বাংলা বানানের যে দুরবস্থা প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে সে বিষয়টি অনেকদিন ধরেই আমাকে পীড়িত করে আসছে। ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাভাষার প্রতি ভক্তি, ভালবাসা আর সেই সাথে কোন কোন ক্ষেত্রে আদিখ্যেতা যেভাবে আমদের মাঝে উথলে ওঠে তার সিকিভাগও যদি বছরের বাকী দিনগুলোতে টিকে থাকতো কিংবা নিদেনপক্ষে বাংলাভাষার শব্দগুলো সঠিকভাবে লেখার একটা আগ্রহ বা তাগিদ যদি আমাদের মনেরমাঝে আগাছার মতকরে হলেও কষ্টেসৃষ্টে বেঁচেবর্তে থাকতো তাহলে হয়ত রাস্তাঘাটে অহরহ ভুল বানানের উৎকট নির্লজ্জ প্রকাশ দেখে আপনক্ষোভে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার হাত থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যেত। দুঃখের বিষয় হচ্ছে বানান ভুলের বিষয়টি শিক্ষিত শ্রেনীর মাঝেও যথেষ্ট প্রকট। তারচেয়েও প্রকট হচ্ছে এ ব্যাপারে তাদের কোন সচেতনতাই না থাকা। “ব” এ বিন্দু “র” আর “ড” এ বিন্দু “ড়” এর মাঝের ফারাকটা অনেক মহাশিক্ষিত মানুষই জানেননা। এঁরা অবলিলায় “বাড়ি” কে “বারি”, “গাড়ি” কে “গারি”, “পড়া” কে “পরা” ইত্যাদি বলে যান এবং লিখবার সময়ও সেই ভুল উচ্চারণগুলোকেই আবার লিখে যান। কেউ কেউ আবার এই “র” আর “ড়” এর ভুল কে শুদ্ধ করতে গিয়ে “করুণ” কে “কড়ুণ” করে ফেলে নিজেকেই করুণার পাত্রে পরিণত করেন। বাংলা বানানের ভুলের এই মহড়া কেন জানিনা আমাকে খুব আহত করে।
এভাবে সবাই যদি মনের মাধুরি মিশিয়ে তাদের প্রত্যেকের নিজেদের বানান চালু করে ফেলেন তবে আসল বানান খুঁজে পাওয়াই একসময় দুষ্কর হয়ে পড়বে। এব্যাপারে একটা কিছু বিহিত হওয়া দরকার। “নিষেধ” কে “নিষেদ” বা “নিসেদ” লিখতে যদি কেউ নিষেধ না করে তাহলে সঠিক বানানে লেখার বিষয়টি নিষিদ্ধ না হওয়ার আর কি কারন বাকী থাকে? আমি নিজে যে বাংলা বানানের জাহাজ তা মোটেই নয়, তবে লিখতে গেলে বানানটি সঠিক হল কিনা সে ব্যাপারে একটা তাড়া ঠিকই কাজ করে। আমার মাঝে মাঝে মনেহয় সাইনবোর্ড, ব্যানার এবং এধরনের জিনিস যেগুলো জনসাধারনের অবহিতির উদ্দেশ্যে লেখা হয় তাতে বানান ভুলের জন্য জরিমানার ব্যবস্থা প্রচলন করা উচিত। ব্লগের মডারেটরদের দায়িত্বও আমি মনেকরি এ ক্ষেত্রে উপেক্ষা করার নয়। সফ্টওয়্যার এর মাধ্যমে যদি বাংলা বানান পরীক্ষা করার ও ঠিক করার কোন ব্যবস্থা থাকে সেক্ষেত্রে মডারেটরদের উচিত প্রত্যেকটি লেখাই এর মধ্যে দিয়ে ঠিক করিয়ে নেয়া এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ভুলের আধিক্য কোন বেধে দেয়া সীমা অতিক্রম করলে তা না ছাপানই উচিত।
মন্তব্য
অশুদ্ধ বানানের জন্য লেখা না ছাপানোর মত ব্যাপার হয়তো হবে না কখনই। তবে এই মাসটিকে "শুদ্ধ বাংলা বানান মাস" হিসেবে পালন করা যায়। যে যেখানে বানান ভুল দেখবেন (যত ছোট/বড় হোক না কেন), মন্তব্যে তা ধরিয়ে দেবেন। লেখকগণ নিজ দায়িত্বে লিখবেন তখন।
উন্মুক্ত একটি ব-e করা যায় বাংলা বানানের জন্য। সেখানে বানানের নিয়ম ও প্রচলিত ভুলগুলো তালিকাবদ্ধ করা যায়। সফটওয়্যার তৈরি করা সময়-সাপেক্ষ হলেও এই বিষয়টি নয়।
অনলাইনে কিছু বানান সংশোধক আছে। পূর্বের কোন পোস্টে লিংক ছিল মনে হয়।
সাইনবোর্ডে বানান ভুলের জন্য জরিমানার কথাটায় সম্পূর্ণ একমত। মনে কথাটা বলে দিলেন।
ধন্যবাদ ইশতিয়াক। আপনার "শুদ্ধ বাংলা বানান মাস" আইডিইয়াটি অভিনব। দেখাযাক অন্যরা এ বিষয়ে কি বলেন।
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
ভাই অভি, অন্তত আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দিও, কখনও কোন লেখায় বা মন্তব্যে চোখে পড়লে
আমি বাংলা বানান নিয়ে একটা ব্লগের আইডিয়া শেয়ার করেছিলাম অরূপের সাথে মাসখানেক আগে। সচলায়তনও হয়ত একটা উদোগ নিতে পারে এ বিষয়ে।
বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনা হোক।
.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...
.......................................................................................
Simply joking around...
ঠিকই বলেছেন বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
বানানের ক্ষেত্রে আমার যে সমস্যাটা হয়, তা হলো, অনভ্যস্ততার কারণে অনেক বানান ভুলে যাচ্ছি। এইজন্য অনেক সময় কথা ঘুরিয়ে লিখতে হয়, যা হয়তো মনের ভাব সেইভাবে প্রকাশ করে না।
সচলে আলমগীর ভাই, অরুপ ভাই উনারা বাংলা বানান নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। এরকম ছাড়া ছাড়া পোস্ট ও আসে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে কিছু করা দরকার।
---------------------------------------------------------------------------
If your father is a poor man, it's not your fault ; but If your father-in-Law is a poor man, it's definitely your fault.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
অত প্যাঁচে গিয়ে কাজ নেই। টেকিরা টেকিদের কাজ করুক। শুদ্ধ বানানের একটা লিস্ট ঝুলিয়ে দেওয়া হোক কোথাও। "ফাইন্ড"-এ গিয়ে ইউনিকোডে লিখতে থাকলেই তা সঠিক শব্দে নিয়ে যাবে।
যাঁরা কাজ শুরু করেছেন, তাঁরা শব্দসম্ভার কোথাও দিন। আর নয়তো ১৫-২০ জন মিলে বানান অভিধান থেকে শব্দ টুকে দিয়ে কাজ শুরু করা যায়।
গুগুল ডক্সে মিলে-ঝিলে করা যায় কাজটা। ওখানে বর্ণানুক্রমে সাজানোর সুবিধাও আছে।
একটা সময় ছিল যখন বাজি ধরে লিখতাম। দিস্তার পর দিস্তা লিখলেও কেউ বানান ভুল ধরতে পারতো না। রেনেটের মতই অবস্থা। অনভ্যস্ততায় ভাষার খুঁটিনাটি ভুলে গেছি সব।
উত্তম প্রস্তাব!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
নির্বাকের পোস্টটা জরুরি। তাঁর ক্ষোভটাও সঙ্গত। আমরা যাঁরা লিখি, যা কিছুই লিখি শুদ্ধ করে লিখবার চেষ্টা করা দরকার। তবে এজন্য জরিমানা কোনো সুফল বয়ে আনবে বলে মনে হয় না। সাইনবোর্ড যাঁরা লিখেন তাঁরা অল্পশিক্ষিত মানুষ, সাইনবোর্ড লেখকদের চেয়ে বেশি দায়ী তাঁরা, যাঁরা সাইনবোর্ড লিখান। তাঁদের সচেতন করা গেলে কিছু কাজ হলেও হতে পারে।
আমার অবজারভেশন হলো বাংলা ব্লগগুলোর মধ্যে সচলায়তনের ব্লগারগণই বানান ভুল অপেক্ষাকৃত কম করেন। সে তুলনায় নির্বাকের এই ব্লগটিতে বানান ও অন্যান্য ভুলভাল বেশি চোখে পড়ল। আশা করি তিনি ভুলগুলো সংশোধন করে নেবেন।
..................................................................................
দেশ সমস্যা অনুসারে
ভিন্ন বিধান হতে পারে
লালন বলে তাই জানিলে
পাপ পুণ্যের নাই বালাই।
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
মুজিব ভাই, আপনাকে ধন্যবাদ। আমি বাংলা বানান ও ভাষায় মোটেই অভিজ্ঞ কেউ নই। তবে এব্যাপারে একটা তাড়া থেকেই এটি লেখা। ভুলগুলো অনুগ্রহ করে ধরিয়ে দেবেন কি?
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
আপনার অবগতির জন্য বলি, আমিও ভাষা ও বানানে অভিজ্ঞ কেউ নই। পড়তে ও লিখতে গিয়ে যেটুকু সচেতনতা দরকার হয়, তা-ই হয়ত এক্ষেত্রে একটা শুচিবায়ুগ্রস্ততা তৈরি করে দিয়েছে। এই-ই মাত্র সম্বল আমার!
কাজটা আপনি নিজে করলেই ভালো হতো, তবু বললেন যখন তখন লেখাটার একটা প্রুফ দেখে দেবার চেষ্টা করলাম। সেকেন্ড প্রুফ আরো কিছু পারফেকশন এনে দিতে পারে হয়ত।
{বাংলা বানানের যে দুরবস্থা প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে সে বিষয়টি অনেকদিন ধরেই আমাকে পীড়িত করে আসছে। ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাভাষার প্রতি ভক্তি, ভালোবাসা আর সেই সাথে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আদিখ্যেতা যেভাবে আমাদের মাঝে উথলে ওঠে, তার সিকিভাগও যদি বছরের বাকি দিনগুলোতে টিকে থাকত বা নিদেনপক্ষে বাংলাভাষার শব্দগুলো সঠিকভাবে লেখার একটা আগ্রহ বা তাগিদ যদি আমাদের মনের মাঝে আগাছার মতো করে হলেও কষ্টেসৃষ্টে বেঁচেবর্তে থাকত, তাহলে হয়ত রাস্তাঘাটে অহরহ ভুল বানানের উৎকট নির্লজ্জ প্রকাশ দেখে আপনক্ষোভে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার হাত থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যেত। দুঃখের বিষয় হচ্ছে বানান ভুলের বিষয়টি শিক্ষিত শ্রেণির মাঝেও যথেষ্ট প্রকট। তার চেয়েও প্রকট হচ্ছে এ ব্যাপারে তাদের কোনো সচেতনতাই না থাকা। “ব”-এ বিন্দু “র” আর “ড”-এ বিন্দু “ড়”-এর মাঝের ফারাকটা অনেক মহাশিক্ষিত মানুষই জানেন না। এঁরা অবলীলায় “বাড়ি”কে “বারি”, “গাড়ি”কে “গারি”, “পড়া”কে “পরা” ইত্যাদি বলে যান এবং লিখবার সময়ও সেই ভুল উচ্চারণগুলোকেই আবার লিখে যান। কেউ কেউ আবার এই “র” আর “ড়”-এর ভুলকে শুদ্ধ করতে গিয়ে “করুণ”কে “কড়ুণ” করে ফেলে নিজেকেই করুণার পাত্রে পরিণত করেন। বাংলা বানানের ভুলের এই মহড়া কেন জানি না আমাকে খুব আহত করে।
এভাবে সবাই যদি মনের মাধুরী মিশিয়ে তাদের প্রত্যেকের নিজেদের বানান চালু করে ফেলেন, তবে আসল বানান খুঁজে পাওয়াই একসময় দুষ্কর হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে একটা কিছু বিহিত হওয়া দরকার। “নিষেধ”কে “নিষেদ” বা “নিসেদ” লিখতে যদি কেউ নিষেধ না করে, তাহলে সঠিক বানানে লেখার বিষয়টি নিষিদ্ধ না হওয়ার আর কী কারণ বাকি থাকে? আমি নিজে যে বাংলা বানানের জাহাজ তা মোটেই নয়, তবে লিখতে গেলে বানানটি সঠিক হল কি না, সে ব্যাপারে একটা তাড়া ঠিকই কাজ করে। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় সাইনবোর্ড, ব্যানার এবং এ ধরনের জিনিস যেগুলো জনসাধারণের অবহিতির উদ্দেশ্যে লেখা হয়, তাতে বানান ভুলের জন্য জরিমানার ব্যবস্থা প্রচলন করা উচিত। ব্লগের মডারেটরদের দায়িত্বও আমি মনে করি এক্ষেত্রে উপেক্ষা করার নয়। সফটওয়্যার-এর মাধ্যমে যদি বাংলা বানান পরীক্ষা করার ও ঠিক করার কোনো ব্যবস্থা থাকে, সেক্ষেত্রে মডারেটরদের উচিত প্রত্যেকটি লেখাই এর মধ্য দিয়ে ঠিক করিয়ে নেয়া এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুলের আধিক্য বেঁধে দেয়া সীমা অতিক্রম করলে তা না ছাপানোই উচিত।}
(মানদণ্ড হিসেবে 'বাংলা একাডেমী'র প্রমিত বানানবিধি অনুসরণ করা হয়েছে।)
..................................................................................
দেশ সমস্যা অনুসারে
ভিন্ন বিধান হতে পারে
লালন বলে তাই জানিলে
পাপ পুণ্যের নাই বালাই।
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মুজিব ভাই। আসলে কিছু জিনিস একেবারেই চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল।
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
বানান একটা টেকনলজি
ওটা জানা থাকলেই করা যায় না
ওটার চর্চা করতে হয়
যারা বানান ভুল করেন তারা ওই বানান জানেন তা না এটা কিন্তু সবসময় খাটে না
বানান তৈরি হয় হাতের গতিতে
সংশোধন হয় মগজের নজরদারিতে
চর্চা না থাকলে জানা শুদ্ধ বানানটাও কিন্তু ভুল লেখা হয় হাতের টানে
(কারণ বানান শেখার সময় আমরা মাথা খাটালেও বানান লেখার সময় মাথা খাটাই না। দরকারও পড়ে না)
আমি নিজে অনেক বানান লেখার সময় পুরোনো বানানে লেখি
তারপর এডিট করার সময় ঠিক করি
এটা রেগুলারই হয়
০২
“ব” এ বিন্দু “র” আর “ড” এ বিন্দু “ড়” এর মাঝের ফারাকটা অনেক মহাশিক্ষিত মানুষই জানেননা। এঁরা অবলিলায় “বাড়ি” কে “বারি”, “গাড়ি” কে “গারি”, “পড়া” কে “পরা” ইত্যাদি বলে যান
এই জিনিসটা উচ্চারণের সাথে জড়িত
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটা আঞ্চলিক ভাষায় ড় ধ্বনিটা নেই কিংবা প্রায় নেই
সেই অঞ্চলের কোনো লোক; যার নিয়মিত লিখতে হয় না সে লেখার সময় ড় এর বদলে র লিখতেই পারে
কারণ বানান করার সময শব্দকে আমরা কিন্তু মগজের ভেতরে সিলেবল হিসেবে ভাঙি
এখন আমার মাথায় যদি বাড়ি শব্দটার দুটো সিলেবল হয় বা+রি
তাহলে বা আমি ঠিক লিখব কিন্তু ড়ি টাকে লিখব রি
(ধ্বনি নিয়ে যারা কাজ করেন তারা জাননে। মানুষ যে ধ্বনি উচ্চারণ করতে পারে না। সেই ধ্বনি তার সামনে কেউ উচ্চারণ করলেও সে শুনতে পায় না কিংবা ভুল শোনে। এইজন্যই গানের ওস্তাদরা সুর গলায় তোলার আগে কানে তোলানোর চেষ্টা করেন)
০৩
বানান কিন্তু মানুষ বানান করে করে শেখে না
দেখতে দেখতে শেখে
আমাদের ঝামেলা হলো আমরা এখনও একই বানান চোখের সামনে বত্রিশ রকমে দেখি
টেক্সটবুকে একটা
পত্রিকায় একটা
সরকারি চিঠিতে একটা
আর বহুল প্রচারিত একেকজন লেখকের লেখায় একেক রকম
ফলে নিজে যখন কিছু বানান করতে যাই তখন মাথা আউলা হয়ে যায়
০৪
বানান কোন কোন জায়গায় ভুল হয় আমার মনে হয় সেটা কোনো বড়ো বিষয় না
মূল বিষয়টা হলো একটা কমন স্ট্যান্ডার্ড দাঁড় করানো
যে স্ট্যান্ডার্ডটা পাঠ্যবই থেকে পত্রিকা পর্যন্ত সবাই ফলো করবে
আজব লাগে বাঙালিরা কিন্তু বাংলা বানান থেকে ইংরেজি বানান বেশি জানে। এবং প্রায় ভুল করেই না)
সেই স্ট্যান্ডার্ডে যদি বাড়িকে সবাই বাংলায় বারি লেখে তাহলে বারিই বলতে আমরা ঘরের প্রতিশব্দই বুঝব এবং ওটাই হবে শুদ্ধ বানান
০৫
মাস ঘোষণার পক্ষপাতি আমি না
বিষয়টা হয়ে উঠে না আমাদের বেখেয়ালে
ইংরেজি লেখার সময় আমরা বানানটা শুদ্ধ করে লেখার জন্য যতটুকু সতর্ক থাকি
ঠিক ততটাই বেখেয়াল থাকি বাংলা লেখার ক্ষেত্রে
একটু খেয়াল করলে আর বহু বিকল্প থেকে একটা বানান বেছে নিলেই হলো
০৬
যে বাংলা একাডেমিকে তার নিজের বানান অনুযায়ী একাডেমির বানান হ্রস্বইকার দিয়ে হওয়ার পরেও প্রতিষ্ঠানের নামা দীর্ঘ ইকার থেকে হ্রস্ব ইকার করতে উপদেষ্টা পরিষদে বিল পাশ করাতে হয়
তাদের বইটা ভালো হলেও
তাদের কোনো ক্ষমতা নেই কাউকে বলা যে এটা ফলো করো...
সুতরাং ফলো করতে হবে নিজেকেই
মন্তব্যে দারুণ কিছু কথা বলেছেন। গভীরতা অনেক কথাগুলোর। ভাল লাগলো খুব। ফাঁকিবাজি চলবে না, লিখতে থাকুন।
পুরোপুরি না মনে হয়। বিশেষ করে আমার মত প্রবাসীদের বেলায় তেমনটাই সত্য। বাংলা থেকে অনেক দূরে দেখে ভুলে গেছি অনেক কিছু। দেশে থাকলে পত্রিকা/টেলিভিশন/বই/মুখেরকথা থেকে অনেক কিছু শুধরে নেওয়া যেত। চর্চাও নেই অনেক দিন হয়। সে-কারণে শতভাগ ইচ্ছা ও খেয়াল থাকলেও ভুলটাই লিখে চলেছি।
যেহেতু লেখক/ব্লগার নিজেই চাইছেন ত্রুটিগুলো জেনে নিতে, সেহেতু ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ায় ক্ষতি নেই -- সেই চিন্তা করেই বলেছিলাম আর কি। (এইটা 'কি' হবে, নাকি 'কী'?)
তাছাড়া, আমাদের তো এমনিতেই "শিক্ষানবিস" বলে সুনাম আছে। শিখলামই একটু।
@আনিস মাহমুদ, কিন্তু পুন্ডিসাঁই, আমার যে উড়ুচ্ছারন ভুল হয় খালি?
আমি তো জানতাম, "উরুশ্চারণ"...
কোনটা যে ঠিক...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
উরুশ্চারণ ঠিক।
.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...
.......................................................................................
Simply joking around...
দরকারি পোস্ট। লীলেন ভাই অনেক মূল্যবান কথা বললেন। আমি নিজেও অনেক বানান ভুল করি। অনভ্যাসই এর অন্যতম মূল কারণ। কলেজের পর তো বাংলা নিয়মিত পড়ার সুযোগই হয়নি। এখনও নিয়মিত পড়া বলতে গেলে সচলায়তনের লেখাগুলোই। এখানেও আবার বিভিন্ন পোস্টে একেক রকম বানান দেখে অনেক সময়ই কনফিউজড হয়ে যাই। বাসায় কোন বাংলা অভিধানও নেই। অলসতার কারণে কেনা হচ্ছে না।
আনিস ভাইয়ের প্রস্তাবটা ভালো। দেখা যাক কতদূর কী হয়। অভির আইডিয়াটাও দারুন।
নির্বাক এর উদ্যোগটা চমত্কার। বিশ্লেষণে আমি লীলেন ভাইয়ের সাথে একমত।
বানানকে প্রমিত করার যদি কোন কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকে তবে সেটা বাংলা একাডেমিই হবার কথা। প্রমিতকরণ সময়ের সাথে বদলায়, লীলেন ভাই যেমন বললেন। এ নিয়ে গবেষণা যদি কিছু করার থাকে তাও বাংলা একাডেমিরই করার কথা। গবেষণা কেমন ব্যপক এবং কতটা সর্বজনগ্রাহ্য সেটা নিয়ে অবশ্য অনেক প্রশ্ন। এজন্যই মনে হয় লীলেন ভাইয়ের মত আমিও পুরনো অভ্যাস বশতঃ স্কুলে থাকতে যে বানান শিখেছিলাম, সেটাই ব্যবহার করে ফেলি।
তবে একাডেমির করা রীতি কে দেশময় ছড়িয়ে দেবার দায় বোধহয় প্রথমত লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের, যাঁরা শব্দ নিয়ে খেলা করেন, শব্দ তৈরীও করেন। প্রচার মাধ্যমেরও ভূমিকা কম নয়।
আর ব্লগও যেহেতু সর্বাধুনিক একটা প্রচার মাধ্যম, এরও কিছু দায়িত্ব আছে বৈকি। যদিও প্রুফরিডিং এর মত সময়সাপেক্ষ কাজটা অবাস্তব, অন্ততঃ এক অন্যের ভুল ধরিয়ে দেয়ার ব্যপারটা মন্দ না। এ ব্যপারে বানান-মাসের আইডিয়াটা ভালই মনে হল।
এইবার কন প্রমিত রীতি মতে কয়টা বানান ভুল করলাম?
বশতঃ > বশত
অন্ততঃ > অন্তত
এখন সম্ভবত বিসর্গগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে।
তৈরী > তৈরি
এক অন্যের > একে অন্যের
প্রচার মাধ্যম > প্রচারমাধ্যম (?)
ভুল বলে থাকতে পারি টুকটাক। সেগুলোও ধরিয়ে দিয়েন বাকিরা।
খাইছে!
আচ্ছা হ্রস্ব-ইকার দীর্ঘ-ইকারের নীতিটা একটু ভেঙে বলেন তো? ওইটা নিয়ে আমার প্রায়ই তালগোল হয়। লীলেন ভাইয়ের কথা শুনে একাডেমীকেতো অনেক ঘষে ঘষে একাডেমি করলাম। তার পরেও "তৈরী" টা রয়ে গেল।
'বাংলা একাডেমী' একটি প্রতিষ্ঠানের নাম এবং বানান প্রমিতকরণের আগে থেকে তারা একাডেমী-ই লিখে আসছে বলে এবং নাম-বিশেষ্যর ক্ষেত্রে বানান প্রমিতকরণের নিয়ম প্রযোজ্য নয় বলে একাডেমী এখানে ঈ-কার দিয়েই হবে। কিন্তু সংস্কৃতি-পরিষদ বা প্রতিষ্ঠান বোঝাতে গেলে (উদাহরণ: ভাষা-গবেষণার জন্য একটি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন) অ্যাকাডেমি লিখতে হবে।
.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...
.......................................................................................
Simply joking around...
বাড়ী, তৈরী, ইত্যাদিতে আধুনিক নিয়মে হ্রস্ব-স্বর ব্যবহৃত হয়। বিস্তারিত ভুলে গেছি।
ব্যপার > ব্যাপার
এটা আগেরবার চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল।
তার মানে কি শব্দের শেষ অক্ষরে (syllable) যত -ী ছিল সবই -ি হবে?
মাঝের গুলো তো রেখে দেয়া হয়েছে মনে হয়। জাতীয়, রীতি, কীর্তি এইসব।
নাকি তত্সম -তদ্ভব-বিদেশি (নাকি বিদেশী?) নিয়ে এ ব্যাপারে কিছু পার্থক্য করা হয়?
off-topic: ফোনেটিক কী-বোর্ডে কিছুতেই খণ্ড-ত লিখতে পারিনা। এর সমাধান কি? আরো সমস্যা আছে, এখনো ঙ, ঞ, চন্দ্রবিন্দু এসব খুঁজে পাইনি, মাউস দিয়ে লিখতে হয়। ১৫-বছর কম্পু ঠেইলাও এখনো যে কম্পু-কানাই রইয়া গেলাম তার প্রমাণ
আমার কাছে ১৯৯৫-এ কেনা একটা বানান অভিধান আছে। সেখান থেকে টুকে দেইঃ
"যে-সব তৎসম শব্দে হ্রস্ব ও দীর্ঘ স্বরচিহ্ন উভয়ই সিদ্ধ সে-সব শব্দে কেবল হ্রস্ব স্বর ব্যবহৃত হয়েছে।"
বিদেশি > বিদেশী
তবে জাতিবাচক শব্দে হ্রস্ব স্বর ব্যবহার হবে।
বাঙালী > বাঙালি
ফরাসী > ফরাসি
কী-বোর্ডে > কি-বোর্ডে
এর সমাধান কি? > এর সমাধান কী?
ঙ > Ng
ঞ > NG
ঁ > 'Shift' + '^'
আনন্দবাজার পত্রিকার বানান রীতির বইয়ে দেখেছিলাম...
এখনো > এখনও
বাংলা একাডেমির তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের অধিকার নেই
তারা তাদের বানান রীতি অনুযায়ী একাডেমীকে একাডেমি করতে তদারকি সরকারের পারমিশন চায়
গত বছর সেটা উপদেষ্টাদের সভায় পাশ হয়
এখন বাংলা একাডেমি
০২
বাংলা একাডেমির বানান অভিধানটা এবার তারা বের করেছে কি না কে জানে
যদি না করে তাহলে ওদের বানানের নিয়মটা কম্পোজ করে সচলে দিয়ে দেযার চেষ্টা করব
এটা অনেক সহজ এবং সাবলীল
শুধু সূত্রটা পড়লেই ৯৮% বানান ঠিক করা যাবে
২০০৯ সালে আমার অনেক অনেক লক্ষ্য... তার মধ্যে একটা হইলো লেবানান হওয়া। শুদ্ধ বানানে লিখতে চেষ্টা করা। ইয়া হাবিবি। পারবোই পারবো। নিজে নিজে শিখে নিবো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন