দেশে এখন অনলাইনে কেনাকাটা করা যাছে, অনেক তথ্যবহুল ওয়েবসাইট তৈরি হছে, তরুনেরা তথ্যপ্রযুক্তির কল্যানে অর্থনীতির বিকাশে অবদান রাখতে পারছে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক পৌঁছে যাচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে। শিক্ষার হার বাড়ছে। মৃত্যুহার কমছে। এটিএম বুথ বসানো হচ্ছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে। এগুলো আশার কথা, ভালো লক্ষণ। আমরা কি তবে উন্নতির পথে চলেছি? নাহ, উপরের কয়েকটি আশার কথা ছাড়া বাকি পুরো দৃশ্যপট অন্ধকার! '
ডিজিটাল বাংলাদেশ' এর প্রতিশ্রুতি নিয়ে ক্ষমতায় এসে বর্তমান আওয়ামী সরকার তার পূর্ববর্তী সরকারগুলোর মতই ব্যর্থ। বরং অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকেও উত্রে গেছে। কত আশা নিয়ে আমরা আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। বিগত সরকারের অজস্র ভুল-ভ্রান্তি যখন একে একে চোখের সামনে এসে ধরা দিলো, আমরা আমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হলাম। স্থির করলাম, আর চাঁদা দিবো না, আর ঘুষ-দুর্নীতির কাছে দেশকে তুলে দেবনা। তারেক, মামুনের মতো কুলাঙ্গার, লোভীর কাছে মাথা নত করবো না। এই দেশের কোটি কোটি আশাবাদী প্রানের প্রত্যাশা একটাই ছিল- বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে, আমারা উন্নতি না করি, অন্তত পতন তো ঠেকাতে পারবো!
আমরা আজ ডিজিটাল। এটা এই বছর দুয়েকের কথা নয়, অন্তত এক দশক হয়ে গেছে আমরা ডিজিটালইজেশন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। যখন আমরা এনালগ ছিলাম, তখন অনেকটা বিবেকবান ছিলাম। কিছুটা হলেও লজ্জাবোধ ছিলো বলেই হয়তো দ্রব্যমূল্য কিছুটা হলেও স্থিতিশীল ছিলো, অন্তত এখনকার মতো পাশাপাশি দুটো দোকানে প্রতি কেজিতে বিস্তর মুল্য-পার্থক্য ছিল না। বস্তুতঃ আমরা যখন দেখলাম আমাদের দেশনেত্রীর ছেলেরা দেশকে চুষে ছিবড়ে করে দিয়েও বহাল তবিয়তে আছে, তখনি আমরা ভাবতে শুরু করলাম- তাহলে আমরা সততা ধরে রেখে ঠকবো কেনো? আমরাও যে যেভাবে পারি একে অপরকে ঠকিয়ে নিজের পকেট ভারি করতে লাগলাম। ভুলে গেলাম, আমরা মানুষ! এই মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ধারা এক ফোঁটাও কমেনি, বরং বেড়েছে। কমবেই বা কেনো? সমাজের শিক্ষিত ও প্রভাবশালী জনগোষ্ঠী যখন সীমাহীন দুর্নীতিতে ডুবে যায়, তখন অশিক্ষিত ও ক্ষমতাহীন মানুষগুলো কি শিক্ষা পায়? অন্তহীন দারিদ্র্যের কশাঘাত আর সততার পরকাষ্ঠায় প্রতিদিন নিজেদের বলি দিতে দিতে দিশেহারা মানুষ তখন তাদেরই পথ ধরে। আমরা এনালগ ছিলাম ঠিকই, কিন্তু অনেকটা সভ্য ছিলাম।
রাস্তাঘাট, বাজার, অফিস-আদালত, ডাক্তারখানা, টিচারের বাসা- আজ কোথায় আমরা নিশ্চিন্ত? কোথাও নয়। কোথাও উন্নতির ছোঁয়া নেই। কোথাও জনতা শান্তিতে নেই। আমরা আজ দ্বিধাবিভক্ত, হিংস্র, অসহায়, হতাশ, ক্লান্ত ও মৃতপ্রায়। অমিত সম্ভাবনার এই সোনার বাংলাকে যারা আজকের এই ভগ্ন দেশে পরিনত করেছে এবং এখনও করছে, তারা সাবধান থাকুন। আমরা আমজনতা আবার জেগে উঠবো। নিরন্তর অবিচার ইতিহাস কখনো সয়নি।
-আনোয়ারুল কবির খান
মন্তব্য
সবটা মেনে নিতে পারলাম না। বিকজ সভ্যতার বিকাশে অনেক সময়, ভালো কিছুর প্রয়োগও উল্টো ফল দেয়।
তবে চেতনাটা একেবারেই Wrong নয় আপনার।
ডিজিটালাইজড পুরা হলাম কোথায় এখুনি?
এস.এস.সি পরীক্ষার বৃত্ত ভরাটের মতো সত্যিকারের ডিজিটাল পদ্ধতি লাগবে সজনপ্রীতি আর দূর্নীতি ঠেকাতে। সকল নিয়োগ এবং টেন্ডার এই পদ্ধতিতে হতে হবে। সকল ভাইবা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। সরকারী ডিসিশন মেকারদের থেকে ব্যাবসায়ীদের দূরে রাখতে হবে।
বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দূর্নীতি দমন কমিশনকে সাধিনতা দিতে হবে।
সাংসদদেরকে ফ্লোরক্রসিং এর অধিকার দিতে হবে।
সব দেন। এরপর বলেন যে এনালগ চান না ডিজিটাল চান।
@Kamrul Hasan আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপি, ডিজিটাল স্টেট (অন অথবা অফ) এর মতো হয়ে গেছে গত দুই দশকে। ডিজিটালাইজড হলাম না কোথায়!
আমি ডিজিটালাইজেশনের বিরোধী মোটেও নই, কিন্তু প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে সাথে দেশের রাজনীতির নৈতিক উন্নতিটা বেশি জরুরী বোধ করি।
@আনোয়ারুল কবির খান
সবাই তো হিপোক্রিট। বোঝেন না কেন? আওয়ামীলীগ হোক আর বিএনপি হোক। ওরা তো সব কিছু হাতছারা করবে না।
আমাদেরই আদায় করে নিতে হবে।
যেমন দেখেন, আজ কাল অনেকেই রাস্তা মেরামতে টেন্ডার পেয়েছে। তারা কি করছে? তিন নম্বার ইট দিয়ে গর্ত গুলো শুধু ভরাট করছে। আর লুটে নিচ্ছে শতকোটি টাকা, দেশবাসীর কষ্টার্জিত টাকা। প্রবাসী ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের না খেয়ে না ঘুমিয়ে, আপনজন থেকে দিনের পর দিন বহু দূরে থেকে কষ্টার্জিত রেমিটেন্স।
তো তারা কিভাবে টেন্ডার গুলো পাচ্ছে? তারা কি বিশেষ কোন ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল দেখিয়েছে? অল্প খরচে শক্ত পোক্ত সঠিক কাজ করার নিশ্চয়তা দিয়েছে?
মোটেই না। তারা কাজ গুলো পেয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় অথবা স্বজন প্রীতির কারনে।
এই খানেই আসছে বৃত্ত ভরাটের কথা। এভাবে আমরা নাম পরিচয় গোপন রেখে শুধু মাত্র কাজের গুনগত মান এবং খরচ বিবেচনায় নিয়ে একজন কন্ট্রাকটরকে দেশের গুরুত্ব পূর্ন স্থাপনা সমূহে নির্মান ও পুনঃনির্মানের জন্য সিলেক্ট করতে পারি।
সব যদিও একদিনে হবে না, তবে আমাদের সোচ্চার হয়ে এগুলো আদায় করে নিতে হবে।
দেখুন ওরা কি হিপোক্রিট। ৭২ এর সংবিধানে ফিরে গেল। অথচ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দিল না। যা ৭২ এর সংবিধানে নাকি ছিল। সাধারন মানুষকে অযথা ধর্ম না ধর্মনিরপেক্ষতা এই ফালতু বিতর্কের মধ্যে ফেলে সকল গনতান্ত্রিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করলো। কেউ বুঝলোই না। নির্বাচন আর নির্বাচন কমিশনের কি হবে তা কেবল ভবিষ্যতই বলতে পারে। আবার একটা হরতাল আর ঝামেলার মধ্যে হয়তো আমরা আবার পড়বো।
আমাদের সোচ্চার হয়ে এগুলো আদায় করে নিতে হবে।
নতুন মন্তব্য করুন