বন্ধুদের কাছে আমার সিভিক সেন্স রীতিমত প্রবাদতুল্য। আমার বাবা মা তাদের একমাত্র মেয়েকে সভ্য করতে কোনো কার্পণ্য করেন নি। এবং আমি প্রায় অচল পয়সার মতো সভ্য। রেগে গেলে আমি চুপ করে থাকি, অভিমান হলে কেঁদে ফেলি, চরম বিরক্তির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে হয়তো কখনো সখনো উফফফফ করে উঠি। জীবনে এই প্রথম আমার ঘৃণা হচ্ছে। আমার খুব রাগ হচ্ছে, অসহায় লাগছে এবং একটা খুব বাজে গালি দিতে ইচ্ছে করছে। জীবনে প্রথমবারের মতো আমি বর্ণবাদী হয়ে উঠি- প্রচণ্ড ঘৃণায় দিশেহারা হয়ে মুখ ফসকে, খুব সচেতনভাবেই বলি – পাকি।
এই সেমিস্টারে আমার ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটির একটা কোর্স আছে। অন্য অনেক কিছুর সাথে এই কোর্সে যুদ্ধের কৌশলও শেখানো হচ্ছে। এখন শেখানো হচ্ছে গেরিলা বাহিনীকে দমনের সায়েন্টিফিক পদ্ধতি – ৭৫ ভাগ অমানুষিক হিংস্রতার (indiscriminate violence) সাথে ২৫ ভাগ হাল্কা ঢিসুম ঢিসুম (discriminate violence) ! “মাও সে তুং লিখেছেন- গেরিলা বাহিনী মানুষের মাঝে এমনভাবে মিশে থাকবে যেমন মাছেরা পানিতে থাকে।” “এই ক্ষেত্রে গেরিলা বাহিনী ধ্বংস করার তিনটা উপায় আছে – (১)পানি এবং মাছ দুইটাই মেরে ফেলো (২) পানি আর মাছ আলাদা করে ফেলো (৩) আলাদা আলাদা করে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করো।” আমার লেকচারার, মেরোম, বলে যেতে থাকে আর আমি মনে মনে পাকিস্তানী সৈন্যদের নিপুণ রণকৌশলের তারিফ না করে পারি না !
“প্রথম পদ্ধতিটা সবচেয়ে সোজা এবং সস্তা। সিভিলিয়ানদের উপর অমানুষিক অত্যাচার করে ওদের সমূলে ধ্বংস করে দাও। It’s the quickest way to wipe out insurgency and most cost effective.” জেনোসাইড- আমার মাথায় শব্দটা ডুগডুগির মতো বাজতে থাকে। আমি খাতায় লিখি – ৩ মিলিয়ন ! মেরোম বলে যেতে থাকে – “এই পদ্ধতিকে আরো সূক্ষ্ম করতে যোগ করা যেতে পারে ভাষা ব্যান করা, ধর্ম ও জাতিবিভেদ তৈরি করা।” আমি ফিরে যাই, ১৯৫২ সালে কিংবা তারও আগে। এই প্রথমবারের মতো নিজেকে প্রশ্ন করি – যুদ্ধটা তাহলে কতদিনের ছিল? নয় মাস না, নয় মাসতো স্বাধীনতার লড়াই ছিল। এই প্রথমবারের মতো মাথামোটা পাকিস্তানীদের সাথে আমি শেয়ালের চেহারার মিল খুঁজে পাই।
“দ্বিতীয় পদ্ধতিটাও কাছাকাছি – সিভিলিয়ান ও গেরিলা নির্বিশেষে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে রাখো। কিছু গেরিলা যদি বাইরে থেকেও যায়, তারা খাবার, ঔষধ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না।” আমার রুদ্রর কবিতা মনে পড়ে ।
“তাঁর চোখ বাঁধা হলো।
বুটের প্রথম লাথি রক্তাক্ত
করলো তার মুখ।
থ্যাতলানো ঠোঁটজোড়া লালা -
রক্তে একাকার হলো,
জিভ নাড়তেই দুটো ভাঙা দাঁত
ঝরে পড়লো কংক্রিটে।
মা…..মাগো….. চেঁচিয়ে উঠলো সে।”
শব্দগুলো আমার সামনে নাচতে থাকে। আমার মনে পড়ে বাবাকে কতোবার আমি বলেছি যুদ্ধের গল্প শোনাতে। বাবা প্রতিবারই বলেছে- “ওটা তো গল্প না।” শুধু এই কবিতাটা একদিন আমাকে চিৎকার করে পড়তে শুনে বলেছিল – “আরেকবার পড় তো!” আমি না বুঝেই শিশুসুলভ ভারিক্কি চালে পড়ে গিয়েছিলাম –
“তার দুটো হাত-মুষ্টিবদ্ধ যে-হাত
মিছিলে পতাকার
মতো উড়েছে সক্রোধে,
যে-হাতে সে পোস্টার সেঁটেছে,
বিলিয়েছে লিফলেট,
লোহার হাতুড়ি দিয়ে সেই হাত
ভাঙা হলো।
সেই জীবন্ত হাত , জীবন্ত মানুষের
হাত।
তার দশটি আঙুল-
যে-আঙুলে ছুঁয়েছে সে মার মুখ,
ভায়ের শরীর,
প্রেয়সীর চিবুকের তিল।
যে -আঙুলে ছুঁয়েছে সে সাম্যমন্ত্রে দীক্ষিত
সাথীর হাত ,
স্বপ্নবান হাতিয়ার,
বাটখারা দিয়ে সে-আঙুল পেষা হলো।
সেই জীবন্ত আঙুল, মানুষের
জীবন্ত উপমা।”
আমি কি সেদিন বাবার মনের কুঠুরিগুলো খুলে দিয়েছিলাম? ভীষণ বেদনায় তালাবদ্ধ হয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলো কি লোহার সিন্দুকের দরজা ভেঙে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল? আজকে এত দূরে, একটা লেকচারে বসে আমি কি আমার বাবাকে চিনতে শুরু করেছি? আমি কি নিজেকে চিনতে শুরু করেছি?
আমি আবার মেরোমের ক্লাসে ফিরে আসি। মেরোম বলতে থাকে, “তৃতীয় পদ্ধতিটা বেশ সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং রিস্কি। এই পদ্ধতিতে যুদ্ধের হাতিয়ার, নীল নকশা ইত্যাদি খুঁজে ধ্বংস করে দিতে হবে। আর সব যুদ্ধেই কিছু traitor থাকে। তাই, অপর পক্ষের বিশ্বাসঘাতকদের চিহ্নিত করে নিজের দলে আনতে হবে।” আমার ব্রেনের উপর ট্রামপোলিনের মতো লাফাতে থাকে একটা শব্দ –“রাজাকার”।আচ্ছা, ওরা কি শুধু traitor? এই একটা মাত্র শব্দে কি ওদের ভয়াবহতা বোঝানো যায়? উত্তরটা আমার দাদুমনি জানতে পারেন - ওনার ছেলেকে যে তার “বন্ধুরা” ধরে নিয়ে গিয়েছিল। “যুদ্ধ জয়ের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হচ্ছে ওই জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া। যেখান থেকে তাদের যুদ্ধের প্রেরণা আসে, যুদ্ধ জয়ের আশা আসে। সেটা হচ্ছে জাতির বুদ্ধিজীবী। In this Weberian era, domination comes through knowledge. Bring down the intellectuals and you have done half the job.” এবার আমি পাকিস্তানী সৈন্যদের উপর মুগ্ধ না হয়ে পারি না। কি করিৎকর্মা জাতি! মাত্র দুই রাতের অন্ধকারে একটা দেশের সব মাথা খুঁজে নিয়ে নামিয়ে দিতে পারে ! আমি আবার রুদ্রকে স্মরণ করি -
“সে এখন মৃত।
তার শরীর ঘিরে
থোকা থোকা কৃষ্ণচূড়ার মতো
ছড়িয়ে রয়েছে রক্ত ,
তাজা লাল রক্ত।
তার থ্যাতলানো একখানা হাত
পড়ে আছে এদেশের মানচিত্রের ওপর,
আর সে হাত থেকে ঝরে পড়ছে রক্তের
দুর্বিনীত লাভা ....”
মেরোম বলে চলে – “হিংস্রতা দিয়ে যুদ্ধ জয় করা যায় না। যুদ্ধ জয় খুব বৈজ্ঞানিক একটা ব্যাপার। এখানে হিংস্রতা এবং হাল্কা মারামারির প্রয়োজনীয় মিশ্রণ ঘটাতে হয়। অধিক হিংস্রতা কোনো কোনো জাতিকে ভীষণ ক্ষেপিয়ে তুলতে পারে। প্রত্যেক মানুষের সহ্য ক্ষমতা যেমন আলাদা, তেমনি প্রত্যেক জাতিরও সহ্যক্ষমতা ভিন্ন। Play smart, play subtle, because war is costly !” আমি ক্লাস থেকে বেরিয়ে ভাবতে শুরু করি, ঠিক কতটা হিংস্রতা ভেতো বাঙালিকে ভয়ংকর করে তুলতে পারে?
আমার জন্ম মুক্তিযুদ্ধের বেশ পরে। মুক্তিযুদ্ধের সাথে আমার জানাশোনা স্কুলের বাংলা বইয়ের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ আর সমাজ বইয়েই সীমাবদ্ধ ছিল। এবং বলা বাহুল্য আমাদের সমাজ বই আমাদের সময়ে যুদ্ধের সত্যি ঘটনা নিয়ে বেশ indecisive ছিল। নতুন সরকার আসার সাথে সাথেই সমাজ বইয়ের ওই কয়েকটা পাতা বদলে যেত। কখনো শেখ মুজিবের গৌরব গাঁথা তো কখনো শহীদ জিয়ার। এর মাঝে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আমার জানাশোনার দৌড়, “১৯৭১ সালে বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র এবং সর্বস্তরের মানুষ দলে দলে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল” পর্যন্তই। আরেকটা গল্পও আমার ছিল – আমাদের নিজের ! আমার ছোট নানাভাইকে আমি খুব ভালবাসি। ছোটবেলায় ওনার কাছে আমার নানা আবদার ছিল আর ওনার ছিল আমার জন্যে গল্পের ঝুলি। কিন্তু, আমার খুব রাগ লাগতো ওনার ফোকলা দাঁতের হাসি। সবগুলো দাঁত আছে কিন্তু, সামনের একটা দাঁত নেই। কতবার করে নানাভাইকে বললাম, “তোমাকে দেখতে হাস্যকর লাগে, একটা দাঁত লাগাও।” উনি শুধু হাসে আর বলে, “এটা আমার গর্ব !” গল্পটা এমন - আমার নানাবাড়ি ছিল বেশ নামকরা। ওই এলাকাতে এবং আশপাশের এলাকাতে যখন পাকিস্তানী সৈন্যরা আসে, তাদের আমার নানা ভাইয়ের (আম্মুর মামা)আপ্যায়ন করতে হতো। এদিকে, নানা ভাই কিন্তু আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতো। একদিন মুক্তিযোদ্ধাদের একটা দল নানাবাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে মাত্র বেরিয়েছে আর রাজাকার এসে নানাভাইকে বেদম মার। মারের কারণে নানাভাইয়ের সামনের একটা দাঁত পড়ে যায়। যেহেতু, রাজাকাররা আশপাশের এলাকার মানুষ ছিল- ওরা অনেক খবর পেত, যেটা পাকিস্তানী সৈন্যরা জানতো না। তারপর তারা নানাভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলো আর পথে পাকিস্তানী সৈন্যদলের সাথে দেখা। ওরা রাজাকারদের সাথে নানাভাইকে দেখে বলল – “আরে, উনি তো সম্মানিত মানুষ। সাচ্চা মুসলিম ! ছেড়ে দাও।” আমার নানা ভাই যুদ্ধের কথা এলেই- বুক ফুলিয়ে বলে, “যুদ্ধে আমার এই দাঁতটা শহীদ হয়েছে, এটা আমি কখনো লাগাবো না। এটা আমার গর্ব !”
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আরও এমন অনেক অনেক গল্প আছে। কিন্তু, সেগুলো কখনো আমাদের জানা হয়না। জানা হয়ে উঠে না আমার গৌরবগাঁথা পূর্বসূরিদের কথা। স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও “স্বাধীনতার ঘোষক কে?” এই বিতর্কের মাঝে হারিয়ে যায় এই দেশের প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারের স্বজন হারানোর গল্প। না গল্প না, ইতিহাস। আমার এক বন্ধু মেহেরজান প্রসঙ্গে বলেছিল – “কিসের deconstruction? স্বাধীনতা কদুর তেল না যে যখন ইচ্ছে মাথায় দিবে আর যখন ইচ্ছে হাতে নিয়ে মাস্টারবেট করবে। ইতিহাস সবসময় বিজয়ীদের হাতে লেখা হয়। আমরা এটা জিতেছি, এই গল্প আমরা আমাদের মতো লিখবো।”
-জরি
মন্তব্য
গোরিলা নিধনে পাকিরা প্রথম পথটাই অবলম্বন করেছিলো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে। জি, গেরিলা নিধনে পাকিস্তানিরা প্রধানত প্রথম পদ্ধতিটা অবলম্বন করেছিল।
দারুন নাড়া দিয়ে গেলো কথাগুলো, দারুন! আমরা বন্ধুরাও এইভাবে ভাবি, এখন পর্যন্ত আপনি খোলাখুলি যা বলেছেন তাতে সংহতি! আপনাকে এসব পড়তে হয়!!!
পড়তে পড়তে অন্য সময়ে ফিরে গিয়ছিলাম। আসলে আমি নিজে এর আগে এমন করে ভাবিনি। আপনার মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ লালকমল।
দুর্দান্ত একটা লেখা ! অসাধারণ ঝরঝরে, তুখোড় এবং সাহিত্যমান সম্পন্ন !!
অভিনন্দন আপনাকে, আপনার কলমকে। ঘাঁড়ের উপর ঘটটার কথা আর নাই বা বললাম !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আমি লেখাটা ঝোঁকের বশে পোস্ট করে দিয়ে ভাবছিলাম মুছে দেই। কিন্তু, পরে বুঝলাম সেই option নেই। যখন পোস্ট করার অনেক পরেও লেখা আসে নি, ভাবলাম এই যাত্রা বোধহয় বেঁচে গেলাম ! আপনার ভালো লেগেছে শুনে অনুপ্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়বার জন্যে।
কি দুর্ধর্ষ একটা লেখা, ভেতর কাঁপিয়ে দেয়া। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বরূপ নিয়ে এই দৃষ্টিকোন থেকে বিশ্লেষণ আগে দেখিনি। অসামান্য।
আপনি কোথায় কি পড়াশোনা করতে গিয়ে এই ক্লাসটা করলেন, সেটা জানার ইচ্ছে থাকলো।
আপনি আরও লিখুন।
আপনার অনুপ্রেরণার জন্যে ধন্যবাদ যুধিষ্ঠির। আমাদের মুক্তিযুদ্ধটাই তো এতো দুর্ধর্ষ যে ভাবলে বুক কেঁপে যায়। আমি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও পলিটিকাল ইকোনমিতে পড়ছি। এটা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটা কোর্স।
তারপরও জানার আগ্রহ থেকে মানুষ ইতিহাস খুঁজে নেয়।
আপনার ইন্টারন্যশনাল সিকিউরিটি কোর্স নিয়ে আরও জানতে চাই। লিখবেন।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
জানার আগ্রহ থেকে মানুষ ইতিহাস খুঁজে নেয়, ঠিক। কিন্তু, এটা তো আমাদের জানার অধিকার। স্কুলে দশটা বছর যে শিক্ষাটা আমাদের শিশু মনের ভিত তৈরি করে দেয় এবং আমাদের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করে, ওই “shared history” টা জানানো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব। মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
জানার আগ্রহ থাকলে অনেক কিছুই জানা যায়। জানার আগ্রহের লক্ষণ কিছু সাধারণ প্রশ্ন। যেমন শহীদ অর্থ কী? 'শহীদ জিয়া' 'শহীদ' হলে, শেখ মুজিব 'শহীদ' না কেন? দুইজনই কী সেনাসদস্যদের হাতে নিহত নন? নাকি আরো কোনো ক্রাইটেরিয়ার প্রয়োজন? এইসব আরকি।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবছি। Assignment due হবার আগে এগুলো নিয়ে না ভাবাই ভাল। আমার আবার সমস্যা হচ্ছে, একবার মাথায় কিছু ঢুকলে সহজে বেরুতে চায় না।
দুর্দান্ত .. তীরের মতো লাগলো, , আরও লিখুন, অপেক্ষায় থাকলাম...
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
অরফিয়াস, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ।
আপনার সাথে মিলেনাই অভিজ্ঞতা --- প্রতিবছর বদল হতনা ইতিহাস - বই , টিভি, সবখানেই দেখেছি - প্রায় ইউনিভারসিটি শেষ করা পযন্ত -- এক ই ত ছিল সবসময় --- জয় বাংলা বলতে মানা, একটি নাম শুনতে মানা - আমার জন্ম একাত্তুর এ
Pathok (Sam) – জি, আমরা সৌভাগ্যবানদের দলে পড়ি। আমরা ইতিহাস নানাভাবে পড়েছি! একসময় ছিল, যখন আমাকে পড়তে বসতে বললেই- আমি সমাজ বই খুলে “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ... ” ভাষণ দেয়ার মতো করে পড়ে যেতাম। আপনাদের সময়ের সমাজ বইয়ের গল্প নিয়ে একটা পোস্ট দিলেই পারেন। আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
সত্যিই দারুণ পোস্ট! আপনাকে সচলে স্বাগতম জরি। আরো লেখুন।
আয়নামতি, অনেক ধন্যবাদ।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক অনেক ধন্যবাদ, নজরুল এবং অপছন্দনীয় – এখনো যে কেউ ঝাড়ি দেয়নি। এই ছাড় কি আমার প্রথম লেখা বলে?
প্রশ্ন টা বুঝিনি। নজরুল ভাই বা অপছন্দনীয় সচলে সবার পোস্ট এ ঝারি দিয়ে বেড়ান নাকি? এ ধারণা আপনার হলো কি করে? নাকি এটা রসিকতা ছিলো?
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
lol. ওটা দুষ্টুমি ছিল। ওরা দুজনই কিছু না বলে, thumbs up দেখিয়ে চলে গেল। ভয় পেয়েছিলাম তো। আমি তখনও ভাবছিলাম কোন উপায়ে সচলের ঝকঝকে বোর্ড থেকে কিভাবে এই লেখা মুছে দেয়া যায় !
হুম। রসিকতা পড়ে মনে হতে পারে সচলে ওনাদের ভূমিকাটা এমন।
বললেন বলে বুঝলাম।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
ও--by the way, আপনার কল্পজগতের লুলপুরুষের সবগুলো আর্টিকেল "লে" ই ঠিক ছিল।
চমৎকার একটি লেখা।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে, সচল জাহিদ।
রীতিমত অসাধারণ ...! এরকম আরও চাই। ভাল থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ পাপী। আপনিও অনেক অনেক ভালো থাকবেন।
আরেকবার অনুভব করলাম ... আপনার মত লেখকদের লেখনীতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বেঁচে থাকবে চিরকাল ... শেয়ার করলাম
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অনেক অনেক ধন্যবাদ ! আপনি তো অনেক সম্মান দিয়ে ফেললেন। আমি তো কিছুই লিখতে পারিনি। আমি আসলে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম এটা ভেবে যে কতো প্ল্যান করে ওরা আমাদের ধ্বংস করতে নেমে গিয়েছিল আর আমরা শুধু নিজের দেশ ও ভালবাসার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মন্ত্রে একতাবদ্ধ হয়ে ওদের হারিয়েছি।
অনেক ধন্যবাদ
লেখাটা ভালো লেগেছে।
আপত্তি করছি এখানে,
ইতিহাস সবসময় বিজয়ীদের হাতে লেখা হয় কিনা, জানিনা। কিন্তু ইতিহাস সত্য হতে হয়! সে বিজয়ী লিখুক, বিজিত লিখুক আর কোনো তৃতীয় পক্ষ লিখুক!
আমরা এই যুদ্ধ জিতেছি তাতে যুদ্ধের গল্প বদলে নিজের মতো করে লেখার অধিকার আমাদের তৈরি হয়ে যায় না। যে ইতিহাস সত্য তা কেউ নিজের মতো করে লেখেনি। আপনি কী বলতে চাইছেন, বিজয়ীরা নিজের মতো করে না লিখলে এই যুদ্ধের গল্প অন্য রকম হত!?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ অনার্য সঙ্গীত। আমার মনে হয় না, ইতিহাস সত্যতার উপর নির্ভর করে রচিত হয়। কারণ, ইতিহাসের ঘটনাগুলো objective হলেও perspectiveটা বেশ subjective. পাকিস্তানিরা লিখলে, ১৯৭১ ঠিকই ঘটত, কিন্তু, তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে। পাকিস্তানিরা জয়ী হলে, আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধকে দেখা হতো একটা গৃহযুদ্ধ হিসেবে। আমি "নিজের মতো করে" লিখবো বলতে বুঝাতে চেয়েছি- আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে। যেমন, শর্মিলা বসু নামে একজন অ্যাকাডেমিক পাকিস্তানি সৈন্যদের "খানসেনা", "হানাদার বাহিনী" ইত্যাদি নামে সম্বোধন করার জন্যে বাঙ্গালিদের উপর রাগ করেছেন। যুদ্ধটা আমরা জিতেছি বলেই আমরা ওদের "হানাদার বাহিনী" এবং নিজেদের "মুক্তি বাহিনী" ডাকার অধিকার পেয়েছি। এই ইতিহাস পাকিস্তানিরা লিখলে আমার ধারণা সেটা বেশ আলাদাই হতো। যুদ্ধটা না জিতলে ইতিহাসে "মুক্তিবাহিনীর" নাম হতো "উগ্রপন্থী"।
'Subjective Viewpoint' আর 'Untruth' এই দুটি বিষয়কে তো এক করে ফেললে চলবে না। ইতিহাস সত্যতার ওপর নির্ভর করে তৈরি হয় না তো কী ইতিহাস একজনের পার্সোনাল পারস্পেকটিভের ওপর নির্ভর করে নির্মিত হয়? আপনি বোঝাতে চেয়েছেন 'আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে' ইতিহাস লেখার কথা। যে কারো দৃষ্টিকোণ থেকেই ইতিহাস লেখা হোক না কেন, তার ভিত্তি হলো বাস্তব ঘটনা। বাস্তবে যা ঘটেছে সেই সত্যকে অস্বীকার করে ইতিহাস লেখা হলে তা আর সাবজেক্টিভ ভিউ থাকে না, তা হয়ে ওঠে অসত্য, ইতিহাসের বিকৃতি। এজন্যই শর্মিলা বসুর বক্তব্য তার সাবজেক্টিভ ভিউপয়েন্ট নয়, তা আনট্রুথ, তা মিসরেপ্রিজেন্টেশন কারণ সত্যকে তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন।
পাকিস্তানিরা ১৯৭১-এর ইতিহাস তো তাদের মতো করেই লিখেছে, প্রচার করছে; কিন্তু সেই ইতিহাস কতোটা গ্রহণযোগ্য? তারা তাদের শোষণ, অত্যাচার আর নিপীড়ন চালানোর ইতিহাসকে স্বীকার করতে পারছে কী? আর তারা তাদের অপকর্ম স্বীকার না করে সেই সত্যকে ঢেকে রেখে ইতিহাস লিখলে তা কী সাবজেক্টিভ বক্তব্য না মিথ্যাচার? তেমনি আমরা যুদ্ধে জিতেছি বলেই তো ১৯৭১-এ যা ঘটেনি সেই কাহিনী দিয়ে আমাদের ইতিহাস লিখতে পারি না। আমাদের মতো করে ইতিহাস লেখা যায় না; যেমন নিজেদের ভাবনা দিয়ে সত্য সাজানো যায় না। সত্যকে সত্য হিসেবেই দেখতে হয়। পাকিস্তানিরা আমাদের ওপর আক্রমণ করে আমাদের দেশে গণহত্যা শুরু করেছিল, আমরা আমাদের মুক্তির জন্য রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। তামাম দুনিয়া এই সত্য দেখেছে; কাজেই যুদ্ধে কোন কারণে যদি আমরা হেরেও যেতাম তো হানাদারদের হানাদার হিসেবে আর মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই গণ্য করা হতো। আর কোন গোষ্ঠী যদি মু্ক্তিযোদ্ধাদের উগ্রপন্থী বলে প্রচার করার চেষ্টা করতোও তো সেই প্রচার গ্রহণযোগ্যতা পেতো না, কারণ বাস্তব ঘটনা আর সত্যকে কখনোই আড়াল করা বা বদলে দেয়া সম্ভব না। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েও তো পাকিস্তানীরা বার বার মুক্তিযোদ্ধাদের 'দুষ্কৃতকারী' হিসেবে প্রচার করেছে। সেই প্রচারে তো পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর পক্ষে পৃথিবীর সমর্থন বৃদ্ধি পায়নি। আর যে বৃহৎ শক্তিরা পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য করেছে তা সবারই জানা।
হিটলার জিতলে পৃথিবীর উপকার হতো, এমন বক্তব্য কারো সাবজেক্টিভ মত হতে পারে। কিন্তু তিনি যদি বলেন নাৎসীরা ইহুদীদের ওপর কোন অত্যাচার করেনি তবে তা হবে মিথ্যাচার। ইংরেজ শাসনের কিছু উপকারী দিক আমরা দেখেছি এমন বক্তব্য কেউ দিতে পারেন যেমন পাশ্চাত্যের সাহিত্যরীতির সাথে এদেশের সাহিত্যের যোগাযোগ, কেউ আবার বলবেন এদেশীয় সাহিত্য এদেশের মতোই থাকতে পারতো। কিন্তু ইংরেজ শাসন যে ছিল এক দমনমূলক উপনিবেশী শাসন, এই বক্তব্যকে কেউ কোন যুক্তি দিয়ে ভুল প্রমাণ করতে পারবে কী? আর কেউ যদি দাবী করে এই বক্তব্য ভুল তবে বলতে হবে যে বহু সত্যকে তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন; আর তাই তার সেই নিজের দৃষ্টিকোণও আর ইতিহাস হবে না।
আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ নাদির। তবে, ইতিহাসে মিথ্যাচারের নিদর্শন কিন্তু খুঁজলে কম পাওয়া যাবে না।
একমত হতে পারলাম না। আমরা যদি হারতাম, আমরা কিন্তু (পূর্ব) পাকিস্তানিই থাকতাম। সেক্ষেত্রে এটা "মুক্তি" যুদ্ধ হতো না, বরং একটা "গৃহ" যুদ্ধ হতো। গৃহ যুদ্ধের "নায়কদের" কি মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দেয়া হয়?
Realism - নামে পলিটিক্সে একটা paradigm পড়ানো হয়, যেটা পলিটিকাল ফিলোসফির একটা প্রধান স্তম্ভ। Realism বলে - state হচ্ছে একমাত্র actor এবং বাকিরা সবকিছু state এর স্বার্থে। মূল কথা হচ্ছে- সব দেশই সব কিছু নিজের স্বার্থেই করেছে। যারা যুদ্ধে আমাদের সহযোগিতা করেছে, কিংবা যারা যুদ্ধের সময় আমাদের বিপক্ষে ছিল। এটাই একমাত্র সত্য।
যখনই মিথ্যাচার হয় তা আর ইতিহাস থাকে না, কাজেই মিথ্যাচারের নিদর্শনগুলিকে আমরা ইতিহাস বলি না, বলি ইতিহাস-বিকৃতি।
১৮৫৭ সালে ভারতীয় সিপাহীদের পরাজয়ের পর ১৯৪৭ পর্যন্ত কী মুক্তিকামী সেই সিপাহীদের ভারতের মানুষ মুক্তিকামী সেনাসদস্য হিসেবে না দেখে ইংরেজদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছে? বা ভারতবর্ষে ইংরেজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী আরো বহু গোষ্ঠীকে? সেইসব মানুষদের দেশের মুক্তির জন্য লড়াই করা মানুষ হিসেবে গণ্য করতে ভারতবাসী পূর্ণ স্বাধীনতা পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেনি, দেশে যতোই ইংরেজদের শাসন থাকুক না কেন। ১৯৭১-এ আমাদের কোন কারণে জয় না হলেও পাকিস্তানীদের যাবতীয় অন্যায়, অত্যাচার আর গণহত্যা মিথ্যা হয়ে যেতো না। আর সেই সবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো মানুষদের আমরা মুক্তিযোদ্ধাই বলতাম যদি আমাদের বিজয় বিলম্বিত হতো তার পরও। মুক্তিকামী গণমানুষের বিজয় হয়তো বিলম্বিত হতে পারে, কিন্তু অন্যায়কারী, শোষণকারী কখনোই বিজয়ী হয় না। অন্যায়কারী আর অন্যায় প্রতিরোধকারীর পার্থক্যও তাই খুবই স্পষ্ট, যতোই কিছু মিথ্যাচারী সত্যকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করুক না কেন। আর গৃহযুদ্ধ বা সীমান্ত সংঘাত আর স্বাধীনতা সংগ্রামের পার্থক্যও অনেক পরিস্কার। একটার জায়গায় অন্যটা চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়, যেমন পাকিস্তানী সামরিক প্রচারযন্ত্র বার বার চেষ্টা করেছে ১৯৭১-এ; কিন্তু এই পার্থক্যকে ঢেকে রাখা যায় না।
রাজনীতি এবং ইতিহাসের পাঠে ‘অল ফর্মস অফ অপরেশন’ এবং সেই সব ধরনের অন্যায় এবং নিষ্ঠুর শাসন এবং আচরণের বিরুদ্ধে ‘রেজিস্ট্যান্স’ এর আলোচনাও খুব স্পষ্ট। সব দেশই সব কিছু নিজের স্বার্থে করে ঠিক। কিন্তু কোন্ দেশ কী ভাবে কাজ করছে, ন্যায় না অন্যায় কোন্ পক্ষ অবলম্বন করছে তা বুঝে নেয়া রাজনীতির ছাত্র তো বটেই যেকোন সচেতন মানুষের জন্যই খুব সহজ। নিজেদের স্বার্থ দেখতে গিয়ে কারা গণমানুষের আর মানবতার বিরুদ্ধে যায়, কারা গণহত্যাকারীদের বাধা না দিয়ে সমর্থন করতে দ্বিধা করে না তা তো আমরা ১৯৭১-এ এবং আরো বহু সময়ই দেখেছি। আর তখন তাদের সেই স্বার্থ দেখা আর দুর্বৃত্ত আর দয়ামায়াহীন খুনীর নিজ স্বার্থ দেখা হয়ে ওঠে একই রকম। এমন হীন স্বার্থ দেখা দেশগুলির জন্য ইতিহাসে তাই থাকে কেবল নিন্দা আর সমালোচনা, যার জবাব দেয়ার কোন উপায় এই দেশগুলির থাকে না।
ভারতীয়রা সেনা বিদ্রোহকে কিভাবে দেখেছে সেই প্রশ্ন কেন করছেন? জিজ্ঞেস করুন, ইংরেজরা কিভাবে দেখেছে। ওদের "বিদ্রোহী" হিসেবে দেখা হয়েছে। ওরা ভারতীয় সেনাদের "great warrior" ভাবেনি। ইতিহাস বিকৃতি এমনভাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় যে সাধারণ মানুষ জানেই না কতোটুকু সত্য, কতোটুকু মিথ্যে। ছোটবেলায় "horrible histories" নামে এক মজার বইতে পেয়েছিলাম রোমানদের অদ্ভুত সব বিকৃত রুচির পরিচয়। কিন্তু, সেই রোমানদের থেকে আসা ইংরেজরা তাদের ইতিহাস ভরে লিখেছি তাদের জাতি (এবং রোমানরা) কতো সভ্য !
ইরাকে আমেরিকার যুদ্ধকে কি বলবেন? এবং, আমার অতদূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। একটুখানি অর্থনীতি খেয়াল করলেই দেখা যায়, আমরা এখনো কতো সূক্ষ্মভাবে অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র দ্বারা শোষিত।
প্রথম উক্তির সাথে সহমত ! কিন্তু, visible resistance টা আসে সাধারণত visible oppression থেকে। যেসব oppressionগুলো সূক্ষ্ম- যেটা এখনকার রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য, মানুষ বোঝার আগেই শোষিত হয়ে যায়, সেখানে resistance দেখানোর সময় থাকে না। ক্ষমতার একটা মাত্রা হচ্ছে শুধু সংঘর্ষ না, বরং অনাগত সংঘর্ষের (latent conflict) উৎসগুলো দাবিয়ে ফেলা এবং সেটাকে এতো সূক্ষ্মভাবে justify এবং legitimate করা যে শোষিত মানুষ বুঝবেই না যে সে শোষিত হচ্ছে।
আমি আবারো বলবো, Realism moral না, immoral ও না বরং amoral। রাজনীতিতে morality শুধু একটা efficient political discourse. সব রাষ্ট্র শুধুই নিজের স্বার্থ চেনে।
আমি আপনার কোন্ বক্তব্যের জবাবে কী বলেছি তা দয়া করে দেখুন। তাহলেই স্পষ্ট হবে সিপাহীদের ভারতীয়রা কীভাবে দেখেছে কেন তা জিজ্ঞেস করেছি; আর ইংরেজরা কীভাবে দেখেছে কেন তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। যা লিখেছি তা খেয়াল না করে কথা বললে বার বার একই কথা আলোচনা করতে হবে, যা দু’জনেরই সময় নষ্ট করবে।
আপনার একটি বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আমরা কথা বলছি ইতিহাস সত্য-আশ্রিত কী না এবং ইতিহাস নিজের মতো করে লেখা যায় কী যায় না তা নিয়ে। ইংরেজরা বা পাকিস্তানীরা তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া এদেশের সংগ্রামীদের ভালভাবে আখ্যায়িত করবে না এটা বুঝে নিতে কী ব্যাপক বিদ্যাবুদ্ধি আর লেখাপড়ার প্রয়োজন হয়? কিন্তু আপনি বলেছেন যুদ্ধে আমরা হেরে গেলে আর এদেশের সংগ্রামীরা ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে আখ্যায়িত হতো না। তাই আমি ভারতীয়রা সিপাহীরা হেরে যাওয়ার পরও তাদের কী চোখে দেখেছে সেই উদাহরণ দিলাম। ইংরেজরা যদি মিথ্যাচার করে তো ভারতীয়দের এবং দুনিয়া শুদ্ধ মানুষদের তো আর সেই মিথ্যাচারকে প্রকৃত সত্য বলে মেনে নেয়ার কোন কারণ নেই, মানুষ এমন নির্বোধও নয়। এদেশে ইংরেজদের শোষণ আর অত্যাচারের ইতিহাস মুছে দেয়া সম্ভব? ইংরেজরা তা ঢেকে রাখতে চেয়েছে বলেই এদেশের সংগ্রামীদের নেতিবাচকভাবে বর্ণনা করেছে। তাই বলে কী তাদের সেই সত্য ঢেকে রাখাই আসল ইতিহাস হয়ে গেল? ইংরেজদের এই অপচেষ্টার পরও তো ভারতীয়দের এবং আরো অনেকের মূল ইতিহাস, আসল ইতিহাস বুঝতে সমস্যা হয়নি। আর তাই প্রমাণ করে সত্যকে বাদ দিয়ে ইতিহাস রচনা করলে তা হয়ে ওঠে নির্জলা মিথ্যাচার।
আর আমরা যুদ্ধে জেতার পরও কী পাকিস্তানীরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে দেখছে? সেইসব পাকিস্তানীদের কাছে তো এখনো মুক্তিযোদ্ধারা ‘দুষ্কৃতকারী’। কিন্তু কথা হচ্ছে ইংরেজরা এবং পাকিস্তানীরা তাদের মতো করে ইতিহাস লিখলেও তো আর এইদেশে তাদের অন্যায় আর অত্যাচারের ইতিহাস আর তার বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস পাল্টে যায় না। বরং সেই ইতিহাসে সত্যের লেশমাত্র থাকে না বলে তা হয়ে ওঠে ইতিহাস-বিকৃতি।
আপনি বার বার ইচ্ছাকৃতভাবে সত্য এড়িয়ে যাওয়া ইতিহাসবিকৃতিকে ‘ইতিহাস’ বলছেন। সত্য এড়িয়ে নিজের দোষ ঢেকে রেখে ইতিহাস লিখলে তা তো ইতিহাস নয়। এমন উদাহরণ পৃথিবীতে আছে; আর সেইগুলি ইতিহাসবিকৃতির উদাহরণ, প্রকৃত ইতিহাস রচনার নয়। এই সহজ বিষয়টা বুঝতে আপনার কষ্ট হচ্ছে কেন? বুঝতে কষ্ট হচ্ছে বলেই আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন ইংরেজরা সিপাহীদের কীভাবে দেখেছে তা নিয়ে জিজ্ঞেস করছি না। আপনি কী মনে করেন ইংরেজরা নিজের দোষ ঢেকে রেখে যে ইতিহাস লিখলো তাই 'হোল ট্রৃথ অ্যান্ড নাথিং বাট দ্য ট্রৃথ' হয়ে গেল? পাকিস্তানীরা ১৯৭১ এর ইতিহাস অন্যভাবে লিখলেই কী তাদের কথায় মিথ্যাচার আছে কী নেই তা ইতিহাসবিদ এবং সচেতন পাঠকরা বুঝতে পারবেন না? আর তারা আমাদের দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বিদ্রোহী বললেই সারা বিশ্বের মানুষ কেবল সেই বক্তব্যই সাদরে গ্রহণ করবে! এমন হলে সারা বিশ্বই অসৎ ইতিহাসে ভরে উঠতো। আমি বলবো এডওয়ার্ড সাইদ বা ফ্র্যান্টজ ফ্যানন লেখালেখি শুরু করার অনেক আগে থেকেই মানুষ ইতিহাস আর ইতিহাস বিকৃতির পার্থক্য বুঝে আসছে। মানুষের সচেতনতা বোধকে খাটো করে দেখারও কোন কারণ নেই।
অন্যায়কারী যদি প্রকৃত অর্থে জয়ী হতো তাহলে ইরাকের ঘটনায় আমেরিকার এতো সমালোচনা হতো না আর জর্জ বুশও হতেন একজন পছন্দনীয় মানুষ। কিন্তু আমেরিকার ইরাক যুদ্ধের জন্য বিশ্বের সচেতন মানুষদের কাছ থেকে কোন প্রশংসা জোটেনি; আর এই সচেতন মানুষদের মধ্যে বহু মার্কিনীও আছেন।
আর আইডিওলজিক্যাল স্টেট অ্যাপারেটাস এবং কনসেনশুয়াল হেজিমনির মাধ্যমে আজ মানুষকে কীভাবে শোষণ করা হচ্ছে তা বার্লিন ওয়াল ভেঙ্গে যাওয়ার পরবর্তী বদলে যাওয়া সামাজিক অবস্থার জন্যই মানুষ সহজে বুঝতে পারছে না, কারণ ৬০, ৭০ দশকের বিপ্লবী ‘ইউফোরিয়া’ বা পঠনপাঠনও এই সময়ে গুরুত্ব হারিয়েছে অনেকটাই। তবে এই অবস্থার পরিবর্তনও মানুষকে করতে হবে, আর মানুষ তা করতে সক্ষম হবে একথা অবিশ্বাস করারও কোন কারণ দেখি না। আপনি কোথায় পড়ালেখা করেছেন জানি না, তবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেই বহু মানুষ যে এই সূক্ষ্ণ শোষণ বুঝতে সক্ষম এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূখর তাও আমরা দেখতে পাচ্ছি। সব মানুষই যে তা বোঝে না, এমনটা মনে করারও কোন কারণ নেই। আর এই মানুষরাই শোষণের বিরুদ্ধে সংঘর্ষ অব্যাহত রাখবে।
রাজনীতি মানুষের জন্য। কাজেই কোন রাজনীতি যদি গণমানুষের স্বার্থবিরোধী হয় তবে তা অবশ্যই নীতিহীন, ক্ষতিকর এবং বিপদজনক। সব রাষ্ট্র শুধু নিজের স্বার্থ চেনে এই কথাটা একভাবে সত্য শোনালেও, নিজের অন্যায় স্বার্থের জন্য নীতিহীনতাকে এফিশিয়েন্ট পলিটিক্যাল ডিসকোর্স বা স্ট্র্যাটেজি হিসেবে গ্রহণ করলে একটি রাষ্ট্রকে কেবল নিন্দিতই হতে হয়, যতোই তার সাময়িক সাফল্য তাতে আসুক না কেন। আর নীতির পক্ষে কথা বলা আজকের যুগে অনেকে ‘রোমান্টিক’ বলে উড়িয়ে দিতে চান; কিন্তু নীতিহীনতা মানুষের জন্য কী বয়ে আনে তা আমরা সবাই জানি।
আমি "আমাদের দৃষ্টিকোণ" থেকে ইতিহাস লেখা বলতে ঠিক এটাই বুঝিয়েছি।
আপনি কি আরব দেশের গণজাগরণের কথা বলছেন? সেখানে সূক্ষ্ম কিছুই ছিল না। Psuedo democracy তে সব শোষণই স্থুল।
"গনমানুষ" কারা? আমেরিকার মানুষ নাকি আফ্রিকার মানুষ, নাকি বাংলাদেশের মানুষ। ইউরোপ, আমেরিকার "গনমানুষের" উন্নতি কিংবা "welfare state" সম্ভব হওয়ার পেছনে মূল উপাদান এসেছিল অন্য অনেক দেশের "গনমানুষের" শোষণের পয়সা থেকে। তার মানে সব গনমানুষের স্বার্থ একই হচ্ছে না। আমেরিকা নিন্দিত হলেও সবাই কিন্তু তেলমাথায় তেল ঢেলেই যাচ্ছে। আমেরিকার "সাময়িক সাফল্য" তো জন্ম থেকে দেখছি। একেবারে ভিন্ন প্রসঙ্গে Keynes কে quote করি - "In the long term, we are all dead." আপনার মতো আমিও আশা করি, নীতিবোধের চর্চা, সুষ্ঠ রাজনীতির চর্চা হোক। কিন্তু, এখন পর্যন্ত রাজনীতি একটা zero sum game. এখানে এক দেশের উন্নতি হয়েছে আরেক দেশের মূল্যে। আমি আপনাকে "রোমান্টিক" আখ্যা দেবো না। কারণ, আপনি যা বলছেন; সেটা হয়তো কখনো হবে। কিন্তু, আমাদের অনেক তাড়াহুড়া।
যাইহোক, আপনার শেষ মন্তব্যের টোন শুনে মনে হল, আপনি আমাকে বুঝাতে বুঝাতে বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। আমারই সীমাবদ্ধতা - আমি ঠিক বুঝাতে পারিনি, ওই "দৃষ্টিকোণ" বলতে আমি কি বুঝিয়েছি। কিন্তু, আমার লেখাটা আমি মূলত গেরিলা যুদ্ধে বাংলাদেশ নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। এবং আমি বলতে চেয়েছিলাম - আমাদের দেশের এই গৌরবময় এই অধ্যায়ের রচয়িতা মুক্তিযোদ্ধারা অনেক অবহেলিত। আবারও বলছি- লেখক হিসেবে বুঝানোর আমার যে সীমাবদ্ধতা আপনার বিরক্তি উৎপাদন করেছে, তার জন্যে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
"ইংরেজরা বা পাকিস্তানীরা তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া এদেশের সংগ্রামীদের ভালভাবে আখ্যায়িত করবে না এটা বুঝে নিতে কী ব্যাপক বিদ্যাবুদ্ধি আর লেখাপড়ার প্রয়োজন হয়?"
“আমাদের দৃষ্টিকোণ” থেকে ইতিহাস লেখা বলতে যদি ঠিক এটাই বোঝাতে চেয়ে থাকেন তাহলে নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছাকৃতভাবে সত্যকে এড়িয়ে কিছু লিখলে তা ইতিহাস হয় না, তাই তো বিশ্বাস করেন। তাহলে আর আপনার তখন “আমার মনে হয় না, ইতিহাস সত্যতার উপর নির্ভর করে রচিত হয়” এমন কথা বলার প্রয়োজন পড়লো কেন! আপনি তো আমি যেই কথা বার বার বলছি সেই কথাই বলতে পারতেন যে, সত্যতার ওপর নির্ভর না করলে ইতিহাস রচনা করা যায় না। ‘নিজের মতো করে লিখবো’ এই কথাকেও আপনি ‘আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে’ দেখার সাথে একবার যুক্ত করেছেন। আবারো বলতে বাধ্য হচ্ছি, ইতিহাস রচনা করতে হয় ঠিক যা ঘটেছে সেই ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে; কারো কোন নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে নয়। খেয়াল করে দেখুন, আপনার কথাগুলো একটি আরেকটিকে কিন্তু মোটেও সাপোর্ট করছে না। আর আপনি কী মনে করেন যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের কোন দিক আমরা সত্যকে বাদ দিয়ে আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে নির্মাণ করেছি?
না, সূক্ষ্ণ শোষণ বুঝতে পারা এবং তার বিরুদ্ধে যে মানুষ প্রতিবাদ করছে তা বোঝাতে যেয়ে আমি সমসাময়িক আরব জাগরণের কথা বলছি না। বর্তমান নিও লিবারেল সময়ের গ্লোবাল রাজনীতি এবং অর্থনীতির যে কাঠামোগত শোষণ সে ব্যাপারে কী লেখালেখি, চলচ্চিত্র নির্মাণ, সাংবাদিকতা, সঙ্গীত, রাজনীতি সব ক্ষেত্রেই মানুষ কনফরমিস্ট হয়ে পড়ছে আর স্ট্যাটাস কুওকে টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছে? মোটেও না। চমস্কির লেখালেখি বা আবদাররহমান সিসাকো’র চলচ্চিত্র বা জন পিলজারের কথা তো আর রাতারাতি পরিবর্তন আনবে না, কিন্তু এখনকার মানুষ সূক্ষ্ণ শোষণ বুঝতে অক্ষম একথাও ঠিক নয়। বরং বহু মানুষ দিন দিন র্যাডিক্যাল এবং সব ধরনের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ভাবনায় আকৃষ্ট হবে আমি তাই মনে করি।
তৃতীয় বিশ্ব আর পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ মানুষের পার্থক্য আছে; একথাও বিশ্বাস করি ইউরোপ মূলত তৃতীয় বিশ্বেরই তৈরি। কিন্তু নিউ ইয়র্কের রাস্তায় শুয়ে থাকা ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধাও একই রকম; তৃতীয় বিশ্বের মানুষের ক্ষুধার চেয়ে সেই ক্ষুধা কম নয়। আর সাদা চামড়ার প্রতিবাদকারী কোন তরুণের শরীর থেকেও পুলিশের লাঠির আঘাতে রক্তই ঝরে, সে কম ব্যথা পায় না। এভাবে চিন্তা করুন, তাহলেই বুঝবেন নিপীড়নের বিভিন্ন রূপ আর গণমানুষ কারা। অন্তত এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়ার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
আর জন্ম থেকে আমেরিকার ‘সাময়িক সাফল্য’ দেখছেন; কিউবার সাফল্যও দেখুন। তা কী আমেরিকার বিরুদ্ধে এক ধরনের রেজিস্ট্যান্স নয়? আর ইতিহাসের দিকেও দয়া করে তাকান। ভিয়েতনামে আমেরিকার কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল ভুলবেন না। ভুলবেন না ১৯৭১-এ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকার অভিজ্ঞতার কথাও। আর ভবিষ্যৎ যে বর্তমানের মতোই থাকবে এমন মনে করারও কোন কারণ নেই।
আমি "আমাদের দৃষ্টিকোণ" থেকে ইতিহাস লেখা বলতে ঠিক এটাই বুঝিয়েছি।
আপনি কি আরব দেশের গণজাগরণের কথা বলছেন? সেখানে সূক্ষ্ম কিছুই ছিল না। Psuedo democracy তে সব শোষণই স্থুল।
"গনমানুষ" কারা? আমেরিকার মানুষ নাকি আফ্রিকার মানুষ, নাকি বাংলাদেশের মানুষ। ইউরোপ, আমেরিকার "গনমানুষের" উন্নতি কিংবা "welfare state" সম্ভব হওয়ার পেছনে মূল উপাদান এসেছিল অন্য অনেক দেশের "গনমানুষের" শোষণের পয়সা থেকে। তার মানে সব গনমানুষের স্বার্থ একই হচ্ছে না। আমেরিকা নিন্দিত হলেও সবাই কিন্তু তেলমাথায় তেল ঢেলেই যাচ্ছে। আমেরিকার "সাময়িক সাফল্য" তো জন্ম থেকে দেখছি। একেবারে ভিন্ন প্রসঙ্গে Keynes কে quote করি - "In the long term, we are all dead." আপনার মতো আমিও আশা করি, নীতিবোধের চর্চা, সুষ্ঠ রাজনীতির চর্চা হোক। কিন্তু, এখন পর্যন্ত রাজনীতি একটা zero sum game. এখানে এক দেশের উন্নতি হয়েছে আরেক দেশের মূল্যে। আমি আপনাকে "রোমান্টিক" আখ্যা দেবো না। কারণ, আপনি যা বলছেন; সেটা হয়তো কখনো হবে। কিন্তু, আমাদের অনেক তাড়াহুড়া।
যাইহোক, আপনার শেষ মন্তব্যের টোন শুনে মনে হল, আপনি আমাকে বুঝাতে বুঝাতে বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। আমারই সীমাবদ্ধতা - আমি ঠিক বুঝাতে পারিনি, ওই "দৃষ্টিকোণ" বলতে আমি কি বুঝিয়েছি। কিন্তু, আমার লেখাটা আমি মূলত গেরিলা যুদ্ধে বাংলাদেশ নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। এবং আমি বলতে চেয়েছিলাম - আমাদের দেশের এই গৌরবময় এই অধ্যায়ের রচয়িতা মুক্তিযোদ্ধারা অনেক অবহেলিত। আবারও বলছি- লেখক হিসেবে বুঝানোর আমার যে সীমাবদ্ধতা আপনার বিরক্তি উৎপাদন করেছে, তার জন্যে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
তার মানে কী! পাকিরা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে লিখলে যদি সেটা ভুল হয়ে থাকে তাহলে আপনি আপনার দুষ্টিকোণ থেকে লিখলে সেটা ভুল হবে না কেন!?
ধরেন যুদ্ধটা আমরা জিতিনি আর তাদের হানাদার ডাকার অধিকারও আমাদের নেই! তাতে কি তারা সাধু হয়ে যেত?
আমি আপনার মন্তব্য এভাবে ব্যাখ্যা করি, আপনি যুদ্ধ জিতেছেন বলে আপনার হাতে ক্ষমতা আছে তাই 'মুক্তিবাহিনী' নাম দিতে পেরেছেন। তা না হলে, এদেরকে উগ্রপন্থী বলে ডাকা হত! ঠিকাছে?
আপনি কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছেন পাকিস্তানে কেউ এখন আপনার কথা উল্টো করে বলে বেড়াচ্ছে না? কেউ কী বলতে পারেনা, "ওরা যুদ্ধে জিতেছে বলে উগ্রপন্থীদের নায়কোচিত নাম দিয়েছে! আসলে তারা সন্ত্রাসবাদী!"
আপনার মন্তব্য/বক্তব্য বাঙালি জাতির উপর ইতিহাস পরিবর্তনের দায় চাপিয়ে দেয়। অন্তত সন্দেহ তৈরি করে। মুক্তিবাহিনী, রাজাকার, দেশপ্রেম এসবের ইতিহাস কেবল বিজয়ীদের বানানো কল্পগল্প বলে ইঙ্গিত করে! আপনার মন্তব্যের/বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে গেলাম!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সহমত। আপনার মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য পড়ে, মনে হচ্ছে আপনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কল্পিত বলতে চান।
এ সব ধোয়াটে কথা সাধু উদ্দেশ্যে বলা হয় না।
বক্তব্য পরিস্কার করুন।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
পাকিস্তানিরা জাতি হিসেবে এতো মহান না যে ওরা সত্য লিখবে তাই। উদাহরণ দিলাম - "Bangladeshi authorities claim that 3 million people were killed, while the Hamoodur Rahman Commission, an official Pakistan Government investigation, put the figure as low as 26,000 civilian casualties." (source http://www.genocidebangladesh.org/)
আমাদের কাছে কখনই যেত না।
বলে বেড়াতেই পারে ! কিন্তু, এখন ইতিহাসে এটার নাম "The liberation war of Bangladesh" , "civil war of pakistan" না। আমাদের শিশুরা স্কুলে আমাদের গৌরবগাঁথা পড়ে, ওদের বানোয়াট গল্প না। আমরা যুদ্ধ না জিতলে কিন্তু, পরীক্ষার খাতায় এতদিনে পাকিস্তানের গৃহযুদ্ধের consequence নিয়ে লিখতে হতো !
এটা শুধু আমার বোঝানোর ভুল। আমি আমাদের ইতিহাসকে, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের আর সব বাঙ্গালির মতই অনেক শ্রদ্ধা করি। হয়তো, আমার লেখা আপনার অপছন্দ হতে পারে। কিন্তু, আপনি আমাকে অনেক বড় একটা অপবাদ দিয়ে দিলেন। যাইহোক, আমি গেরিলা যুদ্ধে বাংলাদেশ নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। এবং আমি বলতে চেয়েছিলাম - আমাদের দেশের এই গৌরবময় এই অধ্যায়ের রচয়িতা মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস অনেক অবহেলিত।
পাকিস্তানিরা জাতি হিসেবে মহান নয় এজন্যই মানুষ আপনার দৃষ্টিভঙ্গিতে আস্থা রাখবে!?
আপনি মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা করেন তাতে আমার সমস্যা নেই। আপনার লেখা অপছন্দ হওয়ার কারণ বলেছি আমি। এই লেখাতে আপনি নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের/সত্য ইতিহাসের পক্ষের লোক বলে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। আর তারপরই বলতে চেয়েছেন, "এই যুদ্ধ আমরা জিতেছি, এর ইতিহাসও তাই আমরা আমাদের মতো করে লিখব/লিখেছি!"
এই কথাটি মারাত্মক! আপনি সম্ভবত জেনেশুনেই ছাগুদের হাতে দারুণ একটা অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। এখন এরা আপনার এই লেখার রেফারেন্স টানবে আর বলবে, "মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তো গাদ্দাররা নিজেদের মতো করে লিখেছে। তারাই তো এই কথা পাবলিক ফোরামে বলে বেড়ায়। আরো অনেকে তাতে সমর্থনও দেয়..."
আমার আপত্তি এখানে। আপনার মন্তব্য/বক্তব্য/ধারনার আমি ঘোর বিরোধী!
আপনার লেখায় আপনি কী বলতে চেয়েছেন সেটার সারসংক্ষেপের আসলে প্রয়োজন নেই। আপনার গল্প শুনে মনে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধকে আপনি বুঝতে পেরেছেন গেরিলা সম্পর্কিত ক্লাসে! সেটা খুব সুখের কথা নয়। স্বাধীনতার ঘোষক কে, সেটা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। কিন্তু বিতর্ক করতে হয়। ইতিহাসকে রাজনীতি ব্যাবসায়ীদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। আপনার মন্তব্যে মনে হয়েছে এই 'ফালতু' বিতর্ক করাটা ঠিক হচ্ছে না! আপনার নানাভাইয়ের গল্পও কেন পছন্দ হয়নি সেটা ধুসর গোধূলি'দা বলেছেন। তবে এই ব্যপারগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চাচ্ছি না। আপনার লেখার বিরোধীতা করার আরো শক্ত কারণ রয়েছে। সেটা আমি আমার মন্তব্যের প্রথম অংশে বলেছি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রেগুলার সেনাবাহিনী হিসেবে যে রণকৌশল আপনি শিক্ষক মেরোমের কাছ থেকে জানছেন, সেটা ভালো ভাবেই জানা থাকা স্বাভাবিক। এই রণকৌশলে তাদের 'নিপুণতা' নেই, আছে হায়েনাপনা!
আপনার নানা ভাইয়ের কাহিনিটা একটু অন্যরকম। অন্যরকম বলছি এইজন্য যে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিবাহিনীকে সহায়তা করেছেন এমন কাউকে রাজাকারেরা যে করেই হোক পাকিস্তানীদের কাছে 'জান কা দুশমন' হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দেবে এবং দিয়েছে। পাকিস্তানীরা 'সম্মানিত মানুষ' বলেছে আর রাজাকারেরা চুপচাপ ছেড়ে দিয়েছে, এমন দুধে ধোঁয়া তুলসী পাতা তো এরা না। এমন উদাহরণে তাই কিঞ্চিৎ সংশয় থেকে যায়। সংশয়ের কারণটাও বলি, রাজাকারদের চরিত্র বলে কিছু নেই। যে পাতে খায়, সে পাতেই তারা হাগে!
আর আপনার বন্ধুর উক্তিটির ব্যাপারে বলি, আপনার বন্ধুটি অত্যুৎসাহী এবং বিপজ্জনক। রুবাইয়াত পাকিজান মেহেরজানকে দিয়ে যে কথা বলানোর সাহস পায় নি, আপনার বন্ধুটি সেই কথাই বলে দিয়েছে। আমরা বিজয়ী বলে 'ইতিহাস আমাদের মতো লিখবো' না, বরং ইতিহাসের যে বর্বরতম অধ্যায় আমাদের উপর রচিত হয়েছে সেই বর্বরতার কথা আমরা চেঁচিয়ে বলবো। এই বর্বরতাকে কেউ কোমলতার কোল বালিশে ঘুম পাড়াতে আসলে সেটার প্রতিবাদও করবো।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
প্রিয় ধুসর গোধূলি, আপনার এতো বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আমি এখানে নিজের অবস্থানটা একটু বলি -
(১) "নিপুণ" শব্দটা আমি sarcasm হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম। আশা করি সেটা আপনি বুঝতে পেরেছেন। আমি প্রথমেই স্বীকার করে নিয়েছি আমার ঘৃণা প্রকাশের ভাষার সীমাবদ্ধতা।
(২) গল্পটা নিয়ে সংশয় থাকতে পারার কারণটা খুবই সংগত। কিন্তু, যুদ্ধতো অনেক বড়, তাই না? ওখানে কিছু ঘটনা অন্যরকম হতে পারে। আমি এই উদাহরণটা টেনে ছিলাম, আমার চেনা একজন মুক্তিযোদ্ধার গর্বের প্রতীক নিয়ে। না বুঝাতে পারার ব্যর্থতা আমারই। আর তাছাড়া, এখানে আমি আরো দুইজন যোদ্ধার কথা বলেছি। একজন আমার বাবা, যে কখনই এই ব্যাপারে কিছু বলেনি। দ্বিতীয়জন, যার গল্পই শুধু আমি শুনেছি - আমার চাচা, যাকে তার বন্ধুবেশী রাজাকারেরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল।
(৩) আমি এখানে "ইতিহাস আমাদের মতো লিখবো" বলতে কি বুঝিয়েছি, এটা এর আগে একটা মন্তব্যে করেছি, কিন্তু, অতিথি বলে মন্তব্যগুলো পোস্ট হতে একটু সময় লাগছে। যাইহোক, রুবাইয়াত এর বাংলাদেশী নাগরিকত্ব নিয়ে আমি সন্দিহান ! বীরাঙ্গনাদের উপর রিসার্চ করার পর এমন মুভি বানানোর পর তার মানসিক সুস্থতা নিয়েও আমার প্রশ্ন জাগে। আমি শুধু এটা বলতে চেয়েছি - ইতিহাস বিজয়ীরা লেখে। এটা যদি পাকিস্তানিরা লিখত, তাহলে অবশ্যই সেটা অন্যরকম হতো। মানছি, ইতিহাসের deconstruction করার দরকার আছে, রিসার্চের দরকার আছে, আরো জানার দরকার আছে। কিন্তু, মেহেরজানের ভিত্তিটাই বড়ই বিচিত্র! আমি যখন বলেছি- ইতিহাস "আমরা" লিখবো, আমি স্বাভাবিক মানুষকে এবং সাধারণ বাংলাদেশিদের বুঝিয়েছিলাম- কোনো মানসিকভাবে অসুস্থ, পাকি-প্রেমীকে না।
যুদ্ধ অবশ্যই অনেক বড়। আর ওখানে কিছু ঘটনা অবশ্যই অন্যরকম হতে পারে। কিন্তু যেটা পারে না তা হলো, মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের সহযোগীদের ব্যাপারে পাকিস্তানী আর তাদের দোসর রাজাকারদের চারিত্রিক জিঘাংসার পরিবর্তন। এইটা কারো রচিত ইতিহাস না, এইটা চরম ফ্যাক্ট!
স্কটিশ একটা প্রবাদ আছে, "ইতিহাস তাদের দ্বারাই রচিত হয়েছে, যারা বীরদের ফাঁসীতে ঝুলিয়েছে!" আপনার "ইতিহাস বিজয়ীরা লেখে" কথাটা বোধকরি সেখান থেকেই প্রসূত। কিন্তু স্কটিশদের (আংরেজদের উদ্দেশ্য করে বলা) ঐ প্রবাদের পেছনের কাহিনিও আপনাকে জানতে হবে সেই প্রবাদকে রেফারেন্স হিসেবে টানতে গেলে। আর, প্রবাদ বা প্রবচন কখনোই ফ্যাক্ট হয় না। তাই 'ইতিহাস বিজয়ীরাই লেখে', এটাও কোনো ফ্যাক্ট না। ইতিহাস চলে তার আপন গতিতে, কেউ কেউ কেবল তার নিজের মতো করে একটা ভার্সন তৈরী করে নেয়। কিন্তু সেটা মূল ইতিহাস হয় না। হয় ইতিহাসের কাস্টমাইজেশন ওরফে বিকৃতি, যেমনটা উপরে নাদির জুনাইদ বলেছেন।
১৯৭১ নিয়ে পাকিস্তানীরা তাদের মতো করে তাদের স্কুলে তাদের কাস্টমাইজ করা ইতিহাস শিক্ষা দেয়। তাদের সেই ইতিহাসে 'শেখ মুজিবর রেহমান' পরিচিত হন বিচ্ছিন্নতাবাদী ভারতীয় চর হিসেবে। মুক্তিবাহিনীরা আখ্যা পায় 'ভারতীয় উগ্রবাদী সন্ত্রাসী' হিসেবে। বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের কবর পরিচিত হয় 'গাদ্দার'এর কবর হিসেবে, যেখানে তাদের 'থুতু নিক্ষেপ' অবশ্য কর্তব্য। — সুতরাং, 'বিজয়ীরাই ইতিহাস লেখে' এই তত্ত্বে ভুল আছে আপনার।
এবার একটু কষ্ট করে আমাদের স্কুলের ইতিহাস শিক্ষার দিকে তাকান। আপনি নিজেই স্বীকার করেছেন স্কুলের সমাজ বই কেবল 'স্বাধীনতার ঘোষক' আর সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ'র মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। কিন্তু, 'ইতিহাস বিজয়ীরাই লেখে' এই সূত্রে ফেললে তো আমাদের অনেক কিছুই জানার কথা ছিলো। আমাদের জানার কথা ছিলো আইয়ূব, ইয়াহিয়া আর টিক্কা খানেরা মানুষের চেহারায় আসলে একেকটা ধূর্ত শেয়াল, হায়েনা। আমাদের স্কুলেই পড়ার কথা ছিলো গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামানদের মতো পাষণ্ড হিংস্র শ্বাপদের ঠাঁই বাংলাদেশের মাটিতে হতে পারে না। আমাদের বইয়ে থাকার কথা ছিলো ধর্মের নাম নিয়ে জামাতে ইসলামীর সদস্যরা তাদের পাকিস্তানী বাপদের চরণতলে বাংলাদেশের ত্রিশ লাখ প্রাণ বলি দিয়েছে। পড়েছেন এরকম কিছু স্কুলে থাকতে? কিংবা কলেজে? বিজয়ীরাই যদি ইতিহাস লিখবে, তো কেনো পড়েননি? নিজের পরিবারে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও কেনো পাকিস্তানীদের জাত চিনতে আপনাকে মেরোমের লেকচার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো, বলেন তো!
২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানীরা আমাদের উপর অস্ত্র হাতে হানা দিয়েছিলো বলেই তারা 'হানাদার'। আমরা মুক্তিযুদ্ধে জয়ী না হলেও, যুদ্ধ এখনও চলতে থাকলেও ২৫ মার্চ রাতের 'প্রথম' আক্রমনকারী বদলে যেতো না! আর এখানে বলে রাখা ভালো, মুক্তিযুদ্ধ কখনো শেষ হয় না চূড়ান্ত বিজয়/লক্ষ্য অর্জনের আগে। আমাদের যে উগ্রবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিচয় নয় মাস স্থায়ী হয়েছিলো, সেটা নাহয় আরও বছর চল্লিশেক ধরে চলতো!
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিজয়ী হয়েছি বলে আমাদেরই লিখে দিতে হয়নি। এই কাজটুকু করেছেন কিছু সাংবাদিক, যাঁরা ৭১-এ পূর্ব পাকিস্তানে ছিলেন। নিজের চোখে দেখেছেন পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বরতা। দেখেছেন লাখ লাখ গৃহত্যাগী মানুষজন। সাক্ষী হয়েছেন ভয়ঙ্করতম নরহত্যার। তাঁদের লেখা সেইসব বর্ণনা, আর আলোকচিত্রই সম্মিলিতভাবে প্রতিষ্ঠিত করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের দাবী। আমরা নিজেরা যদি ইতিহাস লিখেও থাকি, সেইটা আমাদের মনগড়া ভার্সন যে না সেটা প্রমাণ করে ঐসব আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র আর বর্ণনা। অর্থাৎ, পাকিস্তানীদের মতো 'আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে' বলে আলাদা কোনো টার্ম এখানে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নেই। কনস্ট্রাকশন, ডি-কনস্ট্রাকশন, গ্র্যান্ড/কাউন্টার/ভুগিচুগি ন্যারেটিভ জাতীয় কয়েক টন ওজনের শব্দ ব্যবহার করে আমাদের সেই ইতিহাসকে জাতে তুলতে গেলেই বরং সন্দেহ ঘনীভূত হয়! 'আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে' 'আলাদা ন্যারেটিভে' দেখার আহ্বানের সন্দেহ!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভালো লাগল আপু...অনেক ভালো। স্বাধীনতা নিয়ে কিছু লিখতে গেলে মাঝে মাঝে ভাষা হারিয়ে ফেলি...রাজাকারের বাচ্চাগুলার কথা শুনে আরো ভয়াবহ কিছু মনেহয়...
যাই হোক...ভালো থাকবেন
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে। আপনিও ভালো থাকবেন, দ্বিতীয় সুবর্ণরেখা।
স্বাধীনতা ঘোষক বিতর্ক কি ৪০ বছর ধরে চলে আসছে? প্রথম কবে প্রেসিডেন্ট জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অভিহিত করা হয়?
অনেকের কাছে অপ্রিয় হলেও শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বই স্বাধীকার আন্দোলনের ১৯৭১ এর বাস্তবতায় বাঙ্গালীকে নিয়ে আসে। শেখ মুজিবকে ১৯৭৫ এর পর থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত ঠিক কিভাবে বই-পুস্তকে তুলে ধরা হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
যে ৬-দফার ভিত্তিতে আওয়ামীলীগ ১৯৭০ এর নির্বাচনে ম্যান্ডেট পেল, বাঙ্গালী একতাবদ্ধ হলো এবং জেগে উঠলো, সেই ৬-দফাকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে শেখ মুজিবের অবদান সম্মন্ধে ধারণা রাখেন আশাকরি। ৬-দফা নিয়ে অনেকটা শূন্য থেকে তিনি শুরু করেছিলেন, যেখানেই বক্তৃতা করেছেন, সেখানেই গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারের পরে জামিন পেয়েছেন এবং আবার বক্তৃতা করেছেন হাটে-মাঠে-ঘাটে। অবশেষে আনবেইলেবল ধারাতে পাকিস্থানী সেনাশাসকেরা গ্রেফতার করে শেখ মুজিবকে জেলে প্রেরণ করেছিলেন এবং কালের পরিক্রমায় পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা মামলায় ফাঁসানো হয়।
আমরা অনেকেই বর্তমান আওয়ামীলীগের হালুয়া-রুটির রাজনীতিকে ঘৃণা করতে গিয়ে বা কখনও কখনও সার্কাসের ম্যাজিশিয়ানের মতন ব্যালান্স এন্সিউর করে দড়ির উপর হাঁটতে গিয়ে প্রায়ই আমাদের স্বাধীনতার আন্দোলনে শেখ মুজিবের অবদান নিয়ে নানান রকমের মন্তব্য করে ফেলি। কিন্তু অনেকের কাছে অপ্রিয় হলেও এটাই সত্য যে স্বাধীনতার আন্দোলনে শেখমুজিবের অবদান সত্যার্থেই গৌরব গাঁথা এবং পুস্তকের পাতা বদলানোতে সে সত্যের কোন অপলাপ বা হেরফের হয়না। স্বাধীনতার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে বাঙ্গালী পরিপূর্ণভাবে কোনদিনই হয়তো উপলব্ধি করতে পারবেনা।
আপনার নানার অভিজ্ঞতাটি আমার কাছে ব্যাতিক্রম মনে হয়েছে। কারণ, রাজাকারদের কথাবার্তাকে পাকিস্থানী হানাদারেরা যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিত বলেই জেনেছি; যেমন-- আমাদের গ্রামের অপারেশানের সময় পাকিস্থানী সেনাদের সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়েছিল রাজাকারেরা, কাদের বাড়িতে আগুন দিতে হবে বা কাদেরকে গুলি করতে হবে। যাহোক, মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করবার জন্য উনাকে আন্তরিক অভিনন্দন এবং স্যালুট।
আমরা একজন তাজউদ্দীন আহমদকে ভুলে যাই কেন, কেন তার কথা বলতে ভুলে যাই! নয় মাসের এই যুদ্ধে এই মানুষটার অবদান আড়ালে থেকে গেছে, তিনি নিজেও আড়ালে থেকেছেন কিন্তুআমরা তাকে কেন বারবার আড়ালে রেখে দেই!! এটা আমাকে খুব ভাবায়, উত্তর মেলেনা!
ভুলিনি তো !আমরা ওদের কাউকেই ভুলবো না। আমি আমাদের কোনো জাতীয় নেতার অবদানই অস্বীকার করতে চাইনি। আমি শুধু বলতে চেয়েছি, আমাদের ঘরের, আমাদের নিজস্ব গল্পগুলো বড় অবহেলিত। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে সেই গৌরবগাঁথা এবং সেই হিংস্রতার ইতিহাস তুলে আনা উচিত।
জনাব তানিম এহসান,
আমি মন্তব্যে করেছি উক্ত ব্লগারের একটি মন্তব্যের উপর। সেখানে অবশ্য পুরো মুক্তিযুদ্ধে নিয়ে কথা বলবার প্রয়াস করিনি। তবে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতেই এখন প্রাসংগিক কিছু কথা বলবো।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন নিয়ে যদি দুইটি মানুষের অবদানের নাম নিতে হয়, তবে আমি প্রথমেই বঙ্গবন্ধু এবং তারপরে তাজউদ্দিন আহমেদের নাম নিবো।
এটা আমাদের ব্রেইন-ওয়াশে ফল।
দীর্ঘদিন ধরে যে দেশে বঙ্গবন্ধু নামই নির্বাসিত ছিল সেখানে তাজউদ্দিন আহমদকে খুঁজে পাওয়ার আশা করাটা একটু কঠিন। ৬ দফার প্রচার যখন শুরু হয় তখন তদানীন্তন আওয়ামীলীগের অনেকেরই বিরোধীতা এসেছিল, কিন্তু বঙ্গবন্ধু এগিয়ে গিয়েছিলেন একজন মানুষকে পাশে নিয়ে আর তিনিই হচ্ছেন তাজউদ্দিন। উত্তাল মার্চের আলোচনায় বঙ্গবন্ধু নিশ্চিন্তে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন একজন মানুষের হাতে, তিনিই ছিলেন আমাদের তাজউদ্দিন। ২৮ শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৭১ পূর্বপাকিস্থানের গভর্ণর হাউজে গভর্নর আহসান যখন ন্যাশনাল এসেম্বলী বন্ধের ঘোষণার খসড়া সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য বঙ্গবন্ধুকে ডাকেন, তখন যে মানুষটি বঙ্গবন্ধুর সাথে উপস্থিত ছিলেন, তিনিই তাজউদ্দিন। যে দেশে বঙ্গবন্ধুর নামই উচ্চারিত হয় ঘৃণা ভরে সেখানে তাজউদ্দিনের স্বীকৃতি আশা করেন কিভাবে?
এটা আমাদের দৈন্যতা যে আমরা মুজিবের আওয়ামীলীগ আর বর্তমানের হাসিনার আওয়ামীলীগকে এক করে ফেলে বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়ন করতে যাই, স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে চাই। আমরা বলি যে স্বাধীনতার কথা তেমন কোথাও লেখা হয়নি, প্রশ্নটি এভাবে করি, যতটুকু লেখা হয়েছি আর কতটুকু আমরা জানি?
আশাকরি আপনার ভাবনার খোরাকে আমি নতুন কিছু সংযুক্ত করতে পেরেছি। ভাবুন, উত্তর খুঁজুন। পৃথিবীর শক্তিশালী রাজারা যখন নিজেদের সীমানা ভাগ করে নেয়, তখন সেই সীমানা ভেঙ্গে নতুন একটি রাষ্ট্রের জন্ম দেওয়া অতটা সহজ কাজ নয়। এমন বোধ শুধু আমাদের বাংলাদেশেই বোধয় শুধু ধারণ করা হয়। এটা নেয়াহেত বাংলাদেশ বলেই মুজিব-তাজউদ্দিনদের মতন পরীক্ষীত দেশপ্রেমিকেরা আস্তাকুঁড়ে পড়ে থাকে হাসিনা-খালেদার হালুয়া-রুটির রাজনীতির উছিলায়; আসলে, এটা মানুষ হিসেবে আমাদের দৈন্যতা।
জনাব তানিম এহসান,
আমি মন্তব্যে করেছি উক্ত ব্লগারের একটি মন্তব্যের উপর। সেখানে অবশ্য পুরো মুক্তিযুদ্ধে নিয়ে কথা বলবার প্রয়াস করিনি। তবে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতেই এখন প্রাসংগিক কিছু কথা বলবো।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন নিয়ে যদি দুইটি মানুষের অবদানের নাম নিতে হয়, তবে আমি প্রথমেই বঙ্গবন্ধু এবং তারপরে তাজউদ্দিন আহমেদের নাম নিবো।
এটা আমাদের ব্রেইন-ওয়াশে ফল।
দীর্ঘদিন ধরে যে দেশে বঙ্গবন্ধু নামই নির্বাসিত ছিল সেখানে তাজউদ্দিন আহমদকে খুঁজে পাওয়ার আশা করাটা একটু কঠিন। ৬ দফার প্রচার যখন শুরু হয় তখন তদানীন্তন আওয়ামীলীগের অনেকেরই বিরোধীতা এসেছিল, কিন্তু বঙ্গবন্ধু এগিয়ে গিয়েছিলেন একজন মানুষকে পাশে নিয়ে আর তিনিই হচ্ছেন তাজউদ্দিন। উত্তাল মার্চের আলোচনায় বঙ্গবন্ধু নিশ্চিন্তে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন একজন মানুষের হাতে, তিনিই ছিলেন আমাদের তাজউদ্দিন। ২৮ শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৭১ পূর্বপাকিস্থানের গভর্ণর হাউজে গভর্নর আহসান যখন ন্যাশনাল এসেম্বলী বন্ধের ঘোষণার খসড়া সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য বঙ্গবন্ধুকে ডাকেন, তখন যে মানুষটি বঙ্গবন্ধুর সাথে উপস্থিত ছিলেন, তিনিই তাজউদ্দিন। যে দেশে বঙ্গবন্ধুর নামই উচ্চারিত হয় ঘৃণা ভরে সেখানে তাজউদ্দিনের স্বীকৃতি আশা করেন কিভাবে?
এটা আমাদের দৈন্যতা যে আমরা মুজিবের আওয়ামীলীগ আর বর্তমানের হাসিনার আওয়ামীলীগকে এক করে ফেলে বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়ন করতে যাই, স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে চাই। আমরা বলি যে স্বাধীনতার কথা তেমন কোথাও লেখা হয়নি, প্রশ্নটি এভাবে করি, যতটুকু লেখা হয়েছি আর কতটুকু আমরা জানি?
আশাকরি আপনার ভাবনার খোরাকে আমি নতুন কিছু সংযুক্ত করতে পেরেছি। ভাবুন, উত্তর খুঁজুন। পৃথিবীর শক্তিশালী রাজারা যখন নিজেদের সীমানা ভাগ করে নেয়, তখন সেই সীমানা ভেঙ্গে নতুন একটি রাষ্ট্রের জন্ম দেওয়া অতটা সহজ কাজ নয়। এটা সহজ এমন বোধ শুধু আমাদের বাংলাদেশেই বোধয় শুধু ধারণ করা হয়। এটা নেয়াহেত বাংলাদেশ বলেই মুজিব-তাজউদ্দিনদের মতন পরীক্ষীত দেশপ্রেমিকেরা আস্তাকুঁড়ে পড়ে থাকে হাসিনা-খালেদার হালুয়া-রুটির রাজনীতির উছিলায়; আসলে, এটা মানুষ হিসেবে আমাদের দৈন্যতা।
বিচলিত বর্তমান, আপনার মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আমি আসলে জানিনা, ১৯৯৬ এর আগে টেক্সট বইয়ে কি ছিল। আমি শুধু আমার সময়ের কথা বলেছি। এই লেখার দ্বারা আমার কিন্তু শেখ মুজিব বা জিয়া কাউকে ছোট করতে কিংবা তাদের অবদান অস্বীকার করতে চাইনি। আমি শুধু বলতে চেয়েছি, ক্লাস ওয়ান থেকে টেন অনেক সময়, একটা শিশুর জাতীয়তাবাদী মন তৈরি করে দেবার। একটা শিশুর অধিকার কাছে, নিজের ইতিহাস জানার। এবং ইতিহাসটা যদি আমাদের মতো গৌরবের হয়, তাহলে কেন এটা নিয়ে এতো রাজনৈতিক খেলা? কেন এটা কে বিতর্কিত করা? কে স্বাধীনতার ঘোষক, শুধু ওই অংশগুলো বদল করে বা না করে, আরো অনেক কিছুই আমাদের এই ১০ বছরে শেখানো যেত। নিঃসন্দেহে আমাদের জাতীয় নেতাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান অনস্বীকার্য, কিন্তু, শুধু ওরা তো যুদ্ধ করেনি। ওই যুদ্ধটা তো সার্বজনীন ছিল। আর আমি কিন্তু একবারও বলিনি ৪০ বছর ধরে বিতর্কটা চলছে। আমি বলেছি- "স্বাধীনতার ৪০ বছর পর ও..."
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের পর জন্ম নিয়েছি, আমরা যারা আমাদের বাবা-মা-আত্মীয়-ঘনিষ্ঠদের কাছে শুনেছি, পড়েছি, খুঁজেছি --- তাদের মধ্যে কিন্তু ঘোষনা নিয়ে তর্ক নেই, তর্ক নেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতায়, যুথচারি সংগ্রামে, সংঘবদ্ধতায়। বিতর্কটা তৈরী করে রাজনৈতিকরা যতটা ফায়দা লুটেছে তারও বেশী তাদেরকে ফায়দা লুটতে দিয়েছি আমরা অহেতুক কু-তর্কের জালে জড়িয়ে!
কিন্তু আমি এই পোস্টের লেখকের সাথে আবারো একমত হবো এই কথাটায় যে - কে ঘোষনা দিয়েছে সেই তৈরী করা জালে পরে আমরা এখনো গণমানুষের ইতিহাস তুলে আনতে পারিনি। একটা ঘটনা তুলে ধরি,
জাবিতে পড়ি, আমরা তখন শিবির বিরোধী সংগ্রামের দ্বিতীয়বার পার করে এসেছি, এই সময় আমাদের মনে হলো মুক্তিযুদ্ধে ”কামালপুর” একটা ভিষণ জায়গার নাম - আমরা সেখানে গেলাম, মানুষের মুখে যে মানুষটার কথা সবচাইতে বেশী শুনলাম তার সাথে দেখা করতে গেলাম দুইজন, ভাঙা বাড়ীর চইতেও ভাঙা শরীর নিয়ে সে মানুষটা সামনে এসে দাড়াতে আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে তাকে জড়িয়ে ধরলাম। জড়িয়ে ধরা থেকেই কথা হচ্ছে, এক পর্যায়ে জানালাম যে আমরা মুক্তিযুদ্ধে কামালপুরের উপর জানতে এসেছি। একটা হ্যাচকা ঝটকা দিয়ে তিনি আমকে দূরে ঠেলে দিয়ে বললেন - এইসব মুক্তিযুদ্ধে আমরা ছিলামনা, আপনারা ভুল মানুষের কাছে আসছেন!! একটা কথাও আর বলেননি তিনি!
এই মানুষটার কথা বাংলাদেশে লেখা হয়নি কেন? কেন মুক্তিযুদ্ধ শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের সম্পত্তি হয়ে যাবে, কেন জাসদ করার অপরাধে আমার চাচাকে মেরে ফেলার জন্য নিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে আর কেনইবা যুদ্ধের আগে আমার বাবা ইকবাল হলে ছাত্রলীগ করতেন বলে খবর পেয়ে সেই চাচাকে ছেড়ে দেয়া হবে!!
আমরা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম কিন্তখুব সাবধান হয়ে গেছি এখন, আবেগ তুলে রেখে যাচাই করি, আমাদের আবেগ নিয়ে যারা খেলেছে তারা ভাবতেও পারেনি আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের রক্ত শরীরে নিয়ে বেড়ে উঠেছি, এ রক্ত সত্যকেই খুঁজে নেয়, এ রক্ত চুপ করে থাকলেও সেটাও হয় তার ভিন্ন প্রতিবাদ।
ইতিহাস ইতিহাসের মত বেড়ে উঠুক, বঙ্গবন্ধুর মর্যাদা আলাদা ভাবে দিতে চেয়ে সবচাইতে বেশী গলা সাধে যারা এইদেশে তারাই সবচেয়ে বেশী তাকে নিয়ে ব্যবসা করে। আপনি,আমি, আমরা সত্যটাকে নিয়ে তর্ক না করি ভাই, বরং আসুন এইসব মীমাংসিত ইতিহাসের হাত ধরে ইতিহাসের শূণ জায়গাগুলো পূরণ হবার জন্য সংহত হই!
অনেক কথা বলে ফেললম একটানা, যা বলেছি নিজের কথা বলেছি, আর একই কথা বলতে ভালো লাগেনা!
আপনি আমার মনের কথাগুলোই বলে গেলেন। মুক্তিযুদ্ধ এবং জাসদ নিয়ে একই ঘটনা আমার ঘরেরও।
এর চেয়ে সুন্দর আর সত্য করে বোধহয় আর কিছু বলার নেই।
আপনার অনুভুতিকে শ্রদ্ধা। লিখতে থাকুন হাত খুলে। স্বাগতম সচলে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পড়ার জন্যে এবং এতো আন্তরিক মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
লেখাটা পড়তে ভীষণ কষ্ট হলো।আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আসলেই কোন গল্প না।এটা আমাদের অর্জন আর বর্জনের ইতিহাস।যুদ্ধে আমরা জিতেছি ঠিকই, কিন্তু সঠিক ইতিহাস জানা বা জানানোর যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি।আরো লিখুন।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
জরি,
একাডেমিক শিক্ষাকে যেভাবে বাস্তবের সাথে মিলিয়ে দেখেছেন, তা সত্যি অনবদ্য! রুদ্রের কবিতা লেখাটিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে।তবে আমার আলাদা পর্যবেক্ষণ রয়েছে আপনার লেখার ব্যাপারে।
সত্যি কথা বলতে কি, 'যুদ্ধ জয়ের কৌশল' শিক্ষার বিষয়টিই আমি মেনে নিতে পারিনি, কারণ আমি যেকোনো যুদ্ধেরই বিরোধী। আর তাছাড়া আপনার বর্ণিত যুদ্ধ-কৌশলগুলো বলে দিচ্ছে, এগুলো সাম্রাজ্যবাদী দখলদারদের স্বার্থে প্রণীত।
পাকিস্তানিরা আধুনিক সব রণকৌশলই প্রয়োগ করেছিল। তারপরও বাঙ্গালিরা জিতে গেল। এর পেছনে পাকিস্তানের 'অধিক হিংস্রতা'(যার কারণে 'ভেতো বাঙ্গালি ভয়ংকর' হয়ে উঠেছিল) কে দায়ী মনে হয় আপনার? পাকিস্তানিরা যদি ভুল না করতো, অথবা আপনার কোর্সে বর্ণিত কৌশলগুলো শতভাগ অনুসরণ করতো, তাহলে তারা বাঙালি গেরিলাদের হারিয়ে দিতে পারতো? মেরোম কি বলে এ ব্যাপারে? আমার মতে, তারপরও কিন্তু পাকিস্তানি সেনারা বাঙ্গালিদের কাছে হারত। আসলে সব যুদ্ধই সত্য আর মিথ্যার লড়াই এবং শেষ পর্যন্ত কোন কৌশল দিয়েই সত্যের জয় ঠেকিয়ে রাখা যায় না যেহেতু সভ্যতা টিকে থাকে সত্যের জন্যই।
আপনার মন্তব্য থেকে অনুপ্রেরণা পেলাম। আর আপনার পর্যবেক্ষণ আমার ভালো লেগেছে। যুদ্ধের বিরোধী, শান্তি চাই-- আমরা অনেকেই। কিন্তু, বাস্তবতাতো আলাদা। শুধু যুদ্ধ করার জন্যেই যে যুদ্ধের কৌশল জানা প্রয়োজন আমি তেমন মনে করিনা। কিন্তু, নিজের দেশকে ভালবাসি। কেউ যদি আমাদের আক্রমণ করে, আমরা যুদ্ধ না চাইলেও কি ঠেকাতে পারবো?
আমি যদি আমার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জ্ঞ্যান ঝাড়ি, তাহলে আমি বলবো- এখানে অনেক কারণ সম্পর্কিত। অবশ্যই অধিক হিংস্রতা আমাদের সহ্যক্ষমতার বাইয়ে চলে গিয়েছিল। যে কারণে, সাধারণ জনগণ একত্রিত হয়েছিল দলমত নির্বিশেষে। এটার কারণে, গেরিলাদের সামাজিক অবস্থান দৃঢ় হয়েছিল। তারা, যুদ্ধের সময় মানুষের কাছে থেকে, খাবার, ঔষধ, চিকিৎসা, ইনফর্মেশন ইত্যাদি পেয়েছিল। গেরিলাদের আরেকটা বড় সুবিধা হচ্ছে, ওরা নিজেদের আবহাওয়া, ভৌগলিক অবস্থানের সাথে পরিচিত। আমাদের বর্ষা এবং নদীনালা নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। গেরিলারা ছোট ছোট গ্রুপে থাকে এবং যেহেতু কোনো আর্মিদের মতো বিশাল chain of command থাকে না, ওরা যুদ্ধের প্রয়োজনে নিজেদের কৌশল সাথে সাথে বদলে ফেলতে পারে। যেটা কোনো আর্মিগ্রুপ চাইলেই করতে পারে না।
সর্বোপরি, ১৯৫০ এর পর থেকে দেখা গেছে গেরিলারাই বেশি করে যুদ্ধে জয়ী হচ্ছে। এটার জন্যে উপরের টেকনিক্যাল কারণ ছাড়াও নানা কারণ দেখানো হয়। একটা হচ্ছে বিদেশী শক্তির সাহায্য। Cold war পরবর্তী সময়ে আমেরিকা আর সোভিয়েত ইউনিয়নের আলাদা হয়ে সব দেশকে নিজের দিকে টানতে চেষ্টা করা। আমাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভারতের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
কালোরাত্রির খামে নিজেকে পুরে ফেলতে ফেলতে লেখাটি পড়ে গেলাম। বোধকরি, ঘৃণার মতো শক্তিশালী মারণাস্ত্র নেই কোনো। যারা আমাদের মুছে ফেলতে চেয়েছিল তাদের ঘৃণা করি মনেপ্রাণে।
একাত্তরে আমার ও আমার মায়ের চোখের সামনে পাকিস্তানী জন্তুরা আমার নির্দোষ-নিরীহ নানাভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমার প্রকৃত বয়স নিবন্ধিত বয়সের চাইতে বেশী হওয়ায় তখন সে দৃশ্যে স্তম্ভিত হবার মতো বোধ ছিল আমার। আমি আজও সেই দৃশ্য দেখে রাতে-দিনে চমকে চমকে উঠি। মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না তিনি, মানুষ ছিলেন তো!
অসাধারণ আপনার লেখনী। আশাকরি মাঝে মধ্যেই এমন করে নাড়িয়ে দিয়ে যাবেন। স্তম্ভের মতো নিঃসহায় দাঁড়িয়ে না থেকে আমাদের বড় প্রয়োজন যে ঘুরে দাঁড়াবার!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
খুব সুন্দর কথা। আপনার মন্তব্য পড়ে কিছু বলার ধৃষ্টতা দেখাবো না।
কে বলেছে ইতিহাস সব সময় সত্য হতে হয় অথবা সত্য হয় ? পাকিদের আমাদের বিজয় এর ইতিহাসটা লিখতে দিয়ে দেখুন না .. কতখানি সত্য হয় সেই ইতিহাস. অথবা ওদের স্কুল এর বইগুলোতে কিভাবে আমাদের বিজয় কে সুন্দর করে দেখানো হয়েছে এবং ওদের নৃশংসতা আর লেজ গুটিয়ে পালানো কে কতটা চমত্কার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে. আর আমাদের ইতিহাস আমাদের নিজেদের মত করে আমরা না লিখে আমরা তৃতীয় পক্ষ কিংবা পাকিদের জন্য বসে থাকব ? আমাদের শহীদদের রক্ত আর বীরগাথার কথা আমরা গলা ফাটিয়ে না বললে .... গল্প কবিতা আর সিনেমা না বানালে কে করবে এসব ? কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভদ্রতার আড়ালে কাপুরুষতা আর ইতিহাস শুচিবায়ুতা না করে অত্যুত্সাহী এবং বিপদজনক হওয়াটা মনে হয় খারাপ না...
মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
আপনাকে ধন্যবাদ নিবিড়।
দারুণ একটি লেখা পড়লাম। আরো লিখবেন আশা করি!!!! আমাদের যে লিখতেই হবে!!! একটি মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধকথাও অশ্রুত থাকলে চলবে না!!!
আর বিজয়ীর হাতে যেমন ইচ্ছে ইতিহাস লিখতে পারার কথা বলতে আপনি হয়তো আন্য কিছু বুঝিয়েছেন, খুব সম্ভবত আপনার অনুভূতিটিও ধরতে পারছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আজাদ স্যারের একটি প্রবচন আছে এরকম ইতিহাস হল বিজয়ীর হাতে লেখা বিজিতের নামে একরাশ কুৎসা। সেক্ষেত্রে আমাদের আপনার শেষ কথাটা ধরতে একটু সমস্যা হয়েছে। আমাদের ইতিহাস সত্য-সঠিক আছে। যেমন ইচ্ছে লেখা নয়। যা সত্য তাই লেখা।
আর স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে এত লাফালাফির কিছু নাই। মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করতো মুজিবের নামে। জিয়া একজন পাঠক মাত্র। স্বাধীনতার ঘোষণা যদিও জিয়া দিয়েও থাকতো তবু ব্যক্তিগতভাবে এর বৃহৎ কোন গুরুত্ব দেখি না। দেশ স্বাধীন করার পুরো কৃতিত্ব মুজিবের, উনার কথায় জাতি উঠতো-বসতো। উনি বাংলাদেশের একমাত্র স্থপতি। জিয়া শুধুমাত্র একজন সেক্টর কমান্ডার। আশাকরি ইতিহাস একসময় এই বিষয়গুলো সুস্পষ্ট করতে পারবে। ইতিহাসের উপর কালো থাবা পড়া যতদিন না থামছে ততদিন আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য।
_____________________
Give Her Freedom!
সহমত কবি। কিছু কিছু বাঙালি পেরিয়ে গিয়েছেন বাঙালিত্বের ক্ষুদ্র সীমা, শেখ মুজিব তাঁদের মাঝে একজন। তাঁর পাশে ভাসানি-সোহরাওয়ার্দি-ফজলুল হক নিম্নমাঝারি, জিয়া হাস্যকর, আর বাকিরা অত্যন্ত তুচ্ছ। ষাটের দশকে মুজিব যেভাবে আলোড়িত বিস্ফোরিত করে চলেছিলেন বাংলাদেশকে, তা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে অভূতপূর্ব। মুজিব শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে রাজনীতি করেন নি, তিনি রাজনীতি করেছেন যুগান্তর ঘটানোর জন্যে। তিনি উদ্বেলিত, সংহত করেছেন জাতিকে, নতুনভাবে সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস - আর এখানেই তিনি পেরিয়ে গেছেন বাঙালিত্বের ক্ষুদ্র সীমা। বিদ্রোহের আগুনে তিনিই রচনা করেছেন আমাদের মহাকাব্যিক বিজয়গাঁথা। অথচ, দশকের পর দশক তার নাম উচ্চারণ নিষিদ্ধ ছিলো বাংলাদেশে।
হুমায়ুন আজাদ, যিনি কখনো কারো দালালি করেন নি, বলতেন - "মুজিব সামান্য ঘোষক ছিলেন না, একাত্তরে তিনি ছিলেন মহানায়ক। ঘোষনা করে ঘোষক হওয়া যায়, যেকোনো নির্বোধের পক্ষেই তা সম্ভব। কিন্তু ঘোষনা দিয়ে মুজিব হওয়া যায় না, মুজিব হওয়ার জন্যে লাগে দীর্ঘ সাধনা।"
মুজিবই আমাদের একমাত্র মহানায়ক (স্বাধীনতাপরবর্তী শত ব্যর্থতা সত্ত্বেও)। তাঁকে ছাড়া বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হতো না, আমরা এখনো দাসত্ব করতাম বর্বর পাকিস্তানিদের।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
খুব ভাল লেগেছে আপনার কথাগুলো; প্রশ্ন জাগে ছাত্রলীগ যখন ১৫ আগস্ট রাতভর 'শোন একটি মুজিবরের কণ্ঠ হতে' বা এই ধরনের অন্যান্য গান বাজায়, তখন তারা মুজিবের অনন্যতা সত্যি হ্রদয়ে উপলব্ধি করে কিনা? আসলে বিএনপি জোটের আমলে মুজিব থাকে একেবারেই অনুচ্চারিত, আর আওয়ামীলীগের আমলে অতি স্তুতির জোয়ারে মুজিবের আসল কৃতিত্ব চাপা পড়ে যায়। তবে যেকোনো নির্মোহ বিশ্লেষণেই মুজিবের অনন্য অর্জন এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। যে জাতি 'লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান' বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে যেত, মাত্র সিকি শতাব্দীর ব্যবধানেই যে তাদের মুখে বলতে শোনা গিয়েছিল 'বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো'- মানস-পট আমূল বদলে দেয়ার এই অবিস্মরণীয় কৃতিত্ব মুজিব ছাড়া আর কারো নয়!
'শোনো একটি মুজিবরের থেকে/ লক্ষ মুজিবরের কন্ঠ/স্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি/
আকাশে বাতাসে উঠে রণি' ... এই গান আমার রক্তে প্রবল কাঁপন ধরিয়ে দেয়।
আজকের ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের রক্তে কাঁপন ধরায় অন্য জিনিস।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
আপনার মন্তব্য ভালো লেগেছে। আর সে ভাললাগা থেকেই কিছু কথা বলবার দায়বদ্ধতা অনুভব করছি। আশাকরছি, এটাকে তর্ক হিসেবে বিবেচনা করবেননা।
স্বাধীনতা-রবর্তী মুজিবকে আরও নির্মোহ বিশ্লেষণ করতে চাইলে, ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালের বাস্তবতাকে ও তার প্রেক্ষিতে হওয়া ব্যার্থতাকে আরও বিষদভাবে বুঝবার অবকাশ রয়েছে। মুজিব শাসনামল মানেই বাকশাল, এই কথাটি অত্যান্ত সূচারুভাবে আমাদের মগজে প্রবেশ করানো হয়েছে। মুজিবের সাড়ে ৩ বছরের অর্জনও কম নয় এবং দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটাকে অনেকেই বাকশালের বাস্তবতায় ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যান।
বিশ্লেষণে যাবোনা, তবে একটি এনালোজি দেবার চেষ্টা করছি আপাতত। এনালজিটা হিউমরাস মনে হতে পারে, তবে আমি মূল উপজীব্য বিষয়ের সিরিয়াসনেসকে হালকা করতে চাচ্ছিনা--
মনে করেন, আপনার হাতে সামান্য একটুকরো কাপড় আছে এবং তা দিয়েই আপনার লজ্জ্বা নিবারণ করতে হবে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আপনি লজ্জা নিবারণের জন্য প্রথমেই টার্জান-স্টাইলের প্যান্ট, বা আরও র-ভাষা বললে একটি আন্ডারওয়্যার বানাতে চাইবেন। আসলে, এটাই সম্ভবত স্বাভাবিক। কিন্তু হঠাত যদি আপনার যদি শখ হয় যে আপনার আন্ডারওয়ারের সামনে-পিছে পকেট থাকতে হবে, তবে আপনার সেই সখ আপনার লজ্জ্বা নিবারণের চেষ্টার প্রতি হুমকিস্বরুপ এবং তা বিপদজনক। বাংলাদেশে ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে আসলে এরকমই জাইঙ্গার পকেট বানাইতে গিয়ে অনেকেই ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে দেশকে পিছিয়ে যেতে প্ররোচিত করে গেছে, প্রচার করেছেন, এবং অল্পকাপড়ের সুযোগে শরীরে উন্মুক্ত অন্যান্য অংশে রিপুর চাষ করে গেছেন।
পরিশেষে বলবো, মুজিবের যতটুকু ব্যার্থতা ছিল তারচেয়ে বেশী হয়েছে প্রচারণা। তাইতো, অনেকের কাছে মুজিব মানেই বাকশাল, এছাড়া অন্য কিছু নয়।
তর্ক করার প্রশ্নই আসেনা, আপনার সাথে আমি পুরোপুরি একমত। আমার হয়তো লেখা উচিত ছিলো - "স্বাধীনতাপরবর্তী কথিত নানা ব্যর্থতা সত্ত্বেও", তাহলে বোঝাতে পারতাম যে কথাটা আমার নয়, আমি আসলে মুজিব-নিন্দুকদের প্রচারণার কথা বলেছিলাম। ধরিয়ে দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে।
যথার্থ বলেছেন। স্বাধীনতাপরবর্তী মুজিবের নির্মোহ বিশ্লেষণ হয়নি। মুজিবের আমলে অনেক ভালো কাজও হয়েছিলো, কিন্তু ভ্রষ্ট বাঙালি সেগুলো মনে রাখেনি। ভালো কাজ মনে রাখার স্বভাব বাঙালির থাকলে মুজিবকে এভাবে মরতে হতো না।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
_____________________
Give Her Freedom!
আপনার মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আমার মনে হয় আপনি বুঝতে পেরেছেন আমি ঠিক কি বুঝিয়েছি "নিজেদের" মতো করে লেখার কথা বলতে।
পাকিস্তানিদের সম্পর্কে সত্য বলেই তো কূল করতে পারছি না ! আবারও, অনেক অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্যে।
সুমন_সাস্ট
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্যে। চমৎকার হয়েছে। আপনি আরো লিখুন।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যে ! আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যে ! আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো।
পরাজিতের ইতিহাস থাকে না। কিন্তু আমরা পরাজিতকেও আজ ইতিহাস তৈরী করতে দিচ্ছি। আশা এবং বাস্তবায়নের পরিকল্পনা মিলতে পারছে না। মাঝে মাঝে মনে হয়, স্বাধীণ হয়ে কোন জাতি এত লজ্জিত হয়নি।
প্রথম আলো তে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের গল্প ছাপানো হয়, এইগুলোর সংকলন কি বাংলা ব্লগ-সাইট গুলোতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া যায়?
কি বলবো? মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ !
মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়বার জন্যে, তাসনিম। উৎসাহিত করার জন্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা- সৎ ইতিহাসের ভিত্তি।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার লেখাটা ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোই এগিয়েছিল যতক্ষণ পর্যন্ত এ লাইন গুলোতে এসে না ঠেকলো-
এই লাইনগুলো ডাবল-এজড ড্যাগার এর মতো। এখন তর্ক উঠবে বিজয়ীরা ইতিহাস লিখবে সেটা কতখানি ফেয়ার, আর সেই ক্ষেত্রে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যেটা আমরা (মানে বিজয়ীরা) জানি, সেটা কতটুকু ফেয়ার তাই নিয়ে।
এইসব তর্ক মানুষের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা এখন কোন মহলের উদ্দেশ্য সেটা কারো অজানা নয়।
জেনোসাইড শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুই দেশের মাঝে যুদ্ধে জেনোসাইড ঘটুক আর গৃহযুদ্ধে জেনোসাইড ঘটুক। পাকিস্তানীরা আমাদের দেশে জেনোসাইড করেছে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বানানো বা কল্পিত ইতিহাস না, এসব সত্য ঘটনা। ফ্যাক্ট।
বিজয়ী পক্ষের লেখা ইতিহাস বলে এর বৈধতা লঘু করা্ শুধু হাস্যকর না, ভয়ংকর। এর পেছনের উদ্দেশ্য মহৎ হতে পারে না।
ইতিহাস বিজয়ীরা না, সব পক্ষই লেখে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে নাই করে ফেলার চেষ্টা বহু পুরোনো। পাকিস্তানী জেনারেল দের আত্মকথা থেকে শুরু করে নতুন সংযোজন শর্মিলা বোসের তথাকথিত গবেষণাধর্মী (?!) লেখা, এসবেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের তথ্য বিকৃত করা হয়েছে। এতে বোঝা যায় ইতিহাস থেকে সব পক্ষেরই কিছু লাভ-লোকসানের ব্যাপার আছে। ইতিহাসের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাতেও আছে।
ইতিহাস সঠিক জানা যেমন দায়িত্ব, সঠিক ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করাও তেমন দায়িত্ব। আপনার লেখার শেষ লাইন কটি অত্যন্ত আপত্তিকর, সেটা জানিয়ে গেলাম। ভবিষ্যতে আরো দায়িত্ব নিয়ে লিখবেন আশা করি।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
আপনার লেখার হাত খুব ভালো। গেরিলা বাহিনীকে দমন করার যেই পদ্ধতিগুলো বললেন ওগুলো কি অতীতে করা হয়েছে বা বর্তমানে যা করা হয় তার একটা আনালাইসিস, নাকি কীভাবে করতে হবে তার পাঠদান? আপনার লেখা পড়ে মনে হোল এটা পাঠদান। এটা যদি স্বীকৃত কোন পদ্ধতি হয় তাহলে এটা ইমপ্লিমেন্ট করবে কে, সরকার? সরকার কি সিভিলিয়ানদের উপর কোন রকম ভায়োলেন্স জায়েজ করতে পারে? বাকি যেই জিনিশগুলো নিয়ে অস্বস্তি লাগছিল, ধূসর গোধূলি, অনার্য সঙ্গীত, আর নাদির জুনাইদ বলে দিয়েছেন তাই আর কথা বাড়ালাম না।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে। এটা analysis এবং পাঠদান দুটোই।
সরকার না, রাষ্ট্র।
সিভিলিয়ানদের জানিয়ে কখনই পারে না। কিন্তু, সরকার রাষ্ট্রের স্বার্থে করছে এবং করেছে। খুলে বলি - ধরুন, ইরাক যুদ্ধে মারামারি হচ্ছে। ওখানে অনেক গল্প ফেঁদেই legitimacy দেয়া হয়েছে। এখানে আমেরিকার সরকার ছড়ি ঘুরাচ্ছে, আরেক দেশের অসহায় সিভিলিয়ানদের উপর। এখানে আমেরিকার সিভিলিয়ানদের সমস্যা হচ্ছে না। আমেরিকার সিভিলিয়ানদের সমস্যা তখনই শুরু করবে, যখন দেখবে তাদের ট্যাক্সের টাকা তাদের উন্নতি না করে কোনো ফালতু কাজে খরচ হচ্ছে। কিংবা যখন তাদের নিজেদের সৈন্য (মানুষ) মারা পড়তে থাকবে। এটার একটা indifference curve আছে, যেটা জনগণের সহ্য ক্ষমতার মাপকাঠি এবং তার সাথে জড়িত বিভিন্ন factors কে consider করে। Resources (অর্থ এবং সৈন্য) এর জন্যে তাই সরকারকে জনগণের কাছে যুদ্ধকে জায়েজ করতে হয়। জনগণকে বুঝাতে হয়, এটাতে তাদের স্বার্থ জড়িত।
ত্যানা প্যাঁচানোর জন্য দুঃখিত। আমেরিকা-ইরাক উদাহরনটা সম্পুর্ণ অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। গেরিলা দমনের জন্য সিভিলিয়ানদের উপর অমানুষিক অত্যাচার করার অধিকার রাষ্ট্রকে কে দিল? পাঠদান যখন বলছেন তার মানে দাঁড়ায়, এটাই নিয়ম, এভাবেই করতে হবে। গেরিলা বাহিনীকে পরাজিত করার জন্য সিভিলিয়ানদের উপর অত্যাচার যায়েজ, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটা পদ্ধতি। মানতে কষ্ট হচ্ছে।
আপনার মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আমার "target audience" টা বাংলাদেশীরা। এখানে আমি ভাবিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস "আমরা" লিখলে "কল্পনাপ্রসূত" হয়ে যাবে এই ধরণের ধারণা আসতে পারে কিংবা কোনো বিশেষ মহলের "চাল" হিসেবে দেখা হতে পারে ! কারণ, আমাদের সবার "shared history" একই। হয়তো, কারণটা এটাই, আমি যেমন একজন মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরি তেমনি, দুর্ভাগ্যক্রমে কিছু "রাজাকারের"ও উত্তরসূরি। ঘর পোড়া গরুর সিঁদুরে মেঘেই ভয় - আমদের নিজেদের মধ্যে "মেহেরজান" জন্মেছে বলেই আমরা সহজ কথার মধ্যে "ডাবল-এজড ড্যাগার" খুঁজে পাই। অতিথি হিসেবে লেখা সংশোধন করা যায় না। নাহলে, আমি নিজেই পরের অংশটা বাদ দিয়ে দিতাম। কারণ, মন্তব্যগুলো মূল বিষয় থেকে সরে গেছে ওই জন্যে। ওই অংশটায় আমি শুধু বলতে চেয়েছিলাম - আমাদের গেরিলারা, সাধারণ যোদ্ধারা আমাদের ইতিহাসে অনেক অবহেলিত এবং আমাদের ওদের কথা লেখা উচিত। আবারও, এতো সময় নিয়ে পড়বার জন্যে এবং গঠনমূলক মন্ত্যবের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
বেশ তো। কনট্যাক্ট অ্যাট সচলায়তন বরারবর মেইল করে জানান আপনি লেখায় কি পরিবর্তন আনতে চান। মডারেটর রা দেখবেন।
আপনার বোঝানোর ইচ্ছা হয়তো ওরকমই ছিল। কিন্তু এই ধান্দাবাজীর বাজারে এই কনফিউশনটুকু রাখা গ্রহণযোগ্য নয়। টার্গেট অডিয়েন্সের সুবিধার্থেই, আপনিই তো জানেন আমাদের শেয়ারড হিস্ট্রি নিয়ে কি কি করা হয়েছে অতীতে বা এখনো হচ্ছে।
ভালো থাকুন, আরো লিখুন।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
যুদ্ধ দমনের উপায়গুলোর সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের ওপর কিভাবে অত্যাচার চলেছিলো, তার সমন্বয়টা ভালো করেছেন। তবে কিছু কিছু বিষয় কনফ্লিক্টিং মনে হচ্ছে। যেমন,
আপনার বাবা-মা যথেষ্ট সচেতন মানুষ। এমতাবস্থায় আপনি বারবার যুদ্ধের গল্প শুনতে চাওয়ার পরেও সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়াটা বেমানান। আপনার নানা একটি দাঁত হারানোর পরেও যুদ্ধের গল্প শুনবেন না, স্বাধীনতার গল্প সমাজ বই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকাটাও মিলছে না।
সমাজ বই যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে ইনডিসিসিভ ছিলো বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক স্বার্থে কেউ বেশি হাইলাইটেড হতে পারেন; কিন্তু যুদ্ধের 'মূল' ঘটনা নিয়ে তেমন কোনো সিদ্ধান্তহীনতা ছিলো বলে মনে পড়ে না। যেমন, জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে লেখা হতো তার আমলে। জিয়া তো অবশ্যই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। এটা স্রেফ ক্রেডিট ভাগাভাগির ব্যাপার। রাজাকারদেরকে মহিমান্বিত করা হয় নাই, গোলাম আযমের জীবনে যা দেখলাম থেকে উদ্ধৃতি পড়তে হয় নাই।
স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়া আসলে তেমন কোনো ভ্যালিড বিতর্ক নাই। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ সুনির্দিষ্ট। অগুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্টকে হাইলাইট করে একাত্তরের শত্রুরা 'পুরা ইতিহাস'কে বিতর্কে নামাতে চায়। যেমন, যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছে, নাকি ৪০ লাখ, নাকি ১০ লাখ, এই সংখ্যাটা নিয়ে গণিতজ্ঞ ছাগুরা হিসেব কষে প্রতিদিন কতোজন মানুষকে হত্যা করলে এটা সম্ভব। স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্বিচারে যে গণহত্যা করেছে পাকি সৈন্য ও রাজাকার, আল-বদরেরা, তার জন্য সংখ্যা লাগে না, যে কোনো সংখ্যাই তাদের আকামের ইতিহাসকে হালকা করে না।
শর্মিলা বসুর গবেষণায় এখন বেরোচ্ছে রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য (কি ফায়দা হবে বুঝি নাই, আমলীগ তো তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন) স্বাধীনতা যুদ্ধে ধর্ষিত নারীর সংখ্যা বাড়িয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীত চিত্রটা আসছে না। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ধর্ষিত নারীরা সাধারণত সামনে এসে বলবেন না যে, তারা ধর্ষিত হয়েছেন। নির্যাতিতের আসল সংখ্যা লিস্টেড বা এস্টিমেটেড সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশিও হওয়া সম্ভব। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ইতিহাসকে 'বিতর্কিত' ট্যাগিং করে নতুন তত্ত্ব হাজির করা হচ্ছে।
ইতিহাসে বিজয়ীর প্রশস্তিগাঁথা থাকে, তবে সবসময় বিজয়ীরাই লেখে না। অনেক সময়ই দেখবেন যুদ্ধে জয়ীর নৃশংসতা নিয়েও ইতিহাস লেখা হচ্ছে। (যেমন, হালাকু খান) আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস লেখার জন্য জোর করে আমাদের পক্ষে কোনো শব্দ যোগ করার দরকার নেই। নিরস্ত্র মানুষের ওপর যখন একটি অস্ত্রধারী সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন বাড়তি কোনো শব্দ যোগ করার দরকার পড়ে না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে এবং কথা বলার জন্য স্পষ্ট উচ্চারণ। অন্তত ইতিহাস চর্চ্চার জন্য। আর ইতিহাস আমি লিখলে আমার মতো, সে লিখলে তার মতো হবে না। আমার এবং তার লেখা থেকে বেরিয়ে আসবে সত্য। এই-ই নিয়ম।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
নতুন মন্তব্য করুন