আরিকা আমার হবু বউ। একটু আগে সে আমার কোন কথায় কষ্ট পেয়ে আমার কাছ থেকে কয়েকদিনের ব্রেক চেয়ে নিয়েছে। ব্রেক শব্দটা শুনেই আমি এত ভয় পেয়েছি যে সাথে সাথে চ্যাটাং রেখে উঠে গিয়ে আসরের নামাজ পরে ফেলছি। নামাজ পরে প্রার্থনা করলাম যাতে আরিকার মনটা শান্ত হয়। আমিও যেন ও কষ্ট পায় এমন কথা না বলি। আমার রূঢ় কথার পিছনের ভালোবাসাটা যেন ও টের পায়। আমাকে ছেড়ে যেন না যায়।
নামাজ শেষ করে অনলাইনে এসে দেখি বিশাল ম্যাসেজ। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আরিকা আনুষ্ঠানিক ভাবে আমার কাছ থেকে ব্রেক নিয়ে নিয়েছে!
কিছু শব্দ আছে যেগুলো আমার অসম্ভব ভয় লাগে, যেমন, সেপারেশন, ডিভোর্স, ব্রেকআপ, ইত্যাদি। ভাগ্যিস ম্যাসেজে ব্রেক শব্দটা লেখেনি; শুধু বলেছে কয়টা দিন যোগাযোগ করবে না। তবুও আমার ভয় কাটে না। মন খারাপ করে বাসার সামনের মেইন রাস্তার পাশের বেঞ্চে বসে রইলাম।
এত দূর দেশ থেকে আমি এখন কী করি। ঢাকাতে থাকলে নাহয় কোন ভাবে চার পাঁচটা রঙ্গিন বেলুন যোগার করে এক হাতে নিয়ে আরেক হাতে কয়েকটা গোলাপ সহ তোমার হসপিটালের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে থাকতাম। ডিউটির ফাঁকে বের হয়ে আমাকে দেখে খুশিতে নিশ্চয়ই আমার কাছ থেকে তোমার এসব ব্রেক ফ্রেক নেয়ার চিন্তা এক নিমিষে উবে যেতো। হয়তো সিনেমার মত দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরতে না আমাকে। অন্তত হাতটা ধরে কপট রাগ নিয়ে পাশে বসে এক কাপ কফি তো খেতে।
নিজের পরবাসী জীবন নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে এক দৌর দিয়ে যদি চলে যাওয়া যেত। রাস্তার সামনে দিয়ে লাল লাল বড় বড় বাস যাচ্ছে। আমি তাকিয়ে থাকি বাস গুলো দূরে মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত। এরকম একটা বাসে একদিন এখানে এসেছিলাম।
জানো আরিকা আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি ফেইস বুকে এক জনের স্ট্যাটাস- 'তারেক মাসুদ আজ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন'। আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না। পত্রিকা ঘেঁটে দেখলাম সত্যিই উনি আর নেই। ক্যাথরিন মাসুদ বেচে আছে মুমূর্ষু অবস্থায়। শুধু শুধু তোমার দুশ্চিন্তা বাড়বে বলে তোমাকে বলা হয়নি, কিছুদিন আগে প্যারিস থেকে ভোর বেলা আসার পথে আমাদের কিছুদূরের সামনের একটা গাড়ি ভয়াবহ এক্সিডেন্ট করেছিলো। গাড়ি উলটে পরেছিল রাস্তার পাশে। কেউ মারা গিয়েছিলো কিনা বুঝে উঠতে পারি নি। শুধু চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে এক পলক দেখেছিলাম ভাঙ্গাচোরা গাড়িটা। খুব খারাপ লাগছিলো। আব্বু আম্মু মারা যাবার পর থেকে মৃত্যু সংবাদ আমাকে খুব নাড়া দেয়। আজকে সকালে আমার এই প্রিয় পরিচালকের অকাল মৃত্যুর খবরে আমি বাক রুদ্ধ হয়ে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে স্থির হয়ে বসে ছিলাম।
জানো, কাগজের ফুল ছবিটা তোমাকে নিয়ে এক সাথে দেখার জন্য মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম। সেই ছবি আর কোনদিন দেখা হবে না। মিলন হত্যার খবরে যেমন নিজের ছোট ভাইটির কথা মনে পরে ভয়ে বুকের ভেতরটা কুকরে উঠে। আজ ঠিক তেমনি তারেক মাসুদ এর জায়গায় আমার নিজেকে মনে হচ্ছিলো। আর ক্যাথরিন মাসুদের যায়গায় তোমাকে। আমারা দুজনের কেউই উনাদের সাথে তুলনা করার ধারে কাছেও নেই। আমাদের কারো মৃত্যুই দেশের জন্য হয়তো অপূরণীয় কোন ক্ষতি না। তাই কোন ব্লগ-পত্রিকার খবরও হয়তো হবে না। তবু আমাদের সাথে উনাদের একটা মিল আছে। তুমিও নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছো মিলটা কোথায়। বাংলাদেশে এমন মুক্তমনা দম্পতি দেখলে বুকে সাহস যাগে। এই অচেনা অজানা কিন্তু চিরপরিচিত এই মানুষ গুলোকে দেখলে ভরসার মত লাগে। আমার ভরসার মানুষ গুলোর একজন আজ কী করুন ভাবে চিরদিনের জন্য চলে গেলেন। ক্যাথরিন মাসুদের কথা ভাবছি, না তোমার কথা ভাবছি বলতে পারবো না। দুঃস্বপ্নের মত এসব ভাবনা ভাবতে ভাবতে আমার গা কেঁপে-কেঁপে কেমন একটা অজানা অনুভূতি হচ্ছিলো।
এবার দেশে ফিরে সমাজ-ধর্ম তোয়াক্কা না করে শুধু ভালোবাসার জোড়ে আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি। বিয়ের পর যদি হঠাৎ কোন কারণে আমি মরে যাই। তুমি তো সারা পৃথিবীতে একলা হয়ে যাবে। ভাবনাটা ভাবতেই কেমন স্বার্থপরের মত লাগছিলো নিজেকে। আমি আর ভাবতে পারছিলাম না। আমার বুকের ভেতরটা অস্থির লাগছিলো। না আমি তোমাকে একা ফেলে কোথাও যাবো না আরিকা। কোথাও না।
সারাটা দিন আজ শুধু মান-অভিমানে কেটে গেলো অথচ তোমাকে আমার এই অস্থিরতার কথা বলা হল না। তুমি তো জানো একদিনের বেশি তোমার উপর রাগ করে থাকতে পারিনি কোনদিন। কোনদিন পারবো বলেও মনে হয় না। আমি জানি তুমি এখনো আমার উপর খুব রাগ করে আছো। আমি জানি তুমি কেন মাঝে মাঝে আমার সাথে এমন সংশয়পূর্ণ আচরণ কর। এত ভালোবাসো, তবু কেন আমার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে চাও প্রায়ই। আমি জানি এই ধর্মান্ধ পশ্চাৎপদ জল্লাদ সমাজ আমাদের দুজনকে দুদিক থেকে টেনে-হিচরে আলাদা করে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলতে চায়। মনের মানুষকে জীবনসঙ্গী রূপে পেতেও তাদের এ বাঁধা পেরিয়ে যেতে আমাদের ক্লান্ত হলে চলবে না আরিকা!
এই সমাজের লোকজন মিক্সড ম্যারেজের কাহিনী নিয়ে করা হিন্দি ছবি দেখে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে ফেলে কিন্তু বাস্তব জীবনের সত্যিকার ভালোবাসা গুলো কে কিছু বিরক্তিকর ব্যাখ্যা দিয়ে খারিজ করে দিতে চায়। একচোখা এই সমাজ ব্যবস্থায় আমরা হাজার অনিয়ম, সীমাহীন অত্যাচার, অবিচার, খুনি আসামির প্রেসিডেন্ট কর্তৃক মুক্তি আর নির্দোষ যুবককে জনসম্মুখে হত্যার প্রতিবাদ করতে না পেরে লজ্জিত বোধ করি না। কিন্তু নিরীহ দুটি ভিন্ন ধর্মের ছেলে মেয়ে বিয়ে করে তাদের স্বপ্নের সংসার শুরু করতে দেখলে লজ্জায় সবার নাক কাটা যায়।
আমি জানি চারপাশের কঠিন বাস্তবতা তোমাকে বিক্ষিপ্ত করে ফেলে। তোমার বিক্ষিপ্ততা আমাকেও ক্লান্ত করে ফেলে। তবুও তোমাকে ভুল বুঝে কখনো দূরে ঠেলে দেই না। কেন যে আজ হঠাৎ করে আমিও তোমার কথায় খেপে গেলাম!
তুমি আমাকে ভুল বুঝো না আরিকা। আজ আমি তোমাকে ম্যাসেজ দিয়ে, ফোন করে ভোলাবো না। কারণ এ প্রতিকুল সমাজে সংসার করতে হলে তোমাকেও যে শক্ত হতে হবে।
ঝিম মেরে বসে আছি। অনুতাপে জলছি তোমাকে কষ্ট দেবার জন্য আর তোমাকে নিয়ে হাজার স্মৃতি মনে পরছে একাধারে। প্রতি দিন যার ৮/১০ টি ভালোবাসা মাখা ম্যাসেজ পাই তার নীরবতা কি সহ্য করে থাকা যায়! আমিও আজ বার বার লিখে আবার মুছে দিচ্ছি। তুমিও নিশ্চয়ই ভেতরে ভেতরে ছটফট করছ আমার খবর পাবার জন্য। তাই তো এই লেখাটি লিখছি।
তুমি খুব চাইতে আমি যেন নিয়মিত সচলায়তনে লেখালেখি করে তাড়াতাড়ি সচল হয়ে যাই। তাহলে নিজের একটা আলাদা নিকে ব্লগের লেখা গুলো থাকবে। যে কেউ সেই নাম ধরে আমার লেখা খুঁজে পাবে। তাতে তোমার খুব গর্ব হবে। আমি বলতাম, সচলে একটা ছোট লেখা দিতে আমার যে সময় লাগে তার চেয়ে সে সময় তোমাকে একটা বিশাল চিঠি লিখে ফেলা যায়। আমার কাছে তোমাকে চিঠি লেখাটাই বেশি আনন্দের। তুমি সাথে সাথে বললে, আমাকে একটা চিঠি কম দিও তবু নিয়মিত লেখা লেখি করো।
আরিকা, তুমি কয়েকটা দিন আমার কাছ থেকে আলাদা থাকতে চেয়েছ। তাই আজ তোমার চিঠিটা তোমাকে না দিয়ে সচলেই দিচ্ছি। জানি না তোমার চোখে পরবে কিনা।
জানো আরিকা, খুব দুঃখ লাগে এই ভেবে যে আমি জানি সময়ের সাথে সমাজের এই গোঁড়ামি একদিন ঠিকই দূর হবে কিন্তু কষ্ট দিয়ে যাবে আমাদের দুজনকে। দেখে নিও, এসব বাধা বিপত্তির কথা একদিন শুধু ইতিহাসের এর পাতায় স্থান পাবে। যেমন করে সতীদাহ প্রথা, বিয়ের সম্বন্ধে বংশ নিয়ে অহংকার আজ শুধুই বই এর পাতায়। আজো একজন অতিথি লেখকের ব্লগে পড়লাম, লেখকের জন্ম হিন্দু পরিবারে, সে ছোটবেলায় একবার স্কুল ছুটির পর তার বাড়িতে এক মুসলিম বন্ধু কে নিয়ে এসেছিলো সন্দেশ খাওয়াবে বলে। তাতে তার ঠাকুমা কেমন ধর্ম বিসর্জনের হয়ে যাবার ভয়ে প্রলাপ বকছিলেন। সেই বাচ্চা ছেলেটা কে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন। তারপর তার নাতি কে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে পবিত্র করেছিলেন। আজ কি কেউ এমনটা কল্পনাও করতে পারে?
একটি প্রজন্ম আসবে যারা বুঝেই পাবে না ধর্ম আলাদা হলেও ভালোবেসে বিয়ে করতে অসুবিধা কি? একই পৃথিবীর এই প্রান্তে দেখ, আমাদের ল্যাবের আনা-ক্রিস্টিনা, যার বয়স ৫৭ সেও অবাক হয়ে বলে ‘তোমরা দুজনেই এত ম্যাচিউরড, নিজেদের ভালো নিজেরা বোঝো’; (তোমার আমার যুগল ছবির দিকে তাকিয়ে বলে,) ‘তোমাদের পাশাপাশি দেখতেও কত সুন্দর লাগে তাহলে তোমাদের বাবা মা কেন মানবে না? তাদের তো খুশি হবার কথা। আর তোমারা বিয়ে করে ভালো থাকতে চাইলে পারা-প্রতিবেশীর সমস্যা কি! আমাদের প্রসঙ্গটা উঠলেই বলে, ইউ আর লাইক মাই সান। আই নো ইউ আর ভেরি নাইস বয়, ইয়োর ফিয়ান্সে ইজ রিয়েলি কিউট। আই হোল্ড মাই থাম্বস; আই ক্রস মাই ফিঙ্গার ফর ইউ। আই রিয়েলি হোপ দ্যাট ইউ কুড ম্যারি হার সুন।‘ কথায় কথায় ও আরো বলে ৩০/৪০ বছর আগে ওদের বাবা-মা'রাও মিক্সড ম্যারেজ খুব একটা ভালো ভাবে নিতো না হয়তো। অথচ এখন এটা জিজ্ঞেস করার মতোও কোন ঘটনা না এখানে।
মাঝে মাঝে ভাবি, এরকম একটা দিন খুব শীঘ্রই বাংলাদেশেও আসবে। খেয়াল করে দেখো, আমার ছোটা ভাই, কাজিনরা, ছোট মামা-মামি, তোমার ছোট ভাই কেউই মোটেও বেজার না আমাদের সম্পর্ক নিয়ে। বরং অনেকেই খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে আমাদের বিয়ে করার দিনটার জন্যে। ছোট ভাই বোনদের কেউ কেউ তো এখনি তোমাকে ভাবি বানিয়ে ফেলেছে। গতকালই তো আমার কলেজে পড়ুয়া মামাতো বোন বলছিল আরিকা’দির সাথে ঘটা করে ক্রিসমাস ডে পালন করবো। একটা অনুষ্ঠান বাড়বে আমাদের। নতুন জামা কেনার আরেকটা উপলক্ষ পাওয়া যাবে। অবাক করা ব্যাপার কি জানো? ছোট ভাইবোনরা সবাই মিলে নানু কে পর্যন্ত বুঝিয়ে ফেলেছে! নানু কি বলেছে জানো? বলেছে, ‘আমার নাতি খুশি থাকলে আমিও খুশি’।
অনেকক্ষণ ধরে রোদের মাঝে বসে থেকে মাইগ্রেইনের ব্যাথাটা চারা দিয়ে উঠেছে। লাল রঙ্গের বড় বড় আধুনিক বাস গুলো প্রায় শব্দহীন ভাবে দ্রুত চলে যাচ্ছে। আর কয়েকটা মাস পরে আমিও এখান থেকে চলে যাবো। শুধু সুইজারল্যান্ডের প্রেজেন্টেশনটা দিয়ে আসি। তারপর রওনা হবো আমার প্রিয় বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে, প্রিয় মানুষ যাদের রেখে এসেছিলাম তারা সবাই এখন আর নেই। তুমি তো আছো। তোমাকে ঘিরেই হবে আমাদের নতুন সংসার। আমরা ভালো থাকলে এক সময় আমাদের দুজনের পরিবারের মেনে না নেয়া মানুষ গুলোও আর মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারবে না কারণ তারাও তো আমাদের ভালোবাসে, আমাদের ভালোই চায়। হয়তো এই মুহূর্তে বুঝতে পারছে না। আমরা ভালো থাকলেই বুঝতে পারবে। আমাদের সুখী দেখলে তারাও আমাদের ঠিকই মেনে নেবে।
ছাইপাঁশের কথাঃ
উপরের পোস্ট লেখকের পারসোনাল কম্পিউটারে পাওয়া সচলায়তনের জন্য লেখাটি এখানেই শেষ হয়েছিল। কিন্তু পুরো গল্পটি এখানে শেষ হয় না। আরিকার অভিমান এবার দীর্ঘস্থায়ী হয়। এদিকে প্রবাসী বন্ধুটি ডাঙ্গায় উঠানো মাছের মত ছটফট করে একা একা দিন কাটাতে থাকে। একসময় তার বাংলাদেশের ফেরার দিনটি আসে। সারপ্রাইজ দিবে বলে ঢাকায় কাউকে দেশে ফেরার তারিখটি জানায় নি। এয়ারপোর্ট থেকে যাবার পথে ইয়োলো ক্যাবের ব্রেক ফেইল করে গাড়িটি একটি বাসের সাথে এক্সিডেন্ট করে। বেশ কিছুদিন পর এক্সিডেন্টের খবরটি সবাই পায়।
শেষ পর্যন্ত বন্ধুটি মরে গিয়ে আরিকার সংশয় কাটিয়ে দেয়। দুটো পরিবারের ধর্ম রক্ষা করে।
-ছাইপাঁশ
'চাও নাহি চাও, ডাক নাহি ডাক, কাছেতে আমার থাক নাই থাক,
যাব সাথে সাথে, রব পায় পায়, রব গায় গায় মিশি —
এ বিষাদ ঘোর, এ আঁধার মুখ, এ অশ্রু জল, এই ভাঙা বুক,
ভাঙা বাদ্যের মতন বাজিবে, সাথে সাথে দিবানিশি ।'
[বাস্তব ঘটনার ছায়া অবলম্বনে লেখাটি শুধুই একটি গল্প]
মন্তব্য
বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান ছেলে-মেয়ের সম্পর্ক বা বিয়ে কে যে কি প্রবল বাঁধা দেওয়া হয়, তার যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ আমি আমার মোটা বুদ্ধি দিয়া আমি এখনও খুঁজে পাই না। তবে বিপ্লবী ভালবাসার দূতদের সবসময়ই সালাম, কারণ তাদের হাতেই একদিন সমাজ পরিণত হবে।
শ্রীকৃষ্ণ, 'বিপ্লবী ভালবাসার দূতেরা' কিন্তু বিপ্লব করার উদ্দেশ্যে ভালবাসে না। তারাও আমাদের মত খুব সাধারণ মানুষ। শুধু তাদের হাতে সমাজ পরিণত করার দায়িত্ব ছেরে না দিয়ে। তাদের বিপদের দিনে পাশে দাঁড়িয়ে যেন নিজেরাও সেই দায়িত্ব কিছুটা নিজের উপরও নেই।
ভাই, কেন যে মন খারাপ করে দেন....
মন খারাপ একটি সংক্রামক মানবিক অনুভূতি।
মনটা দুই দিন থেকে এমনিতেই খারাপ। তারউওর সবাই শুধু এক্সিডেন্টের উপর পোস্ট দিচ্ছে।
মনটাই খারাপ হয়ে গেলো
এ হাসনাত
আসলে এক্সিডেন্ট নিয়ে কোন পোস্ট দিতে চাই নি। এক্সিডেন্ট গুলো কাহিনীর প্রয়োজনে এসেছে।
আর কত
আমি জানি না!
আজকে সব মন খারাপ করা পোস্ট আসছে। লেখাটা ভাল হয়েছে।
মন খারাপ একটি সংক্রামক ব্যাধির মতন। আমিও যে সেই ব্যাধিতে আক্রান্ত।
ধন্যবাদ লেখাটির প্রশংসা করার জন্য।
ধন্যবাদ।
মন খারাপ করে দিলেন,তার চে বেশি হতাশ করলেন।কেন জানিনা গল্পের মাঝেও কখনো দেখিনি দুটি ভিন্ন ধর্মের মানুষ সুখে আছে এমনটি লিখতে।আরিকার মত আমিও একজন।আমি ও কি মরে গিয়ে দুই পরিবারের সম্মান বাচাব?আসলে দুটি মানুষ সুখে থাকবে এর চে বেশি এক জীবনে কি চাই?
কেউ যদি জিজ্ঞেস করে মৃত স্বামীর সাথে চিতায় উঠে আমি কি পরিবারের সম্মান বাঁচাবো? আপনি কি বলবেন তাকে? সম্মানের দোহাই দিয়ে এ ধরনের গোঁড়ামির কোন মানে হয় না।
(কিন্তু ভালোবাসা নিয়ে সংশয় থাকলে সেটা ভিন্ন কথা। তাই নিজেদের মধ্যে শুধু ভালোবাসা ছাড়াও পরস্পরের প্রতি সহনশীলতা, কমিটমেন্ট গুলো খুব শক্ত হওয়া চাই।)
আপনার প্রতি সহানুভূতিশীল এবং মুক্তচিন্তা করে পরিবারের এমন মানুষ গুলো কে ধীরে ধীরে জানান আপনার অনুভূতির কথা। কাছের বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন আপনার পছন্দের মানুষটি কে। সবাই কে খুশি করে কিছু করতে পারবেন না। তাই সেটা আশাও করবেন না। আপনারা দুজন ভালো থাকলে সময়ে ধীরে ধীরে নিশ্চয়ই সব ঠিক হয়ে যাবে।
আপনার জন্য রইলো শুভ কামনা।
হুম!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
কি বুঝলেন দুষ্ট বালিকা?
নতুন মন্তব্য করুন