মিস হুইলচেয়ার আমেরিকা এবং বাংলাদেশ

সাবরিনা সুলতানা এর ছবি
লিখেছেন সাবরিনা সুলতানা (তারিখ: শনি, ০২/১০/২০১০ - ১০:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাবরিনা সুলতানা
~~~~~~~~~~
~~~~~~~~~~~~~

গতকাল নেটের দুনিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। নিত্য এই কাজ -ই তো করি গতকাল তাই করছিলাম। ঠিক তখুনি এই মেয়েটির রাজ্য জয় করা মিষ্টি হাসির ছবিটি দৃষ্টি আকর্ষণ করলো। লেখাতে ভালো করে চোখ বুলাতে গিয়ে যা বুঝলাম মিস হুইলচেয়ার আমেরিকার মুকুট ছিনিয়ে নিয়ে সে খুব আনন্দিত। সবচে' বেশি যে বিষয়টি আমাকে আকর্ষণ করেছে তা হলো, এলেক্স ম্যাকআর্থার নামের এই মিষ্টি মেয়েটি লিম্ব গ্রিডেল মাস্কুলার ডিস্ট্রফীতে আক্রান্ত। জানলাম এলেক্সের ছোট বোন পার্ক ম্যাকআর্থারও একি রোগে আক্রান্ত। যদিও দুই বোন-ই এই রোগের কাছে হার মানেনি। খাচ্ছে-দাচ্ছে, ঘুরছে-বেড়াচ্ছে, পড়ালেখা করছে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে কিছু একটা করে দেখানোর স্বপ্ন দেখছে। পুরো দস্তুর স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে তারা।

অথচ আমরা দু বোনও এই একি রোগের (Limb Girdle Muscular Dystrophy) সাথে লড়াই করছি প্রতিনিয়ত। নিজের এবং আমার ছোট বোনটির জীবনযুদ্ধের সাথে তুলনা করলে বলা যায় তারা অনেক ভালো আছে। কারণ তাদের জন্ম বাংলাদেশ নামক এই ছোট্ট দেশটিতে হয়নি। তাই আমার কাছে তারা অনেক সৌভাগ্যবান!
নিজেদের শারীরিক অক্ষমতা আমাদের একটুও ভাবায় না। কষ্ট দেয় না। বিশ্বাস করুন আর না করুন সত্যিই আমরা মোটেও ব্যাথিত বা চিন্তিত নই আমাদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে। আমাদের দুঃখ -কষ্ট -ক্ষোভ সব আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে। আমার জীবনের অনেকগুলো বছর পেছনে ফেলে এসেছি আমি। পুরো জীবনটা অন্ধকার একটি ঘরে কাটিয়েছি কিম্বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারিনি এই নিয়েও আমার মনে কোন ক্ষোভ নেই। কিন্তু আমার ছোট্ট বোনটি!? তার ভবিষৎ চিন্তা আমাকে অস্থির করে প্রতিনিয়ত।

আপনারা কি জানেন, আমাদের দেশে এখনো মাত্র শতকরা ৪ জন প্রতিবন্ধি শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়? বাংলাদেশে পনেরো কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী। গড়ে আড়াই লক্ষ প্রতিবন্ধী প্রতিবৎসর বাড়ছে এবং তারা আমার মতোই চারদেয়ালের আবদ্ধ ঘরে বেড়ে উঠছে। তাদের নেই আর দশজন সুস্থ্য ছেলেমেয়ের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গড়ার স্বাভাবিক পরিবেশ। অথচ বাইরের দেশগুলোতে দেখুন, প্রতিবন্ধীরা পরিবার থেকে অনেক সাপোর্ট পায়। সেখানকার পরিবেশটাই এমন সুস্থ্য সুন্দরভাবে বাঁচার জন্যে কিংবা প্রতিবন্ধী শিশুদের ভবিষ্যৎ মজবুত করার লক্ষ্যে প্রতিবন্ধীদের পরিবার এবং সেখানকার মানুষেরা অনেক বেশি সচেতন।

আমাদেরো সচেতন হবে। সমাজে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকেই সচেষ্ট হতে হবে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলতে হবে এমন একটি বাংলাদেশ যাতে করে আমাদের ছোট্ট ভাই বোনেরা চার দেওয়ালের বাইরে বেড়িয়ে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।


মন্তব্য

তার-ছেড়া-কাউয়া এর ছবি

সাহসের সাথে এগিয়ে যান। আপনাকে স্যেলুট।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
ভালো থাকুন নিরন্তর।

সাবরিনা সুলতানা

সাইফ শহীদ এর ছবি

সাবরিনা,

আমাদের দুঃখ-কষ্ট-ক্ষোভ সব আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে।
তোমার ক্ষোভ আমি বুঝতে পারি এবং আমার পূর্ণ সহমর্মিতা রয়েছে এই বিষয়ে। ক্রমে ক্রমে সমাজের কিছুটা সচেতনতা হয়তো বাড়ছে এই ব্যাপারে। তবে এখনো অনেক অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। আমার আন্তরিক প্রার্থনা রইবে এই যুদ্ধে যেন তোমরা বিজয়ী হও।

auto

আমার ছেলে, সাঈদ, যে এখনও হুইল-চেয়ার ব্যবহার করে এবং নিজের থেকে কথা বলে তার ইচ্ছা-অনিচ্ছার কথা বলতে পারে না - সে তখন ঢাকার মিরপুরের তৈরী নতুন প্রতিবন্ধী কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেছে। আমরা বেশ কষ্ট করে তাকে 'টয়লেট ট্রেনিং' দিয়েছিলাম প্রতি এক-দুই ঘন্টা পর পর বাথরুমে নিয়ে গিয়ে। কেন্দ্রে যদিও আয়া ছিল ক্লাশে, কিন্তু দেখতাম প্রতিদিন ভিজা কাপড়ে ফিরছে সে। একদিন আমি নিজে যেয়ে প্রিন্সিপাল মহিলার সাথে দেখা করে অনুরোধ জানালাম যদি তিনি এই ব্যাপারটার দিকে খেয়াল করেন। তিনি খানিকটা রেগেই বললেন - "আমি কি কাজের বুয়া, যে এই সব জিনিস করবো"।

আমার দু'ই বোন তখন মহিলা ও সমাজ কল্যান বিভাগে কর্মরত। এক জন শিশু একাডেমীর পরিচালক ছিলেন। তার সাহায্যে মন্ত্রণালয়ের সচীবের সাথে দেখা করলাম এবং আমার এই সামান্য অনুরোধ জানালাম - কি করে আমার ছেলেকে দেওয়া এই ট্রেনিংটা যেন আমরা রক্ষা করতে পারি। তিনি আগ্রহ ভরে আমার কথা শুনলেন এবং সহানুভিতি দেখালেন। কথা দিলেন ফাইলে নোট ইনিশিয়েট করবেন। কোন কাজ হলো না - ছেলে তেমনি ভিজে ভিজে বাড়ীতে ফিরতে লাগলো।

তখনকার মন্ত্রীও ছিল আমার বন্ধু মানুষ। অন্য এক বন্ধুর মাধ্যমে কথাটা উঠালাম তার কানে। পরে সেই বন্ধু আমাকে জানালো ঐ মহিলার সাথে মন্ত্রীর একটা অবৈধ্য সম্পর্ক আছে - যার ফলে অনেক কিছু করে পার পেয়ে যান মহিলা। তবে সুযোগ মত আমার কথাটা তার কাছে পেশ করবে সে।

তোমাদের এই যুদ্ধ যে কতটা কঠিন - তা আমি অনুধাবন করতে পারি। আমি পরাজিত হয়ে হার মেনে দেশ ছেড়ে চলে এসেছি। আশা রাখবো তোমরা কেঊ না কেঊ এ যুদ্ধে জয় লাভ করবে। জানিনা আমার জীবদ্দশাতে সে দিন দেখে যেতে পারবো কিনা।

সাইফ শহীদ

সাইফ শহীদ

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাইয়া, খারাপ লাগলো খুব আপনার মন্তব্যটা পড়ে। আপনি দেশ ছেড়েছেন হয়তো আপনার ছেলেকে সুস্থ্য সুন্দর একটা জীবন দেবার জন্যে। ইদানিং আমার বাবা ভাইদের বলছি আমি খুব করে, তারা যেনো বাইরের দেশে সেটল করার চিন্তা করে অন্তত আমার বোনটাকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত তো করতে হবে। আমার ছোট বোনটাকে নিয়ে তারাও হয়তো পালাবে। কিন্তু সবাই তো দেশ ছেড়ে পালাবার সুযোগ পায় না ভাইয়া। আমি নিজেও চেষ্টা করে যাচ্ছি সমাজে সচেতনতা বাড়াতে। কিন্তু ঘরে বসে কয়েকটা ব্লগে লিখে আমি কয়জনকে সচেতন করে তুলতে পারবো না জানি না। তবে চেষ্টা করে যাবো যতদিন পারি।

সাবরিনা সুলতানা

তাসনীম এর ছবি

আপনার এই হার না মানা স্পিরিটটাকে সর্বোচ্চ সম্মান জানাই।

আপনার আগের লেখাটার কথাও মনে আছে। বাংলাদেশে এই সংগ্রাম কতটা কঠিন সেটা বুঝতে পারি। আপনি নিজের পরিসীমার মধ্যে যেই চেষ্টাটা চালাচ্ছেন সেটা যেন সফল হয়, এই আশাটা রইল।

আমাদেরো সচেতন হবে। সমাজে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকেই সচেষ্ট হতে হবে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলতে হবে এমন একটি বাংলাদেশ যাতে করে আমাদের ছোট্ট ভাই বোনেরা চার দেওয়ালের বাইরে বেড়িয়ে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।

আমাদের সবার লক্ষ্যই যেন একই হয়।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে মনে রাখার জন্যে।
আপনাকেও মনে আছে আমার হাসি

ভালো থাকুন সারাবেলা।
শুভকামনা নিরন্তর।

সাবরিনা সুলতানা

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

সাবরীনা, আপনার লেখাটি পড়ছি আর ভাবছি …আমাদের দেশের কত শত শিশু কিশোর সুযোগের অভাবে শুধু নয়…প্রতিদিনকার প্রতিকূলতায় হারিয়ে যায় । মাঝে মাঝে এত মন খারাপ হয়ে যায় ভীষন …খুব ইচ্ছে করে প্রমিথিউসের মত কোথাও থেকে আলো চুরি করে এনে যদি সব অন্ধকার তাড়িয়ে দিতে পারতাম…

আপনার ব্যক্তিগত সংগ্রামকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম ।

……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকে সচেতন করে তুলুন।

সাবরিনা সুলতানা

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদেরো সচেতন হবে। সমাজে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকেই সচেষ্ট হতে হবে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলতে হবে এমন একটি বাংলাদেশ যাতে করে আমাদের ছোট্ট ভাই বোনেরা চার দেওয়ালের বাইরে বেড়িয়ে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।
সম্পূর্ণ একমত।

হয়তো একটু বেশীমাত্রায় হলেও আমি আশাবাদী যে আগামী দু থেকে তিন দশকের মধ্যেই শারিরীক প্রতিবন্ধী বলে শব্দটা বাতিল হয়ে যাবে। আমাদের মত দেশে অর্থনৈতিক কারণে আরও কিছুদিন বেশী সময় লাগবে কিন্তু এটা হবেই।



তারাপ কোয়াস

অতিথি লেখক এর ছবি

সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আমাদের দেশেও একটা আমূল পরিবর্তন আসবে আশা করছি।

ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকে সচেতন করে তুলুন।

সাবরিনা সুলতানা

কৌস্তুভ এর ছবি

আমেরিকায় প্রথম এসে দেখেছিলাম, ফুটপাথের ধারগুলি যেখানে রাস্তার জেব্রা ক্রসিংয়ের সাথে মিশেছে সেখানগুলো ঢালু করে রাস্তার সাথে মিলিয়ে দেওয়া। পরে জানতে পারি, ওগুলো হুইলচেয়ার, বাচ্চাদের প্যারাম্বুলেটর বা জিনিসপত্রের ঠেলাগাড়ি (কার্ট) চলাচল করতে সুবিধা হবে বলে বানানো।

আবার আমাদের 'পরিবেশ ও স্বাস্থ্য' ক্লাসে শুনলাম, শুধু ঢালু করে বানানো হলেই হবে না, সেগুলোয় অল্প খাঁজ কাটা থাকতে হবে, নইলে বাচ্চার গাড়ি বা কার্ট হঠাৎ গড়িয়ে রাস্তায় চলে যেতে পারে, অ্যাক্সিডেন্ট হবার ভয়। তাই ফুটপাথগুলিতে ওই বসানোর কাজ চলছে।

এখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য সবরকম সুযোগসুবিধা রাখার ব্যবস্থা যাতে করা হয় সেজন্য আইন আছে। তাই এয়ারপোর্ট-ট্রেনস্টেশন তো বটেই এমন কি প্রতিটি বড় মেট্রো স্টেশনেও লিফট। বাসে ওঠার মুখে তাদের জন্য নেমে আসতে পারে এমন পাটাতন থাকে। সব বড় বাড়িতেই 'হুইলচেয়ার অ্যাকসেস' বলে ঢালু র‍্যাম্প করা থাকে, যাতে তেমন কাউকে ঢুকতে হলে সিঁড়ির ঝামেলা না থাকে। সেটার সুবিধা পা ভেঙে ক্রাচ নিয়ে চলাফেরার সময় আমিও ভোগ করেছি। এই ধরণের পরিকাঠামো রাখতে তাদের অনেক খরচ, কিন্তু সেটা নাগরিক পরিষেবার অঙ্গ হিসাবেই তারা রাখে।

আমাদের শহরে বাস কেন মেট্রোরেলেও এরকম কোনো পরিকাঠামো নেই। আর রাস্তার অবস্থাই যেমনতেমন, তার আবার ফুটপাথ আর তার ঢাল।

আমাদের ব্যাচে একটি মেয়ে ছিল, হাসিখুশি মিষ্টি মেয়ে, দেখলে বোঝার উপায় নেই তার কোনো শারীরিক সমস্যা আছে। তাই সে হুইলচেয়ারে চলে কেন জানতে চেয়ে শুনলাম, তার মাইটোকণ্ড্রিয়াল ডিজিজ আছে, শরীরের পেশীগুলিতে সেজন্য জোর নেই। তার বর যে সেও খুব ভাল ছেলে। সমবেদনা দেখানো সহজ কিন্তু এমন কাউকে বিয়ে করে তার সমস্যা ভাগ করে নেওয়া আরো সাহসের কাজ।
মেয়েটি আমাকে বলেছিল, সে ভারতে যেতে চায়, টেরিজার শহর কলকাতা দেখতে চায়। আমি দুঃখ করে বলেছিলাম, কিন্তু ওখানে তো হুইলচেয়ারের জন্য পরিকাঠামো তেমন নেই। সে বললে, আমি যে শুনেছি, ওখানকার লোকজন খুব আন্তরিক, আমাকে প্রচুর সাহায্য করবে তারা, দরকারে কোলে করে পার করে দেবে। আমি আর কিছু বললাম না, কিন্তু কাউকে চলাফেরায় কিছু সাহায্য করে তার প্রাপ্য পরিকাঠামো থেকে বঞ্চিত রাখাটা কি যায়, তাই ভাবছিলাম। আর অমন আন্তরিকতা আসলেই কজনের আছে, সেটাও প্রশ্ন।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভুক্তিভোগী মাত্রই নিজের সমস্যা বোঝে। অন্য কেউ বুঝতে চায় না। আমাদের দেশের মানুষ হয় খুব বেশি মাত্রায় আবেগপ্রবণ নতুবা স্বার্থপর। কারুর দুঃখ কষ্ট দেখলেই আবেগী কথা বলবে, শান্তনা দেবে নতুবা এড়িয়ে যাবে। একের প্রতি অপরের জন্যে আন্তরিকতার ছিটে ফোটাও কারুর নেই। যাওবা আছে লোক দেখানো। এই কারণেই হয়তো এই জাতির উন্নতি নেই।

মানুষ বোঝে না, আমরা সহানুভূতি চাই না। চাই সমমর্মিতা। করুণা চাই না। চাই সামান্য একটু সহযোগিতা।

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্যে।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।

সাবরিনা সুলতানা

নীলকান্ত এর ছবি

সমবেদনা দেখানো সহজ কিন্তু এমন কাউকে বিয়ে করে তার সমস্যা ভাগ করে নেওয়া আরো সাহসের কাজ।

সম্পূর্ণরূপে একমত।


অলস সময়

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

হারলে চলবে না। জিততেই হবে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকে সচেতন করে তুলুন।

সাবরিনা সুলতানা

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌এই দেশ সুস্থ মানুষদেরই সুস্থ দেহে বসবাস করার উপযোগী থাকছে না। প্রতিবন্ধী হওয়া তো রীতিমতো অভিশাপ। একমাত্র ভুক্তভোগীই বোঝেন। আপনার দৃঢ় মনোবলকে বরাবরের মতোই স্যালুট।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভালো থাকুন।

সাবরিনা সুলতানা

রেজওয়ান এর ছবি

আমাদের দেশে প্রতিবন্ধীদের করুণার দৃষ্টিতে দেখা হয় অথবা ভাবা হয় যে তারা সমাজের বোঝা। অথচ কাঠামোগত সহায়তা (যেমন বাসে/ট্রেনে হুইলচেয়ার নিয়ে ঢোকার ও স্থানের সুযোগ বা বিশেষ টয়লেট সুবিধা) পেলে তারাও সহজে সমাজের প্রতিটি কাজে অংশ নিতে পারে। এই নিয়ে ভাবনা আমাদের দেশে খুবই কম। সচেতনতা দরকার এবং দরকার প্রতিবন্ধীদের জন্যে কাঠামো তৈরি করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসা।

আপনার সংগ্রাম সফল হোক। ভাল থাকবেন।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্যে।
মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা গেলেই হয়তো দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে একদিন। আমাদের দেশের কিছু বড় বড় প্রতিষ্ঠান যদি মানুষকে সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে আসতো ......তবে প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম মানুষই এগিয়ে আসে।

সাবরিনা সুলতানা

মনামী এর ছবি

আপনি কেবল নিজেই লড়াই করছেন না সবাইকে সচেতনও করছেন নিজের লেখার মাধ্যমে - সত্যিই আপনাকে শ্রদ্ধা জানানোর ভাষা নাই আমার। আপনি লিখে যান, বলে যান - দমে যাবেন না প্লিজ। পরিবর্তন আসবেই।

অতিথি লেখক এর ছবি

যতদিন সাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্যে হাসি
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকে সচেতন করে তুলুন।
পালটে দিন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি।

সাবরিনা সুলতানা

নীলকান্ত এর ছবি

একজন সুস্থ সচেতন মানুষ ব্যতিক্রম কিছু করলেই তা আমাদের সমা না।জে যেভাবে গৃহীত হয়, এরপর তারা করবে প্রতিবন্ধীদের জন্য ?
অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করছিলো, কিন্তু বলে লাভ নেই যতদিন না নিজে পরিবর্তনের জন্য কিছু করছি।
কতই বা খরচ পড়বে রাস্তাঘাট তৈরির সময়?এজন্য খরচের কোন ব্যাপারই নেই, বরং দরকার সচেতনতার।
সিগন্যালের বাতি চেঞ্জ করা, রাস্তাকে ভাগ করার মত অকাজে টাকা খরচ হবে কিন্তু ভাল একটা কাজে টাকা বা সময় কোনটাই ব্যয় হয় না।
\তবু হেরে গেলে চলবে না, টিকে থাকতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে।
স্যালুট জানাই আপনাকে, আপনার মনোবলকে। বোনকে বলবেন, মনে সাহস রেখে তার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে।
ভালো থাকবেন আপু।


অলস সময়

অতিথি লেখক এর ছবি

যতদিন না নিজে পরিবর্তনের জন্য কিছু করছি।

শুধু মাত্র এভাবেই যার যার অবস্থান থেকে সাধ্যমতোন এগিয়ে আসুন।
প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই একদিন পালটে যাবে আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি।

ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকে সচেতন করে তুলুন।

সাবরিনা সুলতানা

দুর্দান্ত এর ছবি

হাল ছাড়বেন না। আমি নিশ্চিত, আপনি আরো এগিয়ে যাবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
পালটে দিন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি।

সাবরিনা সুলতানা

অমিত আহমেদ এর ছবি

আমাদের মানসিকতাতেই গলদ। এটাই বদলাতে হবে সবার আগে। পাঠ্যপুস্তকে এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আর জনসচেতনতা বাড়াতে এগিয়ে আসতে হবে শুধু সরকারকে নয়, আমাদের সবাইকেই। এমন একটি ব্লগের মূল্যও কিন্তু কোনো অংশে কম নয়।

একটা ঘটনা মনে পড়লো। জনৈক বয়স্ক ভদ্রলোক বলছিলেন, বাংলাদেশের চেয়ে পশ্চিমাদেশগুলোতে বেশি প্রতিবন্ধী দেখা যায়, কারণ এখানে বিধর্মীদের বাস। শুনে বললাম, চাচা, বাংলাদেশেও প্রতিবন্ধী কম নেই। কিন্তু তাদেরকে আমরা ছোট করে দেখি। বুঝে না বুঝে অপমান করি। কোনো পরিবারে মানসিক প্রতিবন্ধী থাকলে সেই পরিবারে বিয়ে দিতে চাই না। কোনো অনুষ্ঠানে গেলে তাদের বাসায় রেখে যাই। আমাদের এই মানসিকতার জন্য তারা ঘরে বন্দি হয়ে থাকে। আপনার কি মনে হয় না এজন্যই বাংলাদেশে তাদের বেশি দেখা যায় না?

আপনার কাছ থেকে আরো লেখা আশা করছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের মানসিকতাতেই গলদ। এটাই বদলাতে হবে সবার আগে। পাঠ্যপুস্তকে এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আর জনসচেতনতা বাড়াতে এগিয়ে আসতে হবে শুধু সরকারকে নয়, আমাদের সবাইকেই। এমন একটি ব্লগের মূল্যও কিন্তু কোনো অংশে কম নয়।

সহমত। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মিডিয়া যুগোপযুগী একটি মাধ্যম।

এইডস নিয়ে কতো প্রচার! প্রতিবন্ধীদের জন্যেও কী এভাবেই আমাদের শক্তিশালী গণমাধ্যমগুলোতে নাটক-বিজ্ঞাপন এবং লেখালেখির মাধ্যমে এমন কিছু প্রচার করা যায় না? যা দেখেশুনে আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষই ভাবতে বাধ্য হতেন, তাদের অপ্রতিবন্ধি শিশুটির সাথে প্রতিবন্ধি শিশুটিরও রয়েছে শিক্ষা এবং বিনোদনের সমান অধিকার।
আমি মনে করি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রথমেই প্রয়োজন প্রতিবন্ধি মানুষের সমস্যাগুলো তুলে ধরা। তারা যে অন্যরকম ভাবে সক্ষম এবং তাদেরও যে একটা সম্ভাবনা আছে সেটিকে বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠান এবং নাটক, চলচিত্র নির্মানের মাধ্যমে তুলে আনা অত্যান্ত প্রয়োজনীয়। প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া গেলে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবার ও সমাজ প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের যথাযথ মূল্যায়ন করবে। সমাজ তাদেরকে বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ দেবে। তাদের শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হবে না। এবং তারা নিজেদের সমাজের বোঝা ভাববে না।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্যে।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
পালটে দিন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি।

সাবরিনা সুলতানা

স্বাধীন এর ছবি

আপনার চেষ্টার সাথে সব সময়ই রয়েছি। নিরাশ হবেন না, চেষ্টাটুকু চালিয়ে যাবেন এই কামনা করি।

ব্লগে লিখে যে কাজ হয় না সেটা কিন্তু নয়। এর মাধ্যমেও সচেতনা বৃদ্ধি পাচ্ছে মনে করি। সাথে সাথে গণমাধ্যমেও প্রচারণা চলতে থাকুক।

সেই সাথে আপনাদের অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে বিদেশী দাতব্য সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাতে থাকুন। কানাডা সরকার এই ধরণের অর্গানাইজেশানের জন্য সাহয্য করে বলে শুনেছিলাম। অন্যেরাও করতে পারে।

অর্গানাইজেশানের লক্ষ্যগুলো ঠিক করে, কিভাবে সেটা চলবে সেগুলো সুনির্দিষ্ট করে প্রপোজাল লিখে দাতব্য সংস্থা, সরকার সবার কাছে যেতে পারেন। একটি ভাল মানের ফান্ড জেনারেট করতে পারলে তখন প্রাচারণা, নানান জনকে সাহয্য সব সম্ভব। দাতব্য সংস্থার পাশাপাশি সকল ব্লগ হতে দেশী/বিদেশী ব্লগার/পাঠকদের কাছ হতে অনুদান সংগ্রহ করার চেষ্টাও চলতে পারে। কিন্তু সবার আগে প্রয়োজন অর্গানাইজেশনের কার্যক্রম সুনির্দিষ্ট করা।

সেটা করা হলে আপনি অর্গাইজেশনের লক্ষ্য, সেটাকে কিভাবে অর্জিত হবে, অর্জনের ধাপগুলো কি হবে এগুলো নিয়েও লেখা দিন। তাহলে মানুষ যখন আস্থা অর্জন করবে যে এই অর্গানাইজেশান সক্ষম কিছু করতে তখন অনেকেই এগিয়ে আসবে। শুরুর পথটুকু সব সময়ই কষ্টের। কিন্তু আপনি পারবেন সে প্রত্যাশা করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো আপনার মতামত পেয়ে।
আমরা আমাদের সাধ্য মতোন চেষ্টা করে যাচ্ছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে প্রয়োজনীয় মন্তব্যের জন্যে।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হোন।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
পালটে দিন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি।

সাবরিনা সুলতানা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপু হার মানবেন না! আগেও বলেছি, সাথে আছি জানিয়েছি। লিখতে থাকুন, সচেতন করতে থাকুন। এভাবেই পরিবর্তন আসবে। আমরাই পরিবর্তন আনব। আমাদের নিজেদের পরিবার গুলো থেকেই সচেতনতা শুরু করতে হবে, মনে রাখতে হবে আমাদের কচি কাঁচা ছেলেমেয়েগুলিকেও যেকোন ধরণের persons with disability-দের প্রতি অ্যাক্সেপ্টান্স গ্রো করাতে শেখাতে হবে। তারাই কিন্তু পরে আরো পরিবর্তন আনবে। পরিবর্তন কি একবারে আসে? ধীরে ধীরে আসবে। কিন্তু আসতে তাকে হবেই!

অফ টপিক: আপনি কি আপনার আগের একটা পোস্টে আমার মন্তব্যটা দেখেছিলেন? আপনার লেখায় আগের লেখাগুলোর লিঙ্ক শেয়ার করে দিলে ভালো হত। আমি নাম দিয়ে সার্চ করে খুঁজে বের করলাম।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।