ইশ্বরের খোঁজে - আমার যৌক্তিক ভাবনা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৫/০৮/২০১১ - ৮:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ধর্ম ও বিজ্ঞান সব সময়ই পরস্পর বিরোধী। একটি কখনো আরেকটিকে স্বীকার করতে চায় না। ধর্মের মূল ভিত্তি হচ্ছে অদেখা কাল্পনিক বস্তুতে বিশ্বাস, বিজ্ঞানের মূল ভিত্তি হচ্ছে তত্ত্ব, পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ ও যুক্তিতে।
ধর্ম ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমি তাই বিজ্ঞানকেই সমর্থন করি।

ধর্মের মূলে রয়েছে ইশ্বর নামক কাল্পনিক সত্বার উপস্থিতি। ইশ্বর সর্বশক্তিমান ও অবিনশ্বর এবং ইশ্বরের সৃষ্টি বা ধংস নেই। বলা হয়ে থাকে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন ইশ্বর।

বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে প্রধান তিন ভাগে ভাগ করা যায়- স্থান, কাল ও পাত্র। পাত্রের আরেক নাম বস্তু। অর্থাৎ স্থান, কাল ও বস্তু নিয়ে এই মহাজগত গঠিত।

স্থান অসীম, অর্থাৎ স্থান বা স্পেসের কোনো সীমারেখা নাই। কোনো স্থানে কোনো বস্তু থাকুক বা না থাকুক, সেই স্থান মিথ্যে হতে পারে না। ধরা যাক একটি গ্লাসে পানি আছে। আমরা বলি গ্লাসটি পূর্ণ। একটি খালি গ্লাসের ক্ষেত্রে আমরা বলি গ্লাসটা শূণ্য। কিন্তু গ্লাসের মধ্যকার স্থানটি বিদ্যমান। স্থান অসীম ও নিরাকার। স্থানের কোনো সৃষ্টি বা ধংশ নেই। স্থান অবিনশ্বর। বিগব্যাঙ্গের আগেও তাই স্থান বা স্পেস ছিল। ব্রহ্মাণ্ডে গ্রহ নক্ষত্র নিহারিকা না থাকলেও স্পেস থাকবে।

স্থানের মতো কালও অসীম, নিরাকার ও অবিনশ্বর। অর্থাৎ, কালের কোনো সৃষ্টি বা ধংশ নেই। আমরা কালকে কখনও দেখতে পাই না, শুধু ঐ সময়ে সংঘটিত ঘটনাগুলো দেখতে পাই। কাল তিনটি- অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। কাল সর্বদা গতিশীল বলে আমরা বর্তমান কে কখনও পরিমাপ করতে পারি না। বর্তমান কাল হয় অতীত ও ভবিষ্যতের সংমিশ্রণ। যাই হোক, সৃষ্টির পূর্বেও কাল ছিলো, এটা কোনো ভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই। কাল বা সময় কে সৃষ্টিও করা যায় না, বিনাশও করা যায় না। অর্থাৎ, মহাবিশ্ব সৃষ্টির আগেও কাল ছিলো, এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টি অসীম কালের ডায়েরীতে একটি ছোট ঘটনা মাত্র।

বস্তুর আরেক নাম পদার্থ। আইনস্টাইনের E=Mc^2 থেকে আমরা জানি পদার্থ ও শক্তি একই জিনিস। পরবর্তিতে পারমাণবিক বোমার আবিষ্কারই এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ। Matter ও Anti-Matter যখন ফিউজ করে, তখন পুরো ভরটাই শক্তিতে রুপান্তরিত হয়। শক্তি মহাজগতের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শক্তির কোনো সৃষ্টি বা ধংশ নেই, অর্থাৎ শক্তি অবিনশ্বর। সবসময় শক্তি ছিলো এবং থাকবে। আমরা শুধুমাত্র শক্তির রুপান্তরটাই দেখতে পাই। মহাবিশ্বে আমরা যাই দেখতে পাই, তার সবই হয় পদার্থ অথবা শক্তি। অর্থাৎ, মহাবিশ্ব তৈরিতে নতুন করে কোনো শক্তির সৃষ্টি হয় নি, শক্তির রূপান্তর ঘটেছে মাত্র।

তাহলে দেখা যাচ্ছে স্থান, কাল ও পাত্র শুরু থেকেই ছিলো। স্থান, কাল ও পাত্রের কোনো সৃষ্টি বা ধংশ নেই। কাজেই, যে স্থান কাল বস্তু শুরু থেকেই বিদ্যমান, সেগুলো আবার ইশ্বর সৃষ্টি করলেন কীভাবে? আর সেগুলো যদি নিজে থেকেই অবিনশ্বর হয়ে থাকে, তাহলে এ ক্ষেত্রে ইশ্বরের কৃতিত্বটা কোথায়? এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড অর্থাৎ স্থান, কাল ও পাত্র ইশ্বর যদি সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে তিনি তা কোন স্থানে, কোন কালে ও কোন শক্তি ব্যবহার করে সৃষ্টি করেছেন?

-অ্যালবেট্রস


মন্তব্য

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনার অ্যানালাইসিস বাড়াবাড়ি রকমের সরল আর অনেক ক্ষেত্রেই ভুল। ভুল বলতে আমি বোঝাচ্ছি আপনার কল্পনা। যেমন আপনি বলেছেন,

দেখা যাচ্ছে স্থান, কাল ও পাত্র শুরু থেকেই ছিলো

কিন্তু এখনকার বিজ্ঞান কি তাই বলছে? বিজ্ঞান বলছে আসলে বিগ ব্যাং এর আগে কাল বা সময় বলে কিছু ছিল না। বিগ ব্যাং থেকেই কাল বা সময় এর সৃষ্টি। আপনি যেভাবে বলেছেন, স্থান বা স্পেস অসীম সময় ধরে ছিল এবং ভবিষ্যতেও অসীম সময় ধরে থাকবে, ব্যাপারটা কিন্তু সেরকম না, বরং বিং ব্যাং হাইপোথিসিস অনুযায়ী বিগ ব্যাং এর থেকেই সৃষ্টি হল স্পেস। ব্যাপারটা অনেকটা এভাবে বলা যায় বরং, যেহেতু বিগ ব্যাং এর আগে কোন সময় ছিল না, তাই 'তার আগে' আগে কি ছিল এই প্রশ্নটাই অবান্তর।

আপনি আরো বলেছেন,

শক্তির কোন সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই

এই ধারণাটাও কি অনেকটা ঈশ্বরের ধারণার মত নয়? ইশ্বরের কোন সৃষ্টি বা বিনাশ নেই? এই অবিনশ্বর শক্তি কিভাবে তৈরী হল? সেই ব্যাখ্যাটা বিজ্ঞান দেবার চেষ্টা করে, আপনি কিন্তু সেটাকে অনেকটা বিশ্বাসের মত করে বলে গেছেন। এখনকার হাইপোথিসিস অনুযায়ী আসলে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে শূণ্য থেকে। সেই শূন্য থেকে শক্তি যেমন উৎপন্ন হয়েছে, নেগেটিভ শক্তিও উৎপন্ন হয়েছে, যার ফলে মোট যোগফল শূণ্য।

আপনার পুরো লেখাটিই এরকম বিজ্ঞানের নামে আরেক ধরণের বিশ্বাস নিয়ে লেখা। বিশ্বাস নিয়ে যখন কেউ লেখেন তখন আবঝাব দেয়া চলে, কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে কিছু লেখাটা কিন্তু যথেষ্ট দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। ধর্ম যেরকম কোন প্রমাণ ছাড়া বা যুক্তি ছাড়া অনেক কথা বলে ফেলে, বিজ্ঞান কিন্তু সেটা পারে না।

আপনি কি উপসংহারে আসছেন সেটা যেমন জরুরী, কিভাবে সে উপসংহারে আসছেন সেটাও কিন্তু জরুরী।

চাইলে নীচের ভিডিওগুলো দেখতে পারেনঃ


চাইলে ইউটিউব থেকে পরবর্তী ভিডিওগুলোও দেখতে পারেন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

আপনি কিসের ভিত্তিতে বলতে পারলেন আমার এই লেখার পিছনের বিজ্ঞানের চেয়ে আমার নিজস্ব বিশ্বাসই বেশি ভূমিকা নিয়েছে, ব্যপারটা বোধগম্য হলো না। আর, আমার লেখাটি আপনার কাছে বাড়াবাড়ি রকমের সরল লেগেছে, তার কারণ এর চেয়ে সরল ভাবে লিখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
আপনি বলতে চাচ্ছেন, বিগব্যাঙ্গের আগে স্পেস ছিল না। কিভাবে ছিল না, এই ব্যপারে আপনার নিজস্ব ব্যাখ্যা কী? আমি পোস্টেই ব্যাখ্যা করেছি স্পেস সম্পর্কে, আমার নিজস্ব দর্শনের ব্যাখ্যা করেছি, আপনি বলছেন বিগব্যাঙ্গের আগে স্পেস ছিল না, রেফারেন্স হিসেবে আপনি বিজ্ঞানীদের তত্ত্বের কথা বলেছেন। এ ব্যপারে আপনার নিজস্ব যুক্তিটা কী একটু ব্যাখ্যা করবেন কী?
বিগব্যাঙ্গের ফলে অকল্পনীয় পরিমাণ শক্তি একটি বিন্দু থেকে বিষ্ফোরিত হয়ে এই মহাবিশ্ব গঠিত হয়েছিল। স্পেস কে কোনোভাবে পরিমাপ করার উপায় নেই, আপনি চাইলেই কিছু পরিমাণ স্পেস কে একটি বোতলে সংকুচিত করে বন্দী করতে পারবেন না। বিগব্যাঙ্গের ফলে স্পেসের শুরু হয়েছে, এটা বলতে বিজ্ঞানীরা আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্বের কথা বলেছেন।
আপনি বলছেন, বিগব্যাঙ্গের আগে টাইম ছিল না। আপনার এ রকম চিন্তার পিছনে আপনার নিজস্ব যুক্তি কী? ধরে নিলাম বিগব্যাঙ্গের সময় কে ০ ধরে সময় গণনা শুরু হলো। তাহলে কী বিগব্যাঙ্গের আগে সময় ছিল না? আপনার কথা শুনে মনে হলো সময় একটা নিয়ন্ত্রিত বস্তু, যাকে ইচ্ছামতো বন্ধ করা যায়, শুরু করা যায়। বিগব্যাঙ্গ থেকে যদি সময় ০ থেকে গণনা করা হয়, তাহলে বিগব্যাঙ্গের আগেও সময় ছিল এভাবেঃ -১, -২, -২......
কাজেই দেখা যাচ্ছে, সময় কে কোনো ভাবের অস্বীকার করা যাচ্ছে না। সময় কোনো জাগতিক বস্তু নয় যে, আগে বন্ধ ছিল, পরে চালু হয়েছে।
শক্তির কথা বলেছি, শক্তির কোনো সৃষ্টি বা ধংশ নেই, এটা আমার মনগড়া কথা নয়, বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত সত্য। এখন পর্যন্ত শক্তিকে কোনোভাবেই সৃষ্টিও করা যায় নি, ধংশও করা যায়নি। আপনার পজেটিভ নেগেটিভ ধারণাটাও একটা তত্ত্ব, যার পরিক্ষা এখনও করা সম্ভব হয় নি, শুণ্য থেকে সৃষ্টি করে।
ইশ্বরকে অবশ্যই কোন ল্যাবে পরীক্ষা না করেই অবিনশ্বর বলা হয়েছে, তাই না?

ধরে নিলাম আপনার কথাই ঠিক, বিগব্যাঙ্গের আগে কিছুই ছিল না। তাহলে, সেই সময় ইশ্বর কোথায় ছিলেন? গুল্লি

-অ্যালবেট্রস

অজ্ঞাত এর ছবি

হাস্যকর, পোস্ট যাও কিছু একটা হয়েছে, এই মন্তব্য পড়ে পুরাই টাস্কি খাইলাম। গায়ের জোড়ে নিজের যুক্তি(!!!) প্রতিষ্ঠিত করতে চাওয়ার কোন মানে হয় না!!!

আর শেষ লাইন পড়ে ভিড়মি খাইলাম, ধরে নিলাম আপনার কথাই ঠিক, বিগব্যাঙ্গের আগে কিছুই ছিল না। তাহলে, সেই সময় ইশ্বর কোথায় ছিলেন? মানে কী ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে চাইছেন? ঈশ্বরকে রাখতে হবে তাই বিগব্যাঙের আগে আপনার সময়, স্থান থাকা দরকার? হ ভাই বিরাট বিজ্ঞানী, দার্শনিক আপনি!!!

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

দেখুন, ঈশ্বর নেই, এটা ধরেই আমি লেখাটি লিখেছি।
আমি গায়ের জোড়ে আবার যুক্তি দেখাচ্ছি কোথায়?
বিজ্ঞানীদের রেফারেন্সগুলো না দেখিয়ে সরাসরি আমার যুক্তি খণ্ডন করে দেখান।

-অ্যালবেট্রস

guest_writer এর ছবি

বিজ্ঞানীদের রেফারেন্সগুলো না দেখিয়ে সরাসরি আমার যুক্তি খণ্ডন করে দেখান

তাহলে তো আপনার যুক্তি খন্ডানোর আগে ঐ বিজ্ঞানিদের (বানানটা খিয়াল কইরেন) থেকেও বড় বিজ্ঞানী (পার্থক্যটা খেয়াল করেন) হয়ে আসতে হবে। অপেক্ষায় থাকেন, যদি কোন দিন হইতে পারি, আবার আসিব ফিরে, এর আগে আর না।

সজল এর ছবি

মহাত্মন! আমি যদি বলি নিউটনের সূত্রানুসারে দেখা যায়, দুইটা বস্তু পরস্পরকে আকর্ষণ করে। তো আমার কি এর পেছনে দেয়া নিউটনের বৈজ্ঞানিক যুক্তি দেখানো বাদ দিয়ে একটা বড় দেখে আপেল গাছের নীচে বসতে হবে, তারপর মাথায় কয়েকটা আপেল পড়ে মাথায় আলু গজানোর পর আবার ভেবে ভেবে তার সূত্রগুলো বের করে তার পর নিজস্ব ব্যাখ্যা দিতে হবে? বিগব্যাং বা কোয়ান্টাম ফিজিক্সের খুটিনাটির ব্যাখ্যা ইনট্যুইটিভ না, এইগুলো বুঝতে একটু গণিতের সাহায্য দরকার। সুতরাং বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত মহাবিশ্ব সৃষ্টির পক্ষে যে ব্যাখ্যা দিয়েছে সেটা একেবারে নিজে থেকে একক ভাবে দিয়ে দেয়ার মত প্রতিভাবান লোক কেউই নেই। তাই সবাই যেটা করে, এমনকি আইনস্টাইন বা নিউটন ও, তা হল এখন পর্যন্ত পাওয়া জ্ঞান এবং ব্যাখ্যাগুলো বুঝে দেখা এবং যাচাই করা, যদি কোন অসংলগ্নতা না পাওয়া যায় তাকে মেনে নেয়া, দরকারে নতুন কিছু প্রস্তাব করা। কেউই সভ্যতার শুরুতে গিয়ে আবার আগুন আবিস্কারে লেগে যায় না।

ত্রিমাত্রিক কবি'র শেয়ার দেয়া ভিডিও গুলো দেখতে পারেন, এখানে মহাবিশ্ব সৃষ্টি, সময় ও স্থানের শুরু ও অস্তিত্ব, এবং এসবের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা, তা নিয়ে আধুনিক বিজ্ঞানের সাম্প্রতিকতম ব্যাখ্যা দেয়া আছে। শুধু ভেবে ভেবে কোয়ান্টাম ফিজিক্স বা রিলেটিভিটি'র আইডিয়া চলে আসতো না, এখানেই দর্শনের হাত থেকে ব্যাটনটা বিজ্ঞানের হাতে চলে গেছে। পড়ুন, জানুন, মুক্তমনা হোন। নিজের চিন্তার ভুলগুলো ধরতে পারলে আরো ভালো চিন্তার সুযোগ খুলে যায়, কিন্তু গুয়ার্তুমি করে আকড়ে ধরলে ভুলের পরিমাণ বাড়তেই থাকে। ভালো থাকুন।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সুমন_তুরহান এর ছবি

লেখাটি খুবই এলোমেলো। অনেক বিষয়েই আপনি ভুল তথ্য দিয়েছেন। বিজ্ঞান নিয়ে লিখতে হলে আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। আপনি আরো পড়ুন, তারপর লিখুন। শূন্য থেকে মহাবিশ্বের উদ্ভব নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানী ড. লরেন্স ক্রাউস-এর "A Universe From Nothing"- লেকচারটিও দেখতে পারেন।

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

স্লো নেট স্পীডের কারণে ভিডিও দেখতে পারছি না। যদি একটু ব্যাখ্যা করে বলতেন তাহলে ভালো হতো।
-অ্যালবেট্রস

সবজান্তা এর ছবি

ছোটখাটো বানান ভুল, টাইপো লেখাতে হতেই পারে- অনেকেরই হয়। কিন্তু লেখার শিরোনামসহ পুরো লেখাটিতেই "ঈশ্বর" কে আপনি লিখেছেন "ইশ্বর", এছাড়া ছোটখাটো আরো বেশ কিছু আরো বানান ভুল চোখে পড়লো। ধারণা করছি আপনি কম্পিউটারে বাংলা বেশিদিন ধরে লিখছেন না, তাই এই বিপত্তি। যাই হোক, আশা করবো ভবিষ্যতে লেখা পোস্ট করবার আগে আরো একবার চোখ বুলিয়ে নিবেন, যাতে বানানের বিপত্তি কিছুটা কমবে।

লেখার বিষয়বস্তু ভালো লাগলো কিন্তু এই বিষয়ে আরো অনেক আকারের আলোচনা হওয়ার দাবি রাখে, আরো অনেক বেশি উদাহরণ এবং রেফারেন্স আসতে পারে এবং সর্বোপরি যুক্তিগুলি আরো নিঁখুত হতে পারে। সচলায়তনেই অনেক ব্লগার চমৎকার বিজ্ঞান বিষয়ক নানা লেখা দিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে, সার্চ করে সেগুলিও পড়তে পারেন।

প্রথম মন্তব্যে ত্রিমাত্রিক কবি কিছু যুক্তি দিয়েছেন, আশা করি সেগুলি খণ্ডন করবেন। ভালো থাকুন, আরো লিখতে থাকুন।

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

আসলে, তাড়াহুড়োর মাঝে লিখেছি বলে পোস্টে প্রচুর বানান ভুল রয়ে গেছে, এবং পোস্টটা তথ্যবহুল হয় নি। এখনও অতিথি লেখক হয়ে লিখছি বলে আমার এডিট করারও সুযোগ নেই।
আসলে, ঈশ্বরের উপস্থিতি সম্পর্কে আমার মনে আসা কয়েকটি প্রশ্ন আমি করেছি, কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমি আমার নিজস্ব কিছু যুক্তি প্রয়োগ করেছি বলে পোস্টের সম্পূর্ণ টিউনটাই বদলে গেছে বুঝতে পারছি।
আসলে, আরেকটু সময় নিয়ে, রেফারেন্স রেডি করে লেখাটি আমার পোস্ট করা উচিৎ ছিলো। ব্যস্ততার কারণে তাড়াহুড়োর মাঝে পোস্ট করাটা আমার ভুল হয়েছে।
ভুল বানানগুলোর জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
আশাকরি সামনের পোস্টে ভুলের পরিমাণ আরো কমিয়ে আনতে পারবো।
-অ্যালবেট্রস

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

আসলে, আরেকটু সময় নিয়ে, রেফারেন্স রেডি করে লেখাটি আমার পোস্ট করা উচিৎ ছিলো। ব্যস্ততার কারণে তাড়াহুড়োর মাঝে পোস্ট করাটা আমার ভুল হয়েছে।

হ এরপর থিকা আরো খিয়াল কইরা লিখতে হইবো!!!


_____________________
Give Her Freedom!

দ্রোহী এর ছবি

স্পেস-টাইমের চিরন্তন উপস্থিতি সম্পর্কে যে ধারণা দিয়েছেন তা পদার্থবিজ্ঞান সমর্থন করে না। ত্রিমাত্রিক কবি যা বলার বলে দিয়েছেন।

বিজ্ঞান নিয়ে লিখতে গেলে আরেকটু হোমওয়ার্ক করে লেখা ভাল। এছাড়াও এ ধরনের সিরিয়াস লেখায় সহজ শব্দের বানান ভুল বড় বেশি পীড়াদায়ক।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

@অ্যালবেট্রসঃ
উলটা দিক থেকেই শুরু করি, আপনি কমেন্টে বললেন,

ধরে নিলাম আপনার কথাই ঠিক, বিগব্যাঙ্গের আগে কিছুই ছিল না। তাহলে, সেই সময় ইশ্বর কোথায় ছিলেন?

আমি কিন্তু বলিনি সেইসময় ঈশ্বর ছিলেন, বা এটাও বলিনি যে সেই সময় ঈশ্বর ছিলেন না। আপনাকে যে ভিডিও টা দিলাম সেটা যদি দেখেন সেখানে পাবেন বা যদি স্টিফেন হকিং এর দ্যা গ্রান্ড ডিজাইন বইটা যদি পড়েন সেখানেও দেখবেন, ঈশ্বর নেই সেই জিনিসটা আসলে বিজ্ঞান প্রমাণের চেষ্টা করছে না, বরং ঈশ্বরহীন ভাবে এই মহাজগৎ তৈরী হওয়া সম্ভব কিনা সেটা ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছে। এবং এই ত্বত্ত্বগুলোতে ব্যাপারটা অনেকটা এভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, বিগ ব্যাং এর আগে কোন কিছুই ছিল না, এমনকি স্থান বা সময়ও না, এবং সেই বিগ ব্যাং থেকে কিভাবে আজকের মহাবিশ্ব কিভাবে আসছে সেই ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। যেহেতু বিগ ব্যাং এর পর থেকে মোটামুটি সব ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া যাচ্ছে আর বিগ ব্যাঙ্গের আগে সময় বলেই কিছু ছিল না, সুতরাং ঈশ্বরকে কল্পনা করে নেয়ার দরকার পড়ে না।

তবে এর সাথে এটাও মনে রাখা উচিৎ যে, এটা আসলেই একটা চমৎকার হাইপোথিসিস যেটা দিয়ে এখন পর্যন্ত মহাবিশ্বের অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করা গেছে এবং যাচ্ছে। এবং সত্যি কথা বলতে কি এই হাইপোথিসিস নিজে সরাসরি ঈশ্বরের অস্তিত্ব অপ্রমাণ করে না (ঈশ্বর বলতে যে কেবল প্রচলিত ধর্মগুলোর ঈশ্বরই বুঝতে হবে এমন কোন কথাও কিন্তু নেই)। সুতরাং নতুন কোন হাইপোথিসিস এর জন্যে স্পেস রাখতেও কিন্তু সমস্যা নেই। সুতরাং যারা ঈশ্বর বিশ্বাস করছেন তারা যে একেবারেই বিজ্ঞান দিয়ে ভুল প্রমাণিত হওয়া কোন বিষয়ে বিশ্বাস করছেন, এরকম না মনে করে, তাদেরকে কিছুটা স্পেস আমরা দিতেই পারি।

আপনি আবার বলেছেন,

আপনি বলছেন, বিগব্যাঙ্গের আগে টাইম ছিল না। আপনার এ রকম চিন্তার পিছনে আপনার নিজস্ব যুক্তি কী?

এখানে আসলে আমার নিজস্ব যুক্তি এবং দর্শন অচল, এজন্যেই বোধহয় হকিং সাহেব তার বইতে দর্শনের প্রয়োজনীয়তা যে কমে আসছে এ কথা বলেছেন। সময় কিভাবে শুরু হয় সে জিনিসটা হয়ত আমাদের কাছে খুব সহজে বোধগম্য নয়, কিন্তু বিজ্ঞানীরা ব্যাপারটাকে এভাবেই বলছেন। আপনি আরো বলছেন,

আপনার কথা শুনে মনে হলো সময় একটা নিয়ন্ত্রিত বস্তু, যাকে ইচ্ছামতো বন্ধ করা যায়, শুরু করা যায়। বিগব্যাঙ্গ থেকে যদি সময় ০ থেকে গণনা করা হয়, তাহলে বিগব্যাঙ্গের আগেও সময় ছিল এভাবেঃ -১, -২, -২......

এটা আপনার একটা নিজস্ব ধারণা বা দর্শন হতে পারে, কিন্তু বিজ্ঞান কিন্তু সেভাবে বলছে না। এটা ঠিক সময় গণণা করার মত ব্যাপার না, সময় ছিল কি ছিল না সেই ব্যাপার।

আরও বলছেন,

বিগব্যাঙ্গের ফলে অকল্পনীয় পরিমাণ শক্তি একটি বিন্দু থেকে বিষ্ফোরিত হয়ে এই মহাবিশ্ব গঠিত হয়েছিল।

আপনি শুধু বিং ব্যাং নামে পরিচিত জনপ্রিয় কন্সেপ্ট নিয়ে বলছেন। এখনকার হাইপোথসিস বলে, বিগ ব্যাং এর সময় আসলে শক্তির পরিমান ছিল শূণ্য। আপনি এটাও বলছেন, পজিটিভ নেগেটিভ ধারণাটা একতা ত্বত্ত্ব, হ্যা, সত্যি কথা বলতে কি পুরো বিগ ব্যাং ধারণাটাই একতা ত্বত্ত্ব। সেই হিসাবে ঈশ্বরের ধারণাও একটা ত্বত্ত্ব।

এভাবে এখানে ব্যাখ্যা করতে গেলে সময় হবে না, সাম্প্রতিক কোন বই পড়ে দেখবেন বা ইউটিউবে লেকচার শুনে দেখবেন। আর স্টিফেন হকিং এর বইগুলো কিন্তু অনেক সহজ ভাষায় আমার মত বিজ্ঞান না জানা লোকের জন্য লেখা।

আরও বলেছেন,

আপনি বলতে চাচ্ছেন, বিগব্যাঙ্গের আগে স্পেস ছিল না। কিভাবে ছিল না, এই ব্যপারে আপনার নিজস্ব ব্যাখ্যা কী? আমি পোস্টেই ব্যাখ্যা করেছি স্পেস সম্পর্কে, আমার নিজস্ব দর্শনের ব্যাখ্যা করেছি, আপনি বলছেন বিগব্যাঙ্গের আগে স্পেস ছিল না, রেফারেন্স হিসেবে আপনি বিজ্ঞানীদের তত্ত্বের কথা বলেছেন। এ ব্যপারে আপনার নিজস্ব যুক্তিটা কী একটু ব্যাখ্যা করবেন কী?

এখানেই ভাই ভুলটা করছেন। বিগ ব্যাং এর আগে স্পেস ছিল না সেটা আমি বলছি না, বিজ্ঞানীরা বলছেন। আমি বললে সেটা আপনি বা অন্যরা মানবেন কেন? আর স্পেস সম্পর্কে আপনার নিজস্ব দর্শন যদি বিজ্ঞান সমর্থিত না হয় তাহলে সেটাও কি কোন ধর্মীয় দর্শনের মত হয়ে গেল না! বিজ্ঞানের সব কথা যে খুব সহজে বোঝা যাবে এবং সব কিছু যে আমার আপনার কাছে টাঞ্জিবল হবে এটা মনে করার কিন্তু কোন কারণ নেই।

আরও বলছেন,

বিগব্যাঙ্গের ফলে স্পেসের শুরু হয়েছে, এটা বলতে বিজ্ঞানীরা আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্বের কথা বলেছেন।

কিভাবে পেলেন? স্পেস আসলে কিভাবে দেখা যায়? স্পেস তো কোন বস্তু না, সেখানে আলো পড়ে প্রতিফলিত হয় না, প্রচলিত অর্থে দৃশ্যমান স্পেস আসলে কি?

আরও বলছেন,

ধরে নিলাম আপনার কথাই ঠিক, বিগব্যাঙ্গের আগে কিছুই ছিল না। তাহলে, সেই সময় ইশ্বর কোথায় ছিলেন?

আবার বলছি আমার কথা নয়, বিজ্ঞনীরা বলছেন। আর আমি ঈশ্বর আছেন কি নেই সেই বিষয় নিয়েও কিন্তু বলছি না। আমি আমার প্রথম কমেন্টে বলেছি, কি উপসংহারে যাচ্ছেন সেটা যেমন জরুরী, কিভাবে যাচ্ছেন সেটাও জরুরী। আপনি যে যুক্তিতে বলছেন ঈশ্বর নেই সেই যুক্তিগুলোকে ভুল বলেছি।

আর আমার যতটুকু জানাশোনা সেই থেকে বলতে পারি, বিজ্ঞান বোধহয় এখন পর্যন্ত ঈশ্বরকে (ঈশ্বর বলতে যে কেবল প্রচলিত ধর্মগুলোর ঈশ্বরই বুঝতে হবে এমন কোন কথাও কিন্তু নেই) প্রমাণ করতে পারেনি বা চায়নি, ঠিক সেভাবে অপ্রমাণ করতেও পারেনি বা চায়নি। বিগ ব্যাং থিউরী বা রিলেটেড হাইপোথিসিস গুলো এখনও অনেক রকম চিন্তা ভাবনার স্পেস দিচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত যেটা বলতে চাই, এটা বোধহয় বিজ্ঞানের সবচেয়ে জটিল আর আলোচিত বিষয়গুলোর একটা। সেটা নিয়ে লিখতে হলে অবশ্যই কিছুটা স্টাডি করে লেখা উচিৎ। বিজ্ঞানের কিছু গালভরা নামের সাথে নিজস্ব দর্শন কে বিজ্ঞান হিসাবে চালানো বোধহয় দায়িত্বশীলতার পরিচয় হবে না। আশাকরি কথাগুলো ব্যাক্তিগত ভাবে নেবেন না।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

প্রিয় পাঠক, আমার এই পোস্টের মূল টিউন ছিলো ঈশ্বরের উপস্থিতি সম্পর্কে কয়েকটা প্রশ্ন নিয়ে, কিন্তু আমি যথেষ্ট সময় নিয়ে লেখাটি না লেখায় এখানে ভুল বানানের সমারোহ ও লেখাটি সেই ভাবে তথ্যবহুল হয়ে উঠে নি। আমি কোনোরুপ রেফারেন্স ছাড়া আমার নিজস্ব যুক্তির দেখিয়ে লেখাটি লিখেছি। আমি বলেছি স্পেস, টাইম ও শক্তি অনন্ত কাল ধরেই আছে, আপনারা কয়েকজন বিজ্ঞানীর রেফারেন্স দিয়ে বললেন আমার ধারণা ভুল। কেন ভুল, কেন বিগব্যাঙের আগে স্পেস ও টাইম ছিল না, সেটা যদি একটু ব্যাখ্যা করতেন, তাহলে ভালো হতো। আপনারা রেফারেন্স দিয়েছেন ইউটিউবের, ভালো কথা, কিন্তু স্লো নেট স্পীডের কারণে ভিডিওগুলো দেখা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। বিগব্যাঙের আগে স্পেস ও টাইম কেন ছিল না, একটু ব্যাখ্যা করে বললে কৃতার্থ হতাম।
আমি আমার যুক্তির উপর কোনোরকম আধিপত্য দেখাচ্ছি না। আমার নিজস্ব যুক্তি থাকতেই পারে, এতে আমি কোনো দোষ দেখি না। যদি আমার যুক্তির ভুল বের হয়, সেটা আমার জন্যই ভালো।
অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলোর জন্য দুঃখিত।
-অ্যালবেট্রস

মৃত্যুময়-ঈষৎ এর ছবি

ভিডিও দেখতে যখন সমস্যা হচ্ছে তখন আশরাফ ভাইয়ের এই চমৎকার অনুবাদটাই(দি গ্র্যান্ড ডিজাইন) পড়ে দেখুন না।

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

দুঃখিত, ওই অনুবাদটি পড়ে আমার প্রশ্নের জবাব পেলাম না। বিগব্যাঙের আগে কেন অসীম স্পেস ছিল না এটাই আমার প্রশ্ন। আজ থেকে ১৪ বিলিয়ন (আনুমানিক) বছর আগে নাকি বিগব্যাঙ হয়েছিল, বিগব্যাঙের আগে সময় ছিল না, তার মানে কী এখন থেকে ১৫ বিলিয়ন বছর আগে কোনও সময়ের অস্তিত্বই ছিল না?
বিজ্ঞানীরা কেন বলছেন বিগব্যাঙের আগে স্পেস ও টাইম ছিল না, এটা একটু ব্যাখ্যা করুন। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যাটাই আমাকে বলুন।

ঈশ্বর এর ছবি

বিজ্ঞানীরা কেন বলছেন বিগব্যাঙের আগে স্পেস ও টাইম ছিল না, এটা একটু ব্যাখ্যা করুন। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যাটাই আমাকে বলুন।

১।। ভাই, এটা থিয়োরিটিকাল ফিজিক্স বা কসমোলজির ক্লাস না। আপনার যদি হকিং বা অন্যান্য বিশ্বের প্রথম সারির বিজ্ঞানীদের তত্ত্ব মনোপুত না হয় তাদের আমজনতার জন্য লেখা বইগুলি পড়ার পরেও, তাহলে মূল রিসার্চ পেপারগুলি পড়ুন। তাতেও সন্তুষ্ট না হলে বা সেখানে কোন ভুল পেলে, এ বিষয়ে সরাসরি তাদেরকে গিয়েই জিজ্ঞেস করুন বা চ্যালেঞ্জ দিন। আর যদি নিজেই ঐ মাপের বিজ্ঞানী হন, তাহলে বিশ্বের প্রধান কোন সায়েন্টিফিক জার্নালে আপনার তত্ত্ব পাব্লিশ করে অন্য সব তত্ত্ব মিসমার করে দিয়ে আমাদের গর্বিত হওয়ার সুযোগ দিন।

বিগ ব্যাঙ তত্ত্ব বর্তমানে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী মহলে একটি ডমিন্যান্ট তত্ত্ব। এই তত্ত্বের উদ্‌গাতা ও সমর্থক প্রধান বিজ্ঞানীরা শতাব্দীর সেরা বিজ্ঞানীদে্র, সেরা ব্রেইনদের অন্যতম। আর আমার মনে হয় না সচলায়তনে তাঁদের মাপের কেউ জড়িত আছেন (অবশ্য আমার ভুলও হতে পারে, অসম্ভব কিছু নয়)। ঐ সব বজ্ঞানীদের ইমেইল এ্যাড্রেস জোগাড় করাটা মনে হয় না খুব কঠিন কাজ হবে।

২। লিডিং বিজ্ঞানীদের সাথে যোগাযোগ করতে না পারলে, তাদের বইপত্র পড়েও পছন্দ না হলে, কসমোলজি বা থিয়োরিটিকাল ফিজিএক্সের কোন অধ্যাপকের সাথে যোগাযোগ করুন। দরকার হলে সেমিনার ইত্যাদি এটেন্ড করুন। এটা বিশাল বিষয়, সচলায়তনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ যদি থাকেনও - আমার মনে হয় না আপনাকে আলোকিত করা তার ধৈর্য্যে বা সময়ে কুলাবে। এটা কোন ব্লগ পোস্টের প্রতিক্রিয়াজাত কমেন্টের মাপের জিনিষ না মনে হয়।

৩। আপনার বেসিক হোমওয়ার্ক আপনাকেই করে আসতে হবে। আপনার হয়ে অন্য কেউ করে দিবে ভাবলে ভুল করবেন। তারপরও আপনাকে কিছু লেকচারের লিঙ্ক দেয়া হয়েছে। স্লো নেটের কারনে দেখতে না পারলে, আপনার কানেকশন আপগ্রেড করুন। এসব আপনারই দায়িত্ব। পোস্ট লেখার আগেই করা উচিত ছিল। তো আগে যখন করেন নাই তো এখন করুন। বাজারেও এ বিশয়ে অনেক বইপত্র পাওয়া যায়। সেগুলি পড়ুন।

৪। বিজ্ঞানের বাইরে গিয়ে এবারে আমার নিজের কিছু প্রশ্ন আপনাকেঃ

স্থান অসীম, অর্থাৎ স্থান বা স্পেসের কোনো সীমারেখা নাই।....স্থানের মতো কালও অসীম, নিরাকার ও অবিনশ্বর।

এসব কথা আপনাকে কে বললো ভাই ? নাকি আপনিই বানালেন ? তো আপনি বললেই হবে ? আপনি 'অসীম' স্থান ও অনন্ত 'কাল' গিয়ে দেখে এসেছেন ?

আমি তো বরং বলি ঠিক উল্টোটাই সত্যি ! আপনার মতই, আমার স্বকপোলকল্পিত ব্যক্তিগত তত্ত্ব হচ্ছে যে মানুষ সবচেয়ে শক্তিশালী দূরবীন-টুরবীন-যন্ত্রপাতি-তত্ত্ব-বিজ্ঞান সহযোগে মহাবিশ্বের যতটুকু দেখতে পায় বা আন্দাজ করতে পারে - স্থানের সীমা তট্টুকুই। তর্কের খাতিরে ধরুন ১৪ বিলিওন লাইট ইয়ার। তারপর আর কিচ্ছু নাই, এমনকি শুন্যস্থানও না। এখন আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন, এই "কিচ্ছু নাই, এমনকি শুন্যস্থানও না" বা অস্তিত্ত্বহীন স্থান বিষয়টা কি ? আমি বলব এই কিচ্ছু না 'মানুষের কল্পনাশক্তির বাইরের' একটা বিষয়, তবে 'স্থানের' বিষয় না। এবং এনিয়ে আরো প্রশ্ন করাটাও অবান্তর - দৃষ্টিসীমা (বস্তুগত ও তত্ত্বগত) যখন যতটুকু প্রসারিত হবে, স্থানের সীমাও তখন সেইটুকু পর্যন্ত। আপনি মানতে চাইছেন না ? দৃষ্টিসীমা বা কোন একটা সীমারেখার বাইরে এমনকি শুন্যস্থানও নাই এমনটা কল্পনা করা যায় না, এটা অকল্পনীয়-অচিন্তনীয়, সুতরাং নিশ্চয়ই কিছু না কিছু আছে - নিদেনপক্ষে শুন্যস্থান। থাকতেই হবে! নইলে এর পরে কি - এই প্রশ্নের জবাব কি ? তাই না ?

তাহলে আমি আপনার কাছে পালটা জানতে চাইবো, আপনি কি "অসীম স্থানের" অসীমত্বকে সম্পূর্ন ও পরিপুর্ণ রূপে কল্পনা ও চিন্তা করে এর পূর্ণ অসীম ব্যপ্তিকে সম্পূর্ণ রূপে উপলব্ধি করে নিজের মস্তিষ্কে ধারন করতে পেরেছেন ?

আমি নিশ্চিত আপনি তা পারেননি। ঐ চেষ্টা সিরিয়াসলি করলে আপনার স্থান হয় হেমায়েতপুরে নয়তো আজিমপুরে হতে দেরি হবে না। তো ধরে নিচ্ছি এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছ থেকে 'না'-বাচকই আসছে। অর্থাৎ, "অসীম" তার পূর্ণ রূপে কি জিনিষ তা আপনার কল্পনাশক্তির বাইরে (অনেকটা আমার 'কিছুই নাইয়ের' মতই)। একে এর পূর্ণ ব্যপ্তিতে তথা অসীম ব্যপ্তিতে পরিপূর্ণ রূপে (আসলে কোন রূপেই) না বুঝেই আপনি বলে দিচ্ছেন যে এটা আছে।

সেক্ষেত্রে ভাই আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনার এই "অসীম" তত্ত্বের চেয়ে, আমার ঐ "কিছুই নাই" তত্ত্ব কোন অংশে কম ভ্যালিড না। এমনকি আমি সেটা কি জিনিষ তা ঠিকমত না বুঝলেও বা বলতে না পারলেও কোনই অসুবিধা নাই।

আর হ্যাঁ, আপনি যদি বলেন আপনি "অসীম স্থান' কি তা পুরোপুরিই জানেন ও বুঝেন, সেক্ষেত্রে আমি আপনাকে অনুরোধ করব সেটা এখানে কোনরকম সিম্বলিজমের আশ্রয় না নিয়ে লেম্যান টার্মসে সবার বোধগম্য করে সম্পুর্ণ রূপে ব্যাখ্যা করতে। আপনার ব্যাখ্যায় আমি সন্তুষ্ট হলে পরে আমার 'কিছুই নাই' তত্ত্ব-টা তখন ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে দেখব। আনটিল দেন, আমার কাছে আপনার "অসীম স্থান" থেকে আমার "কিচ্ছু নাই, এমনকি শুন্যস্থানও না"-টা কোন অংশেই কম মিনিংফুল স্টেটমেন্ট মনে হচ্ছে না।

'কাল'-এর বিষয়ে আর গেলাম না। আগে উপরের সমস্যাটার একটা সর্বসম্মত সমাধান হোক।

ধন্যবাদ।

সজল এর ছবি

এমনকি দার্শনিক ব্যাখ্যাও 'সায়েন্টিফিক ফাইন্ডিংস' এর বিরুদ্ধে গিয়ে হতে পারে না। যুক্তি কখনো প্রমাণকে অস্বীকার করে হতে পারে না। বৈজ্ঞানিক যুক্তি মানে বিজ্ঞানীকে রেফারেন্স দেয়া না, বরং বিজ্ঞানীর বিজ্ঞানভিত্তিক মতামতকে গুরুত্ব দেয়া। আইনস্টাইনের রিলেটিভিটির আইডিয়া আমরা নেব, তার স্থির মহাবিশ্বের ধারণা নেব না (তিনি অবশ্য নিজেই তার ভুল বুঝতে পেরেছিলেন) নেব, কারণ রিলেটিভিটির ধারণা ইউনিভার্সকে ব্যাখ্যা করতে পেরেছে, কিন্তু তার স্থির মহাবিশ্বের ধারণা এই কাজ করতে ব্যার্থ হয়েছে এবং ভুল বলে পরিত্যক্ত হয়েছে। মোদ্দা কথা, কে বলেছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, কী বলেছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ (এবং অবশ্যই তার কথা বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে গ্রহণযোগ্য হলেই সেটাকে মেনে নেয়া হয়)। আশা করি "নিজস্ব যুক্তি" নিয়ে আপনার অবসেশন কাটবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সুবর্না এর ছবি

হাসি
স্পেসটাইম নিয়ে আপনার এই প্রশ্নগুলো আমার মধ্যেও ছিল, এ কি কোনো বস্তু যে আজ আছে কাল ছিলনা !
আমার পদার্থবিদ বন্ধু বহু খেটে বোঝানোর চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়েছে।
দোষটা ওর বোঝানোর অপারগতা নয়, আমার কমনসেন্সের আঠালোত্বকে দেই। এর গন্ডি টপকানো বড়ই মুশকিল।

ব্যাপারটা অনেকটা এভাবে বলা যায় বরং, যেহেতু বিগ ব্যাং এর আগে কোন সময় ছিল না, তাই 'তার আগে' আগে কি ছিল এই প্রশ্নটাই অবান্তর।

এই কথাটাই কিছুটা ধারনা লাভ সম্ভব হয়।
আমি এভাবে ভাবি, ঘটনাহীন টাইম বা বস্তুমুক্ত স্পেসের চিন্তা করতে যাওয়া অর্থহীন। যবে থেকে ঘটনার শুরু সময়ের ধারনাটাও আমাদের তবে থেকেই প্রাপ্ত, তেমনি বস্তুর অস্থিত্বের সাথেই স্পেস যুক্ত।
আপনার দৃশ্যমান স্পেসকে অন্যভাবে বলা যায় বস্তুসাপেক্ষ স্পেস। অর্থাৎ বস্তুই আমাদের স্পেসের ধারনা পেতে দিয়েছে।
এর বেশি ভাবতে পারার দৌড় নাই আমার! অন্যরা সাহায্য করলে আমিও উপকৃত হবো।
হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনি লিখেছেন,

দেখুন, ঈশ্বর নেই, এটা ধরেই আমি লেখাটি লিখেছি।
আমি গায়ের জোড়ে আবার যুক্তি দেখাচ্ছি কোথায়?
বিজ্ঞানীদের রেফারেন্সগুলো না দেখিয়ে সরাসরি আমার যুক্তি খণ্ডন করে দেখান।

তারমানে আপনি নিজেই বলছেন, 'ঈশ্বর নেই' এটা আপনি ধরেই নিয়েছেন, এবং এরপর সেই অনুযায়ী যুক্তিগুলোকে টিউন করার চেষ্টা করছেন? আপনি কি সিদ্ধান্তে পৌছাবেন, তা যদি আপনি আগেই ধরে নেন তাহলে কি যুক্তি তর্কের অবকাশ থাকে?

আপনি তো বলেছিলেন

ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে তাই আমি বিজ্ঞানকেই সমর্থন করি

চমৎকার কথা, কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানীদের রেফারেন্সগুলো না দেখিয়ে কথাটা আপনার মূল পোস্টের বক্তব্যের সাথে যায় কি? আর আপনার যুক্তি তো আসলে খন্ডন করার নয়, আপনি যেমন ধরে নিয়েছেন (কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ছাড়াই), স্পেস, সময় এগুলো অনন্তকাল ধরে ছিল এবং থাকবে, এরকম অনেকেই কিন্তু ধরে নিচ্ছেন ঈশ্বর অনন্তকাল ধরে ছিলেন এবং থাকবেন। এবং আপনার মত তারাও কিন্তু 'ঈশ্বর আছে' এটা ধরেই নিয়েছেন এবং তারা তাদের যুক্তি বা দর্শনকে সেভাবে টিউন করার চেষ্টা করেন। তারা তাদের মত ভাবুক, বা আপনি আপনার মত ভাবুন তাতে পার্সোনালি কারো কোন সমস্যা হবার কথা না, কিন্তু সেই ভাবনা বিজ্ঞানের ওপর চাপাতে গেলেই সমস্যা।

আর আপনি বিজ্ঞানীদের উপসংহারগুলোর ব্যাখ্যা চেয়েছেন, সেটা এই অল্প পরিসরে আসলে দেয়া কঠিন। এজন্যেই আপনাকে কোন বই বা লেকচারের রেফারেন্স দিচ্ছিলাম। আমার আগের কমেন্টটা পরলে আশা করি কিছুটা হলেও ধারণা পরিষ্কার হবে। ভাল থাকবেন। আরো লিখুন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আফতাব এর ছবি

এই একটি বিরক্তিকর প্রবণতা। ঈশ্বর বা অনুরূপ নামের কেউ আছে যে সে কথা ইনিয়েবিনিয়ে বলার চেষ্টা করা কারো কারো! পড়াও যায় না সবটা। বিজ্ঞান নিয়ে আসেন কেউ কেউ। বিজ্ঞান এখনো অনেককিছু পারে না, স্বাভাবিকভাবেই ঈশ্বর যে নাই সে কথাও বলতে পারে না। অবশ্য বলতে চেষ্টা করারও প্রশ্ন ওঠে না। কিভাবে বলবে? কল্পিত, বানানো জিনিসকে কি প্রমাণ করা যায়? একটাই উপায় ছিল ঈশ্বর প্রমাণ করার। বলা হত, ঈশ্বর, নেমে এসে বলো যে তুমি আছ। থাকলে সঙ্গে-সঙ্গে নেমে এসে ঈশ্বর বলত, 'কী, এতবড়ো স্পর্ধা তোদের আমাকে অবিশ্বাস করিস!' চড়-চাপড় মারত, দু-একটাকে পিটিয়ে মেরেও ফেলতে পারত। কিন্তু নাই যা তা নিয়ে কেন এত বকবকানি? আমি জানি গালাগালি, বকোয়াজ করতে ছুটে আসবেন এখনই অনেক ব্লগার। আর 'প্রমাণ' করার শুরু হবে আবারও অন্তহীন, নিরলস চেষ্টা...সিসিফাসেরই মতো...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আফতাব ভাইঃ ঈশ্বরের কথা ইনিয়ে বিনিয়ে বোধহয় আমি বলছিলাম, কি বলেন? আপনি বোধহয় আমার যুক্তির মূলভাবটা ধরতে পারেননি বা ধরার চেষ্টা করেননি। আমি এখানে ঈশ্বর আছে কি নেই সেই বিতর্কে ঢুকিনি কিন্তু। কিন্তু কেউ যদি বিজ্ঞানের নামে বিজ্ঞান মিশ্রিত নিজের কল্পিত দর্শনকে এনে যদি শেষ পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তেও উপনীত হন, তাকে কি বিজ্ঞান বলবেন? কেউ যদি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, যে তার উপসংহার কি হবে, আর সেই অনু্যায়ী যুক্তি বা কল্পিত দর্শন পেশ করবেন, তাহলে সেটাকে বিজ্ঞান না বলে ওকালতি বলা ভাল।

আপনি আলোচনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন। লেখাটির উপসংহার নিয়ে (ঈশ্বরের অস্তিত্ব) কোন কমেন্টে কথা হয়েছে বলে আমি দেখতে পাইনি। উনি বিজ্ঞানের একটা বিষয়কে নিজস্ব কল্পনার সাথে মিশিয়ে একটা লেখা দিয়েছেন, সেটা কতটা দায়িত্বশীল সেই বিষয়ে কথা হচ্ছিল। ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আপনি বলেছেন,

কিভাবে বলবে? কল্পিত, বানানো জিনিসকে কি প্রমাণ করা যায়? একটাই উপায় ছিল ঈশ্বর প্রমাণ করার। বলা হত, ঈশ্বর, নেমে এসে বলো যে তুমি আছ। থাকলে সঙ্গে-সঙ্গে নেমে এসে ঈশ্বর বলত, 'কী, এতবড়ো স্পর্ধা তোদের আমাকে অবিশ্বাস করিস!' চড়-চাপড় মারত, দু-একটাকে পিটিয়ে মেরেও ফেলতে পারত।

এখানে কে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের চেষ্টা করছিল সেটা কি একটু উল্লেখ করবেন?

আমার বা এখানে সবারই বক্তব্য ছিল, সচল তো আর কোন জার্নাল না যে, সব লেখা মডারেশান পেরিয়ে আসা মানেই সেখানে কোন ভুল থাকবে না এমন কিন্তু নয়। মডারেটরদের কিন্তু এত সময় নেই যে কেউ কোন ভুল তথ্য দিলে সেটা রিসেন্ট পাবলিকেশানগুলোর সাথে মিলিয়ে দেখবেন। সচলের পাঠকরা কিন্তু এরকম লেখা থেকে বিজ্ঞান সম্পর্কে ভুল ধারণা পাবেন। তাই সচলের লেখকরা বিশেষ করে যারা বিজ্ঞান নিয়ে লিখবেন বা কোন ভারী বিষয়ে লিখবেন তারা যেন দায়িত্বশীল হন সেটা নিয়েই কিন্তু এই কমেন্টগুলো।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আলামিন এর ছবি

"The Grand Design" এ স্টিফেন হকিঙ ঈশ্বরের অস্তিত্বে ভেটো দিতে লিখছেন,
"আমাদের আচরণ ভৌত সূত্রাবলি মেনেই নির্ণিত হয়, তবে স্বেচ্ছাপ্রবৃত্তি (Free Will) আমাদের পরিচালিত করে এমন চিন্তা করা প্রগলভতা, মূলত আমরা জৈবিক-যন্ত্র ছাড়া বিশেষ কিছু নই, এবং স্বেচ্ছাপ্রবৃত্তি কেবলই বিভ্রম।" (আশরাফ মাহমুদের সৌজন্যেঃ (http://www.sachalayatan.com/chameleon/38830)

স্টিফেন হকিঙ কি বলতে চান একটু ব্যাখ্যা করা যাক। ধরুন আপনার সামনে একটা আপেল রাখা হল। এখন আপেলটি আপনি খাবেন কি খাবেন না সেটা আপনার ইচ্ছা শক্তির উপর নির্ভর করবে। আপেলটি আপনার খুব পছন্দের ফল হলেও আপনি ইচ্ছা করলে সেটা নাও খেতে পারেন। এক কথায়, আপনার ইচ্ছামত, আপনি আপনার আচরণ নিয়ন্ত্রন করতে পারেন। কিন্তু, তত্ত্বীয় পদার্থবিদ স্টিফেন হকিঙ বলছেন অন্য কথা। তিনি বলছেন এটা সম্পূর্ণ "Deterministic" তথা আপনার আচরণে আপনার কোন নিয়ন্ত্রন নাই। অন্য কথায়, পরিমলের সাজা দেয়া অযৌক্তিক।

এখন ভেবে দেখুন, আপনি নিজেকে অস্বীকার করবেন না কি নিজের ভিতরে ঈশ্বরকে চিনে নিবেন।

"যে ব্যক্তি নিজেকে চিনিতে পারিয়াছে সে আল্লাহকে চিনিতে পারিয়াছে"

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আলামিন ভাইকে আগে থেকে চিনি; অন্য একটি পোস্টে আপনার চমৎকার যুক্তির উপস্থাপন দেখেছিলাম, সেখান থেকে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলাম যে, আপনাকে আসলে যুক্তি তর্কে হারানো সম্ভব নয়, তাই সে চেষ্টা করছিনা।

আপনি আশরাফ ভাই এর লেখার রেফেরেন্স টেনেছেন। চমৎকার। আশরাফ ভাই লিখেছিলেন,

যদি আমাদের আচরণ ভৌত সূত্রাবলি মেনেই নির্ণিত হয়, তবে স্বেচ্ছাপ্রবৃত্তি (Free Will) আমাদের পরিচালিত করে এমন চিন্তা করা প্রগলভতা, মূলত আমরা জৈবিক-যন্ত্র ছাড়া বিশেষ কিছু নই, এবং স্বেচ্ছাপ্রবৃত্তি কেবলই বিভ্রম

আপনি পুরো বাক্যটাই খুব সুন্দর করে কোট করেছেন। কিন্তু যদি শব্দটা কোট করতে ভুলে গেছেন! বাক্যের আগে যদি শব্দটা যে বাক্যের সম্পূর্ণ নতুন অর্থ দিতে পারে সেটা বোধহয় আপনার জানা ছিল না, আর যদি জানা থাকে তাহলে কি ইচ্ছা করে শব্দটা বাদ দিয়েছেন?

আপনার কমেন্টগুলো থেকে বুঝেছি আপনি আল্লাহকে কোন রকম সন্দেহ ছাড়াই বিশ্বাস করেন। আপনার বিশ্বাসের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান আছে। সে জন্যেই বলছি, আল্লাহর ভয়ও কি আপনাকে কোট করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সৎ করতে পারল না?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কৌস্তুভ এর ছবি

সে জন্যেই বলছি, আল্লাহর ভয়ও কি আপনাকে কোট করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সৎ করতে পারল না?

গুল্লি গুল্লি

অপছন্দনীয় এর ছবি

দেঁতো হাসি

সে জন্যেই বলছি, আল্লাহর ভয়ও কি আপনাকে কোট করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সৎ করতে পারল না?

চলুক

আলামিন এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ @ ত্রিমাত্রিক কবি।
আসলে সচলায়তনে "copy paste" এর Restriction থাকায় আমাকে source code থেকে copy করতে হয়েছিল। যার কারনে অসাবধানতাবশতঃ "যদি" শব্দটা বাদ পরে গেছে।
তবে, পুরো প্যারাটা পড়লে "যদি" শব্দটাকে স্ববিরোধী মনে হয়। আপনাদের জ্ঞাতার্থে এবার মূল রচনা থেকে উদ্ধৃত করা হল......

Though we feel that we can choose what we do, our understanding of the molecular basis of
biology shows that biological processes are governed by the laws of physics and chemistry and
therefore are as determined as the orbits of the planets.
Recent experiments in neuroscience support the view that it is our physical brain, following the known laws of science, that determines our actions, and not some agency that exists outside those laws. For example, a study of patients undergoing awake brain surgery found that by electrically stimulating the appropriate regions of the brain, one could create in the patient the desire to move the hand, arm, or foot, or to move the lips and talk. It is hard to imagine how free will can operate if our behavior is determined by physical law, so it seems that we are no more than biological machines and that free will is just an illusion.
......................
This book is rooted in the concept of scientific determinism, which implies that the answer to question two is that there are no miracles, or exceptions to the laws of nature.

শেষ লাইনটার প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য করুন। "scientific determinism" কে সমর্থন করতে স্টিফেন হকিঙ এক পর্যায়ে নিজের ইচ্ছাশক্তি তথা চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

আর আমাদের "Free Will" যদি "বিভ্রম" হয়, তবে আমাদের সমস্ত ইন্দ্রিয়লব্ধ অভিজ্ঞতাও যে "বিভ্রম" নয় তার নিশ্চয়তা কে দিবে?

অপছন্দনীয় এর ছবি

অ্যালব্যাট্রস, আমি এই ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না, কিন্তু যতটুকু জানি বিগ ব্যাং থিওরীর একটা প্রধান বিষয় হলো বিগ ব্যাং এর শুরুতে একটা সিঙ্গুলারিটি কল্পনা করা - তার মানে ওই সময়ে পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা এবং সূত্রগুলো প্রযোজ্য নয়। স্পেস এবং টাইম যেহেতু পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা, কাজেই ওই সিঙ্গুলারিটিতে এগুলোও প্রযোজ্য হয় না। পুরো ব্যাপারটার সোজাসাপ্টা অর্থ দাঁড়ায় বিগ ব্যাং এর আগে হয় স্পেস এবং টাইম ছিলো না, অথবা যদি থেকেও থাকে তাহলে সেগুলো এমন একটা রেফারেন্স ফ্রেমে ছিলো যে বিগ ব্যাং পরবর্তী স্পেস আর টাইমের উপরে তার কোন প্রভাব থাকা সম্ভব নয়। এই ব্যাপার নিয়ে যাঁরা ঘাঁটাঘাঁটি করেন তাঁরা নিশ্চয়ই ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।

(এখানে এটা লেখার উদ্দেশ্য স্রেফ আপনি যে ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছিলেন না সেটা খুঁজে পেতে সাহায্য করা, কিন্তু আপনি যেভাবে ঘাড় বেঁকিয়ে বসে আছেন তাতে এটা কোন কাজে লাগবে কিনা সন্দেহ আছে)

পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অন্ধবিশ্বাস দিয়ে কিছুই হয় না - ধারণা থেকে যদি কিছু আসেও, সেটা পর্যবেক্ষণ এবং/অথবা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হতে হয়। স্রেফ আপনার ধারণা "ইহা হবে" তাই বলেই "ইহা হইতেই হবে" এমন কোন কথা নেই। আপনার যদি মনে হয় আপনি প্রচলিত এবং অনেকাংশে প্রমাণিত ধারণার উল্টোটা প্রমাণ করতে পারবেন, সচলায়তনে না দিয়ে আপনার চিন্তাভাবনা লিখে কোন জার্নালে পাঠিয়ে দিন।

ত্রিমাত্রিক কবি আপনাকে যথেষ্ট ভালো ফিডব্যাকই দিয়েছিলেন - কিন্তু তাঁর প্রথম মন্তব্যের উত্তরে আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হলো আপনি তাঁকে ঈশ্বর আছেন ধারণার সমর্থক হিসেবে ধরে নিয়েছেন। আপনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই এটা বলতে গিয়ে যদি বিজ্ঞানের নামে নিজের যা ইচ্ছা তাই ধারণা বলে যেতে শুরু করেন, সেটার বিরুদ্ধাচরণ করলেই কেউ ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের জিহাদে লিপ্ত হয়ে যায় না। এই পোস্টে অন্তত আমি ত্রিমাত্রিক কবিকে ঈশ্বর আছেন কি নেই এ ধরনের কোন বিতর্কে অংশ নিতে দেখিনি - উপরে আফতাবের উত্তরে তাঁর মন্তব্যটা পড়লেও একই কথা পাবেন।

সোজাসুজি বলতে গেলে, এই ধরনের নিজের ধারণা বিজ্ঞানের উপরে চাপিয়ে দেয়া পোস্ট আর ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞান খুঁজে পাওয়া পোস্টের মধ্যে আমি অন্তত কোন পার্থক্য দেখি না।

স্বাধীন এর ছবি

সোজাসুজি বলতে গেলে, এই ধরনের নিজের ধারণা বিজ্ঞানের উপরে চাপিয়ে দেয়া পোস্ট আর ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞান খুঁজে পাওয়া পোস্টের মধ্যে আমি অন্তত কোন পার্থক্য দেখি না।

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।