বেগম সুফিয়া কামালের একটা কবিতা আমাদের পাঠ্যবইয়ে ছিলো। শুরুর লাইনগুলো ছিলো এরকম
‘আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুলখেলা
তোমরা এখন সেই বয়সেই লেখাপড়া করো মেলা’
তো আমরা সেই লেখাপড়া মেলা করা শিশুরা বড় হয়ে গেছি। এখন পৃথিবীময় আমাদের ছানাপোনারা চরে বেড়াচ্ছে। কবিতাটা বর্তমানে এই চেহারা নিয়েছে-
‘আমাদের যুগে আমরা যখন করেছি লেখাপড়া
তোমরা এখন ইন্টারনেটে নাড়ো বিশ্বের কড়া’ (সেই বয়সেই!)
আজকের যুগের তিনটা শিশুর গল্প শোনাই আজ।
একঃ আমার এক বন্ধুর মেয়ে একটা বিশেষ নাস্তা খেতে চায়। মাকে বললো মা ওই খাবারটা বানাও, ঐ যে ফ্লাইং সসারের মতো। ককপিটে থাকে মাংস।
আমার বন্ধু ‘থ’। তুমি কিসের কথা বলছো মা?
মেয়ে সাথে সাথে কম্পিউটারে একটা ফ্লাইং সসারের ছবি আঁকে।
বন্ধু তার বরকে ডেকে বললো ‘আচ্ছা ও কী খাবারের কথা বলছে বলোতো?’
ওর বর মাথা চুলকে, ভ্রু কুঁচকে বললো ‘অন্থন নাকি?’
‘রাইট বাবা, নামটা কঠিণ তো তাই মনে থাকেনা’ বললো ওদের মেয়ে।
দুইঃ আমাদের আরেকজন পারিবারিক বন্ধুর ছেলে টিভি দেখে প্রায় সারাদিন। ওর বাবা বিরক্ত হয়ে বললেন –‘কি ব্যাপার সারাদিন কার্টুন নেটওয়ার্ক নাহয় নিক, কি শুরু করেছো তুমি?’
ছেলে বলে ‘তুমিওতো সারাদিন ডাবল বি সি, নাহয় সি ডাবল এন দেখো’।
এর মানে কি? আমি কী দেখি?
ছেলের মা এসে সমাধান করলেন। ওতো স্কুলে স্পেলিং শিখছে, Apple শিখেছে এ ডাবল পি এল ই। তুমি BBC, CNN দেখোতো সেটাই বলছে।
ছেলের বাবা এতোক্ষণে বুঝলেন ডাবল বি সি আর সি ডাবল এন এর মর্ম!
তিনঃ আমার মেয়ে দুপুর দুইটার সময় কমলা খেতে চায়। আমি বললাম –নো, এখন লাঞ্চ টাইম। তুমি জানোনা ভরাপেটে ফল, খালি পেটে জল?
মেয়ে বলে ‘মা আমি একগ্লাস পানি খেয়ে নেই আগে। তাহলে খালি পেটে জল হয়ে যাবে। আর তারপর কমলা খেলে ভরাপেটে ফল হবে। হবেনা?’
কী বলবো আমি? বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে বিতর্ক করতাম এবং যুক্তি খন্ডন নামের অংশটা বেশ ভালো করতাম সেটা ভুলে যেতে হয়...
মন্তব্য
ভালো লেগেছে। এসব পড়লেই মন চায় আবার শৈশবে ফিরে যেতে। কি সুন্দর সহজ-সরল জীবন।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
হা হা হা... ডিজিটাল যুগের পোলাপানরা ত এমনই হবে!
আজকের শিশুরা আসলেই দারুণ স্মার্ট! চট জলদি এমন বুদ্ধিদীপ্ত জবাব দেয় যে বোকা বনে যেতে হয়।
আপনার মেয়েটি দেখি 'বুদ্ধিমতি মাশা'র মত বুদ্ধিমতি
নাম টা দেখেই ঢুকে গেলাম।ভাল। ছয়টা বাচ্চার গল্প হলে আরেকটু ভাল হত - পড়তে পড়তেই শেষ
ছেলেপুলেগুলো আজকাল আগেভাগেই বেশ- চা ডবল 'ল' উ, হয়ে যাচ্ছে।
হাহাহা! দারুণ এই পিচ্চিগুলো!
হুমমমম......এইটাই জগতের নিয়ম গো আপু..........কালে কালে আর কত কি যে দেখতে হবে !!!!
ম্যাজিক্যাল জার্নি'র পরের পর্ব কবে পাচ্ছি???
কিছুদিন আগে আমার মেয়ের জ্বর ছিলো,
তার আবার বৃষ্টি দেখলেই ভিজতে মন চায়, এবং আমরা বাপ বেটি রেগুলার ভিজি।
তো জ্বর দেখে তার মা নিষেধ করেছে বৃষ্টিতে ভিজতে।
এর মধ্যে বৃষ্টি নামছে
সে এসে বললো বাবা দেখো তো আমার জ্বর আছে কী না?
আমি বললাম না
বলে কপালে হাত দিয়ে দেখো
আমি হাত দিয়ে দেখে বললাম না জ্বর নাই
সে এবার দাঁত বের করে বললো... তাইলে বৃষ্টিতে ভিজি?
অতঃপর বাপ বেটি আবার ভিজাভিজি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমার ৩ বছরের ভাতিজি আমার কাছে আজ এসে আবদার করল নখে নেইলপলিশ লাগিয়ে দেবার জন্য। আমি ওকে বোঝাতে চাইলাম, এগুলো দিলে নখ আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যায়। কে শোনে কার কথা? ও আমাকে বলল, নখে ইগুলা লাগালে নখ কি সুন্দর চকচক করে! আমাকে কথাটা মেনে নিতে হয়। তবে আমিও হাল ছাড়ি না। বলি, হ্যাঁ, নখ চকচক করে, কিন্তু বড় হলে দেখো, নখ নষ্ট হয়ে যাবে। আর চকচক করবে না। ও আমাকে বলে---আমি তো কোনদিন বড় হবো না। ছোটই থাকব। আমার নখ নষ্ট হবে না!
পিচ্চিগুলো ম্যাজিক্যাল।
মন্তব্য : প্রৌঢ়ভাবনা
মাঝে মাঝে মনে হয় ইশ! যদি টাইম মেশিন আবিষ্কার হত! ফিরে যাওয়া যেত সেই স্বপ্নীল দিনগুলোতে!
আমিও দেখেছি, আজকাল্কার শিশুরা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত! আরো কিছু গল্প থাকলে ভালো হত, পড়ে শান্তি হত; বায়না দিয়ে গেলাম!
এটা কি নতুন সিরিজ?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
যেটা বলেছিলাম বাচ্চা মানেই বিনোদন।
বাচ্চাকে মা শিখাচ্ছিল সে যেন "মামনি" ডাকে...মেয়ে জিজ্ঞেস করল আব্বুকে কি "ড্যাডিনি" বলব?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
_____________________
Give Her Freedom!
এত্ত হাসি পেলো...আপনার মেয়ে তো বুদ্ধিমান অনেক...সুন্দর উত্তর...
nawarid nur saba
নির্জলা আনন্দ পেলাম। ইস, আমরা যদি সবাই শিশুদের মতো নির্মল থেকে যেতে পারতাম!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আমি একদিন ক্লাশে বাচ্চাদের বাঁদরামিতে অতিষ্ট হয়ে বললাম-তোমাদের স্কুলের নাম থেকে দেবদূত শব্দটা ছেটে দেয়া দরকার।তোমরা আদতে দেবদূত নও।তাৎক্ষণিক উত্তর -টিচার, ঠিকই বলেছেন।দেবদূত হচ্ছে নার্সারি-শিশু-ওয়ান-টু এসব ক্লাশের বাচ্চারা।বাচ্চা ভয়ংকর,কাচ্চা ভয়ংকর!
আমার চাচাতো ভাইদের মধ্যে সবচাইতে ছোটটা, তখন গ্যাদা বাচ্চা, আমি জানতে চাইলাম সে পড়ালেখা করে কিনা - সে গম্ভীর মুখে বললো ’পড়ালেখা ভালোনা”! আমি হতভম্ব হয়ে বললাম ’মানে, পড়ালেখা না করলে করবা কি?”, সে আরো গম্ভীর হয়ে বললো ”দাদা, তুমি আমাকে দুইটা গরু, তিনটা ছাগল আর হাস-মুরগী কিনে দিবা?” আমি কোনকিছু না ভেবেই বললাম, ”এইগুলা দিয়া কি হবে”। সে আমাকে বললো, ’ব্যবসা করবো’!!! এই বছর বিদ্যালয় মুখী হয়েছে, দারুন মনোযোগী ছাত্র - আমি চাই ও বড় হয়ে প্রকৃতীর কাছেই থাকুক, বড় হও তাশফিন কিন্তু শৈশব এর ব্যবসা চিন্তা ছেড়োনা!!
প্রিয় ব্যান্ড রেনেসার এই গানটা শুনি আরো একবার http://youtu.be/bt3fUq33uco
আপনার মেয়ের বুদ্ধি দেখে তাজ্জব হয়ে গেলাম!!!!!
দেবশিশুগুলো থাকুক দুধে, ভাতে, আদরে...............
_____________________
Give Her Freedom!
ভালো থাকুক ওরা।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
আজকালকার পুলাপাইন বেজায় পাকনা...এরা জন্মায়ই অনেক ম্যচিউরড হয়ে। আমরা কী ভোদাই ছিলাম সেইটা মনে করিয়ে দেয়!!!
টাইম পাইলে, আমার এই সিরিজটা দেইখেন...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আসলেই আমরা বেক্কেল কিসিমের বাচ্চা ছিলাম। সরু সেন্টারিং টেবিলে বসায়ে মা কাজ করত, ধপাস হবার ভয়ে নড়তামই না, আর এযুগের বাচ্চারা মাকেই বসায় রাখে, "আমি তো ডাক্তার, তুমি জানি অসুখ,চোখ বন্ধ করে শোও "।
একটা ঘটনা মনে পড়ল, আমাদের যৌথ পরিবার ছিল, আমার বাবা সবার বড় তাই কাজিন রা "বাবা" ডাকত আর নিজের জনাকে আব্বু। ভাই বোনের সংখ্যা আমরা ( আমি আর আপু) সব মিলিয়েই বলতাম, আপন-চাচাতো করতাম না। একদিন আমাদের রুবাইয়া (পিচ্চি কাজিন) স্কুল থেকে শুনে এসে জিজ্ঞেস করে - "আচ্ছা ছোডাপু, তুমি কি আমার চাচাতো বোন না বাবাতো বোন? "!!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
এ হাসনাত
____________________________
নতুন মন্তব্য করুন