• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ধর্ম ধর্ষণ - প্রথম পর্ব

তাপস শর্মা এর ছবি
লিখেছেন তাপস শর্মা [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১৪/০৮/২০১১ - ১০:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছেলেবেলায় একবার আমার এক বন্ধুকে নিয়ে ক্লাস শেষে তার হাত ধরে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। স্কুলে সে ছিল আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমরা একসাথে খেলতাম, কাদায় গড়াগড়ি খেতাম, এমনকি বেঞ্চে বসা নিয়ে মারামারি অবধি করতাম। তারপরও প্রতিদিন নিজেদের টিফিন শেয়ার করতাম। সেই আমার বন্ধুকে যেদিন বাড়িতে নিয়ে আসলাম, ঠিক কি বলব বুঝতে পারছিনা একেবারে, বলতে গেলে দক্ষযজ্ঞ বেধে গেলো।

আর সেই দক্ষযজ্ঞের হোতা আমার ঠাকুরমা। আজ অনেকদিন পর মনে পড়ল তার কথা। আমার আদরের ঠাম্মা। যাই হোক সেই বন্ধুর আত্মপরিচয় পেয়েই আমার ঠাকুরমা উঠুনে পা ছড়িয়ে বসে রীতিমতো মরাকান্নার মতো চিৎকার শুরু করলেন। সাথে স্বগতোক্তি – হায়রে এইডা কি করলিরে মোনা(আমার ডাকনাম), কারে নিয়া আইলি। তুই ক্যামনে এই পোলাডারে বাড়িতে ঢুকাইলি। কই ধর্মকর্ম কি সব বিসর্জন দিলি। সেই দিনটার কথা আমার এখনও মনে পড়ে। আমরা দুই বন্ধু আমাদের ঘড়টার এক কোনায় চুপ করে দাঁড়িয়েছিলাম। ভয়ে আমাদের সারাটা শরীর কাঁপছিল। বিসর্জন কথাটার মানে ঠিক ঐ দিন বুঝে উঠতে পারিনি। যদিও রবীন্দ্রনাথের দৌলতে শব্দটা আমার কাছে পরিচিতই ছিলো। কিন্তু এর মানেটা ঠিক জানতাম না। সেই দিন ১২ বছর বয়সের দুটি অবোঝ বাচ্চার উপর যে কি ঝড় বয়ে গিয়েছিলো তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তারপর আমার মা সেই বন্ধুটিকে বলে বুঝিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলো। সেদিন আমার যে কি কান্না পেয়েছিলো তা বুঝাতে পারব না। তাকে স্কুল থেকে বলে নিয়ে এসেছিলাম যে নারকেলের সন্দেশ খাওয়াব, কিন্তু পারলাম না। এইখানেই শেষ নয়। সে চলে যাওয়ার পর ঠাকুরমা লাগলেন আমায় নিয়ে। স্কুল ড্রেস সমেত আমাকে নিয়ে বসালেন উঠুনে, তারপর কলসি করে জল নিয়ে এসে আমাকে স্নান করালেন। তুলসি পাতা দিয়ে গঙ্গা জল ছেটালেন আমার উপর। তারপর আমাকে ঠাকুরঘরে নিয়ে গিয়ে কি যেন সব করলেন,তারপর আমার গলার পৈতেটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, - গায়েত্রি মন্ত্র জপ কর! আমিও শুরু করলাম- ওম ভুর ভুবস্বহা............

এই দিন আমার মাকে আমি ভীষণ ভাবে কাছে চাইছিলাম। ঠাকুরমা যখন আমায় নিয়ে এইসব করছিলো, তখন ভাবছিলাম এই আমার মা চলে আসবে আর আমাকে তাড়াতাড়ি ঘরে নিয়ে যাবে এইসব থেকে। কিন্তু মা আসেন নি। কেন আসেন নি তার কারণটা আমি জেনেছিলাম বড় হয়ে। সেইদিন আমার মতো আমার মাও ছিলে অসহায়। যাইহোক এই গোটা ঘটনার মূল কারণ আমার সেই বন্ধু! না, ও নয় ওর পরিচয়! ওর বাড়ি মুসলিম পাড়ায়। এটাই ছিল আমার ঠাকুরমা রোষের কারণ। ও মুসলমানের ছেলে। আর আমি হিন্দু কুলীন ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে। সেই আমার বন্ধু, আমার জিগরের দোস্ত রাসেল তারপর আর আমার বাড়িতে আসেনি। স্কুলে গেলে কথা বলতাম ঠিকই কিন্তু একটা বিষ আমদের মাঝে যেন গুলে দিয়েছিল কেউ। আমারা আর সহজ হতে পারিনি কোনদিন। তারপর কালের স্রোতে রাসেল আর আমি হারিয়ে গেছি আজ বহুদিন হল। আমিও স্কুল পালটালাম। তারপর আর ওর কোনো খোঁজ রাখিনি। শুনেছি ও নাকি এখন বিদেশে থাকে।

আজ আমার ঠাকুরমা আর নেই। অনেক মুসলমান বন্ধুই আমার সাথে আমার বাড়িতে যায়। আমার সাথে ভাত খায়। আমার মা ভাত বেড়ে দেন আমাদের। কিন্তু রাসেল কে পাইনা। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, আমার দোস্ত রাসেল। আজ এই লেখাটা লেখার সময়ও আমার মনটা ওর জন্য ছুটছে কোন এক অচিন প্রান্তরে। বুঝিনা, জানিনা জাত কাকে বলে? সত্যিই জানিনা। জানিনা আমি কোন জাত। এর কারণটা আমার কাউকে বলা হয়নি। স্কুলে খেলতে খেলতে একদিন আমি রাসেলকে একটা বাসের কঞ্চি দিয়ে আঘাত করেছিলাম। তার আঙুল কেটে রক্ত ঝরা শুরু হয়েছিলো, আর তার কি কান্না। আমি তো ভয়ে সিটিয়ে গিয়েছিলাম। পাছে সে গিয়ে স্যার কে বলে দেয়। কোথায় থেকে যে বুদ্ধি মাথায় এলো আমি ওর আঙুলটা নিয়ে নিজের মুখে ঢুকিয়ে দিলাম। তারপর.........


মন্তব্য

অপছন্দনীয় এর ছবি

দুঃখ পেলাম :(

কৌস্তুভ এর ছবি

জাত গেল জাত গেল বলে এ কী আজব কারখানা...

এই অনর্থ-সৃষ্টিকারী গোঁড়ামিগুলো যত তাড়াতাড়ি আমাদের মধ্যে থেকে যায় ততই মঙ্গল। আপনার ঘটনা শুনে দুঃখ হল।

শেষে ছবিটা না দিলেও চলত মনে হয়। আসলে লেখাটা পড়তে পড়তে যে মুড আসে, তারপর ছবিটা কেমন বেখাপ্পা লাগে...

স্বাধীন এর ছবি

আশা করি আপনার বন্ধুর চোখে এই লেখাটি ঠিকই পৌছে যাবে কোন না কোন ভাবে। দুনিয়াটা খুব ছোট...

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ধর্ম যে ক্ষতিগুলো করেছে বা করে তারমধ্যে এটা একটা!!!! নির্মম সাম্প্রদায়িকতা!!! :( দেখুন প্রিয় বন্ধুটিকে খুঁজে পাওয়া যায় কী না, কোনভাবে!!!!


_____________________
Give Her Freedom!

The Reader এর ছবি

বন্ধুটিকে ফিরে পান , এই কামনা করছি । ভাল থাকবেন :)

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ছবিটার মর্মার্থ বুঝলাম না!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মৃত্যুময়-ঈষৎ এর ছবি

এটাই মনে হয় প্রথম লেখা। অতিথি লেখক সময়ে আমিও প্রথমে ভেবেছিলাম ছবি অপশনে বুঝি ব্যক্তিগত ছবি দিতে হয় যা পরবর্তীতে পোস্টের লেখকের ছবি হিসেবে প্রদর্শিত হবে; যদিও কোন এক কারণে শেষ পর্যন্ত আর দেই নি- রক্ষা। আমার মনে হয় ঐ ছবি অপশনের পাশে একটা তথ্য থাকা উচিৎ যা বলবে ছবিটি কীসের কীসের হতে পারে, তাতে আর বিভ্রান্ত হবার সুযোগ থাকে না। :)

মন_মাঝি এর ছবি

আমার কলেজ জীবনের হিন্দু ধর্মাবলম্বী বন্ধু পিন্টু সেসময় আমার বাসায় আসতো, কিন্তু কোনদিন আমাদের বাসায় কিছু খায়নি সে অনেক সাধ্য-সাধনা সত্ত্বেও (গোমাংসের চিহ্নও থাকবে না এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও)। এমনকি জলস্পর্শ পর্যন্ত করত না। অর্থাৎ একগ্লাস পানিও না। কারন জিজ্ঞেস করলে প্রথমে এড়িয়ে যেত, পরে শুধু হাসত। কিছু বলত না। আমি এই সংস্কারগুলি সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না, তাই এখনও ওর কারনটা আমার কাছে স্পষ্ট না। তবে একটা ক্ষোভ তখনই সৃষ্টি হয়েছিল। শেষের দিকে আর ওকে আসতে বলতাম না। এড়িয়ে যেতাম।

সজল এর ছবি

ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় একবার এক ভদ্রলোকের বাসায় যাওয়ার পর পিঠা খেতে দিলেন। আমি বেশ লাজুক ছিলাম, তাই কিছু খাচ্ছিলাম না। তখন তিনি তার স্ত্রীকে বললেন, ও শেখের বাড়িতে কিছু খাবে না। সাথে সাথে পিঠা খাওয়া শুরু করে দিলাম। এখন বুঝতে পারি, হিন্দুদের নিয়ে উনার এমন অভিজ্ঞতা ভালোই ছিলো :) হায়রে জাত!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

পাপী [অতিথি লেখক] এর ছবি

এই জাতভেদটা বড় বেশী নির্মম। আমি অনেককে দেখেছি পূজার পর যে প্রসাদ দেয়া হয় তা না খেতে। কিন্তু, আমার কথা ওটাতে তো এমন কিছু নেই যে খেলে মারাই যাব, তাই না? তাহলে সমস্যা কোথায়?!! যাইহোক, লেখাটা হৃদয়কে ছুঁয়ে গেল। চালিয়ে যান। (Y)

তানিম এহসান এর ছবি

এই ভেদেই মরেছে বাঙালী, জিতে গেছে জিতনেওয়ালারা!

 তাপস শর্মা  এর ছবি

যারা লেখাটি পড়েছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেকেই শেষের ছবিটি সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন। আসলে এটাই আমার সচলায়তনে প্রকাশিত প্রথম পোস্ট। আমি তাই ব্যবহার সম্পর্কেও ঠিক সচল নই। ছবির অপশন দেখে মনে হয়েছিলো প্রোফাইল পিকচার চাইছে তাই ছবিটি দিয়েছিলাম। ছবিটার মর্মার্থ আর কিছুই নয়।

অতিথি_পদ্মজা এর ছবি

জাত! হায়রে! এই জাতের যাতাকলে যে কতজনের জীবন গেলো!
ঠাম্মা কেনো, এই প্রজন্মের সবাই কি সংস্কার মুক্ত?
বুঝিনা। কেন বুঝিনা, তাও বুঝিনা!

ভালো লাগলো।

সুবর্না এর ছবি

এই জাতপাতের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে বাবাসাহেব আম্বেদকর হাজার হাজার মানুষ নিয়ে জামাতে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহন করেছিলেন।

আনু এর ছবি

একই রকম একটি ঘটনা আমার স্কুল জীবনে ঘটেছিল। বন্দ্ধুটির নাম তন্ময়। তার পোর ঠেকে আমাদের বন্দ্ধুত্ব আরো ঘনো হয়েছিল। এখনো আমরা খুব ভাল বন্দ্ধু। - আনু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।