১. উৎসর্গ: মিশুক মুনীর, তারেক মাসুদ এবং তাদের মৃত তিন সঙ্গী
আজকাল মানুষের ভিড়ে মানুষ খুঁজিনা, নিজেকেই খুঁজি!
মানুষ এখন দ্রব্যগুণে মানুষ হয়ে গেছে, তাই বুঝি
মানুষ নগণ্য এখন, হয়ে গেছে নতজানু, পঙ্গু ক্রীতদাস -
এ-শুধু অক্ষম সময়ে টিকে থাকার সক্ষম প্রয়াস।
আজকাল মনুষ্যত্বের দাবি নিয়ে আসিনা মানুষের কাছে -
জেনে গেছি - ’মনু’ থেকে ’হুশ’ বিভাজিত হয়ে গেছে;
এ-কোন সারমর্ম নয়, নয় তর্কের খাতিরে আলোচনা,
মানুষের হাতে মনুষ্যত্ব পরাজিত আজ, মাননা?
মানি, কিন্তু মেনে নিই কিভাবে - ঘটে গেছে সর্বশেষ পরাজয় -
প্রকৃতি- কি মেনে নেবে, কোনদিন মেনেছে বলে মনে হয়?
শোনহে প্রাকৃত মানুষ, পরাভূত সময়ের কাছে হতে নেই পরাজিত,
সর্বব্যাপী আঁধারে, আলোর সর্বশ্রেষ্ঠ জ্বলে উঠাটাই প্রত্যাশিত!!
- বরিশাল, ১৩. ০৮. ২০১১
২. উৎসর্গ: শহীদ মুনীর চৌধুরী, আমাদের ক্ষমা করবেন!
যারা চলে যায় তারা সব ফেরারি জোছনার মত চলে যাক,
চলে যাক জ্যৈষ্ঠের খরতাপ ধুয়েমুছে দিয়ে প্রবল বরষার মত,
তারা সব - পলাতক পাখীদের মত পলাতক থাক,
আমাদের পলাতক হতে নেই, আমাদের বেঁেচ থাকা অবিচল অবিরত।
- বরিশাল, ১০. ০৮. ২০১১
.................. তানিম এহসান
মন্তব্য
আজকাল অতিথি লেখকদের কবিতা দেখলেই তানিম ভাইয়ের কবিতাটা আলাদা করে বুঝতে পারি। কবিতার থিমটা চমৎকার কিন্তু একটা জায়গায় লাইনগুলো খুব পরস্পর বিরোধী মনে হল: প্রথম কবিতাটার শেষ চারটা লাইনের প্রথম দু, লাইনে দেখলাম মানুষের শেষ পরাজয় ঘটে গেছে এবং ফলাফল স্বরুপ প্রকৃতি সব শেষ করে দিচ্ছে বা দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছে আবার শেষ দু, লাইনে দেখলাম আবার সম্ভাব্য পারজয় ঠেকানোর আহবান, সেই সাথে আলোকিত হবার আহবান।
আমার অবশ্য বোঝার ভূল হতে পারে। কবির ভাব ধরতে পারা যে জগতের অন্যতম কঠিন কাজ।
নির্মম সত্য, তানিম ভাই!!!
চমৎকার লাগলো তানিম ভাই।
শ্রদ্ধেয় তারেক মাসুদের জন্মস্থান আর আমার পূর্ব পুরুষের বাসস্থান একি এলাকায়, এটি জানার পর আরো বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলাম। উনি উনার জন্মস্থানকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন, আসলে উনি ছিলেন প্রায় সর্বগুণের অধিকারী একজন মানুষ। বাঙালী কী হারালো এটা বুঝতে হত্যাকারী বাঙালির সময় লাগবে।
আপাতত শুধু চাই 'কাগজের ফুল' উনার স্বপ্নের মত করেই তৈরি হোক, ক্যাথরিন মাসুদ সেই শক্তি-সাহসে বলীয়ান হোক। আর সমগ্র বাংলাদেশ-আমরা তাঁর স্বপ্নের সাধে সদা পাশে জাগ্রত আছি।
অটঃ ভাইয়া, বহুদিন পর আমি একটি কবিতা লেখার অপচেষ্টা করেছিলাম, আবেগের প্রতি সরল-সৎ থাকতে যেয়ে মানোত্তীর্ণ হয়তো হয় নাই তবু আপনি পড়লে খুব খুশি হবঃ "এ মাটি তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কোনদিন হয় নাই বিস্মৃত!"।
_____________________
Give Her Freedom!
উপরে সাইফ জুয়েল ভাইয়ের সাথে একমত, কবি হিসেবে তানিম এহসান ভাই ক্রমশই স্বতন্ত্র সুর তৈরি করে নিচ্ছেন। দু'টি কবিতাই অসাধারণ; কবিতার শৈলী খুবই ভালো লাগলো।
কিন্তু দারুণ বেদনা জাগালো কবিতার সুর। সবকিছু শূন্য মনে হচ্ছে। এতো বড়ো একটা ক্ষতি হয়ে গেলো আমাদের! ভেতরটা হাহাকার করে উঠছে।
@তপু, তপু তোমাকে উদাস নয় তপু হিসেবে জানতে পেরে কেমন লেগেছে বলে বোঝাতে পারবোনা। তোমাদের সবাই আমার খুব আপনজন, হয়তো জাহাঙ্গীরনগরে যাওয়ার পর পরিবর্তিত জীবন শারীরিক ভাবে কাছে থাকতে দেয়নি কিন্তু আমি জানি আমি ছিলাম। কত বড় হয়ে গেছো, আপাত গম্ভীর ছেলেটা এখন বিবাহিত, আকাশও ছুয়ে ফেলেছে। তোমার মাটিতে ফিরে আসার চেষ্টায় আকাশ যেন সাথে থাকে। আরো বড় হও!
@জুয়েল, শেষ চার লাইনের প্রথম দু’লাইনে বলতে চেয়েছি প্রকৃতী কোনদিন মানুষের সর্বশেষ পরাজয় মেনে নেবেনা। প্রকৃতি কোনদিন মেনে নেয়নি, মানবেওনা বলে আমি মনে করি। সে কথাই বলার চেষ্টা করেছি। নিজের সাথে কথা বলেছি রাত জেগে তারপর মনে হয়েছে জ্বলে উঠবো সেটাই নিজের কাছে প্রত্যাশিত আর কিছু নয়।
ওহে মৃত্যুময় ইষৎ, কবি মৃত্যুময় - খুব বেশী ভেঙে যেতে নেই, পরে আমার মত প্রতি রাতে হাইপ্রেশারের পথ্য খেতে হবে। যতটুকু ভাঙবে তারওবেশী নিজেকে গড়ে নিতে হয় ভাঙনের হাত ধরে, নইলেযে আরো ভাঙনের জায়গা তৈরী হয়ে যায়! কবিতা পড়বো। সাথে আছি
@সুমন ভাই, ক্ষতি কতদূর হয়েছে তা বুঝতে আমাদের আরো সময় লাগবে। গতকাল ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়েছি ”জামাতের একবিংশ শতাব্দীর বুদ্ধিজীবি হত্যার তালিকা থেকে তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীর বলে দুজনের নাম কাটা গেছে ........” জামাতের তালিকায় রুই-কাতলাদের নাম কোনদিন থাকেনি, থেকেছে প্রাজ্ঞদের নাম - এ ক্ষতি কোনদিন পূরণ হবেনা।
এরই মাঝে আমরা আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ আলো নিয়ে বাচি!
নতুন মন্তব্য করুন