২০১৬ খ্রীষ্টাব্দ । ব্রিটিশ মিউজিয়াম।
‘এইটা কী বাবা?’ পাথরের মূর্তিটাকে দেখাল বিলি।
‘মিশরের পুতুল বাবা,’ বিলির বাবা হাসলেন, ‘কত রকমের খেয়াল ছিল ওদের। যা খুশি লিখে রেখেছে দেখ পুতুলের গায়ে।’
‘কী লিখেছে বাবা?’
‘কী আর লিখবে? কেবল সভ্য হয়েছে লোকগুলো! লিখতে শিখেছে এটাই তো বেশি! চল এখানে সময় নষ্ট করে আর লাভ নেই।’
৩০১৯ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ। মিশর।
বাবার তৈরি পাথরের মূর্তিটা দেখছে দশ বছরের এসকাজেল। মূর্তিটা শেষ করতে আর কিছুক্ষণ বাকি। বাবা খুব মনোযোগ দিয়ে মূর্তির গায়ে ক্ষুদে ক্ষুদে অক্ষর বসাচ্ছে।
‘কী লিখছ বাবা?’
‘আমাদের সব কথাই লিখছি রে বাবা। আমাদের যত জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা। আমাদের অর্জনের কথা। ব্যাটারি থেকে ইঞ্জিন সব কথাই এখানে লিখে রাখছি।’
‘কী হবে তাতে?’
‘ভবিষ্যতে যদি আমাদের সভ্যতা ধবংসও হয়ে যায় এসকাজেল, তবু মানুষ এই লেখা থেকে সব খুঁজে নিতে পারবে। আমাদের জ্ঞান একদিন তাদের কাজে লাগবে।’
‘ওরা কি বুঝতে পারবে তোমার লেখা?’
‘বোকা ছেলে! না পারার কী আছে? ভবিষ্যতের ওরা কি আমাদের চেয়ে বোকা মানুষ হবে নাকি?’
নিজের বোকামীতে লজ্জা পেল এসকাজেল। আর কিছু বলল না।
‘রফিক, আপনি কি আমার কথা শুনতে পারছেন?’
‘হ্যাঁ, ফারজানা। আমি আপনাকে শুনতে পারছি।’
‘রফিক, প্রফেসর জ্যামশেদ মওলার সংবাদ সম্মেলনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে আমরা জানতে চাইছি।’
‘আমরা দেখতে পারছি প্রফেসর মওলা তাঁর খোলা মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছেন।’ রফিক সুজন তাঁর মাইক্রোফোনটা বাম হাতে নিলেন। ‘তিনি ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যামের যুগান্তকারী সমাধান ফ্লাইং বেল্ট উদ্ভাবন করেছেন বলে দাবী করেছেন। আমরা এখন তাঁর কথা শুনব।’
‘ঢাকা শহরের এই জ্যাম আমার মনে এক অসীম শূন্যতার সৃস্টি করেছিল।’ প্রফেসর মওলা বলে চলেছেন, ‘শূন্য থেকে আসে মানূষ শূন্যে যায় চলে। কী করা যায়? ভাবতে ভাবতে আমি রকেট সায়েন্সের সফল ব্যবহারের কথা ভাবলাম। এবং-,’ তিনি তার হাতের ধাতব বেল্টটা সামনে তুলে ধরলেন, ‘আমি উদ্ভাবন করলাম জ্যাম’স ফ্লাইং বেল্ট। পরবেন তো উড়বেন।’
‘আপনি কি এর আগে এই বেল্ট পরে উড়েছেন?’ জানতে চাইলেন এক টিভি সাংবাদিক।
‘না, কোন প্রয়োজন দেখি নি। একশ ভাগ নিখুঁত এই বেল্ট আজই প্রথম আমাকে নিয়ে উড়বে। মানব জাতির এই অনন্য অভিজ্ঞতার কথা সারা পৃথিবী একসাথে প্রথমবারের মতো দেখবে। সাইদুল, বেল্ট লাগাও।’
সহকারী সাইদুল ‘জ্বী ছার’ বলে এগিয়ে এসে প্রফেসর মওলার কোমরে বেল্ট বেঁধে দিল। বেল্টের সুইচে চাপ দিতেই অদ্ভুত এক ধরনের শব্দ হতে লাগল বেল্ট ঘিরে। হঠাৎ জোরালো একটা বিস্ফোরণের শব্দ হলো মূল মঞ্চের বাইরে। চারদিক ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে। সবাই তাকিয়ে দেখল প্রফেসর নেই। ‘সাইদুল সাহেব, উনি কোথায়?’ জানতে চাইলেন রফিক।
‘গেছে গা। ওই যে!’ সাইদুল মাথার ওপরে আঙ্গুল তুলল। আকাশে একটা সাদা বিন্দু ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে।
‘উনি নামবেন কখন?’
‘নামবেন…মানে...উনি?’ সাইদুল হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। ‘সারছে কাম! নামনের কোন সুইচ তো ছার বানায় নাই। খালি উড়নের সুইচ বানাইছে!’
রফিক সুজন তাঁর মাইক্রোফোনটা মুখের সামনে নিয়ে এলেন, কিন্তু কী বলবেন ভেবে পেলেন না। অবশেষে বললেন,‘ফারজানা,এই ছিল এখানকার সর্বশেষ অবস্থা।’
মন্তব্য
১ম টা বেশী ভালো লাগলো, শব্দচয়ন আরেকটু ধারালো হতে পারত কিন্তু মূল থীম চমৎকার।
facebook
( ইমো আসছে না কেন?)
যে লেখাগুলো সংলাপপ্রধান সেগুলোকে ঠিক শব্দচয়ন দিয়ে মাপতে চাই না। তবু ভাল লাগা বা না লাগার বিষয়টা আপনাদেরই হাতে।
ভালো লাগলো দুটাই
আপনার how to সিরিজে সায়েন্স ফিকশন লেখার কিছু তরিকা বাতলান দাদা।
প্রথমটা চমৎকার।
পরেরটা ভালো লাগেনি। যে ফ্লাইং বেল্ট বানাতে পারে, সে এইরকম ভুল করতে পারে না।
আপনার আগের লেখাগুলোর লিঙ্কগুলো সচলে মেইল করে দিয়ে অনুরোধ করুন, আপনার লেখা'র তালিকায় সেগুলো যোগ করে দেবেন মডুরা। হয়ত একটু সময় লাগবে। কিন্তু দেবেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অথচ ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোন থেকে আমার দ্বিতীয় গল্পটা বেশি পছন্দ। অনেকটা এ্যাবসার্ড টোন থেকে লেখা।
পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
প্রথমে অভিনন্দন। পরে অন্য কথা
পুতুল গল্পটা চরম।
..................................................................
#Banshibir.
চরম ? কেমনে কী! গল্পটা লিখতে আমাকে একটুও ভাবতে হয় নি!
লেখক আর পাঠকের পছন্দের মধ্যে কিছু গরমিল থাকবে এটাও স্বাভাবিক।
দুটোই চমৎকার।
হাচলত্বে স্বাগতম।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
ভালো, লিখতে থাকুন।
হাচলত্বে অভিনন্দন।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
লিখতে থাকি। ভোর তো হবেই।
ভালো হয়েছে দুটোই।
সাথে অভিনন্দন।
ভালো লাগলো। দুটোই। জারি থাকুক গল্পের সফর।
পাশাপাশি হাচলত্বের অভিনন্দন।
ডাকঘর | ছবিঘর
প্রথম টা ত দারুন ঃ)
দূর ভাই ! হাচল হয়েই প্রফেসরকে উড়িয়ে দিলেন ! আপনি মানুষ তো সুবিধার নয় দেখছি ! হা হা হা !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এমন উড়ন ছুঃ গল্প লিখলাম, আপনারা পছন্দই করলেন না।
আর যেটাকে খেলার 'পুতুল' জ্ঞান করলাম সেটাই ভাল লেগে গেল!
কি জানি ভাই, আপনাদের পছন্দেরও বলিহারী বটে!
চমৎকার। সিরিজ চলুক।
ভালো লাগলো দুটোই
প্রথমটা চরম হইছে, পরেরটা কিছুই বুঝলাম না, চালায়ে যান!
একই ইমো ৩/৪ বার চলে আসছে। মোছার উপায় কী জানা নেই।
আমি খুব দুঃখিত।
খুবই ভালো লাগল। চালিয়ে যান।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
প্রথমেই 'হাচল' হওয়ার জন্য অভিনন্দন।
আপনার দুটো অণু গল্পই ভাল লেগেছে। দ্বিতীয় গল্পটি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। আমাদের রাষ্ট্র-যন্ত্রের অন্তসারশুন্যত, যা মহাশূন্যের মতই অনন্ত ও অসীম, তাকে রূপকাচ্ছলে যেভাবে ছোট্র কলেবরে তুলে ধরলেন, তা সত্যি প্রশংসার দাবী রাখে। আমাদের সমাজে এমন অপরিণামদর্শী কুশলীর কিন্তু অভাব নেই, যারা ভোজবাজি দেখিয়ে বাহবা কুড়ানোর পায়তারা করে নিজেরা তো ফাঁসেই, সঙ্গে জাতিকেও বিপদগ্রস্ত করে।
ভাল থাকবেন।
এতক্ষণে
প্রথমটি অসাধারণ, দ্বিতীয়টিও বেশ!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আমি কাজি মামুনের সাথে শতভাগ সহমত নই। তবে তিনি মূল আইডিয়াটা ধরতে পেরেছেন।
ঠিক আছে, এক্সপেরিমেন্ট চলবে।
প্রথমটা সেইরকম লেগেছে
হাচলত্বের অভিনন্দন আপনাকে (গুড়)
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
থ্যাঙ্কু্ !
পুতুল-টাই বেশি ভালো লেগেছে।
অনেক ভালো।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আপনাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
প্রথমটা চমৎকার লাগল।
নিয়মিত লিখুন!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
দুটোই ভাল। তবে ২য়টা একটু হালকা টাইপ, অনেকটা যেন সফদর আলী। ১মটায় ৫ হলে ২য়টায় ৩।
ওটা সফদর আলীর চাদরেই লিখেছি পাঁঠাদা, ভিতরে কিছু সারবস্তু দিয়েছিলাম যেটা পাত্তাই পেল না।
নিজের লেখা বুঝিয়ে বলতে গেলে পাঠক কিন্তু সেই লেখকের কাছ থেকেই মুখ ফিরিয়ে নেয়। অন্তত পাঠক হিসেবে আমি নিজে তা-ই করি।
একটা যে আপনার ভাল লেগেছে এটাই অনেক। অণু ৪-এ সব পুষিয়ে দেব আশা করি।
প্রথমটা দারুণ। লেখা চলুক।
_________________
[খোমাখাতা]
২ নাম্বারটা বেশি ভালা
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
কেমতে মাতায় আহে এগুলান দাদা!
অসাধারণ!
নতুন মন্তব্য করুন