কেইর্নস কান্ড ১: ট্যান্ডেম স্কাই-ডাইভিং

সাঈদ আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন সাঈদ আহমেদ (তারিখ: শুক্র, ১২/০৮/২০১১ - ১:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

‘মরার আগে করতে হবে’ ধরনের যে তালিকাটা আছে আমার, তার বেশ উপরের দিকেই ছিল— স্কাই ডাইভিং, বাঞ্জি জাম্পিং আর স্কুবা ডাইভিং। অস্ট্রেলিয়ার কেইর্নস বেড়াতে গিয়ে এক অভিযানেই এ তিনটি করার সুযোগ হয়েছিল আর সে অভিজ্ঞতা নিয়েই এই লেখা। আজকের পর্ব ট্যান্ডেম স্কাই ডাইভিং।

একটা বাজেট এয়ারলাইন্স থেকে যখন মেলবোর্ণ-টু-কেইর্নসের টিকেট করেছিলাম, তখন সবচে’ সস্তার টিকেটটির শর্তই ছিল যে আমাকে সপ্তাহান্তের রাতে পৌছুতে হবে এবং সোমবার রাতে ফিরতে হবে। মাঝে মাত্র তিন দিন। তাও ভালো, কারন এর আগে জেট এয়ারের পাঁচ বছর পূর্তির পাঁচ সেন্টের টিকেট কাটতে গিয়ে মাত্র ৩৭ ঘন্টায় তাসমানিয়া দেখে ফিরতে হয়েছিল। সে অভিজ্ঞতা নিয়ে অন্যদিন লিখবো, আজ কেইর্নসেই থাকি।

পর্বতারোহন বা আকাশ ভ্রমণের সময় শরীরে বাতাসের চাপ অনেক কম থাকে, আবার স্কুবা ডাইভিং-এর সময় শরীরে পানির চাপ থাকে অনেক বেশি। একারনে এ দু’য়ের মধ্যে অন্তত: চব্বিশ ঘন্টার বিরতি রাখতে হয়। এটা
অন্তর্জাল ঘেটে জেনে নিয়েছিলাম। তাই প্রথম দিন সকালে স্কাই ডাইভিং, বাঞ্জি জাম্পি, আর দ্বিতীয় দিন দুপুরে স্কুবা ডাইভিং করবো বলে বুকিং দিয়ে রাখলাম।

প্যারাস্যুট দিয়ে স্কাই ডাইভিং এর একধরনের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ হলো ট্যানডেম ডাইভিং, যেখানে একজন দক্ষ স্কাইডাইভার তার সামনে কোন সহ-ডাইভারকে বেল্ট দিয়ে বেধে নিয়ে ডাইভ দেন। প্যারাস্যুটের নিয়ন্ত্রন এখানে মূল ডাইভারের হাতে থাকে এবং নিজের জীবনটা অন্যের হাতে তুলে দিয়ে মোটামুটি ‘নিশ্চিন্তেই’ ডাইভটা উপভোগ করা যায়।

সকাল আটটায় ডাইভিং এজেন্সির গাড়ি এসে হোটেল থেকে তুলে নিল। ওদের অফিসে পৌছে দেখলাম চোখে-মুখে উত্তেজনা নিয়ে আমার মতন আরো কয়েকজন হবু-জাম্পার হাজির। কাউন্টারে গিয়ে মূল্য তালিকাটা হাতে নিলাম—বিমান কতো উচ্চতায় নিয়ে তারপর ঝাপ দিতে চাই, তার উপর দাম নির্ভর করে। ঝাপ দেবার পর থেকে প্যারাসুট খোলার আগ পর্যন্ত তীব্রগতিতে (ঘন্টায় প্রায় ২০০ কিমি বেগে) নীচে পড়তে থাকাকে বলে "মুক্ত-পতন"। যত উপর থেকে ঝাপ দেয়া হবে, মুক্তপতনের সময় তত বেশি হবে। তালিকায় তাই উচ্চতা আর মুক্তপতনের সময়সহ দাম দেয়া আছে— ৯ হাজার ফুট, ২৮ সেকেন্ড মুক্তপতন = ২৫০ ডলার; ১১ হাজার ফুট, ৪০ সেকেন্ড মুক্তপতন = ৩১০ ডলার; আর ১৪ হাজার ফুট, ৬০ সেকেন্ড মুক্তপতন = ৩৩৪ ডলার।

ভানুর কথা ভাবলাম, ‘দ্রিমুই য্রখন ত্রখন স্রবট্রাতেই দ্রিমু’, ঝাপ যখন দিবই তখন ১৪ হাজার ফুট থেকেই দেই— এমনতো নয় যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে ৯ হাজার ফুট থেকে নিচে পড়লে একটু কম ‘ব্যাথা’ পাবো। সাথে একটা ছবি তোলার প্যাকেজও নিয়ে নিলাম—আরো শ’দুয়েক ডলার বের হয়ে গেল পকেট থেকে।

কাউন্টারের মেয়েটা ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ ধরনের একটা ছাপানো পত্র ধরিয়ে দিয়ে বললো, ‘এটাতে তোমার আর অন্য একজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষর লাগবে’। কী মুশকিল, এখানে স্বাক্ষী পাবো কোথায়? আমিতো আর কাজি অফিসে বিয়ে করতে আসিনি যে সাথে করে স্বাক্ষী নিয়ে আসবো। কাগজটা হাতে নিয়ে যখন ভাবছি, তখন পাশ থেকে এক হবু-জাম্পার এগিয়ে এলো—
‘হাই… আমি তোমার স্বাক্ষী হতে পারি, যদি তুমি আমার স্বাক্ষী হতে রাজী হও’।
ব্যস হয়ে গেল।

এরপর একজন প্রশিক্ষক এসে সবাইকে ট্যানডেম জাম্পিংয়ের মূল বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিল—টাইট করে কেডস পরতে হবে যেন আকাশ-পতনের সময় তা খুলে না পরে; চশমা-চেন-মানিব্যাগ যে কোন কিছুই বাতাসের তীব্রতায় খুলে যেতে পারে অথবা জাম্পারকেই আহত করতে পারে; এমনকি শার্টের শক্ত কলারও বাতাসের কম্পনে গলায় ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্রিফিং শেষে মানিব্যাগ-সানগ্লাস সবকিছু কাউন্টারে জমা রেখে আমরা এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
একটা ছোট্ট সেসনা ক্যারাভ্যান অপেক্ষা করছিল আমাদের জন্য—স্কাই ডাইভিংয় আর প্রশিক্ষণের জন্য বেশ জনপ্রিয় এই বিমানটি। সেখানে ট্যানডেম মাস্টার (যার সাথে আমি ডাইভ দিব) জেরমি আর ফটোগ্রাফার জেকোর সাথে পরিচিত হলাম। কিছুক্ষণ পরই সবাইকে নিয়ে উড়াল দিল ছোট্ট বিমানটি।

কেইর্নসের চিরহরিৎ বন, আবাদিজমি, প্রশান্ত মহাসাগরের সৈকত আর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে নিচে ফেলে ছোট্ট সেসনাটি উড়তে থাকলো আমাদের নিয়ে। নার্ভাসনেসকে কাছে ভীড়তে না দেবার সবচে’ ভালো উপায় হচ্ছে ভালো কিছু নিয়ে ভাবা। কোথায় যেন পড়েছি, মুক্ত-পতনের সময় নাকি নিজেকে পাখি পাখি মনে হয়, নীচে নামার সময় নাকি হাত দিয়ে মেঘ ছুয়ে ছুয়ে নামা যায়—এইসব ভাবতে থাকলাম। এরমধ্যেই জেরমি তার নিজের বেল্টের সাথে আমার বেল্টটি আটকে নিল। আমি জেরমির থেকে একটু সরে যাবার চেষ্টা করে দেখে নিলাম ঠিক মতন বাধা হয়েছে কিনা। দেখে জেরমি হেসে ফেললো, বললো-ভয় নেই, ঠিক মতই বাধা আছে। আমি হেসে বললাম—শিওর হয়ে নিলাম আরকি।

দেখতে দেখতে বিমানটি ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় পৌছে গেল। এবার ঝাপ দেবার পালা।

বিমানের স্বচ্ছ স্লাইডিং দরজাটি উপরে তুলে দিয়ে প্রথমেই দু’জন জাম্পার পা ঝুলিয়ে বসলো—তারপর মূহুর্তেই নাই হয়ে গেল। জেরমি আমাকে ইশারা করলো দরজার দিকে এগিয়ে যেতে। দুজনে একইসাথে গিয়ে বসলাম দরজার কাছে, আমি সামনে, জেরমি পেছনে। দুই পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসলাম বিমানের দরজায়। জেরমি আগেই বলেছিল—তুমি চাইলে শেষ মূহূর্তেও সীদ্ধান্ত বদল করতে পারো, পুরোটাই তোমার ইচ্ছে।

কিন্তু পা ঝুলিয়ে বসে যখন নিচের দিকে তাকালাম, তখন হার্টবিট একটু বেড়ে গেলও, বাদ দেবার কথা মনে আসলো না। আমাদের পাশ দিয়ে জ্যাকো বের হয়েই বিমানের দরজা ধরে বাইরে ঝুলে রইলো কিছুক্ষন—ছবি তুলছে। জেরমিকে ইশারা করলাম সব ঠিক আছে। ব্যাস— সামনের দিকে ঝুকে নেমে গেলাম বিমান থাকে।
বাংলায় খাবিখাওয়া বলতে ঠিক কী বোঝায় কে জানে, কিন্তু প্রথম পাঁচ-সাত সেকেন্ড মনে হলো প্রচন্ড বাতাসে নি:শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। কিন্তু ঐ পর্যন্তই। ভারসাম্য ফিরে আসতেই সব ঠিক হয়ে এলো। অদ্ভুত এক অনুভুতি ভর করলো দেহে।

আগে যখন টিভিতে প্যারাস্যুট জাম্পের ভিডিও দেখতাম, যখন দেখতাম একাধিক লোক হাতে হাত ধরে শুন্যেই বিভিন্ন রকম আকৃতি তৈরি করছে, তখন মনে হতো মানুষগুলো যেন আসলেই শুন্যে ভাসছে—নীচে পড়ছে না। আমি জানতাম না যে তারা ঘন্টায় প্রায় ২০০ কিমি বেগে নিচের দিকে পড়ছে, কিন্তু সেই পতনের সময় টুকুই মনে হয় যেন তারা শুন্যে ভাসছে। আশে পাশে কোন স্থির বস্তু না থাকায়, পতনের বিষয়টা ঠিক ধরা পরে না।

নিজের বেলাতেও ঠিক একই ঘটনা ঘটলো—মনে হতে লাগলো আমি যেন শুণ্যে ভেসে আছি—সে এক অদ্ভুত অনুভুতি। বাতাসের তীব্র চাপ টের পাওয়া গেলেও, চোখে রাবার ব্যান্ড দিয়ে লাগানো হালকা প্লাস্টিকের একটা স্বচ্ছ চশমা থাকায় দেখতে অসুবিধা হচ্ছে না। জ্যাকোকে দেখলাম আমাদের আশ-পাশ দিয়েই উড়ছে আর ছবি তুলছে। দেখতে দেখতে অনেক নীচের মেঘ কাছে চলে আসতে লাগলো। মনে হচ্ছিল আমি গুগলআর্থের মধ্যে ঢুকে পড়ে জুম করে করে পৃথিবীর কাছে চলে আসছি। প্রায় একমিনিটের স্বর্গানুভূতির পর জেরমি প্যারাস্যুট খুলে দিল। মনে হলো হঠাৎ কেউ যেন হ্যাচকা টান দিয়ে টেনে তুললো এই পতন থেকে।

প্যারাস্যুট খোলার পর নীচে নামতে প্রায় ৫ থাকে ৭ মিনিট সময় লাগে। এই সময়টুকু আরেক আনন্দের—চারদিক দেখার অনেক সময় পাওয়া যায়, পৃথিবীটা ক্রমেই নিকটে আসতে থাকে, আর নিচের দিকে তাকালে মনে হয়, শুন্যে ঝুলে আছি (ভেসে নয়)। জেরমি বললো—তোমার যখন ভয় লাগছে না, তখন একটা রোলার-কোস্টার রাইড দেই, দেখবে? আমি বললাম-ঠিক আছে।

অমনি সে প্যারাস্যুটটাকে ডান-বায়ে দোলাতে শুরু করলো—নিশ্চিত ভাবেই যে কোন রোলার-কোস্টার রাইডকে হার মানাবে সেটা।

দেখতে দেখতেই পা ছুলো মাটিতে। মনে হলো একটা ঘোর থেকে জেগে উঠলাম। একে একে সবাই নেমে এলো মাটিতে।

“কেমন লাগলো?”

তাকিয়ে দেখলাম, ড্যানিশ যে মেয়েটা আমার স্বাক্ষী হয়েছিল। আমি বললাম, “ঠিক বুঝতে পারছি না কী হলো! আমার সম্ভবত ঘোর কাটতে একটু দেরি হচ্ছে। তোমার?”
“আমার এমন ফিলিংস আগেও হয়েছে।”
“তুমি আগে করোছো স্কাই ডাইভিং?”, আমি জানতে চাইলাম।
“নাহ!”
“তাহলে”?
সে একটা অর্থপূর্ণ হাসি দিয়ে বললো— “এই যে এতো পরিকল্পনা ছিল আজকের দিনকে ঘিরে, এতো প্রত্যাশা, কেমন হবে, কীভাবে হবে, কেমন লাগবে— আর তারপর যখন হলো, মাত্র কয়েক মিনিটেই শেষ! আর এখন বসে বসে ভাবো— কী হলো, কীভাবে হলো, কেমন লাগলো! স্কাই ডাইভিং ছাড়াও তো এমন ফিলিংস হয়, তাই না?”
আমি মাথা চুলকে বাসের দিকে রওনা হলাম, এখন অন্য কিছু মাথায় ঢুকছে না। শুধু ভাবছি গত কয়েক মিনিট কী হলো, কীভাবে হলো, কেমন লাগলো!

[আগামী পর্ব: বাঞ্জি জাম্পিং আর স্কুবা ডাইভিং]


মন্তব্য

সাইফ জুয়েল এর ছবি

রুদ্ধশ্বাসে পড়লাম। অনেকদিন শ্বাসরুদ্ধকর লেখা না পড়ার কারনে মনে হয় হার্টবিটটা একটু বেড়ে গিয়েছিল। পরের পর্বটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকলাম।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

ধন্যবাদ... পরেরটা আ......সি....তে....ছে... হাসি

-----------
চর্যাপদ

সাফি এর ছবি

খাইসে

তানিম এহসান এর ছবি

এই তিনটা জিনিসে আমারও খুব শখ, বানজি জাম্পিং একবার পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও করতে পারিনি। সবেধন নীলমনি প্যারা গ্লাইডিং টাই একমাত্র সম্বল হয়ে আছে। শুনেছি আমাদের সেইন্ট মার্টিন এ একটা রিসোর্ট ‹‹ুবা ডাইভিং এর সুযোগ করে দেয় ইদানীং।

মনে হলো আপনার জায়গায় আমিই বোধকরি ছিলাম দেঁতো হাসি

মন_মাঝি এর ছবি

শুনেছি আমাদের সেইন্ট মার্টিন এ একটা রিসোর্ট ‹‹ুবা ডাইভিং এর সুযোগ করে দেয় ইদানীং।

হ্যাঁ। কন্ট্যাক্ট মিঃ মুজিব (এক্স ন্যাভাল ডাইভার)।

তানিম এহসান এর ছবি

ঠিক আছে, এক্স ডাইভার মিঃ মুজিবকে কনট্যাক্ট করতে হবে, কিন্তু কোথায় ইয়ে, মানে...

মন মাঝি এর ছবি

আমি যট্টুক জানি, তা এইরকমঃ--

দু'জন ডাইভার আছেন যারা এই এ্যাক্টিভিটিতে জড়িত। একজন মিঃ মুজিব, অন্যজন মিঃ আতিক। মিঃ আতিকের কন্ট্যাক্ট জানি না। দূ'জনই মনে হয় মুলত ঢাকায় থাকেন, শুধু টুরিস্ট সিজনে যখন আবহাওয়া অনুকুল, তখন মার্টিনে যান (নভেঃ-মার্চ)। সুতরাং সোজা মার্টিনে চলে গেলে নাও পেতে পারেন, অবশ্যই আগে যোগাযোগ করে যেতে হবে। এদের কাছে (অন্তত মি; মুজিবের কাছে) মূলত দুই-তিনটা সুবিধা পাবেন - ১. যারা পারেন তারা স্নরকেলিং বা স্কুবা ডাইভিং গিয়ার ভাড়ায় পাবেন, ২. চাইলে সাথে ভাড়ায় ডাইভিং গাইড পাবেন (মি" মুজিব নিজে না, তার ক্লাবের সদস্য কেউ)), ৩. যারা পারেন না, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ট্রেনিং। এইসব কিছু সাধারনত করা হয় সেন্ট মার্টিন সংলগ্ন ছেঁড়া দ্বীপের কাছে। ট্রেনিং-এর ক্ষেত্রে ওনারা ইন্ডিভিজুয়াল ক্লায়েন্টের চেয়ে একটা গ্রুপকে প্রেফার করেন বেশী। সেক্ষেত্রে প্রাইসিং, পারসোনাল কেয়ার ইত্যাদি নেগোশিয়েট করতে সুবিধা হয়।

যোগাযোগঃ http://www.scubabd.com/
মোবাইলঃ 01711671130

****************************************

মন মাঝি এর ছবি

আর হ্যাঁ, মিঃ মুজিবের কাছে আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফিক ইকুইপমেন্টও আছে। এসব দিয়ে উনি কোরাল ইত্যাদির প্রচুর ছবি তুলেছেন (স্টিল না ভিডিও মনে পড়ছে না)। তবে এগুলি রেন্ট আউট করেন কিনা বা ক্লায়েন্টের ছবি তুলে দেন কিনা ঠিক জানি না।

****************************************

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

সেইন্ট মার্টিন একটা ভালো স্কুবা ডাইভিং কেন্দ্র হতে পারতো যদি কঠোর নিয়ন্ত্রন রাখা যেত, তা না হলে লোকজন ডুবে ডুবে কোরালগুলো নষ্ট করে ফেলবে। শুনেছি এমনিতেই নাকি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দ্বীপটা মন খারাপ আমি যখন গিয়েছিলাম, তখন নৌকায় যেতে হতো... রাতে থাকার কোন ব্যবস্থা ছিল না... সেটাই আসলে ভালো ছিল।

-----------
চর্যাপদ

নিটোল(অতিথি) এর ছবি

চরম!!

Guest পাঠক  এর ছবি

ভিডিও টা খুব এনজয় করলাম। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------
চর্যাপদ

কাজি মামুন এর ছবি

@সাঈদ আহমেদ,
বিশ্বাস করুন আমিও যেন আপনার সঙ্গে ডাইভ দিচ্ছিলাম। আমারও নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিলো। আর চারদিকের শুন্যতা, স্থিরতা- সবই যেন অনুভব করতে পারছিলাম। স্কুবা ডাইভিং এর অপেক্ষায় থাকলাম।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------
চর্যাপদ

কাজি মামুন এর ছবি

@সাঈদ আহমেদ,
বিশ্বাস করুন আমিও যেন আপনার সঙ্গে ডাইভিং করছিলাম। আমারও নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল, ১৪ হাজার ফুট উচ্চতার শুন্যতা, স্থিরতা আর স্বর্গীয় ভালো লাগা সবই যেন অনুভব করতে পারছিলাম। ভ্রমণ শেষে ড্যানিস ডাইভার মনে হয় এই অনুভূতির কথাই বুঝাতে চেয়েছে, অর্থাৎ মানুষ অনুভূতির তীব্রতা দিয়ে অনেক সময় দূর বাস্তবকেও কাছে নিয়ে আসতে পারে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মারাত্মক! লিস্টে নিলাম। হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মন_মাঝি এর ছবি

দুর্দান্ত ! চলুক

তারেক অণু এর ছবি

চমৎকার। অন্যগুলোও পড়তে চাই তাড়াতাড়ি== চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মন্তব্য করতে লগইন করলাম। লেখা পড়েই হার্টবিট বেড়ে গেল। গুল্লি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মিলু এর ছবি

সেইরাম! মানে পুরাই চখাম!! অ্যাঁ
চলুক চলুক চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ডরাইছি!!!! ক্যাম্নে কী!!!! অ্যাঁ

তয় আকাশে আপনার আনন্দ দেইখা ডর কাইটা গেছে, আমিও একদিন লাফ দিমু!!!! দেঁতো হাসি


_____________________
Give Her Freedom!

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

ডরাইলেই ডর... লাফ দিয়ে দিলে আর কীসের ডর? হাসি

-----------
চর্যাপদ

দ্রোহী এর ছবি

আতঙ্কে হাত, পা...............

ভিডিও দেখে সেইরাম লোভ হচ্ছে। দেখে নিয়েন, একদিন আমিও!

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

আপনার শহরের খুব কাছেই কিন্তু দেয়া যায়... আমি প্রথমে ওখানেই যেতে চেয়েছিলাম। তবে কেইর্নসের মতো সুন্দর কোন স্পটে দিলে আরো বেশি ভালো লাগার কথা...

-----------
চর্যাপদ

কৌস্তুভ এর ছবি

দারুণ, দারুণ! আপনার বর্ণনায় পুরো ছবির মত দেখতে পেলাম।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হা হা হা! দারুণ মজা লাগলো! আমি মনে হয় শেষ মুহূর্তে পিছটান দিতাম! খাইছে আমার উচ্চতাভীতি আছে, লাফ ঝাঁপ দেবার ব্যাপারে উপরে উঠবার পরে ফ্রিজড হয়ে যাই খানিকটা, আমার ভাই জানে! দেঁতো হাসি
তবে বাঞ্জি জাম্পিং-এর ব্যাপারটা আমার মাথায় ঢুকে না, একটু কেমন যেন... উপর থেকে নিচে পড়ে আবার জাম্প করে উপরে উঠে পড়ে যাওয়ার সময়টা ভালো লাগবে না মনে হয়, আসলে পেটের ভেতরে যে পাক খাওয়া ফিলিংসটা হয় ঐটাই অপছন্দ, আর থ্রিলসিকারদের বোধ করি ঐটাই পছন্দ হয়! হাসি

প্যারা গ্লাইডিং করবার ইচ্ছা আছে কখনো, পাহাড়চূড়া থেকে যেইটা করে সেটা না হলেও (ঐ যে উঁচু থেকে লাফ দিতে গিয়ে পালটি খাবো মনে হয়... মন খারাপ ) স্পিড-বোটের সাথে যেরকম করে না, ঐ রকমটা অন্তত করতে চাই। আর ইচ্ছা আছে স্নরকেলিং-এর, স্কুবা ডাইভিং করতে গেলে কিছুটা ট্রেইনিং লাগে মনে হয়।
আর হট এয়ার বেলুন রাইডের চরম ইচ্ছা আছে একটা, এটাও করবো একদিন ইনশাআল্লাহ। দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

উচ্চতাভীতি থাকলে স্কাই ডাইভের চেয়ে বাঞ্জি বেশি ভয় ধরিয়ে দেবে। যদিও আমি প্যারাগ্লাইড আর হটএয়ার বেলুনে চড়িনি এখোনও (লিস্টে আছে) … কিন্তু আমার ধারনা প্যারাগ্লাইড করতে পারলে আপনি স্কাই ডাইভও দিতে পারবেন। কারনটা পরের পর্বে বলবো।

-----------
চর্যাপদ

সচল জাহিদ এর ছবি

অসাধারণ অনুভূতি হলো সাঈদ ভাই।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

মুস্তাফিজ এর ছবি

এই তিনটা আমার লিস্টেও ছিলো, বাঞ্জি দিয়েছি ২০০০ সালে, দুবাইতে। তবে নেপালের দুধ কোশী নদীর উপর থেকে দেয়া বাঞ্জি জাম্প নাকি সবচাইতে থ্রীলিং, ইচ্ছা আছে কোন এক সময় দেয়া যাবে। স্কুবা করেছি কয়েকবার, আমাদের সেন্টমার্টিনে স্কুবা করতে লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়না। বাইরে কোথাও করতে গেলে লাইসেন্স চায়। মালয়েশিয়ায় একবার একটা ট্রেনিং নিয়েছিলাম স্কুবার। অনেক রোমাঞ্চকর।
স্কাই ডাইভ দেয়া হয়নি এখনও, তবে ইন্সট্রাক্টরের নীচে ঝুলে পোখারায় প্যারাগ্লাইডিং করেছি। সেটাও থ্রীলিং।

...........................
Every Picture Tells a Story

ফাহিম হাসান এর ছবি
সাঈদ আহমেদ এর ছবি

আপনি সম্ভবত এটার কথা বলছেন। নেপালে যাওয়া হয়নি কোনদিন, তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাইরে নেপালের বাঞ্জি আর প্যারাগ্লাইডিং এর অনেক প্রশংসা শুনেছি।

আশা করি একদিন আমিও... হাসি

-----------
চর্যাপদ

আশালতা এর ছবি

বাহ আজকাল সচলে ঢুকলেই দেখি রোলার কোস্টার রাইড হয়ে যাচ্ছে। এই কেউ পাহাড় সমুদ্র মরুভুমিতে ঘুরিয়ে আনল তো আজ আপনার সুবাদে আকাশ ভ্রমণও হয়ে গেল। দারুন !!! হাসি

মরার আগে এই তিনটা কাজ আম্মো করতাম চাই চাই চাই চাই চাই !!!!

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আমি জানিনা আপনি ইতমধ্যেই করেছেন কী-না... কিন্তু এ্যাডভেঞ্চার ভালো লাগলে গ্রামে গিয়ে কোন বড় বিল বা ঝিলে একটা তালগাছের ডিঙি নৌকার একদম সামনে দাড়িয়ে একা একা চালিয়ে দেখতে পারেন... অদ্ভুতানন্দ!

-----------
চর্যাপদ

আশালতা এর ছবি

তালগাছের ডিঙি নৌকা কই পাবো ? আমি কলাগাছের ভেলায় যে কবার উঠেছি, অবধারিতভাবে দুড়ুম করে পানিতে পড়েছি। এইটার মাজেজা বুঝিনা, অন্যরা ঠিকই বসে থাকে, আমিই বসে থাকতে থাকে হটাত দুরুম-ঠাশ করে পানিতে পিছলে পড়ে যাই কেন ! একবার ভাইয়া আমাকে কষে শক্ত করে ধরে বসেছিল, হটাত কি যেন হল, দেখি দুইজনেই পানিতে !!!

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

স্বাধীন এর ছবি

অসাধারণ গুরু গুরু

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

বাঞ্জি আর স্কাই-ডাইভিংএর জন্যে প্রায়ই আমার মন আকুপাকু করে দেঁতো হাসি
উচ্চতাভীতি চলে গেছে আমার, উঁচা উঁচা দালানের ছাদে উঠে উঠে আর পাহাড় চড়ে চড়ে দেঁতো হাসি

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৮ তলার জানালা হলো আমার জীবনের প্রথম অনেক ওপর থেকে পৃথিবীকে দেখা। প্রথম কিছুক্ষণ ভয় ভয় করলো... তারপর ঘোর লাগা অনুভূতি নিয়ে নীচের দিকে তাকিয়ে রইলাম... একটা পর্যায়ে মনে হলো, ঝাপ দিলে কেমন লাগবে!?

মধ্যাকর্ষণ ছাড়াও উচ্চতার আসলে একধরনের আকর্ষণ আছে...

-----------
চর্যাপদ

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

একদম ঠিক, অনেক উঁচুতে উঠলে নিচে তাকালে খালি মনে হয় - একটু লাফ দিয়েই দেখি না ! কী আর হবে ! কী আছে জীবনে ! খাইছে

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

আশালতা এর ছবি

একদম ঠিক, অনেক উঁচুতে উঠলে নিচে তাকালে খালি মনে হয় - একটু লাফ দিয়েই দেখি না ! কী আর হবে ! কী আছে জীবনে !

হ !!

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

ফাহিম হাসান এর ছবি

ছবি আর ভিডিও দেখে ঈর্ষায় নীল হয়ে আমিই উড়তে থাকলাম

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দারুণ অভিজ্ঞতা!!! এটা আমার লিস্টেও আছে, করে ফেলবো শিগগির!

ভিডিওটাতে ব্যাকগ্রাউণ্ডে গানের আসল শব্দ শুনতে পারলে বেশি অনুভব করা যেত অভিজ্ঞতাটা।

আপনার ইন্সট্রাকটরের চেহারা স্টীভ ওয়াহ/মার্ক ওয়াহ-দের মত! হাসি

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

এজেন্সি যখন ভিডিওটা দেয়, তখন ব্যাকগ্রাউণ্ডে আসল শব্দ ছিল না, অন্য একটা গান ছিল। আমাকে বললো, হ্যান্ডিক্যামের ছোট মাইক্রফোনে বাতাসের তীব্র ঘর্ষণের ফলে একধরনের বিকট খসখসে শব্দই শুধু রেকর্ড হয়... ঠিকমতন রেকর্ড করতে হলে নাকি বিশেষ ধরনের রেকর্ডার লাগে, যা ওরা ব্যাবহার করে না।

আমি গানটা বদলে দিয়েছি মাত্র.. কিন্তু আমারো মনে হয়েছে, আসল শব্দ থাকলে বেশি ভালো লাগতো।

-----------
চর্যাপদ

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

বাহ!

আমার ঊচ্চতাভীতি আছে, নাইলে এটা আমার তালিকায় ঢোকাতাম নিশ্চিত।

সাদাকালোরঙিন এর ছবি

নেপালে প্যারাগ্লাইডিং ও মালেশিয়াতে বান্জি জাম্পিং এর অভিজ্ঞতা আছে আমার। সে অভিজ্ঞতা থেকেই জানি যে আকাশের এই কয়েক সেকেন্ডের অভিজ্ঞতা আসলে সারা জীবনের সম্পদ। প্যারাগ্লাইডিং এর একটা মজার দিক হলো অন্যান্যগুলোর চেয়ে অনেক বেশি সময় ধরে পাখির মত ঘুরে ঘুরে উড়ে দেখা যায়। এমনকি অন্নপূর্না রেন্জের মাউন্টেনগুলোর আশপাশ দিয়ে ঘুর ঘুর করা যায়। ভবিষ্যতে স্কুবা ডাইভিং ও স্নোরকেলিং এর অভিজ্ঞতা নিতে চাই। যারা স্কুবা ডাইভিং এর তথ্য শেয়ার করেছেন তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।

shabdik এর ছবি

চান্স পাইলে মিস করব না, অসাধারন। হাততালি

নিত্যানন্দ রায়  এর ছবি

শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।