রাগসঙ্গীতে এই মুহূর্তে উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী পণ্ডিত উলহাস কশলকর। অবশ্য যদি বিশুদ্ধ ঘরানাদার গায়কী ও রাগদারীর বিচার করা হয়, তবে ‘অন্যতম’ শব্দটিকে নিছক আনুষ্ঠানিকতা বলেই মনে হয়। পণ্ডিত গজানন বুয়া যোশীর এই বিরল প্রতিভাবান শিষ্য তাঁর গুরুর মতই একই আসরে গোয়ালিয়র, আগ্রা ও জয়পুর ঘরানার গায়কী আলাদা করে এবং বিশুদ্ধ রূপে গাইতে সক্ষম। এ বিচারে তাঁর সমকক্ষ কেউই নেই। তাছাড়া শীলিত কণ্ঠ, বৈচিত্র্যময় বহলাওয়া, বোলবাঁট, তানকারী, লয়কারী ইত্যাদি তাঁর গানের বিশেষ সম্পদ। বন্দিশ নায়কী, বন্দিশ গায়কী, বোল-বিস্তার, বহলাওয়া, বোল-বাঁট, বোলতান, তান, লয়কারী – খেয়াল গানের এই আটটি অপরিহার্য অঙ্গ তাঁর গানে স্বমহিমায় ভাস্বর। এই অসামান্য শিল্পী বাংলাদেশে মোটেও জনপ্রিয় নন। এমনকি সর্বশেষ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ফেস্টিভ্যালে উপস্থাপিকা তাঁর নামটি পর্যন্ত ভুল উচ্চারণ করে এক্কেবারে “কাশালকার” করে দিয়েছিলেন! সম্প্রতি পণ্ডিতজির একটি সাক্ষাৎকার মূল হিন্দী থেকে অনুবাদের চেষ্টা করেছিলাম। এখানে বলে রাখি আই,টি,সি সংগীত রিসার্চ একাডেমির ওয়েবসাইটের আর্কাইভে উলহাসজিকে জয়পুর ঘরানার প্রতিনিধি দেখানো হয়েছে। এই প্রাঞ্জল সাক্ষাৎকারটিতে তিনি নিজের তালিম ও গায়কী সম্পর্কে মূল্যবান ও শিক্ষণীয় আলোচনা করেছেন। অনুবাদে মূলের শব্দঝঙ্কার কিছুটা রাখা হয়েছে শিল্পীর বাচনভঙ্গির একটা রেশ রাখার জন্য। মূল বানানরীতিও অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে, যেমন পালুস্করকে 'পলুস্কর।' তবে এই পরীক্ষা সব ক্ষেত্রে করা বিপজ্জনক কারণ ওস্তাদ আমীর খাঁ সাহেবের মূল বানান আসলে অমীর খান!
প্রশ্নঃ আপনার পারিবারিক পৃষ্ঠভূমি তো সঙ্গীতের- আপনি কি শৈশবেই স্থির করেছিলেন যে, পূর্ণকালীন সঙ্গীতকারই হবেন? আপনার শৈশব কোথায় কেটেছে?
পণ্ডিত উলহাস কশলকরঃ নাগপুর থেকে হায়দ্রাবাদের মাঝে, অন্ধ্র প্রদেশের সীমানার দিকে মহারাষ্ট্রের একটা ছোট কসবা আছে- পন্দরকোড়া। আমি ওখানেই থাকতাম। আমার পিতা নাগেশ দত্তাত্রেয় কশলকর উকিল ছিলেন এবং ওখানকার কাচারিতেই ওকালতি করতেন। তিনি পুনে, সতারা ইত্যাদি স্থানেও ছিলেন এবং গোয়ালিয়র ঘরানার মদঙ্গীবুয়ার কাছে গান শিখেছিলেন। আমাদের কসবায় স্রেফ আমাদের কাছেই তানপুরা, হারমোনিয়াম ইত্যাদি ছিল। এখনও তাই। আমার বড় ভাইও গাইতেন আর আমাদের ঘরে গন্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ের কেন্দ্রও ছিল। সেখানে পরীক্ষা হত। আমি সংগীত-প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পুনে, বরোদা, মুম্বই ইত্যাদি জায়গায় যেতাম এবং পারিতোষিকও পেতাম। আমি বি,এ পন্দরকোড়া থেকে করেছি আর নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সঙ্গীতে এম,এ করেছি। ওখানে গোয়ালিয়র ঘরানার বিজ্ঞ গায়ক বিনায়ক রাও পটবর্ধন এর শিষ্য অনন্ত কেশব কোগজে (রাজাভক্ত কোগজে) ছিলেন। তিনি খেয়াল ছাড়াও ঠুমরীও খুব ভালো গাইতেন, রসুলন বাঈয়ের আন্দাজে। খরগে নিবেশজি বলেও একজন ছিলেন, ওনার কাছেও শেখার সুযোগ হল। আর উনিই বললেন যে, তুমি এই বিষয়ে থাকলে কিছু করতে পারবে। তখনি আমি মানব সংসাধন মন্ত্রণালয়ের একটা বৃত্তি পেলাম আর ঠিক করলাম যে, আমাকে গায়ক হতে হবে, আর সেজন্য কোন গুরুর কাছে গিয়ে শিখতে হবে। কারণ এ বিদ্যা স্কুল-কলেজে শেখার নয়।
প্রশ্নঃ তো আপনি কার কাছে গেলেন?
পণ্ডিত উলহাস কশলকরঃ আমি পণ্ডিত গজানন রাও যোশীর কাছে গেলাম, যাঁর কাছে আমার বড় ভাইও শিখেছিলেন। কিন্তু তাঁর শরীর খারাপ থাকত। আর উনি গান আর ভায়োলিন বাজানো- দুইই ছেড়ে দিয়েছিলেন। উনি বললেন, “আমি এই অবস্থায় তোমার দায়িত্ব নিতে পারব না।”- দেখুন এই হল গুরু-শিষ্য পরম্পরার আদর্শ। শিষ্য গুরুর দায়িত্ব। তো তখন আমি পণ্ডিত রাম মারাঠের কাছে গেলাম। উনিও গোয়ালিয়র আর আগ্রার মত কোন ঘরানার গান জানতেন। তান তো ওঁর খুবই তৈরি ছিল। কিন্তু তিনি খুব ব্যস্ত থাকতেন। তাঁর কাছে আমি দেড় বছর পর্যন্ত শিখেছিলাম আর পরেও তাঁর কাছে যেতাম। কিন্তু দেড় বছর ওনার কাছে শেখার পর আমি আবার গজাননবুয়ার কাছে গেলাম। উনি এবার বললেন, “ঠিক আছে, আমি শেখাবো, কিন্তু মাত্র পনের মিনিট, চলবে?” আমি বললাম, “বিলকুল, চলবে।” ততদিনে আমি ছোট-খাটো প্রোগ্রামও করতাম, গাইতাম, আর তারিফও পেতাম। উনি ইমন দিয়ে শুরু করলেন আর বললেন- “এখন পর্যন্ত যা শিখেছিলে সেসব ভুলে যাও।” আপনি ভাবুন, চার-পাঁচ মাস তো ইমনের তালিমই চলেছিল। ওঁর কাছে শেখার সময় বুঝলাম যে, এই গান কী, ঘরানাদার গায়কী কী। (তালের) এক-একটা মাত্রার হিসেব আর রাগের চলন- এই সব কিছু সামলে এগুনো এবং নিজের কথা বলা। নাহলে কী হয়, রাগও ঠিক আছে, তালও ঠিক আছে, কিন্তু মজা পাওয়া যায় না। কারণ ওতে কোন কথা বলা হচ্ছে না। যেমনঃ আপনি আপনার লেখায় অনেক ভালো ভালো শব্দ ব্যবহার করলেন, কিন্তু যদি কোন অর্থ না হয়, তো সব বেকার।
প্রশ্নঃ ওনার কাছে আপনি গোয়ালিয়রের গায়কী শিখেছেন নাকি অন্য কিছুও? আপনি তো আগ্রা আর জয়পুরে-আত্রৌলিও গান?
পণ্ডিত উলহাস কশলকরঃ গজানন বুয়ার পিতা অনন্ত মনোহর যোশী বালকৃষ্ণবুয়া ইছকরঞ্জীকরের শিষ্য আর বিষ্ণু দিগম্বর পলুস্করের গুরুভাই ছিলেন। কিন্তু গজানন বুয়া গোয়ালিয়রের দ্বিতীয় শৈলী শেখার জন্য রামকৃষ্ণ বুয়া ভাজের কাছেও গেলেন। জয়পুরের গায়কী উনি ভুর্জি খাঁ ( আল্লাদিয়া খাঁর সর্বকনিষ্ঠ পুত্র)-র কাছে আর আগ্রার গায়কী বিলায়েত হুসেন খাঁর কাছে শেখেন। এজন্য আমিও তাঁর কাছে এই সব কিছুই শিখেছি।
প্রশ্নঃ আপনার নিজের গায়কীর আধার কী? আপনি এই তিন শৈলীই কী করে বর্তান?
-পণ্ডিত উলহাস কশলকরঃ আমার গায়কীর আধার তো গোয়ালিয়রই। দেখুন, ঘরানার বুনিয়াদী আদর্শগুলো কায়েম রেখে নিজের কথা নিজের ঢঙে বলতে হয়। এজন্যই একই ঘরানার গায়করা আলাদা আলাদা ঢঙে গান। গোয়ালিয়রেরই ওঙ্কারনাথ ঠাকুর আর কৃষ্ণরাও শঙ্কর পণ্ডিত আর অন্যান্য গায়ক আলাদা আলাদা ঢঙে গাইতেন। আমি যখন গোয়ালিয়রের রাগ গাই তখন গোয়ালিয়রের শৈলীতে। কিন্তু জয়পুরের রাগ যেভাবে পাওয়া যায়, সেগুলোকে সেভাবেই, জয়পুরের শৈলীতেই প্রস্তুত করি। যেমনঃ সাবনী, রইসা কানাড়া, খট বা খোকর। আগ্রার মেঘ, বরবা, গারা কানাড়া ইত্যাদি আগ্রার ঢঙেই। আবার এদের গোয়ালিয়রের নজরে দেখি না। আমার দুই গুরুই- গজানন বুয়া আর রাম মারাঠে- বিলায়ত হুসেন খাঁর শাগির্দ ছিলেন।
প্রশ্নঃ গোয়ালিয়র ঘরানায় আপনার পছন্দের গায়ক কে?
পণ্ডিত উলহাস কশলকরঃ শরৎচন্দ্র আরোলকর আমার খুব পছন্দের। আর কৃষ্ণরাও শঙ্কর পণ্ডিতও। ডি,ভি পলুস্করও খুবই ভালো ছিলেন, খুব অকালে ওনার মৃত্যু হল। কিন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ তো ছিলেন রহমৎ খাঁ।
মূল সাক্ষাৎকারঃ কুলদীপ কুমার
সম্পাদনাঃ মহেশ ঝা
পণ্ডিত উলহাস কশলকরের গাওয়া অলোকসামান্য রাগ ছায়ানটঃ
পণ্ডিত কৃষ্ণরাও শঙ্কর পণ্ডিতের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্রঃ
পণ্ডিত ডি,ভি পালুস্করের মিয়াঁ মলহারঃ
হদ্দু খাঁর অবিশ্বাস্য প্রতিভাধর এবং উন্মাদ পুত্র রহমত খাঁর মালকৌঁসঃ
পণ্ডিত শরৎচন্দ্র আরোলকরের গান ইউটিউবে নেই। আগ্রহী শ্রোতারা আমার সাথে যোগাযোগ করুন। গজানন বুয়া যোশীর গান ও বেহালার অজস্র রেকর্ডিং ইন্টারনেটে আছে। তার মধ্যে এটা হচ্ছে প্রধানঃ
http://www.gajananbuwajoshi.com/home
মন্তব্য
পড়েছি সবটা। কিন্তু এই পোস্ট নিয়ে কিছু বলা আমার কম্মো নয়। আমি যেটা পারি সেটা হলু একটা আব্দার করতে।
ভাইয়া আপনি যে খুব ভালো গান করেন সেটা আমরা জানি(আন্দাজে ছুঁড়লেও আমি নিশ্চিত লক্ষ্য ভেদ করেছে )।
একটা(পারলে কয়েকটা) গান শোনান আমাদের
ধন্যবাদ, কষ্ট করে পড়ার জন্য।
কে কয়? যে কয় তার কথা ঠিক নয়!
গান আর কে শুনতে চায়? তাছাড়া মানুষের সময় কোথায় আজকাল? পেটের দায়ে গান চুলোয় গেছে। সচলে যে ধরণের উচ্চমানের গান নিয়ে পোস্ট হয়, তাতে নিজের কর্কশ গলা শোনানোর হিম্মত আমার নেই! ন্যুনতম কোয়ালিটির রেকর্ডিং এর সরঞ্জামও নেই। মাঝে মাঝে বন্ধুবর্গের বাসায় গান গাওয়া হয়। তবে পেটের দায়ে বকবক করতে হয় বলে গলার দফারফা। আর রেয়াজ তো একদম নেই। শিব্রাম বলেছেন, চপের আগে যেমন পেঁয়াজ তেমনি গানের আগে রেয়াজ!
ভালো থাকুন।
বন্দিশ
নায়কী, বন্দিশ গায়কী, বোল-বিস্তার, বহলাওয়া, বোল-
বাঁট, বোলতান, তান, লয়কারী..... সংক্ষেপে যদি প্রতিটির একটু পরিচয় দিতেন তবে মনে হয় ব্যাপারগুলো সম্পর্কে ধারণাটা পরিষ্কার হত।
প্রশ্নটা করে মন ভরিয়ে দিলেন ভাই! আপনার প্রশ্নেই অনুবাদ করাটা সার্থক হল। এ নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তৃত ডিমনস্ট্রেশন পোস্ট দেবার ইচ্ছে আছে। আপাতত সংক্ষেপে বুঝিয়ে বলছি।
খেয়াল গানের অষ্টাঙ্গ নিম্নরূপঃ
০০/ আলাপ- আদিতে অর্থাৎ গোয়ালিয়রের মূল শৈলীতে খেয়াল গানের শুরুতে আলাপের রেওয়াজ ছিল না। গায়ক আ-কারে সা লাগিয়েই সরাসরি গান তথা বন্দিশ গাওয়া শুরু করতেন। পরবর্তীতে গোয়ালিয়রে গানের শুরুতে সংক্ষিপ্ত আলাপ বা আওচার গাওয়ার প্রথা চালু হয়। আগ্রা ঘরানার গায়করা ধ্রুপদের আমেজ খেয়ালে রাখার জন্য খেয়াল গান শুরুর পূর্বে আধঘণ্টা বা ১ ঘণ্টার দীর্ঘ ধ্রুপদী আলাপের প্রচলন করেন। তবে এই শৈলীতে আজকাল প্রায় কেউই গান না। তবে শুভ্রা গুহ এবং সুচিশ্রী রায় এই ধারার একটা কমনীয় রূপ উপস্থাপন করেন। এজন্য আলাপকে ০০ নাম্বারে স্থান দিলাম।
১। বন্দিশ নায়কী- এটা হচ্ছে খেয়াল গানের কথাগুলো মূল সুর বা রচয়িতার দেয়া সুর ঠিক রেখে গাওয়া। ঠিক যেমনটা -আমরা রবীন্দ্রসংগীত বা নজরুলগীতি মূল সুর অবিকৃত রেখে গাইতে চেষ্টা করি- তেমন। অনেকে ভাবেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত মানেই তার কোন নির্দিষ্ট সুরের কাঠামো নেই- গায়কের খেয়াল-খুশিমত গান -এ ধারণা ঠিক নয়। প্রত্যেকটি ধ্রুপদ-খেয়াল বন্দিশেরই নায়কী অঙ্গ রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে কোনটি প্রামান্য সুর তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। সে তুলনায় ধ্রুপদ গানগুলোর প্রামাণ্য সুর নিয়ে দ্বন্দ্ব কম। সোজা কথায় ভাতখণ্ডেজির বইতে বা অন্যান্য শাস্ত্রীয় সংগীতের বইতে যেসব স্বরলিপি দেয়া থাকে সেগুলোকে অবি্কৃত রেখে মূল গানটা করাই বন্দিশ নায়কী।
২। বন্দিশ গায়কী- মূল গানের সুরটাকে একটু নাড়িয়ে চাড়িয়ে নানা রকম অলঙ্কারের সাহায্যে গাওয়া। ওই ঠিক যেভাবে নজরুলগীতি, রাগাশ্রয়ী বাংলা গান বা গজল নাড়িয়ে-চাড়িয়ে গাওয়া হয় তেমন।
৩। বিস্তার বা বঢ়ত- এই বিস্তার নানাভাবে করা হয়। সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি হল গানের কথা নিয়ে একটার পর একটা সুর নিয়ে কিংবা রাগের মূল ফ্রেজগুলোকে নিয়ে নানারকম প্যাটার্ন বুনে এগিয়ে চলা। হিন্দীতে বলে 'আগে বঢ়না' - তাই বিস্তারের অন্য নাম বঢ়ত বা বড়হত! যেহেতু গানের কথা বা বোল নিয়ে বিস্তার হচ্ছে তাই বোলবিস্তার বলে। এখানে কথার পাশাপাশি নানারকম স্বরবর্ণের আশ্রয় নেয়া হয়। গোয়ালিয়র, আগ্রা ও জয়পুর ঘরানায় শুধু আকারে বিস্তার করারও রেওয়াজ ছিল এবং আছে। তবে এই বোল-বিস্তার খেয়ালের আদি অঙ্গ নয়। এটি ওস্তাদ আবদুল করিম খানের দান। তাঁর পূর্বে খেয়ালে এরকম বিস্তারের রেওয়াজ ছিল না। বলা হয়, বিস্তার খেয়ালে ধ্রুপদের দীর্ঘ আলাপের অভাব কিছুটা পূরণ করে।
৩। বহলাওয়া- এটি বা পরবর্তী সব স্তরই আসলে এক অর্থে বিস্তারের অঙ্গ। যাই হোক, বহলাওয়া বলতে বোঝায় আ-কারের ধীরগতির মীড়যুক্ত তান। এতে মীড়, গমক ইত্যাদি অলঙ্কার যুক্ত হয়। বহলাওয়ার গতি বাড়িয়েই অনায়াসে তানে চলে যাওয়া যায়। ধীরলয়ের গমকযুক্ত তানকে গোয়ালিয়র ঘরানায় মটঠি তানও বলা হয়। আগ্রা ঘরানার খাদিম হুসেন খাঁ সাহেব এক বিরল ইন্টারভিউতে বহলাওয়া বলতে বুঝিয়েছেন "বচ্চা বহলানা" অর্থাৎ বাচ্চাকে প্রবোধ দিয়ে ভোলানো। এক্ষেত্রে উনি গানের কথা নিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে গাওয়ার কথা বলেছেন। তবে তাঁর এই ব্যাখ্যা প্রচলিত নয়। সোজা কথায় বহলাওয়া হল আ-কারের ধীরগতির তানের সাহায্যে বিস্তার।
৫। বোল-বাঁট- এ হচ্ছে গানের কথাগুলোকে তালের বিটগুলোর মধ্যে নানা রকম ভাবে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে গাইবার পদ্ধতি। বোলের বাঁটোয়ারা!
৬। বোলতান- তানের মধ্যে গানের কথা বসিয়ে দেয়াকে বোলতান বলে। এটা আগ্রা ঘরানার দান
৭। তান- ক্ষিপ্রগতির স্বরসঞ্চালন। সাধারণত আ-কারে তান নেয়া হয়। তবে উ-কারেও সামান্য তান নিতে দেখা যায়। কোন কোন ঘরানায় তানের সরগম নিয়ে সরগম তান করা হয়, তবে সেটা আধুনিক যুগের দান, প্রথাগত নয়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বলতে সাধারণ মানুষ তানই বোঝে। দেখবেন- রাগসঙ্গীত বলতে লোকে আ-করে বেসুরো তান লাগায়। তারপর বলে "এই আ-আর মধ্যে লোকে কী পায়?"- সত্যি বলতে আ-কারে সঠিক পয়েন্টে সুর লাগাতে এবং সঠিক সুরে তান করতে জীবন পেরিয়ে যায়- এটা এতটাই সাধনা ও প্রতিভার বিষয়।
৮। লয়কারী- খেয়ালের ক্লাইম্যাক্সে- বা তার একটু আগে নানা রকম লয়ের খেলা দেখানো। বরাবর লয়, দ্বিগুণ লয়, তিন গুণ লয়, চারগুণ এবং আটগুণের লয়কারী দেখানো হয়। দেড়্গুণের লয়কারী সরোদে খুব প্রচলিত। লয়কারী বোলবাঁট, বোলতান কিংবা তানের মাধ্যমে করা হয়। একে লড়ন্ত-লয়কারীও বলে। তবে সেটা অপরিমিত গায়কের গলায় তবলিয়ার সাথে ঝগড়া বা হুক্কা-হুয়া পর্যায়ে চলে যেতে পারে এবং শ্রোতার শারীরিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে!
(৯) আজকাল উলহাস কশলকর বাদে সবাইই সরগম করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশে তো লোকে ক্লাসিক্যাল বলতে সরগমই বোঝেন! তাই সরগমকে খেয়ালের নবম অঙ্গ বলা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, অষ্টাঙ্গ খেয়াল সম্পর্কে অনেক প্রবীণ ও দক্ষ ওস্তাদ ও পণ্ডিতরাও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন। যেমন- খাদিম হুসেন খাঁ সাহেব বা আবদুল রশিদ খাঁ সাহেব- মীড়, গমক, লহক, ডগর, সুঁত, ঘসীট ইত্যাদি অঙ্গের কথা বলেছেন। কিন্তু এগুলো আসলে অঙ্গ নয়- অঙ্গের উপাদান।
অষ্টাঙ্গের ডিমনস্ট্রেশন নিয়ে পণ্ডিত উলহাস কশলকরের ইন্টারভিউ করার ইচ্ছে আমার আছে এবং পণ্ডিতজি এ প্রসঙ্গে আমাকে এস,আর,এ তে গিয়ে দেখা করতে বলেছেন। পণ্ডিতজির মত ভালো মানুষ দেখিনি। কিন্তু আমার পক্ষে সেটা করে ওঠা কঠিন।
আমি রাগসঙ্গীতের সমঝদার নই। তবে মাঝে-মধ্যে শুনেছি বটে। যেমন, রাগ ছায়ানট শুনলাম। কিন্তু এর রসাস্বাদন ঠিক করতে পারিনে।
এক সময়ে আমাদের বাসায় ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলীর কিছু রেকর্ড ছিলো। মুরুব্বীরা শুনতেন। পরে আমিও অনেকদিন শুনেছি বটে।
আপনার লেখাটা পড়লাম। আর ঐযে আয়নামতি ও সুমাদ্রী যে কথাগুলো বলেছেন, আমিও তাই-ই বলতে চাই।
ভাল থাকুন। আনন্দে থাকুন।
রসাস্বাদন সময়সাপেক্ষ।
- ঠিক! কিন্তু এর কারণটা কী?
আমি সামনাসামনি উলহাসজী'র তিনটী প্রোগ্রাম দেখেছি। সেখানে কী শুনেছি সেটা আমার মতো সঙ্গীত-অজ্ঞ মানুষের পক্ষে বলা মানায় না। আমি বরং আমার কেমন লেগেছে সেটা বলি। প্রথমতঃ পণ্ডিতজীর কণ্ঠে এখন বয়সের ছাপ স্পষ্ট বলে মনে হয়েছে। তাঁর যৌবনের কণ্ঠ নিশ্চয়ই এরচেয়ে মনোগ্রাহী ছিল। দ্বিতীয়তঃ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে ব্যাকরণ মেনে চলাটা বাধ্যতামূলিক বটে তবে সেখানে স্বাধীনতাটাও অনেক। সেই স্বাধীনতাটা কে কতটুকু সাফল্যের সাথে কাজে লাগাতে পারলেন সেটা তার ক্রিয়েটিভিটির ওপর নির্ভর করে। কার জনপ্রিয়তা কেমন হবে সেটা এই ক্রিয়েটিভ পার্টটার ওপর অনেকটা নির্ভর করে। পণ্ডিতজীর ক্রিয়েটিভ পার্ট আমাকে আকর্ষণ করেনি। কেন করেনি সেটা ব্যাখ্যা করতে পারবো না। সম্ভবত বাংলাদেশের বেশির ভাগ শ্রোতা আমার রোগে আক্রান্ত, তাই পণ্ডিতজী বাংলাদেশে জনপ্রিয় নন।
অফটপিকঃ
১। একবার একজন বাংলাদেশী শিল্পীর খেয়াল শোনার দুর্ভাগ্য হয়েছিল। মনে হয়েছিল ক্লাসের ভালো শিক্ষার্থীটা গড় গড় করে নির্ভুলভাবে দাঁড়ি-কমাসহ মুখস্থ পাঠ করে গেলো। অনেকেই এমন নির্ভুল ভাবে গাইতে গিয়ে সঙ্গীতটা যে একটা শিল্পমাধ্যম সেটা ভুলে যান।
২। রাতের শেষার্ধ নির্ঘুম কাটানোর পর আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বিরক্ত হয়ে মিউজিক প্লেয়ারে ওস্তাদ আমজাদ আলী খাঁ'র বাজানো 'রাগ ভৈরবী' চালিয়ে দিলাম। শুনে মনে হলো, ঠিক সময়ে ঠিক রাগটা যে কী অপার্থিব জিনিস সেটা যারা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শুনলেন না, তারা কোনদিন বুঝতে পারবেন না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কারণ সম্পর্কে আপনার অনুমান সম্পর্কে দ্বিমত পোষণ করছি। গান ভালো না লাগতে পারে। সেটা ব্যক্তিগত অভিরুচির। উলহাসজির গান ভালো না লাগার পেছনে তাঁর 'ক্রিয়েটিভিটির অভাব'জাতীয় কোন ব্যাপার নেই। আর গলাটা প্রকৃতির দান। সেখানেও ব্যক্তিগত রুচির ওপর কোন জোর নেই। উলহাসজির গলায় খুব একটা বয়সের ছাপ পড়ে নি। এ ধরণের মৃদু গলায় বয়সের ছাপ কম পড়ে। তাছাড়া বহু জনপ্রিয় অগায়কের অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা জানি।
বাংলাদেশে আদৌ কোন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পীই 'জনপ্রিয়' নন। অজয় চক্রবর্তী জনপ্রিয় মূলত তাঁর রাগাশ্রয়ী বাংলা গান ও নজরুলগীতির জন্য। রশিদ খাঁকে এখনো মূলত "আওগে যব তুম" এর গাইয়ে বলে পরিচয় করে দিতে হয়। দেশভাগের পর সত্যিকার অর্থে রাগসংগীতের চর্চা এদেশে খুবই স্তিমিত ও সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। সত্যি বলতে রাগসংগীতের গান ব্যাপারটা হাওয়া হয়ে গিয়ে স্রেফ গলা তৈরির ব্যায়াম হিসেবেই এর সংকীর্ণ চর্চা শুরু হয়। হাতে গোণা কিছু শিল্পী ছাড়া কেউই এর চর্চার উপযুক্ত পরিবেশ পাননি। পাকিস্তানেও প্রায় অনুরূপ অবস্থা দেখে বড়ে গুলাম আলী খাঁ সাহেব ভারতে প্রবাসী হন।
পণ্ডিতজির ক্রিয়েটিভ পার্ট আপনাকে আকর্ষণ করতে পারে নি- কেন বলতে পারব না। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে খেয়ালে কল্পনা বা বিস্তারে পণ্ডিতজি অতুলনীয়। যেটা হতে পারে সেটা হল, আমরা আসলে গোয়ালিয়রের ধরণের বিস্তারে খুব একটা অভ্যস্ত নই। গোয়ালিয়র ঘরানাই খেয়ালের জনয়িত্রী হলেও সত্যি বলতে ওঙ্কারনাথ ঠাকুর, নারায়ণ রাও ব্যাস, বিনায়ক রাও পটবর্ধন এবং ডি,ভি পালুস্কর ছাড়া কেউই জনপ্রিয় হন নি। গোয়ালিয়র ঘরানায় বিস্তারের গুরুত্বও কম। বাংলাদেশ বা উভয় বাংলাতেই খেয়াল গানের শ্রোতা ও শিক্ষার্থীরা প্রায় সবাই মূলত ওস্তাদ আমীর খাঁ সাহেব এবং অংশত ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ সাহেবের অনুসারী। আমীর খাঁ সাহেবের গায়কীর সাথে রশীদ খাঁ, অজয় প্রমুখ প্রায় সব শিল্পীর গানেরই সাদৃশ্য পাওয়া যায়। কিন্তু বিশুদ্ধ ঘরানা-শিল্পী হওয়াতে উলহাসজির গান সত্যি বলতে একেবারেই অন্যরকম। অনভ্যস্ততাই ভালো না লাগার অন্যতম কারণ হতে পারে। প্রথম শ্রবণে জ্ঞান প্রকাশ ঘোষ মহাশয়ের ফৈয়াজ খাঁর গান একদ্মই ভালো লাগে নি। আমার দুই গুরু ফৈয়াজ খাঁ সাহেবের গানের খুব একটা অনুরক্ত নন। আপনি উলহাসজির স্টাইলটা আরো শুনে শুনে বোঝার চেষ্টা করতে পারেন ইচ্ছে হলে।
শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পীর জনপ্রিয়তার অভাবের কারণ বহুবিধ এবং সবসময়ই তা ক্রিয়েটিভিটির অভাব নয়। মল্লিকার্জুন মনসুরের মত যুগন্ধর শিল্পীকে সত্তর বছর বয়সের আগে লোকে চিনত না। জনপ্রিয়তার পেছনে গিমিকও থাকে। যেমন জনপ্রিয়তায় যশরাজজি ছিলেন ভীমসেনজির সমকক্ষ বা আরো বেশি, গানে কিন্তু নয়! ওঙ্কারনাথ ঠাকুর ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন, কিন্তু তিনি ফৈয়াজ খাঁ আবদুল করিম খাঁ সাহেবের মাপের গাইয়ে ছিলেন না। এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কণ্ঠস্বর উদয় ভাওয়ালকরকে ক'জন চেনেন?
আমি উলহাস কশলকরের গান শুনেছিলাম খেয়াল গানের শৈলীর সাথে ভালোভাবে হাতে-কলমে পরিচয়ের পর। আমার খুবই ভালো লেগেছিল। বিশেষত, উলহাসজির গাওয়া দেশ রাগে "ঘন গগন ঘুমড় কি" ভুলতেই পারি না। বিশেষত, তানের ক্ল্যারিটি আর বহলাওয়া তো প্রায় লুপ্ত অন্যদের গায়কীতে। আপনি যে ধরণের মুখস্থবিদ শিল্পীর উদাহরণ দিয়েছেন উলহাস কশলকর কোন বিচারেই সে গোত্রের নন। বেঙ্গলের সর্বশেষ সম্মেলনে রশিদ খাঁ সাহেব অসামান্য মালকোষ গাইলেও উলহাসজির কামোদ আর আড়ানা এতটুকু ম্লান হয়নি স্মৃতিতে। রশিদ খাঁ সাহেব অসাধারণ কণ্ঠশৈলীতে আসর মাত করলেও বারবার খাদের সা ছোঁওয়াতে পরিমিতিবোধের অভাব ছিল, এ যুগে উলহাসজির মত নির্লিপ্ত গায়ক বিরল।
আপনার দ্বিতীয় পয়েন্টের সাথে পুরোপুরি সহমত। এ প্রসঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের উক্তি মনে পড়ে গেল। প্যারাফ্রেজ করছি- ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত যারা উপযুক্ত পরিবেশে শুনেছেন তারা এর মহিমা কখনোই ভুলতে পারবে না। আমজাদ আলী খাঁর লিরিক্যাল স্টাইল আমার বিশেষ প্রিয়। উনিও কিন্তু গোয়ালিয়রের বাজ বাজান।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ট্যাগে অনুবাদ কথাটা বাদ পড়েছে, সেজন্য দুঃখিত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে মনে হয়, সেটুকু ক্লিয়ার করি। উলহাসজী'র ক্রিয়েটিভিটিতে খামতি আছে সেটা আমি বলিনি বা বোঝাতে চাইনি। আমি বলেছি, "পণ্ডিতজীর ক্রিয়েটিভ পার্ট আমাকে আকর্ষণ করেনি। কেন করেনি সেটা ব্যাখ্যা করতে পারবো না"। এখানে সীমাবদ্ধতাটা আমার, পণ্ডিতজীর নয়। অনভ্যস্ততা একটা কারণ হতে পারে, আমি নিশ্চিত না। এবং আমি তাঁকে মুখস্থবিদদের সাথে তুলনাও করিনি। অফটপিকে বলা পয়েন্ট দুটো পণ্ডিতজী সংক্রান্ত নয়, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সংক্রান্ত।
আমি যে তিন বার সামনাসামনি তাঁর অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পেয়েছি তার তিনটাতেই আমার মনে হয়েছে তিনি কিছুটা ক্লান্ত। এটা আমার শোনার ভুল হতে পারে, এটা তাঁর দীর্ঘ ভ্রমণজনিত বা অপেক্ষাজনিত কারণ হতে পারে। খুব কম আয়োজকই বুঝতে পারেন একজন গায়কের পারফর্ম করার আগে তাকে কী রকম অবস্থায় রাখতে হবে। বেশির ভাগ জন ঘর্র ঘর্ শব্দ করা বিশাল পেডেস্ট্যাল ফ্যান লাগানো একটা ঘরে বিপুল পরিমাণ পোলাও-কোর্মা আর সাথে একটা বোতল দিয়ে গায়ককে বসিয়ে দিয়ে মনে করেন বিরাট খাতিরদারি করে ফেললাম। গায়ক এসব বস্তু আদৌ খান কিনা/পান করেন কিনা সেই বিবেচনা তাদের নেই।
'জনপ্রিয় অগায়ক' নিয়ে কথা বললে রাতের পর রাত কাবার হয়ে যাবে। তাই ঐ প্রসঙ্গে কিছু আর না বলি। জনপ্রিয়তার কারণ আর মাপকাঠি নিয়েও একই কথা প্রযোজ্য।
বাংলাদেশে আসলে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতই জনপ্রিয় নয়। এখানে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান প্রায় হয়ই না। যা এক আধটু হয় সেগুলোর খবর পাওয়া যায় না বা ঢোকার সুযোগ পাওয়া যায় না। কয়েক ডজন টেলিভিশন আর রেডিও চ্যানেল থাকলেও সেখানে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কোন অনুষ্ঠান হয় না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমিও তাই মন্তব্যের শুরুতেই ব্যক্তিগত অভিরুচির কথা বলেছি, যেটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল এবং যার ওপর জোর চলে না। তবে এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনি নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে আরো আগ্রহ নিয়ে ওনাকে শুনবেন। যেটা বুঝতে পারছি যে, আপনি ইতোমধ্যে ভালো না লাগার সুন্দর কিছু কারণ খঁজে বার করবার চেষ্টা করছেন, যেটা একজন চিন্তাশীল শ্রোতার লক্ষণ। এমন শ্রোতার উপস্থিতিই গান-বাজনার মানোন্নয়ন করে থাকে।
বাকি দুই প্যারাগ্রাফ নিয়ে যথারীতি সম্পূর্ণ সহমত।
অফটপিকঃ বহুদিন কোঞ্চিপা আসছেন না! কোঞ্চিপা কিন্তু সরগরম!
'বুকমার্ক' করলাম।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন