বি.দ্র.: এটি একটি ব্যক্তিগত রচনা। সচলায়তনের পাঠকের জন্য নয়।
সম্ভবত নব্বইয়ের দশকে বিটিভিতে প্রচারিত আলোচিত-সমালোচিত একটা বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ছে। জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর (যিনি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনুসের ভাই) একটি সাবানের বিজ্ঞাপনে বলছেন "আমি এখন খুলনায়। হুইল সম্পর্কে মিসেস ইসলামের মতামত জানবো"। অন্যদিন একই ব্যক্তি বলছেন "আমি এখন রাজশাহীতে, হুইল সম্পর্কে মিসেস..." এভাবে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে হুইল সাবানের গুনগান বিষয়ক একটি বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছিলেন।
আমার জীবনটাও যাযাবরের মতই হয়ে গেল। আজ এখানে, তো কাল সেখানে। স্থির আর হওয়া হলনা। জীবন চলছে তার আপন গতিতে। সময় বয়ে যাচ্ছে। আমি অলস এক মানুষ উদাসী হয়ে গা এলিয়ে দিয়েছি সেই স্রোতের সাথে।
ওয়াটারলুতে আসার প্রথম অনুভূতি পাই লন্ডন হিথ্রোতে বসে। ঢাকা ছাড়ার আগে মুস্তাককে মেইল দিয়েছিলাম। সে কলেজ লাইফের নামে মাত্র বন্ধু। স্বাভাবিক কারণেই আমাকে তার চেনার কথা নয়। কিন্তু মুস্তাক উত্তর দিল যেন কতদিনের পরিচয়। কিচেনার-ওয়াটারলুর বাংলাদেশীদের হৃদ্যতা আমাকে অবাক করেছিল। চলে যাওয়াতেও খুব একটা খারাপ লাগছেনা। এখানে সবাই হৃদ্য, কিন্তু সবাইকে বন্ধুত্বের মাপকাঠিতে ফেলা এত অল্প সময়ের বিচারে বোধহয় ঠিক নয়। তারপরেও কেউ কেউ থাকেন যাদের পরিচয় পাওয়া যায় নিরানন্দের দিনে। যারা এই অসময়েও আমাদের বিব্রত করেননি, তাদেরকে জানাই শ্রদ্ধা। আর যারা দূরে সরে গিয়েছেন তাদের জন্য রইল শুভকামনা।
কৌতূহল আর বাঙালি-- দুয়ে দুয়ে ভাল মিল খায়। বাঙালি তার কৌতূহলের কিয়দংশ যদি কাজের কাজে লাগাত তাহলে আজ ইমেজ নিয়ে বোধহয় এত সংকটে পড়তে হতনা। আমি কেন ওয়াটারলু ছেড়ে যাচ্ছি তা নিয়ে কারো রাতের ঘুম নষ্ট হয়ে থাকলে সেজন্য আমি দু:খিত। তবে কৌতূহলের পরিধি ক্ষেত্রবিশেষে ক্যালগেরি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে দেখে অবাকই হতে হয়েছে। আহা, আমার আগমনের খবর যদি এমন প্রচার লাভ করত!
সব প্রশ্নের যেমন উত্তর হয়না, তেমনি কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর দেরী করে দিতে হয়। আজ যারা এখানে আছেন, আর যারা ভবিষ্যতে এখানে আসবেন, সবাইকে নিরন্তর শুভেচ্ছা। ভাল থাকলে ভবিষ্যতে দেখা হতে পারে।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন