে ‌যুক্ত না কিন্তু তাদের আগের লাইফস্টাইল এবং হঠাৎ হিজাব পরে পরিবর্তনটা লক্ষনীয়। তো সবদিকেই খেয়াল রাখতে হবে। আরো একটা বিষয়- কেউ ‌যেন শুধু নামাজি কিংবা হিজাবি হবার কারণে কোন শিক্ষকের কাছ থেকে সুবিধা লাভ না করে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে কর্তৃপক্ষকে। ধন্যবাদ আপনার লেখার জন্য।

মরুদ্যান এর ছবি

ছাত্ড়জীবনে আমারো এরকম কয়েকটা সেশনে বসার অভিজ্ঞতা আছে, সেখান থেকে বলব নামাজের আগে পরে বা নামাজার ঘরে এই ব্রেন ওয়াশ অনেক বেশি কার্যকরী হয় চায়ের দোকান বা কয়াফের চেয়ে। কারণ টা বলি, নামাজ পড়তে যখন একটা ছেলে বা মেয়ে নামাজের ঘরে যাচ্ছে সে দুনিয়ার চিন্তাভাবনা থেকে মোটামুটি আলাদা হয়ে আল্লাহকে ডাকতে যায়, তাই ওি সময় এসব দাওয়াত একটু বেশিই কাজ করে। বাইরে অনেক বেশি ডিস্ট্র্যাকশন কাজ করে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মেঘা এর ছবি

প্রায় বছর দুই আগে আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে খুব অবাক করা কিছু ঘটনা শুনেছিলাম। আমার এক বন্ধু ছিলো নর্থ সাউথের। ওর কাছে যা শুনেছিলাম আর আজ যা দেখছি তাতে খুব মিল পেলাম। ভাইয়া নামাজ ঘরের কথা ঠিক বলেছেন। সেই সাথে এটাও ঠিক কিছু ছেলেকে বিশেষ অর্থায়নে পড়ানো হতো বড় বড় ভার্সিটিতে। যারা লেখা পড়ার পাশাপাশি মানুষকে ইসলামের পথে আনার কাজ করতো। ওদের ভার্সিটিতে এমন কিছু ছেলে ছিলো! জানি না এখনো এমন কিছু হয় নাকি!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মরুদ্যান এর ছবি

জামাতি কার্যক্রমের এটা খুব বড় একটা অংশ, এখন এটা আরো বেড়েছে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

জামাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কট না করলে ওদের অর্থায়নের পথ বন্ধ হবে না। আর সেটা না হলে এ ধরনের অনেক সুযোগ জামাতের জন্যে খোলা থাকবে। ক্যারিয়ার, পড়াশোনা - এগুলো খুব সেনসিটিভ ইস্যু। এগুলোকে ব্যবহার করে সুবিধা আদায় করা সহজ।

তবে জামাতের অর্থায়নে ছাত্র পড়ানোর অভিযোগটা আরো বিস্তারিত জানালে ভালো হয়। এটা জামাতের খুবই ভয়াবহ একটা স্টেপ। সবাইকে জানিয়ে সচেতন করা দরকার।

savage_mountain এর ছবি

আপাতত হয়ত নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জন্য নামাজ এর ঘর মনিটরিং করার থেকে বেশি কিছু করার নেই। তবে দীর্ঘমেয়াদী হিসেবে কি করা যায় সেই ব্যাপারে আমার কিছু কথা আছে। এবং সেটা সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সকল অভিভাবক দের জন্য।

আমাদের দেশের তরুণ সমাজের জন্য ব্যস্ত থাকার বিষয়ের খুবই অভাব। যেকোনো তরুণ সমাজ লেখাপড়ার বাইরে যে সব কাজে নিজেদেরকে ব্যস্ত রাখবে সেটা হলোএক্সট্রা-কারিকুলার একটিভিটি, খেলাধুলা, প্রেমে পড়া (আমি কিন্তু লুইচ্চামি বুঝায়তেসিনা)....... কিন্তু আমাদের দেশে এগুলার সুযোগ অনেক কম। তারা যখন এইধরনের কার্যক্রমে নিজেকে ব্যস্ত রাখার সুযোগ পায়না তখন খুব সহজেই ধর্মীয় মতবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। কেননা young mind is impressionable mind .

আর এই ব্যাপারটা মেয়েদের জন্যও নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে একটা মেয়ের খেলাধুলা করাকে খুব খারাপ চোখে দেখা হয়। বিতর্ক, গান এগুলাতে কিছু মাত্রায় মেয়েদের অংশগ্রহণ থাকলেও একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে পারিবারিক চাপে বাধ্য হয় ওগুলো ছাড়তে। আমি মনে করি এই কারণে অনেক মেয়ে আগ্রহ থাকলেও বিতর্ক, গান, নাচ ...... এই ধরনের কার্যক্রমে নিজেকে জড়াতে চায়না কেননা সে বুঝে যে কিছু দিনের মধ্যেই তাকে এগুলো ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হবে। আর এই কারণে অনেক মেয়ে ধর্ম কে আকড়ে ধরতে চায় কারণ বাঙালি সমাজ ধর্ম কেড়ে নিবেনা। এজন্যই সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল সংখ্যক মেয়েদের কে হিজাব পড়তে দেখছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

নর্থ সাউস বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি বিষয় গুলো সুবিবেচনায় এনে সঠিক ব্যবস্থা নেয়া।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ চৌধুরী সাহেবকে।
শুভকমনা রইল।

তুহিন সরকার।

Maksudur Rahman  এর ছবি

I don't want to write further details to support my argument by making another comment, so this will be my first and last comments. NSU has two types of students, science and commerce. Although it has dept. of economics but people study there just to learn business. What i think is that, both these disciplines make students to think in a materialistic way. To get rid of this materialism, many students who come from rich class search a place where they can find a relief. Believe or not religious practices is the most comfortable place for them. I had experiences where a male NSUer spend his idle time here and there in between STR and SPZ or GMQ and then come to prayer room at the 8th floor of STR and then pray to Allah. After that, several of them try to make a discussions at a corner in that prayer room about topic like- GMB, Kasmir, Muslim Brotherhood, Al Quaeda, CIA and Mosad, Israel. It was very hard for me to stay at the corner in that prayer room, to listen those nonsense and try to get some sleep. But this is the reality in NSU- where rich class has no room to disclosed their deepest dissatisfaction and to control their rage, they discuss issues which are happening in another world. As they bring that world in their living room; like playing video game and think s/he is in the part of that game. So it is not unusual that s/he might push the "kill" button in this real world and commit crimes. So my suggestion to NSU authority is that, they should take appropriate measures to "educate" these gamers about the real world by making mandatory courses like Sociology, History, Bangladesh Culture, World Religion, Astronomy, so that NSUers can understand s/his place in the Universe, GED courses are not enough

Mashroof_Ex_NSU এর ছবি

You might have some good points about the rich kids but your entire comment is flawed with gross overgeneralization.As a student of NSU Economics department I find your comment not only baseless but also totally lacking reality.It shows you are talking just out of your own assumption and not from the practical knowledge.As an Econ graduate from NSU I find your comment quite insultung that people go there only to learn business.Please try to avoid such overgeneralized comments in a public forum:it not only gives a bad name to your personality but also turnishes the image of NSU,which already is facing an image crisis due to these recent incidents.

Maksudur Rahman  এর ছবি

হম ঠিক, আমি বেশী সাধারণকরণ করে ফেলেছি, এনএসইউ এর অথনীতি বিভাগটিতে চমৎকারভাবে এদেশের সমাজের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোকপাত কারা হয়। এনএসইউ অসাধারণ। এর ইংরেজী বিভাগটিকে আমলে না নিয়ে আমি পাপ করেছি, এএসইউ এর ইংরেজী বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা বাংলাদেশের জনগনের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বাহক এবং ধারক। এবং আপনি এটাও ঠিক বলেছেন যে, এতে আমার চরিত্রের খারাপ দিক প্রকাশিত হয়েছে, আমি খারাপ

Mashroof এর ছবি

Playing sarcastic wouldnt save your back,specially when you are dealing with someone who is an Economics graduate and worked fot 2 years as a TA in English department.Instead of making yourself a fool,why dont you come up withh some hard statistics on the percentage of NSU Economics graduates going to business,research,higher studies and entrepreneurship?

P.S.May I know which degree you pursued from NSU? My guess is, its not an undergrad degree rather some superficial masters that people do on weekends!

সত্যপীর এর ছবি

এরকম পাতার পর পাতা ইংরেজি মন্তব্য ছাড়া হচ্ছে কেন বুঝতে পারলাম না৷

..................................................................
#Banshibir.

Mashroof_Ex_NSU এর ছবি

Another proof of you overgeneralizing is: You completely ignored NSU English department which is probably one of the most enriched among all the department.I repeat,stop giving yourself and NSU a bad name with such poor arguments.

Mashroof Hossain
Ex-NSU
042 Batch
Department of Economics

Iftekhar Towheed  এর ছবি

যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।পোষ্টদাতাকে অনেক ধন্যবাদ।নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র হিসাবে আরো কিছু পয়েন্ট যোগ করতে চাই।

০১/ নর্থসাউথে হিজবুত আছে নাকি নাই?
এ প্রশ্নের উত্তরে একপক্ষ বলে -ভর্তি।হিজবুত গিজগিজ করে।আরেকপক্ষ বলে,কিচ্ছু নাই।সব অপপ্রচার।
একারণেই মূল সমস্যাটা আড়ালে পড়ে যায়।বছরখানেক আগেও হিজবত কর্মীরা শিক্ষকদের রুমে রুমে, ক্যান্টিনে,স্টাডিরুমে নিজেদের বুকলেট বিলি করে এসেছে।এটা ঘটেছে রাতের বেলা।এমবিএর শিক্ষকরা চলে যাওয়ার পরে।এত এত প্রহরার মাঝে কীভাবে ঘটলো?এর আগে নাফিজের ঘটনা এবার রাজীব হত্যাকান্ডে ৫ জন।একেবারেই উড়িয়ে দেয়া সম্ভব?প্রেয়ার রুমে কী ঘটে সেটা নিয়ে যদ্দুর জানি প্রক্টরেরাও বিব্রত।প্রক্টরেরারো নাকি একশন নিতে পারে না।কেন পারে না?

০২/নর্থ সাউথে কি হিজবুতের প্রিষ্ঠপোষকতা আছে?
বাইরের কথা বাদ।কম্পুটার সায়েন্স, ইকনোমিক্স, বিজনেস স্কুলের তিন ক্ষমতাশালী শিক্ষকের যে চক্র আছে-এরাই মূল হোতা।ভর্তিবানিজ্য,দুর্নীতি,জঙ্গী লালন এদের হাতেই ঘটে।এদের একজন গোলাম আজমের য়ার আরেকজন জমির উদ্দিন সরকারের আত্মিয়।২য়জন ডঃঃ ইউনুসের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ।

০৩ঃ কেন কর্ত্ররপক্ষ চুপচাপ?
গবর্নিং বডিকে খুশি রেখে নিজেদের চেয়ারম্যান,ডিন পজিশন টিকিয়ে রাখতে কিছু শিক্ষক তৎপ্র।জন্নগিমূলক কাজকর্মের বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিস অভিযোগ আনলেও প্রভাবশালি গুটিকয় শিক্ষক অভিযোজ্ঞুওলোকে ধামাচাপা দেয় বারবার।ফলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের গায়ে কালো দাগ লাগে।

০৪/প্রেয়ার রুম প্রসঙ্গে
প্রেয়ার রুম খোলা রেখে বন্ধ রেখে লাভ হবেনা।দরকার অতি দ্রুত তদন্ত কমিটি করে বের করা কোন শিক্ষক/ছাত্র এসব কাযে জড়িত।অতিদ্রুত তাদের বহিস্কার করে দেয়া উচিত। দুই/তিন সেমিস্টার এরকম ক্লিঞ্জিং চালালে ময়লা পরিষ্কার হবে।

কাজী আহমদ পারভেজ এর ছবি

১) ধানমন্ডি গভঃ স্কুলে সিক্স বা সেভেন-এ পড়ি। দিশারি নামের একটি সংগঠন একটি ধর্মিয় মেলা করল। পুরা ব্যাপারটায় খুবই থ্রিলড হলাম। একটা ফর্ম দিয়েছিল, ইসলামি ছাত্র শিবির নামে নতুন (তখন, ৭৬-৭৭ সালে) একটি সংগঠনের সদস্য হবার জন্য। বাসায় এসে আব্বাকে দেখালাম। ফর্মের নীচের নাম-ধামগুলো দেখে উনি বললেন, এরাতো সব আল-বদর, রাজাকারের লোক। ফর্মটা ছিড়ে ফেললেন। আমার শিবির হওয়া হলনা। দায়ী আমার পিতা।
২) ক্যাডেট কলেজে পড়ি। একজন সজ্জন, মিষ্টভাষী, ধার্মিক বড়ভাই নামাজের জন্য খুব ভোরে ডেকে নিয়ে যেতেন। বৈরী পরিবেশে এমন একজন সজ্জন মানুষের প্রস্রয় পাবার ইচ্ছা থেকেই তার সবকথা মেনে চলি। এর ফাকে ফাকে দেখলাম মগজধলাই প্রক্রীয়া শুরু হয়ে গেছে। একদিন ঘটনাটা লক্ষ করলেন আরএক বড় ভাই। জানতে চাইলেন, নামাজের পর কি এত আলাপ? বললাম তাকে। সব শুনে জানতে চাইলেন, এইসব বাবা-মা শুনলে পছন্দ করে কিনা? আমিতো জানি করবে না। বল্লামও। উনি বললেন, নামাজ পড় ঠিক আছে, এসব করাটা ঠিকনা। বড় হও, বোঝা শেখ, তারপর ভেবে দেখ কোনটা ঠিক কোনটা করা উচিৎ। আমার শিবির হওয়া হলনা। দায়ী ঝিনাইদাহ ক্যাডেট কলেজের সিনিয়র - শরীফ ভাই ।
৩) এরপরেও আরো দু-চার বার ওদের ক্ষপ্পরে পড়ার ক্ষেত্র তৈরী হয়েছিল, কিন্তু ততদিনে কোমল বয়সের এদুটি অভিজ্ঞতা আমাকে ওদের মিষ্টিকথা ও খোঁড়া যুক্তির বিপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য শক্ত বানিয়ে দিয়েছে। আমার শিবির হওয়া হয়নি। দায়ী আমি নিজেই।
ওরা আক্রমনটা করে এমন একটা বয়সে বা সময়ে যখন ওদের রুখে দাঁড়ানোর কোন সামর্থ বা রসদ আক্রান্তের থাকেনা। এসময় পরিবার (আমার ক্ষেত্রে পিতা) বা বন্ধু (আমার ক্ষেত্রে শরিফ ভাই) -দের মত মানুষদের পাশে পাওয়া জরুরী।
আমাদের পরবর্তি জেনারেশন কে এই ধর্মান্ধতা থেকে বাঁচাতে প্রত্যেককেই সম্ভাব্য প্রতিটি ক্ষেত্রে একজন শরীফ ভাই বা একজন "আমার বাবা'-র ভুমিকায় অবতীর্ন হতে হবে।
"সন্তান ধর্মের লাইনে আছে, যাক চিন্তা নাই, নেশাতো করেনা, প্রেম করে বেড়ায় না," এসব ভেবে যারা আত্মতৃপ্তী পাচ্ছেন তাঁদের জন্য নাফিস বা এই পাঁচ ছাত্রের ঘটনা হওয়া উচিৎ বড় ধরনের আইওপেনার।
শুভেচ্ছা সবাইকে।

প্রজাপতি এর ছবি

বুয়েটে এধরনের ঘটনা ঘটতে দেখেছি। হল এ নির্দিষ্ট কিছু মেয়ে নামাজ রুমে মীটিং এরেঞ্জ করতো। আমার রুমমেট প্রথমে খুব উৎসাহি ছিলো। পরে আস্তে করে সরে আসে। অনেক আপুদের দেখেছি যারা নিয়মিত ঐ মীটিং এ যেত তারা কিভাবে বদলে গেছে। প্রথম দিকে জুনিয়র হিসেবে অনেক আন্তরিকতা দেখালেও পরে এভএড করতো। মনে হয় অন্যধর্মের ছিলাম বলে। আশংকার ব্যাপার হলো, অই সিনিয়র আপু এবং অন্য আরেকটা মেয়ে এখন বুয়েট এর টীচার। কি যে শিক্ষা দিচ্ছে কে জানে!!

সাবা তামান্না  এর ছবি

নামাজের ঘর পাহারা দিলেও এর কোন সমাধান নেই। আমাদের ক্যাম্পাস এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে বসে বসে এসব নিয়ে ইচ্ছামত কথা বলা যায়। সবচেয়ে বড় কথা একটা ডিপাটমেন্ট আছে আমি নাম বলবো না কোন ডিপাটমেন্ট, ওই ডিপাটমেন্টের হেড গুলা হিজবুল করে এদের বিপক্ষে কতৃপক্ষ কিছু করতে পারছে না কারন তারা অনেক বেশি ক্ষমতাশালী। সবচেয়ে খারাপ ব্যপার হলো যেসব স্টুডেন্ট এসব ইসলামী দাওয়াত নিয়ে কথা বলছে তারা অধিকাংশ কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমের স্টুডেন্ট এবং তারা তাদের স্কুল থেকে এসব করে আসছে, তারা কিন্তু আবার ভালো পরিবারের ছেলে মেয়ে। এদের ব্রেন ওয়াশ স্কুল থেকে শুরু হয়েছে। এরা ইংরেজি বাংলা মিলিয়ে এমন সুন্দর করে বলবে যে আপনার মনের ধারে কাছে ও আসবে না তারা খারাপ কিছু বলছে। আমার এক বান্ধুবি ছিলো যে কিনা ৪র্থ সেমিস্টার এ ঊঠে পুরো পুরি চেঞ্জ হয়ে গেসে। আমার ফেসবুকে পুজোর ছবি দেখে আমাকে ইচ্ছা মত কথা শুনাইলো এরপর আমি তাকে ব্লক করি। কয়দিন পর আমাকে এসএমএস করে সরি বলে এবং বলে যে আমার ভালর জন্যই সে বলসে। সবশেষে বলবো আমাদের সবার এখন থেকেই সচেতন হওয়া উচিত।

আলী হায়দার  এর ছবি

খুব ই হতাশাজনক চিত্র। একটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে মুক্ত চিন্তা, বিজ্ঞান, শিল্পসাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র। সেখানে যদি ছাত্রছাত্রীরা ধর্মান্ধতা শিখে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্যই ব্যহত হয়। ইতিমধ্যে যেসকল ছাত্র ছাত্রীর মগজধোলাই সম্পন্ন হয়েছে তাদেরকে কীভাবে সুপথে ফিরিয়ে আনা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা সবচাইতে বেশী।

ব্যঙের ছাতা এর ছবি

খুলনা বিশবিদ্যালয়ে ও এখন এমন চলছে, জীববিজ্ঞান অনুষদের একজন প্রভাবশালী শিক্ষক ক্লাসের পর ছাত্রদের সাথে আড্ডা দেবার ছলে ওদের ব্রেইন ওয়াশ করছে, আমার নিজের ছোটভাই এর কবলে পড়েছে, আমি দূর থেকে কিছুই করতে পারছিনা। ওই শিক্ষককেই সে তার হিরো মনে করে, তার মতামতকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়।
আমি নিজে খুব ই হতাশ এই নিয়ে।

এন্টোফাগাস্টা  এর ছবি

তাই কোন ডিপার্টমেন্টের স্যার সে?

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারন একটি লেখা।বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের উচিৎ বিষয়টাকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখা।
আমাদের পথ যেন চেতনার পথকে রুদ্ধ করে না ফেলে।

পাগলের ফেরিওয়ালা এর ছবি

বিষয় গুলো ভালো করে বিবেচনা করে দেখা উচিত কর্তৃপক্ষের ।

ধুসর জলছবি এর ছবি

ঠিক একই ধরনের ঘটনা পাব্লিক ভার্সিটি গুলোতেও আছে। যেমন আমাদের ময়মন্সিং মেডিকেল এ ছাত্রী হোস্টেলের নিচ তলায় এরকম একটা রুম ছিল যেখানে সিনিয়র কিছু আপু দীনের দাওয়াত দিত। আপাত দৃষ্টিতে মনে হবে কিছুই না, তারা ভাল ভাল কথা বলছে , কুরান নিয়ে আলোচনা করছে, কিন্তু আস্তে আস্তে ব্রেইন ওয়াশের কাজটা করে এরা। এদের ধৈর্য অসীম, কথা বলার ক্ষমতা অসাধারন। আর একটা ব্যাপার হল এরা সবাইকে ডাকত না। যেমন আমাদের পাশের রুমে এসে প্রতিদিন ডেকে নিয়ে যেত বিকেলে আমাদের কোনদিন ডাকেনি। এবং যাদেরকে ডাকত তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ দুএক বছরের মধ্যে ভয়াবহ ভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেল। মানুষ এভাবে বদলাতে পারে আমি ওদের কে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না।
আমরা বাকিরা সবই জানতাম কি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের ততকালিন প্রিন্সিপালই ছিলেন জামাতের লোক। এই আর একটা অদ্ভুত ব্যাপার। আওমি লিগ এসে বিএনপি কে তাড়ায়, বিএনপি এসে আওমিলিগ কে ,জামাত কে কেন যেন কেউ কিছু বলে না। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বললাম। অন্য জায়গায় এরকম হয়ত নাও হতে পারে।
এরপর আছে পারায় পারায় দাওয়াত দেয়ার ব্যাপারটা। কিছু মহিলারা দীনের দাওয়াত দেয় দুপুরের দিকে। যখন বাসায় শুধু গৃহিণীরা থাকে। আমি আমার মেজ মামিকে দেখেছি কিছুদিন এদের সাথে উঠবস করতে। এদের প্রভাবিত করার ক্ষমতা খুবই মারাত্মক। শুধু এনএসইউ না আসলে প্রতিটা ক্যম্পাসেই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া উচিত।

Rubaiya Islam এর ছবি

আপনার কথাগুলা পরে ভালো লাগলো মিঃ ধূসর। আপনি যা বলেছেন সেটাই কিন্তু ঠিক কথা। সবাই যে কেবল NSU কেই এসব কিছুর জন্য দায়ী করছে তা কিন্তু ভুল করছে। বরং প্রতিটা ইউনিভার্সিটিতেই এমন মানুষ আছে যারা ধর্মের নামে ব্রেইন ওয়াশ করে। so সব ভার্সিটিতেই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া উচিত। কেবল NSU নিয়ে পরে থাকলে আর অন্য ভার্সিটি গুলার দিকে নজর না দিলে হিতে বিপরিতই হবে। আজ NSU তো কাল অন্য ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রি এদের শিকার হবে। So যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত।

ক্রেসিডা এর ছবি

নর্থ সাউথ ‘সন্ত্রাসী উৎপাদনের ক্ষেত্র’ কি না, যাচাইয়ে রুল

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

Rubaiya Islam এর ছবি

আমি নিজে NSU এর ১জন Present Student।আমি ২০১০ সালে ভর্তি হয়েছিলাম। তাই আমি নতুন ক্যাম্পাস পেয়েছি।আমি প্রায়ই মেয়েদের কমন রুমের সাথে অ্যাডজাস্ট prayer hall এ যাই হয় নামায পরতে নয় ক্লাস এর ব্রেক এ রেস্ট নিতে। কখনো কখনো peacefully study করতেও ওখানে যাই। কিন্তু মিঃ নিয়াজ,আপনি/আপনার স্ত্রী/ স্ত্রীর বোন যা বললেন এমন কোন কিছু কিন্তু কখনই আমি দেখিনি।মেয়েদের prayer hall এ এত বেশি silence থাকে যে আপনি যদি খুব আস্তে বা ফিস ফিস করেও কথা বলেন তা শোনা যায়। আর আমি যেহেতু নরমালি একাই যাই so আমি বসে থেকে অনেকের অনেক কথাই শুনি আর চারপাশ দেখি সময় কাটাতে। বেশ কয়টা মেয়ে একসাথে বসে গল্প গুজপ করে,পড়াশোনা নিয়ে আলাপ করে আবার অনেক মেয়ে নামায-কালাম নিয়েও কথা বলে।কিন্তু কখনও কাউকে এর বাইরে অন্য ধর্ম বিরোধী বা দেশ বিরোধী কোন কথা বলতে কখনও শুনিনি। এমনকি তাদেরকে দেখে বা তাদের চালচলন দেখে কখনো মনে হয়নি যে তারা কোন প্লান পরিকল্পনা করছে। আমি যে ওখানে প্রায়ই বসি বা রেস্ট নেই, আমার সাথে কিন্তু কখনো কোন মেয়ে এসে ধর্ম নিয়ে কথা বা আলোচনা করেনি; বরং পড়াশুনা নিয়ে অনেকের সাথে আলাপ হয়েছে। যদি এমন কিছু হয়েই থাকে তাহলে ওটা অবশ্যই আমার চোখে পড়ার কথা। কিন্তু নিজের চোখে যেদিকে এমন কিছু ধরা পরেনি so স্বাভাবিক ভাবেই আপনার কথাগুলা বিশ্বাস করা possible হচ্ছেনা যেহেতু আপনি নিজ চোখে দেখেননি কেবল শুনেছেন আর আমি প্রতিদিন দেখছি। যাই হোক আমি ছেলেদের prayer hall এর কথা কিছু বলতে পারছিনা যেহেতু ওখানে যাইনি ।

তারানা_শব্দ এর ছবি

বেশ কয়টা মেয়ে একসাথে বসে গল্প গুজপ করে,

কী নিয়ে গল্প করে এইটা তো শোনা যায় না। আমার তো উলটা মনে হয় ওরা এতো নিচু স্বর বজায় রেখে কথা বলে কী করে?

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

মাশরুর হাসান খান  এর ছবি

সচলায়তনে আপনার এ পোস্টের কথা জানতে পারলাম বাংলানিউজ২৪ এ জনৈক ড অভিজিৎ রায়ের লেখা "নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কি জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য?" কলাম থেকে । লেখক জনাব নিয়াজ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চমৎকার একটি পোস্টের জন্য । আপনার পোস্ট এবং পাঠকদের মন্তব্যগুলো নর্থ সাউথ বিশ্বঃ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো দরকার । আমি বর্তমানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং আমি নিজেই শ্রদ্ধেয় ভিসি স্যারের কাছে আপনার লেখার পিডিএফ (কমেন্টসহ) এবং লিংক মেইল করছি । আমার বিশ্বাস - বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তিনি ব্যাপারগুলো ভেবে দেখবেন ।

জানি না, এখানে বলা প্রাসঙ্গিক কিনা, যেহেতু বাংলানিউজটুয়েন্টিফোরে কমেন্ট করার অপশন নেই, তাই এখানেই লিখছি, অযাচিত হলে ক্ষমা করবেন । এ ছাড়াও যেহেতু লেখক অভিজিৎ রায় আপনার এ লেখার রেফারেন্স দিয়েছেন, তিনি হয়তো এখানে এসে কমেন্টটি পড়বেন সে আশায় রইলাম ।

প্রথমে ভেবেছিলাম অভিজিৎ রায়ের কলামটি বাংলানিউজ২৪ এর রিপোর্ট , পরে দেখলাম এটা মতামত কলাম । আশ্চর্য হলাম, ন্যুনতম যাচাই বাছাই ছাড়া এরকম কলাম "আমেরিকা প্রবাসী গবেষক, ব্লগার এবং মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক । ‘ভালবাসা কারে কয়’সহ (শুদ্ধস্বর, ২০১২) সাতটি আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শনভিত্তিক বইয়ের লেখক" অভিজিৎ রায় কীভাবে লিখলেন?

অভিজিৎ রায় লিখেছেনঃ
১৯৯২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হিযবুত তাহরীরের বীজ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে । তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ভিসি ছিলেন বিএনপি মতাদর্শী অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল আহাদ ।
সংশোধনঃ ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠার পর নর্থ সাউথে ভিসি বলে কোনো পজিশনই ছিল না । তখনকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্টে - বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ছিলেন 'প্রেসিডেন্ট' । নর্থ সাউথের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ছিলেন ড মুসলেহউদ্দীন আহমেদ, যিনি গত বছর মারা গেছেন এবং প্রায় এক যুগ ধরে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সাথে যুক্ত ছিলেন । ২০০০ সালের দিকে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট পরিবর্তন করে ভিসি পদ চালু করা হয়, আর নর্থ সাউথের প্রথম ভিসি ছিলেন ড হাফিজ জি এ সিদ্দিকী ।

অভিজিৎ রায় লিখেছেনঃ
এই শাহ আবুল হান্নান ইন্টারনেটে (বিভিন্ন ফোরাম এবং ইয়াহু ও গুগল গ্রুপে) ‘জামাতি প্রপাগাণ্ডা’ চালানোর কাজে সদা তৎপর । তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক’ হিসেবে কাজ করছেন বলে জানা গেছে । ... এই শাহ হান্নানের মতো মৌলবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী উগ্রপন্থী মানুষ কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রোগ্রামের দায়িত্ব পেতে পারেন তা আমার বোধগম্য নয় ।
সংশোধনঃ একেবারে অন্ধের মত করে লিখলে যা হয় আর কি । গুগলের এই জয়জয়কারের যুগে অভিজিৎ রায় ন্যুনতম সার্চ করতে পারতেন । নর্থ সাউথের বোর্ড অব ট্রাস্টির শাহ আব্দুল হান্নান কখনোই অ্যাকাডেমিক পজিশনে ছিলেন না । গত বছরের জুন পর্যন্ত বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক ছিলেন এক হান্নান, তবে তিনি শাহ আবদুল হান্নান নন, তিনি ছিলেন ড. আব্দুল হান্নান চৌধুরী । ড. আব্দুল হান্নান চৌধুরী বর্তমানে স্কুল অব বিজনেসের ডিনের দায়িত্ব পালন করছেন । ২০১২ সালের জুলাই থেকে বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক ড. জসিম উদ্দীন আহমেদ

অভিজিৎ রায় লিখেছেনঃ
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক হাফেজ জি এ সিদ্দিকী রাজনৈতিকভাবে জামায়াত মতাদর্শে বিশ্বাসী বলে পত্রিকায় এসেছে ।
সংশোধনঃ আবারও সেই না জেনে লেখার ফল । নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালের বর্তমান বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক হাফেজ জি এ সিদ্দিকী নন । বর্তমান উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার । সাবেক উপাচার্য তার নাম হাফেজ নয়, হাফিজ লিখতেন, এটাও অভিজিৎ রায়ের জানা দরকার ছিল ।

অভিজিৎ রায় লিখেছেনঃ
এছাড়া জামায়াতি মতাদর্শের আরেক প্রভাবশালী শিক্ষক ড. গোলাম মোহাম্মদের কথাও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসেছে, যিনি অর্থনীতির শিক্ষক হলেও মূলত ছাত্রছাত্রীদের হিযবুত তাহরীরের আদর্শ প্রচারে তৎপর থাকেন । এই ‘স্বনামধন্য’ শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার নিজের স্ত্রীই ২০০৪ সালে নারী নির্যাতন মামলা করেছিলেন বলে জানা গেছে ।
সংশোধনঃ এবার বুঝতে পারলাম, অভিজিৎ রায়ের লেখার সুত্রগুলো কী! হাসলামও অনেকক্ষণ । ড গোলাম মোহাম্মদ ২০১১ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেছেন । ২০১৩ সালে এসে অভিজিৎ রায় কীভাবে শুনলেন গোলাম মোহাম্মদ নর্থ সাউথের প্রভাবশালী শিক্ষক!!!

এই হলো "আমেরিকা প্রবাসী গবেষক, ব্লগার এবং মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক । ‘ভালবাসা কারে কয়’সহ (শুদ্ধস্বর, ২০১২) সাতটি আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শনভিত্তিক বইয়ের লেখক" অভিজিৎ রায়ের লেখার বড় ৪টি তথ্যগত ভুল । এছাড়াও কলামে তিনি গোয়েন্দা সংস্থা, পত্রিকার রিপোর্টের সুত্র দিয়ে যেসব অভিযোগ করেছেন সেগুলোর বাস্তবতা নিয়ে যথেষ্ঠ তর্ক আছে ।
আমি নিশ্চিত নই অভিজিৎ রায় আমার কমেন্ট পড়বেন কিনা, যদি পড়ে থাকেন, তবে তাকে বলছি - নিজের পদবীতে গবেষক যোগ করেছেন, সে পদবীর সম্মান রক্ষা করতে গেলে কোনো কিছু লেখার আছে ন্যুনতম তথ্যসুত্র চেক করে নিতে হয় । অন্ততঃ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট চেক করলে অনেকগুলো ভুল তিনি এড়াতে পারতেন, লেখার গ্রহণযোগ্যতাও বাড়তো । এ কাজটুকু কেবল কলামিস্টের দায়িত্বশীলতা নয়, সততার মধ্যেও পড়ে । অভিজিৎ রায় তার লেখায় এ দুটোর কোনোটিই দেখাতে পারেননি ।
বরং হাস্যকরভাবে তিনি লেখার ভেতরে নিজের অবিশ্বাসের দর্শন বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, লেখার শেষে নিজের পরিচয়েও লিখেছেন "‘ভালবাসা কারে কয়’সহ (শুদ্ধস্বর, ২০১২) সাতটি আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শনভিত্তিক বইয়ের লেখক" লোকজন শুধু আনিসুল হককেই দোষ দেয় মা উপন্যাসের বিজ্ঞাপনের জন্য, অভিজিৎ রায় আনিসুল হককেও ছাড়িয়ে গেলেন । ছাপা কিংবা অনলাইনের কোনো কলামিস্টকে দেখিনি নিজের নামের পরে অমুক বইয়ের লেখক, ব্র্যাকেটে কোন প্রকাশনীর তাও লিখে দিতে!
অন্ততঃ নিজের ইমেইল এড্রেসটা তো তিনি দিতে পারতেন, তাও দেননি ।

"আমেরিকা প্রবাসী গবেষক, ব্লগার এবং মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক । ‘ভালবাসা কারে কয়’সহ (শুদ্ধস্বর, ২০১২) সাতটি আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শনভিত্তিক বইয়ের লেখক" আগামীতে কলাম লেখায় সঠিক তথ্যের আশ্রয় নেবেন, এমন আশা রাখছি ।
^^^^^^^^^^^^
মাশরুর হাসান খান
বিবিএ, ০৯২ ব্যাচ

তারানা_শব্দ এর ছবি

চলুক

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

মাসরুফ_এক্স_এনএসইউ এর ছবি

খুবই অবাক এবং হতাশ হলাম অভিজিৎ রায়ের এহেন আচরণ দেখে।"অবিশ্বাসের দর্শন" এর সহলেখক তুখোড় যুক্তিবাদী যে অভিজিৎ রায়কে আমি চিনি তার সাথে এই "কীর্তি" একেবারেই যায়না।অভিজিৎ সাহেবের ইমেইল এড্রেস আমার কাছে আছে(উনার বইতেই দেয়া)।উনাদদয়া ক

মাসরুফ_এক্স_এনএসইউ এর ছবি

দয়া করে ইমেইল করুনঃ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।