০।
ঢাকার ঈদ এমনিতেই নীরস তার উপর এরকম বৃষ্টি হলে কেম্নে কি? নীরস ঈদ কে আর নীরস বানাতে আর কি লাগে। তাই সকাল থেকেই খালি ব্লগীং আর ফেসবুক। মজা করার জন্য খোমাখাতায় অনেককেই খোঁচা দিলাম কিন্তু সেইখানেও অবস্থা সুবিধার না। পোলাপাইন সবার আজকে মন অতিরিক্ত রকম ভাল মনে হয়। খোঁচা দেওয়ার পরেও সবাই খালি ভালু ভালু উত্তর দেয়। ছেলেপেলেরা আজকাল সত্যি সত্যি সব বুড়ো হয়ে যাচ্ছে।
০১।
ঘুম থেকেই আজকে উঠলাম ঈদের জামাতের বিশ মিনিট আগে। কোন রকমে গোসলটা সেরে যখন মসজিদে পৌছলাম তখন দেখি নামায প্রায় শুরু হয়ে গেছে। দৌড়ে উপরে তিন তলায় উঠে মানুষ জনকে নানা রকম ঠেলাঠুলা দিয়ে সিড়ির পাশে একটা জায়গা পেলাম কোনমতে। কিন্তু নামায শুরু হতেই দেখি অন্য কেস, মনযোগ রাখাই দায়। সিড়ির পাশ দিয়ে লোকজন ঝুপঝাপ করে উঠছে। আর একেক জনের আবার একেক রকম ক্যারিকেচার। এদিকে সিড়ি তো বৃষ্টিতে ভিজে দারুণ পিচ্ছিল হয়ে আছে। এক বেচারা উঠার সময় এমন জোরে আছাড় খেল কি আর বলব। এদিকে নামায শেষে খুতবার সময় দেখি সামনের সারির এক ভদ্রলোক তার পাঞ্জাবীর দামের ট্যাগ খুলতে ভুলে গেছেন। সবাই দেখি পিছন থেকে তারে দেখায় আর মুচকি মুচকি হাসে। তবে আমার পাশের পিচ্চি ছিল এক কাঠি সরেস। সে তার বাপজান কে সরল মনেই বেশ জোরে জোরেই প্রশ্ন করে- আব্বু সামনের আঙ্কেল পাঞ্জাবীর কাগজটা খুলে নায় কেন? বাবা এইবার ফিসফিস করে উত্তর দেয়- ছিঃ আব্বু, আস্তে বল আঙ্কেল শুনলে রাগ করবে। এইবার ছেলের পালটা প্রশ্ন- আব্বু তাইলে তুমি আমার পাঞ্জাবীর কাগজটা খুললা কেন? এইবার ছেলের বাপজান দেখি একটা রাগী রাগী দৃষ্টি হানল। ছেলে এইবার বাবার কাছে কোন উত্তর না পেয়ে হঠাৎ করে সামনের আঙ্কেল কে জোরে ধাক্কা দিয়েই প্রশ্ন করল- আঙ্কেল তোমার পাঞ্জাবীর কাগজটা ছিড় নাই কেন?
০২।
মানুষের নাম ভুলে যাওয়া খুব খ্রাপ কাজ কিন্তু আজকাল যে কি হইছে খালি মানুষজনের নাম ভুলে যাই। আজকে নামায শেষে নামার সময় দেখি কলেজের এক জুনিয়র। চার বছর পর দেখলাম ব্যাটাকে কিন্তু সমস্যা হল ছেলের নামটা ভুলে গেছি। তাই এড়িয়ে যাবার জন্য দূরের দরজা দিয়ে বের হবার প্রস্তুতি নিলাম। তবে যেখানে বাঘের ভয় সেইখানে সন্ধ্যা হয়। দেখি ছেলে আমাকে দেখে ফেলেছে। হাসি দিয়ে এগিয়ে এসেই বলে- ভাইয়া আছেন কেমন? আমি বলি- এই তো। তুমি কেমন? এইসাথে একটা মিথ্যাও বলি- তুমিতো মিয়া অনেক মোটা হইছ, আমি তো প্রথমে চিনতেই পারি নাই। এদিকে কথা বলতে বলতে খেয়াল রাখি ছেলের নাম উচ্চারণ করা লাগে এমন কোন বাক্য যাতে উচ্চারণ করা না লাগে। নাহ, মাথাটা আজকাল পুরাই ডাল হয়ে গেছে।
০৩।
কলেজে থাকতে আমাদের এক কলেজ মেট ছিল, আফিফ। বাবা মার ছোট সন্তান একমাত্র পুত্র তাই যথারীতি অত্যাধিক আদরে মানুষ। থাকত মিরপুরের মিল্কভিটা রোডে। আঙ্কেল ছেলে কে কখনই একা একা ছাড়তে চাইত না তাই কলেজের সময়টাতে বেচারা তাদের মিল্কভিটা রোডের বাইরে কিছুই চিনত না ভাল করে। এইজন্য টীজ করে ডাকতাম মিল্কভিটা। আজকে নামায শেষে এসে ফোন দিলাম, ব্যাটার অনেকদিন খোঁজ খবর নাই। ফোন ধরতেই বললাম- কিরে মিল্কভিটা কি খবর? নামায পড়ছিস? ছেলে দেখি আস্তে আস্তে উত্তর দেয়- পড়ছি। ভাবলাম আমার মত জ্বরে ধরে নাই তো? প্রশ্ন করতেই বলল- না। আমি বললাম- তাইলে তো ঈদ দারুণ মজায় কাটাচ্ছো? ছেলে এইবার হঠাৎ করেই বলে- আসলে ঈদে ভাল নাই দোস্ত, গত মঙ্গলবার আব্বু মারা গেছেন। পঁচাবো বলে অনেক কিছুই বলবার জন্য প্ল্যান করে ফোন করেছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে সব কেমন জানি হাওয়ায় উবে গেল। ধূর, ঈদের দিন কেন যে মানুষের মনটা খারাপ হয়ে যায়। ভাল থাকিস আফিফ দোস্ত।
০৪।
সচলের লোকজন আজকাল খুব খ্রাপ হয়ে যাচ্ছে, খুব খারাপ। কাজকর্মের বালাই নাই খালি সচলাড্ডা করে বেড়ায়। নীড়পাতা খুললেই খালি আড্ডার খবর। মাশরুমের আড্ডা নাইলে ধানমন্ডির আড্ডা আর ছবির হাটের পাশের আড্ডাতো আছেই। মামুন ভাই আপনি আর কয়েকটা দিন পরে আসলে কি হইত? মানুষজনের মনে ইনসাফ বলিয়া আর কিছু অবশিষ্ট নাই। জ্বরগ্রস্ত মানুষ কে ফেলে রেখে তারা আড্ডা দিয়ে বেড়ায়। দাড়ান সুস্থ হয়ে নিই খালি তারপর মাশরুম ছাড়া বিকেল বেলা আর কিছুই খাব না।
০০।
গতকাল ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ করে হাজির হলাম গুরুর ব্লগস্পটের ব্লগে। সেইখানে এইটা সেইটা দেখতে দেখতে আচমকা একদম উপরের শিরনামে নজর আটকে গেল। তখন থেকেই মাথায় দুইটা শব্দ খালি ঘুরছে- Carefully Careless । মনের ভিতর তাই গতকাল থেকেই প্রশ্ন আসছে- আচ্ছা আমরা কি সবাই কখনও কখনও কমবেশী Carefully Careless হই না ? ইচ্ছে করেই, সযতনে বেখেয়ালে?
মন্তব্য
ঈদের দিনে ব্লগ লিখছে পোলা। ফাজিল।
*
সকাল সকাল আব্বু আম্মুর ডাকাডাকিতে ঘুম থেকে উঠলাম। গোসল করে, জামা কাপড় গায়ে দিতে দিতেই বৃষ্টি। বাসার সবাই এর মধ্যেই বের হয়ে গেলো। আমি যাবো, যাবো করে একটু বিছানায় গা এলাতেই দেখি এগারোটা বেজে গেছে।
*
কলেজের জুনিয়রদের নাম মনে থাকে না। এইটা ধ্রুব সত্য। মনে থাকে সিনিয়রদের নাম।
*
গুরু হালায় রক্করে।
পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা
খালি এইবার না প্রতি ঈদেই একটা লেখি
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ঈদ মোবারক!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
হাহাহা মজা পেলাম
আমারো কারো নাম মনে থাকেনা, সেদিন অফিসের এক পার্টিতে একজনের সাথে পরিচয়। সাধারনত অনেক নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হয় বলে সবার কথা মনে রাখা আরো কঠিন। যাইহোক, কিছুখন পর আমি আমার আরেক কলিগের সাথে গল্প করছি তখন সেই ছেলে এসে আমাকে নালিশ দিচ্ছে "জানো ও আমার নাম ভুলে আমাকে আরেক নামে ডাকলো, আমিও সাথে সাথে হাসি আর বলি তাই নাকি" তারপর আরালে ওই কলিগকে পরে জিজ্ঞেস করি যে ঐ ছেলের নাম যেন কি, কারন আমার নিজেরো তার নাম মনে ছিল না।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
এত্তদিন পর কোথায় থেকে উদয় হইলেন আপু
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
এইটা কি আমগো নিবিড়ের পোস্ট ! পোস্টটারে এমুন বুইড়া বুইড়া লাগতেছে ক্যান ? হেয় কি এরি মধ্যে বুইড়া হইয়া গেলো নাকি !
পোলাপাইনরে ধইরা এইবার মাইর দেওন লাগবো !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কালে কালে তো আর বয়স কম হইল না রণদা
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
পোস্টের মাঝে আসলেই একটা বুইড়া বুইড়া ভাব আসে...নিবিড় ভাইয়ের মন্টা মনে হয় খুব খ্রাপ !!!
নামায কোন মসজিদে পড়লেন ?? পূরবীর সামনেরটায় ?? নাকী পেছনের ট্যারচা মসজিদে ??
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
- পুলাপান মানুষ হৈলো না। নামাজ কালামের মইধ্যেও পূরবীরে টাইনা আনে! জাহেল, বেআলেম, আনপাড়াহ্ সব!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হা হা , বস ভুল ভাবসেন... এই পূরবী কুনো শালীর নাম না- এইটা হইলো একটা ফ্ল্যাটবাড়ির নাম !!!
ধুগোদার মন শালী শালী ... !!!
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
@ধূগোদা
মাইর দেন পোলাপাইন গুলারে, আমি সাথে আছি
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
@সুহান
মিয়া তুমিও আমারে বুইড়া বললা
আর সুরভীর লোকেরা পূরবীর সামনেই যায়
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
খন্ড চিত্র গুলো খারাপ লাগলো না। ভালো বলেছেন, অনেক কিছুই বাস্তব।
ধন্যবাদ।
দলছুট।
==============
বন্ধু হব যদি হাত বাড়াও।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ দলছুট
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ঈদ ছিলো... আমি ঘুম থেকা উঠছি বিকাল তিনটায়। তাই বৃষ্টি মৃস্টি পাই নাই।
সন্ধ্যায় সচলেরা সব আইছিলো। আপনে আসেন্নাই কেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আগের ঈদেওতো ঘুমাইছিলেন আর সন্ধ্যায় যাওয়ার মত অবস্থা ছিল না, জ্বরে কোঁ কোঁ করতাছিলাম তখন
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
-মিল্কভিটার কথা শুইনা মজার কথা মনে পড়লো!
-সন্ধ্যায় বাসায় দাওয়াত ছিলো আড্ডা থেইকা নজু ভাইয়ের বাসায় যাইতে পারলাম না
---------------------
আমার ফ্লিকার
---------------------
আমার ফ্লিকার
ঠিক আছে দেখা হলে মিল্কভিটার গল্পটা শুনে নিব
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
লেখাটা ভাল্লাগল। পড়ে মনে হলো আসলেই বেশ বড়ো হয়ে গেছ।
জ্বরের কী অবস্থা?
সবাই বলে বড় হয়ে গেছি কিন্তু আপনার শ্যালিক তো সেইটা স্বীকার করতে চায় না
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
জ্বর সেরে উঠুক তোমার নিবিড়। অসুখ হলে মনটা নরম থাকে, তাই পোষ্টটাতে একটু বিষাদ মাখানো আছে, ভয় নেই সেরে উঠবে সব একসাথে।
ঈদ মুবারক নিবিড়। দ্রুত ভালো হয়ে ওঠো।
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
হুম আমিও খেয়াল করছি, জ্বর হলে মনটা কেমন জানি নরম থাকে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
নিবিড় এতো ভালো লিখেন কেন?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
লজ্জা দেন কেন গৌতম ভাই?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
নতুন মন্তব্য করুন