এ বছরের ফেব্রুয়ারীর শেষ দিকে পুরোনো বন্ধুরা মিলে সেন্ট মার্টিন গেলাম হুট করে। সবারই অফিসের ঝামেলা থাকে। ছুটি পাওয়াটাই মুশকিল। আড্ডায় বসে চা খেতে খেতে আমরা দুনিয়ার অনেক যায়গায় চলে যাই। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সকালে উঠে ঘুম ঘুম চোখে অফিসে দৌড়াই আর বাসায় ফিরি। কিছুই করা হয়না।
যাইহক, কিভাবে কিভাবে যেন সব কাজ-কর্মকে কাঁচকলা দেখিয়ে আমরা কয়েক বন্ধু মিলে এক রাতে নিজেদের আবিষ্কার করলাম ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া টেকনাফ এর বাসের সিটে। পরদিন সকালে টেকনাফ থেকে সি ট্রাকে সোজা সেন্ট মার্টিন।
সেন্ট মার্টিন বা নারিকেল জিঞ্জিরায় আমি ৪ বছর আগেও গিয়েছি। কিন্তু এবার গিয়ে দেখলাম সব হিজিবিজি। এত্ত হোটেল, মানুষ চারপাশে গিজগিজ করতেসে। আমরা কোথাও হোটেল এ সিট পাইনা। অনেক কষ্টে এক হোটেলের ছাদে থাকার ব্যবস্থা হল। অবশ্য তাতে আমাদের সুবিধাই হল। একদম বিচের পাশেই খোলা ছাদে থাকতে মন্দ লাগেনি। সারাদিন আর সারারাত তো বলতে গেলে বিচেই সময় কাটিয়েছি। একদিন ছেঁড়া দ্বীপেও ঘুরে এলাম। সেখানেও একই অবস্থা। মানুষ গিজগিজ করতেসে।ঐখানে আবার কিছু অস্থায়ী দোকানও দেখলাম। মানে পুরাই কক্সবাজারের মত হয়ে যাচ্ছে।
৩ দিন ছিলাম। সবচেয়ে ভালো লাগত রাতে বিচে বসে থাকা। উপরের আকাশটা কেমন যেন অনেক নিচে নেমে আসে। সেই আকাশ ভর্তি তারা। সোজা তাকালে সমুদ্র। তবে সেন্ট মার্টিনের বিচ অনেক শান্ত। রাতে লোকজনও তেমন থাকে না। শুনশান নীরব এক অদ্ভুত পরিবেশ।
যাইহোক, বন্ধুদের সাথে অনেকদিন পর একটা ভালো ট্যুর হল। এবার ছবিতে চলে যাই।
ছবি তুলতে গিয়ে অনেক রকম ঝামেলায় পরলাম। ঢাকা থেকে বয়ে নিয়ে যাওয়া এক বড় ভাইয়ের দেড় কেজি ওজনের ট্রাইপড নিয়ে দেখি ট্রাইপডের এক ঠ্যাং ভাঙ্গা। সন্ধ্যায় ছবি তুলব ট্রাইপড দিয়ে। আমার সামনে আকাশের রঙ বদলে দারুন এক সান সেট হচ্ছে আর আমি তাকায় তাকায় দেখতেসি। ট্রাইপড রইলো পরে। সেই এত্ত সুন্দর আকাশ পেট ভরে দেখলাম।ছবি তুলতে পারতেসিনা, এই দুঃখ ভুলে গেলাম।
পরেরদিন ট্রাইপড গুনা দিয়া ভাঙ্গা ঠ্যাং কোনোমতে কাজ চালানোর মত করলাম। ট্রাইপড আমার জন্য অনেক, কারন আমি লং এক্সপোজার পছন্দ করি। আবার এদিকে আমার কিট লেন্স নষ্ট।যেম্নে পারসি তুলসি। একটা ভালো ট্রাইপড আর লেন্স একদিন হবে, তখন পেট ভইরা লং এক্সপোজার তুলুম।
৪
এক বন্ধুকে বল্লাম...ব্যাটা লাফ দে তো, ছবি তুলি। এইটায় ফোকাস হয়নাই কিন্তু পিছনে আকাশটা এত্ত দারুণ...
আরো বেশ কিছু ছবি আছে।অইগুলা নিয়ে বসা হচ্ছে না। আবারো ব্যস্ততা। সময় করে বসে বাকি ছবি নিয়ে বসবো।আপাতত এই ১১ টা দিলাম।
মন্তব্য
পাশবিক সব ছবি
১,৩,৭,৯,১১ সবচে ভালো লাগলো ...
পোস্টপ্রসেসিং কেমনে করছেন? ফটোশপ?
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
প্রসেসিং সব ফটোশপ আর লাইটরুমে।
টিউটোরিয়াল দেন তাড়াতাড়ি। এই সব ছবি দেখে বৌ ঝাড়ি মারে... বলে আমার জ্ঞান-বুদ্ধি এত কম কেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। :'(
টেক্সচার্ড ছবি নিয়া একটা টিউটোরিয়াল দিসিলাম।
কিন্তু ভালো প্রোসেসিং নিয়া আমি জানি খুব কম। তবুও যেটুকু জানি, আশা করি পরে কিছু লিখব এটা নিয়ে।
যেইটায় ফোকাস হয়নি সেটাই তো ভাল লাগল
ছবিগুলা সুন্দর
ঐটা আমারো পছন্দ। যেইটায় ফোকাস হইসে ঐটায় আমার বন্ধুর পজিশনটা ঠিক নাই। কম্পজিশন আরো ভালো হইতে পারত।
ছবিগুলো খুবই সুন্দর।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
ধন্যবাদ !
দুর্দান্ত
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
দারুণ সব ছবি। অনেকগুলো আগেই দেখা যদিও।
ধন্যবাদ পিপিদা। আপনি তো আমার ছবি আগেই দেখে ফেলেন ফ্লিকারে।
একটা মজার ব্যাপার হয়তো খেয়াল করেছেন, সন্ধ্যার সময় আকাশের রং কিন্তু একেকদিন একেক রকম থাকে। বড়ই বিচিএ এই সময়টা।
...............................
নিসর্গ
আসলেই তাই পিপিদা। একমত
বেশী সুন্দর সব ছবি। মনে হচ্ছে সব যেন 'বানানো'। [কম্পিমেন্ট দিলাম]
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
কম্পলিমেন্টের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
একটা বোকার মত প্রশ্ন করি, যেহেতু ফটোগ্রাফিতে আগ্রহ আছে তাই।
৬ নাম্বারটার বা'দিকে মানুষের ছায়াগুলো কিভাবে এনেছেন ? পরে সম্পাদনা করে?
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
না ভাইয়া, এইটা সম্পাদনা করে আনা হয়নাই। লং এক্সপোজারের মজা।
আমি লং সাটার বা লং এক্সপোজারের ভক্ত। এই ছবিটা সন্ধ্যায় তোলা। ৩০ সেকেন্ড ধরে সাটার পড়েছে। আর এই ৩০ সেকেন্ডে একটা লোক হেঁটে আসছিলো আমার ফ্রেমে। আমি ইচ্ছে করেই লোকটাকে সরে যেতে বলিনাই। ভাব্লাম, একটা মজা হতে পারে। ৩০ সেকেন্ডের লং সাটারে লোক টার চলে যাওয়ায় তার ছায়াটা আসবে। পরে দেখলাম যা ভেবেছিলাম অনেকটা তাই এসেছে।
অসাধারণ! সুন্দর দেখা গেল! আমার বিশেষ করে ১, ২, ৫, ৬, ১১ নম্বর ছবিগুলো বেশী জোশ লেগেছে, খালি চোখেই ..মানে আমি ফটোগ্রাফির কিছুই জানি না।.. তো যাই হোক শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ!
ছেড়া পাতা
ishumia@gmail.com
ধন্যবাদ !
গত ডিসেম্বরে গেছিলাম। সত্যি বলতে কী একদম ভালো লাগে নি। চারপাশে এত বেশি ময়লা, আবর্জনা, মানুষ!
নারিকেল জিঞ্জিরা যদি ফ্লোরিডার কোথাও অবস্থিত হতো তবে নিঃসন্দেহে তা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পর্যটক আকর্ষণী স্থানগুলোর একটি হতো। আফসোস, আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝি না।
কি মাঝি, ডরাইলা?
মাহে আলম খান
অতিরিক্ত পর্যটকের চাপে পরিবেশ বিপন্ন হবার আশঙ্কায়, সেন্ট মার্টিনস দ্বীপে রাতে তাকা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
খবর: http://bit.ly/9BCcVb
হ...
ছবিগুলো খুবই ভালো লেগেছে! কখনও সময় করে আপনার লং এক্সপোজারের নিজস্ব কর্মপদ্ধতি নিয়ে একটা লেখা দিয়েন। পড়ার অপেক্ষায় থাকবো
আচ্ছা, চেষ্টা করব দিতে।
দারুণ!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
চমৎকার।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ছবিগুলো তো বিশাল সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।
লাফ দিয়ে এরকম একটা ছবি তোলার কত শখ ছিল মনে। কেউ তুলে দেয়না
তুমি তুলে দিও
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আইচ্ছা, তোমারটা তুলে দিব।
উরিবাপ্স!! কিসব ছবি!পুরাই টাসকি খাইলাম।
আচ্ছা ছবিগুলাতে কি কোন পোষ্টপ্রসেসিং করা হইছে?
পোষ্টপ্রসেসিং করা হয়েছে, তবে বেশি না। ১১ টার মধ্যে ৬ টাই লং সাটার। লং সাটারেই এফেক্ট চলে এসেছে। বাকিগুলোতে ফটোশপে কালার স্যাচুরেশন আর টুক টাক অন্য অপশন নিয়ে কাজ করেছি।
চরম চরম সব ছবি হইছে।
বস, টিউটোরিয়াল দিয়েন। শিখবার চাই।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
আপনাগো ছবি দেখি। আর আফসোস করি। জীবনে কিছুই শিখলাম না।
--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
আমি আপ্নের গল্প পড়ে আপসোস করি। জীবনে কিছুই করতে পারলাম না।
অসাধারণ...
আমিও শিখতে চাই...
''চৈত্রী''
একটা ক্যামেরা নিয়ে শুরু করে দিন !
সবগুলোই অসম্ভব সুন্দর...কেবল ৭ নং টা কুরে কুরে খায় মন...
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
কি সুন্দর সব ছবি। ছবি গুলা দেখলে মনে হয় জীবনে কিছুই শিখা হইল না
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
তোমার খবর কি?
সেন্টমার্টিন গেছিলাম সেই ২০০২ এ। খুব সুন্দর একটা বিচ।
চমৎকার সব ছবি!
আসলেই সুন্দর বিচ। এখন কথা হচ্ছে, কদ্দিন সুন্দর থাকে...
ভালো পাইলাম
...........................
Every Picture Tells a Story
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লাফ দেওয়া ছবিটায়। যেটায় মানুষ ফোকাস হয়নি সেটাই ভালো লাগছে। লাফ এর পজিশন থেকে শুরু করে পিছনের আকাশ সবই সুন্দর এসেছে। আর ফোকাস না হওয়ার কারণে আসা ব্লারটা মোশন ব্লার হিসেবে ভেবে নেওয়া যায়। পুরো ছবিটাই গতিময় এবং সুন্দর। তাই আমার ভোট প্রথমটাতেই।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমারো !
ছবিগুলো দেখে মন ভরে গেলো......
মূর্তালা রামাত
কমপোজিশন খুব সুন্দর, কিন্তু কিছু মনে করবেন না, এত ডক্টরিং করা ছবিতে প্রাণ থাকে না (অন্তত আমি পাই না)।
ভাই, ছবিগুলোতে তো ডক্টরিং করা হয়নাই। বেশিরভাগ ছবি তোলার সময়েই এমন এসেছে কারন এইগুলা লং সাটার। আর লং সাটারের ডক্টরিংটা ছবি তোলার পরে না, ছবি তোলার সময়টাতে এফেক্ট টা আসে। টুকটাক কিছু কাজ করেছি ছবিতে। সেটা সব ছবিতেই করা লাগে। তবে, যতটুকুই করেছি তাতে আর যাই হোক না কেন, "ডক্টরিং" ব্যাপারটা হয়নাই।
ভাল লেগেছে
আমার নিক : সাধারণ
ভাল লেগেছে
আমার নিক : সাধারণ
দারুণ, ফাটাফাটি সব ছবি!
সেন্ট মার্টিন আবারও যেতে ইচ্ছে করছে। শেষ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পেরিয়ে প্রায় রাত পর্যন্ত বীচ ধরে ধরে পুরো দ্বীপটা চক্কর দেয়ার অভিজ্ঞতাটা যতবারই মনে পড়ে ততবারই যেতে ইচ্ছে করে। তখন এরকম রঙের খেলা দেখেছিলাম, আপাতদৃষ্টে মাইলকে মাইল জনমানবহীণ আঁধার বীচের একটা অংশে একা বসে এই রঙের সুধা আকণ্ঠ পান করেছিলাম।। আপনার ছবিগুলি দেখে মনে পড়ে গেল।
অন্য অনেকে ভীড়ের কথা বললেন, আমি কিন্তু পুরো বীচে অল্প দুয়েকটা স্পটে কিছু ভীড় ছাড়া আর কিছু দেখি নাই।
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন