একুশে ফেব্রুয়ারীকে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" হিসেবে সম্বোধন করায় কি একুশের মূল ইতিহাস ক্রমশ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে?
সমকালে একটা রিপোর্ট পড়তে গিয়ে প্রশ্নটা মাথায় এলো। এ বিষয়ে সচলরা কে কি ভাবছেন? জানিয়ে দিন জরিপে অংশ নিয়ে। বিশদ আলোচনা করুন মন্তব্যের ঘরে। ২৪ঘন্টা পর জরিপ বন্ধ হবে।
৬ | লিখেছেন যূথচারী (তারিখ: শুক্র, ২২/০২/২০০৮ - ১১:২২অপরাহ্ন)
বাহান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং আদিবাসী বিষয়ে কয়েকটি মজা আছে। বিষয়গুলো মর্মান্তিক এবং নিমর্ম হলেও ইতিহাসের পরিহাসের ব্যাপারও বটে।
বাহান্নের ভাষা আন্দোলনের মূলসুর ছিল পাকিস্তানের সকল অংশের সব মানুষের ভাষার অধিকার নিশ্চিত করা। বিষয়টি এমনকি ভাষা আন্দোলনের সময়কার লিফলেট এবং অন্যান্য দাবিনামায় উলি্লখিত ছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের একটি অংশের সংখ্যালঘু মানুষের মুখের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্ব বাংলার মানুষদের ভাষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার দাবি জানানো হয়। সেই দাবিতে কোনো ভাবেই বাংলাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার কথা ছিল না। পূর্ব বাংলার অবাঙালি আদিবাসী জনগণ এর ফলে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশ দিতে পারে। অবশ্য আগে থেকেই স্বাধীকার, সার্বভৌমত্ব এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে তাদের যোগ ছিল। বলা বাহুল্য, অবাঙালি পূর্ব-বাংলাবাসীর সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। এমনকি শেরে বাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারও আদিবাসীদের ভাষার অধিকার বিষয়ে টু শব্দটি করেননি। শেরে বাংলা এবং যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যূত হলে জেনারেল আইয়ুব খানের আমলে আদিবাসীদের অধিকার তো দূরের কথা, আদিবাসীদেরকে তাদের আসল ঠিকানা (!) ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এই কাজে আইয়ুব খানের অন্যতম যুক্তি ছিল- পাকিস্তান মুসলমানের দেশ। আদিবাসীদের অধিকাংশই যদিও নিজস্ব লোকায়ত ধর্মের পালনকারী, তথাপি তাদেরকে হিন্দু বলা এবং লেখা একরকম প্রথা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আইয়ুব খান নিজেই খুব বিপদে পড়ে যান পূর্ব বাংলার আদিবাসী জাতিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মান্দিদের ক্ষেত্রে । ষাটের দশকের মধ্যেই মান্দিদের অধিকাংশ মানুষ খৃস্ট ধর্ম গ্রহণ করে এমনকি আইয়ুব খানের আত্মীয় হবার পর্যায়ে এসে আহলে কিতাবের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে (আহলে কিতাবগণ অর্থাৎ ইহুদি, মুসলমান এবং খ্রিস্টানের মধ্যে বিয়ে বৈধ)। এবং এ অবস্থায় মান্দিদেরকে দেশত্যাগে বাধ্য করে এবং হত্যা করে আইয়ুব খান নিজেই পড়ে যান ইউরোপ এবং আমেরিকার মহা ফাপড়ে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে আদিবাসীরা সক্রিয় এবং জোরালোভাবে অংশগ্রহণ করেছে। কয়েক হাজার আদিবাসী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো, রাষ্ট্রের এক অংশের মানুষকে শোষণ করে অন্য অংশের উন্নয়ন মেনে নেওয়া যায় না, রাষ্ট্রের এক অংশের মানুষ হবে শাসক আরেক অংশ হবে শাসিত এবং শোষিত, এটা মেনে নেওয়া যায় না। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ শ্রেণীহীন, দারিদ্রহীন, সমস্যাহীন সব পাওয়ার দেশে পরিণত হবে এটা কেউই আশা করেনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ আরেক পাকিস্তান হবে তা-ও মেনে নেয়া যায় না। বস্তুতঃ বাংলাদেশের কিছু অংশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ পাকিস্তানেরই ভিন্ন রূপ। বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, এমনটি পাকিস্তানের সংবিধানেও ছিল না। প্রজাতন্ত্রের সকল মানুষকে বাঙালি (পরে বাংলাদেশি) বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এবং বাংলাদেশের নানা ধর্মের প্রায় ৬৩ টি (প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বেশি) আদিবাসী জাতিকে সমরূপ দর্শনে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৬৩ টি আদিবাসী জাতির ধর্মের সংখ্যা ৬৩-র বেশি হতে পারে। চাঙমা বৌদ্ধ, মণিপুরী হিন্দু আর মান্দি খৃস্টান- এই রচনাশৈলী নিঃসন্দেহে মিথ্যা। এক চাঙমা জাতির মধ্যেই আছে অনেকগুলো শাখা। সকলেই বৌদ্ধ ধর্ম পালন করেন বলা যাবে না। মণিপুরী এবং মান্দি জাতি সম্পর্কে একক ধর্মের উল্লেখ করাটা মানবিক পাপ। কারণ বিশ্বে জনপ্রিয় ধর্মগুলোর মধ্যে দু'তিনটি তাদের নানা গোত্র বা শাখার ধর্ম, সেই সঙ্গে নিজেদের ধর্মগুলো তো রয়েছেই। কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ধর্ম ইসলাম।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং আদিবাসী সম্পর্কে মজাটা নিশ্চয়ই এতোক্ষণে পেয়ে গেছেন। পাকিস্তানের সকল অংশের সকল মানুষের ভাষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পাকিস্তানের এক অংশের মানুষকে শোষণ করে পাকিস্তানের অন্য অংশের উন্নয়ন মেনে নেওয়া যায় না, পাকিস্তানের এক অংশের মানুষ হবে শাসক এবং পাকিস্তানের আরেক অংশ হবে শাসিত এবং শোষিত, এটা মেনে নেওয়া যায় না। পাকিস্তানের সকল আদিবাসীকে গণহারে হিন্দু এবং সমরূপী বলা হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। শেষোক্ত এই বাক্যগুলোই ছিল ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সুর। এই বাক্যগুলোতে পাকিস্তানের স্থলে বাংলাদেশ বসিয়ে নিলে আদিবাসী সংশ্লিষ্ট মজাটা পেয়ে যাবেন।
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
১ | লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ২২/০২/২০০৮ - ৬:০২অপরাহ্ন)
একুশের মূল প্রেরণা হচ্ছে রাজনৈতিক ইতিহাসে, ধর্মীয় পরিচয় থেকে জাতিসত্ত্বা জন্মের অভিসন্দর্ভের পূর্ণাঙ্গ অসারতা প্রমাণে। উর্দু কিন্তু বর্তমান পাকিস্তানেরও কোন অঞ্চলের মাতৃভাষা ছিল না। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি ছিল আরবী বর্ণমালা ভিত্তিক মুসলিম জাতীয়তাবাদ। পাঞ্জাবী-সিন্ধি-বালুচরা সেদিন সেই টোপ গিলেলেও বাঙ্গালীকে গেলানো যায়নি। এই না যাওয়ার কারণ হচ্ছে বাঙ্গালীর রাজনৈতিক প্রতিরোধের প্রবণতা, যাকে রাজনৈতিক উন্নয়নের খুব প্রধাণ সূচক বলে ধরা হয়।
একুশের রাজনৈতিক ইতিহাস "শহীদ দিবস" কথাটির মধ্যেই বেঁচে থাকে। "মাতৃভাষা দিবস" শব্দের ব্যবহার সজ্ঞানে হোক অজ্ঞানে হোক রাজনীতিকে আড়াল করে ফেলে। ভাষা আন্দোলন হচ্ছে দ্বিজাতিত্ত্বের মুখে প্রথম শক্তিশালি জুতার বাড়ি। দ্বিজাতিতত্ত্বের ধ্বজাধারীরা এখনো বেঁচে। তাদের রুখতে একুশের রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
মন্তব্য
- যাক আমার মতো ম্যাঙ্গো পিপোল আরও সাতজন আছে দেখছি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
যূথচারীর যৌক্তিক মতামতের সাথে একমত।
জুয়েল বিন জহির
যূথচারীর সাথে সহমত।
বাহান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং আদিবাসী বিষয়ে কয়েকটি মজা আছে। বিষয়গুলো মর্মান্তিক এবং নিমর্ম হলেও ইতিহাসের পরিহাসের ব্যাপারও বটে।
বাহান্নের ভাষা আন্দোলনের মূলসুর ছিল পাকিস্তানের সকল অংশের সব মানুষের ভাষার অধিকার নিশ্চিত করা। বিষয়টি এমনকি ভাষা আন্দোলনের সময়কার লিফলেট এবং অন্যান্য দাবিনামায় উলি্লখিত ছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের একটি অংশের সংখ্যালঘু মানুষের মুখের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্ব বাংলার মানুষদের ভাষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার দাবি জানানো হয়। সেই দাবিতে কোনো ভাবেই বাংলাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার কথা ছিল না। পূর্ব বাংলার অবাঙালি আদিবাসী জনগণ এর ফলে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশ দিতে পারে। অবশ্য আগে থেকেই স্বাধীকার, সার্বভৌমত্ব এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে তাদের যোগ ছিল। বলা বাহুল্য, অবাঙালি পূর্ব-বাংলাবাসীর সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। এমনকি শেরে বাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারও আদিবাসীদের ভাষার অধিকার বিষয়ে টু শব্দটি করেননি। শেরে বাংলা এবং যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যূত হলে জেনারেল আইয়ুব খানের আমলে আদিবাসীদের অধিকার তো দূরের কথা, আদিবাসীদেরকে তাদের আসল ঠিকানা (!) ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এই কাজে আইয়ুব খানের অন্যতম যুক্তি ছিল- পাকিস্তান মুসলমানের দেশ। আদিবাসীদের অধিকাংশই যদিও নিজস্ব লোকায়ত ধর্মের পালনকারী, তথাপি তাদেরকে হিন্দু বলা এবং লেখা একরকম প্রথা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আইয়ুব খান নিজেই খুব বিপদে পড়ে যান পূর্ব বাংলার আদিবাসী জাতিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মান্দিদের ক্ষেত্রে । ষাটের দশকের মধ্যেই মান্দিদের অধিকাংশ মানুষ খৃস্ট ধর্ম গ্রহণ করে এমনকি আইয়ুব খানের আত্মীয় হবার পর্যায়ে এসে আহলে কিতাবের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে (আহলে কিতাবগণ অর্থাৎ ইহুদি, মুসলমান এবং খ্রিস্টানের মধ্যে বিয়ে বৈধ)। এবং এ অবস্থায় মান্দিদেরকে দেশত্যাগে বাধ্য করে এবং হত্যা করে আইয়ুব খান নিজেই পড়ে যান ইউরোপ এবং আমেরিকার মহা ফাপড়ে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে আদিবাসীরা সক্রিয় এবং জোরালোভাবে অংশগ্রহণ করেছে। কয়েক হাজার আদিবাসী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো, রাষ্ট্রের এক অংশের মানুষকে শোষণ করে অন্য অংশের উন্নয়ন মেনে নেওয়া যায় না, রাষ্ট্রের এক অংশের মানুষ হবে শাসক আরেক অংশ হবে শাসিত এবং শোষিত, এটা মেনে নেওয়া যায় না। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ শ্রেণীহীন, দারিদ্রহীন, সমস্যাহীন সব পাওয়ার দেশে পরিণত হবে এটা কেউই আশা করেনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ আরেক পাকিস্তান হবে তা-ও মেনে নেয়া যায় না। বস্তুতঃ বাংলাদেশের কিছু অংশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ পাকিস্তানেরই ভিন্ন রূপ। বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, এমনটি পাকিস্তানের সংবিধানেও ছিল না। প্রজাতন্ত্রের সকল মানুষকে বাঙালি (পরে বাংলাদেশি) বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এবং বাংলাদেশের নানা ধর্মের প্রায় ৬৩ টি (প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বেশি) আদিবাসী জাতিকে সমরূপ দর্শনে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৬৩ টি আদিবাসী জাতির ধর্মের সংখ্যা ৬৩-র বেশি হতে পারে। চাঙমা বৌদ্ধ, মণিপুরী হিন্দু আর মান্দি খৃস্টান- এই রচনাশৈলী নিঃসন্দেহে মিথ্যা। এক চাঙমা জাতির মধ্যেই আছে অনেকগুলো শাখা। সকলেই বৌদ্ধ ধর্ম পালন করেন বলা যাবে না। মণিপুরী এবং মান্দি জাতি সম্পর্কে একক ধর্মের উল্লেখ করাটা মানবিক পাপ। কারণ বিশ্বে জনপ্রিয় ধর্মগুলোর মধ্যে দু'তিনটি তাদের নানা গোত্র বা শাখার ধর্ম, সেই সঙ্গে নিজেদের ধর্মগুলো তো রয়েছেই। কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ধর্ম ইসলাম।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং আদিবাসী সম্পর্কে মজাটা নিশ্চয়ই এতোক্ষণে পেয়ে গেছেন। পাকিস্তানের সকল অংশের সকল মানুষের ভাষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পাকিস্তানের এক অংশের মানুষকে শোষণ করে পাকিস্তানের অন্য অংশের উন্নয়ন মেনে নেওয়া যায় না, পাকিস্তানের এক অংশের মানুষ হবে শাসক এবং পাকিস্তানের আরেক অংশ হবে শাসিত এবং শোষিত, এটা মেনে নেওয়া যায় না। পাকিস্তানের সকল আদিবাসীকে গণহারে হিন্দু এবং সমরূপী বলা হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। শেষোক্ত এই বাক্যগুলোই ছিল ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সুর। এই বাক্যগুলোতে পাকিস্তানের স্থলে বাংলাদেশ বসিয়ে নিলে আদিবাসী সংশ্লিষ্ট মজাটা পেয়ে যাবেন।
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
সত্য কথনের জন্য (বিপ্লব)
=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"
জুবায়ের ভাইয়ের সাথে সহমত
কি মাঝি? ডরাইলা?
বাংলাদেশ সরকারিভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে কি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বলা হয়? নাকি এখনো শহীদ দিবস?
বাংলাদেশের বাইরে পৃথিবীর সর্বত্র আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেই থাকবে এই দিনটি, সেখানে আপত্তি জানানোর কিছু নেই। সেটাই সঙ্গত।
তবে আমার বিশ্বাস, বাঙালির কাছে এই দিন চিরকাল শহীদ দিবস বা রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে এবং থাকবে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
সম্পূর্ণ ভাবে একমত
একুশের মূল প্রেরণা হচ্ছে রাজনৈতিক ইতিহাসে, ধর্মীয় পরিচয় থেকে জাতিসত্ত্বা জন্মের অভিসন্দর্ভের পূর্ণাঙ্গ অসারতা প্রমাণে। উর্দু কিন্তু বর্তমান পাকিস্তানেরও কোন অঞ্চলের মাতৃভাষা ছিল না। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি ছিল আরবী বর্ণমালা ভিত্তিক মুসলিম জাতীয়তাবাদ। পাঞ্জাবী-সিন্ধি-বালুচরা সেদিন সেই টোপ গিলেলেও বাঙ্গালীকে গেলানো যায়নি। এই না যাওয়ার কারণ হচ্ছে বাঙ্গালীর রাজনৈতিক প্রতিরোধের প্রবণতা, যাকে রাজনৈতিক উন্নয়নের খুব প্রধাণ সূচক বলে ধরা হয়।
একুশের রাজনৈতিক ইতিহাস "শহীদ দিবস" কথাটির মধ্যেই বেঁচে থাকে। "মাতৃভাষা দিবস" শব্দের ব্যবহার সজ্ঞানে হোক অজ্ঞানে হোক রাজনীতিকে আড়াল করে ফেলে। ভাষা আন্দোলন হচ্ছে দ্বিজাতিত্ত্বের মুখে প্রথম শক্তিশালি জুতার বাড়ি। দ্বিজাতিতত্ত্বের ধ্বজাধারীরা এখনো বেঁচে। তাদের রুখতে একুশের রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস