ফিদেল- The UNTOLD STORY

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: শনি, ১৩/০৮/২০১১ - ১২:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সময়ের বিরুদ্ধ স্রোতে চলা পুঁজিবাদী এক বিশ্বে আদর্শবাদী এক নেতা, সর্বদাই শুনিয়ে যান সাম্যের মন্ত্র, একের পর এক যুগান্তকারী নতুন নতুন কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়ে আশ্চর্য করে তুলছেন সারা বিশ্ববাসীকে কিন্তু তার ব্যক্তিজীবন আজো রহস্যে ঘেরা। ৪০ টি বছর একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হবার পরও মানুষ জানে না তার পরিবার নিয়ে। অথচ বিরুদ্ধ রাষ্ট্র তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে অসংখ্য বার আর অপপ্রচার চলছে সারা বিশ্ব জুড়ে কিন্তু ধ্যানমগ্ন ঋষির মত একাকী চালিয়ে যাচ্ছেন তার বিপ্লব, বিশ্ব জুড়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন দেশ ছাড়িয়ে মহাদেশে মহাদেশে মুক্তিকামীদের। তিনি ফিদেল ক্যাস্ট্রো, আমাদের সময়ের মহানায়ক।
fidel___the_untold_story___poster1
তার নাক্ষত্রিক জীবন নিয়ে ৯০ মিনিটের তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন এস্তেয়া ব্রাভো- দ্য আনটোল্ড স্টোরি। সংগ্রহ করেছেন অজানা মুল্যবান সব তথ্য, অতি দুর্লভ ভিডিও ক্লিপ, প্রাতঃস্মরণীয় সব ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার।
প্রথমেই দেখা যায় নিউইয়র্কের হার্লেমে ভাষণরত ফিদেল, তার বক্তৃতা শোনার আশায় অপেক্ষমাণ লক্ষ জনতা, আবেগে উদ্বেলিত তাদের কালো মুখ। বিখ্যাত ভাষণের সাথে সাথে শুরু এই প্রামাণ্যচিত্রের- ফিদেলের শৈশবের বাড়ী, তার বাবা-মার কবর( বাবা ছিলেন স্পেন থেকে আসা ভাগ্যাসন্ধানী, কিউবায় চিনির ব্যবসায় প্রচুর রোজগার করে স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছিলেন, মা ছিলেন কিউবার মেয়ে), এর পরে আসে কিউবার সামরিক একনায়ক বাতিস্তার অপশাসনের বিরুদ্ধে মোনকাদা ব্যারাকে আক্রমণ যার ফলশ্রুতিতে প্রহসনের বিচারে ১৫ বছরের জেল হয় তার। আদালতে দাড়িয়ে মাথা উঁচু করে বলেছিলেন - আমাকে তোমরা সে সাজাই প্রদান কর, History will Absolve Me। এরপরেই আসে ১৯৫৬ সালে আর্জেন্টাইন তরুণ ডাক্তার চে আনেস্তো গুয়েভারার সাথে মেক্সিকো সিটিতে তার ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ যা রচিত করে অবিচ্ছেদ্য বন্ধুত্বের, অমর বিপ্লবের।
che fidel 2
দৃশ্যপটে হাজির হন চে-র মেয়ে অ্যালাইদা গুয়েভারা, বাবার মতই ডাক্তার তিনি, বললেন ফিদেল-কে নিয়ে তাদের কাছে চে-র স্মৃতিচারণ, প্রথম সাক্ষাতেই টানা দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার আলাপ গড়ে দিয়েছিল দুই তরুণের বিপ্লবের বুনিয়াদ।
কিউবায় সফল বিপ্লবের পরে ফিদেলের যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম সফরের সময় হার্লেমেই অবস্থান করেন, সেখানে তার সাথে দেখা করতে আসেন নেহেরু, ম্যালকম এক্স, নিকিতা ক্রুশ্চেভ, গামাল আব্দুল নাসের প্রমুখ বিশ্ব নেতা। সবাই এই তরুণ শ্মশ্রুমণ্ডিত বিপ্লবীর ক্যারিশমায় মুগ্ধ। সারা বিশ্বের প্রচার মাধ্যমের সামনেই ফিদেল ঘোষণা করেন- এখন থেকে জনগণের স্বার্থ রক্ষায় হবে তার সরকারের মূল উদ্দেশ্য, কিউবা আর কখনোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাবেদার হবে না, তাদের প্রমোদকেন্দ্র হবে না, যা ছিল মার্কিন আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর স্বার্থের মহাপরিপন্থী।
ফিদেলের জীবনীকার পিটার বুয়েরো জানালেন সেই সময়ই ফিদেলের মূল আদর্শ ছিল শিক্ষার বিস্তার, কারণ শিক্ষা ছাড়া সত্যিকারের স্বাধীনতা কোন সময়ই সম্ভব না। তার আহ্বানে তরুণ শিক্ষার্থীরা দূর-দুরান্তের গ্রামেগঞ্জে যেয়ে তৃণমূল পর্যায়ে শিক্ষা বিস্তারের দায়িত্ব নেন, বিশেষ করে চাষিদের মাঝে। ফলস্রুতিতে আজ কিউবার শতভাগ জনগণ শিক্ষিত !
কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী শক্তিদের অপতৎপরতা চলতেই থাকে এই সাম্যবাদের ধারণায় দীক্ষিত ক্ষুদে দ্বীপরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। নির্লজ্জ সশস্ত্র আক্রমণ চালায় তারা অসংখ্যবার, পুড়িয়ে দেয় একরের পর একর ইক্ষু ক্ষেত, স্যাবটাজ করে উড়িয়ে দেয় মালবাহী জাহাজ, মারা যায় শত শত নিস্পাপ সাধারণ জনগণ, চলতে থাকে ভাইরাস পাঠিয়ে ইক্ষু ও গবাদি পশু সম্পদকে নির্মূল করার প্রচেষ্টা। এমনি ভাবে ১৯৬৭ সালের অক্টোবরে বলিভিয়ায় বিপ্লব পরিচালনার সময় সি আই এ এবং স্থানীয় সামরিক জান্তার হাতে মৃত্যুবরণ করেন চে গুয়েভারা। বন্ধুর প্রস্থানে শোকাহত ফিদেল বিপ্লব অব্যাহত রাখার প্রতিস্রুতি দেন শোষণকারী শক্তির বিরুদ্ধে। এর ৩০ বছর পরে বলিভিয়ার বধ্যভূমি থেকে চে-র দেহাবশেষ যখন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কিউবায় ফেরৎ আনা হয়, তখন এক একান্ত সাক্ষাৎকারে ফিদেল জানান চে তার কাছে সবসময়ই জীবিত, তার আদর্শের সাথে সবসময়ই আছেন তিনি, তাই প্রিয় বন্ধুকে কখনোই মৃত কল্পনা করতে পারেন না।
39649
ফিদেল সবসময়ই শোষণকারী শক্তির বিরুদ্ধে মুক্তিকামী বিপ্লবীদের সাহায্য জুগিয়েছেন সারা বিশ্বে, হো চি মিনের ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামে, স্যামোয়া মিশেলের মোজাম্বিকে, সালভাদর আলেন্দের চিলিতে, নেলসন ম্যাণ্ডেলার দক্ষিণ আফ্রিকায়।
কিংবদন্তীর ক্যালিপসো গায়ক হ্যারি বেলাফন্টে তার সাক্ষাৎকারে বলেন কিউবার সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া আফ্রিকার দেশগুলোর ইউরোপীয়ান উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভ করার ইতিহাস হত সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের, বিশেষ করে অ্যাঙ্গোলার স্বাধীনতাই হয়ত সম্ভবপর হত না। আফ্রিকা মহাদেশে ফিদেলের সবচেয়ে বড় বন্ধুটির নাম নেলসন ম্যাণ্ডেলা, দক্ষিণ আফ্রিকায় সত্যিকারের স্বাধীনতার আগমন ও বর্ণবাদের অবসানের পিছনে কিউবার অপরিসীম অবদানের কারণে ম্যান্ডেলা সবসময়ই ফিদেলকে মাই প্রেসিডেন্ট বলে সম্বোধন করেন!
Mandela-Castro
এবার পর্দায় ভেসে ওঠে বিশ্বনেতা ম্যান্ডেলার সাথে ফিদেলের সাক্ষাৎকারের বিরল মুহূর্ত আবেগঘন পরিবেশে আলিঙ্গনরত অবস্থায় ফিদেলকে বলেন ম্যান্ডেলা, মাই প্রেসিডেন্ট, কোন কথা বলার আগেই আমি জানতে চাই যে আপনার আরেক স্বদেশ ভূমি দক্ষিণ আফ্রিকায় আপনি কবে আসবেন? পরবর্তীতে ফিদেল দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণ করেন কবছর পরে আনন্দঘন পরিবেশে।
fidel-mandela
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক নোবেল বিজয়ী গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ দৃশ্যপটে হাজির হয়ে বলেন, আমার নতুন কোন উপন্যাস ছাপাখানায় পাঠানোর আগেই আমি ফিদেলকে পাঠায় পড়ে দেখার জন্য, সে যে একজন অসম্ভব মনোযোগী বিরল প্রজাতির পাঠক তাই নই, সে বিশ্বসেরা এডিটরদের একজন। সাহিত্য নিয়ে দিনের পর দিন আড্ডা দিয়েছি, অভিভূত হয়েছি তার সাহিত্য জ্ঞানে।
castro_en_gabriel_marquez_2007
সেই সাথে মার্কেজ উল্লেখ করেন ফিদেলের জাদুকরী সম্মোহনী ভাষণের কথা, তার মতে সামনাসামনি সেই ভাষণ শোনা এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা, একটি উচ্চস্তরের শিল্পের মত তাল-লয়-ছন্দ-সুর নিয়ে দর্শকের আগ্রহ চুম্বকের মত নিজের দিকে টেনে নেন ফিদেল বাচনভঙ্গী আর অপূর্ব ক্যারিশমা দিয়ে।
এরপর একে একে ভিডিও ক্লিপে ভেসে ওঠে ফিদেলের বন্ধু বলে পরিচিত সারা বিশ্বের কিছু পরিচিত মুখ- মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা, অভিনেতা জ্যাক লেমন, জ্যাক নিকলসন, স্পেনের রাজা হুয়ান কার্লোস, সি এন এন-এর মালিক টেড টার্নার, দার্শনিক নোয়াম চমস্কি, নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্বরা আর সেই সাথে ল্যাতিন আমেরিকার বর্তমান সময়ের রাষ্ট্রনায়করা। যাদের মধ্যে আছেন ব্রাজিলের লুলা দ্য সিলভা , ইভো মোরালেস, হুগো শ্যাভেজ প্রমুখ। সাহিত্যের আরেক দিকপাল আর্নেস্ট হেমিংওয়ে জীবনের অনেকগুলো বছর কাটিয়ে ছিল এই দ্বীপে, তিনিও ছিলে তরুণ ফিদেলের পরম গুণমুগ্ধ, ফিদেলের অফিসের আছে তাকে লেখা হেমিংওয়ের একটি বিশেষ চিঠি।
tumblr_lgazmkf8jb1qfr8zko1_500
ফিদেলের সব বিষয়ে বিস্তারিত সাক্ষাৎকারের বিখ্যাত সংকলন মাই লাইফ গ্রন্থের ছায়া লেখক ইগনাসনিও রামোনেত বলেন আজ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্তত ছয়শবার ফিদেলের জীবনের উপর সরাসরি আক্রমণ চালানো হয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্ত একটিবারও ফিদেল কিংবা কিউবার পক্ষ থেকে বা তাদের অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রের উপর কোন ধরনের হামলা চালানো হয় নি।
ফ্লোরিডার স্প্যানিশ রেডিও ষ্টেশনগুলোতে প্রতিদিন অজস্র প্রপাগান্ডা চালানো হয়, ফিদেলকে স্বৈরাচার, অত্যাচারী, নিষ্ঠুর হিসেবে চিহ্নিত করে অপপ্রচার চালাতে চালাতে ক্লান্ত তারা। কিন্তু তারা তন্ন তন্ন করে খুজেও ফিদেলের অবৈধ পথে উপার্জনের কোন চিহ্ন পায় নি, তার কোথাও কোন গোপন সম্পদ বা সুইস ব্যাংকে কোন অ্যাকাউণ্ট নেয়। সবচেয়ে বড় কথা গোটা দেশে তার নিজস্ব কোন ভাস্কর্য, ছবি বা স্থাপত্য নেই। তার সন্তানের নাম বা সংখ্যাও আমরা জানি না। লোকমুখে জানা যায় তার বিবাহিত জীবন ৩০ বছরের, সন্তান সম্ভবত ৮ জন এবং নাতি-নাতনীও ৮ জন, কিন্তু ব্যক্তিগত এই জিনিসগুলো সবসময়ই আড়ালে রাখেন ফিদেল।
সেই সাথে সবাই বললেন তার কর্ম স্পৃহার কথা, অনেক সময় রাত ২ টা পর্যন্ত অফিসে থেকে আবার পরদিন সকাল ৭ টায় হাজির তিনি, বিস্মিত সহকর্মীদের প্রশ্ন - এই ৫ ঘণ্টা ঘুমোলেই চলবে? ততোধিক বিস্মিত ফিদেলের প্রত্যুত্তর- ঘুম! এই ৫ ঘণ্টা তো আমি সাতার কাটছিলাম, যাতে আজ সতেজ অবস্থায় কাজে আসতে পারি !
যুক্তরাষ্ট্রের কিউবা অফিসের সাবেক প্রধান ওয়েন স্মিথের মতে এই প্রথম ফিদেলের নেতৃত্বে কিউবা সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করছে। তারা এখন স্পেনের কোন উপনিবেশ নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রমোদকেন্দ্র নয়, সোভিয়েত ইউনিয়নের মুখাপেক্ষী বন্ধুরাষ্ট্র নয়, আজ তারা স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। আর সেই সাথে আমেরিকার বোঝা উচিত এত দীর্ঘ সময় ধরে কেউ এভাবে ক্ষমতায় থাকতে পারে না, ফিদেল পেরেছেন কারণ কিউবার জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন আছে তার দ্রোহের মন্ত্রের প্রতি।
ফিদেল ক্ষমতায় আসার পরে তার গৃহীত ব্যবস্থায় মাত্র কয়েক দশকে কিউবার অসাধারণ উন্নতি ঘটেছে নানা ক্ষেত্রে- শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবায় তারা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থান অর্জন করেছে, বিশেষ করে নানা দেশে ডাক্তার পাঠিয়ে সাহায্য করার ক্ষেত্রে কিউবার সুনাম বিশ্ব জুড়ে। প্রতিটি নাগরিকের পেট পুরে খাবার নিশ্চয়তা আছে, অপরাধের হার অত্যন্ত কম, পথশিশুদের অস্তিত্ব নেই, মাদক সমস্যা নেই, গৃহহীন থাকতে পারে না কেউ, লিঙ্গ বৈষম্য, বর্ণ বৈষম্যের স্থান নেই এই সমাজে-- পঞ্চাশের দশকের কিউবার দিকে তাকালে এই অর্জনগুলোকে অলীক স্বপ্ন বলেই মনে হয়।
বিশেষ করে যখন তাদের উপার্জনের প্রধান দ্রব্য চিনিসহ অন্যান্য সম্পদ আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো দশকের পর দশক।
জাতিসংঘের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দীর্ঘদিন পরে আমেরিকা সফর করেন ফিদেল। সেখানে সবাইকে চমকে দিয়ে যান টাইম ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের অফিসে, যে পত্রিকাগুলো যুগের পর যুগ তার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কেবল ঋণাত্নক খবরই ছেপেছে।
castrotime1959
সেখানে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি- আমার সাম্যবাদী নীতিতে আমি অটল, তথাকথিত প্রচলিত গণতন্ত্রের বদলে এই পন্থাতেই মানবতার মুক্তি। আমি জীবন দিতে রাজি আছি, কিন্তু আমার নীতি, আমার বৈপ্লবিক আদর্শ বিসর্জন দিব না।
লেখক-বিশ্লেষক সিডনী পোলাক বললেন- ফিদেল জীবন্ত ইতিহাস, তিনি অনেক কিছু দেখেছেন, অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী।
সবকথার শেষ কথা বলেছেন অস্কার জয়ী পরিচালক অলিভার স্টোন (তিনিও ফিদেলের উপরে এল কমান্দানতে নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন), তার মতে ফিদেল ক্যাস্ট্রো বিশ্বের সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষদের একজন, আমাদের সবার উচিত তার কথা শোনা।
এমন ভাবেই এক মহামানবের মহাজাগতিক জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে এই বিরল প্রামাণ্যচিত্র, যাতে অন্তত কিছুটা ধারণা পাবেন অবলোকনকারীরা ফিদেলের সত্যিকারের পরিচয় নিয়ে।।
dvdtc84
( সুপ্রিয় সচলের বন্ধুরা কাল বিকেলে রওনা হচ্ছি দিন পনেরর জন্য স্বপ্নের সেই দ্বীপ কিউবার উদ্দেশ্যে, ফিদেলের হাতে গড়া সেই MY ISLAND IN THE SUN দেখার আগে তার প্রতি এই আমার শ্রদ্ধা নিবেদন, ভাল থাকুন আপনারা সবাই)


মন্তব্য

সাইফ জুয়েল এর ছবি

বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক। আজ বিশ্বের সব শোষিত মানুষের কন্ঠস্বর ফিদেল ক্যাস্ত্রো। নিপাত যাক সাম্রাজ্যবাদ। অনেক ধন্যবাদ তারক অনুকে।

তারেক অণু এর ছবি
গেরিলা এর ছবি

জয় হোক সাম্যবাদের, জয় হোক মানবতার....মানুষের মুক্তির খবর সবসময়ই আরাধ্য...এবং সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ ছাড়া এটি একেবারেই অসম্ভব; এটিও প্রমানিত

যান ভাইডি.... উত্তম জাঝা!

তারেক অণু এর ছবি

এতো চট করে বলতে পারছি না। মানুষ খুব অদ্ভুত ও লোভী প্রাণী, সমাজতন্ত্র যে গুটি কয়েক দেশে কায়েমের চেষ্টা হয়েছে সেখানেই গুটিকয় ক্ষমতা লোভী নেতা শুরু করেছে নতুন রূপে শোষণ। এর ব্যতিক্রম খুব বেশী ধরনের কম

তানিম এহসান এর ছবি

ঘুরে আসবেননা শুধু, যা দেখেছেন তা আমাদের জন্য নিয়ে আাসবেন। অবশ্য আপনাকে বলার দরকার নেই। বন ভয়েজ!

তারেক অণু এর ছবি
ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

শিরোনামটা পুরোপুরিই বাংলা করে দেন না...

তারেক অণু এর ছবি

হুমম, আসলে সিনেমা, তথ্যচিত্র -এগুলোর ক্ষেত্রে আসল নামটা দিতে ইচ্ছে করে।

ঝুমন এর ছবি

এগুলো পড়লে দেশ নিয়ে, দেশের নেতৃত্ব নিয়ে শুধুই দীর্ঘশ্বাস প্রলম্বিত হয়। কেন যে আমরা পারিনা একজন ফিদেল, একজন চে অথবা একজন বিসমার্ক বা একজন মাহাথির অর্জন করতে।

তারেক অণু এর ছবি

আসবে নিশ্চয়ই আমাদের দেশেও, তবে আমাদের অঞ্চলে দৈন্যতা খুব বেশী, মানে মানসিক দৈন্যতা । এত কাটালেই না নির্লোভ নেতা পাওয়া সম্ভব

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ফিদেল, চে, বিসমার্ক আর মাহাথির কী করে পরস্পর পরস্পরের সাথে তুলনীয় হন? ব্যক্তি মানুষ বিপ্লব আনে না, সফল করতে পারে না। আপনি ক্যুবা'র মানুষের ভূমিকাটা দেখতে পাচ্ছেন না। ওটা দেখার-বোঝার চেষ্টা করুন তাহলে অনেক হতাশাই কেটে যাবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক বলেছেন, আর বিপ্লব করলেই তো শুধু হবে না, রাষ্ট্রকে ঠিক পথে নিয়ে যেতে হবে, অন্তত মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতেই হবে

জহির  আহমাদ এর ছবি

“ব্যক্তি মানুষ বিপ্লব আনে না, সফল করতে পারে না।”--- সহমত, এই সঠিক উপলদ্ধি সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক !

তারেক অণু এর ছবি
মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

উনি একজন কালান্তরী কিংবদন্তির নায়ক!!! উনার কথা পড়লে চেতনায় শক্তি সঞ্চারিত হয়। একটি জাতিকে উন্নতির শিখরে নেওয়ার জন্য উনার মত রাষ্ট্রনায়ক প্রয়োজন!!!

চমৎকার পোস্ট অণুদা। চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি
অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনের ফাঁসি চাই!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

ও মা, আমি হাসি হাসি, পরব ফাঁসি, মাগো,- একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি !
দাড়ান মশাই, আগে ঘুরে আসি , তারপর দেখা যাবে চোখ টিপি

মিলু এর ছবি

না না ফাঁসিতে চলব না, ফায়ারিং স্কোয়াড গুল্লি গুল্লি গুল্লি

তারেক অণু এর ছবি
অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

বলে রাখি, লেখাটা চমৎকার হয়েছে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি
সাই দ এর ছবি

কিউবার ভিসা কি বাংলাদেশ থেকে করা যায়??

তারেক অণু এর ছবি

যে কোন দেশের কিউবান অ্যাম্বাসীতে গেলেই একমাসের ভিসা দিয়ে দিবে। ঢাকায় কিউবান অ্যাম্বাসী আছে কিনা ঠিক জানা নেই

Udash এর ছবি

আপনেরে নিয়া গুয়া আন্তা নামো কারাগারে ভরে রাখা উচিৎ।

... উদাস

তারেক অণু এর ছবি

গুয়ান্তানামোর আশেপাশে যাব অবশ্য, খুব নামকরা জাদুঘর আছে সেখানে , কিন্তু ভিতরে যেতে যে আমেরিকার অনুমতি লাগে !!

তারাপ কোয়াস এর ছবি

অনবদ্য রিভিউ। ভ্রমণ আনন্দময় হোক।


love the life you live. live the life you love.

তারেক অণু এর ছবি
আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

শুভযাত্রা। ছবি তুলেন দেদারসে। হাসি
কিউবা আমার বিশ্বভ্রমণের পাঁচে আছে।

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই।এই প্রথম পানির নিচে ছবি তুলতে যাচ্ছি, প্রবাল সাগরে গোটা দুয়েক হাঙর পেলেই হয় এখন !

সুমন_তুরহান এর ছবি

যথারীতি চমৎকার লেখা। চলুক তথ্যচিত্রটি দেখতেই হবে।

ফিদেলকে নিয়ে আমার ভেতরে কাজ করে মিশ্র অনুভূতি। তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, শোষিত মানুষের প্রতি তাঁর একাত্মতা, নিজের আদর্শের প্রতি তাঁর অটল আনুগত্য - আমাকে মুগ্ধ করে। তাঁর ব্যক্তি জীবন নিয়ে পঁুজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর ঢালাও মিথ্যাচার/প্রপাগান্ডা আমিও সমর্থন করি না।

কিন্তু পাশাপাশি যখন দেখি - দশকের পর দশক ধরে তিনি ক্ষমতায়, কিউবায় তাঁর কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়া আর সব পার্টি নিষিদ্ধ, কিউবান মিডিয়াগুলো স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারে না, সাংবাদিকরা বাড়াবাড়ি করলে তাদের জন্যে রয়েছে অবধারিত কারাগার, রয়েছে সেন্সরশীপের কড়াকড়ি। কিউবার মানুষও পারেনা ফিদেল বা কমিউনিস্ট পার্টির সমালোচনা করতে। তাদের নেই স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার, নেই অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকার, নেই মিছিল করার অধিকার, নেই কোথাও জমায়েত হয়ে মত প্রকাশের বা প্রতিবাদ করার অধিকার, নেই ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার, নেই স্বাধীনভাবে দেশ ত্যাগের বা দেশে প্রবেশ করার অধিকার, নেই ভোট দেয়ার অধিকার, নেই রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকার। এমন অধিকারহীন, বদ্ধ একটি রাষ্ট্রে বাস করে, শাসকপার্টির দ্বারা পদদলিত হয়ে যদি কিউবার মুক্তিকামী মানুষ সুখ পায়, তাহলে কিছু বলার নেই।

ফিদেলের অনেক অর্জন আছে, বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থে্য সে অর্জন ঈর্শনীয়। এই অর্জনগুলো অসামান্য। কিন্তু মানুষের অধিকার এই কয়েকটি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়। পশ্চিমের মুক্ত গণতন্ত্রের স্বাদ একবার যে পেয়েছে, সে কি সেই অধিকার বিসর্জন দিয়ে পারবো কখনো কিউবার মতো বদ্ধ রাষ্ট্রে বাস করতে। অন্যদের কথা জানি না, কিন্তু যতোই ফিদেলভক্ত হই না কেনো, আমার কাছে কিউবার মতো রাষ্ট্র জর্জ অরওয়েলের 'অ্যানিমেল ফার্ম'-এর মতোই মনে হবে।

মহানায়ক ফিদেল, যাঁকে আমরা অনেকেই শ্রদ্ধা করি, এবং যার বিপ্লবী জীবনের ইতিহাস কিংবদন্তীতুল্য - তাঁর কোনো দরকার ছিলো না জনগণের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করা। বিপ্লবী ফিদেল মহান; কিন্তু শাসক হিসেবে তিনি একের পর এক আত্মহত্যা করেছেন, ক্ষুন্ন করেছেন তাঁর মহত্ত্বকে। হুমায়ুন আজাদকে মনে পড়ছে, তিনি বলতেন- -"বিপ্লবীদের বেশি দিন বাঁচা ঠিক নয়। বেশি বাঁচলেই তারা প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।"

মন মাঝি এর ছবি

-"বিপ্লবীদের বেশি দিন বাঁচা ঠিক নয়। বেশি বাঁচলেই তারা প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।"

একদম খাঁটি কথা। সর্বত্রই এই চিত্র - আফ্রিকা, এশিয়া, সাউথ আম্রিকা। এমনকি বাংলাদেশেও। সব বিপ্লবী, বা পরাধীন জাতি বা সাবেক পাশ্চাত্য-কলোনীগুলির স্বাধীনতা আন্দোলনের গণতন্ত্রকামী/মুক্তিকামী নেতারা, যারাই পরে স্বাধীন দেশের নেতৃত্বের আসনে বসেছেন - তারা প্রায় সবাইই আশ্চর্যজনক ভাবে ভোল পালটে জাতির উপর চিরস্থায়ী জগদ্দল পাথরের মত গেঁড়ে বসেছেন। তখন তারা ভাব নেন যে, যেহেতু তাদের নেতৃত্বে দেশ "স্বাধীন" হয়েছে সেহেতু তারা ঐ জাতির মাথা কিনে নিয়েছেন, উনারাই এখন বংশপরম্পরায় ঐ জাতির মা-বাপ-মালিক-জমিদার-ঈশ্বর সবকিছু। উনারা না থাকলে দেশ জাহান্নামে যাবে। স্টালিন থেকে মুগাবে সবারই একই দশা। এদের বেশির ভাগই শেষমেশ আসলে নিজের বিলাস-ব্যসন আর মেগালোম্যানিয়া চরিতার্থ করা ছাড়া দেশের জন্য আর কিছুই করেনি - দেশ রসাতলেই গেছে। ফিদেল মনে হয় এর মধ্যে সামান্য একটু ব্যতিক্রম। তবে আমার মনে হয় হয়, সবচেয়ে বড় ব্যতিক্রম - ম্যান্ডেলা !

****************************************

সুমন_তুরহান এর ছবি

সহমত। আর, ফিদেল সামান্য একটু ব্যতিক্রম এটা আমিও মানি, আর ম্যান্ডেলা তো অনন্য।

তারেক অণু এর ছবি

ঠিকই বলেছেন মন মাঝি, সবসময়ই এমনটাই ঘটেছে, তাই তো বলা হয়ে থাকে সমাজতন্ত্র হয়তবা ইউটোপিয়া। ফিদেল এদের মাঝে অনেক অনেক ব্যতিক্রম। অনেকেই বলে উনি এত ভাল মানুষ টো নিজের ভাইয়ের হাতে ক্ষমতা দিলেন কেন। আরে ভাই, উনার তো আরো অনেক ভাই বোন আছে কিন্তু রাউল ক্যাস্ট্রো যে কিউবান বিল্পবের অন্যতম নায়ক, সেই প্রথম থেকেই আছেন সরকারে। এর সাথে স্বজন প্রীতির কোন সংযোগ নেই।

তারেক অণু এর ছবি

খুব গুছিয়ে লিখেছেন সুমন ভাই, ধন্যবাদ। আসলে কিছু কিছু ব্যপার কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ জানতে পারি ওয়েস্টার্ন মিডিয়ার মাধ্যমে, সেখানে কমিউনিস্ট শব্দটি একটা জুজু। এটির অস্তিত্ব টের পেলে তিল কে তাল করে যে করেই হোক অপপ্রচার চালাবেই।
পশ্চিমের মুক্ত গণতন্ত্র যে আসলেই জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত কিনা এই নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে , আছে অক্ষমতা। চিলির প্রেসিডেন্ট আলেন্দে কিন্তু নির্বাচিত ছিলেন জনগণের ভোটেই, তাকেই খুন করা হল একমাত্র আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর স্বার্থে আঘাত আসায়। কিংবা কঙ্গোর লুমুম্বাকে। তাহলে অন্যদেশে যেয়ে দেদার হামলা চালানোয় কি সেই পশ্চিমা দেশগুলোর গণতন্ত্র!!!
আমার যত ইউরোপিয়ান বন্ধু আজ পর্যন্ত কিউবা গেছেন, প্রত্যেকেই এক বাক্যে বলেছেন এমন চমৎকার জায়গা তারা আর দেখেন নি, মূল কারণ এখানকার বাসিন্দাদের বন্ধুত্বসুলভ ও নির্লোভ আচরণ। অনেকেই বলেছে তাদের, তোমার ক্যামেরা ছিনতাই করার দরকার নেই আমার, আমি গরিব কিন্তু আমার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে । যা হোক, নিজে দেখে আসি, আটলান্টিকে প্লেন ক্রাশ না করলে নিশ্চয়ই শেয়ার করব সবার সাথে।
আর সেই সাথে ইন্টারনেট বা টেলিভিশনের ১০ তা চ্যানেলে থাকা যে খুব কাজের জিনিস তা কিন্তু নয়, সারা বিশ্বে বরমানে মৌলবাদের এত বিস্তারের অন্যতম প্রধান কারণ কিন্তু টেলিভিশন।
ফিদেলের একটা জিনিস আপনের খেয়াল রাখতেই হবে, যে দেশের ঘাড়ের উপরেই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী শোষণকারী রাষ্ট্র, যে দেশের মূল উপার্জনের রাস্তা চিনি রপ্তানি- যার উপর আছে নিষেধাজ্ঞা, এমন দেশ নিয়ে এই পর্যায়ে পৌঁছানো বিশাল কৃতিত্বের দাবিদার। জাতিসংঘে শেষবার যখন কিউবার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের উপর ভোটাভুটি হয় মাত্র ৪ টি দেশ তাদের বিপক্ষে ছিল, তার মধ্যে ২টি ছিল নাম না জানা দুটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্র যারা ১০০ % আমেরিকার উপর নির্ভরশীল, আর আমেরিকা ও ইসরায়েল !!!!!!

সাইফ জুয়েল এর ছবি

সহমত তারেক অনু। আমরা পশ্চিমা মিডিয়া নির্ভর ধারনার ইপর ভিত্তি করে বলি কমিউনিজম মানুষের কথা কলার ক্ষমতাকে রুদ্ধ করে। পৃথিবীর বহু দেশেই দেশেইতো আজ একনায়কতন্ত্র, বহুদেশেইতো গনতন্ত্রের নাম দিয়ে ভিন্নমত পোষনকারীদের সন্ত্রাসী বলে হত্যা করছে, বহু দেশেইতো সামরিক একনায়ক জনগনের অধিকারকে রুদ্ধ করছে। ওদের নিয়েতো কোন আপত্তি করেনা আম্রিকা আর মিত্ররা? ইসরায়েলকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে তারাই আবার আওয়াজ দেয়, কিউবা আর উত্তর কোরিয়ায় মানুষের অধিকার নেই, তারাই বলে হুগো শেভেজ সন্ত্রাসী, এরাই আবার বাংলাদেশ আর পাকিস্থানের মত দেশগুলোতে ঠিক করে কখন কোন শাষক থাকবে, সামরিক শাষক না তাদের লেজুর কোন তথাকথিত গনতান্ত্রিক সরকার না অন্যকোন তৃতীয় শক্তি।

বর্নবাদী এইসব পশ্চিমা দেশে কি সব মানুষেরই সমান অধিকার আছে? সব ধর্মমতের মানুষ কি সমান সামাজিক মর্যাদা সম্পন্ন? হ্যাঁ আছে, এগুলো তাদের সংবিধান আর মিডিয়াতে আছে। এগুলো হলো কাজির গরু, বাস্তবে নাই।
কে যেন বলেছিল, গনতন্ত্র হল একটা মিথ। সত্যিই তাই।

সুমন_তুরহান এর ছবি

সাইফ জুয়েল ভাই, আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি এক্ষেত্রে। সোভিয়েত ইউনিয়নে কি আসলেই স্বাধীন সংবাদপত্রের, ভিন্নমত প্রকাশের অধিকার ছিলো? যারা স্তালিনের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করেছিলেন তাদের কি পরিণতি হয়েছে? গুলাগ কি কেবলই পশ্চিমের প্রপাগান্ডা না কি এর পেছনে সত্যতা আছে কিছুটা হলেও? আলেকজান্ডার সলঝেনিৎসিন- এর মতো কথাসাহিত্যিকদের কলম কেড়ে নিয়েছিলো এই সোভিয়েত কমিউনিস্টরাই। এমন আরো অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে। সমাজতন্ত্রের পতনের মূল কারণই হচ্ছে ব্যক্তিস্বাধীনতা-বাকস্বাধীনতা হরণ।

আপনি উত্তর কোরিয়ার উদাহরণ আনায় খুবই আশ্চর্য হলাম। উত্তর কোরিয়া এমনই একটি নষ্ট রাষ্ট্র যেখানে পিতা-পুত্র মিলে বিধাতার চেয়েও অধিক নিপীড়ন করছে দেশটির সাধারণ মানুষকে, না খাইয়ে মারছে নিজেদের দেশের নাগরিকদের। যুগের পর যুগ অনাহার-অপুষ্টিতে থাকতে থাকতে উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের গড় উচ্চতা/বৃদ্ধি আজকের দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের চেয়ে ৫.৯ সেন্টিমিটার কম। শুধু তাই নয়, অনাহারী মানুষের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে এক চমৎকার কৌতুক করে চলেছে রাষ্ট্রটির অধিপতিরা। সেই কৌতুকটি কি জানেন? কিম ইল সুং, যে মারা গিয়েছে ১৯৯৪ সালে, সে আজো উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট, এবং থাকবে চিরকাল। মৃত এই নেতাকে 'Eternal President' বানিয়ে রেখেছে উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি। অফিসিয়ালি এই মৃত ব্যক্তি তাদের 'হেড অব স্টেট'। তার সুপুত্র, কিম জং ইল 'শীর্ষ নেতা' পদবি ধারণ করে দেশ চালাচ্ছে। এর নাম সমাজতন্ত্র? এটাকে যদি আপনার কাছে একনায়কতন্ত্র না মনে হয়, তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই ভাই।

ফিদেলকে আমি শ্রদ্ধা করি, এবং তাকে দেবতা বা দানব কোনোটিই মনে করি না। ব্যক্তিপূজা জিনিসটাই আপত্তিকর। কিন্তু কথিত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে এই ব্যক্তিপূজাই দেখেছি বারবার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ব্যক্তিপূজা জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া হয় জনগণের ওপর। আমি ব্যক্তির/লেখকের পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, সেখানে যদি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায় তার প্রতিবাদ করা জরুরি মনে করি। সবকিছুর জন্যে পশ্চিমের মিডিয়াকে দোষারোপ করলে, সেটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো হবে। কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির যদি লুকোনোর কিছু না থাকে তাহলে স্বতন্ত্র সংবাদপত্র প্রকাশের স্বাধীনতা দিক, অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা দিক, ভিন্নমতধারীদের পীড়ন করা বন্ধ করুক।

হতে পারে আমেরিকা আগ্রাসী রাষ্ট্র, সে আগ্রাসন চালিয়ে দখল করে দেশের পর দেশ। কিন্তু এতো ক্ষমতাধর আমেরিকা নিজের দেশের একটি নাগরিককেও অকারণে পীড়ন করে হজম করতে পারে না। নিজের দেশের নাগরিকদের ওপর সে নির্যাতন সাধারণত করে না। ভিন্নমতের কন্ঠ রোধ করে দেয় না। সেখানে নাগরিকদের আছে 'বিল অব রাইটস', আছে আইনের শাসন- যে আইন সবার জন্যে সমান। আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু নিজেদের দেশের জনগনকে তারা মত প্রকাশের অধিকার ঠিকই দিয়েছে। এখানে আমেরিকা আনলাম উদাহরণ হিসেবে, ইউরোপের উদারনৈতিক দেশগুলোর ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে।

কোনো তন্ত্রই চিরস্থায়ী নয়, কোনো তন্ত্রই দিতে পারে না চুড়ান্ত সমাধান। প্রতিটিরই রয়েছে দোষ এবং গুণ। আমাদের ভালোটা নিতে হবে, খারাপটা বাদ দিতে হবে। চাই এমন একটি সমাজ যেখানে শোষণ থাকবে না, ৈবষম্য থাকবে না, রাষ্ট্র পীড়ন করবে না তার নাগরিকদের, সবার থাকবে সমান অধিকার, সবাই মত প্রকাশ করতে পারবে নির্দ্বিধায়।

অ্যামিনেস্টি ইন্ট্যারন্যাশনাল, হিউমেন রাইটস ওয়াচ এর কয়েকটি রিপোর্ট দিলাম নিচে; এগুলো ফক্স নিউজ নয়, কাজেই এগুলোকে পশ্চিমের প্রপাগান্ডা বললে আর কিছুই বলার নেই:

1. World Report 2011: Cuba - Human Rights Watch
2. World Report 2011: North Korea - Human Rights Watch
3. Amnesty International Report 2010 - Cuba
4. Amnesty International Report 2010 - North Korea

সাইফ জুয়েল এর ছবি

সুমন ভাই, সহমত আপনার সোভিয়েত বিষয়ক ধারনার সাথে একমত পোষন করছি কেননা তারা সমাজতন্ত্রকে ধারন করতে পারনি। এক্ষেত্রে হুমায়ুন আজাদ স্যারের কথাটা যে আপনি উদৃতি দিয়েছন কারন ছিল সেটা।

"বিপ্লবীদের বেশি দিন বাঁচা ঠিক নয়। বেশি বাঁচলেই তারা প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।"

কিন্তু উত্তর কোরিয়ার ব্যপারে সহমত দ্বিমত পোষন করছি। এটা দেশ বছরের পর বছর ধরে আর্ন্তজাতিক অবরোধ মধ্যে থাকলে এর জনগনের গড় উচ্চতা কমবে না তো কোন দেশের জনগনের কমবে? উত্তর করিয়ায় এতো অভাব তাও তো তারা পালিয়ে যায়না দলে দলে দেশ ছেড়ে? বিশ্বকাপ ফুটবল খেলাটা দেখেছেন নিশ্চয়ই। দেখেছিলেন ওদের চোখে মুখে আর বডি ল্যাংগোয়েজে ছিল কত প্রতিবাদ। আমি তো ওদের মাঝে দেখেছি তখন বিশ্বের সবচেয়ে উদ্যমী জাতির রুপ। আর কিম ইল সুংকে যদি উত্তর কোরিয়ার লোকজন তাদের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবেই দেখে বলে জানি। আমরা তো তাকে একনায়ক হিসেবে দেখলে চলবেনা? তার দেশের জনগন কিভাবে দেখে এটা বড় কথা। উত্তর কোরিয়াতে কখনও গনঅশন্তোষ হয়েছে বলে শুনিনি। অস্ত্র দিয়ে কিন্তু ক্ষুদার্ত জনগনকে দাবিয়ে যায় না, পৃখিবীতে বহু উদহারন আছে। উত্তর কোরিয়াতে কখনও এটা হয়নি। আর একটা কথা উত্তর কোরিয়ার রুলিং পার্টির নাম ওয়ার্কার্স পাটি, কমিইনিষ্ট পাটি নয়। পাটি পলিট ব্যুরো ঠিক করে কে হবেন পাটি প্রধান। এটা যোগ্যতার ভিত্তিতেই হয় বলে জানি। কি জং ইল বর্তমান প্রেসিডেন্টকে পার্টিই নিবাচিত করেছে বলে জানি।

আর কিউবা, সেখানে চাইলে আপনিও যেতে পারেন। কিউবার জনগনের জন্য আম্রিকার এতো মায়া তো দিক না চিনি রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে। ইন্টারনেট কি কিউবার জনগন চায় নাকি আমরা আমাদের মত করে ভাবি এতে ওরা পিছিয়ে পড়ছে? আমার জানা মতে, সে দেশের জনগন চিকিৎসা, শিক্ষা আর সামাজিক নিবাপত্তা সহ প্রাপ্ত মৌলিক অধিকার নিয়ে খুবই সন্তোষ্ট। পাশ্ববর্তী নোংরা দেশের নোংরামী না লাগতে ওইসব পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদপত্র থেকে জনগনকে দুরে রাখা হয় তাহলে তো সেটা সামাজিক নিরাপত্তার জন্যই করা হয়েছে। এমনতো না এর জন্য কিউবার জনগন অশিক্ষিত থেকে যাচ্ছে আর না খেয়ে আছে।

আর আম্রিকার জনগনের অধিকারের কথা বললেন। আসলেই কি একজন শেতাঙ্গ'র সমান সামাজিক মর্যাদা পায় সেখানে একজন এশিয়ান বা একজন কালারড অধবা একজন নিগ্রো আর মুসলমানদের কথাতো বাদই দিলাম। বিল আব রাইটস এইটা হলো কাজির গরু, কাগজে আছে বাস্তবে নাই। শোনেন পারবারতন্ত্র আম্রিকাতেও চলে আরো বেশী চলে বরং সেইটা ডেমোক্রেসির নাম কইরা। নাইলে কি জর্জ বুশ প্রেসিডেন্ট হয় আর হিলারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়।

আর আমেরিকার বড় মিত্রের দেশের লোকজনের অবস্থাটাতো দেখলেন গত সপ্তাহে। কি করে এত সভ্য দেশের মানুষ এভাবে লুটাপাট চালায়? এরকম লুটপাট ফরাসি দেশেও হইছিল গত বছর। গ্রীসের হইছিল। ভেবে দেখেছেন কেন এসব করে ওইসব দেশের লোকজন? নিশ্চয়ই কোন অপ্রাপ্তি আছে তাদের। না খেয়ে থেকেও কিন্তু উত্তর কোরিয়ার মানুষ এসব করেনা। খুব সাধারন মানের জীবন যাপন করেও কিন্তু কিউবার মানুষ এসব করেনা।

মন_মাঝি এর ছবি

গনতন্ত্র হল একটা মিথ। সত্যিই তাই।

একমত হতে পারলাম না ভাই। গনতন্ত্র মিথ - এটা মনে হয় গার্ডেন অফ ইডেন, বা পার্ফেক্ট স্টেট অফ বীয়িং - জাতীয় কোন কিছুর প্রতি মানুষের নাছোড়বান্দারকম ঐতিহাসিক কিন্তু ইলিউসরি আকাংখাজনিত একটা ভুল বোঝার ফসল। এই সোনার পাথরবাটি পার্ফেক্ট স্টেট অফ বীয়িং ধর্ম আর কমিউনিজম দুই তত্ত্বই প্রমিজ করে, নিজেরা পূরন করতে পারে না অথচ গণতন্ত্রের দিকে তার ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য অঙ্গুলিনির্দেশ করে। অনেকটা চালুনির সুঁচকে জিজ্ঞেস করা - তোর ফুঁটো কেন। যদিও অন্য তত্ত্বগুলির মত গণতন্ত্র কিন্তু এই দাবী বা প্রমিজটা মোটেই করে না। তার কারনও খুব সোজা। দোষ-গুন নিয়েই মানুষ। আর এই দোষ-গুন যতদিন মানুষের মধ্যে থাকবে, যতদিন সে ফেরেস্তা হয়ে না যাবে, ততদিন মনুষ্য-উদ্ভাবিত বা অন্য যে কারো উদ্ভাবিত যে কোন ব্যবস্থাই নিখুঁত-নির্ভুল-পার্ফেক্ট হবে না। আর ডান্ডা মেরে ঠাণ্ডা করে এইসব দোষ-ত্রুটিগুলি পার্মানেন্টলি দূর করা সম্ভবও না, সম্ভব না মানুষকে রাতারাতি ফেরেস্তা বানানো। বরং তাতে হিতে বিপরীত হয়। এটাও ইতিহাস প্রমান করে। তবে গণতন্ত্র ট্রায়াল-এন্ড-এরর প্রকৃয়ায় সাফল্য-ভুল-ত্রুটি স্বীকার ও চিহ্নিত করে তা মূল্যায়ন বা শোধরানোর মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার - উন্নতি করার, তুলনামুলক ভাবে আরো নির্ভুল হওয়ার - ম্যাচিউরড হওয়ার সুযোগ রাখে, অন্যগুলি সেখানে মানুষকে ফসিলীভূত চিরশিশু বানিয়ে রাখে। গণতন্ত্র একটা অপেক্ষাকৃত স্লো এবং ইভোলিউশনারি প্রসেস হতে পারে, হতে পারে অনেকসময় যথেষ্ট বন্ধুর-ক্যাওটিক ও ফ্রাস্ট্রেটিং, কিন্তু তারপরও এটা অনেক তথাকথিত ও স্বঘোষিত "বৈজ্ঞানিক" বা "ঐশ্বরিক" তত্ত্বের চেয়ে অনেক বেশি 'বৈজ্ঞানিক' এবং বাস্তবানুগ। যেখানে কিনা অন্যরা একজায়গাতেই - একটা জগাখিচুড়ি তত্ত্বের বাবলের মধ্যে বাস্তবতাসমেৎ ফসিলীভূত হয়ে যায়, এবং একসময় স্রেফ হাওয়ার ধাক্কাতেই তাসের ঘরের মত হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।

একলাফেই আমরা সর্বসাম্যের বা সব-পেয়েছির কোন পার্ফেক্ট স্টেট -এ কেন পৌঁছে যাচ্ছি না এটা ভাবলে খারাপ লাগতে পারে হয়তো, কিন্তু এটাই পৃথিবীর বাস্তবতা। মানুষ নিজেই আরো অনেক বড় মাপের এক বিবর্তনের ফসল, কমিউনিজমের সর্বহারার একনায়কতান্ত্রিক স্বর্গরাজ্য জাতীয় কোন পার্ফেক্ট ইউটোপিয়ার পথ ধরলে সে কিন্তু বহু আগেই বিবর্তনের কোন কানাগলিতে, কোন ক্যুল ডি স্যাকে আটকা পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত - যেমন কিনা অনেক প্রজাতিই গেছে। এক্ষেত্রেও তাই। ম্যাগ্না কার্টা থেকে ধরলে ব্রিটেনের প্রায় ৮০০ বছর লেগেছে আজকের গণতন্ত্রে পৌঁছুতে, ফ্রান্স-মার্কিনের ২০০-২৫০ বছর, কিন্তু তারা আছে ও থাকবে ভালোয়-মন্দয় মাশাল্লা। কমিউনিজমের কিন্তু বাহাত্তুরেই দফারফা জগতজুড়ে।

আপনার বাকি পয়েন্টগুলির উত্তর সুমন_তুরহান ভাই সুন্দর করেই দিয়েছেন।

সুতরাং আমি বরং বলবো, গণতন্ত্র মিথ -- এটাই আসলে একটা মিথ, যে-ই বলে থাকুক না কেন। হ্যাঁ, ফিদেলের অনেক অর্জন আছে নিশ্চয়ই, তবে সেটা যথেষ্ট নয়।

তারেক অণু এর ছবি

আপনার সবার যুক্তি সিদ্ধ কথাগুলো পড়লাম, আসলে ভাই এই জিনিসগুলো নিয়ে কিন্তু এত সহজে আমরা কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারব না, তবে ব্যক্তি পূজা কিন্তু মানব জাতির এক অতি পুরনো রোগ, এটা কোনদিন সারবে বলে মনে হয় না, অনেক অনেক আগের কোন বলশালী যুবকেরা পূজিত হতে হতে আজো দেবতার আসনে বিদ্যমান (শিব, কার্তিক, ইন্দ্র) সেই সাথে আব্রাহামিক ধর্মগুলোর নবীরা !! মানুষ জাতি এই ক্ষেত্রে এখনো দুর্বল।
সমাজের সবাই সমান অধিকার পাবে- খুব সত্য, সরল, চমৎকার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না বললেই চলে, যে কারনে তথাকথিত কমিউনিজম যেখানেই ছিল অধিকাংশ জায়গাতেই দানব নেতা তৈরি করে গেছে- রাশিয়া, কম্বোডিয়া, রুমানিয়া, হাঙ্গেরি, চেক, পোল্যান্ড, উত্তর কোরিয়াসহ অনেক অনেক দেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে উজ্জল ব্যতিক্রম ছীলেণ ভিয়েতনামের হো চী মিন, কিন্তু তিনি তো ক্ষমতা নিয়ে দেশ চালান নি, তাই তার পরে ফিদেলকে আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় লাগে। একটা কথা কিন্তু ভেবে দেখেন, ফিদেল সহ কিউবান বিপ্লবের নেতারা যে ভাবে দেশ চালাতে চাচ্ছিল তাতে আমেরিকার প্রবল বাধা আর সোভিয়েত ইউনিয়নের ফোঁপর দালালি না থাকলে সেটা আজ কোথায় যেতে পারত !

তারেক অণু এর ছবি

আপনার সবার যুক্তি সিদ্ধ কথাগুলো পড়লাম, আসলে ভাই এই জিনিসগুলো নিয়ে কিন্তু এত সহজে আমরা কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারব না, তবে ব্যক্তি পূজা কিন্তু মানব জাতির এক অতি পুরনো রোগ, এটা কোনদিন সারবে বলে মনে হয় না, অনেক অনেক আগের কোন বলশালী যুবকেরা পূজিত হতে হতে আজো দেবতার আসনে বিদ্যমান (শিব, কার্তিক, ইন্দ্র) সেই সাথে আব্রাহামিক ধর্মগুলোর নবীরা !! মানুষ জাতি এই ক্ষেত্রে এখনো দুর্বল।
সমাজের সবাই সমান অধিকার পাবে- খুব সত্য, সরল, চমৎকার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না বললেই চলে, যে কারনে তথাকথিত কমিউনিজম যেখানেই ছিল অধিকাংশ জায়গাতেই দানব নেতা তৈরি করে গেছে- রাশিয়া, কম্বোডিয়া, রুমানিয়া, হাঙ্গেরি, চেক, পোল্যান্ড, উত্তর কোরিয়াসহ অনেক অনেক দেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে উজ্জল ব্যতিক্রম ছীলেণ ভিয়েতনামের হো চী মিন, কিন্তু তিনি তো ক্ষমতা নিয়ে দেশ চালান নি, তাই তার পরে ফিদেলকে আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় লাগে। একটা কথা কিন্তু ভেবে দেখেন, ফিদেল সহ কিউবান বিপ্লবের নেতারা যে ভাবে দেশ চালাতে চাচ্ছিল তাতে আমেরিকার প্রবল বাধা আর সোভিয়েত ইউনিয়নের ফোঁপর দালালি না থাকলে সেটা আজ কোথায় যেতে পারত !

সুমন_তুরহান এর ছবি

ধন্যবাদ তারেক অণু ভাই, প্রিয় পর্যটক! আপনি ঘুরে আসুন তারপর আপনার কাছ থেকেই আরো জানবো। হাসি

সুমন_তুরহান এর ছবি

"Fidel: The Untold Story"- প্রামাণ্যচিত্রের একটি অংশ - যেখানে নেলসন ম্যান্ডেলা স্বাগতম জানালেন ফিদেলকে, ধন্যবাদ জানালেন কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তাঁর এবং কিউবার মানুষের অকুন্ঠ সমর্থনের জন্যে, অনুরোধ করলেন ফিদেল যেনো দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসেন - এই দৃশ্যটি খুব ভালো লাগলো। ভালো লাগলো মার্কেজের মন্তব্য। মজা পেলাম এলিস ওয়াকারের মন্তব্যেও যে ফিদেল নাচতে বা গান গাইতে কোনোটিই জানেন না। চোখ টিপি

ওলিভার স্টোনের করা "Comandante" দেখেছেন অণু ভাই? ওখানে ব্যক্তি ফিদেলকে আরো অন্তরঙ্গ ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে হলো।

তানিম এহসান এর ছবি

সুনীলের ”ইতিহাসের সপ্নভঙ্গ” বইটা পড়লে কমিউনিজমের অনেক কিছু বোঝা যায়, তার আগের বইটার সাথে এই বইটার তফাৎটা বুঝে নিলে আরো বেশী জানা যায়, কমিউনিজমের পতনের মূলে কি ছিলো। খুবই দরকারী একটা বই মনে হয় আমার কাছে।

তারেক অণু এর ছবি

দেখেছি ভাই, ধন্যবাদ। ভালোই লেগেছিল

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

ফরিদ এর ছবি

হুমম... কিউবায় ইন্টারনেটের ব্যাবপক প্রচারে ফিদেলের ভূমিকা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।

http://en.wikipedia.org/wiki/Telecommunications_in_Cuba

দিগন্ত মুদি এর ছবি

লাতিন আমেরিকা নিয়ে একটা বইয়ের আবেদন জানিয়ে গেলাম কিন্তু ভাই হাসি
আর ফিদেল কাকার বই পড়া নিয়ে বিস্তারিত একটা লেখাও চাই হাসি

তারেক অণু এর ছবি

হবে হবে, স্প্যানিশটা শিখে ফেলেন সড়গড় করে। ইগনাসিও রামোনেতের বইটি অনেকটা সম্পূর্ণ। ফিদেল নিএ নিয়ে লেখা একটা দুর্লভ বই পেয়েছই ১৯৬৭ সালে ছাপা

দ্রোহী এর ছবি

আপনেরে বড় ঈর্ষা হয়!

সাফি এর ছবি

তারেক অণু এর ছবি

আবার কি হল !! আর ঈর্ষায় গুল্লি মেরে চলে আসেন পথে---

তাসনীম এর ছবি

চমৎকার লাগলো। যাত্রা আনন্দময় হোক।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তারেক অণু এর ছবি
রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন তারেক। অনেক কিছু জানা গেলো। আমি ব্যাক্তিগতভাবে কিউবান ভলিবল টিমের বিরাট ফ্যান বনে যাই অলিম্পিকের সময় আসলে।

বঁ ভয়্যা। ফিরে এসে পোস্ট দিতে ভূলবেন না যেনো!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি

কিউবানরা অনেক স্পোর্টেই খুব ভাল, মহিলা-পুরুষ দুই ক্ষেত্রেই। ফেলিক্স স্যাভন তো অনেক বছর বিশ্বের সেরা মুষ্টিযোদ্ধা ছিলেন।

The Reader এর ছবি

যাত্রা শুভ হোক । হাসি

তারেক অণু এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ। পথে মস্কোতে বিশাল লম্বা ট্রানজিট, সেখানে নেট পেলে আবার যোগাযোগ হবে সবার সাথে

নিটোল(অতিথি) এর ছবি

লেখা অতি উত্তম।

তারেক অণু এর ছবি
ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
নজমুল আলবাব এর ছবি

টাকা হলে একবার যাবো কিউবাতে। হাসি

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই। কিউবা অনেক দূর বলে যাওয়াটাতেই অনেক খরচ হয়ে যায়

অর্ফিয়াস এর ছবি

পুঁজিবাদী শোষকদের বিরুদ্ধে বিপ্লব আমরণ চলবে, সাম্রাজ্যবাদের অপ প্রচেষ্টা মানুষ সঠিকভাবে আজ বুঝতে পারেনি ঠিকই কিন্তু একদিন তার বিরুদ্ধে শোষিতরা একসাথে জেগে উঠবেই, মুক্তির অপেক্ষায় .....

তারেক অণু এর ছবি

সমস্যা হয়ে গেছে পুঁজিবাদীদের বিরুদ্ধপক্ষ বলে বিখ্যাত সাম্যবাদীদের নেতা স্ট্যালিন যে দমন পীড়ন চালিয়ে গেছে, মানুষ এখন দোলাচলে ভুগে, আসলে কোনটা সঠিক পন্থা।

স্পর্শ এর ছবি

কিউবা যাচ্চছেন!! কী দেখলেন, কেমন দেখলেন, সব লিখবেন। প্রতক্ষদর্শির কাছ থেকে জানতে চাই ফিদেল কাস্ত্রো আসলে দেশটাকে কেমন রেখেছে। লোকাল মানুষের সাথেও কথা বলবেন। প্রচুর ছবি তুলবেন। আর অবশ্যই আমাদের সাথে শেয়ার করবেন আপনার অভিজ্ঞতা।

কিউবার ভিসা পাওয়া সত্যিই কি এত সহজ? তাহলে ঘুরে আসা যায় চিন্তিত


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

তারেক অণু এর ছবি

জানাবো। লিখা শুরু করেছি। ভিসা তো খুব সহজেই দিল, বলে ছিল পাসপোর্টের মেয়াদ থাকলেই হবে।

কল্যাণF এর ছবি

অণু আবারো অর্বুদ-নির্বুদ হিংসা, তবে পজিটিভ হিংসা, ভালোমত ঘুরাঘুরি শেষে মেলা মেলা অসহ্য রকম ছবি নিয়ে আসো আর পোস্টাও। সত্যি কথা হল তোমার কিলিমানজারো ট্যুরের এখনো কিছু করিনি কারণ হাতে সময় আছে। তাছাড়া এই বছরেই ডিসাইড হবে থাকব নাকি চলে যাবো। থাকা হলে জোবার্গ থেকে তোমার ট্যুরের ব্যবস্থা করার চেস্টা করব। উত্তম জাঝা!

মিজান এর ছবি

অনু ভাই,
বাংলাদেশ থেকে কিউবা অথবা কেপ টাউন/জোনার্সবার্গ এ ট্যুরে যেতে হলে কি ধরনের ডকুমেন্ট লাগবে ভিসা পাওয়ার জন্য। কিভাবে এপ্লাই করতে হবে এবং খরচ কেমন লাগতে পারে। বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম।
আপনার শুভাকাংক্ষী,
মিজান

মিজান এর ছবি

অনু ভাই,
বাংলাদেশ থেকে কিউবা অথবা কেপ টাউন/জোনার্সবার্গ এ ট্যুরে যেতে হলে কি ধরনের ডকুমেন্ট লাগবে ভিসা পাওয়ার জন্য। কিভাবে এপ্লাই করতে হবে এবং খরচ কেমন লাগতে পারে। বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম।
আপনার শুভাকাংক্ষী,
মিজান

তারেক অণু এর ছবি

কিউবার ভিসা খুব সহজ, পাসপোর্টের মেয়াদ থাকলেই দিয়ে দেবে। কিন্তু ভাই, দক্ষিণ আফ্রিকারটা বলতে পারছি না। তবে দেশ থেকে প্লেন ভাড়া পড়বে অনেক। আপনি আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিলে সাথে সাথে উত্তর দিতে পারব

পারী এর ছবি

অসাধারন একজন মানুষ কে নিয়ে অসাধারন একটি লিখা। অনেক ভালো লাগলো পড়ে। শুধু আমরাই পারি না আমাদের মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে মন খারাপ

পারী এর ছবি

অসাধারন একজন মানুষ কে নিয়ে অসাধারন একটি লিখা। অনেক ভালো লাগলো পড়ে। শুধু আমরাই পারি না আমাদের মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।