হারিয়ে ফেলার বেদনা আমাদের সবার আছে, একেক রকম চেহারায়। কিন্তু আছেই! কতকিছুই হারিয়ে ফেলি আমরা। ছোট্টবেলার প্রিয় খেলনা, ভালোলাগার বই থেকে শুরু করে প্রিয়তম বন্ধুটি পর্যন্ত এই হারানোর তালিকায় থাকে।
এসব হারানোর ব্যাপার গুলো কখনো কখনো আমাদের পোড়ায় ভেতরে ভেতরে। এই আমি ছোটবেলার খুব প্রিয় বন্ধুর মুখটা কিছুতেই আর মনে করতে পারিনা! কিন্তু দিব্বি তার নামটি মন কামড়ে আছে এখনো। মাঝে মাঝে বুড়ো আঙ্গুলটা মুখে পুরে দেবার একটা বদাভ্যাস ছিলো আমার শৈশবের প্রিয়বন্ধু তানিশার। ওর একটা লাল মখমলের কারুকাজ করা জামা ছিলো, সেটা পরলে ওকে ঠিক পরীর মত মনে হতো। মাঝে-মধ্যে আমাদের আড়ি হয়ে গেলে তানিশা ওদের বাড়ির পেয়ারা গাছে ওঠে আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে পেয়ারা খেতো। পাড়ার অন্য সব বন্ধুরা ভেতরটা লাল আর খুব মিষ্টি পেয়ারার লোভে তখন আমাকে অগ্রাহ্য করে তানিশার কাছে গিয়ে ভীড়তো। সেসময়টায় আমার বুকের ভেতর একটা অচেনা অনুভূতি কেমন গুনগুনিয়ে যেত।
বড় হয়ে জেনেছি ঐ অনুভূতির নাম কষ্ট! এতসব মনে আছে অথচ অনেক চেষ্টাতেও আমি আর তানিশার মুখটা মনে করতে পারিনা! আমি ব্যথিত হই এক সময়ের খুব প্রিয়মুখটির প্রতিচ্ছবি বুকের কোনো ভাঁজে খুঁজে না পেয়ে!
মনে করতে পারিনা অসম্ভব প্রিয় বই 'উভচর মানুষ' বইটির লেখকের নাম। অথচ বইটির অনুবাদক কে, কোন প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশিত হয়েছিলো সেটি স্মৃতি আঁকড়ে আছে দিব্যি! এর কোন মানে হয়! এরকম হারিয়ে ফেলা আমাকে বিব্রত করে। সুকুমার রায় সমগ্র কিছুদিন পর ফেরৎ দেবার নাম করে সেই যে নিয়ে গিয়েছিলেন আমার দূর সম্পর্কের এক ফুপি আজ পর্যন্ত তার হদিশ মেলেনি। চাইবো-চাচ্ছি করে সময়মত আমারও আর বইটা ফেরত চাওয়া হয়নি। সুকুমার সমগ্রটা আমার চিরকালোর জন্যই গেলো!
বই হারিয়েছি কিংবা চেয়ে নেবার পর আর ফেরত পাইনি এমন সংখ্যা অজস্র। ছাতা হারানোর ব্যাপারেও আমার বেশ নামডাক ছিলো আমাদের পরিবারে। আজও এ সুনামে আর কেউ দাগ বসাতে পারেনি। সেই স্কুল জীবন থেকে আজ পর্যন্ত কতগুলো ছাতা যে হারিয়েছি তার সঠিক হিসেবটা একমাত্র খোদাই জানেন। একবার মায়ের সাথে বইমেলাতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম। সে এক কাহিনি বটে! আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। 'হারিয়ে গিয়েছি এই তো জরুরী খবর' টাইপ বিজ্ঞাপন মুখে এঁটে অনেকক্ষণ সেদিন সন্ধানীর স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে অবশ্য সন্ধানীর কিছু দয়ালু মানুষ মাইকিং মারফত মাতা-পুত্রীর মিলনপর্ব সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছিলেন।
নিউমার্কেটে টুকটাক কাজ সেরে, একবার আমি আর সেঁজুতি সিএনজিতে বাড়ি ফিরছি। পথে সেঁজুতিকে নামিয়ে আমি বাড়িমুখে রওনা দিলাম। বাড়ি পৌঁছে ভাড়া মিটিয়ে গটগটিয়ে নেমে গেলাম। সিড়ি ভেঙ্গে ওঠবার সময় কেমন জানি খালি একটা অনুভূতি হওয়াতে খেয়াল হলো আজকে সেঁজুতির কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া 'পার্থিব' বইটা সিএনজিতে রেখেই নেমে গেছি। বইটা নিয়ে চলে গেছে সিএনজি। 'পার্থিব' হারিয়ে ফেলবার দুঃখ আমি অনেকদিন বয়ে বেড়িয়েছিলাম। কারণ বইটার প্রথম পাথায় সেঁজুতি এত চমৎকার কিছু কথা লিখে দিয়েছিলো তৎক্ষণাত। ওটার জন্যই আমি বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম। যদিও আমার শোকাগ্রস্হ চেহারা সহ্য করতে না পেরে সেঁজুতি আরো এককপি কিনে দিয়েছিলো। কিন্তু সব হারিয়ে যাওয়া বিষয়গুলো কি আর ওভাবে ফিরে পাবার ব্যবস্হা থাকে! হারিয়ে যাওয়া শৈশব-কৈশোর যখন কোনো বৃষ্টি মুখরদিনে হাত নেড়ে ডাকে' আয় ছেলেরা খেলা ফেলে......' তখন, চাইলেই কি পারি তার কাছে ছুটে যেতে! আমার তুমুল আলোয় মাখা শৈশব-কৈশোর আমি চিরকালের জন্যই হারিয়ে ফেলেছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এভাবে কতকিছুই হারিয়ে যায়, হারিয়ে ফেলি। এরকম শূণ্যতা আর হারিয়ে ফেলবার তালিকা দিনের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তেই থাকে কেবল!
মন্তব্য
উভচর মানুষের লেখকের নাম আলেকজান্ডার বেলায়েভ, যদি এতদিন পরে মনে থেকে থাকে ঠিকমত। বইটা আমার ছিলো না কোনকালেই, অনেক আগে আরেকজনের কাছ থেকে নিয়ে পড়েছিলাম (এবং ফেরতও দিয়েছিলাম, যদিও আমার সব বই তারা ফেরত দেয়নি)।
আমার অনেক বই আর স্ট্যাম্প মেরে দিয়েছে অনেকে। ছোটবেলায় এখনকার চেয়েও বড় গাধা ছিলাম কিনা, সবাইকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতাম। মেরে দেয়ার তালিকায় আছে গাড়ি, লেগো, টিনটিন, অন্যান্য বই, স্ট্যাম্প, অন্য খেলনা আরো অনেক কিছু। এমনকি বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রগতিশীল এক সাহিত্যব্যক্তিত্বের ছেলেও আছে মেরে দেয়ার এক্সপার্টের ওই তালিকায়, যাঁরা মনে করেন পরিবার অথবা বাপের আচরণ থেকেই ব্যক্তির চরিত্র নির্ধারিত হয় তাঁদের জন্য বললাম। নাম বললে তো মানহানীর মামলায় ফেঁসে যাবো - তাঁরা এত বড় মাপের মানুষ আর আমি কোথাকার কে!
আরে লেখকের নামটা আপনি মনে রেখেছেন দেখি! ছোটবেলাতেই যিনি 'বড় গাধা' ছিলেন, বড়বেলাতে তিনি কী অবস্হায় আছেন সেই স্বনামধন্য লোকের ছেলেটির নাম জানতে চাই, বলে ফেলুন দেখি সে কাজটি করে সটকে গেছে, আর আপনি নাম বলতে এত ভয় পাচ্ছেন? কেমন ভীতুরে ভাই আপনি ওভাবে জিনিস খোয়ানো সত্যিই কষ্টের ব্যাপার। যদিও এখন ভাবলে হাসিই পায়..কত সামান্য সামান্য জিনিস হারিয়ে কেমন দুঃখী বনে যেতাম।
"ভালো লেখার হাত, সচলায়তনে স্বাগতম" লিখে দেখি আপনার ব্লগ । হাচল হওয়ার অভিনন্দন। লেখা ভালো লেগেছে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
কোনো সমস্যা নেই, যেহেতু আমাকে কেউ স্বাগতম বলেননি আপনার লেখা(মুছে দিয়েছিলেন নাকি? তাহলে হবে না কিন্তু!) শব্দগুলোকে সাদরে নিলাম। ঠিক না? আমার লেখা অনে্নককক ভালো। সব অক্ষর এক সাইজের, কেউ ছোটো কেউ বড় নয় অনেক ধন্যবাদ।
মুছে দিইনি, কোটেশন বন্দী করে দিলাম
ছোটবেলায় আমি হারাতাম খুব টাকা। আমি তাই পিচ্চিবেলায় বরাবরই গরিব ছিলাম। ছাতা এখনো হারাই।
আমি জীবনে অনেক বই মেরেছি। আমাদের একটি পড়ুয়াচক্র ছিলো, বন্ধুদের নিয়ে। একেকজন একেক বই কিনতো, সবাই পড়তো; প্রায় সবার শেষে পড়তাম আমি, এবং... আর এক মামা আর চাচাতো ভাইয়ের বই মেরেছি হেবি। লাইব্রেরি-দোকানের মারি নি, ওতো তুখোড় ছিলাম না। এখন আফসোস হয়। আমার-ও অনেক বই খোয়া গেছে। কাটাকুটি করে নিয়েছে নিয়তি।
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
'ছোটবেলায় গরিব ছিলেন ' পড়ে হেসে ফেললাম এম্মা! আপনি বই মারিং করতেন? এখনো আছে নাকি অভ্যেসটা? বই মারিং করে যারা তাদের আমি দু'চোক্ষে দেখতে পারিনা আপনার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতে হবে দেখি ধন্যবাদ
খুব ভাল লাগল লেখাটা
ক্রমাগত হারিয়ে ফেলা এই জীবনের সবকিছুর সাথে একদিন হয়ত এই জীবনটা নিজেও যুক্ত হবে
আজ অনেক কষ্ট করেও যে বন্ধুর নাম মনে আনতে পারিনা, কিছুদিন পর প্রকৃতি প্রতিশোধ নেবে এর---
আমাকে সবার মাঝে হারিয়ে দিয়ে
সব হারাতে হারাতে একদিন নিজেকে হারিয়ে ফেলাই হয়ত এই জীবনের সারাৎসার---
আবারো বলছি, খুব ভাল হয়েছে লেখাটা
এমন লেখা আরো আসুক
শুভেচ্ছা নিরন্তর
তুচ্ছকে উচ্চ ভাবাটা আপনার একটা খুউব বড় গুণ অনিকেত ভাইয়া! সত্যি বলছি, লজ্জা পেলেও আনন্দে আটখানা হতে ইচ্ছে করছে( প্রশংসায় গলে না কে রে? আমি তো কোন ছার ) সত্যিই মাঝে-মধ্যে ভীষণ রাগ হয়! হারিয়ে যাওয়াই যদি নিয়তি তবে কেন এতসব মায়ার শেকলের জড়ানো! বাপ্রে কঠিন দার্শনিক বাতচিত এসে যাচ্ছে দেখি মুখে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে
সুন্দর হয়েছে লেখাটা।
সচলে স্বাগতম।
প্রায় এই রকম বিষয় নিয়েই একটা লেখা খসড়া হয়ে আছে...মনে পড়ে গেল। দেখতে হবে - আবার হারিয়ে গেল নাকি
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ ভাইয়া লেখাটা জলদি খুঁজে বের করেন! আপনার লেখা মানেই তো বাড়তি কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা
আমরা নিজেরাই কি আমাদের হারিয়ে খুঁজি না প্রতিমুহূর্তে!!!
খুব ঠিক কথা অর্ক। পড়বার জন্য ধন্যবাদ
খোয়া জিনিসের জন্য শোক না করে মোহমুদ্গর আওড়ান - "কা তব কান্তা কস্তে পুত্রা / সংসারোহং অতীব বিচিত্রা..."
সংসারোহয়ং=সংসারঃ+অয়ং [এই সংসার]।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
অ্যাঁ !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঠিক ঠিক! উষাকালে কোন বিষন্ন বদন বালিকা কিচ্ছুটি না বলে চলে গেলে.......' ওসব না ভেবে বরং শ্লোকটাই আওড়ান, মনে শান্তি পাবেন
সুন্দর করে লিখেছ আয়নামতি। খুব ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
অনেককক ধন্যবাদ দিদি(প্রশংসায় আমি আবার দারুণ ভেসে যাই কিন্তু ) তুমি জিলাপীর রেসিপিটা দিচ্ছো কবে(সজল মার্কা রেসিপি দিলে হবে না বলে দিচ্ছি)? জলদি দাও...
রাঁধতে আমি ভালবাসি বলে রেসিপি পোস্ট দিতে মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করে ঠিকই। কিন্তু এরকম পোস্টের মুশকিল হল ছবি দিতে হয়, নইলে জিনিষটা সুবিধের হয়না। অথচ ওইখানটিতেই আমার যত অসুবিধে। শুধু রেসিপি চাইলে আমি মেইল করতে পারি। তাতে খুব সুবিধে হবে বলে মনে হয়না।
আর সজলের রেসিপি ? দুনিয়াতে ওর চাইতে মজার রেসিপি আজতক পড়িনি আর।
ফালতু অজুহাত ছাড়ুন ঠাম্মি... একালের ছেলেপিলেকে ওইসব আলতুফালতু কারণ দিয়ে ভোলানো যায় না। কোনকালে খাবারের কোন ছবি দেইনি, তাইতেই রেসিপি পড়ে লোকজন আমার নামের আগে পেটুক বিশেষণ লাগিয়ে দিয়েছে আর আপনি নাকি ছবির অভাবে রেসিপি দিতে পারেন না! - বললেই বিশ্বাস করলাম আর কি!
এ্যাঁ না, মেইলে দিলে হবে না!! আম্রাও চাই। পোস্টেই দিতে হবে। আর ছবি কোন ঝামেলা হল! আপনি ছবিখানা খালি তুলেন ঠাম্মি আর খোমাখাতায় আপ্লোড করেন বাকী সংযুক্তির কাজ আমারাই করে দিবো নে দরকার হলে! তবে আপনাকে একটি হারিয়ে যাওয়া পোস্টে কিন্তু ছবি পোস্ট করতে দেখেছিলাম!
_____________________
Give Her Freedom!
হায়রে ! ওই ছবি আপলোড করতে গিয়ে যে নিজের আর মানুষের কত ঘুম হারাম করেছি তার হিসেব নেই। আমার নাতিপুতিরা নেহাত এক একটি দেবপুত্র তাই কিচ্ছুটি বলেনি, সব যন্ত্রণা হজম করেছে। আরেকবার ওই পথে গমন ভাবলেই আমার গায়ে জ্বর আসে। আমায় মাফ করলে হয়না ? সচলে অনেক পাকা রাঁধুনি আছে তাদের ধরগে কষে। আমি মাপ চাই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
উহুঁ হয় না। তাদেরও ধরবো, তবে আপনার পোস্ট চাইই চাই। নাতিপুতিরা তো করেছে একবার, এবার আমরাই করে দিবো, নো টেনশন, আপনি শুধু খোমাখাতায়/মেইলে ছবি আপলোড করে দিবেন, লিংক সংযুক্তি টুক্তি যা আছে সব করে দিবো, আপনাকে কোন কষ্টই করতে হবে না! তবু চাই।
_____________________
Give Her Freedom!
আমি জীবনে প্রথম হারিয়েছি কলম। স্কুলের বেঞ্চে কলম রাখার জায়গা ছিল একটা। ছোট্ট একটা গর্তমতো। ওখানে কলমটা রেখে দৌড়ে মাঠে খেলতে চলে যেতাম। স্কুলের সামনে মাঠ ছিল। আমাদের সময় নিয়ম ছিল যতক্ষন টিচার ক্লাসে আসছে না, ততক্ষণ বাইরে ইচ্ছে মতো দাপাও লাফাও। ফিরে গিয়ে দেখতাম কলমটা নেই। কলম হারানোর জন্য বকা খাওয়া অনিবার্য ছিল।
আরেকটু বড় হবার পর ছাতা হারাতে শুরু করলাম। বাবা বিদেশ থেকে সুন্দর সুন্দর ছাতা আনতেন। আমি একেকটা স্কুলে নিয়ে যেতাম। আর ফিরে আসার সময় স্কুলে রেখে চলে আসতাম। দ্বারখোলা স্কুলে সেই ছাতা কখনোই ফিরে পাওযা যেতো না আর। ছাতা হারাবার জন্যও কম শাস্তি পাইনি।
অবাক কান্ড, বড় হবার পর একদিন আমি হারিয়ে ফেললাম আস্ত একটা মানুষ। কিন্তু কলম ছাতার জন্য অনেক বকুনি শাস্তি গুনতে হলেও মানুষ হারাবার অপরাধে আমাকে কেউ বকেনি। মজার ব্যাপার না?
আপনাকে হাচলত্বের অভিনন্দন। হাত খুলে লিখতে থাকুন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হুম! আপনার হারিয়ে যাওয়ার তালিকায় মানুষ হারানোর বিষয়টা পড়ে মজা লাগেনি বরং মনটা খারাপ হলো ভাইয়া অনেক ধন্যবাদ।
কলম, ছাতা, বই-কতো কিছুই যে হারালাম। কতো মন-খারাপ হলো, গালি খেলাম। কিন্তু, নিজের জীবনটাই যে হারিয়ে ফেললাম, এটা নিয়ে কেউ টুঁ শব্দটাও করলো না!
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
শিশিরের শব্দের মত কোথাও নিঃশব্দে কেউ কেঁদে যায় জীবন হারিয়ে.......' ক'জনা শুনি সেটা!
জাতক, আপনি কী লেখালেখি ছেড়েই দিলেন নাকি? চোখে পড়ে না আপনার লেখা। লেখা চাই আপনার, জলদি দিন লেখা ধন্যবাদ আপনাকে।
দাবির সপক্ষে রাখলাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দাবির এই ইটাকে 'হ্যাঁ যুক্ত' ভোটে জয়যুক্ত করার অনুরোধ করা হইলো
কতকিছু হারাই আয়নাদি, তার ইয়ত্তা নেই!!! বন্ধু, নিজেকে, বই, ছাতা, খাতা, কলম, টাকা সবই হারিয়ে যায়!!! বড় মন ভোলা মানুষ আমি!!! র্যাম ভালোই কিন্তু হার্ডডিস্ক বড়ই খারাপ, কিছুই সে স্টোর করে না, র্যাম থেকেও নেওয়ার কোন আগ্রহ দেখায় না!!!
খুব সুন্দর করে লিখেছেন................নিয়মিত লিখবেন...................
_____________________
Give Her Freedom!
মন ভোলা মানুষ, ওসব দুঃখ ভুলে লেখা দিন একটা। আমাকে বলা হচ্ছে, আপনি নিজে লেখেন না কেন রে
এটা ভুলে যাবার আগেই লিখেন দেখি অনেক ধন্যবাদ মৃত্যুময়।
ইশ্ সবাইকে নিয়মিত লেখার কথা বলে বেঁচে যাই, আপনাকে আর ফাঁকি দেওয়া গেল না, ঠিকই ধরে ফেললেন!! জ্বি আপু লিখবো, অবশ্যই লিখবো।
শুভেচ্ছা জানবেন।
_____________________
Give Her Freedom!
ফাঁকি না দিয়ে পোস্ট দেবার জন্য অনেকককক ধন্যবাদ মৃত্যুময় ফিরতি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আর বইলেননা আয়নামতি। হারাইতে হারাইতে অস্থির হয়ে গেলাম। প্রত্যেক দিন যে কতবার হারাই তার কোন হিসাবই নাই। নিজেরে নিজে হারাই। । অন্যের মাঝে হারাই। পাবলিকের ভীড়ে হারাই। বই হারাই, মোবাইল হারাই, মানিব্যাগ হারাই, চাবি হারাই। এতসব হারানোর ব্যস্ততায় কখন যে অনেক প্রিয় মানুষ হারায়ে ফেলছি খবরই রাখি নাই।
ঠিকই বলেছেন জুয়েল। বস্তু হারিয়ে ফেলাটা একটা পর্যায় পর্যন্ত সহ্য করা যায়। কিন্তু মানুষ, বিশেষ করে প্রিয় মানুষ হারিয়ে ফেলার যাতনা বুকে বেজাই রকম বাজে রে! আপনার বাসের স্পীডিং নিয়ে লেখার কথা খুব মনে পড়েছিলো দেশে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার কারণ.........কত অমূল্য প্রাণ হারিয়ে ফেললাম মুহূর্তের খেয়ালে........
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
মৌনকুহর কী মৌনব্রত নিলেন নাকি? মুখে কথা নেই, কেনু কেনু কেনু ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
জীবনে হারিয়েছি অনেক কিছুই। সবচেয়ে কষ্টকর সময়কে হারিয়ে ফেলা। হারিয়ে গেলেও অনেক কিছু আবার ফিরে পাওয়া যায় কিন্তু সময় ? আপনার লেখাটি পড়ে কিছু হারিয়ে যাওয়া (ভুলে যাওয়া) স্মৃতি ফিরে পেলাম। আপনার লেখাটি এবং লেখাটির উপর অনেকের মন্তব্য পড়ে কেন জানি মনে হল জীবনে সময়ের অপচয় করেছি অনেক। হারিয়ে ফেলেছি অনেক মূল্যবান সময়। আরও কিছু হয়ত করার ছিল নিজের জন্য, পরিারের জন্য, মানুষের জন্য। দোয়া করি ভাল থাকবেন আনন্দে থাকবেন।
মন্তব্য : প্রৌঢ়ভাবনা
মন ছুঁয়ে গেলো প্রৌঢ়ভাবনা আপনার মন্তব্যটা!!! সময়কে অবহেলা করি বলেই না সময়ে ঠিকঠিক বুঝিনা কী হারালাম বা হারাচ্ছি........আপনার জন্যেও শুভকামনা থাকলো। ধন্যবাদ।
হারতে হারতে হারিয়ে যাই নিজেই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কিন্তু আমার তো ধারণা, নজরুল ইসলাম 'হারতে হারতে জিতে যাওয়াদের দলে'!
আপনারে আমি চিনেছি। আপনি সেই মাক্কেল যে আমাকে কবিতা লিখিয়ে ছেড়েছিলো।
লেখাটা অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী। ভালো লেগেছে খুউব।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনার বলার ঢঙে না হেসে পারলাম না! কিন্তু আমার তো ধারণা, আপনি আগে থেকেই কবিতা লেখেন এবং পোস্টের কবিতাটি আপনার আগেরই লেখা। খামোখাই আমাকে কৃতিত্ব দেয়া কেনো? হুম দিচ্ছেনই যদি, তবে মনে রাখবেন, যদি কালেদিনে বড় কবি বনে যান...আপনার রয়ালটির ৫% আমার কিন্তু শেয়ারটা দিতে আবার ভুলে যাবেন না যেন! অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া
আয়নামতির লেখা খাঁটি বেলজিয়ান কাঁচের আয়নার মতো ঝকঝকে হয়েছে। বেটার লেট দ্যান নেভার, হাচলাভিনন্দন!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
এমন উপমায় লজ্জা পেতেও যে ভুলে গেলাম ভাইয়া! অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় রোমেল ভাইয়া
বাহ, আয়নামতি আপা, মন্তব্যের ঘরে যেয়ে আপনাকে আর খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছেনা, গুড় এবং ধনেপাতার ব্যাপক ঘাটতি, পপকর্ণও খাচ্ছেননা - এমনকি আপনাকে পেলেই যারা নানান রকম “বায়না” ধরে তাদেরও দেখলামনা!!
লেখা বহুকিছু মনে করিয়ে দিয়ে গেলো - খুব ভালো!
কিরে বাবা! দিলেও দোষ না দিলেও দোষ। যাবো কোথায় বহুকিছু পেটে নিয়ে বসে থাকলে চলবে? জলদি একটা পোস্ট লিখে ফেলুন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক অলৌকিক শব্দমালা মাথার ভেতর পরিযায়ী পাখির মতো উড়ে এসে পরে হারিয়ে গেছে একসময়, লিখে রাখিনি বলে। ছেলেবেলার সেই হারানো পেন্সিলের কথা মনে পড়লে আজো ভেতরটা খচখচ করে।
লেখা অসাধারণ হয়েছে, আয়নামতি।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
সুমন, আপনার মন্তব্য পোস্টের জৌলুস অনেকগুণ বাড়িয়ে দিলো যেন! লিখে ফেলুন না সেই হারিয়ে যাওয়া পেন্সিলের প্রতি জেগে থাকা ঝিনুক কষ্টে কথা পোস্ট পড়বার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
উভচর মানুষ... ইকথিয়ান্ডর... হিজিবিজবিজ... কৃষ্ণজীবন আর হেমাঙ্গ...
আহ, কী প্রিয় একেকটা বই!
'পেছনে তাকালে কেন মূক হয়ে আসে ভাষা!
মনে পড়ে সেই সব দুপুরের জলাভূমি,
সেই সব বেতফল, বকুল কুড়ানো ভোর, আহা সেই রাঙাদির আঁচলতলের উত্তাপ---
মনে পড়ে…….'
#মনে পড়ে সুদূরের মাস্তুল : রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ
লেখায়
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এই মেয়ের পরতে পরতে কবিতা খেলে যায় কীভাবে! ভীষণ অবাক আর মুগ্ধ হই তিথী তোমার এই প্রতিভায়
অনেকককক ধন্যবাদ আপুনিটা।
নতুন মন্তব্য করুন